ভোজ্যতেলের দাম লিটারে ৪ টাকা কমানোর দিনই আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীলতা সাপেক্ষে কোরবানি ঈদের পর আরও কমানোর ইঙ্গিত মিলেছে।
ভোজ্যতেলের দাম লিটারে ৯ টাকা বাড়ানোর এক মাস পর ৪ টাকা কমানো হয়েছে। সয়াবিন ও পাম অয়েলের বোতলজাত ও খোলা উভয় তেলের ক্ষেত্রে এই হ্রাসকৃত দাম কার্যকর হবে বৃহস্পতিবার থেকেই।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তেল উৎপাদকদের সমিতি বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন সব ধরনের তেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বুধবার বিকেলে লিটারপ্রতি ৪ টাকা হারে সব ধরনের তেলের দাম কমানোর প্রস্তাবটির অনুমোদন দেন বলে নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আইআইটি অনুবিভাগ) এ এইচ এম সফীকুজ্জামান।
মন্ত্রীর এই অনুমোদনের ফলে বৃহস্পতিবার থেকে বাজারে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম হবে ১৪৯ টাকা। বর্তমানে এর দাম লিটারে ১৫৩ টাকা।
একইভাবে ৫ লিটারের বোতলজাত তেলের বর্তমান দাম ৭২৮ টাকা থেকে কমে বিক্রি হবে ৭০৮ টাকা। আর খোলা সয়াবিন বিক্রি হবে প্রতি লিটার ১২৫ টাকায়। বর্তমানে এর দাম ১২৯ টাকা। এ ছাড়া প্রতি লিটার পাম অয়েল বিক্রি হবে ১০৮ টাকা, যার বর্তমান দাম রয়েছে ১১২ টাকা।
এ বিষয়ে তেল বাজারজাতকরণ প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপের পরিচালক (অর্থ) বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ঈদ সামনে রেখে আমাদের অনুরোধ করেছিল দাম কমাতে। আমরাও ঈদ ও লকডাউন পরিস্থিতি বিবেচনা করে ভোক্তার স্বার্থে সব ধরনের তেলের দাম লিটারে ৪ টাকা করে কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার কারণে গত কয়েক মাস ধরেই দেশে ভোজ্যতেলের দামে অস্থিরতা দেখা যায়। গত ২৭ মে সবশেষে তেলের দাম লিটারে ৯ টাকা করে বাড়ানো হয়। ওই সময় দাম সহনশীল রাখতে সরকার অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম অয়েল তেলের ওপর ৪ শতাংশ অগ্রিম করও প্রত্যাহার করে নেয়।
গত ২৭ জুন আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম ছিল ১৪৪৮ দশমিক ৬৪ মার্কিন ডলার। গত ২৭ মে এর দাম ছিল ১৬০২ দশমিক ৩০ ডলার। এক মাসের ব্যবধানে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমেছে ৬ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ।
বাংলাদেশি আমদানিকারকদের জন্য ভোজ্যতেলের বৃহৎ বাজার ব্রাজিলে বর্তমানে পণ্যটির মূল্য স্থিতিশীল রয়েছে। সে জন্য ঈদের পর তেলের দাম আরও কমার ইঙ্গিত রয়েছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে গত ২৭ জুন প্রতি টন অপরিশোধিত পাম অয়েলের দাম ছিল ৯৮৫ ডলার। পরের দিন দাম কমে দাঁড়ায় ৯৭২ দশমিক ৫০ ডলার। গত মাসের একই সময়ে ছিল ১ হাজার ১২৫ ডলার। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে পাম অয়েলের দাম কমেছে ১৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
আন্তর্জাতিক বাজারে গত এক মাসে যে হারে তেলের দাম কমেছে, দেশে তেলের দাম সেই হারে কমেনি।
এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আইআইটি) এ এইচ এম সফীকুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঈদুল আজহা উপলক্ষে ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনা করে সব ধরনের তেলের দাম কমানোর জন্য ব্যবসায়ীদের বলা হয়েছিল। এই অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তারা সব ধরনের তেলে লিটারে ৪ টাকা করে কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। হ্রাসকৃত এই দাম বৃহস্পতিবার থেকেই কার্যকর হবে।’
আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমার প্রবণতার সঙ্গে হ্রাসকৃত তেলের দাম কতটা সমন্বয় হলো, এমন প্রশ্ন রাখা হয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এই অতিরিক্ত সচিবের কাছে।
জবাবে সফীকুজ্জামান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কিছুটা কমেছে। এই কমার হার ঈদের পর আমরা পর্যালোচনা করব। যদি দেখা যায় আন্তর্জাতিক বাজার ঈদের পরও স্থিতিশীল রয়েছে, তাহলে আমরা ঈদের পর আবার মূল্য সমন্বয় করব।’
আরও পড়ুন:মাচার ওপরে সবুজ পাতা। নিচে ঝুলে আছে কালো রঙের তরমুজ। গাছ থেকে ছিঁড়ে না পড়ে সেজন্য প্রতিটি তরমুজে দেওয়া হয়েছে জালি। এমন দৃশ্য নওগাঁর পত্নীতলা, মহাদেবপুর, রাণীনগর ও সদর উপজেলার মাঠে মাঠে। এসব জমিতে আগে পটল ও করলা চাষ করলেও এখন বর্ষা মৌসুমে 'মার্সেলো’ জাতের তরমুজ চাষ করেছেন চাষিরা।
মাচায় ও মালচিং পদ্ধতিতে উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড মার্সেলো জাতের তরমুজ চাষে সফলতা পেয়েছেন নওগাঁর চাষিরা। এই পদ্ধতিতে চাষ করা তরমুজের অধিক ফলনে তারা খুশি।
জানা গেছে, এসব তরমুজ অত্যন্ত সুস্বাদু ও সুমিষ্ট হওয়ায় বাজারে চাহিদা বেশি। সঙ্গে লাভও বেশি। লম্বাটে ডিম্বাকৃতির এই তরমুজের ভেতরের অংশ গাঢ় লাল রঙের। মার্সেলো জাতের প্রতিটি তরমুজের ওজন হয়ে থাকে ৩-৫ কেজি। আর প্রতি বিঘায় দেড় থেকে দুই হাজারটি তরমুজ পাওয়া যায়।
এছাড়া মার্সেলো জাতের এই তরমুজ উচ্চমাত্রায় ভাইরাস সহনশীল। প্রতিদিনই আগ্রহী চাষিরা বর্ষাকালীন তরমুজের ক্ষেত দেখতে ভিড় করছেন জমিতে। গত জুন মাসে তরমুজের চারা রোপণ করা হয়েছে। গাছ লাগানোর ৬৫-৭০ দিনের মধ্যে ফল উঠানো যায়।
রাণীনগরের মার্সেলো তরমুজ চাষি নিরাঞ্জন চন্দ্র প্রামানিক জানান, তিনি প্রতিবছর উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে নতুন নতুন ফসল চাষ করে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় এবার কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় ২৫ শতক জমিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার ছাড়াই বিষমুক্ত মার্সেলো তরমুজ চাষ করেছেন। বাজারে প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকায়। কম পরিশ্রমে ভালো দাম পেয়ে খুশি তিনি।
তিনি বলেন, আমরা জানি তরমুজ চাষ হয়ে থাকে গ্রীষ্মকালে। কিন্তু আমাদের এ বরেন্দ্র জেলায় বর্ষাকালে তরমুজের চাষ করা দেখে প্রতিদিন তার তরমুজের ক্ষেত দেখতে ও পরামর্শ নিতে আসছেন নতুন নতুন কৃষি উদ্যোক্তারা। তাদের পরামর্শসহ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি।
তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা কামাল মাহমুদ শিপন বলেন, নিরাঞ্জন দাদার তরমুজের ক্ষেত দেখে খুবই ভালো লাগছে। তার সঙ্গে অনেক কথা হলো এই তরমুজের বিষয়ে। খেয়ে দেখলাম খুব সুস্বাদু ও মিষ্টি। আগামী বছর দুই বিঘা জমিতে এই তরমুজ চাষ করবো আশা করি।
উপজেলার কাশিমপুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের দম্পতি আলেক বেগ ও কুলসুম বানু বলেন, আগে আমরা বাজার থেকে তরমুজ কিনে আনতাম। এখন দেখি গ্রীষ্মকালের তরমুজ বর্ষাকালে ধরেছে থোকায় থোকায়। অবাক করা বিষয়। খুব সুন্দর লাগছে দেখে। দুটি তরমুজ কিনলাম ৫০ টাকা কেজি দরে। দুটি তরমুজের ওজন ৮ কেজি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিষমুক্ত তরমুজ চাষ করতে মাচায় ও মালচিং পদ্ধতিতে উচ্চ ফলনশীল মার্সেলো জাতের তরমুজ চাষ করা হয়েছে জেলার ৪টি উপজেলায়। ভেতরে গাঢ় লাল রঙের এ তরমুজের স্বাদ খুব ভালো। কম খরচের পাশাপাশি বর্ষাকালে এই তরমুজ চাষ হওয়ায় কৃষকরা বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাই কৃষকরা বর্ষাকালীন তরমুজ চাষের দিকে ঝুঁকছেন। তাদের আরও উৎসাহ দিতে আমরা কাজ করছি। তাদের সার্বিক সহযোগিতা করছে কৃষি বিভাগ। সূত্র: বাসস
নোয়াখালীর হাতিয়ার মেঘনা নদীতে জেলের জালে ধরা পড়েছে প্রায় ২৮ কেজি ওজনের একটি কোরাল মাছ। গতকাল শনিবার সকালে উপজেলার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের নামার বাজারে নিলামে ৪১ হাজার ৫৫০ টাকায় বিক্রি হয় মাছটি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের জেলে মো. রাশেদ গত শুক্রবার রাতে মেঘনায় জাল ফেলেন। ভোরের দিকে তিনি লক্ষ্য করেন, জালে একটি বিশাল আকৃতির মাছ ধরা পড়েছে। জাল তুলে আনতেই দেখা যায়, একটি বিশাল কোরাল মাছ। বিশাল এই মাছ দেখে রাশেদ ও তার সঙ্গী জেলেরা বিস্মিত হয়ে পড়েন। পরে মাছটি সকালেই বাজারে নিয়ে যান।
মাছটি দেখতে বাজারে সাধারণ মানুষের ভিড় জমে যায়। বাজারের আড়তজুড়ে তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। অনেকে ছবি তুলতে ও ভিডিও করতে ভিড় করেন। পরে ইব্রাহিম মৎস্য আড়তে নিলামের আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রতি কেজি ১ হাজার ৫০০ টাকা দরে মোট ৪১ হাজার ৫৫০ টাকায় মাছটি কিনে নেন স্থানীয় বিএনপি নেতা ও ব্যবসায়ী মো. ইব্রাহিম।
ইব্রাহিম মৎস্য আড়তের ম্যানেজার মো. সোহেল বলেন, রাশেদ জীবনে এই প্রথম এত বড় আকারের কোরাল মাছ ধরতে পেরেছেন। এর ওজন ছিল ২৭ কেজি ৭০০ গ্রাম। আমাদের আড়তে মাঝেমধ্যে ১৫ থেকে ২০ কেজির কোরাল আসে, কিন্তু এ বছর এত বড় কোরাল প্রথম ধরা পড়ল।
ক্রেতা মো. ইব্রাহিম বলেন, আমরা খুব কম সময় এত বড় কোরাল মাছ পাই। সচরাচর ছোট কোরাল বাজারে আসে, তবে বড় মাছের চাহিদা সবসময়ই বেশি থাকে। আশা করছি, কোরালটি ভালো দামে বিক্রি করতে পারব।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মেঘনা নদীতে মাঝে মাঝে বড় কোরাল ধরা পড়ে। তবে ২৫ কেজির ওপরে কোরাল সাধারণত খুব কম ধরা পড়ে। তাই এ ধরনের মাছ জালে উঠলেই বাজারে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়।
জেলে রাশেদ বলেন, এত বড় কোরাল মাছ জীবনে কখনো ধরিনি। আল্লাহর রহমতে জালে এমন মাছ পেয়েছি। বিক্রি করে ভালো দামও পেয়েছি। এতে পরিবারে অনেকটা স্বস্তি আসবে।
ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবরে দুদিনের ব্যবধানে দিনাজপুরের হিলিতে দেশীয় পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ১০ টাকা করে। সরবরাহের এমন ধারা অব্যাহত থাকলে ও ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির পরিমাণ বাড়লে দাম আরো কমবে বলে দাবি বিক্রেতাদের। এদিকে পেঁয়াজের দাম কমায় খুশি নিম্ন আয়ের মানুষ।
সরেজমিন হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে প্রতিটি দোকানেই আগের তুলনায় দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। সেই সঙ্গে দাম পূর্বের তুলনায় কমতির দিকে রয়েছে। দুদিন পূর্বে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭০ টাকা দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা কমে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে আগের তুলনায় ক্রেতা সমাগম বেশি, এছাড়া ক্রেতারা পরিমাণে বেশিও কিনছেন।
হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা হায়দায় আলী বলেন, গত কয়েকদিন ধরে হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করেছে। ৫০ টাকা কেজির পেঁয়াজ দাম বাড়তে বাড়তে ৭৫ টাকা কেজিতে উঠে যায়। পেঁয়াজ খুবই জরুরি নিত্যপ্রয়োজনীয় হওয়ায় বাধ্য হয়ে এক কেজির জায়গায় হাফ কেজি কিনছিলাম। তবে দুদিন ধরে পেঁয়াজের দাম কিছুটা নিম্নমুখী হতে শুরু করেছে, বর্তমানে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় নেমেছে। হিলি বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা আবুল হাসনাত বলেন, বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকলেও পর্যাপ্ত পরিমাণে দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ থাকায় বেশ কিছুদিন ধরেই দাম স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু বর্তমানে মৌসুম শেষের দিকে হওয়ায় বাজারে দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ কমতে শুরু করেছে। এতে মোকামে প্রতিদিনই পেঁয়াজের দাম বাড়ছিল। আর তাই বাজারেও পণ্যটির দাম বাড়ছিল। দাম নিয়ন্ত্রণে সম্প্রতি সরকার পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিতে শুরু করেছে। গত বৃহস্পতিবার সোনা মসজিদ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। রোববার থেকে হিলিসহ দেশের অন্যান্য বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হবে। এমন খবরে মোকামে যারা দেশীয় পেয়াজ মজুদ করছিল তারা সেসব পেঁয়াজ বাজারে ছাড়তে শুরু করেছে। এতে সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। দু'দিন আগেও যেখানে মোকামে প্রতি মণ পেঁয়াজ আমাদের কিনতে হয়েছিল ৩ হাজার ২শ টাকা সেটি এখন কমে ২ হাজার ২শ টাকা হয়েছে। আমদানির খবরেই পেঁয়াজের দাম মণপ্রতি ১ হাজার টাকা করে। কমে গেছে। কম দামে কিনতে পারায় আমরাও এখন কম দামে বাজারে বিক্রি করতে পারছি।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর দিনাজপুরের সহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিন বলেন, কেউ যাতে কোনো পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে দাম বাড়াতে না পারেন সেজন্য আমরা নিয়মিতভাবে বাজারগুলোয় অভিযান পরিচালনা করছি। তারা কী দামে পণ্য কিনছেন কী দামে বিক্রি করছেন সে সম্পর্কিত তথ্য যাচাইবাছাই করছি। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আর্থিক জরিমানা করা হচ্ছে।
দেশে প্রতিদিন প্রায় ছয় কোটি ডিম উৎপাদন হলেও তা দিয়ে চাহিদা পূরণ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
পুষ্টি নিরাপত্তা প্রসঙ্গে এই উপদেষ্টা বলেন, ‘বর্তমানে দেশে মাথাপিছু গড় মাংস খেতে পারে মাত্র ২০০ গ্রাম। এখনো বহু পরিবার আছে যারা সপ্তাহে বা মাসে একদিন মাংস খায়।”
গতকাল শনিবার সকালে ঢাকা সেন্ট্রাল গার্লস হাই স্কুলে নবনির্মিত ছয় তলা একাডেমিক ভবনের উদ্বোধন ও এসএসসি-২০২৫ সালের কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, মাছ উৎপাদনের ক্ষেত্রে
বাংলাদেশ তুলনামূলক ভালো অবস্থানে আছে। মাছ, মাংস, দুধ, ডিম আমাদের পুষ্টির উৎস। তাই শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি পুষ্টির দিকটিও বিবেচনায় রাখতে হবে।'
তিনি বলেন, ‘চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বহু তরুণ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ শহীদ হয়েছেন। অনেকে হাত-পা-চোখ হারিয়ে আজীবন পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। তাদের ত্যাগকে স্মরণ রেখে এমন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে, যেখানে মানুষের অধিকার কখনো ক্ষুণ্ণ হবে না।'
তিনি বলেন, “বেগম রোকেয়া মুসলিম মেয়েদের জন্য স্বাধীন পরিবেশ দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন, সেখানে পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালিত হতো। কেবল বই পড়া দিয়ে সবকিছু জানা সম্ভব নয়, কারণ ইতিহাস বারবার বিকৃত হয়েছে। তাই শিক্ষকদের দায়িত্ব হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের প্রকৃত শিক্ষা দিয়ে দেশ ও জাতি সম্পর্কে সচেতন করে তোলা।”
নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, 'স্কুলের ভেতরে ও বাইরে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্ব নিতে হবে। ইভটিজিংয়ের কারণে মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে—নতুন বাংলাদেশে এটা হতে দেওয়া যাবে না।
পরিবেশ সুরক্ষায় শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'সপ্তাহে অন্তত একদিন স্কুল ও এলাকায় পরিবেশ রক্ষায় কার্যক্রম চালাতে হবে। পাশাপাশি পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে হবে। কারণ এগুলো মানব স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।'
নারী শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসী আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে ওঠার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'নারী নির্যাতন আইন সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হবে এবং বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে শিক্ষক, অভিভাবক ও সমাজকে একসঙ্গে সচেতন হতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে আজ পরিকল্পনা কমিশনে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কক্সবাজার বিমানবন্দরে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে আংশিকভাবে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল শুরুর হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিকী।
রবিবার দুপুরে কক্সবাজার বিমানবন্দর পরিদর্শন শেষে এ কথা জানান তিনি।
চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিকী বলেন, 'আমরা আজকে বিমানবন্দরের দ্বিতীয় টার্মিনাল ও সাগরের বুকে নির্মিত হওয়া রানওয়ের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেছি। তাতে মনে হয়েছে আগামী অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে আংশিকভাবে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করা সম্ভব হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, 'কত শতাংশ কাজ শেষে তা বলা না গেলেও তবে মাঝামাঝি সময়ে শুরু করা সম্ভব। যার জন্য আমাদের প্রস্তুতি শেষের পথে।
পরিদর্শনকালে কক্সবাজার বিমানবন্দরের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ ইউনূছ ভুঁইয়া, বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক গোলাম মোর্তজা হাসানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কিংবদন্তি ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকারের ঘরে এবার বাজতে যাচ্ছে বিয়ের শানাই। তবে বোন সারা টেন্ডুলকার নয়, প্রথমেই আংটি বদল করলেন ছেলে অর্জুন টেন্ডুলকার। ২৫ বছর বয়সেই বাগদান সম্পন্ন করেছেন তিনি। পাত্রী ভেটেরিনারি চিকিৎসক সানিয়া চান্দোক।
গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, পারিবারিকভাবে সম্পন্ন হওয়া এই বাগদান অনুষ্ঠানে দুই পরিবারের ঘনিষ্ঠজনরা উপস্থিত ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরেই অর্জুন-সানিয়ার সম্পর্ক ছিল। এর আগে একাধিকবার অর্জুনের ম্যাচে দেখা গেছে সানিয়াকে। সারার সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব রয়েছে।
সানিয়া চান্দোক ভারতের খ্যাতনামা ব্যবসায়ী রবি ঘাইয়ের নাতনি। তাদের হোটেল ও আইসক্রিম ব্যবসা রয়েছে। পশু চিকিৎসক হওয়ার পাশাপাশি সানিয়া একজন উদ্যোক্তাও। তার নিজস্ব পোষা প্রাণীর স্কিন কেয়ার ও স্পা সেন্টার পরিচালনা করেন তিনি। বয়সে তিনি অর্জুনের চেয়ে এক বছরের বড়।
অর্জুন অবশ্য বাবার মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নাম করতে পারেননি। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি নিয়মিত খেলছেন গোয়ার হয়ে। ২০২৩ সালে আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে অভিষেক হয় বাঁহাতি এই অলরাউন্ডারের। এখনও পর্যন্ত আইপিএলে তিনি খেলেছেন ৫ ম্যাচে নিয়েছেন ৩ উইকেট। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৭ ম্যাচে সংগ্রহ করেছেন ৫৩২ রান ও নিয়েছেন ৩৭ উইকেট। ঘরোয়া ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ম্যাচ সংখ্যা ৪২।
আইপিএল থেকে অর্জুনের আয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। বর্তমানে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের কাছ থেকে তিনি বছরে ৩০ লাখ টাকা পান। ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে আসে আরও প্রায় ১০ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে বছরে প্রায় ৪০ লাখ টাকার মতো আয় করেন তিনি।
তবে পারিবারিক সূত্রেই অর্জুনের সম্পদ এখন প্রায় ২২ কোটি টাকা। বর্তমানে তিনি থাকেন মুম্বাইয়ের সেই বাড়িতে, যেটি ২০০৭ সালে শচীন কিনেছিলেন প্রায় ৩৯ কোটি টাকায়। ছোটবেলা থেকেই বিলাসবহুল পরিবেশে বেড়ে ওঠা অর্জুনের জীবনযাত্রা তাই নিজের আয়ের সঙ্গে তুলনামূলক নয় বলেই মনে করছে গণমাধ্যম।
মন্তব্য