বাংলাদেশের ওষুধশিল্প হাঁটি হাঁটি পা পা করে অনেক দূর এগিয়েছে। দেশের ওষুধ এখন বিশ্ববাজারেও সমাদৃত হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানিসহ বর্তমানে ১৬০টি দেশে বাংলাদেশের ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে। মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পাশাপাশি এই শিল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
এত সাফল্যের পরও সম্ভাবনাময় এ শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) হিসেবে ওষুধ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন যে সুবিধা পাচ্ছে, উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হলে সেই সুবিধা আর থাকবে না। তখন বাংলাদেশের ওষুধশিল্পের অবস্থা কী হবে, কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৬ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পাবে। এরই মধ্যে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সুপারিশ করেছে।
উত্তরণকালীন বিভিন্ন বিষয়ে প্রস্তুতি চলছে বাংলাদেশের। বাজারসুবিধা, কম সুদে ঋণসহ নানান বিষয়ে আলোচনা শুরু হলেও ওষুধশিল্পের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে সরকারি-বেসরকারি মহলে তেমন কোনো আলোচনা হয় না বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বর্তমানে এলডিসি হিসেবে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কপিরাইট আইন বা ‘মেধাস্বত্ব ছাড়ের’ সুবিধা ভোগ করছে বাংলাদেশ, যার মেয়াদ ২০৩৩ সাল পর্যন্ত দেয়া আছে।
এই সুবিধার আওতায় ওষুধ উৎপাদনে বিদেশি পেটেন্ট ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশকে কোনো রয়্যালিটি বা কোনো ধরনের ফি দিতে হয় না। যে কারণে অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশ সস্তায় ওষুধ উৎপাদন করতে পারছে।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ‘বাণিজ্য-সংক্রান্ত মেধাস্বত্ব’(ট্রিপস) আইনে বাংলাদেশকে পেটেন্ট করার অধিকার দেয়া রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পাঁচ বছর পর ২০২৬ সালে যখন বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাবে, তখন এ সুবিধা আর থাকবে না। এতে করে বাংলাদেশের ওষুধশিল্প বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
কেননা, ওষুধ উৎপাদনে বিদেশি পেটেন্ট ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে রয়্যালটি বা ফি দিতে হবে। ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে ওষুধের। যার প্রভাব পড়তে পারে ওষুধের দামের ওপর। কিছু ওষুধের দাম এমন অবস্থায় যেতে পারে যে, সব মানুষের পক্ষে সব ওষুধ কেনা সম্ভব না-ও হতে পারে, এমন আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, একটি ওষুধ উদ্ভাবন বা ফর্মুলা আবিষ্কারের জন্য সার্বিক গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে বিপুল অর্থ ও সময় প্রয়োজন। তাই, সরকার কিংবা বেসরকারি ওষুধ উৎপাদনকারীরা এ ব্যাপারে আগ্রহী নন।
এ অবস্থায় দেশীয় ওষুধশিল্পের সুরক্ষায় এখন থেকেই প্রয়োজনীয় প্রস্ততি নিতে হবে। সক্ষমতা অর্জনের মধ্য দিয়ে দেশের ওষুধশিল্পকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে।
বর্তমানে অন্য দেশে থেকে পেটেন্ট (ফর্মুলা) নিয়ে এসে বাংলাদেশ যে ওষুধ উৎপাদিত হচ্ছে, তার কাঁচামালও আসছে বিদেশ থেকে।
বাংলাদেশে ওষুধের কাঁচামালের ৮৫ শতাংশ আমদানিনির্ভর।
পরিসংখ্যান বলে, বাংলাদেশ যদি ওষুধের কাঁচামালও উৎপাদন করতে পারে, তবে প্রায় ৭ বিলিয়ন বা ৭০০ কোটি ডলার (প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা) রপ্তানি আয় করা সম্ভব।
এক যুগেও হয়নি এপিআই পার্ক
দেশীয় ওষুধশিল্পের প্রসার, প্রতিযোগিতামূলক বাজার সৃষ্টি করতে পণ্যের বৈচিত্র্যকরণ, ওষুধের মান উন্নয়নে গবেষণা করা এবং প্রয়োজনীয় কাঁচামাল যেন বাংলাদেশেই উৎপাদন করা যায়, সেই লক্ষ্যে ২০০৮ সালে দেশে একটি পৃথক ওষুধশিল্প পার্ক গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয় এবং একই বছরের ডিসেম্বরে একটি প্রকল্প ‘একনেকে’ অনুমোদন দেয়া হয়।
পোশাকি ভাষায় এই পার্কের নাম ‘অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রিডিয়েন্ট’ বা এপিআই নামে পরিচিতি। যেখানে ৪২টি ওষুধ কোম্পানিকে প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এত বছর পরও এ পার্কের কাজের তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি।
যোগাযোগ করা হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান আ ব ম ফারুক নিউজবাংলাকে বলেন, বেসরকারি কোম্পানিগুলো এপিআই-এর অবকাঠামো ঠিকমতো তৈরি করছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
এর বাস্তবায়ন দ্রুত সম্পন্ন করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, এপিআই হলে ওষুধশিল্পের কাঁচামালের আমদানি নির্ভরতা কমবে। শুধু তা-ই নয়, কাঁচামাল রপ্তানি করা সম্ভব হবে। তিনি মনে করেন, সময়মতো এপিআই পার্ক না হওয়াটাই ওষুধশিল্পের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বাংলাদেশ এখন বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অন্য দেশ থেকে জেনেরিক বা ফমুর্লা কপি করে ওষধু উৎপাদন করে। ‘ট্রিপসের’ আওতায় বাংলাদেশকে এ অধিকার দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ যখন এলডিসি থাকবে না, তখন এই সুবিধা বাতিল হবে। এতে করে দেশের ওষুধশিল্প চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। ফলে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এখন থেকে প্রস্তুতি নেয়া দরকার বলে জানান তিনি।
কী ধরনের প্রস্ততি নিতে হবে জানতে চাইলে এই গবেষক বলেন, শিল্পের সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে। কাঁচামালের সিংহভাগ যাতে দেশেই উৎপন্ন হয়, সে পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ওষুধশিল্পে বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) খুবই কম। এ খাতে প্রচুর এফডিআই আনতে হবে।
তবে এটিকে অত বড় শঙ্কার বিষয় বলে মনে করেন না বাংলাদেশ ওষুধশিল্প সমিতিরি সভাপতি শফিউজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘ভয়ের কোনো কারণ দেখছি না। এলডিসি-উত্তর দেশের ওষুধশিল্পকে বড় ধরনের কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাাবিলা করতে হবে না।
‘আমাদের ওষুধ এখন বিশ্বমানে পৌঁছে গেছে। যুক্তরাজ্য, জার্মানিসহ বড় বড় বাজারে ওষুধ যাচ্ছে।’
উন্নয়নশীল দেশ হলে এ শিল্পে কিছুটা চ্যালেঞ্জ আসতে পারে এ কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ওষুধের দাম বাড়লেও তা বাড়বে সামান্য। তাতে খুব একটা প্রভাব পড়বে না।
সিপিডির গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বাংলাদেশের দাবি হচ্ছে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পরও যাতে ২০৩৩ সাল পর্যন্ত ট্রিপস ছাড়ের সুবিধা বহাল রাখা হয়। ভবিষ্যতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বৈঠকে যে দরকষাকষি হবে, সেখানে এই বিষয়টিকে প্রাধান্য দিতে হবে।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সাধারণ সভা
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি মাসের ২৬ ও ২৭ জুলাই জেনেভায় বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সাধারণ কাউন্সিল সভা অনুষ্ঠিত হবে। ওই সভায় বাণিজ্য-সংক্রান্ত মেধাস্বত্ব আইন বা ট্রিপস নিয়ে আলোচনা হবে। এতে বাংলাদেশের ওষুধশিল্প প্রসঙ্গটি নিয়ে আলোচনা হবে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে জানান।
সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ও জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির সদস্য ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, শুধু জেনেভাভিত্তিক আলোচনা করে দাবি আদায় করা যাবে না। এর জন্য শক্তিশালী রাজনৈতিক তদবির লাগবে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপানসহ বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের বড় বড় মিশনগুলোকে কাজে লাগাতে হবে। দেশের উন্নয়ন সহযোগিদের সমর্থন আদায় করতে হবে।
তিনি মনে করেন, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে পরিণত হতে হলে প্রস্তুতিপর্বে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে মেধাস্বত্বের অনুষঙ্গ। এটি আগামী দিনের অর্থনীতিতে নেতৃত্ব দেবে। ফলে জেনেভায় দরকষাকষিতে বাংলাদেশকে এ বিষয়ের ওপর বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
ড. দেবপ্রিয় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘অতীতে দেখা গেছে, ট্রিপস বা বাণিজ্য-সংক্রান্ত মেধাস্বত্ব আলোচনায় ওষুধশিল্প নিয়ে যে আলোচনা হয়েছে, সেখানে আরও সুবিধা দাও, এটা চাই ওটা চাই- এসবের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু এ শিল্পকে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য কার্যকর কোনো কিছু আলোচনা করতে দেখা যায়নি।’
তিনি প্রশ্ন করেন, এ শিল্প প্রায় ৪০ বছর ধরে সুবিধা পেয়ে আসছে, অথচ এখন পর্যন্ত নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেনি, এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে?
রপ্তানি বাড়ছে
বর্তমানে দেশীয় চাহিদার ৯৮ শতাংশ পূরণ করে ওষুধ রপ্তানি হয় বিশ্বের প্রায় ১৬০ দেশে। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক মিলে এ শিল্পের বার্ষিক বাজারমূল্য দাঁড়িয়েছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা।
খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এ মুহূর্তে ওষুধশিল্পের প্রধান চ্যালেঞ্জ কাঁচামাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন। তাহলে আরও এগিয়ে যাবে এ খাত।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, করোনাকালে সদ্য বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরে ওষুধ রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ১৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার বা সমপরিমাণ ১ হাজার ৪৩৩ কোটি টাকা। আলোচ্য অর্থবছরে ওষুধে আয় বেড়েছে বা প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় সাড়ে ২৪ শতাংশ।
এর আগের অর্থবছরে অর্থাৎ ২০১৯-২০ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছিল প্রায় ১৩ কোটি ৬০ লাখ ডলার বা ১ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা।
আসছে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে ‘বেসরকারি’ খাতের জন্য সংকোচন নীতি নেওয়া হলেও সরকারের জন্য তা দেখছেন না বলে মন্তব্য করেছেন ব্যবসায়ী নেতা ও বিএনপির সহসভাপতি আব্দুল আউয়াল মিন্টু।
গতকাল শনিবার ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির ‘বাজেট বিতর্ক: প্রসঙ্গ-অনুষঙ্গ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা মূল্যস্ফীতিকে দমন করার জন্য সুদের হার বাড়ায়া দিছি। ভালো কথা। আমরা সংকুচিত রাজস্ব নীতি করতে গিয়ে বাজেটের আকার ৭ থেকে ৮ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে দিছি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে কী, যে এটা বেসরকারি খাতের জন্য, বেসরকারি খাতের জন্যই শুধু সংকুচিত মুদ্রানীতি এবং সংকুচিত রাজস্ব নীতি।
‘যেই মাত্র এটা সরকারের জন্য, সরকারের জন্য আসে তখন আর এটা ওদের (সরকারের) জন্য সংকুচিত না।’
উদাহারণ দিয়ে মিন্টু বলেন, ‘গত দেড় বছরে বাংলাদেশে মোট ৩ লাখ কোটি টাকা ব্যাংকে আমানত পাইছে। এর ভিতরে ২ লাখ ৭০ কোটি টাকা নিয়ে গেছে সরকার। তো তাদের জন্য সংকুচিত রাজস্বনীতি তো আমি দেখতেছি না।’
এজন্য সরকারকে সকল দিক বিবেচনায় এনে ‘বিচার-বিশ্লেষণ’ করে নীতি গ্রহণের পরামর্শ দেন এ ব্যবসায়ী।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তরফে বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কারের কথা বলা হলেও বিএনপি নেতা মিন্টু মতে, তা দেখা যাচ্ছে না।
প্রস্তাবিত বাজেটেও অর্থনীতির চিহ্নিত সমস্যার সংস্কার দেখা না যাওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘একদিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কম, আরেক দিক থেকে মূল্যস্ফীতি বেশি। এই দুইটার সমন্বয়ের যে পরিস্থিতি আমরা দেখছি আমাদের দেশে, সেটা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য কিছু সংস্কার করা যেত এই বাজেটে। কিন্তু সেটা আসলে আমি দেখি নাই।’
গত ২ জুন নতুন অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বাজেটের আকার ছোট করলেও তা হয়েছে উন্নয়ন বাজেটে, যার দ্বারা সরাসরি উপকৃত হয় দেশের নাগরিক।
অপরদিকে অনুন্নয়ন বা পরিচালন ব্যয় আগামী অর্থবছরের বাজেটে ২৮ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা।
বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে পরিচালন ব্যয় ছিল ৫ লাখ ৬ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা। আর সংশোধিত পরিচালন ব্যয়ের আকার দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা।
আসছে অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে নেওয়া হবে ১ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ২ শতাংশ।
অভ্যন্তরীণ অন্য উৎসের মধ্যে সরকার ব্যাংক খাত থেকে নিতে চায় ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ১ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এছাড়াও সঞ্চয়পত্রপত্র থেকে ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ও নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সরকার ২১ হাজার কোটি টাকা নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।
‘দুর্নীতির বিষয়ে জাতীয় ঐক্যমত্য’ দেখছেন উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের পরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন আলোচনা সভার প্রধান অতিথি মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
‘অন্দরমহলের খবর দিতে চাই’- এ কথা বলে তিনি তার নয় মাসের উপদেষ্টা জীবনের তদবিরের গল্প তুলে ধরেন।
বলেন, ‘একটা জিনিসের ব্যাপারে আমি জাতীয় ঐক্যমত্য দেখতে পেয়েছি। সেটা হচ্ছে, দুর্নীতির বিষয়ে জাতীয় ঐক্যমত্য। সবাই দুর্নীতি করতে চান। কেউ কিন্তু বাদ নাই। রাজনীতিবিদ, আমলা, অধ্যাপক, কেউ বাদ নেই।’
উদাহরণ দিয়ে বলেন, আপনারা দেখবেন যে প্রথম আলোতে একটা সংবাদ এসেছে যে আমি যেগুলো দেখি (যে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত) তার মধ্যে একটা হচ্ছে সেতু বিভাগ। সেতু বিভাগের তারা করেছেন কী, যারা ক্ষতিগ্রস্ত তাদের পুনর্বাসনের জন্য কতগুলো ভবন করেছেন। তো ভবন করতে গিয়ে ওনারা আবিষ্কার করলেন যে কিছু জায়গা বেঁচে গেছে।
‘তো এখন কী করতে হবে? তো এটা সব সরকারি কর্মকর্তাদের দিতে হবে। অথচ সেতু বিভাগের ভবন বানানো কিংবা আবাসনের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয়ই আছে। যেটাকে আমরা পূর্ত মন্ত্রণালয় বলে থাকি। …এখানে অকল্পনীয় ছিল যে ক্যাবিনেট সচিবরা পর্যন্ত অন্যায়-উপঢৌকন গ্রহণ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এ অন্যায়-উপঢৌকন গ্রহণ করেছেন।’
তদবির প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘এই যে আমরা যে অফিসে আসি। আমার সঙ্গে এখন তো রাজনীতিবিদরাও দেখা করেন। কিন্তু কেউই কিন্তু চান না যে দুর্নীতির অবসান হোক। সবাই চান যে দুর্নীতি চলুক, তবে দুর্নীতিটা এবার আমাকে করার সুযোগ দিতে হবে।
‘সবাই বলেন, দেখেন ফ্যাসিস্ট আমলে জানেনই তো ব্যবসা করতে পারি নাই, এখন একটু খেয়াল রাখবেন। তো আমরা সে পথে যাচ্ছি না।’
এর বিপরীতে সরকারের চেষ্টা বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি যে অর্থনীতিতে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করা। যেই ব্যবসা পাবেন, প্রতিযোগিতা হবে সেখানে। আমরা সবকিছু উন্মুক্ত করে দিয়েছি।’
আসছে জুলাই-আগস্টে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে বলেও উপদেষ্টা আশার কথা শোনান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমিতির আহ্বায়ক মাহবুব উল্লাহ।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশের নামে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ বেড়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক (এসএনবি) বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে ২০২৪ সালে তাদের দেশের ব্যাংকগুলোর দায় ও সম্পদের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে।
প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সাল শেষে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে বাংলাদেশের নামে পাওনা রয়েছে ৫৯ কোটি ৮২ লাখ সুইস ফ্রাঁ। বাংলাদেশি মুদ্রায় ( প্রতি ফ্রাঁ ১৫০ টাকা ধরে ) যার পরিমাণ ৮ হাজার ৯৭২ কোটি টাকা। ২০২৩ সাল শেষে যার পরিমাণ ছিল ২ কোটি ৬৪ লাখ ফ্রাঁ। এখনকার বিনিময় হার ধরলে যার পরিমাণ ৩৯৬ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশের নামে থাকা অর্থের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ২৩ গুণ। ২০২২ সাল শেষে বাংলাদেশের কাছে সুইজারল্যান্ডের দায় ছিল ৫ কোটি ৮৪ লাখ সুইস ফ্রাঁ বা প্রায় ৮৭৬ কোটি টাকা।
সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে দায়ের মধ্যে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর পাওনা, আমনাতকারীদের পাওনা এবং পুঁজিবাজারে বাংলাদেশের নামে বিনিয়োগের অর্থ রয়েছে। এর মধ্যে ৯৫ শতাংশের বেশি বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর পাওনা, যা বাণিজ্য কেন্দ্রিক অর্থ বলে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে থাকা অর্থের একটি অংশ পাচার করা সম্পদ হতে পারে বলে ধারণা রয়েছে। তবে এ বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। কয়েক বছর ধরে সুইজারল্যান্ড বার্ষিক ব্যাংকিং পরিসংখ্যান প্রকাশ করছে। বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বা বিএফআইইউ সুইজারল্যান্ডের এফআইইউর সঙ্গে কয়েক দফা যোগাযোগও করেছিল। কিন্তু ব্যক্তির তালিকা সম্বলিত কোনো তথ্য তারা দেয়নি।
সুইজারল্যান্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, অবৈধভাবে কেউ অর্থ নিয়ে গেছে এমন প্রমাণ সরবরাহ করলে তারা তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে পারে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের কোনো নাগরিক বা প্রতিষ্ঠান যদি নিজের বদলে অন্য দেশের নামে অর্থ গচ্ছিত রাখে তাহলে তা সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশের নামে থাকা পরিসংখ্যানের মধ্যে আসেনি। একইভাবে সুইস ব্যাংকে গচ্ছিত রাখা মূল্যবান শিল্পকর্ম, স্বর্ণ বা দুর্লভ সামগ্রীর আর্থিক মূল্যমান হিসাব করে এখানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। অনেক দেশের নাগরিকই মূল্যবান সামগ্রী সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকের ভল্টে রেখে থাকেন।
বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের শ্রীলঙ্কায় তথ্য-প্রযুক্তি ও ওষুধ খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার উপপররাষ্ট্র ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী আরুন হেমাচন্দ্র এবং উপ-অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী ড. হর্ষনা সুরিয়াপেরুমা।
গতকাল বৃহস্পতিবার কলম্বোয় শ্রীলঙ্কা সফররত ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এই আহ্বান জানান তারা। ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি দেশটির পররাষ্ট্র ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পৃথক দুটি বৈঠকে অংশ নেয়।
বাংলাদেশি ব্যবসায়ী নেতারা শ্রীলঙ্কার উপপররাষ্ট্র ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী আরুন হেমাচন্দ্র এবং উপঅর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী ড. হর্ষনা সুরিয়াপেরুমার সঙ্গে কলম্বোতে তাদের নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের দপ্তরে সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাৎকালে আরুন হেমাচন্দ্র বলেন, দুই দেশের বেসরকারি খাতের মধ্যে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হলে আগামীতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে। শ্রীলঙ্কা ইতোমধ্যে থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করেছে এবং বাংলাদেশ সঙ্গে সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে বিশ্লেষণ চলছে।
বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কার সম্ভাবনাময় খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে এলে সরকার পূর্ণ সহায়তা দেবে।
তিনি বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের তার দেশের সম্ভাবনাময় খাতসমূহে বিনিয়োগের আহ্বান জানান এবং এলক্ষ্যে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন।
সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানসমূহে ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ জানান, ভূ-রাজনৈতিক কারণে বর্তমানে বৈশ্বিক বাণিজ্যের ধারা পরিবর্তন হচ্ছে এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, যদিও বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক, তবে প্রযুক্তি, পণ্যের মূল্য সংযোজন এবং উদ্ভাবনের দিক থেকে শ্রীলংকা বেশ এগিয়ে রয়েছে।
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যেও প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। যেখানে দুদেশের বেসরকারিখাতের যৌথ উদ্যোগে ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে পারে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
তিনি আরো বলেন, বন্ধুত্বপূর্ণ উভয় দেশের মধ্যে একটি এফটিএ স্বাক্ষর হলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এবং জনগণের মধ্যকার সংযোগ আরও সুদৃঢ় হবে। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি জানান, বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো শ্রীলংকার ব্যবসায়িক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে অত্যন্ত আগ্রহী এবং শ্রীলংকার উদ্যোক্তারাও বাংলাদেশে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, বাংলাদেশ ও শ্রীলংঙ্কার অর্থনীতি প্রায় একই ধাঁচের যেখানে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) বাস্তবিক অর্থে ততটা কার্যকর হবে না। এক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষর হলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আরও ত্বরান্বিত হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
ডিসিসিআই’র ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে পৃথক এক বৈঠকে শ্রীলংকার উপ-অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী ড. হর্ষনা সুরিয়াপেরুমা বলেন, আমাদের একসাথে কাজ করার অবারিত সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে তথ্য-প্রযুক্তি ও ডিজিটাল সেবা, ঔষধ, চা, জ্বালানি, আর্থিক সেবা ও পর্যটন খাত যৌথ বিনিয়োগের জন্য প্রচুর সম্ভাবনাময়।
তিনি জানান, শ্রীলংকা ইতোমধ্যেই একটি উচ্চাভিলাষী ডিজিটাল রোডম্যাপ প্রণয়ন করেছে এবং এই পরিকল্পনার অধীনে আগামী দুই বছরের মধ্যে দেশকে একটি পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল রাষ্ট্রে রূপান্তর এবং প্রতিটি সেবা স্বয়ংক্রিয় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
তিনি বলেন, শ্রীলংকায় অত্যাধুনিক ডেটা সেন্টার স্থাপনের ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। যেখানে বাংলাদেশের উদ্যোক্তাবৃন্দ এগিয়ে আসতে পারেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের শ্রীলংকার ঔষধ শিল্পে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। যাতে দেশটির স্থানীয় চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।
ডিসিসিআই’র ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী ও সহ-সভাপতি মো. সালিম সোলায়মান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘর্ষ নিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার বক্তব্য আরও কঠোর করার পর মঙ্গলবার ওয়াল স্ট্রিটের শেয়ারবাজারে পতন ঘটে, যা যুদ্ধকে আরও সম্প্রসারণ করার আশঙ্কা তৈরি করেছে।
নিউইয়র্ক থেকে এএফপি এ সংবাদ জানিয়েছে, ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধের পঞ্চম দিনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প ইরানের নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ দাবি করেন এবং মার্কিন হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত দেন।
ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ সূচক ০.৭ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৪২,২১৫.৮০ পয়েন্টে। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ০.৮ শতাংশ কমে ৫,৯৮২.৭২ পয়েন্টে এবং প্রযুক্তি খাতভিত্তিক ন্যাশডাক কম্পোজিট ০.৯ শতাংশ কমে ১৯,৫২১.০৯ পয়েন্টে নেমে আসে।
ইরান-ইসরায়েল সংঘর্ষ এখন বিনিয়োগকারীদের প্রধান উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। একই সময়ে তারা ফেডারেল রিজার্ভের দিকে নজর রাখছে। যা বর্তমানে দুই দিনের আর্থিক নীতিমালা বৈঠকে রয়েছে।
ফেডারেল রিজার্ভ আপাতত সুদের হার অপরিবর্তিত রাখবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে, কারণ, তারা ট্রাম্পের শুল্কের প্রভাবে মুদ্রাস্ফীতির গতিপ্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করছে।
গতকাল বুধবার ফেড তাদের সর্বশেষ অর্থনৈতিক পূর্বাভাস প্রকাশ করবে, যাতে থাকবে প্রবৃদ্ধি, বেকারত্ব এবং মুদ্রাস্ফীতির হালনাগাদ তথ্য।
এদিকে, বিনিয়োগকারীরা দুর্বল অর্থনৈতিক তথ্যের প্রভাবও মূল্যায়ন করছেন। মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের মোট খুচরা বিক্রি এপ্রিলের তুলনায় ০.৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৭১৫.৪ বিলিয়ন ডলারে। এই তথ্য ইঙ্গিত দেয় যে, এপ্রিলে শুল্ক বৃদ্ধির আশঙ্কায় যে ভোক্তারা আগেভাগে পণ্য কিনে নিয়েছিলেন, মে মাসে সেই কেনাকাটার গতি কমে গেছে।
এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচকের ১১টি খাতের মধ্যে ১০টিতেই দরপতন হয়েছে। একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল জ্বালানি খাত, যা তেলের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে ঊর্ধ্বমুখী ছিল।
প্রতিরক্ষা খাতভুক্ত কোম্পানিগুলোও লাভ করেছে। লকহিড মার্টিন ২.৬ শতাংশ এবং নর্থরপ গ্রুমান ১.২ শতাংশ বেড়েছে।
তরুণদের কাছে জনপ্রিয় টেক ব্র্যান্ড রিয়েলমি কোম্পানির স্মার্টফোনের খুচরা যন্ত্রাংশ ক্রয়ে সম্প্রতি ১০ শতাংশ ডিসকাউন্ট ঘোষণা করেছে। রিয়েলমি সার্ভিস ডে উপলক্ষ্যে এই ক্যাম্পেইনের অফার চলবে ১৮ জুন পর্যন্ত।
এ ক্যাম্পেইন চলাকালে ইউজাররা সকল অ্যাকসেসরিজ ও সেফগার্ড সার্ভিসে ১০ শতাংশ ডিসকাউন্ট লুফে নিতে পারবেন। শুধুমাত্র দেশজুড়ে অবস্থিত রিয়েলমি’র অথরাইজড সার্ভিস সেন্টারগুলো থেকে এই অফার পেতে পারবেন গ্রাহকরা।
এছাড়াও- স্মার্টফোনের ওয়ারেন্টি বিষয়ক সার্ভিস, ক্লিনিং ও মেইনটেন্যান্স, সফটওয়্যার আপগ্রেডেশন, প্রটেক্টিভ পেপার ফিল্মস ও প্রটেক্টিভ ফোন কেসে থাকবে বিভিন্ন ছাড়।
এখানে উল্লেখ্য যে- ঘোষিত অফারটি শুধুমাত্র রিয়েলমি’র অফিসিয়াল স্মার্টফোনগুলোর জন্যই প্রযোজ্য।
এসব অফার ছাড়াও- রিয়েলমি অথরাইজড সার্ভিস সেন্টারে ডিভাইস পাঠানোর ক্ষেত্রে গ্রাহকরা তাদের রিয়েলমি অথরাইজড কালেকশন পয়েন্টস ব্যবহার করতে পারবেন।
অফার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ইউজাররা ফেসবুকে রিয়েলমি’র অফিসিয়াল আফটার-সেল সার্ভিস পেজ "realme Service BD" ভিজিট করতে পারেন।
তাই ভিজিট করুন আপনার কাছেরই কোনো আউটলেট এবং ক্যাম্পেইন শেষের আগেই ডিসকাউন্ট উপভোগ করুন
১৬ জুন, ২০২৫ তারিখে ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি. এর নবগঠিত পরিচালনা পর্ষদের ৪০তম সভা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়, গুলশান-১, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান জনাব মুঃ ফরীদ উদ্দীন আহমদ। সভায় পর্ষদের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান জনাব মোঃ হুমায়ুন কবীর, স্বতন্ত্র পরিচালক ড. শহিদুল ইসলাম জাহীদ, জনাব মোহাম্মদ সাইফুল আলম এবং ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও জনাব মোঃ হুমায়ুন কবির উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক সর্বজনাব শফিউদ্দিন আহমেদ এবং মোহাম্মদ ইকবাল কার্যপোলক্ষ্যে সভায় যোগদান করেন। সভায় ব্যাংকের ব্যবসা বাণিজ্য, আমানত ও রেমিট্যান্স সংগ্রহ বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগ আদায়ে বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়।
মন্তব্য