পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো ধীরে ধীরে ভালো করলেও সরকারি মালিকানাধীন ছয়টি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ পরিস্থিতির কোনো উন্নতি নেই। দিনকে দিন খারাপ হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সব শেষ হিসাব বলছে, গত ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে এই ছয় ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১ হাজার ১৭৮ কোটি টাকা।
এই সময়ে বেসরকারি বেশ কিছু ব্যাংক তাদের খেলাপি ঋণ মোট ঋণের তিন শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে পারলেও সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, বেসিক ও বিডিবিএলের খেলাপি ঋণ মোট ঋণের ২০ শতাংশের বেশি। এর বাইরে আছে অবলোপন করা আরও সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা।
নানা সময় আলোচনা-সমালোচনার পর টাকা উদ্ধারে ব্যাংকগুলো প্রায়ই আদায় সপ্তাহ বা আদায় মাস ঘোষণা করে। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না। করোনাকালে যখন নিয়মিত ঋণ পরিশোধে নানা সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে, তখন খেলাপি হয়ে যাওয়া অর্থ আদায় আরও কঠিন হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মার্চ শেষে সোনালী, জনতা, রূপালী, অগ্রণী, বেসিক ও বিডিবিএল এ ছয় ব্যাংক মোট ২ লাখ ৭ হাজার ৭৭১ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। এ ঋণের ৪৩ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা অনাদায়ী অর্থাৎ খেলাপি। যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ২০ দশমিক ৯১ শতাংশ।
সুশাসন, বিধিবিধান মেনে চলা হলে পরিস্থিতির যে উন্নতি সম্ভব, সেটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকের হিসাবেই স্পষ্ট। এই ৩১টি ব্যাংকে বিতরণ করা ঋণের মধ্যে খেলাপি ৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ। যেখানে পুঁজিবাজারের বাইরের ব্যাংকগুলোতে এই হার ১৬ দশমিক ১৮ শতাংশ।
ডিসেম্বর পর্যন্ত এই ছয় ব্যাংক ২ লাখ ২ হাজার ৩৩০ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করে। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ৪২ হাজার ২৭২ কোটি টাকা। মোট ঋণের ২০ দশমিক ৮৯ শতাংশ ছিল খেলাপি।
মূলধন ঘাটতির শীর্ষেও রয়েছে এসব ব্যাংক। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ২৪ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে ১১টি ব্যাংক। এর মধ্যে সরকারি ব্যাংকগুলোর ঘাটতিই সবচেয়ে বেশি।
অবলোপন করা ঋণ থেকেও তেমন আদায় করতে পারেনি এসব ব্যাংক।
২০২০ সালে অবলোপনের মাধ্যমে ৬ হাজার ৫৯০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ ব্যাংকের ব্যালান্স শিট বা স্থিতিপত্র থেকে বাদ দেয়া হয়। এর মধ্যে সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো অবলোপন করে ১ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা বা মোটের ২০ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন বলছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংক অবলোপন করা ঋণ থেকে আদায় কমেছে মাত্র ১২ কোটি ৭৪ লাখ টাকার মতো, যা শতকরা হিসেবে দশমিক ৯৩ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আর্থিক কেলেঙ্কারি, নানা অনিয়ম, দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনার কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ হচ্ছে। এই বিশাল অর্থ উদ্ধারে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘সরকারি ব্যাংকগুলোকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে। ঋণের গুণগত মান, খেলাপি ঋণ পরিস্থিতি, পরিচালকদের বেপরোয়া ঋণ গ্রহণ এসব সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে। এসব ব্যাংকের তদারকি কার্যক্রম বাড়ানো প্রয়োজন। তবে শুধু তদারকি বাড়ালে হবে না, অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যাংকার, গ্রাহক ও প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, সরকারের উচিত রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর দক্ষতা বাড়ানো ও খেলাপি ঋণ আদায়ের ব্যবস্থা করা। একই সঙ্গে যারা ব্যর্থ হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া।’
শীর্ষে জনতা
ব্যাংকটির আমানতের পরিমাণ ৮৯ হাজার কোটি টাকা। রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর মধ্যে খেলাপি ঋণে শীর্ষ অবস্থানে এটি।
মার্চ শেষে ব্যাংকটির ৫৭ হাজার ৮২ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি ১৩ হাজার ৫৭০ কোটি ৮১ লাখ টাকা, যা বিতরণকৃত ঋণের ২৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ১২ হাজার ৮৮৫ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। তিন মাসে ব্যাংকটির আরও ৬৮৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা খেলাপি ঋণ বেড়েছে।
মার্চে ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি দাঁড়ায় ৪১৭ কোটি টাকা, যা তিন মাস আগে ছিল ৫ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা।
ঋণের অর্ধেকের বেশি আদায় করতে পারছে না বেসিক
আবদুল হাই বাচ্চু চেয়ারম্যান থাকার আগে পর্যন্ত সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে ছিল এই কোম্পানিটি। তবে ঋণ কেলেঙ্কারিতে জর্জরিত ব্যাংকটি এতটাই বিপাকে পড়েছে যে কর্মীদের বেতন কমিয়ে খরচ কমাতে চাইছে।
সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে শতকরা হিসাবে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় আছে এই ব্যাংকটি। মার্চ শেষে এদের ঋণ বিতরণ ১৪ হাজার ৬০১ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ৮ হাজার ৮০ কোটি ৭২ লাখ, যা বিতরণকৃত ঋণের ৫৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ৭ হাজার ৫০২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। তিন মাসে ব্যাংকটির ৫১৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা খেলাপি ঋণ বেড়েছে।
ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি ১ হাজার ৭২ কোটি টাকা। তবে এই দিক থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আগের প্রান্তিকের চেয়ে এটি ২৮ দশমিক ১৫ শতাংশ কম।
বেসিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিসুর রহমান জানান, ‘আমরা খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছি। মূলধন ঘাটতি কমাতে সহায়তা করবে এটি।’
২০০৯ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বেসিক ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের বড় অংশ এখনও আদায় করা সম্ভব হয়নি। এর প্রায় ৯০ শতাংশই আদায়যোগ্য নয়।
এ সময়ের মধ্যে ব্যাংকটি থেকে অন্তত ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। তৎকালীন চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চুসহ ব্যাংকটির আরও কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও বোর্ড সদস্য এতে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ আছে।
এক-তৃতীয়াংশ ঋণ ফিরে পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় বিডিবিএল
মার্চ শেষে ব্যাংকটির ঋণ বিতরণ ১ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ৬৫৮ কোটি ১৪ লাখ টাকা। যা বিতরণকৃত ঋণের ৩৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ৫৯৫ কোটি ৬ লাখ টাকা। তিন মাসে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৬৩ কোটি ৮ লাখ টাকা।
বিডিবিএলের কাছে জমা আছে গ্রাহকদের ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার আমানত।
খেলাপি আকাশচুক্তি, মূলধন ঘাটতি সবচেয়ে বেশি সোনালীর
ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি সবচেয়ে বেশি আমানতের এই ব্যাংকটির। সবশেষ হিসাব অনুযায়ী ব্যাংকটির ঘাটতি ৩ হাজার ৬৯৭ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। ডিসেম্বর শেষে ঘাটতি ছিল ৩ হাজার ৬৩ কোটি টাকা।
তবে খেলাপি ঋণের দিক দিয়ে কিছুটা উন্নতি করতে পেরেছে ব্যাংকটি। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ব্যাংকটি খেলাপি ঋণ থেকে আদায় করেছে ৩২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
বর্তমানে ব্যাংকটির খেলাপি ১০ হাজার ৬৮৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, যা বিতরণকৃত ঋণের ১৯ দশমিক ৮০ শতাংশ।
ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ১০ হাজার ৭২১ কোটি ১৩ লাখ টাকা।
ব্যাংকের আমানতের পরিমাণ ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। মার্চ শেষে ব্যাংকটির ঋণ বিতরণ ৫৩ হাজার ৯৬৮ কোটি টাকা।
খেলাপি সবচেয়ে বেশি বেড়েছে অগ্রণীতে
ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ৫ হাজার ৫৫৯ কোটি ২৩ লাখ টাকা। তিন মাসে খেলাপি বেড়েছে ১ হাজার ৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।
ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে মূলধন সংরক্ষণে ব্যর্থ অগ্রণী ব্যাংক। মার্চ শেষে মূলধন ঘাটতির পরিমাণ ২ হাজার ৯২১ কোটি ৯২ লাখ টাকা ।
সবশেষ তথ্য অনুযায়ী এ ব্যাংকের আমানতের পরিমাণ ১ লাখ ৯০৩ কোটি টাকা। মার্চ শেষে অগ্রণীর ঋণ বিতরণ ৪৭ হাজার ৮৭৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ৬ হাজার ৫৬৬ কোটি টাকা, যা বিতরণকৃত ঋণের ১৩ দশমিক ৭১ শতাংশ।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রূপালী ব্যাংকের কী অবস্থা
ব্যাংকটির মোট ঋণ ৩২ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা। মার্চ শেষে খেলাপির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৮৮৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ৯৯ শতাংশ।
তবে ডিসেম্বরের চেয়ে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তখন ব্যাংকটিতে খেলাপি ঋণ ছিল ৩ হাজার ৯৭২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। ওই সময় বিতরণ করা ঋণের ১২ দশমিক ৭০ শতাংশ ছিল খেলাপি। তিন মাসে আদায় ৮৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
রূপালীর মূলধন ঘাটতি ৭৬১ কোটি ৯১ লাখ টাকা ।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের অন্যতম বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আরডিআরএস বাংলাদেশ-এর ট্রাস্টি বোর্ডের নতুন চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হলেন ফারুক আহমেদ।
ট্রাস্টি বোর্ডের ৬৬তম সভায় এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ফারুক আহমেদ ২৭ এপ্রিল থেকে পরবর্তী তিন বছরের জন্য চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব পালন করবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বাস্থ্য বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিপ্রাপ্ত ফারুক আহমেদের উন্নয়ন খাতে রয়েছে বিস্তৃত অভিজ্ঞতা।
তিনি এক সময় ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক ছিলেন এবং ঢাকায় বিশ্বব্যাংক কার্যালয়ে বিভিন্ন পদে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জেনেভাভিত্তিক গ্যাভি, দ্যা ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স (এঅঠও)-এর বোর্ড সদস্য ছিলেন, এছাড়া তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং বিশ্বব্যাংকের বিভিন্ন কমিটিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ফারুক আহমেদ সোশ্যাল মার্কেটিং কোম্পানি (এসএমসি) এন্টারপ্রাইজের পরিচালনা পরিষদের একজন সদস্য। তিনি বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ ওয়ার্কিং গ্রুপেরও একজন সদস্য।
ফারুক আহমেদ ২০২০ সালের ১৬ মার্চ থেকে আরডিআরএস-এর ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
আরডিআরএস বিশ্বাস করে, ফারুক আহমেদের নেতৃত্বে সংস্থাটি দেশজুড়ে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি অব্যাহত রাখতে এবং এ সম্পর্কিত কার্যক্রমকে বেগবান করতে সক্ষম হবে। প্রেস রিলিজ
দেশের বাজারে টানা তৃতীয় দিনের মতো কমেছে স্বর্ণের দাম। ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ভরিতে কমেছে ৬৩০ টাকা। সে হিসাবে স্বর্ণের ভরি দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৫৬১ টাকা। আগের দিন বুধবার তা ছিল এক লাখ ১৪ হাজার ১৯১ টাকা।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়।
স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠনটি জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের দাম কমেছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা ৫০ মিনিট থেকে স্বর্ণের নতুন নির্ধারিত দাম কার্যকর হবে।
বাজুস এর আগে চলতি এপ্রিল মাসের ৬, ৮ ও ১৮ তারিখ তিন দফা স্বর্ণের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। এর মধ্যে ভালো মানের স্বর্ণের ভরিতে ৬ এপ্রিল ১ হাজার ৭৫০ টাকা, ৮ এপ্রিল ১ হাজার ৭৫০ টাকা ও ১৮ এপ্রিল দুই হাজার ৬৫ টাকা বাড়ানো হয়। মাঝে ২০ এপ্রিল ভরিতে ৮৪০ টাকা দাম কমানোর পরদিন ২১ এপ্রিল আবার ৬৩০ টাকা বাড়ায় বাজুস।
এবার শুরু হয় দাম কমানোর পালা। সবশেষ দাম বাড়ানোর দু’দিন পর ২৩ এপ্রিল ভালো মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে তিন হাজার ১৩৮ টাকা ও ২৪ এপ্রিল দু’হাজার ৯৯ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয় বাজুস। আর বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ভরিতে ৬৩০ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ টানা তিন দিনে স্বর্ণের দাম ভরিতে কমেছে পাঁচ হাজার ৮৬৮ টাকা।
সোনার দামে এমন উত্থান-পতনের কারণ জানতে চাইলে বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা এখন নতুন পদ্ধতি বা পলিসি অনুসরণ করে গোল্ডের দাম নির্ধারণ করি। সেটি হচ্ছে বিশ্ব স্বীকৃত ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল পলিসি।
‘এতদিন আমরা আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে গোল্ডের দাম নির্ধারণ করতাম। সেক্ষেত্রে বিশ্ববাজারে যখন স্বর্ণের দাম কমত তখন আমরা কমাতাম। আর যখন বাড়ত তখন বাড়াতাম।’
তিরি আরও বলেন, ‘এখন আমরা আমাদের স্বর্ণের সবচেয়ে বড় বাজার তাঁতীবাজারের বুলিয়ান মার্কেট ফলো করে দর নির্ধারণ করি। এই বাজারে স্বর্ণের দাম ঘণ্টায় ঘণ্টায় উঠা-নামা করে। সেটা অনুসরণ করে আমরা নতুন দর নির্ধারণ করে থাকি। সেক্ষেত্রে দিনে দু’বারও গোল্ডের দাম বাড়ানো-কমানো হতে পারে।’
আরও পড়ুন:ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পরিচালনা পর্ষদ ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২০২৩ সালে ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড সুপারিশ করেছে।
ব্যাংকের ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভার অনুমোদন সাপেক্ষে এ ডিভিডেন্ড প্রদান করা হবে।
ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসানুল আলমের সভাপতিত্বে বুধবার অনুষ্ঠিত পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় ভাইস চেয়ারম্যান তানভীর আহমেদসহ অন্যান্য পরিচালক, ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা এবং অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও কোম্পানি সেক্রেটারি জে কিউ এম হাবিবুল্লাহ, এফসিএস উপস্থিত ছিলেন।
আগামী ২৫ জুন ব্যাংকের ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। লভ্যাংশ প্রাপ্তি এবং সাধারণ সভায় যোগদানের ক্ষেত্রে রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয় ১৬ মে।
সভায় অন্যান্য আলোচ্যসূচির সঙ্গে ৩১ মার্চ শেষ হওয়া ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুমোদন করা হয়।
আরও পড়ুন:কোভিড-১৯ মহামারির অভিঘাতে সমগ্র বিশ্ব যখন টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে পতিত হয়, ঠিক সেই সময় বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে টেনে তুলতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। তার নেতৃত্বে বিভিন্ন যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বিশ্বের দরবারে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যায়।
যদিও একটি শ্রেণি বাজারে নেতিবাচক ভূমিকা রাখতে বরাবরই সক্রিয় ছিল। তবে দূরদর্শী নেতৃত্বগুণে বিনিয়োগকারীদের অর্থের সুরক্ষা দিতে বারবার বহুমাত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে সেই উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হতে দেননি অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
সম্প্রতি বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে অস্বাভাবিক আচরণ করছে পুঁজিবাজার। নিয়ন্ত্রক সংস্থাও এ পরিস্থিতি সামাল দিতে এরই মধ্যে অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করে বাজারকে স্থিতিশীল করতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এমনকি পরিস্থিতি অনুকূলে আনতে গতকাল ফ্লোর প্রাইসমুক্ত সব শেয়ারে একদিনের দর কমার নিম্নসীমা (সার্কিট ব্রেকার) ৩ শতাংশে বেঁধে দিয়েছে সংস্থাটি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএসইসির সময়োপযোগী এমন পদক্ষেপ বাজারকে আবারও টেনে তুলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে সন্দেহভাজন বেশকিছু লেনদেন পরিলক্ষিত হয়েছে বাজারে। এতে বিশেষ একটি শ্রেণি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য বাজারকে ম্যানিপুলেট করার চেষ্টা করছে। কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসও এতে জড়িত রয়েছে। বাজারে অবাঞ্ছিত বিক্রির আদেশ দিয়ে তারা অস্থিরতা তৈরি করছে। তাছাড়া বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে বাজারে একটা শ্রেণি স্বার্থ আদায়ের চেষ্টা করছে। ফলে বেশ কিছুদিন ধরে বাজার কিছুটা অস্বাভাবিক আচরণ করছে।
এ বিষয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে বেশ কিছু ট্রেডার নিজেদের মধ্যে যোগশাজসের মাধ্যমে প্রথমে কম দরে শেয়ার বিক্রি করত। পরে তাদের দেখাদেখি সাধারণ বিনিয়োগকারীরা যখন প্যানিক হয়ে শেয়ার বিক্রি করত তখন তারা আবার কম দরে শেয়ারগুলো কিনে নিত। এভাবে তারা নিজেদের মধ্যে শেয়ার লেনদেন করে প্যানিক সৃষ্টির মাধ্যমে ভালো শেয়ারগুলোর দাম কমাত। এই কাজে তাদের বেশ কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসও সহযোগিতা করত।’
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে শেয়ারের দর কমার কথা নয়। গুটি কয়েক অসাধু ট্রেডারের কারসাজিতে বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এতে বড় বড় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আল-আমিন বলেন, ‘এক শ্রেণির অসাধু বিনিয়োগকারী চাচ্ছেন বর্তমান কমিশন বিদায় হয়ে নতুন কেউ দায়িত্বে আসুক, যাতে তারা নতুন করে আরও সুযোগ নিতে পারেন। তারাই বিভিন্ন দুর্বল শেয়ারে কারসাজি করে সুবিধা নিচ্ছেন।
‘ফোর্সড সেলের মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার তারা কম দরে কিনে নিচ্ছেন। কমিশনের উচিত হবে কারসাজিকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা, যাতে তারা বারবার বাজারকে ম্যানিপুলেট করার সাহস না পায়।’
এদিকে শেয়ারবাজারের সাম্প্রতিক সময়ের টানা পতন ঠেকাতে আবারও শেয়ারের মূল্যসীমায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে বিএসইসি এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করেছে।
ওই আদেশে বলা হয়, এখন থেকে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর এক দিনে ৩ শতাংশের বেশি কমতে পারবে না। বর্তমানে দরভেদে কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত দরপতন হতে পারে।
দেশের পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে আদেশে জানানো হয়েছে। সার্কিট ব্রেকারের এ সিদ্ধান্ত বুধবার থেকে কার্যকর করতে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে নির্দেশও দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘আজকের এই সার্কিট ব্রেকার আরোপ বাজারে কারসাজি রোধ করবে। এটি সন্দেহভাজন লেনদেন বন্ধ করবে। আর এ সিদ্ধান্তের ফলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও উচ্চ সম্পদশালী একক বিনিয়োগকারীরা আরও বেশি সক্রিয় হবে বলে আশা করছি।’
তিনি বলেন, ‘অনেক ভালো শেয়ার বর্তমানে আন্ডারভ্যালুতে আছে। এখানে তারা বিনিয়োগ করবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।’
সার্কিট ব্রেকার বাজারের দরপতন ফেরাতে ব্যর্থ হলে আবারও ফ্লোর প্রাইস দেয়ার কোনো সিদ্ধান্ত আছে কি না জানতে চাইলে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আশা করছি, আমাদের বাজারে আর কখনও ফ্লোর প্রাইস দিতে হবে না। শিগগিরই বাজার একটা স্থিতিশীল অবস্থানে ফিরবে।’
আরও পড়ুন:দেশের পুঁজিবাজারে শেয়ারের দরপতনের গতি কমিয়ে আনার চেষ্টার অংশ হিসেবে এবার মূল্যসীমায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখন থেকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ার আগের দিনের শেষ হওয়া দরের ভিত্তিতে ৩ শতাংশের বেশি কমতে পারবে না।
শেয়ারের দাম কমার ক্ষেত্রে আগে মূল্যসীমা ছিল ১০ শতাংশ। তবে ঊর্ধ্বসীমা অর্থাৎ কোনো শেয়ারের দাম বাড়ার সীমা ১০ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বুধবার এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করেছে। বৃহস্পতিবার থেকেই এ আদেশ কার্যকর হবে বলে আদেশে জানানো হয়েছে।
বিএসইসি জানিয়েছে, যেসব শেয়ার ফ্লোর প্রাইসের আওতায় আছে সেসব শেয়ারের ক্ষেত্রে নতুন আদেশ প্রযোজ্য হবে না।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে বাজার সূচকের অবাধ পতন ঠেকাতে এর আগে ২০২২ সালের জুলাই শেষে প্রতিটি শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে দিয়েছিল বিএসইসি। ফ্লোর প্রাইস ছিল ২০২২ সালের ২৮ জুলাই ও তার আগের চার দিনের ক্লোজিং প্রাইসের গড়।
বর্তমানে বেক্সিমকো, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি, মেঘনা পেট্রোলিয়াম ও শাহজীবাজার পাওয়ার কোম্পানির ক্ষেত্রে ওই ফ্লোর প্রাইস কার্যকর রয়েছে।
আরও পড়ুন:দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম একদিনের ব্যবধানে আরেক দফা কমেছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম ভরিতে দু’হাজার ১৩৯ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ১৪ হাজার ১৫১ টাকা।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। বলা হয়েছে,
স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। নতুন নির্ধারিত দাম বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকেল ৪টা ৫০ মিনিট থেকে কার্যকর হবে।
বাজুস এর আগের দিন মঙ্গলবার ঘোষণা দিয়ে ওই দিন থেকে ভালো মানের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা নির্ধারণ করে। সে হিসাবে দুদিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে ভালো মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে কমলো ৫ হাজার ২৭৭ টাকা।
নতুন নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ১৩৯ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ১৫১ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৯৯৫ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৯ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের ভরি ১ হাজার ৭১৪ টাকা কমিয়ে ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম ভরিতে ১ হাজার ৩৭৭ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৫ হাজার ২০৯ টাকা।
অবশ্য স্বর্ণালঙ্কার কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতাদের এর চেয়ে বেশি অর্থ গুনতে হবে। কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে স্বর্ণের গহনা বিক্রি করা হয়। সে সঙ্গে ভরি প্রতি মজুরি ধরা হয় নূন্যতম ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের গহনা কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হবে ১ লাখ ২৩ হাজার ৩৫৮ টাকা।
স্বর্ণের দাম কমানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রূপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেট ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রূপার ভরি ১ হাজার ২৮৩ টাকা নির্ধারণ করা আছে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের বাজারে গত বছর প্রথমবারের মতো ল্যাপটপ নিয়ে আসে ট্রেন্ডি প্রযুক্তি ব্র্যান্ড ইনফিনিক্স। ইনবুক ওয়াইটু প্লাস নামের ল্যাপটপটি দিচ্ছে চমৎকার ডিজাইন, শক্তিশালী পারফরম্যান্স ও সাশ্রয়ী দামের প্রতিশ্রুতি। অল্প সময়ের মধ্যেই প্রযুক্তিপ্রেমী শিক্ষার্থী ও এক্সিকিউটিভদের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে এ ল্যাপটপ।
দেখে নেওয়া যাক কী আছে ইনফিনিক্স ইনবুক ওয়াইটু প্লাস ল্যাপটপটিতে। এর ফিচার, পারফরম্যান্স ও ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতাই বা কেমন।
ডিজাইন ও গঠন
স্লিক ও হালকা ডিজাইনের ইনফিনিক্স ইনবুক ওয়াইটু প্লাস সহজেই সবার মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। শিক্ষার্থী ও ব্যস্ত এক্সিকিউটিভদের জন্য এ ল্যাপটপ যথার্থ। এর পরিচ্ছন্ন ও আধুনিক মেটালিক ডিজাইন স্থায়িত্ব নিশ্চিত করে। একই সঙ্গে দেয় প্রিমিয়াম অনুভূতি। স্লিক প্রোফাইল ও প্রাণবন্ত ডিসপ্লের সঙ্গে যুক্ত সরু বেজেল ল্যাপটপটির সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে। ফলে বাজারের একই ধরনের দামি ল্যাপটপের সমকক্ষ হয়ে ওঠে ওয়াইটু প্লাস।
তা ছাড়া এর মসৃণ এজি গ্লাস টাচ প্যানেলের কারণে সিল্কি-স্মুথ ও স্থায়ী টাচের অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়। ১.৫ মিলিমিটার কি ট্র্যাভেল এবং ব্যাকলাইটিংযুক্ত রেসপনসিভ কি-বোর্ড টাইপিংকে করে তোলে সহজ ও আরামদায়ক। তাই কম আলোতেও টাইপ করতে কোনো সমস্যা হয় না।
পারফরম্যান্স ও প্রোডাক্টিভিটি
১১তম প্রজন্মের কোর আই৫ প্রসেসর ও ৮ জিবি র্যাম রয়েছে ইনফিনিক্স ওয়াইটু প্লাসে। স্টোরেজের প্রয়োজন মেটাতে এতে আছে ৫১২ জিবি এনভিএমই পিসিআইই এসএসডি। প্রোডাক্টিভিটি সফটওয়্যার, ওয়েব ব্রাউজ করা কিংবা কনটেন্ট স্ট্রিম করাসহ সব ধরনের উচ্চ চাহিদাসম্পন্ন অ্যাপ্লিকেশন চালানো যায় খুব সহজেই। এর ইন্টিগ্রেটেড ইন্টেল ইউএইচডি গ্রাফিকস সাধারণ গেমিং ও মাল্টিমিডিয়া এডিটিংয়ের জন্য স্বাচ্ছন্দ্যময় গ্রাফিকস পারফরম্যান্স নিশ্চিত করে। উইন্ডোজ ১১ পরিচালিত ইনফিনিক্স ইনবুক ওয়াইটু প্লাসের অপারেটিং সিস্টেম সবার পরিচিত ও ব্যবহার করা সহজ।
ডিসপ্লে ও মাল্টিমিডিয়া অভিজ্ঞতা
উজ্জ্বল রং ও ওয়াইড অ্যাঙ্গেলের সঙ্গে স্পষ্ট ও পরিষ্কার ভিজ্যুয়াল দেয় ১৫.৬ ইঞ্চি ফুল এইচডি আইপিএস ডিসপ্লেযুক্ত ইনবুক ওয়াইটু প্লাস। ৮৫ শতাংশ স্ক্রিন-টু-বডি রেশিওর সঙ্গে চমৎকার মাল্টিমিডিয়া অভিজ্ঞতার জন্য ডিসপ্লেটি দারুণ। কাজেই আপনার প্রিয় নেটফ্লিক্স সিরিজ দেখা কিংবা ফটো এডিট করা— সবই হবে স্বাচ্ছন্দ্যে।
ল্যাপটপটিতে আছে ডুয়েল এলইডি ফ্ল্যাশ ও এআই নয়েজ ক্যান্সেলেশন প্রযুক্তিযুক্ত ১ হাজার ৮০ পিক্সেলের ফুল এইচডি+ ক্যামেরা। এর ফলে ভিডিও কলের অভিজ্ঞতা হবে আরও উন্নত।
ব্যাটারি লাইফ ও চার্জিং
ইনবুক ওয়াইটু প্লাসের ৫০ ওয়াট-আওয়ার ব্যাটারি ক্যাপাসিটি কোনো চার্জ ছাড়াই প্রতিদিনের কাজে আট ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যাকআপ দিতে সক্ষম। পাশাপাশি এর ৪৫ ওয়াট টাইপ-সি পোর্টযুক্ত চার্জারে ডিভাইসটি দ্রুত ও সহজেই চার্জ করা যায়। ফলে ভারী চার্জার বহনের প্রয়োজন হয় না।
দাম
ল্যাপটপটির বর্তমান বাজারমূল্য ৫৮ হাজার ৯৯০ টাকা। অনুমোদিত ইনফিনিক্স রিটেইলার থেকে ল্যাপটপটি কেনা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য