চট্টগ্রাম বন্দরে রপ্তানিপণ্য জাহাজীকরণে জাহাজ এবং খালি কন্টেইনারের কোনো সংকট নেই বলে দাবি করেছে সরকার। গত ১৫ দিনের হিসেব তুলে ধরে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ সময়ে বাংলাদেশ থেকে ২৬টি জাহাজ ছেড়ে গেছে। সেগুলোর ধারণ ক্ষমতা ছিল ৩৮ হাজার টিইইউএস (টুয়েন্টি ফিট ইক্যুইভেলেন্ট ইউনিট)। প্রতিটি কনটেইনারের দৈর্ঘ্য ২০ ফুট।
কিন্তু জাহাজগুলো পণ্য পরিবহন করেছে ২৭ হাজার টিইইউএস। অর্থাৎ ১১ হাজার টিইইউএস সমপরিমাণ জায়গা অব্যবহৃত ছিল। এ ছাড়াও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দর এবং বিভিন্ন অফডকে (বেসরকারি কনটেইনার ডিপোগুলো) প্রায় ৪০ হাজার টিইইউএস খালি কনটেইনার রয়েছে।
বুধবার সচিবালয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষ থেকে ‘চট্টগ্রাম বন্দরে রপ্তানিপণ্য জাহাজীকরণ সংক্রান্ত’ এক ভার্চুয়াল সভায় এসব তথ্য জানানো হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী।
পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, পণ্য ও কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দর ২৪ ঘণ্টা চালু রেখে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। কোভিড-১৯ সংক্রমণজনিত লকডাউনের মধ্যেও চট্টগ্রাম বন্দর ২৪ ঘণ্টা চালু রয়েছে। জাহাজ থেকে পণ্য এবং কনটেইনার আনলোডিং, আমদানিকারকের কাছে পৌঁছানো এবং রপ্তানি কন্টেইনার জাহাজে বোঝাইয়ের কাজ স্বাভাবিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ৩০ লাখ ৯৭ হাজার ২৩৬ টিইইউএস কনটেইনার, ১১ কোটি ৩৭লাখ ২৯ হাজার ৩৭৩ মেট্রিক টন কার্গো এবং ৪ হাজার ৬২টি জাহাজ হ্যান্ডলিং করেছে।
যেখানে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৩০ লাখ ৪ হাজার ১৪২ টিইইউএস কনটেইনার, ১০ কোটি ১৫ লাখ ৬৫ হাজার ২৭২ মেট্রিক টন কার্গো এবং ৩ হাজার ৭৬৪টি জাহাজ হ্যান্ডলিং করেছে।
দেখা যাচ্ছে, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে কার্গোতে ১১.৯৮ শতাংশ, কনটেইনারে ৩.০৯ শতাংশ এবং জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ে ৭.৯২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
সভায় আরও জানানো হয় যে, ছোটখাটো যেসব সমস্যা আছে সেগুলো নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কাজ করছে। ভবিষ্যতে বন্দরের চাহিদা মোকাবিলায় এবং সম্ভাব্য সমস্যা সমাধানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) সুলতান আব্দুল হামিদের নেতৃত্বে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে।
কমিটিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, চট্টগ্রাম বন্দর, এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ কনটেইনার শিপিং অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফা), বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশন (বিকডা) এবং সংশ্লিষ্টদের প্রতিনিধি হিসেবে রাখা হবে।
সভায় বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি বোঝাই কনটেইনার দ্রুত গন্তব্যে পাঠাতে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কয়েকটি প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে রয়েছে শিপিং অ্যাজেন্ট এবং মেইন লাইন অপারেটরদের (এমএলও) মধ্যে ‘কমন ক্যারিয়ার এগ্রিমেন্ট’ করা; ডাইরেক্ট কলিং অব শিপ টু ফাইনাল ডেস্টিনেশন; এমএলওদের মধ্যে কনটেইনার সরাসরি ইন্টারচেঞ্জ; ফ্রেইট ফরওয়ার্ডরা অফডকগুলোকে বিলম্বে কার্গো লোডিং প্ল্যান প্রদান না করা; এবং অফডকের সংখ্যা বাড়ানো।
এগুলো বাস্তবায়ন হলে জাহাজ ও কনটেইনার জট কমে আসার পাশাপাশি বেশি সংখ্যক কনটেইনার রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয় এবং দেশের রিজার্ভ বাড়বে বলে আশা করছে চট্টগ্রাম বন্দর।
ভার্চুয়াল বৈঠকে কাস্টমসের সদস্য (পলিসি) সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শফিকুজ্জামান, চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান, মোংলা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা, বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান, বিকেএমইএর সহ সভাপতি মো. হাতেমসহ এফবিসিসিআই, বাংলাদেশ শিপিং অ্যাজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ কন্টেইনার শিপিং অ্যাসোসিয়েশন, বাফা এবং বিকডার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর আবু জাফর মো. জালালউদ্দিন এবং বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর সাব্বির মাহমুদও বৈঠকে যুক্ত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
এবারের দুর্গাপূজায় প্রায় দ্বিগুণ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, এর আগে দুর্গাপূজায় দুই থেকে তিন কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হতো।
তিনি বলেন, এবারের পূজায় সরকার ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘এবার পূজায় নিরাপত্তা অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশি। প্রশাসনও আন্তরিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করছে।
‘পূজামণ্ডপের আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশসহ বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত করা হয়েছে।’
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার রশুনিয়া ইউনিয়নের সন্তোষপাড়া দুর্গামন্দিরের পূজামণ্ডপ পরিদর্শনকালে শনিবার বেলা ১১টার দিকে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে জেলার শ্রীনগর উপজেলায় পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
ওই সময় তার সঙ্গে ছিলেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি একেএম আওলাদ হোসেন, জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাত, পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার, সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ, ওসি খন্দকার হাফিজুর রহমান, জেলা আনসার ও ভিডিপি কমান্ড্যান্ট বিউটি আক্তার, সিরাজদিখান উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুল কুদ্দুস ধীরন, জামায়াতে ইসলামীর সিরাজদিখান উপজেলার সভাপতি মাওলানা কবির হোসেন, ইছাপুরা ইউপি চেয়ারম্যান মো. সুমন মিয়া, সিরাজদিখান উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি তপন কুমার দাস, সাধারণ সম্পাদক জ্ঞানদীপ ঘোষ, সিরাজদিখান প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল-মাসুদ ও সিরাজদিখান রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মো. নাছির উদ্দিনসহ অনেকে।
আরও পড়ুন:নির্বাচনের সময় মন্ত্রণালয়গুলোর দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের (ইসি) হাতে থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বস্ত্র ও পাট এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন।
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে শনিবার রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি) আয়োজিত ‘নির্বাচন কমিশনে কেমন সংস্কার চাই’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। সেমিনারে প্রধান আলোচক ছিলেন নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন যাদেরকে নিয়োগ দেয়, তাদের ক্ষেত্রে ইসি যে রিপোর্ট দেয়, সেটিই যেন চূড়ান্ত হয়। এটি জবাবদিহি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে।
‘এ ক্ষেত্রে সরকার যেন হস্তক্ষেপ না করে। নির্বাচনের সময় মন্ত্রণালয়গুলোর ওপর খবরদারির ক্ষমতা ইসিকে দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সার্বিকভাবে রাষ্ট্রের কাঠামো ভেঙে পড়েছিল। অনেক জায়গায় মাটির সঙ্গে মিশে গিয়েছিল। কাজেই দায়দায়িত্ব এখন থেকেই শুরু। অনেক রক্ত ঝরেছে।
‘৫০০ থেকে ৭০০ মানুষের চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। তারা বলেছে, কোনো অসুবিধা নেই। কাজেই আমরা যদি ঠিক করতে না পারি, তাদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি হবে।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘ডিসিরা নির্বাচন করেন, এ কথা ঠিক নয়। আইনে ৩০০ আসনে ৩০০ রিটার্নিং অফিসার দেয়া যাবে। আবার ডিসিদের দিতে হবে, এমন কোনো কথা নেই।’
তিন ধাপে ইসি গঠন করা যেতে পারে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তৃতীয় ধাপে পার্লামেন্ট থেকে চূড়ান্ত প্রস্তাব যাবে রাষ্ট্রপতির কাছে। প্রথম ধাপে সবার নামই প্রকাশ করা হবে।
সাবেক এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘দলের প্রার্থী হতে হলে দলের প্রাথমিক সদস্য পদে অন্তত তিন বছর থাকতে হবে। তৃণমূলে এক/দুই বছর থেকে প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
‘এ ছাড়া নারী প্রার্থী ৫০ জন বা ১০০ জন, যাই করেন, সেটা সরাসরি নির্বাচনে করেন। সংরক্ষিত আসনে নারীদের কোনো অংশগ্রহণ থাকে না, তবে এটা করবেন কি না, সেটা আপনারা রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্ত নেবেন।’
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক এবং নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘নির্বাচন একটা দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। এটা এক দিনের বিষয় নয়। এখানে সহিংসতামুক্তভাবে প্রচারণা থেকে শুরু করে ভোট গণনা হয়। নির্বাচন প্রক্রিয়া সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য হতে হবে। পুরো প্রক্রিয়া সঠিক হতে হবে।
‘যে নির্বাচন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে কার্যকর করে না, সেটা সংবিধানের লঙ্ঘন। সরকার, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহায়তা না করলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক দল সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করলে নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না। গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজসহ আরও অংশীজনদের সঠিক ভূমিকা পালন করতে হবে।’
বদিউল আরও বলেন, ‘সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক ঐকমত্য এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন প্রয়োজন। নিরপেক্ষ, সততা, নিষ্ঠা ও পেশাদারত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করবে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।
‘নির্বাচন কমিশন নিয়োগের এখতিয়ার নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের নয়। এ সিদ্ধান্ত নেবে অন্তর্বর্তী সরকার।’
আরও পড়ুন:জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার উত্থান এবং জনজীবনে সংকটের অভিযোগ করে তার দায়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শনিবার দুপুরে সমাবেশে সংগঠনটি এ দাবি জানায়।
বিক্ষোভ সমাবেশে লিখিত বক্তব্যে দলটির চেয়ারম্যান ইমাম হায়াত বলেন, ‘দেশে ধর্মের নামে অধর্ম, উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়েছে। সাম্প্রদায়িক, সামাজিক, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে জনগণের জানমালের নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে।
‘একই সঙ্গে অসহনীয়ভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও জনজীবনে ব্যাপক সংকটের দায়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র হত্যা করেছিল। ওই সরকারের স্বৈরতন্ত্র থেকে মুক্তির জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি। বিগত জুন, জুলাই এবং আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন প্রকৃত পক্ষে সব মানুষের আন্দোলন ছিল, তবে আন্দোলনে বিগত স্বৈরাচারের পতন হলেও জনগণের আন্দোলনের লক্ষ্য ও প্রত্যাশা ছিনতাই হয়ে গিয়েছে।’
ওই সময় আরও বক্তব্য দেন দলের মহাসচিব শেখ রায়হান, দলটির নেতা আবু আরেফ সরতাজ, এমদাদুল হক সাইফ, সুফি আহমেদ শাহ, হাফেজ ইলিয়াসসহ অনেকে।
আরও পড়ুন:আগামী ২৩ অক্টোবরের মধ্যে হজের নিবন্ধন না করলে মিনা ও আরাফার ময়দানে কাঙ্ক্ষিত জোনে তাঁবু বরাদ্দ পাওয়া যাবে না। এতে জামারা (কঙ্কর নিক্ষেপের স্থান) থেকে অনেক দূরে, পাহাড়ি এলাকা ও নিউ মিনা এলাকায় অবস্থান করতে হবে। ফলে হজযাত্রীদের সৌদি আরবে প্রখর রোদ ও গরমের মধ্যে দীর্ঘপথ হাঁটার কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হবে।
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে হজযাত্রী নিবন্ধন সংক্রান্ত জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘২০২৫ সালে হজে গমনেচ্ছু হজযাত্রী, বেসরকারি হজ এজেন্সি ও সংশ্লিষ্ট সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, রাজকীয় সৌদি সরকারের ঘোষিত রোডম্যাপ অনুসারে আল-মাশায়ের ও আল-মোকাদ্দাসার (মিনা ও আরাফা) তাঁবু নির্ধারণ ও সার্ভিস কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনের কার্যক্রম ২৩ অক্টোবর থেকে শুরু হবে। আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে তাঁবু বরাদ্দ প্রদান করা হয় বলে বিশ্বের অনেক দেশ জামারার নিকটবর্তী জোনে তাঁবু বরাদ্দ নেবে।
‘ফলে ২৩ অক্টোবরের মধ্যে হজযাত্রী নিবন্ধন সম্পন্ন না হলে মিনা ও আরাফার ময়দানে কাঙ্ক্ষিত জোনে তাঁবু বরাদ্দ পাওয়া যাবে না। তাঁবু গ্রহণ ও সার্ভিস কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনে বিলম্ব হলে হজযাত্রীদের জামারা থেকে অনেক দূরে, পাহাড়ি এলাকায় ও নিউ মিনা এলাকায় অবস্থান করতে হবে। ফলে হজযাত্রীদের সৌদি আরবে প্রখর রোদ ও গরমের মধ্যে দীর্ঘপথ হাঁটতে হবে, যা হজযাত্রীদের জন্য কষ্টকর হবে।’
মিনা ও আরাফার কাঙ্ক্ষিত জোনে তাঁবু গ্রহণ, সার্ভিস কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন, মক্কা ও মদিনায় বাড়ি/হোটেল ভাড়া ও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা করার মাধ্যমে সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার স্বার্থে আগামী ২৩ অক্টোবরের মধ্যে হজে গমনেচ্ছু সবাইকে ৩ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন সম্পন্ন করার জন্য ফের অনুরোধ জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
আগামী বছর হজে যেতে গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে প্রাথমিক নিবন্ধন শুরু হয়েছে। আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধন চলবে বলে জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
এবার সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনা মিলিয়ে বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ পালনের সুযোগ পাবেন।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, শনিবার দুপুর পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে এক হাজার ৪০৩ জন হজযাত্রী প্রাথমিক নিবন্ধন করেন।
আরও পড়ুন:অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস শনিবার পুরান ঢাকার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিদর্শন করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা উপলক্ষে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিদর্শন করেন। সেখানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত শুভেচ্ছা বক্তব্যে সব সম্প্রদায়ের মানুষের সমান অধিকার থাকবে, এমন বাংলাদেশ গঠন করতে চান বলে মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘আমরা এমন সমাজ চাই না, যেখানে সেনাবাহিনী, পুলিশ দিয়ে উৎসব পালন করতে হবে। এ সরকার এমন বাংলাদেশে গঠন করতে চায়, যেখানে সব সম্প্রদায় এবং নাগরিকের সমান অধিকার থাকবে।’
এদিকে সারা দেশে আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপন হচ্ছে দুর্গোৎসব। আজ মহা নবমী। রোববার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ৫ দিনব্যাপী এ উৎসবের।
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার শানঘাট গ্রামে শনিবার দুপুরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে আপন বোন এবং ভাইয়ের স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন একটি বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) প্রধান।
কোপে আহত হন ওই ব্যক্তির ভাই ও আরেক বোন।
প্রাণ হারানো দুজন হলেন জোসনা খাতুন ও তার ভাইয়ের স্ত্রী জাকিউল ইলমা।
আহত দুজন হলেন জাহিদ হোসেন ও শামীমা খাতুন।
নিহত জাকিউল ইলমা গাংনী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন।
ইলমাসহ দুজনকে ধারালো অস্ত্র (রামদা) দিয়ে কুপিয়ে মারধরের শিকার হন মহিবুল ইসলাম ওহিদ, যিনি শানঘাট পল্লী উন্নয়ন সংস্থা নামের একটি এনজিওর নির্বাহী পরিচালক। খবর পেয়ে মেহেরপুর সদর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশের ভাষ্য, পারিবারিক জমি নিয়ে শানঘাট গ্রামের মহিবুল ইসলাম ওহিদের সঙ্গে তার অপর দুই ভাই ও তিন বোনের বিরোধ চলে আসছিল। ওহিদ একাই প্রায় দেড় একর জমির পুকুর দখল নিয়ে মাছ চাষ করে আসছিলেন। তিন ভাই এবং দুই বোন মিলে আজ সকাল থেকে পুকুর ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা করছিলেন। অপর বোন অনুপস্থিত ছিলেন।
আলোচনার একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া বাধে। ওই সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে ওহিদ তার ভাই-বোনদের ওপর আক্রমণ করেন। এতে ঘটনাস্থলেই বোন জোসনা খাতুন ও বড় ভাইয়ের স্ত্রী জাকিউল ইলমা নিহত হন।
গুরুতর আহত অবস্থায় মহিবুলের ভাই জাহিদ হোসেন ও ছোট বোন শামীমাকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তাদের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয় বলে জানান গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মারুফ।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জোসনা খাতুনের স্বামী কুদরত-ই-হাফিজ জানান, ভাই-বোনদের মধ্যে জমি ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। মহিবুল ইসলাম ওহিদ বাড়ির পাশের ১ একর ২৮ শতক জমির একটি পুকুর দখল করে আছেন। ভাই-বোনদের ভাগ নির্ধারণ করার জন্য আজ সবাই মিলে আলোচনায় বসা হয়েছিল। এর একপর্যায়ে মহিবুল ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। এতে ঘটনাস্থলেই দুজনের মৃত্যু হয়। আহত হন দুজন।
নিহতের প্রতিবেশীরা জানান, ভাই-বোনদের মধ্যে জমিজমার ভাগাভাগি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ। এ নিয়ে এর আগেও একবার দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। দুই পক্ষই আদালতে মামলা করেছিল। স্থানীয়ভাবে অনেকবার আলোচনায় বসা হলেও সমস্যা সমাধান হয়নি। দুই ভাই এবং তিন বোন এক পক্ষে এবং মহিবুল একাই তাদের প্রতিপক্ষ। কোনোমতেই মহিবুল তাদের সঙ্গে সমঝোতায় আসেননি।
দীর্ঘদিনের বিরোধের জের শেষ পর্যন্ত রক্তাক্ত হত্যাকাণ্ডের পথে গড়ায়।
এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মরদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানোর প্রক্রিয়া করছে পুলিশ।
দুজনকে হত্যাকারী মহিবুল ইসলাম ওহিদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তাজুল ইসলাম।
আরও পড়ুন:মালয়েশিয়ায় নির্মাণাধীন একটি ভবন ধসে জিদান (২২) নামের এক বাংলাদেশি শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
এ দুর্ঘটনায় আহত হন দুই পাকিস্তানি নাগরিক।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে দেশটির মেলাকা রাজ্যের বান্দা হিলিরের জালান বুকিত সেনজুয়াংয়ে এ ঘটনা ঘটে।
মেলাকার সহকারী পুলিশ কমিশনার ক্রিস্টোফার প্যাটিট বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পুলিশ কমিশনার জানান, ওই দিন সন্ধ্যা ছয়টার দিকের দুর্ঘটনার সময় ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সী তিন শ্রমিক কংক্রিটের বাঁধন খোলার কাজ করছিলেন। হঠাৎ করে ভবনটি ধসে পড়লে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে ঘটনাস্থলে নিহত হন বাংলাদেশি শ্রমিক জিদান।
নিহত বাংলাদেশির মরদেহ ওই দিন রাত ১০টার দিকে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে উদ্ধার করা হয়।
পাকিস্তানি দুই শ্রমিক জুবায়ের আহমেদ (৩২) ও আব্বাস গুলমকে (৪৯) উদ্ধার করা হয়।
বেঁচে যাওয়া দুই পাকিস্তানিকে সফলভাবে সরানো হলেও আঘাতের কারণে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের মেলাকা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য