মহামারি করোনাভাইরাসের ধাক্কায় বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ ব্যাপকহারে কমে গেছে।
২০২০ সালে মোট ৩৩৭ কোটি ৮৫ লাখ (৩.৩৭ বিলিয়ন) ডলারের সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে বাংলাদেশে। এই অঙ্ক ২০১৯ সালের চেয়ে ১৫ দশমিক ৪ শতাংশ কম। আর ২০১৮ সালের চেয়ে কম প্রায় ২৬ শতাংশ।
২০১৯ সালে ৩৯৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার এফডিআই পেয়েছিল বাংলাদেশ। ২০১৮ সালে এসেছিল ৪৫৪ কোটি ৬২ লাখ ডলার; যা একক বছরে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বিদেশি বিনিয়োগ।
ওই বছরে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করে জাপানের কোম্পানি জাপান টোব্যাকো। আকিজ গ্রুপের তামাক ব্যবসা কেনা বাবদ প্রায় ১৫০ কোটি (১.৫ বিলিয়ন) ডলার বিনিয়োগ করেছিল তারা।
২০২০ সালে নিট এফডিআই কমেছে প্রায় ১১ শতাংশ। ২০২০ সালে নিট এফডিআইয়ের পরিমাণ ছিল ২৫৬ কোটি ৩৬ লাখ ডলার। ২০১৯ ও ২০১৮ সালে নিট এফডিআইয়ের অঙ্ক ছিল যথাক্রমে ২৮৭ কোটি ৩৯ লাখ ও ৩৬১ কোটি ৩৩ লাখ ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ ও বিদেশি ঋণ’ শীর্ষক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ঈদের ছুটির আগে সোমবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
আঙ্কটাডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহামারির ধাক্কায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে। উন্নয়নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই বিনিয়োগপ্রবাহ আগের অবস্থায় আসতে সময় লাগবে। ছবি: সংগৃহীত
প্রতিবেদনে বিদেশি বিনিয়োগে এই ধসের জন্য করোনাভাইরাস মহামারিকে দায়ী করে বলা হয়েছে, ‘কোভিড-১৯ এর কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দিয়েছে। তার প্রভাব বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশের বিদেশি বিনিয়োগে পড়েছে।’
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বাংলাদেশে আগের মতোই বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে বলে প্রতিবেদনে আশা করা হয়েছে।
গত ২১ জুন জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা আঙ্কটাড ‘বিশ্ব বিনিয়োগ প্রতিবেদন ২০২১’- প্রকাশ করেছে। তাতেও বাংলাদেশে এফডিআই কমার তথ্য দিয়ে বলা হয়েছে, মহামারির ধাক্কায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে। উন্নয়নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই বিনিয়োগপ্রবাহ আগের অবস্থায় আসতে সময় লাগবে।
আঙ্কটাডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে মোট ২৫৬ কোটি ৪০ লাখ (২.৫৬ বিলিয়ন) ডলারের সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) পেয়েছে বাংলাদেশে। এই অঙ্ক আগের বছরের চেয়ে ১০ দশমিক ৮ শতাংশ কম। ২০১৯ সালে এর পরিমাণ ছিল ২৮৭ কোটি ৪০ লাখ ডলার।
অর্থাৎ ২০২০ সালে বাংলাদেশে যে নিট বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছে সেই তথ্যের উপর ভিত্তি করে এফডিআইয়ের তথ্য প্রকাশ করেছে আঙ্কটাড।
আন্তর্জাতিক রীতি অনুযায়ী বিদেশি কোম্পানিগুলো তিনভাবে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারে। ১. মূলধন হিসাবে নগদ বা শিল্পের যন্ত্রপাতি হিসাবে, বাংলাদেশে ব্যবসা করে অর্জিত মুনাফা বিদেশে না নিয়ে পুনবিনিয়োগ করে এবং এক কোম্পানি অন্য কোম্পানি থেকে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করতে পারে।
এ তিন পদ্ধতির যে কোনোভাবে দেশে বিনিয়োগ আসলে তা এফডিআই হিসাবে গণ্য করা হয়।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক বছরের এফডিআইয়ের যে তথ্য প্রকাশ করে তাতে বিদেশি বিনিয়োগে এখনও ইতিবাচক ধারায় রয়েছে বাংলাদেশ।
৩০ জুলাই শেষ হওয়া ২০২০-২১ অর্থবছরের ১১ মাসে (২০২০ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২১ সালের ৩১ মে) মোট ৩২২ কোটি ৭০ লাখ ডলার এফডিআই পেয়েছে বাংলাদেশ; যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৮ দশমিক ১১ শতাংশ বেশি।
এই ১১ মাসে নিট এফডিআইয়ের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ১২৬ কোটি ডলার। প্রবৃদ্ধি ৩০ শতাংশ।
২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে মোট ২৯৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার এসেছিল। নিট এফডিআইয়ের পরিমাণ ছিল ১১৯ কোটি ১০ লাখ ডলার।
বিভিন্ন খাতে মোট যে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আসে, তা থেকে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান মুনাফার অর্থ দেশে নিয়ে যাওয়ার পর অবশিষ্ট অংককে নিট এফডিআই বলা হয়।
মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে হতে যাচ্ছে দেশের প্রথম পোশাকপল্লি। ছবি: সংগৃহীত
প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, ২০২০ সালে বিদেশ থেকে মূল পুঁজি আনা ও কোম্পানিগুলোর অর্জিত মুনাফা থেকে পুনরায় বিনিয়োগ সামান্য বেড়েছে। কিন্তু বিদেশি এক কোম্পানি থেকে অন্য কোম্পানির ঋণ ব্যাপকভাবে কমেছে। এ কারণে সার্বিকভাবে বিদেশি বিনিয়োগ কমে গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে মূল পুঁজি বিনিয়োগ বেড়েছে ৪ দশমিক ৮ শতাংশ। কোম্পানিগুলোর অর্জিত মুনাফা থেকে পুনরায় বিনিয়োগ বেড়েছে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ। এক কোম্পানি থেকে অন্য কোম্পানির ঋণ কমেছে ৭৪ দশমিক ৩ শতাংশ।
মূলত মূল পুঁজি ও অর্জিত মুনাফা থেকে বিনিয়োগ বেশি হারে না বাড়ায় এবং এক কোম্পানি থেকে অন্য কোম্পানির ঋণের পরিমাণ ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ায় সার্বিকভাবে বিনিয়োগের পরিমাণ কমে গেছে।
২০১৯ সালে এক কোম্পানি থেকে অন্য কোম্পানির ঋণের পরিমাণ ছিল ৬০ কোটি ২৯ লাখ ডলার। গত বছর তা কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ কোটি ৫২ লাখ ডলারে।
২০২০ সালে মোট বিদেশি বিনিয়োগের মধ্যে বিদ্যুৎ খাতে ১৯ দশমিক ৮ শতাংশ, ব্যাংকিং খাতে ১১ দশমিক ৮ শতাংশ, টেক্সটাইলে ১০ দশমিক ৬ শতাংশ, টেলিকমিউনিকেশনে ১০ দশমিক ১ শতাংশ, খাদ্যে ১৩ শতাংশ এবং অন্যান্য খাতে ৩৪ দশমিক ৭ শতাংশ বিনিয়োগ হয়েছে।
গত বছর দেশে আসা মোট এফডিআইয়ের মধ্যে ৩২ দশমিক ৯ শতাংশ মূল পুঁজি, ৬১ দশমিক ১ শতাংশ মুনাফা থেকে পুনরায় বিনিয়োগ এবং ৬ শতাংশ এক কোম্পানি থেকে অন্য কোম্পানির ঋণ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৬ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ২৫ বছরে দেশে মোট ২ হাজার ৫৫০ কোটি ৮৫ লাখ ডলার এফডিআই এসেছে। এর মধ্যে মূল পুঁজি এসেছে ৯১২ কোটি ১০ লাখ ডলার, যা মোট বিনিয়োগের ৩৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ। মুনাফা থেকে ও ঋণ থেকে বিনিয়োগ হয়েছে বাকি ৬৪ দশমিক ২৪ শতাংশ। অর্থাৎ মূল বিনিয়োগ মাত্র এক তৃতীয়াংশ।
এই সময়ে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা মোট বিনিয়োগের ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ বিনিয়োগ করেছে। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে সিঙ্গাপুর। তারা মোট বিনিয়োগের ১৬ দশমিক ১ শতাংশ করেছে। তৃতীয় অবস্থানে নেদারল্যান্ডের বিনিয়োগ ৭ দশমিক ৩ শতাংশ।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের ৬ দশমিক ৭ শতাংশ, মালয়েশিয়ার ৬ দশমিক ৩ শতাংশ, চীনের ৬ দশমিক ৩ শতাংশ, মিশরের ৬ দশমিক ২ শতাংশ, যুক্তরাজ্যের ৬ দশমিক ১ শতাংশ, হংকংয়ের ৩ দশমিক ৯ শতাংশ এবং অন্যান্য দেশগুলোর ২৪ দশমিক ৫ শতাংশ বিনিয়োগ রয়েছে।
বিদেশি বিনিয়োগের নাজুক অবস্থার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বাংলাদেশে মার্কিন বিনিয়োগকারীদের চেম্বার অ্যামচেমের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, বাংলাদেশে এফডিআইয়ের প্রধান সমস্যা হচ্ছে ব্র্যান্ডিং।
‘বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সামনে আমরা এখনও আমাদের ব্র্যান্ডিং যথাযথভাবে তুলে ধরতে পারিনি। এছাড়া আমাদের বন্দরের সমস্যা আছে। এতদিনেও আমরা আমাদের বন্দরের অটোমেশন করতে পারিনি। এটা খুবই দুখঃজনক।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ এর অর্থনীতির আকারের বিবেচনায় অনেক কম। এর মূল কারণ অবকাঠামোর ঘাটতি এবং অর্থনৈতিক কূটনীতির অভাব।
‘বড় বড় অবকাঠামো প্রকল্পগুলো সরকার বাস্তবায়ন করছে বিদেশ থেকে ঋণ নিয়ে। এসব প্রকল্প পিপিপির আওতায় সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমেও হতে পারত। সেক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ত।’
এরশাদ আহমেদ বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা একা বিনিয়োগ করে খুবই কম। দেশি বিনিয়োগকারীদের হাত ধরে বিদেশি বিনিয়োগ আসে। দেশি বিনিয়োগও কম হচ্ছে। এ কারণে বিদেশি বিনিয়োগও কম।
‘এছাড়া করোনার কারণে গত বছর ব্যবসা-বাণিজ্য একেবারেই স্থবির ছিল। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বিনিয়োগে। শুধু বাংলাদেশ নয়, অনেক দেশেই এফডিআই কমেছে।’
‘করোনার প্রকোপ কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছে বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ। ফলে এ বছর বিনিয়োগ বাড়বে বলে আশা করা যায়। বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে অবকাঠামো নির্মাণ দ্রুত শেষ হলে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে,’ বলেন তিনি।
অর্থনীতির গবেষক পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, দেশি বিনিয়োগ না বাড়লে বিদেশি বিনিয়োগও বাড়বে না।
‘গত কয়েক বছর ধরে আমাদের বিনিয়োগ একই জায়গায় আটকে আছে; জিডিপির ৩১ থেকে ৩২ শতাংশের মধ্যে। এই কয়েক বছরে সরকারি বিনিয়োগ কিছুটা বাড়লেও বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বাড়েনি।’
তিনি বলেন, ২০২০ সালে এফডিআই কমেছে মূলত কোভিডের কারণে। করোনায় বিশ্ব বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়ায় পুঁজির চলাচল একেবারে স্থবির ছিল। ফলে বিশ্বব্যাপী নতুন পুঁজি বিনিয়োগ কম হয়েছে। এ কারণে বাংলাদেশেও পুঁজি বিনিয়োগ কম হয়েছে।
বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে দেশে বিনিয়োগ পদ্ধতি আরও সহজ করতে হবে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সঞ্চার করতে হবে। বিদেশিদের জন্য বরাদ্দ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগ বাড়ার কথা। কিন্তু বাড়ছে না কেন। এর কারণ অনুসন্ধান করে দেখা উচিত বলে মনে করেন ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসান মনসুর।
আরও পড়ুন:ভুষন হাওলাদার। তিনি একজন গ্রাম পুলিশ। চাকুরী করেন ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ভৈরবপাশা ইউনিয়ন পরিষদে।
ঠাট্টা করে তাকে অনেকে ভুষন চেয়ারম্যান বলেও ডাকেন। কারন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স দেয়া, নাগরিক সনদ দেয়া এবং গুরুত্বপুর্ন কাজ তিনি করিয়ে দেন। বিনিময়ে হাতিয়ে নেয় অর্থ।
সম্প্রতী "সরকারী গভীর নলকুপ" পাইয়ে দেয়ার জন্য ১২ জনের কাছ থেকে ১ হাজার ৭৫০ টাকা করে মোট ২১ হাজার টাকা নিয়েছেন গ্রাম পুলিশ ভৃষন হাওলাদার। ভুক্তভুগিরা জানিয়েছেন, 'জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ থেকে ১২ টি গভীর নলকুপ বরাদ্ধ দেয়া ভৈরবপাশা ইউনিয়েনে। এরজন্য প্রতিটি নলকুপের জন্য অফিস খরচ বাবদ ১৭৫০ টাকা করে দিতে হবে। একথা বলে ভুষন হাওলাদার ১২ জনের কাছ থেকে ২১ হাজার টাকা বিকাশ একাউন্টে নেয়।'
একপর্যায়ে ভুক্তভুগিরা জানতে পারে নলকুপ বরাদ্ধের বিষয়টি ভুয়া। এরপর তারা টিউবওয়েল দেয়ার কথা বলে টাকা আত্মসাৎ প্রসংগে গত ১১ আগষ্ট ভৈরবপাশা ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
টাকা ফেরত চেয়ে অভিযোগ পত্রে তারা লিখেছেন, "আমরা নিম্ন ঈশ্বরকাঠী গ্রামের বাসিন্দা। আমাদের কাছ থেকে টিউবওয়েল দেয়ার কথা বলে ১২জনের কাছ থেকে ১৭৫০ টাকা করে নগদ অর্থ নিয়েছে গ্রাম পুলিশ ভুষন হাওলাদার।
ভৈরবপাশা ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক নলছিটি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. অহিদুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, 'ঘটনাটি আমি অবগত হয়েছি। ভুষন টাকাটা নিজে গ্রহন করেছে নাকি ভুষন অন্যের প্রতারনার স্বিকার হয়েছে সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আর ঐ টাকাগুলো সবাই একটা বিকাশ নাম্বারে দিয়েছে। সেই নাম্বারটি সন্ধানের জন্য থানায় সাধারন ডায়েরী করা হবে।
নির্বাচনী লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এখনো হয়নি, হলে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে পিয়ার পদ্ধতিতে আগামী নির্বাচন চাই ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন। পিয়ার পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে সকল দলের প্রতিনিধি সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে পারবে। সন্ত্রাস এবং কালো টাকার ব্যবহার বন্ধ হবে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মাগুরা শহরের ঐতিহাসিক নোমানী ময়দানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সমাবেশ বক্তব্যকালে সংগঠনের নায়েবে আমি মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম এসব কথা বলেন।
তিনি শেখ হাসিনা সরকারের দুর্নীতি লুটপাট এবং হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার এবং বিএনপি'র সমালোচনা করে পিয়ার পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি করেন।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মাগুরা ১ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাওলানা নাজিরুল ইসলাম এবং মাগুরা-২ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ও মাগুরা জেলা শাখার সভাপতি মুফতি মোস্তফা কামাল।
সমাবেশে প্রায় পাঁচ হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় নিখোঁজের ১২দিন পর ধানক্ষেত থেকে এক বাক প্রতিবন্ধীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছে তার স্বজনরা।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল পৌনে নয়টার দিকে ভবেরচর ইউনিয়নের নয়াকান্দি গ্রামের পশ্চিম চকের হান্দার বাড়ি এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত বাক প্রতিবন্ধীর নাম রবিউল আউয়াল (৫৪)। সে গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর ইউনিয়নের নয়াকান্দি গ্রামের সোনা মিয়া সওদাগরের ছেলে বলে জানা গেছে।
খবর নিয়ে জানা যায়, ' রবিউল আউয়াল বাক প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে বিয়ে-শাদী করেনি। বড় ভাই জিলানীর বাসায় থাকতো। কৃষিকাজ, দিনমজুরি করে জীবিকা নির্বাহ করতো সে। অন্যান্য দিনের মতো গত ১আগস্ট সকালে বাড়ি থেকে বের হয় রবিউল আউয়াল। সন্ধ্যায় সে বাসায় না ফিরলে আশেপাশে খোঁজাখুঁজি শুরু করে স্বজনরা। দীর্ঘ সময় পরও তার সন্ধান না পাওয়ায় স্থানীয় কবিরাজ ও তান্ত্রিকের দারস্ত হয় তারা। এদিকে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল পৌনে নয়টার দিকে স্থানীয় এক জেলে দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে ধান ক্ষেতে একটি লাশ দেখতে পান। লাশটির অবস্থা দেখে ধারণা করা হচ্ছে ১০/১২দিন আগে তার মৃত্যু হয়েছে। পরবর্তীতে নিখোঁজ রবিউল আউয়ালের স্বজনরা ঘটনাস্থলে গিয়ে জামাকাপড় থেকে লাশটি তার বলে নিশ্চিত করে।
নিহত রবিউল আউয়ালের বড়ভাই জিলানি বলেন, ' লাশটি যেখানে পাওয়া গেছে সেখানে হাটু পরিমাণ পানি এখানে ডুবে কারো মৃত্যু হওয়ার কথা নয়। আমার ভাই বাক প্রতিবন্ধী ছিল তার অন্য কোন সমস্যা ছিল না। তার সাথে সবসময় ২০/৩০ হাজার টাকা টাকা থাকতো। তাকে কেউ হত্যা করেছে বলে ধারণা করছি আমরা'।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ' খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। বিস্তারিত পরে জানানো হবে'।
শেরপুর চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচন স্থগিত করেছেন শেরপুরের সিনিয়র সহকারী জজ তাহমিনা আফরোজ তানি।
সোমবার (১১ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে আদালত এ আদেশ দেন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২২ আগস্ট শেরপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা ছিলো।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ১০ আগস্ট শেরপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্য ও জেলা বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম স্বপন ও জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাসেম আহাম্মেদ ছিদ্দিকি বাবু আদালতে “অন্য প্রকার মামলা” নামে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার মূল আইনজীবী বিএনপি নেতা আখতারুজ্জামান আদালতে অভিযোগ করেন চেম্বারের অধিকাংশ ভোটার ভুয়া এবং একই নামে একাধিক ভোটারের নাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বিষয়টি আমলে নিয়ে আদালত ত্রুটিপূর্ণ ভোটার তালিকা সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
রায়ে চেম্বার সভাপতি আরিফ হোসেন, সচিব হারুণ অর রশিদ, প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট মাহবুব আলম রকিব ও বাছাই কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এমকে মোরাদুজ্জামানকে সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
শেরপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী মনোনয়ন দাখিলসহ চুড়ান্ত প্রার্থীতা ঘোষণা করা হয়েছিলো। তিনটি কেটাগরির প্রার্থীররা প্রচারণা শুরু করেছিলো। এরইমধ্যে আদালত থেকে নির্বাচনে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় হতাশ প্রার্থীরা।
অবশেষে পানি ছাড়ার দিন ৭ দিন পর বন্ধ করে দেওয়া হলো রাঙামাটির কাপ্তাই কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ১৬ টি জলকপাট।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকালে কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান বলেন, সোমবার (১১ আগস্ট) রাত ৯ টায় কাপ্তাই লেকের পানির উচ্চতা ১০৭. ৩৪ ফুট মীনস সি লেভেল এর নীচে নেমে আসায় অথাৎ বীপদ সীমার নীচে নেমে আসায় মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল ৮ টায় পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব কটি জলকপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরোও জানান আজ মঙ্গলবার সকাল ৭ টায় কাপ্তাই লেকে পানির উচ্চতা ছিল ১০৭.০৬ ফুট মীনস সি লেভেল। অথাৎ বৃষ্টি না হওয়ায় ধীরে ধীরে লেকে পানির উচ্চতা কমে আসছে।
প্রসঙ্গত: রাঙামাটির কাপ্তাই লেকের পানির উচ্চতা বীপদ সীমার উপর অতিক্রম করায় অথাৎ ১০৯ ফুটের প্রায় কাছাকাছি চলে আসায় গত ৫ আগস্ট দিবাগত রাত ১২ টা ৫ মিনিটে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের( কপাবিকে) ১৬ টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এতে প্রতি সেকেন্ড ৯ হাজার কিউসেক পানি কাপ্তাই লেক হতে কর্ণফুলি নদীতে নিষ্কাশন করা হয়েছিল। পরবর্তীতে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় উজান হতে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে লেকের পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় এরপর কেন্দ্রের জলকপাট দেড় ফুট, পরবর্তীতে আড়াই ফুট এবং সর্বোচ্চ সাড়ে ৩ ফুট পর্যন্ত করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। কাপ্তাই লেকের পানির ধারণ ক্ষমতা ১০৯ ফুট মীনস সি লেভেল।
নীলফামারী পৌরসভার চার বিভাগের দশজন কর্মীকে একটি করে বাই-সাইকেল প্রদান করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১২আগস্ট) দুপুরে পৌরসভা প্রাঙ্গণে কর্মীদের হাতে বাই-সাইকেল তুলে দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান।
এসময় নীলফামারী পৌরসভার প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. সাইদুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী ফিরোজ কবির, পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী তারিক রেজা, নির্বাহী কর্মকর্তা মশিউর রহমান, হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা উপস্থিত ছিলেন।
পৌর প্রশাসক সাইদুল ইসলাম জানান, কর্মীদের যাতায়াতের সুবিধা এবং পৌরসভার কাজে গতি বাড়ানোর জন্য এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কর, পানি সরবরাহ, প্রকৌশল ও স্বাস্থ্য শাখার দশজনের মাঝে একটি করে বাই-সাইকেল প্রদান করা হয়।
আসন্ন প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন রাজশাহী মহানগর শাখা। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকালে রাজশাহী সিটি প্রেসক্লাবে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক রিপন। তিনি বলেন, সারাদেশে প্রায় ৪০ হাজার কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৭০ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। এর মধ্যে প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থী প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ১৭ জুলাই ২০২৫ তারিখের পরিপত্র অনুযায়ী এ বছরের বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না।
আব্দুর রাজ্জাক রিপন বলেন, ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা ও ২০২২ সালের বৃত্তি পরীক্ষায় এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে সাফল্য অর্জন করেছে। অথচ এবার তাদের বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত বৈষম্যমূলক। বৃত্তি শুধু আর্থিক সহায়তা নয়, এটি একটি শিক্ষার্থীর আত্মমর্যাদা ও অনুপ্রেরণার প্রতীক।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, কোনো শিশু শুধুমাত্র বিদ্যালয়ের ধরণ ভিন্ন হওয়ার কারণে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারলে তা মানসিক আঘাত ও হতাশার সৃষ্টি করবে। এটি জাতীয় শিক্ষানীতির সাম্যের নীতির পরিপন্থী। তাঁরা অবিলম্বে পরিপত্রটি বাতিল করে প্রাথমিক শিক্ষায় সমঅধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
বক্তারা আরও জানান, আগামী ২০ আগস্টের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও বিভাগীয় উপপরিচালকের কার্যালয় ঘেরাও এবং “মার্চ ফর ঢাকা”সহ কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় আইন বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, “আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। অসচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীরাই মূলত বেসরকারি প্রাথমিক প্রতিষ্ঠানে পড়ে। তাদের বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হোক, বৈষম্য থেকে মুক্তি দেওয়া হোক।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত আছেন বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান, কেন্দ্রীয় পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক শাহজাহান আলী, রাজশাহী মহানগর সভাপতি রফিকুল আলম, সহ-সভাপতি ড. ইব্রাহিম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ, সাংগাঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান, অর্থ সম্পাদক এম এম রহমান, শিক্ষা সম্পাদক মনোয়ার হোসেন, প্রচার সম্পাদক শিহাব উদ্দিন সহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
মন্তব্য