বাংলাদেশের ওষুধশিল্প হাঁটি হাঁটি পা পা করে অনেক দূর এগিয়েছে। দেশের ওষুধ এখন বিশ্ববাজারেও সমাদৃত হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানিসহ বর্তমানে ১৬০টি দেশে বাংলাদেশের ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে। মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পাশাপাশি এই শিল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
এত সাফল্যের পরও সম্ভাবনাময় এ শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) হিসেবে ওষুধ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন যে সুবিধা পাচ্ছে, উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হলে সেই সুবিধা আর থাকবে না। তখন বাংলাদেশের ওষুধশিল্পের অবস্থা কী হবে, কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৬ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পাবে। এরই মধ্যে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সুপারিশ করেছে।
উত্তরণকালীন বিভিন্ন বিষয়ে প্রস্তুতি চলছে বাংলাদেশের। বাজারসুবিধা, কম সুদে ঋণসহ নানান বিষয়ে আলোচনা শুরু হলেও ওষুধশিল্পের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে সরকারি-বেসরকারি মহলে তেমন কোনো আলোচনা হয় না বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বর্তমানে এলডিসি হিসেবে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কপিরাইট আইন বা ‘মেধাস্বত্ব ছাড়ের’ সুবিধা ভোগ করছে বাংলাদেশ, যার মেয়াদ ২০৩৩ সাল পর্যন্ত দেয়া আছে।
এই সুবিধার আওতায় ওষুধ উৎপাদনে বিদেশি পেটেন্ট ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশকে কোনো রয়্যালিটি বা কোনো ধরনের ফি দিতে হয় না। যে কারণে অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশ সস্তায় ওষুধ উৎপাদন করতে পারছে।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ‘বাণিজ্য-সংক্রান্ত মেধাস্বত্ব’(ট্রিপস) আইনে বাংলাদেশকে পেটেন্ট করার অধিকার দেয়া রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পাঁচ বছর পর ২০২৬ সালে যখন বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাবে, তখন এ সুবিধা আর থাকবে না। এতে করে বাংলাদেশের ওষুধশিল্প বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
কেননা, ওষুধ উৎপাদনে বিদেশি পেটেন্ট ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে রয়্যালটি বা ফি দিতে হবে। ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে ওষুধের। যার প্রভাব পড়তে পারে ওষুধের দামের ওপর। কিছু ওষুধের দাম এমন অবস্থায় যেতে পারে যে, সব মানুষের পক্ষে সব ওষুধ কেনা সম্ভব না-ও হতে পারে, এমন আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, একটি ওষুধ উদ্ভাবন বা ফর্মুলা আবিষ্কারের জন্য সার্বিক গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে বিপুল অর্থ ও সময় প্রয়োজন। তাই, সরকার কিংবা বেসরকারি ওষুধ উৎপাদনকারীরা এ ব্যাপারে আগ্রহী নন।
এ অবস্থায় দেশীয় ওষুধশিল্পের সুরক্ষায় এখন থেকেই প্রয়োজনীয় প্রস্ততি নিতে হবে। সক্ষমতা অর্জনের মধ্য দিয়ে দেশের ওষুধশিল্পকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে।
বর্তমানে অন্য দেশে থেকে পেটেন্ট (ফর্মুলা) নিয়ে এসে বাংলাদেশ যে ওষুধ উৎপাদিত হচ্ছে, তার কাঁচামালও আসছে বিদেশ থেকে।
বাংলাদেশে ওষুধের কাঁচামালের ৮৫ শতাংশ আমদানিনির্ভর।
পরিসংখ্যান বলে, বাংলাদেশ যদি ওষুধের কাঁচামালও উৎপাদন করতে পারে, তবে প্রায় ৭ বিলিয়ন বা ৭০০ কোটি ডলার (প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা) রপ্তানি আয় করা সম্ভব।
এক যুগেও হয়নি এপিআই পার্ক
দেশীয় ওষুধশিল্পের প্রসার, প্রতিযোগিতামূলক বাজার সৃষ্টি করতে পণ্যের বৈচিত্র্যকরণ, ওষুধের মান উন্নয়নে গবেষণা করা এবং প্রয়োজনীয় কাঁচামাল যেন বাংলাদেশেই উৎপাদন করা যায়, সেই লক্ষ্যে ২০০৮ সালে দেশে একটি পৃথক ওষুধশিল্প পার্ক গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয় এবং একই বছরের ডিসেম্বরে একটি প্রকল্প ‘একনেকে’ অনুমোদন দেয়া হয়।
পোশাকি ভাষায় এই পার্কের নাম ‘অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রিডিয়েন্ট’ বা এপিআই নামে পরিচিতি। যেখানে ৪২টি ওষুধ কোম্পানিকে প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এত বছর পরও এ পার্কের কাজের তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি।
যোগাযোগ করা হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান আ ব ম ফারুক নিউজবাংলাকে বলেন, বেসরকারি কোম্পানিগুলো এপিআই-এর অবকাঠামো ঠিকমতো তৈরি করছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
এর বাস্তবায়ন দ্রুত সম্পন্ন করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, এপিআই হলে ওষুধশিল্পের কাঁচামালের আমদানি নির্ভরতা কমবে। শুধু তা-ই নয়, কাঁচামাল রপ্তানি করা সম্ভব হবে। তিনি মনে করেন, সময়মতো এপিআই পার্ক না হওয়াটাই ওষুধশিল্পের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বাংলাদেশ এখন বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অন্য দেশ থেকে জেনেরিক বা ফমুর্লা কপি করে ওষধু উৎপাদন করে। ‘ট্রিপসের’ আওতায় বাংলাদেশকে এ অধিকার দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ যখন এলডিসি থাকবে না, তখন এই সুবিধা বাতিল হবে। এতে করে দেশের ওষুধশিল্প চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। ফলে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এখন থেকে প্রস্তুতি নেয়া দরকার বলে জানান তিনি।
কী ধরনের প্রস্ততি নিতে হবে জানতে চাইলে এই গবেষক বলেন, শিল্পের সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে। কাঁচামালের সিংহভাগ যাতে দেশেই উৎপন্ন হয়, সে পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ওষুধশিল্পে বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) খুবই কম। এ খাতে প্রচুর এফডিআই আনতে হবে।
তবে এটিকে অত বড় শঙ্কার বিষয় বলে মনে করেন না বাংলাদেশ ওষুধশিল্প সমিতিরি সভাপতি শফিউজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘ভয়ের কোনো কারণ দেখছি না। এলডিসি-উত্তর দেশের ওষুধশিল্পকে বড় ধরনের কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাাবিলা করতে হবে না।
‘আমাদের ওষুধ এখন বিশ্বমানে পৌঁছে গেছে। যুক্তরাজ্য, জার্মানিসহ বড় বড় বাজারে ওষুধ যাচ্ছে।’
উন্নয়নশীল দেশ হলে এ শিল্পে কিছুটা চ্যালেঞ্জ আসতে পারে এ কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ওষুধের দাম বাড়লেও তা বাড়বে সামান্য। তাতে খুব একটা প্রভাব পড়বে না।
সিপিডির গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বাংলাদেশের দাবি হচ্ছে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পরও যাতে ২০৩৩ সাল পর্যন্ত ট্রিপস ছাড়ের সুবিধা বহাল রাখা হয়। ভবিষ্যতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বৈঠকে যে দরকষাকষি হবে, সেখানে এই বিষয়টিকে প্রাধান্য দিতে হবে।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সাধারণ সভা
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি মাসের ২৬ ও ২৭ জুলাই জেনেভায় বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সাধারণ কাউন্সিল সভা অনুষ্ঠিত হবে। ওই সভায় বাণিজ্য-সংক্রান্ত মেধাস্বত্ব আইন বা ট্রিপস নিয়ে আলোচনা হবে। এতে বাংলাদেশের ওষুধশিল্প প্রসঙ্গটি নিয়ে আলোচনা হবে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে জানান।
সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ও জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির সদস্য ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, শুধু জেনেভাভিত্তিক আলোচনা করে দাবি আদায় করা যাবে না। এর জন্য শক্তিশালী রাজনৈতিক তদবির লাগবে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপানসহ বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের বড় বড় মিশনগুলোকে কাজে লাগাতে হবে। দেশের উন্নয়ন সহযোগিদের সমর্থন আদায় করতে হবে।
তিনি মনে করেন, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে পরিণত হতে হলে প্রস্তুতিপর্বে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে মেধাস্বত্বের অনুষঙ্গ। এটি আগামী দিনের অর্থনীতিতে নেতৃত্ব দেবে। ফলে জেনেভায় দরকষাকষিতে বাংলাদেশকে এ বিষয়ের ওপর বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
ড. দেবপ্রিয় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘অতীতে দেখা গেছে, ট্রিপস বা বাণিজ্য-সংক্রান্ত মেধাস্বত্ব আলোচনায় ওষুধশিল্প নিয়ে যে আলোচনা হয়েছে, সেখানে আরও সুবিধা দাও, এটা চাই ওটা চাই- এসবের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু এ শিল্পকে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য কার্যকর কোনো কিছু আলোচনা করতে দেখা যায়নি।’
তিনি প্রশ্ন করেন, এ শিল্প প্রায় ৪০ বছর ধরে সুবিধা পেয়ে আসছে, অথচ এখন পর্যন্ত নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেনি, এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে?
রপ্তানি বাড়ছে
বর্তমানে দেশীয় চাহিদার ৯৮ শতাংশ পূরণ করে ওষুধ রপ্তানি হয় বিশ্বের প্রায় ১৬০ দেশে। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক মিলে এ শিল্পের বার্ষিক বাজারমূল্য দাঁড়িয়েছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা।
খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এ মুহূর্তে ওষুধশিল্পের প্রধান চ্যালেঞ্জ কাঁচামাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন। তাহলে আরও এগিয়ে যাবে এ খাত।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, করোনাকালে সদ্য বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরে ওষুধ রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ১৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার বা সমপরিমাণ ১ হাজার ৪৩৩ কোটি টাকা। আলোচ্য অর্থবছরে ওষুধে আয় বেড়েছে বা প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় সাড়ে ২৪ শতাংশ।
এর আগের অর্থবছরে অর্থাৎ ২০১৯-২০ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছিল প্রায় ১৩ কোটি ৬০ লাখ ডলার বা ১ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা।
এপনিক ফাউন্ডেশনের আইএসআইএফ এশিয়া প্রোগ্রামের মর্যাদাপূর্ণ অনুদান অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তা খাতে এক নতুন অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছে টিম ফিনিক্স গ্রুপ। এই অনুদানের সহায়তায় সংস্থাটি বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তা খাতকে রূপান্তরিত করার এক অগ্রণী উদ্যোগ ‘সিকিউরনেট বিডি’ (SecureNet BD) চালু করতে যাচ্ছে।
এই প্রকল্পের আওতায় দেশে প্রথমবারের মতো গড়ে উঠবে সাইবার সিকিউরিটি সেন্টার অব এক্সিলেন্স (CCoE) এবং কমিউনিটি-নির্ভর সিকিউরিটি অপারেশনস সেন্টার (SOC) / কম্পিউটার সিকিউরিটি ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (CSIRT), যা হবে দেশের ডিজিটাল সক্ষমতা বৃদ্ধিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
বাংলাদেশে দ্রুত ডিজিটাল রূপান্তরের সঙ্গে সঙ্গে সাইবার হামলা এবং অনলাইন নিরাপত্তা হুমকির সংখ্যা ও জটিলতা অভূতপূর্ব হারে বাড়ছে। বিশেষত বড় শহরের বাইরে থাকা প্রতিষ্ঠান, এনজিও এবং কমিউনিটিগুলোতে নিরাপত্তা অবকাঠামো বা প্রশিক্ষণের সুযোগ সীমিত। এই প্রেক্ষাপটে সিকিউরনেট বিডি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, সহযোগিতামূলক এবং কমিউনিটি-চালিত সাইবার নিরাপত্তার ব্যবস্থা গড়ে তুলবে।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশব্যাপী ১,০০০ এরও বেশি ব্যক্তিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যার মধ্যে নারীদের অংশগ্রহণ কমপক্ষে ৩০% নিশ্চিত করা হবে। এছাড়া তৈরি হবে আধুনিক সাইবার রেঞ্জ (Cyber Range), যা হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ, স্থানীয় গবেষণা এবং বাস্তব সাইবার প্রতিরক্ষা অনুশীলনের সুযোগ সৃষ্টি করবে। প্রকল্পের অংশ হিসেবে চালু হবে ফেলোশিপ ও মেন্টরশিপ প্রোগ্রাম, যা ভবিষ্যতের সাইবার নিরাপত্তা নেতৃত্ব গড়ে তুলবে। পাশাপাশি কমিউনিটি এসওসি/সিএসআইআরটি একাডেমিক প্রতিষ্ঠান, অলাভজনক সংস্থা এবং স্থানীয় সংগঠনগুলোকে সাইবার হুমকি মোকাবিলায় সহায়তা করবে।
টিম ফিনিক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চিফ অব রিসার্চ এ. এস. এম. শামীম রেজা বলেন, “এই প্রকল্প শুধু প্রযুক্তি নিয়ে নয়, বরং মানুষের ক্ষমতায়নের গল্প। বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ ও কমিউনিটি-চালিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে সিকিউরনেট বিডি সাইবার নিরাপত্তাকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই এবং বাংলাদেশের বাস্তবতার সঙ্গে খাপ সামঞ্জস্যপূর্ণ করবে। আমাদের লক্ষ্য, ভবিষ্যৎমুখী কর্মশক্তি তৈরি করা এবং বাংলাদেশকে আঞ্চলিক সাইবার উদ্ভাবনের কেন্দ্রে রূপান্তর করা।”
সিকিউরনেট বিডি–এর এই দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও প্রগতিশীল উদ্যোগ বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তাকে আরও শক্তিশালী করবে এবং দেশটিকে দক্ষিণ এশিয়ায় কমিউনিটি-চালিত সাইবার নিরাপত্তার নেতৃত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারী।
বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টার দপ্তরে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারী বলেন, নেপালে ১১টি জুট মিল রয়েছে। নেপালের জুট মিলগুলো তাদের চাহিদা পূরণে বাংলাদেশ থেকে কাঁচাপাট আমদানির ওপর নির্ভরশীল। সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে কাঁচাপাট রপ্তানি বন্ধ করায় মিলগুলো কিছুটা সমস্যায় পড়েছে। এ সময় তিনি বাংলাদেশ থেকে কাঁচাপাট রপ্তানির অনুমতি শিথিল করার আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানান।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছে বাংলাদেশের পাটপণ্য ও কাঁচাপাটের চাহিদা রয়েছে। কাঁচাপাট রপ্তানি না করে বাংলাদেশ সেমি-ফিনিশড (আধা-প্রক্রিয়াজাত) পাটপণ্য রপ্তানি করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ উচ্চমানের ও পরিবেশবান্ধব সেমি-ফিনিশড পাটপণ্য উৎপাদন করছে। নেপাল এই পণ্যগুলো আমদানি করলে দুই দেশের বাণিজ্য ভলিউম বাড়বে এবং উভয় দেশই লাভবান হবে।
চীনা কোম্পানি অক্টোবর ৪১২৮ (বিডি) লিমিটেড চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে অবস্থিত বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে উচ্চ মানসম্পন্ন গার্মেন্ট উৎপাদনকারী একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপনে ১৯.৭২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে।
এ লক্ষ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বেপজা কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) এবং অক্টোবর ৪১২৮ (বিডি) লিমিটেডের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেনের উপস্থিতিতে বেপজার সদস্য (বিনিয়োগ উন্নয়ন) মো. আশরাফুল কবীর এবং অক্টোবর ৪১২৮ (বিডি) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ তৌফিকুল আহসান নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। বেপজার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এই প্রতিষ্ঠানটি বার্ষিক ৩০ লাখ পিস স্কি, স্নো স্পোর্টস, হান্টিং ও মোটর রাইডার গিয়ার, ইনসুলেটেড শীতকালীন কোট, ডাউন জ্যাকেট ও প্যান্ট, রেইন গিয়ার, ওয়ার্কওয়্যার, রানিংওয়্যার, ইয়োগাওয়্যার, এবং ওয়াটার স্পোর্টসওয়্যার তৈরি করবে।
প্রতিষ্ঠানটিতে ২ হাজার ৭৮৮ জন বাংলাদেশি নাগরিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সংস্থার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলকে বিনিয়োগের গন্তব্য হিসেবে বেছে নেওয়ায় প্রতিষ্ঠানটিকে ধন্যবাদ জানান এবং সুষ্ঠু ব্যবসায়িক কার্যক্রম নিশ্চিত করতে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
অক্টোবর ৪১২৮ (বিডি) লিমিটেডসহ এ পর্যন্ত মোট ৪৯টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের লক্ষ্যে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। যাদের মোট প্রস্তাবিত বিনিয়োগ প্রায় ১.০৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ৬টি প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে উৎপাদন শুরু করেছে। ক্রমাগত উন্নয়ন ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের কারণে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে আকর্ষণীয় বিনিয়োগ গন্তব্য হয়ে উঠেছে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বেপজার সদস্য (প্রকৌশল) আবদুল্লাহ আল মামুন, সদস্য (অর্থ) আ ন ম ফয়জুল হক, বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ এনামুল হক, নির্বাহী পরিচালক (জনসংযোগ) এ.এস.এম. আনোয়ার পারভেজ এবং অক্টোবর ৪১২৮ (বিডি) লিমিটেডের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈশ্বিক অর্থনীতির অনিশ্চয়তা, মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত ও বিনিয়োগে ধীরগতির প্রবণতার মধ্যেও বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে নিট এফডিআই প্রবাহ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ৬১ দশমিক ৫ শতাংশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সংস্থাটির মতে, এই প্রবৃদ্ধি প্রমাণ করে বিদেশি কোম্পানিগুলোর আস্থা বাংলাদেশের বাজারে বাড়ছে এবং তারা ব্যবসা সম্প্রসারণে আরও বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশে কার্যরত লাভজনক বিদেশি কোম্পানিগুলো তাদের মুনাফার একটি বড় অংশ পুনরায় বিনিয়োগ করছে। পুনঃবিনিয়োগের পরিমাণও গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ৬১ দশমিক ৫ শতাংশ। অর্থাৎ, বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু মুনাফা স্থানান্তর করছে না, বরং বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভবিষ্যৎ সম্প্রসারণের সম্ভাবনা দেখেই নতুন বিনিয়োগে এগিয়ে আসছে।
বিশ্বব্যাপী নতুন মূলধনের (গ্রিনফিল্ড এফডিআই) প্রবাহ কমলেও বাংলাদেশে এ খাতে রেকর্ড হয়েছে ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি। পাশাপাশি বিদেশি মূল কোম্পানিগুলোর স্থানীয় ইউনিটগুলোতে অর্থায়ন বা ইন্টার-কোম্পানি ঋণের হার এক বছরে বেড়েছে ২২৯ শতাংশ।
শুধু ছয় মাস নয়, পুরো অর্থবছরের চিত্রও আশাব্যঞ্জক। জুলাই ২০২৪ থেকে জুন ২০২৫ অর্থবছরে নিট এফডিআই প্রবাহ আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে ১৯ শতাংশেরও বেশি।
এদিকে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত সময়ে দেশের পাঁচটি বিনিয়োগ উন্নয়ন সংস্থা- বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা), বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ (বিএইচটিপিএ) ও বিসিকের মাধ্যমে নিবন্ধিত হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কোম্পানির মোট ১ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রস্তাবিত বিনিয়োগ। এর মধ্যে ৬৫ কোটি ডলারেরও বেশি এসেছে সরাসরি বিদেশি কোম্পানির পক্ষ থেকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার, ২০২৩ সালে বৃদ্ধি পেয়ে হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। আর ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসেই এ বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলারে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বৈশ্বিক মন্দার মধ্যেও এই প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগ পরিবেশের প্রতি বিদেশিদের আস্থার প্রতিফলন। তাদের মতে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অবকাঠামো উন্নয়ন ও দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ আগামী বছরগুলোতে আরও বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের পণ্য রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি কমেছে ২০ শতাংশ। আর গত চার মাসে এই পতনের হার প্রায় ৪০ শতাংশে পৌঁছেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
ভারত সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ২৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়া নতুন শুল্ক কাঠামোর পুরোপুরি প্রভাব পড়েছে সেপ্টেম্বর মাসে। এই শুল্কের মধ্যে রয়েছে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধে ভারতের অস্বীকৃতির কারণে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ জরিমানা।
দিল্লিভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের (জিটিআরআই) সহ-প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, শুল্ক বৃদ্ধির পর যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাজারে পরিণত হয়েছে।
জিটিআরআইয়ের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, শ্রমনির্ভর খাতগুলোর মধ্যে বস্ত্র, রত্ন ও গয়না, প্রকৌশলজাত পণ্য এবং রাসায়নিক খাত সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে। এসব খাতে রফতানি আয় ব্যাপকভাবে কমে গেছে।
মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি ছিল ৮ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। সেপ্টেম্বর নাগাদ তা নেমে আসে ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে। অর্থাৎ ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ হ্রাস পায়। পর পর চার মাস ধরে রপ্তানি কমতে থাকায় ভারতের বাণিজ্য ঘাটতিও বেড়েছে। সেপ্টেম্বরে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার, যা গত ১৩ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
তবে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও চীনের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধি কিছুটা ভারসাম্য রক্ষা করেছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
দীর্ঘ বিরতির পর গত মাসে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনা আবার শুরু হয়। চলমান আলোচনার লক্ষ্য আগামী মাসের মধ্যে একটি প্রাথমিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করা। একটি ভারতীয় প্রতিনিধি দল বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছে।
বুধবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে আশ্বস্ত করেছেন যে ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করবে। ওয়াশিংটন মনে করছে, এর মাধ্যমে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ক্রেমলিনের ওপর অর্থনৈতিক চাপ বাড়ানো সম্ভব হবে।
তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জ্বালানি সহযোগিতা বাড়াতে আলোচনা চলছে। বর্তমান মার্কিন প্রশাসন এই সহযোগিতা গভীর করতে আগ্রহ দেখিয়েছে।
অবশ্য কৃষি ও দুগ্ধ খাতের বাজার প্রবেশাধিকার নিয়ে এখনও বড় ধরনের মতপার্থক্য রয়ে গেছে। বহু বছর ধরে ওয়াশিংটন ভারতের কৃষি খাতকে সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবে দেখছে। কিন্তু নয়াদিল্লি খাদ্যনিরাপত্তা, কৃষকের জীবিকা ও অভ্যন্তরীণ বাজার রক্ষার কারণ দেখিয়ে এই খাতকে রক্ষা করে আসছে।
কিছু দিন আগেও যুক্তরাষ্ট্রই ছিল ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। ২০২৪ সালে দুই দেশের পারস্পরিক বাণিজ্য দাঁড়িয়েছিল ১৯০ বিলিয়ন ডলারে। ট্রাম্প ও মোদি দুজনই এই অঙ্ক ৫০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক শুল্কযুদ্ধ সেই লক্ষ্যকে এখন গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।
সর্বস্তরের জনগণকে ব্যাংকিং সেবা প্রদানের লক্ষ্যে শরীয়াহ্ ভিত্তিক ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি’র রয়েছে বিভিন্ন মেয়াদি আকর্ষণীয় বিশেষ আমানত প্রকল্প। পরিবারের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইউনিয়ন ব্যাংকের যে কোন একটি আমানত প্রকল্প বেছে নেওয়ার জন্য ১৭৪ টি শাখা ও উপশাখায় আপনাকে স্বাগতম।
দি প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসি ‘ইন্টিগ্রিটি ও এথিকস প্র্যাকটিস ইন ব্যাংকিং’ শীর্ষক এক গুরুত্বপূর্ণ কর্মশালার আয়োজন করে। সম্প্রতি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে লার্নিং অ্যান্ড ট্যালেন্ট ডেভেলপমেন্ট সেন্টারে (LTDC) এই কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয় ।
অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন দি প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসি ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ আবু জাফর, এবং অনুষ্ঠানে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য প্রদান করেন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান ডাঃ আরিফুর রহমান। তিনি টেকসই ব্যাংকিং ব্যবস্থায় সততা ও নৈতিকতার গুরুত্বের ওপর বিশেষভাবে আলোকপাত করেন।
কর্মশালার মূল লক্ষ্য ছিল ব্যাংকিং কার্যক্রমের প্রতিটি স্তরে নৈতিক মান, স্বচ্ছতা এবং উত্তম শাসননীতি প্রচার ও বাস্তবায়ন করা। প্রধান কার্যালয় এবং বিভিন্ন শাখার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন, যেখানে দৈনন্দিন ব্যাংকিং কার্যক্রমে সততা ও নৈতিক মূল্যবোধ বজায় রাখার বাস্তবসম্মত দিকগুলো আলোচিত হয়।
প্রযুক্তিগত অধিবেশনগুলো পরিচালনা করেন দি প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসি স্বতন্ত্র পরিচালক এম. নুরুল আলম, এফসিএস, বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)-এর যুগ্ম পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান খান, যুগ্ন পরিচালক, এবং বাংলালিংকের কমপ্লায়েন্স ডিরেক্টর মোহাম্মদ আদিল হোসেন, সিসিইপি। তাঁরা ব্যাংকিং খাতে নৈতিক সংস্কৃতি শক্তিশালীকরণ, নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিধি মেনে চলা এবং দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক আচরণ বিষয়ে মূল্যবান মতামত ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।
মন্তব্য