‘কত জাগায় গেলাম। তেল পাই নে। বাজারে খুব বেশি দাম, তেল কিনতি গিলি আর কিছু কিনতি পারি নে। তেল থাকতিও কয় তেল নাই। গরীব মানুষের মরন ছাড়া উপায় নেই।’
আক্ষেপের সঙ্গে কথাগুলো বললেন মধ্যবয়সী মঞ্জুরানী সরকার। প্রখর রোদের মধ্যে সকাল থেকে দুপুর টিসিবির ট্রাকের জন্য এখান থেকে সেখানে পইপই করে ঘুরেছেন। কিন্তু কোথাও মেলেনি না তেল।
নিউজবাংলাকে মঞ্জুরানী জানান, সকাল ১০টার দিকে হাজীপাড়ার বাসা থেকে বের হয়ে প্রথমে রামপুরা স্পটে গিয়ে দেখেন আসেনি টিসিবির পণ্যবাহী ট্রাক। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর সেখান থেকে পায়ে হেটে রওনা হন মালিবাগের দিকে। সেখানে আধাঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও সুখবর মেলনি। ওই স্পটেও যায়নি টিসিবির ট্রাক।
তারপরে মৌচাক মোড়ে গিয়ে মঞ্জুরানী টিসিবির গাড়ি পেয়েছেন বটে, কিন্তু তেল পাননি। তার অভিযোগ, তেলের কার্টন ট্রাকে রেখেও বলা হচ্ছে তেল নেই।
এরপর রামপুরা যান মঞ্জুরানী। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখেন পণ্যের জন্য দীর্ঘ লাইন। অন্তত ৫০ জনের পেছনে তার অবস্থান। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে জানতে পারেন তেল নেই। সচিবালয়ের সামনে আব্দুল গনি রোডের স্পটেও যান মঞ্জুরানি। সেখানেও তেল পাননি তিনি।
টিসিবির প্রত্যেকটি বিক্রয় কেন্দ্রেই দেখা গেছে, ভোজ্য তেলের জন্য হাহাকার। ট্রাক এসে দাঁড়ানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই শেষ হয়ে যাচ্ছে সব পণ্য। সবার আগে শেষ হচ্ছে ভোজ্যতেল।
চলমান শাটডাউনে ভোক্তাদের কম দামে পণ্য সরবরাহ করতে সারা দেশে আবারও ‘ট্রাক সেল’ চালু করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অফ বাংলাদেশ (টিসিবি)।
মঙ্গলবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, পণ্য কিনতে ছিল ক্রেতাদের দীর্ঘ লাইন। মূলত খোলা ট্রাকে বিক্রি করা এসব খাদ্যপণ্য। স্বল্পমূল্যে খাদ্যপণ্য পেতে ভিড় করেন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ। ক্রেতার চাহিদা বেশি থাকায় অনেক স্থানে দ্রুত বিক্রি শেষ হয়েছে।
স্পট রামপুরা
সকাল ১১টার পর পণ্য নিয়ে রামপুরা মোড়ে দাঁড়ায় টিসিবির ট্রাক। তবে, আগ থেকেই সেখানে অপেক্ষামান ছিল শতাধিক নারী পুরুষ। একটু কম টাকায় তেল, চিনি এবং মশুর ডালের জন্যই এই অপেক্ষা।
অপেক্ষমান খাদিজা বেগম বলছিলেন, ‘সকাল ৯টা থেকে দাঁড়িয়ে থেকে এখন ১২টা বাজে। এখনও কিছু নিতে পারি নাই। আরও ৬-৭ জনের পর আমি পাব। সোমবারও ১০টা থেকে ১ টা পর্যন্ত লাইন দিয়ে তেল কিনতে পারিনি। ডাল আর চিনি নিয়ে ফিরে গেছি। এজন্য আজ আবার তেল কেনার জন্য লাইনে দাঁড়ায়ছি।’
করিম শেখ জানান, জীবনে কোনো দিন এভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে এভাবে পণ্য কেনননি তিনি। করোনায় আয়ের পথ বন্ধ, তাই একটু কম টাকায় পণ্য কেনার জন্য তাকে টিসিবির লাইনে দাঁড়াতে হয়েছে।
রিকশাচালক জসিম জানান, রিকশা চালানো বাদ দিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করছি। এই সময় ভাড়া মারলেও কিছু টাকা আসতো। কিন্তু বাজারে তেলের যে দাম, তাতে কেনা মুশকিল। তাই এখান থেকেই কিনতে হবে।
রামপুরা মোড়ে প্রতিদিন সকালে দাঁড়ায় টিসিবির ট্রাক। টিসিবির গুদাম থেকে পণ্য নেবার ক্ষেত্রে লম্বা সিরিয়াল থাকায় দেরি হয় বলে জানান তিনি।
স্পট হাতিরঝিল
হাতিলঝিল মোড়ে টিসিবির পণ্যের ট্রাকেও দেখা যায় দীর্ঘ লাইন। করোনা সংক্রমণে মানুষের চলাচল কম থাকলেও টিসিবির পণ্য কিনতে দেখা যায় নিম্নবিত্তদের লম্বা লাইন।
লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা রুকসানা জানান, এক লিটার তেল এইখান থেকে কিনলে ১০০ টাকা। কিন্তু বাজার থেকে নিলে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। বলেন, নিম্নবিত্তদের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে নেয়া ছাড়া উপায় নেই।
প্রখর রোদ মাথায় করে দুই ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছেন বৃদ্ধ রহিম শেখ। বলেন, ‘আয় নাই। কবে আবার আয় করতে পারব জানি না। তাই সীমিত টাকার মধ্যে টিসিবি থেকে পণ্য কেনার বিকল্প নেই।’
লাইনে মধ্যবিত্ত শ্রেণিও
শুধু যে নিম্নবিত্ত শ্রেণিই টিসিবির পণ্যের লাইনে তা নয়। মধ্যবিত্ত শ্রেণির অনেকেই এখন দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে কিনছেন পণ্য। এমনটা আগে খুব বেশি দেখা যায়নি।
রামপুরা মোড়ে লাইনে দাঁড়ানো তসলিম খান বলেন, ‘কখনও এমনভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনতে হবে চিন্তায় ছিল না। করোনায় ব্যবসা শেষ, অনেক টাকা লোকসান দিয়ে এখন নিঃস্ব বলা যায়। তাই কীভাবে কম টাকায় বাঁচা যায় সেই চেষ্টা করছি।’
অনেকেই লাইনে না দাঁড়িয়ে পাঠিয়েছেন বাসার কাজের বুয়াকে। অনেকেই আবার অফিসের পিয়ন অথবা নিম্নস্তরের কর্মচারীকে পাঠিয়ে কিনছে পণ্য। লজ্জায় লাইনে দাঁড়াতে পারছেন না, আবার সংসার চালানোর মতো অবস্থাও নেই। এমন অবস্থায় লোক মারফত কেনা ছাড়া বিকল্প নেই।
টিসিবির ডিলার রফিকুল ইসলাম জানান, টিসিবির পণ্যের চাহিদা এখন অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। নতুন নতুন মুখ দেখা যাচ্ছে, যারা কখনো লাইনে দাঁড়ায়নি।
তিনি বলেন, তেলের চাহিদা বেশি। দুই থেকে আড়াই ঘণ্টাতেই শেষ হয়ে যাচ্ছে সব পণ্য।
নেই স্বাস্থ্যবিধি
লকডাউনের সময় ভোগ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে যেসব এলাকায় টিসিবির ট্রাক এসেছে সেখানেই ছিল মানুষের উপচেপড়া ভিড়। ক্রেতার চাহিদা বেশি থাকায় এসব পণ্য কেনার সময় করোনা সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব মানেননি অনেকে। বেশির ভাগই পরেননি মাস্ক। সামাজিক দূরত্ব তো দূরের কথা।
রামপুরার ডিআইটি রোডে দেখা যায়, স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করেই পণ্যের জন্য সবাই গাদাগাদি করে লাইনে দাঁড়ান। কেউ কেউ সচেতন হয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানতে চাইলেও ভিড়ের কারণে সেটা সম্ভব হচ্ছে না।
একই এলাকার হাতিরঝিলের মোড়েও দেখা গেছে লম্বা লাইন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ক্লান্ত হয়ে কেউ কেউ রাস্তার ধারে বসে পড়েছেন। এখানেও অনেকের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি।
স্পটে ট্রাক আসতে দেরি কেন
বেশির ভাগ স্পটেই টিসিবির পণ্যবাহী ট্রাক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আসতে দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে টিসিবির মুখপাত্র মো. হুমায়ুন কবির জানালেন, একদিন আগে ডিলারদের টাকা জমা দিতে হয়। কিন্তু গত রোববার ব্যাংক খোলা না থাকায় রাজধানীতে ৮০টি ট্রাকের পরিবর্তে ৬০টি ট্রাক বের করা হয়। সেজন্য রাজধানীর কিছু এলাকা বাদ পড়েছে।
তিনি বলেন, ‘বাড়তি চাহিদা বিবেচনা করে আগের চেয়ে বেশি পণ্য দেয়া হয়েছে। ভোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ আমাদের লক্ষ্য। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাতে বিপণন করা যায় সে বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।’
একাধিক ডিলারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টিসিবির গুদাম থেকে পণ্য নেয়ার জন্য লম্বা সিরিয়াল থাকে। এজন্য পণ্য ছাড় করে স্পটে যেতে দেরি হয়।
ট্রাক ও পণ্য বরাদ্দ বাড়িয়েছে টিসিবি
৫ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রম। দেশব্যাপী ৫০টি ট্রাক বাড়িয়ে ৪৫০ জন ডিলারের মাধ্যমে মহানগরী, জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ের ভোক্তারা পাচ্ছে টিসিবির পণ্য।
টিসিবির বিক্রি করা পণ্যের তালিকায় রয়েছে ভোজ্যতেল, চিনি এবং মশুর ডাল। ১০০ টাকা লিটারে সয়াবিন, ৫৫ টাকা কেজি দরে চিনি এবং মশুর ডাল বিক্রি করছে টিসিবি। দেখা যাচ্ছে, বাজার মূল্যের চেয়ে পণ্যভেদে দামের পার্থক্য ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত।
ট্রাকপ্রতি চিনি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৫০০ থেকে ৮০০ কেজি, মশুর ডাল ৩০০ থেকে ৬০০ কেজি এবং সয়াবিন তেল দেয়া হচ্ছে ৮০০ থেকে ১২০০ লিটার পর্যন্ত।
একজন ক্রেতা একবারে দুই থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ লিটার তেল, দুই কেজি চিনি ও দুই থেকে চার কেজি চিনি কিনতে পারবেন।
ক্রেতার সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে ভোজ্যতেল। কারণ খোলা বাজারের চেয়ে টিসিবির দামের পার্থক্য অন্তত ৫০ টাকা।
টিসিবির পণ্যের এই বিক্রি কার্যক্রম চলবে আগামী ২৯ জুলাই পর্যন্ত।
আরও পড়ুন:প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি জ্ঞানের সর্বশেষ অগ্রগতির সাথে প্রকৌশলীদের সম্পৃক্ত থাকতে হবে।
আগামীকাল ‘ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-এর ৭৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ইঞ্জিনিয়ার্স ডে’ উপলক্ষ্যে আজ দেয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন। ‘উন্নত জগৎ গঠন করুন’ এই আদর্শকে সামনে রেখে ১৯৪৮ সালের ৭ মে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) প্রতিষ্ঠিত হয়।
ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-এর ৭৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ইঞ্জিনিয়ার্স ডে’ উপলক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা প্রকৌশলী সমাজের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
তিনি বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটি কর্তৃত্ববাদী দু:শাসনের অবসান হয়েছে। বর্তমান অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার একটি বৈষম্যমুক্ত রাষ্ট্র নির্মাণে কাজ করে যাচ্ছে। প্রযুক্তি ও প্রকৌশলগত উন্নয়ন একটি জাতির উন্নয়নের গতিকে ত্বরান্বিত করে। তথ্যপ্রযুক্তিতে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন জ্ঞান ও আবিষ্কার। প্রকৌশলীগণ যার মুখ্য কারিগর।
প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘বিশ্বায়নের এ যুগে প্রযুক্তি ও প্রকৌশল জ্ঞানের বিকাশ ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। সামগ্রিক উন্নয়ন নিশ্চিত এবং উন্নত আধুনিক বাংলাদেশ গঠনেও প্রকৌশলীদের কার্যকর ভূমিকা অত্যাবশ্যক বলে আমি মনে করি। প্রকৌশলীগণ দেশপ্রেমের অনির্বাণ চেতনাকে ধারণ করে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবেন বলে আশা করছি।’
প্রধান উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-এর ৭৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
চট্টগ্রাম মহানগরীর কোতোয়ালী থানায় দায়ের করা পুলিশের কাজে বাধাসহ চার মামলায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার দেখানোর (শ্যোন অ্যারেস্ট) আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দীনের আদালতে শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
আদালতে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর রায়হানুল ওয়াজেদ বলেন, কোতোয়ালী থানার পুলিশের কাজে বাধা, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলাসহ চার মামলায় চিন্ময় দাসকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছিলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা। আদালতে শুনানি হয় ও আসামি চিন্ময় কৃষ্ণ দাস কারাগার থেকে ভার্চুয়াল শুনানিতে যুক্ত ছিলেন। আদালত শুনানি শেষে চার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন।
এদিকে চিন্ময় দাসকে গ্রেপ্তার দেখানোর ভার্চুয়াল শুনানিকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
গত ২৬ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর করার পর কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়।
এসময় তার অনুসারীরা বিক্ষোভ করলে পুলিশ ও বিজিবি লাঠিচার্জ এবং সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ চলাকালে এদিন বিকেলে রঙ্গম কমিউনিটি হল সংলগ্ন এলাকায় আইনজীবী সাইফুলকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এ হত্যার ঘটনায় তার বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। ছয়টি মামলায় গ্রেপ্তার হন ৫১ জন। তাদের মধ্যে হত্যায় জড়িত অভিযোগে ২১ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন।
ময়লা-আবর্জনা আর অবৈধ দখলের কারণে অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ জারিরদোনা শাখা খালটি। এ জন্য যথাযথ ব্যবস্থাপনার অভাব ও প্রশাসনের উদাসীনতাকে দুষছেন এলাকাবাসী।
উপজেলা সদর হাজিরহাট বাজার অংশে জারিরদোনা খাল দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে ছোট-বড় বহু দোকানপাট ও বহুতল ভবন। কোনো ধরনের অনুমোদন ছাড়াই খালের পানি বাধাগ্রস্ত করে ইচ্ছামতো সরু পুল, কালভার্ট নির্মাণ করেছেন প্রভাবশালীরা। সেই সঙ্গে গড়ে তুলেছেন অবৈধ দোকানপাট। এ ছাড়া এলাকার কিছু প্রভাবশালী বাজারের আবর্জনা দিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে খালটি ভর্তি করে ফেলেছেন। যাতে করে পরে সময় সুযোগ বুঝে ওই স্থান দখলে নেওয়া যায়।
এলাকাবাসী জানান, চরফলকন, চরলরেন্স, হাজিরহাট ও সাহেবেরহাট ইউনিয়নসহ উপজেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের কৃষিকাজ এ খালের পানি প্রবাহের ওপর নির্ভরশীল। পানির স্বাভাবিক চলাচল বাধাগ্রস্ত হওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে যেমন পানি সংকটে কৃষিকাজ ব্যাহত হয়, তেমনি বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশনজনিত সমস্যায় সয়াবিন, ধান, মরিচ, বাদাম ও সবজীসহ বিভিন্ন ফসল ও বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। বর্তমান এ অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা চলছে। খালটি দখলের কারণে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ থাকায় জীবনযাত্রা চরম দূর্বিষহ হয়ে উঠেছে মানুষের। বন্যার পানি না নামার কারণ হিসেবে খাল দখলকে দায়ী করছেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।
হাজিরহাট এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নূর সেলিম বলেন, জারিরদোনা শাখা খালটির সংযোগ সরাসরি মেঘনা নদীর সঙ্গে। আশির দশক পর্যন্ত এ খালটি গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ হিসেবেই বিবেচিত ছিল। এ অঞ্চলের ব্যবসা বাণিজ্যেও এর অবদান ছিল অনস্বীকার্য। ওই সময়ে কাঁচা রাস্তা দিয়ে বাস-ট্রাক যাতায়াত করা ছিল দুর্সাধ্য। এমনকি ৬০-এর দশকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে এ অঞ্চলের সড়ক পথই ছিল না।
এদিকে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে ৮০ দখলবাজের কবজা থেকে খালটি উদ্ধার করতে উচ্ছেদের আদেশ হলেও কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না স্থানীয় প্রশাসন। তারা খাল উদ্ধারে গড়িমসি করে সময় পার করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
উপজেলা ভূমি অফিসের তথ্যমতে, পিএস জরিপে হাজিরহাট বাজার অংশে খালের প্রশস্ততা ছিল গড়ে প্রায় ৩২ ফুট। বর্তমান আরএস জরিপে তা দাঁড়িয়েছে মাত্র ২০ ফুটে। কিন্তু কিছু ইমারত (ভবন) এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে ওই সব অংশে খালের প্রশস্ততা বর্তমানে ২ থেকে ৩ ফুটের বেশি নেই।
হাজিরহাট বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. কামরুল হাছান বলেন, ‘এলাকার বৃহত্তর স্বার্থে খালটি সংস্কার করে পানির প্রবাহ ঠিক রাখা একান্ত জরুরি। পুরো খাল দখল করে যারা ইমারত তৈরি করেছেন তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়ে খালটি দখলমুক্ত করা এ অঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবি।’
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ আরাফাত হুসাইন বলেন, ‘জারিরদোনা খাল দখলমুক্ত করতে ইতোমধ্যে আদেশ হয়েছে। আমরা দ্রুত কাজ শুরু করব।’
এ বিষয়ে কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহাত-উজ জামান বলেন, খালটি সংস্কার ও অবৈধ দখল উচ্ছেদ করতে প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১০ দিন ছুটি রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
মঙ্গলবার (৬ মে) সচিবালয়ে উপদেষ্টা পরিষদ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানান।
পাশাপাশি ১৭ ও ২৪ মে দুটি শনিবার অফিস খোলা থাকবে বলে ওই পোস্টে জানানো হয়েছে। তবে কবে থেকে ঈদের ছুটি শুরু হয়ে কবে শেষ হবে, সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
গত ঈদুল ফিতরে ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৯ দিন ছুটি ছিল। ঈদে টানা পাঁচদিন ছুটি আগেই ঘোষণা করে সরকার। তার সঙ্গে নির্বাহী আদেশে আরও এক দিন ছুটি বাড়ানো হয়। ওই ছুটি শুরুর দুদিন আগে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের ছুটি ছিল। মাঝে ২৭ মার্চ একদিন খোলা ছিল অফিস।
চলতি মে মাসে এরইমধ্যে টানা তিন দিন ছুটি উপভোগ করছেন সরকারি চাকরিজীবীরা। দ্বিতীয় দফায় আরও একবার তিন দিনের ছুটি পেতে চলেছেন তারা। আগামী ১১ মে (রবিবার) বুদ্ধ পূর্ণিমার ছুটি। এরআগে দুদিন সাপ্তাহিক ছুটি আছে তাদের। অর্থাৎ এই মাসে দুদফায় তিন দিন করে ছুটি উপভোগ করবেন তারা।
আগামী ৯ মে (শুক্রবার) আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ। যার সংক্ষিপ্ত রূপ ইউপিবি বা আপ বাংলাদেশ। তবে এটি রাজনৈতিক দল নয়, রাজনৈতিক প্ল্যাটফরম বলে জানিয়েছেন প্ল্যাটফরমের উদ্যোক্তা আলী আহসান জুনায়েদ।
গতকাল সোমবার বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এসব তথ্য জানান তিনি।
তবে এর আগে জানা গিয়েছিল, রাজনৈতিক দল হিসেবে ঘোষণা হচ্ছে আপ বাংলাদেশ।
ওই পোস্টে জুনায়েদ বলেন, আগামী ৯ মে (শুক্রবার) বিকেল ৪টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (ইউপিবি/আপ বাংলাদেশ)। এটি মূলত একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফরম, দল নয়।
জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন করাই হবে এই প্ল্যাটফরমের প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা বলে জানিয়েছেন তিনি।
জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের মধ্যে আলী আহসান জুনায়েদ অন্যতম। গত ফেব্রুয়ারিতে ঘোষণা হওয়া নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির শীর্ষ পদগুলোর মধ্যে একটি পদ পাওয়ার গুঞ্জন ছিল। পরে এক পোস্টে তিনি ওই দলে যাচ্ছেন না বলে জানান।
আজকের পোস্টে জুনায়েদ আরও বলেন, ‘দীর্ঘ মেয়াদে আমরা বাংলাদেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন করে যোগ্য ও নৈতিক নেতৃত্বের বিকাশ, সুবিচার ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করতে চাই। ধর্মীয় বিশ্বাস ও মূল্যবোধের আলোকে সামাজিক চুক্তির পুনর্বহাল করে সাম্প্রদায়িক বন্ধন ও পারষ্পরিক শ্রদ্ধাপূর্ণ সমাজ গড়ায় কাজ করতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ, আধিপত্যবাদ, ধর্মবিদ্বেষ ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে এই প্ল্যাটফরম কাজ করবে ইনশাআল্লাহ। আপনাদের সবার পরামর্শ, দোয়া ও সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। ৯ মে শহীদ মিনারে আপনাদের আমন্ত্রণ রইল।’
দেশে দ্বৈত এনআইডিধারীর সংখ্যা পাঁচ শতাধিক বলে জানিয়েছেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর। তিনি বলেন, দ্বৈত এনআইডি যাদের রয়েছে, তাদের ব্যাপারে পরিষ্কার সিদ্ধান্ত—প্রথমটি রেখে দ্বিতীয়টি বাদ যাবে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন এ এস এম হুমায়ুন কবীর।
তিনি বলেন, ‘মানুষের সেবা নিশ্চিত করা জন্য যৌক্তিক আবেদন কমিশন অতি দ্রুত অনুমোদন দিচ্ছে। কমিশন ও সচিবালয় আমরা সবাই মিলে মানুষকে দ্রুত সেবা দিতে চাই।’
ডিজি হুমায়ুন বলেন, ‘আমাদের এনআইডি অনুবিভাগে প্রচুর আবেদন আছে। এগুলো যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি করতে পারি সে জন্য দায়িত্ব বণ্টন করে দিচ্ছি। ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যেও একটু ক্ষমতা পরিবর্তন করছি, যাতে সহজ হয়। আমাদের আঞ্চলিক পর্যায়ে ক্যাটাগরি করার ক্ষমতা দেওয়া আছে। আমরা মনিটর করছি।’
তিনি আরও বলেন, দ্বৈত এনআইডি যাদের রয়েছে, তাদের ব্যাপারে পরিষ্কার সিদ্ধান্ত—প্রথমটি রেখে দ্বিতীয়টি বাদ যাবে। এ পর্যন্ত যে তথ্য পেয়েছি দ্বৈত এনআইডি পাঁচ শতাধিক।
হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘প্রায় ১৩ কোটির বেশি তথ্য একটা একটা করে খোঁজা সম্ভব নয়। কেউ যদি তথ্য দেয় আর আমরা যদি দেখতে পাই তবে ব্যবস্থা নিই।’
এদিকে রোহিঙ্গাদের ডেটাবেজ সংরক্ষণ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অন্য একটি মন্ত্রণালয়ে নেওয়া হচ্ছে। তবে তাদের ডাটাবেজ যেখানেই থাকুক না কেন তার ব্যবহারের সুযোগ চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এ বিষয়ে এনআইডি মহাপরিচালক হুমায়ুন বলেন, প্রথম সিদ্ধান্ত ছিল রোহিঙ্গাবিষয়ক ডেটাবেইসটা এপিআইয়ের মাধ্যমে ইসিকে দেওয়া। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য দপ্তর মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, এই তথ্য তাদের কাছে থাকবে। যদিও রোহিঙ্গাদের তথ্য সংরক্ষণের জন্য কোন মন্ত্রণালয়ে সার্ভার থাকবে, সে বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে সরকার বিকল্প কোনো সিদ্ধান্ত নিলে এনআইডি কর্তৃপক্ষ সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।
তিনি আরও জানান, ‘রোহিঙ্গা এবং বিদেশিদের আমরা আমাদের ডেটাবেইসে প্রবেশ করতে দেব না।’
এদিকে প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারদের ভোটের আওতায় আনতে অস্ট্রেলিয়াসহ আট দেশে ভোটার রেজিস্ট্রেশন কাজ শুরু হয়েছে। আগামী সপ্তাহ নাগাদ এই কার্যক্রম কানাডায় চালু হবে। এখন থেকে সুনির্দিষ্ট কারণ দর্শানো ব্যতীত এনআইডি সংশোধন আবেদন বাতিল করা যাবে না বলে জানিয়েছেন এনআইডির ডিজি।
মহাপরিচালক জানান, ৪০ দেশে এনআইডি সেবা চালুর বিষয়ে আগামী সপ্তাহে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হতে যাচ্ছে।
এনআইডি সেবার দুর্ভোগ কমাতে নানা পদক্ষেপের কথা জানিয়ে ডিজি হুমায়ুন বলেন, দ্বৈত এনআইডিধারীদের প্রথমটি রেখে দ্বিতীয়টি বাতিল ও রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়ার প্রবণতা ঠেকাতে আঙুলের ছাপ যাচাইয়ের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যদি রোহিঙ্গাদের আঙুলের ছাপ যাচাই করতে পারি তাহলেই হবে। কাজেই তাদের ভোটার তালিকায় ঢুকে যাওয়া সহজ হবে না। ভোটার হতে যিনি আসবেন, আমরা যত রকমভাবে সম্ভব চেক করে নেব।’
পথে পথে আবেগাপ্লুত নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছায় সিক্ত হচ্ছেন দেশনেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
পথে পথে কেউ হাতে ফুল, কেউ ব্যানার-প্ল্যাকার্ড, কেউ বেগম খালেদা জিয়ার ছবিসংবলিত টি-শার্ট পরে, হাতে জাতীয় ও দলীয় পতাকা নেড়ে, শ্লোগানে শ্লোগানে প্রিয় নেত্রীকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।
‘খালেদা জিয়ার আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’, ‘খালেদা, জিয়া’, ‘তারেক, রহমান’, ‘খালেদা জিয়া ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ পথে পথে নানা শ্লোগান দিচ্ছেন নেতা-কর্মীরা।
চিকিৎসা শেষে দীর্ঘ চারমাস পর যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে আজ ঢাকায় ফেরেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। সকাল ১০টা ৪৩ মিনিটে অবতরণ করে তাঁকে বহনকারী কাতার আমিরের পাঠানো বিশেষ বিমান (এয়ার অ্যাম্বুলেন্স)। বেলা ১১টা ২০ মিনিটে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে বাসভবন ফিরোজার উদ্দেশে রওয়ানা দেয়। পথে পথে আবেগাপ্লুত উচ্ছ্বসিত নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছায় সিক্ত হচ্ছেন তিনি।
দলীয় নেতা-কর্মীরা বলছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে যেভাবে নেতা-কর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাস্তায় নেমেছেন, তা দলের প্রতি তাদের আস্থার প্রমাণ।’
বিএনপি এবং দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের কে কোথায় অবস্থান নিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে শুভেচ্ছা জানাবেন, তা আগেই বলে দেওয়া হয়েছিল। তাদের সড়কে ভিড় না করে ফুটপাতে অবস্থান নেওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে দলের পক্ষ থেকে। যাতে যানজট বা বিশৃঙ্খলা না হয়, সে জন্য পুরো পথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। যদিও অগণিত মানুষকে সামাল দিতে বেগ পেতে হচ্ছে তাদের। বহরের সামনে পিছনে এবং বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িকে ঘিরে মিছিল শ্লোগানে প্রকম্পিত করে রাখছে অগণিত নেতা-কর্মী।
বিমানবন্দরের ভিআইপি টার্মিনালে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে স্বাগত জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সেলিমা রহমান।
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে এসেছেন তার দুই পুত্রবধূ-তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শার্মিলা রহমান।
সকাল থেকেই হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সড়ক থেকে গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’ পর্যন্ত জড়ো হন বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ। তারা বেগম খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানায়।
মন্তব্য