করোনার কারণে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের ওপর লাগাম টেনে ধরার কারণে এ খাতে ২ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র এটি জানিয়েছে।
করোনা মহামারিতে সরকারি ব্যয় কমাতে প্রশিক্ষণের জন্য বিদেশ ভ্রমণসহ অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় খরচকে নিরুৎসাহিত করে সরকার। স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তায় ব্যয় বাড়ানোর জন্যই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, অতি জরুরি না হলে সব ধরনের রুটিন ভ্রমণ এ সময় পরিহার করা হয়েছে। করোনার সময়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের নতুন করে কোনো ধরনের যানবাহন কেনায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
এ ছাড়া সরকারি চাকরিজীবীদের প্রশিক্ষণ, যানবাহন মেরামত ও সংরক্ষণ এবং অফিস সরঞ্জাম কেনাকাটাও নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, চলমান করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের কৃচ্ছ্রসাধন নীতির অংশ হিসেবে এসব উদ্যোগ নেয়া হয়।
সরকারি ব্যয়ের লাগাম টেনে ধরতে বিদায়ী অর্থবছরের মতো নতুন অর্থবছরে ও একই নীতি বাহাল রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের বিদেশ ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
এ ছাড়া সভা, সেমিনার, কর্মশালাসহ অন্যান্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে সশীরে হাজিরার বদলে ভার্চুয়ালি করার সিদ্ধান্তের ফলে এ খাতেও সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে।
বিদায়ী অর্থবছরে ভ্রমণ খাতে ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ব্যয় সংকোচন নীতির কারণে এ খাতে ২ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে।
নতুন অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। তবে এই টাকা খরচের ক্ষেত্রে ১ জুলাই একটি পরিপত্র জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ।
এতে বলা হয়, শুধু জরুরি ও অপরিহার্য ছাড়া ভ্রমণ ব্যয় খাতে বরাদ্দের টাকা খরচ করা যাবে না। সরকারি ভ্রমণের ব্যয় নির্বাহের ক্ষেত্রে বরাদ্দ অর্থের ৫০ শতাংশ বরাদ্দ স্থগিত থাকবে। এ ছাড়া সকল প্রকার রুটিন ভ্রমণ পরিহার করতে হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় সরকারের অগ্রাধিকার খাতসমূহে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের মাধ্যমে সীমিত সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভ্রমণকে নিরুৎসাহিত করতে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম সরকারের এসব উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘অতীতে সরকারি চাকরিজীবীদের প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে বিদেশ ভ্রমণের প্রবণতা লক্ষ করা গেছে।
‘এখানে অর্থ মন্ত্রণালয়কে কঠোর তদারকি করতে হবে। এ খাত থেকে যে অর্থ সাশ্রয় হবে তা স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক সুরক্ষায় আরও বেশি ব্যয় করা যাবে। তবে ব্যয় সংকোচনের পাশাপাশি সরকারকে রাজস্ব আহরণের দিকে আরও বেশি মনোযোগী হতে হবে।’
এদিকে কৃচ্ছ্রসাধনের অংশ হিসেবে সরকারি খাতের যানবাহন কেনায় ব্যয় সীমিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে পৃথক আরেকটি পরিপত্র জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়, চলমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ২০২১-২২ অর্থবছরের পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় কোনো ধরনের গাড়ি কেনা যাবে না। পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত এ আদেশ বহাল থাকবে।
সরকারি গবেষণা সংস্থা বিআইডিএস-এর সাবেক মহাপরিচালক এম কে মুজেরি বলেন, ‘কোনো খাতেই প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত ব্যয় কাম্য নয়। ইতোমধ্যে অর্থ ব্যয়ের স্বচ্ছতার অভাব দেখা দিয়েছে। জনগণের করের টাকা সঠিকভাবে ব্যয় করা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব।’
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, করোনার কারণে বিভিন্ন খাতে সরকারের ব্যয় বেড়েছে। সে জন্য অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে সাশ্রয় করা অর্থ বাজেটের অগ্রাধিকার খাতে ব্যয় করা হবে।
বিআইডিএসের সাবেক ঊর্ধ্বতন পরিচালক বর্তমানে অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত বলেন, করোনাকালে কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে অর্থ ছাড়ে কৃচ্ছ্র নীতি গ্রহণ করতে হবে। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বাজেটে বাস্তবায়নে আরও বেশি নজর দিতে হবে।
চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে ফের সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন পুলিশের ৪০তম ব্যাচের অব্যাহতিপ্রাপ্ত শিক্ষানবিশ উপপরিদর্শকরা (এসআই)।
আব্দুল গনি রোডে সচিবালয়ের ১ ও ২ নম্বর গেটের বিপরীত পাশে সোমবার সকাল থেকে অবস্থান নেন তারা।
বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে তারা শান্তিপূর্ণভাবে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তারা দাবি পূরণে কোনো আশ্বাস না পেলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানান।
অব্যাহতি পাওয়া এসআইদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘ট্রেনিং থেকে অন্যায়ভাবে অব্যাহতি দেওয়ার প্রতিবাদ ও চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে আমরা ৩২১ জন সাব-ইন্সপেক্টর গত ৫ ও ৬ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করি। আমাদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র সচিব দেখা করে আমাদের দাবির বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
‘এখন পর্যন্ত আমাদের বিষয়ে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে না পাওয়ায় আমরা সবাই (৩২১ জন) আজ আবার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলমান থাকবে।’
অব্যাহতি পাওয়া এসআই অম্লান মিত্র বলেন, ‘আমি ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর ট্রেনিংয়ে অংশ নিই। অব্যাহতি দেওয়া হয় ২০২৪ সালের ৪ নভেম্বর। আমাকে বলা হচ্ছে ক্লাসে অমনোযোগী এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী। কিন্তু আমি অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষায় ৮০৪ জনে ১০০ জনের মধ্যে ছিলাম। অমনোযোগী থাকলে তো এমন ফলাফল হওয়ার কথা না।’
কর্মসূচিতে আসা আরেকজন নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘আমরা এক বছর অনেক ত্যাগ স্বীকার করে প্রায় বিনা বেতনে ট্রেনিং করেছি। যখন চাকরিতে নিয়মিত হব, তখনই আমাদের বাদ দেওয়া হলো। এর থেকে কষ্টের আর কিছু হতে পারে না।’
৪০তম ক্যাডেট এসআই ব্যাচে প্রশিক্ষণের জন্য মোট ৮২৩ জন ছিলেন। তারা গত বছরের ৪ নভেম্বর থেকে রাজশাহীর সারদায় পুলিশ একাডেমিতে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ শুরু করেন।
তাদের মধ্যে তিন ধাপে ৩১৩ জন এসআইকে মাঠে ও ক্লাসে বিশৃঙ্খলার অভিযোগ তুলে শোকজ করে একাডেমি। এরই মধ্যে তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:সরকারি কর্ম কমিশনে (পিএসসি) সদ্য নিয়োগ পাওয়া ছয় সদস্যের নিয়োগ বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবুল হায়াত মো. রফিকের সই করা প্রজ্ঞাপনে সোমবার এ তথ্য জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি কর্মকমিশনে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত নিম্ন বর্ণিত ছয় সদস্যের নিয়োগ আদেশ বাতিল করা হলো।
নিয়োগ বাতিল করা ছয় সদস্য হলেন অধ্যাপক ড. শাহনাজ সরকার, মো. মুনির হোসেন, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড. এ এফ জগলুল আহমেদ, ড. মো. মিজানুর রহমান, সাব্বির আহমেদ চৌধুরী ও অধ্যাপক ডা. সৈয়দা শাহিনা সোবহান।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করা হবে।
দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তর ও আবাসন নিশ্চিতসহ চার দফা দাবিতে ২৪ ঘণ্টার অধিক সময় ধরে গণঅনশন করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। তালা মারা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ভবনেও। ঘোষণা করা হয়েছে কমপ্লিট শাটডাউন।
অনশনরত শিক্ষার্থীদের সমর্থনে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ফটকসহ একাধিক ভবনে তালা মারার মাধ্যমে তারা এ কর্মসূচি শুরু করেন।
শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে ক্লাস, পরীক্ষা বন্ধসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে।
সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক, শহীদ সাজিদ অ্যাকাডেমিক ভবন, বিজ্ঞান অনুষদ, আর্টস ফ্যাকাল্টির ভবনগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে স্থবির হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম।
এদিকে অনশনে বসা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এ ব্যাপারে অনশনরত শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা অনশন ভাঙব না। সবার কাছে অনুরোধ, আপনারা যারা অনশন করছেন না, আপনারা ক্লাস-পরীক্ষা বয়কট করুন। আমাদের দাবি পূরণ করেই আমরা বাড়ি যাব।’
অনশনরত শিক্ষার্থী ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সময় নির্ধারণ করে দিতে পারছে না। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এসে যৌক্তিক সময় দিলে আমরা অনশন ভাঙব।’
জবি শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহান প্রামাণিক বলেন, ‘আমরা আর লাল ফিতার দৌরাত্ম্য মানব না। এখানেই বসে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো নিয়ে কাজ করছি। প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে; চিঠির কপিও এসেছে।
‘আমরা শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একমত। যৌক্তিক সময় দিয়ে কাজ সম্পন্ন করব।’
এদিকে চলমান গণঅনশনরত শিক্ষার্থীরা প্রশাসনকে এক ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন। এ সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রার ঘোষণা দেন তারা।
এর আগে রোববার সকাল থেকে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তরসহ তিন দফা দাবিতে গণঅনশন কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচিতে সারা দিন অভুক্ত থেকে ১৫ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রশাসন এখনও চিকিৎসা ব্যয় ঠিকভাবে দিচ্ছে না। তাদের চিকিৎসাসহ বিভিন্ন খরচ শিক্ষার্থীদের টাকায় হচ্ছে। এ প্রশাসন সব দিক দিয়ে ব্যর্থ।
তারা দাবি পূরণ হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ক্লাস হতে দেবেন না।
এদিকে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের দাবির প্রতি পূর্ণ একাত্মতা প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি।
অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনুরোধে উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিমও রোববার রাতে তাদের সঙ্গে অনশনস্থলে বসে পড়েন। ওই অনশনে একাত্মতা জানাতে রোববার গভীর রাতে হল থেকে বেরিয়ে প্রায় অর্ধশত ছাত্রী শহীদ মিনারের সামনে এসে বসে পড়েন।
শিক্ষার্থীদের দাবি
১. সেনাবাহিনীর কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তরের চুক্তি অনতিবিলম্বে স্বাক্ষর করতে হবে।
২. পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড. হাবিবুর রহমান হলের স্টিল বেইজড ভবনের কাজ দ্রুত শুরু এবং শেষ করতে হবে।
৩. শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা।
৪. যতদিন আবাসনের ব্যবস্থা না হয়, ততদিন পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।
আরও পড়ুন:যুক্তরাজ্যের লন্ডন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।
তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন রোববার এমন তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘তার স্বাস্থ্যের রুটিন পরীক্ষা প্রতিদিনই চলছে। তবে সোমবার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শে বিশেষ কিছু পরীক্ষা করা হতে পারে। হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে দেখেছেন বিখ্যাত হেপাটোলজিস্ট অধ্যাপক জন প্যাট্রিক কেনেডি। এ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অধীনেই তার চিকিৎসা চলছে।
‘হাসপাতালে ভর্তির পরই খালেদা জিয়ার ফিজিওথেরাপি করানো হয়েছে। এতে তার শারীরিক অবস্থার আরও উন্নতি হয়েছে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জুবাইদা রহমান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার সার্বক্ষণিক পরিচর্যা করছেন বলেও জানান জাহিদ হোসেন।
উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৮ জানুয়ারি খালেদা জিয়া লন্ডনে যান। ওই দিনই হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি বিশেষায়িত হাসপাতাল দ্য লন্ডন ক্লিনিকে তাকে ভর্তি করা হয়।
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের বিভিন্ন পরীক্ষা এরই করা হয়েছে। সেই পরীক্ষার ফলের ওপর ভিত্তি করে তার চিকিৎসা চলছে।
লিভার সিরোসিস, কিডনি, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও আর্থ্রাইটিসসহ শারীরিক নানা অসুস্থতায় ভুগছেন ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানল ছয় দিনেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
‘সান্তা আনা’ নামে পরিচিত ধ্বংসাত্মক বা হিংস্র ঝোড়ো বাতাসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
দাবানলে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪ জনে। গত ৬ দিনে দাবানলে পুড়ে গেছে ৪০ হাজারেরও বেশি এলাকা।
পাঁচ দিনের ভয়াবহ তাণ্ডবের পরও জ্বলছে আগুন। ছড়িয়ে পড়ছে নতুন নতুন এলাকায়।
দাবানল নতুন করে মোড় নিচ্ছে ব্রিটেন উডস ও সান ফার্নান্দো ভ্যালির দিকে।
প্যালিসেইডস, ইটন, কেনেত লিডিয়া, হার্স্ট এবং আর্চারের অনেক এলাকায় আগুন এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এর মধ্যে প্যালিসেইডসে দাবানল আরও এক হাজার এলাকা ছড়িয়েছে।
সান্তা আনা বাতাস সাধারণত সেপ্টেম্বর এবং মে মাসের মধ্যে ঘটে। এটি সাধারণত কয়েক দিনের জন্য দেখা দেয়।
এদিকে ওয়াশিংটন পোস্ট আবহাওয়ার ধরনটিকে ‘বিশাল এক হেয়ার ড্রায়ার’-এর সঙ্গে তুলনা করেছে এবং লেখকরা দীর্ঘকাল ধরে উল্লেখ করেছেন যে, বাতাসের প্রভাব বাসিন্দাদের কাছে এটি মনস্তাত্ত্বিকভাবে রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এএফপি সোমবার এক প্রতিবেদনে জানায়, লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির স্বাস্থ্যকর্মী স্থানীয় সময় রোববার দাবানলের আগুনে ২৪ জন মারা যাওয়ার তালিকা প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া ১৬ জনের নিখোঁজের কথাও জানিয়েছে।
বর্তমানে লস অ্যাঞ্জেলেসে চারটি দাবানল সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে প্যালিসেইডস দাবানল আরও এক হাজার একর এলাকা ছড়িয়েছে। আগেই এ দাবানলে পুড়ে যায় ২২ হাজার একর এলাকা।
ক্যালিফোর্নিয়ার ফায়ার সার্ভিস জানায়, এখন পর্যন্ত প্যালিসেইডসের দাবানলের ১১ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
নতুন করে এ আগুন বৃদ্ধি পাওয়ার আগে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা প্যালিসেইডস দাবানল ও লস অ্যাঞ্জেলেসের পূর্বাঞ্চলে দাবানল নিয়ন্ত্রণে অগ্রগতির কথা জানিয়েছেন।
এ দুই দাবানলই সবচেয়ে ভয়াবহ।
দুই দাবানলে একসঙ্গে ১৪৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এর আয়তন নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটন এলাকার চেয়ে আড়াই গুণ বেশি।
গত ছয় দিনের দাবানলে ৪০ হাজার একরেরও বেশি এলাকা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আগুনে ভস্মীভূত হয় ১২ হাজারেরও বেশি বাড়িঘর ও স্থাপনা। বাস্তুচ্যুত হয় লক্ষাধিক মানুষ।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়, লস অ্যাঞ্জেলেস ও ভেঞ্চুরা কাউন্টিতে স্থানীয় সময় রোববার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬০ মাইল পর্যন্ত বাড়তে পারে। এ ছাড়া দাবানলের কারণে পরিবেশ বিপর্যয়ও ঘটেছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে ঘরের বাইরে না যাওয়ার পাশাপাশি মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে।
আরও পড়ুন:সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে বোরো ধানের জমি থেকে নাক ও কান কাটা এক যুবকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
উপজেলার শিমুলবাঁক ইউনিয়নের উকারগাঁও গ্রামের বোরো জমি থেকে রোববার সকালে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
ওই যুবকের নাম মনির হোসেন (৩০), যিনি শান্তিগঞ্জের উকারগাঁও গ্রামের প্রয়াত মোকসেদ আলীর ছেলে।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে দুজন পরিচিত মানুষ ওই যুবককে ডেকে নিয়ে যায়। সারা রাত বাড়িতে না ফেরায় সকালে পরিবার ও গ্রামের লোকজন খোঁজাখুঁজি করলে উকারগাঁও গ্রামের বোরো জমিতে নাক-কান কাটা অবস্থায় যুবকের লাশ পড়ে থাকতে দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ বোরো জমি থেকে লাশ উদ্ধার করে।
কী কারণে যুবককে এভাবে হত্যা করা হয়েছে, তার রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।
শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম আলী বলেন, ‘নাক-কান কাটা এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হত্যার রহস্য উদঘাটনে কাজ চলছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’
আরও পড়ুন:শতাধিক পণ্যে শুল্ক ও কর বাড়ানো হলেও দেশের মানুষের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানোর জন্যই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে দেশের অর্থনীতির স্বাস্থ্যটা ভালো হবে। দেশের মানুষেরই উন্নয়ন হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারের অজনপ্রিয় হওয়ার কোনো কারণ নেই।
রাজধানীর ফরেন একাডেমিতে রোববার প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রেস সচিব বলেন, ‘বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশে ট্যাক্স আদায় সবচেয়ে কম। সরকার চায় ট্যাক্স, জিডিপি এমন জায়গায় থাক, যাতে বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়ন ঘটে। তাহলে সামনে দেশের মানুষেরও উন্নয়ন হবে।
‘ম্যাক্রো ইকোনমি বাড়ানোর জন্য ট্যাক্স বাড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে আইএমএফের চাহিদার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশেও তো ভালো অর্থনীতিবিদ আছেন। তাদের পরামর্শেই এটা করা হয়েছে। এটা করা না হলে ডলারের দাম ১২৫ টাকা থেকে বেড়ে ১৯০ টাকা হয়ে যাবে। বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না। কারণ বিদেশি বিনিয়োগকারীরা দেখেন দেশের ট্যাক্স আদায়ের পরিমাণ কেমন; অর্থনৈতিক স্বাস্থ্যটা কতটা মজবুত।
‘এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমেরও উচিত বিষয়টি নিয়ে জনগণকে বোঝানো।’
শফিকুল আলম বলেন, ‘খরচ কীভাবে কমানো যায়, সরকার সে জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। আগের প্রধানমন্ত্রী ৩০০ লোক নিয়ে বিদেশে যেতেন। এখন প্রধান উপদেষ্টার বহরে ৫০ জন যাচ্ছেন। তারও একটি বড় অংশ থাকছে নিরাপত্তার জন্য।
‘আগে দেখা গেছে, একজন মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর জন্য কর্ণফুলী টানেল করা হয়েছে। টানেল থেকে নেমে তার বিশ্রাম নেওয়ার জন্য সাড়ে ৪০০ কোটি টাকা খরচ করে সেভেন স্টার হোটেল বানানো হয়েছে।’
পাচার করা অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘সেগুলো ফেরত আনার চেষ্টা চলছে। গতকালও পূর্বাচলের একটি প্লট নিয়ে দুদকের মামলা হয়েছে। এগুলো সরকারের কোষাগারে আনা যায় কি না, সেই চেষ্টা চলছে।’
গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেখতে হবে বাজারে সরবরাহ চাহিদা মতো আছে কি না। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যটা ভালো থাকলে মূল্যস্ফীতিও কমিয়ে আনা যাবে।
‘যারা ভ্যাট-ট্যাক্সের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, তারা অনেক বুঝে-শোনেই দিয়েছেন। মানুষের ভালোর জন্যই এটা করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য