বগুড়ায় কোরবানির পশুর চামড়ার দাম না পাওয়ায় অন্তত ১০ হাজার পশুর চামড়া ফেলা হয়েছে ভাগাড়ে। ফেলে দেয়া এই চামড়াগুলো ছাগল এবং ভেড়ার। এর মধ্যে গরুর চামড়ার কিছু অংশবিশেষও চোখে পড়ে।
ঠিক কী পরিমাণ চামড়া ফেলে দেয়া হয়েছে, তার কোনো সুস্পষ্ট সংখ্যা জানা যায়নি। প্রসেসিংয়ের খরচের চেয়ে চামড়ার দাম কম হওয়ায় এগুলো নষ্ট করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির নেতার দাবি, কেবল নিম্নমানের নষ্ট এবং বাতিল চামড়াই ফেলে দেয়া হয়েছে।
শহরের অদূরে বাঘোপাড়া এলাকায় ময়লার ভাগাড়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে কোরবানির পশুর হাজার হাজার চামড়া। ঈদের পরদিন বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত ট্রাক বোঝাই করে পশুর বর্জ্য এবং চামড়া ফেলা হয় এখানে।
৪ নম্বর ওয়ার্ডের বর্জ্যবাহী ট্রাকচালক আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘চার নম্বর ওয়ার্ডের ঢাকা বেকারি, রানার সিটিসহ বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে গাড়িতে তোলা হয় হাজারেরও বেশি ছাগল এবং ভেড়ার চামড়া। এগুলো ছিল পচা, দুর্গন্ধময়।
আসাদুল জানান, তার মতো আরও ৬টি ট্রাকে করে শহরের বর্জ্য ফেলা হয়েছে ভাগাড়ে। এসব গাড়িতে ৫ হাজারের বেশি পশুর চামড়া নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তারা অন্তত ১০ হাজার পশুর চামড়া ফেলেছেন বাঘোপাড়ার ওই ভাগাড়ে।
তাদের কথার সত্যতা মেলে ব্যবসায়ী বজলুর রহমানের বক্তব্যে। তিনি জানান, এবার বগুড়ায় গরুর চেয়ে বেশি ছাগল কোরবানি হয়েছে। ১২টি উপজেলায় ২০ হাজারের বেশি ছাগল এবং ভেড়া কোরবানি হয়। এগুলোর অর্ধেক চামড়াই ফেলে দিতে বাধ্য হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। দাম কম এবং প্রক্রিয়াজাতকরণ ও পরিবহন খরচ বেশি হওয়ায় বয়বসায়ীরা কিছু বাছাই করা চামড়া রেখে বাকিগুলো ফেলে দেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে শহরের বিভিন্ন সড়ক এবং দোকান, হাটবাজারের পাশে দেখা যায় ছাগলের চামড়ার স্তূপ। চামড়াগুলো পচে দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকে। এর পাশাপাশি গরু-ছাগলের বিভিন্ন পরিত্যক্ত দেহাবশেষের স্তূপও দেখা যায় ময়লা রাখার নির্দিষ্ট স্থানগুলোতে। বেলা ১১টার দিকে পৌরসভার গাড়িতে করে পশুর চামড়াসহ বর্জ্যগুলো তুলে নিতে দেখা যায়।
ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, ‘ছাগলের চামড়ার প্রক্রিয়াজাতকরণের খরচ তুলনামূলক বেশি। খুব উন্নত মানের লবণ দিয়ে চামড়া প্রক্রিয়াজাত করা হয়। ছাগলের একটি চামড়ায় ৩৫-৩৮ টাকার লবণ ছিটাতে হয়। এর সঙ্গে আছে পরিবহন খরচ। কিন্তু চামড়ার দাম ৮ থেকে ৩০ টাকা।’
এ ছাড়া ছাগলের চামড়া ছাড়াতে গিয়ে চাকুর আঘাতে কোথাও ফুটো হয়ে গেলে সেটাকে বাতিল ধরা হয়। এ ধরনের চামড়া ট্যানারি মালিকরা খুব অল্প দামে কেনেন।
চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি বজলুর রহমান বলেন, তারা পাঁচজন ব্যবসায়ী আছেন বগুড়ায়। প্রতিজন ৫-৭ হাজার করে চামড়া কেনেন। এবার চামড়ার দাম এতই কম যে তা প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য যে পরিমাণ লবণ দরকার সেটাই কেনা সম্ভব নয়।
চামড়া ব্যবসায়ী মকবুল হোসেন বলেন, অতিরিক্ত গরমে অনেক চামড়া নষ্ট হয়ে গেছে। ঠিকভাবে লবণ ছিটাতে না পারার জন্যও কিছু চামড়া নষ্ট হয়েছে।
তিনি আরও জানান, অদক্ষ লোকের মাধ্যমে কোরবানিতে পশুর চামড়া ছোলা হয় বলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা কেটে যায়। চামড়ার স্তর না বোঝায় মানও খারাপ হয়। এসব ট্যানারিতে নেয় ৮ টাকায়। কিন্তু একটি চামড়ায় লবণ ছিটাতে হয় ৩৫-৩৮ টাকার।
এদিকে ব্যবসায়ীরা চামড়া না কেনায় বিপাকে পড়েছেন পশু কোরবানিদাতারা। নামমাত্র দামে গরুর চামড়া বিক্রি করলেও ছাগলের চামড়া থেকেছে অবিক্রীত। ক্রেতা না পাওয়ায় তারা পশুর চামড়া সরাসরি দান করে দিয়েছেন স্থানীয় মাদ্রাসা এবং বোর্ডিংয়ে।
বগুড়ার শহরের জাহাঙ্গীরাবাদ ফুলতলা এলাকার বাসিন্দা আরিফ তালুকদার এবার ৮০ হাজার টাকা দিয়ে কোরবানির গরু কিনেছিলেন। গরুর চামড়া নিয়ে বিকেল পর্যন্ত বসে থেকেও পাননি কোনো ক্রেতার দেখা। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় মাদ্রাসায় চামড়াটি দান করেছেন।
একই এলাকার বাসিন্দা আহসান হাবিব সেতু বলেন, ‘কোরবানির জন্য ছাগল (খাসি) কিনছিলাম। তবে ক্রেতা না থাকায় স্থানীয় মাদ্রাসায় চামড়া দান করছি।’
এদিকে সরকারনির্ধারিত দাম অনুযায়ী এবার ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। গত বছর যা ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। একই চামড়া ঢাকার বাইরে প্রতি বর্গফুট ৩৩ থেকে ৩৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়। গত বছর যা ছিল ২৮ থেকে ৩২ টাকা।
এ ছাড়াও সারা দেশে খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১৫ থেকে ১৭ টাকা নির্ধারণ করে দেয়া হয়। গত বছর যা ছিল ১৩ থেকে ১৫ টাকা।
চামড়ার ক্রেতা-বিক্রেতারা জানালেন, এবার গরুর চামড়া ১৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা থেকে দুই লাখ টাকার গরুর চামড়া সর্বোচ্চ ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর ছাগলের চামড়া ১০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
তারা বলছেন, ২৫-৩০ বর্গফুটের কাঁচা চামড়া সর্বোচ্চ ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। নিচের ১৪ থেকে ২০ বর্গফুটের কাঁচা চামড়া সর্বোচ্চ ৩০০ টাকায় কিনেছেন ব্যবসায়ীরা।
বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী আব্দুর রশীদ। তিনি এবার ১০০ গরুর চামড়া ও ১ হাজার ৫০০ খাসির চামড়া কিনেছেন।
তিনি বলেন, ‘সকালের দিকে চামড়ার দাম একটু বেশি থাকলেও, বিকেলে একদমই দাম কমে যায়। আড়তদারদের নির্ধারণ করে দেয়া দামেই চামড়া কিনেছি। তবে আড়তে চামড়ার আমদানি অনেক বেশি থাকায় এখন এসে দাম কম বলা হচ্ছে। তাই দাম নিয়ে শঙ্কায় আছি।’
এদিকে চামড়ার দাম এবার ভালো ছিল বলছেন আড়তদার ও চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা। অনেকে ক্রেতা না পেয়ে চামড়া দান করেছেন এবং চামড়া ফেলে দিয়েছেন এ বিষয়টি মানতে নারাজ তারা।
জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও চামড়ার আড়তদার আব্দুল মতিন বলেন, যে চামড়াগুলো ফেলে দেয়া হয়েছে সেগুলো মূলত বাতিল চামড়া। নিম্নমানের চামড়াগুলো লবণজাত করার খরচ বেশি এবং ট্যানারিতে এর চাহিদা কম থাকায় সেগুলো ফেলে দেয়া হয়েছে। তার ভাষ্য, শহরের দুএক জায়গায় ৩০-৪০টি ছাগল-ভেড়ার চামড়া ফেলে দেয়া হয়েছে।
এই নেতার দাবি, ট্রাকে করে ভাগাড়ে ফেলা হয়েছে পশুর কান, মাথার চামড়াসহ পরিত্যক্ত চামড়া এবং বর্জ্য।
আরও পড়ুন:চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমের শুরু থেকেই উচ্চ তাপমাত্রায় আলোচনায় রয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলা। মৃদু, মাঝারি, তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপমাত্রা দেখছে জেলাবাসী। মাঝে তাপমাত্রা সামান্য কমলেও ফের অতি তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশের পশ্চিমের এই জেলা।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার মানে জেলায় আবারও অতি তীব্র তাপপ্রবাহের কবলে পড়েছে এই জেলা।
আগের দিন বুধবারও এখানে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। ওইদিন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার আগের দিন তাপমাত্রা নেমেছিল ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সেই তীব্র তাপপ্রবাহ বৃহস্পতিবার এসে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিয়েছে।
জেলা জুড়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবনে অস্বস্তি আরও বেড়েছে। স্বস্তি মিলছে না কোথাও। তীব্র গরমে একটু স্বস্তি পেতে দিনের অধিকাংশ সময় মানুষ গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছে।
গরমের প্রভাবে বাড়ছে রোগবালাই। গরমজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে হাসপাতালে। তীব্র তাপদাহে ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ। শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষ কাজে যেতে পারছে না। নষ্ট হচ্ছে ধান, কলা, আম, লিচুসহ মৌসুমী ফসল।
গোপালপুর গ্রামের কৃষক হান্নান আলী বলেন, ‘এই তাপে মাটে উঠতি ফসল নষ্ট হয়ি যাচ্চি। আর রোদির তাতে মাটে দাঁড়ানু যাচ্চি না। ধানের ক্ষেতে বেশি সেচ লাগচি। তাও আবার দিনের বেলায় পাম্পে পানি উটচি না। রাতি দিতি হচ্চি।’
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘আজ (বৃহস্পতিবার) তাপমাত্রা কয়েক ডিগ্রি বেড়েছে। জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ রূপ নিয়েছে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে। সহসা বৃষ্টি হওয়ার কোনো পূর্বাভাস নেই। চলতি এপ্রিল মাসের শেষ দিন পর্যন্ত আবহাওয়ার এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপে ঘরে ঢুকে এক নারী ও তার মেয়েকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
গত সোমবারের ঘটনায় বৃহস্পতিবার টেকনাফ মডেল থানায় অভিযোগটি করেন ছেনুয়ারা বেগম নামের নারী।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত সোমবার রাত দুইটার দিকে শাহপরীর দ্বীপের পূর্ব উত্তরপাড়া এলাকার নুর মোহাম্মদের স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগমের ঘরের দরজা ভেঙে আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন প্রবেশ করেন। তারা ছেনুয়ারা ও তার মেয়ের হাত-পা বেঁধে মুখে কাপড় ঢুকিয়ে এলোপাতাড়ি লাথি ও ঘুষি মারেন। একপর্যায়ে মা ও মেয়ে উভয়কে বিবস্ত্র করেন আইয়ুব ও তার লোকজন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, হামলাকারীরা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে স্বর্ণ ও টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান। যাওয়ার সময় তাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের বিষয়ে কাউকে জানানো হলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যান৷
এ বিষয়ে ছেনুয়ারা বেগম বলেন, ‘সন্ত্রাসী আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন যুবক আমার বাড়িতে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রবেশ করে। পরে বাড়ি থেকে আমাকে জোরপূর্বক কয়েকজন লোক বের করে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে এবং আমার মেয়েকে নির্যাতন করে স্বর্ণ ও টাকা নিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া বিষয়ে কাউকে বললে মেরে ফেলা হবে বলে চলে যায়।’
থানায় অভিযোগের পর আয়ুব হুমকি দিয়েছে জানিয়ে ছেনুয়ারা বলেন, ‘সেই আয়ুব খান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বলে, মামলা হলে কী হবে? জামিন নিয়ে বাহির হয়ে আমাকে আর আমার মেয়েকে মেরে ফেলা হবে বলে প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে আমি টেকনাফ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’
এ বিষয়ে সাবরাং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রেজাউল করিম রেজু বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি এবং সঠিক তদন্ত করে পুলিশকে সহযোগিতা করব।’
অভিযোগ তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সোহেল বলেন, ‘আমি ঘটনার সত্যতা পেয়েছি এবং আমি মামলা করার জন্য ওসি বরাবর সুপারিশ করেছি।’
টেকনাফ মডেল থানার ওসি ওসমান গণি বলেন, ‘আরও গভীরভাবে তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তার করা হবে।’
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে দায়িত্ব পালনকালে রুহুল আমিন নামে এক ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি যশোরের বেনাপোলে। বাবার নাম কোরবান আলী।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের অধীন সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
শিবগঞ্জ থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন জানান, সোনামসজিদ স্থলবন্দরের পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের মধ্যে ট্রাক পরিদর্শন শেষে দুপুর পৌনে ১টার অফিস কক্ষে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন রুহুল আমিন। সহকর্মীরা তাকে দ্রুত শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন এসএম মাহমুদুর রশিদ জানান, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর রুহুল আমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার আগেই মারা যান। হাসপাতালে যারা নিয়ে এসেছিলেন তারা বলেছেন যে তিনি তৃষ্ণার্ত ছিলেন, পানি খেতে চেয়েছিলেন।
তবে তার মৃত্যু যে হিট স্ট্রোকে হয়েছে এটা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাবে না। অন্য কোনো রোগেও তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তবে এখন যেহেতু প্রচণ্ড গরম চলছে তাই এটার প্রভাব থাকতে পারে।
রাজশাহীর বাগমারায় ভাড়া বাসায় আটকে রেখে এক মাস ধরে এক তরুণীকে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার রাতে উপজেলার তাহেরপুর পৌর এলাকার হরিফলার মোড়ের একটি বাসা থেকে ওই তরুণীকে উদ্ধার ও এ ঘটনায় অভিযুক্ত একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আটক রাজু হোসেন (২৫) পেশায় চা দোকানি। তিনি তাহেরপুর পৌরসভার হরিফলা মহল্লার আবদুর রাজ্জাক শাহের ছেলে।
পুলিশ জানায়, অসুস্থ অবস্থায় তরুণীকে বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়ার পর রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) স্থানান্তর করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ওই তরুণীর বাড়ি ফরিদপুর জেলায়। ফোনে রাজুর সঙ্গে তার পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ২৪ মার্চ বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফোনে ভুক্তভোগী তরুণীকে তাহেরপুরে নিয়ে আসেন রাজু। পরে তাকে নিয়ে ভাড়া বাসায় ওঠেন রাজু। সেখানে আটকে রেখে এক মাস ধরে রাজু ওই তরুণীকে ভয় দেখিয়ে ও মারধর করে ধর্ষণ করেন।
এক পর্যায়ে নির্যাতনের শিকার তরুণী অসুস্থ হয়ে পড়লে পাশের বাড়ির লোকজন টের পেয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরকে জানান। তিনি থানায় খবর দিলে বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ ওই বাসা থেকে তরুণীকে উদ্ধার করে। পরে ওই এলাকা থেকে রাজুকে আটক করে পুলিশ। রাতেই তরুণী বাদী হয়ে অপহরণ, ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা করেন।
রাজশাহী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও মুখপাত্র রফিকুল আলম জানান, মেয়েটার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। আটক তরুণের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা নদীতে বুধবার রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সময় দুটি ড্রেজার জব্দ করেছে নৌ-পুলিশ।
মাওয়া নৌ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের খবর পেয়ে উপজেলার মেদিনীমণ্ডল ইউনিয়নের যশিলদিয়ায় বুধবার রাত দেড়টার দিকে পদ্মা নদীতে অভিযান চালানো হয়। ওই সময় নিয়ম অমান্য করে বালু উত্তোলন করায় ওই দুটি ড্রেজার জব্দ করা হয়।
তিনি আরও জানান, ড্রেজার জব্দ করার সময় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। জব্দকৃত ড্রেজার দুটির বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মেহেরপুরের গাংনীতে সেচ পাম্পের সুইচ দিতে গিয়ে বিদুৎস্পৃষ্ট হয়ে আবদুল হান্নান (৭৫) নামের কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার বামন্দী ইউনিয়নের দেবীপুর দক্ষিণপাড়ায় বৃহস্পতিবার সকাল নয়টার দিকে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
প্রাণ হারানো আবদুল হান্নান দেবীপুর দক্ষিণপাড়ার খোদা বক্সের ছেলে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য হিরোক আহমেদ বলেন, ‘আজ সকালে আবদুল হান্নান নিজ গ্রামের মাঠে অবস্থিত সেচ পাম্পের সুইচ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টের শিকার হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। পরে স্থানীয়রা মরদেহটি ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে নিজ বাড়ি দেবীপুরে নিয়ে আসে।’
বামন্দী পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) শরীফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিদুৎস্পৃষ্টে মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসে প্রাথমিক তদন্ত শেষ করেছি। বতর্মানে মরদেহটি পরিবারের কাছে রয়েছে।’
নাটোরের বড়াইগ্রামে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে এক ভ্যানচালক নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার আগ্রান ঈদগাহ মাঠ এলাকায় বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের এই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ওই ভ্যানের এক যাত্রী।
নিহত মোজাহার আলী একই উপজেলার পারকোল গ্রামের মৃত শাহাদত আলীর ছেলে।
বনপাড়া হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলীমুল ইসলাম জানান, মহাসড়ক পার হওয়ার সময় দ্রুতগতির একটি ট্রাক ভ্যানটিকে চাপা দিয়ে চলে যায়। এতে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই ভ্যানচালক মোজাহার মারা যান। সেই সাথে ভানযাত্রী মিজান শেখ আহত হন।
তিনি বলেন, পরে স্থানীয়রা আহত মিজানকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
মন্তব্য