এবার বেশ আগেভাগেই কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিলো সরকার। ট্যানারি মালিকদের আপত্তি উপেক্ষা করেই এ বছর লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম বাড়ানো হয়েছে ৫ টাকা। আর খাসি ও ছাগলে চামড়ার দাম বেড়েছে ২ টাকা।
বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি চামড়ার এই মূল্য নির্ধারণের ঘোষণা দেন। বৈঠকে কাঁচা চামড়ার দাম নির্ধারণ, ক্রয়-বিক্রয়, সংগ্রহ, সংরক্ষণ, মজুদ, চামড়ায় লবণ লাগানো ও মিডিয়ায় প্রচারের বিষয়ে আলোচনা হয়।
সভাপতির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, বাড়তি দাম অনুযায়ী এ বছর ঢাকায় গরুর লবণযুক্ত চামড়ার প্রতিবর্গফুটের দাম নির্র্ধারণ করা হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, যা গতবার ছিল ৩৫-৪০ টাকা। ঢাকার বাইরে গতবছর গরুর চামড়ার বর্গফুট প্রতি দাম ছিল ২৮ থেকে ৩২ টাকা। এ বছর তা বাড়িয়ে ৩৩-৩৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ছাড়া, খাসির লবণযুক্ত চামড়ার প্রতি বর্গফুটের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫-১৭ টাকা। গতবছর এই দাম ছিল ১৩ থেকে ১৫ টাকা। বকরির চামড়ার বর্গফুটপ্রতি দাম এ বছর ধরা হয়েছে ১২-১৪ টাকা। গতবছর এর দাম ছিল ১০ থেকে ১২ টাকা।
দেড় ঘণ্টাব্যাপী আলোচনা শেষে বাণিজ্য সচিব তপনকান্তি ঘোষ চলতি বছর কোরবানির চামড়ার জন্য ২০১৭ সালের নির্ধারিত র্মূল্য প্রস্তাব করেন।
তিনি বলেন, ওই বছরের মূল্য অনুযায়ী ঢাকায় গরুর লবণজাত চামড়া ৫০-৫৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৪০-৪৫ টাকা প্রস্তাব করা হলো। এ ছাড়া, সারা দেশে খাসির প্রতিবর্গফুট চামড়ার দাম ২০-২২ টাকা এবং ছাগল ভেড়ার দাম ১৫-০১৭ টাকা নির্ধারণ করার প্রস্তাব করছে মন্ত্রণালয়।
সচিব জানান, ২০১১ সালের পর চামড়ার দাম ধারাবাহিকভাবে কমছে। অথচ দেশে ও বিদেশি চামড়া ও চামড়াজাত সব ধরনের পণ্যের দাম অভ্যাহতভাবে বাড়ছে। তা ছাড়া, এখন সাভার বিসিক চামড়া শিল্প নগরীর সিইটিপি প্রস্তুত।
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আমাদের চামড়া রপ্তানিও বেড়েছে। চামড়ার ন্যায্য দাম নিশ্চিতে সরকার ইতোমধ্যে ওয়েটব্লু চামড়া রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। ২০ লাখ বর্গফুট চামড়া রপ্তানি অনুমতি দেয়া হয়েছে। আরও ১ কোটি বর্গফুট ওয়েটব্লু রপ্তানির অনুমতি দেয়া হবে। সব মিলে এ বছর চামড়ার চাহিদা এবং দাম দুটোই বাড়বে। সার্বিক দিক বিবেচনায় এই মূল্য নির্র্ধারণ প্রস্তাব রাখছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।’
তবে বাণিজ্য সচিবের এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধীতা করেন চামড়াসংশ্লিষ্ট বড় তিন খাতের ব্যবসায়ীরা। তারা দাম নির্ধারণই না করার পক্ষে।
সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের মতে, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে কোনো কিছুর দাম বেঁধে দেয়া যায় না। প্রস্তাবিত দাম কার্যকর হলে কেনার সক্ষমতা থাকবে না। তখন আরেকটা অস্থিতিশীলতা তৈরি হবে, যার দায় চামড়াসংশ্লিষ্টরা নেবে না। তারা সরকারের নেয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশ থেকে ওয়েট ব্লু চামড়া রপ্তানি থেকেও সরে আসার আহ্বান জানান।
শেষ পর্যন্ত নিজেদের অবস্থান থেকে কিছুটা সরে গিয়ে ২০১৭ এবং ২০২০ সালের পরিবর্তে ২০১৯ সালের মূল্য নির্ধারণ করতে নিজেরাই প্রস্তাব দেন চামড়া ব্যবসায়ীরা। বলেন, গত বছরের (২০২০) চেয়ে সর্বোচ্চ ৫ টাকা বাড়ানো যেতে পারে।
দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি এবং সার্বিক সক্ষমতা বিবেচনায় রেখে বাণিজ্যমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের প্রস্তাবিত ৫ টাকা বর্ধিত দামই মেনে নেন।
বৈঠকে অংশ নেন শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো. মকবুল হোসেন, ধর্ম সচিব নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গর্ভনর এএফএম নাসের, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আব্দুর রহিম, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সদস্য শাহ মো. আল বেরুনি, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ, চামড়াজাত পণ্য রফতানিকারক সমিতির (এলএমএফইএবি) প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম, ফিশনশড চামড়াজাত পণ্য রফতানিকারক সমিতির (বিএফএলএমএফইএ) সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন, বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আফতাব খানসহ আরও অনেকে।
সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, প্রতিবছর সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে বৈঠক করে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। গত বছর দু ট্রাক চামড়া নদীতে ফেলেছিল। সেটি ছিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তবে এ বছর যাতে এমন কোনো ঘটনা না ঘটে সরকার সেজন্য কিছুই আগাম উদ্যোগ নিয়েছে। বাড়তি দামও দেয়া হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, কোরবানির ত্যাগের। তবে কোরবানির পশুর চামড়া সঙ্গে একটা মূল্য জড়িত। কারণ, এর ওপর অনেক মসজিদ-মাদ্রাসা ও গরীব মানুষের হক রয়েছে। তারা যাতে ন্যায্য দাম পায় সেদিকটিও নজর রাখা দরকার। যাতে চামড়া নষ্ট না হয় এবং ভাল দাম পায় সেজন্য সরকারেরও বিভিন্ন প্রস্তুতি পদক্ষেপ রয়েছে।
তিনি জানান, ওয়েটব্লু চামড়া রপ্তানির অনুমতি দিলেও সরকার তাতে স্বস্তিতে নেই। কিন্তু অনুমতি দেয়া হয়েছে চামড়ার ন্যায্য দামের জন্য। তবে দেশেই প্রক্রিয়াজাত পণ্য উৎপাদন করে আরও বেশি মূল্য সংযোজন পণ্য রপ্তানি করার স্বার্থে সরকার স্থায়ীভাবে সেটা রাখতে চায় না। চামড়া ওপর ন্যায্য মূল্য প্র্যাকটিস নিশ্চিত হলে ওয়েটব্লু রপ্তানি থেকে ফিরে আসবে সরকার।
শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতা বলেন, ‘চামড়া নিয়ে ইতোমধ্যে আমরা তিনটি সভা করেছি। কোরবানি হওয়ার পরপরই চামড়া সংগ্রহ নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। সেখানে লবণ একটা বড় উপকরণ হয়ে দাঁড়ায়। শিল্প মন্ত্রণালয় দেখেছে, প্রতি গরু-মহিষে কেজি ১০ কেজি, ছাগল-ভেড়ায় ৫ কেজি হারে মোট ৮২ হাজার ৮৮৫ টন লবণ প্রয়োজন হবে।
তিনি বলেন, ‘আমি আশ্বস্ত করছি, সেই লবণ মজুদ আছে, লবণে কোনো ঘাটতি হবে না। এ বছরে অন্তত কাউকে চামড়া পুঁতে ফেলতে হবে না। সঠিকভাবে সংগ্রহ করার সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।’
তথ্য ও সম্প্রচার সচিব বলেন, আগে একটি প্রতিযোগিতা ছিল। কে কত দিয়ে কত চামড়া সংগ্রহ করতে পারে। কিন্তু বিগত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা বলছে সেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। এ কারণে অনেক দামে কোরবানি দিয়েও সেই চামড়া বিক্রি হচ্ছে না। দাম কমার মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
বিটিএ সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, ‘২০১৭ সালের পর থেকে চামড়ার দাম দিনদিন কমছে। ট্যানারি শিল্প নিয়ে অব্যবস্থাপনার কারণেই এমনটি হয়েছে। তবে সরকার এ বছর যেভাবে আশ্বস্ত করেছে আমি মনে করি আগের অব্যবস্থাপনা হবে না। আন্তর্জাতিক বাজারে গত বছর যে দর ছিল এ বছরও অপরিবর্তিত আছে। সেটা বাড়েনি, কমেওনি। তাই দাম বাড়ানোর প্রশ্নই আসে না। অনুরোধ করব, গত বছরের দামটাই যেন বহাল রাখা হয়।’
লেদারগুডস ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোটার্স অ্যাসিয়েশনের (এলএফএমইএবি) সভাপতি সাইফুল ইসলাম জানান, চামড়া সংগ্রহের পর সংরক্ষণে বড় সমস্যা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সরকারের অব্যবহৃত কোনো গোডাউন থাকলে সেখানে সাময়িক জায়গা দিলে সংরক্ষণ ঝুঁকি দূর হবে। সেখানে মসজিদগুলোতে ন্যায্যমূল্যে বা বিনামূল্যে লবণ দিলে তারা লবণ দিতে উদ্বুদ্ধ হবে।
চামড়ার দাম নির্ধারণের বিরোধিতা করে সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ওপেন মার্কেট ইকনোমিতে প্রাইস নির্ধারণ করা যায় কি না, না ফ্লোটিং প্রাইসে রেখে দেবেন তা বিবেচনার বিষয় আছে। সেটিও যদি না হয় তাহলে অন্তত গত বছরের দামটাই যেন রাখা হয়।’
একইভাবে কাঁচাচামড়া আড়তদারদের ঋণের আওতায় আনার দাবি জানান সাইফুল। কোরবানির চামড়া পরিবহন ও প্রক্রিয়াজাতে জড়িত যারা তাদের শাটডাউনে ছাড় দেয়ারও অনুরোধ করেন তিনি।
বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আফতাব খান বলেন, গতবছর কোরবানির চামড়া ঢাকার বাইরে এবং বাইরের চামড়া ঢাকায় ঢুকতে না দেয়ার সরকারি নিষেধাজ্ঞা এবারও বহাল রাখতে হবে। ২০১৬-২০১৯ পর্যন্ত ট্যানারির বকেয়া চামড়া পরিশোধ করা হয়নি। এ পরিস্থিতিতে চামড়া কেনায় ব্যাংকগুলোর ঋণ আড়তদারদের কাছেও বিতরণ করতে হবে। তাহলেই সারা দেশে চামড়া সংগ্রহ ব্যবস্থাপনা ভালো হবে।
আরও পড়ুন:২০২৫ সালের প্রথম নয় মাসে ব্র্যাক ব্যাংকের ব্রাঞ্চ নেটওয়ার্ক ১৩,৫০০ কোটি টাকার নিট ডিপোজিট প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর ২০২৫ সময়কালে এই ডিপোজিট প্রবৃদ্ধি আমানত সংগ্রহে ব্যাংকটির টেকসইতার প্রতিফলন।
বিগত কয়েক বছর ধরে ব্র্যাক ব্যাংকের ব্রাঞ্চ ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্কের এই লক্ষণীয় ডিপোজিট প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ব্যাংকটির ব্রাঞ্চ নেটওয়ার্কের এমন মাইলফলক ব্যাংকিং খাতে আমানত সংগ্রহে নতুন বেঞ্চমার্ক তৈরি করে চলেছে।
এই সাফল্য উদ্যাপনের লক্ষ্যে ব্যাংকটি ১৩ অক্টোবর ২০২৫ ঢাকায় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। আয়োজনে ব্রাঞ্চ নেটওয়ার্কের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগ দেন ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও তারেক রেফাত উল্লাহ খান এবং ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড হেড অব ব্রাঞ্চ ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক শেখ মোহাম্মদ আশফাক। এ সময় ব্র্যাংকটির ব্রাঞ্চ ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্কের রিজিওনাল হেড, ক্লাস্টার হেড এবং ব্রাঞ্চ ম্যানেজারসহ উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র জোনাল হেড (নর্থ) এ. কে. এম. তারেক এবং সিনিয়র জোনাল হেড (সাউথ) তাহের হাসান আল মামুন।
ব্যাংকের এমন সাফল্যে গ্রাহক আস্থা এবং গ্রাহকদের সাথে সুসম্পর্কের বিষয়টির ওপর জোর দিয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও তারেক রেফাত উল্লাহ খান বলেন, “গ্রাহকের সাথে আস্থার সম্পর্ককে আমরা আমানত সংগ্রহে সবচেয়ে বড় দক্ষতা হিসেবে দেখি। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ২০২৫ সালের বাকি সময়ে এবং সামনের বছরগুলোতেও ডিপোজিট প্রবৃদ্ধিতে আমাদের এমন সাফল্য অব্যাহত থাকবে।”
ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি.:
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের অর্থায়নে অগ্রাধিকার দেয়ার ভিশন নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি. ২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত দেশের অন্যতম দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী একটি ব্যাংক। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ‘BRACBANK’ প্রতীকে ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেন হয়। ২৯৮টি শাখা ও উপশাখা, ৩৩০টি এটিএম, ৪৪৬টি এসএমই ইউনিট অফিস, ১,১১৯টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং দশ হাজারেরও বেশি মানুষের বিশাল কর্মীবাহিনী নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক কর্পোরেট ও রিটেইল সেগমেন্টেও সার্ভিস দিয়ে আসছে। ব্যাংকটি দৃঢ় ও শক্তিশালী আর্থিক পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে এখন সকল প্রধান প্রধান মাপকাঠিতেই ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষে অবস্থান করছে। বিশ লাখেরও বেশি গ্রাহক নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বিগত ২৪ বছরেই দেশের সবচেয়ে বৃহৎ জামানতবিহীন এসএমই অর্থায়নকারী ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও নিয়মানুবর্তিতায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা সুইসকন্টাক্ট-এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে। যার লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশকে আরো শক্তিশালী করা এবং টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা।
গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিডা সম্মেলন কক্ষে ওই সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানে বলা হয়, চুক্তির আওতায় তিনটি মূল লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সেগুলো হলো- প্রমাণনির্ভর বিনিয়োগ পরিবেশ বিশ্লেষণ ও সমন্বয় জোরদার, বিডাকে একটি বিশ্বমানের বিনিয়োগ প্রচার সংস্থা হিসেবে শক্তিশালী করা ও খাতভিত্তিক বিনিয়োগ সম্প্রসারণ ও ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ উন্নয়ন।
অনুষ্ঠানে আরো জানানো হয়, বিডা দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়নে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে আসছে। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি বিনিয়োগ নীতিমালা সংস্কার, সেবার ডিজিটালাইজেশন এবং বিভিন্ন সরকারি সংস্থার মধ্যে সমন্বয় জোরদারে কাজ করছে। সুইসকন্টাক্ট ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত একটি প্রকল্পের আওতায় বিডার সহযোগিতায় বাংলাদেশের বিভিন্ন পৌরসভায় ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ ও প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করেছে।
বিডার জনসংযোগ দপ্তর জানায়, আগের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বিডা ও সুইসকন্টাক্ট এখন নতুন একটি উদ্যোগ গ্রহণে সম্মত হয়েছে, যা বিডার ‘হিট ম্যাপ’ অনুযায়ী বিভিন্ন খাতভিত্তিক বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়নে সহায়ক হবে।
বিডা চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী) চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গঠনে সরকার নানামুখী সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সুইসকন্টাক্টের সঙ্গে এই অংশীদারিত্ব আমাদের ‘ইনভেস্টর-ফার্স্ট’ মডেল বাস্তবায়নের পথে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আমাদের লক্ষ্য হলো বিনিয়োগকারীরা যেন বাংলাদেশকে দক্ষ, সেবাবান্ধব ও সম্ভাবনাময় গন্তব্য হিসেবে অনুভব করেন।
বিডা জানায়, সুইসকন্টাক্ট দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের টেকসই উন্নয়ন, বাণিজ্য প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা শক্তিশালীকরণে কাজ করে আসছে। সংস্থাটি বিশ্বাস করে, এই সহযোগিতা প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে, বিশেষ করে তরুণ ও নারীদের জন্য।
বিডা ও সুইসকন্টাক্ট উভয় প্রতিষ্ঠানই আশা প্রকাশ করেছে, এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ আরও উন্নত হবে, মানসম্পন্ন বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে এবং টেকসই শিল্পায়নের মাধ্যমে অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে।
বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) ১৮তম নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দিয়েছেন মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন।
তিনি প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দেন এবং মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমানের স্থলাভিষিক্ত হন।
বেপজায় যোগদানের আগে মোয়াজ্জেম হোসেন সপ্তম পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) এবং বরিশালে এরিয়া কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
গতকাল বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, তিনি ১৯৯২ সালের ২০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আর্টিলারি কোরে কমিশন লাভ করেন। তার দীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে তিনি বিভিন্ন কমান্ড, স্টাফ এবং নির্দেশনামূলক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং ব্যতিক্রমধর্মী নেতৃত্ব ও পেশাদারিত্ব প্রদর্শন করেছেন।
মোয়াজ্জেম হোসেন দুইটি আর্টিলারি ব্রিগেড ও দুইটি আর্টিলারি রেজিমেন্টের কমান্ড করেছেন। তিনি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে (বিএমএ) প্লাটুন কমান্ডার, সেনাবাহিনীর সদরদপ্তরে একটি ডিভিশনের কর্নেল স্টাফ এবং পরিচালক (বাজেট) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি রাজধানীর মিরপুরের ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ (ডিএসসিএসসি) থেকে স্নাতক এবং ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ (এনডিসি) থেকে ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স (এনডিসি) ও আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্স (এএফডব্লিউসি) সম্পন্ন করেছেন।
এছাড়া তিনি বিদেশে উন্নত সামরিক প্রশিক্ষণ ও মহড়ায় অংশগ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে চীনের নানজিং আর্টিলারি একাডেমি ও পাকিস্তানের স্কুল অব আর্টিলারি রয়েছে।
তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) থেকে এমফিল সম্পন্ন করেছেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে পিএইচডি করছেন।
বাংলাদেশ টেকসই পোশাক উৎপাদনে বৈশ্বিক নেতৃত্ব আরও সুদৃঢ় করেছে, কারণ নতুন করে পাঁচটি কারখানা লিড (লিডারশিপ ইন এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন) সার্টিফিকেশন অর্জন করেছে।
সর্বশেষ এই সংযোজনের ফলে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের সর্বাধিক ২৬৮টি লিড-সার্টিফায়েড কারখানার অধিকারী। এর মধ্যে ১১৪টি পেয়েছে প্লাটিনাম ও ১৩৫টি পেয়েছে গোল্ড সার্টিফিকেশন।
এই পাঁচটি নতুন কারখানাসহ বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ ১০০টি সর্বোচ্চ রেটপ্রাপ্ত লিড সার্টিফায়েড কারখানার মধ্যে ৬৮টি বাংলাদেশে অবস্থিত, যা দেশের পোশাক শিল্পের পরিবেশবান্ধব উৎপাদন ও জ্বালানি দক্ষতার ধারাবাহিক অঙ্গীকারের প্রতিফলন।
নতুন সার্টিফিকেশন পাওয়া পাঁচটি কারখানা হলো- পাকিজা নিট কম্পোজিট লিমিটেড, সাভার, ঢাকা ঙ+গ: এক্সিস্টিং বিল্ডিং ৪.১ ক্যাটাগরিতে ৮৭ পয়েন্ট পেয়ে লিড প্লাটিনাম সার্টিফিকেশন অর্জন করেছে; ফ্যাশন পালস লিমিটেড, বিসিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট, ঢাকা বিডি+সি: নিউ কন্সট্রাকশন ভি৮ ক্যাটাগরিতে ৮৭ পয়েন্ট পেয়ে লিড প্লাটিনাম সার্টিফিকেশন পেয়েছে; গাভা প্রাইভেট লিমিটেড, প্লট ১১৪১২০, ঢাকা ইউ+ঈ: নিউ কন্সট্রাকশন ভি৪ ক্যাটাগরিতে ৮৭ পয়েন্টে লিড প্লাটিনাম সার্টিফিকেশন অর্জন করেছে; ভিজুয়াল নিটওয়্যারস লিমিটেড, চট্টগ্রাম ঙ+গ: এক্সিস্টিং বিল্ডিং ভি৪.১ ক্যাটাগরিতে ৭৬ পয়েন্ট পেয়ে লিড গোল্ড সার্টিফিকেশন পেয়েছে; এবং ট্যালিসম্যান পারফরম্যান্স লিমিটেড, সিইপিজেড, চট্টগ্রাম ইউ+ঈ: নিউ কন্সট্রাকশন ভি৪ ক্যাটাগরিতে ৬২ পয়েন্ট পেয়ে লিড গোল্ড সার্টিফিকেশন অর্জন করেছে।
এই নতুন সংযোজনগুলো বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের টেকসই উৎপাদন এবং বৈশ্বিক সবুজ রূপান্তরের ধারাবাহিক অগ্রগতিকে আরো জোরালোভাবে তুলে ধরেছে। গত এক দশকে দেশের তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাত আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পরিবেশবান্ধব মানদণ্ড গ্রহণের মাধ্যমে এক ধরনের সবুজ বিপ্লবের নেতৃত্ব দিয়েছে।
লিড-সার্টিফায়েড কারখানাগুলো যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইইউজিবিসি)-এর কঠোর টেকসই মানদণ্ড অনুসরণ করে, যেখানে জ্বালানি ও পানির দক্ষ ব্যবহার, কার্বন নির্গমন হ্রাস, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং কর্মীদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত কর্মপরিবেশের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
শিল্প বিশেষজ্ঞরা এই সাফল্যের কৃতিত্ব দিচ্ছেন উদ্যোক্তাদের উদ্যোগ, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)-এর ভূমিকা এবং সবুজ শিল্পায়নে সরকারের সহায়ক নীতিমালাকে। বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান সবুজ কারখানার সংখ্যা শুধু দেশকে একটি দায়িত্বশীল উৎপাদন গন্তব্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করছে না, বরং টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিল্প ভবিষ্যতের লক্ষ্যে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
বস্ত্র ও পাট, বাণিজ্য এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, প্রায় ১০০ কোটি টাকার ফান্ড দিয়ে জেডিপিসির মাধ্যমে প্রায় ১০০৬ জন উদ্যোক্তার অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে চেষ্টা করছি বাজারে পাটের একটা সাংস্কৃতিক পরিবর্তন যাতে আনতে পারি।
অতীতের মতো আমরা কী করে পাটের ব্যাগ ব্যবহার করতে পারি। পাটের স্কোয়ার মিটার, মাইলেজ, এর পরিধি বাড়াতে গবেষণার দরকার। র্যাপিং (মোড়ক) উপকরণ হিসেবে বিশ্বব্যাপী পাটের বিশাল বাজার আছে।
বুধবার রাজধানীর বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ইয়ার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের উদ্যোগে টেকসই উন্নয়নে পাটের ভূমিকাবিষয়ক সেমিনার ‘হাফিজউদ্দিন আহমেদ ও ফাতেমা আহমেদ ট্রাস্ট লেকচার-২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেছেন।
উপস্থিত শিক্ষার্থীদের ‘ফিউচার ক্যাপ্টেন’ উল্লেখ করে বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, আপনারা অনেক জায়গায় রিফাইন্ড ক্যারেক্টার দেখিয়েছেন। বলেছেন মানি না। পাটব্যাগের জন্য কালচারাল চেঞ্জ (সাংস্কৃতিক পরিবর্তন) দরকার আমাদের, কাউকে বাধ্য করে নয়। পাটপণ্য ইনোভেশন ও খরচ কমিয়ে এর বাণিজ্যিক সফলতা তৈরি করতে সক্ষমতা বাড়াতে হবে যা প্লাস্টিককে হারাতে পারে। এজন্য নীতি, পদক্ষেপ ও প্রচেষ্টার সমন্বিত উদ্যোগ রাখতে হবে। উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর মাধ্যমে শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ে। আপনারা যেখানে কাজ করবেন সে প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ করতে কাজ করতে হবে। শ্রেষ্ঠত্ব তৈরি করতে হবে।
বক্তব্য শেষে অনুষ্ঠানের সভাপতি বাংলাদেশ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের (বুটেক্স) উপাচার্য প্রফেসর ড. ইঞ্জি. মো. জুলহাস উদ্দিন প্রধান অতিথি উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন-এর হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে মূল বক্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইয়ার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগম দেশের অর্থনীতিকে টেকসই ও পরিবেশবান্ধব করতে পাট চাষ ও এর রপ্তানি এবং এর ভবিষ্যতের নানা দিক উপস্থাপন করেন। সেইসাথে আগামী বাণিজ্য মেলায় একমাত্র পাটব্যাগ প্রচলনের দাবি জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক রাশিদা আখতার খানম, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট-এর মহাপরিচালক ড. নারগিস আখতার, আইইবির ভাইস-প্রেসিডেন্ট ইঞ্জি. খান মঞ্জুর মোরশেদ, আইটিইটির আহ্বায়ক ইঞ্জি. আহসানুল করিম কায়সার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেছেন, সরকার ভিসা ফি প্রদানের প্রক্রিয়াকে ডিজিটালাইজড এবং সামগ্রিক ভিসা নীতিমালা সংশোধনে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিচ্ছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে ভিসা ফি প্রদানের প্রক্রিয়াকে ডিজিটাল করার কাজ চলছে। পরিকল্পিত এই সংস্কারের ফলে আবেদনকারীরা ঘরে বসেই অনলাইনে ফি পরিশোধ করতে পারবেন। ফলে ফি প্রদানের জন্য শারীরিকভাবে উপস্থিত হওয়ার প্রয়োজন হবে না।’
বুধবার রাজধানীতে বিডার মাল্টিপারপাস মিলনায়তনে ‘ওয়ার্ক পারমিট ও সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স প্রসেস’ বিষয়ক এক কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চৌধুরী আশিক মাহমুদ বলেন, ‘সরকার সামগ্রিক ভিসা নীতিমালার ক্ষেত্রেও বড় পরিসরে সংস্কারের কাজ করছে।
এই বিস্তৃত নীতি সংস্কারের লক্ষ্য হলো বর্তমান ব্যবস্থায় দীর্ঘদিনের বিদ্যমান নানা সমস্যার সমাধান করা।’
তিনি বলেন, ‘অনলাইন সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স প্রক্রিয়া ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হয়েছে। আগে যেখানে ৩৪টি নথি জমা দিতে হতো, সেখানে এখন তা কমিয়ে ১১টিতে আনা হয়েছে। এটি একটি বড় অর্জন, কারণ অতীতে বিভিন্ন দিকনির্দেশনার কারণে নানা দপ্তর থেকে একাধিক নথি চাওয়া হতো।’
বিডা চেয়ারম্যান জোর দিয়ে বলেন, ‘বিডাসহ সরকারের সব কার্যক্রমে জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ে কোনো আপসের সুযোগ নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এমন কিছু করতে চাই না যা জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে বা আপসের সম্ভাবনা তৈরি করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা বিডা- সকলের লক্ষ্য এক এবং আমরা একই উদ্দেশে কাজ করছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য একটাই- সব সংস্থা যেন সমন্বিতভাবে কাজ করে সমস্যা সমাধান করে এবং জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়।’
কর্মশালায় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিডা তাদের নিজ নিজ উপস্থাপনা তুলে ধরেছে।
এতে অন্যান্যের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. দেলোয়ার হোসেন ও বিডা মহাপরিচালক মো. আরিফুল হক বক্তৃতা দেন।
আরিফুল হক জানান, কর্মশালায় এসবি, এনএসআই, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক সংস্থাগুলোর নির্দিষ্ট তথ্য ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করা হয়।
তিনি বলেন, ‘সব সংস্থা একই পরিবারের সদস্য হিসেবে একই উদ্দেশে কাজ করছে।’
আরিফুল হক মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান, তারা যেন তাদের অভিজ্ঞতা ও সমস্যা নিয়মিতভাবে জানান। কারণ এসব তথ্যই পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া সহজ করবে।
শরীয়াহ্ ভিত্তিক ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি. আমদানি, রপ্তানী ও রেমিটেন্স বৃদ্ধিকল্পে গ্রাহকদেরকে সকল প্রকার সহযোগিতা করছে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জন হয়েছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ব্যাংকের ১৭৪ টি শাখা ও উপ-শাখায় এ সেবা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক আহ্বান জানাচ্ছে।
মন্তব্য