উন্নত ডিজিটাল প্রযুক্তির এই যুগে বাংলাদেশে এখনও ১০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চারটির বেশি প্রতিষ্ঠান হাতে লেখা ডকুমেন্ট ব্যবহার করে। আর তিন-চতুর্থাংশ প্রতিষ্ঠান এখনও হাতে-কলমে পণ্যের গুণগত মান পরীক্ষা করে থাকে।
বাংলাদেশকে নিয়ে বিশ্বব্যাংকের ‘গিয়ারিং আপ ফর দি ফিউচার অফ ম্যানুফ্যাকচারিং ইন বাংলাদেশ’ প্রতিবেদনে এ হতাশাজনক তথ্য বের হয়ে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত দুই দশকে অর্থনৈকি উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এ সাফল্যের পেছনে তৈরি পোশাক খাতের বড় অবদান রয়েছে। দেশটির মোট রপ্তানি আয়ের ৮৪ শতাংশই আসে এই শিল্প থেকে। ৪০ লাখ শস্তা শ্রমিকের কারণে এই খাত সারা বিশ্বে প্রতিযোগিতামূলক হতে সক্ষম হয়েছে।
তবে অগ্রগতির এই চিত্র চিরকাল টিকে থাকবে এমনটি বলা যায় না। বাংলাদেশ একটি উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হলে শ্রম ব্যয় বেড়ে যাবে। যেখানে শস্তায় পণ্য তৈরি হবে, ক্রেতারা যেখানেই চলে যাবে।
এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হলে উন্নত ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে পড়তে পারে দেশটি। মোট কথা, উন্নত ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার না করলে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ব্যহত হবে।
‘বিশেষ করে করোনাভাইরাস মহামারির এই সঙ্কটকালে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারে সহায়তার জন্য উৎপাদন খাতের উৎপাদনশীলতা বাড়তেই হবে। আর এ জন্য বর্তমান বিশ্ব পেক্ষাপটে উন্নত ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই’ – বলা হয় প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্প নিয়ে আরও বলা হয়, দক্ষ ম্যানেজার, ডিজাইনার ও অন্যান্য কারিগরি বিশেষজ্ঞের অভাব বাংলাদেশের আবেদনকে আরও সীমিত করে তুলবে। কোভিড-১৯ এই চিত্রকে আরও নাজুক করে তুলেছে।
‘তাহলে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশ কী করতে পারে’- এমন প্রশ্ন রেখে প্রতিবেদনে প্রতিবেদনে কিছু পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কম পারিশ্রমিকে প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণের পরিবর্তে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের প্রতি দৃষ্টি দিতে হবে। সমগ্র উৎপাদন খাতে প্রযুক্তির ব্যবহারকে উন্নত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আরও জ্বালানি সাশ্রয়ী মেশিন ব্যবাহরসহ উন্নত শিল্পপ্রযুক্তি ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ হবে।
তবে শুধু এটুকুই যথেষ্ট নয়। ব্যবসায় পরিচালনায় মান বাড়াতে হলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবশ্যই উন্নত ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে। এখনও দেশের ১০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪টির বেশি প্রতিষ্ঠান হাতে লেখা ডকুমেন্ট ব্যবহার করে। তিন-চতুর্থাংশ প্রতিষ্ঠান এখনো হাতে কলমে গুণগতমান পরীক্ষা করে থাকে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবশ্যই আরও উন্নত ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে। যেমন, আরও ভালো পরিকল্পনা ও কর্মদক্ষতা মূল্যায়ন করা এবং প্রণোদনা ব্যবহার করা। কিন্ত অনেক প্রতিষ্ঠানই মনে করে না যে, তাদের উন্নয়নের দরকার আছে। অন্যরা জানেই না কিভাবে উন্নত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকার সহায়তা করতে পারে। নতুন নীতিমালা তিনটি ‘স’কে উন্নত করতে পারে- সামর্থ্য, সংযোগ এবং সম্পূরক বাজার।
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামর্থ্য
বাংলাদেশে ম্যানেজারদের স্নাতক ডিগ্রি থাকলে প্রযুক্তি ব্যবহার ১০ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে। কিন্তু যারা ব্যবসায় চালাচ্ছেন, তাদের অর্ধেকেরই স্নাতক ডিগ্রি নেই। নীতিমালায় অবশ্যই শিক্ষা এবং দক্ষতা বৃদ্ধির প্রতি সমর্থন থাকতে হবে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অবশ্যই সাশ্রয়ী পরামর্শ সেবা পেতে এবং প্রাপ্ত সাধ্য প্রযুক্তি সম্পর্কে সচেতন হতে সরকারকে সাহায্য করতে হবে।
আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সংযোগ
যেসব প্রতিষ্ঠান বহুজাতিক সংস্থার সাথে কাজ করে, তারা স্থানীয় প্রর্যায়ের প্রতিষ্ঠানের তুলনায় বেশি প্রযুক্তি ব্যবহার করে। প্রতিযোগিতার কারণেই নতুন হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার কিনে থাকে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের উপর বিধিনিষেধ অবশ্যই কমিয়ে আনতে হবে। তৈরি পোশাকের বাইরে অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকেও অবশ্যই শুল্কমুক্ত কাঁচামাল আমদানির অনুমতি দিতে হবে। আমদানি প্রতিযোগিতা থেকে লাভবান হতে স্পেশাল বন্ডেড ওয়্যার হাউজ ব্যবহারের সুবিধা দিতে হবে, যা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
সম্পূরক বাজার
প্রযুক্তি ব্যবহারে প্রধান বাধা হিসাবে ছোট এবং মাঝারি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের অর্ধেকই অর্থায়নের অভাবকে দায়ি করে থাকে। নিয়মকানুন বিধিমালা মেনে চলার খরচ সম্পর্কেও তারা চিন্তিত। প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে সহজে তাদের প্রযুক্তিগত চাহিদা পূরণের জন্য ঋণ পেতে পারে সে জন্য সরকারকে আর্থিক খাতকে শক্তিশালী করতে হবে। ব্যবসা সংক্রান্ত বিধি-নিয়মের অপ্রয়োজীয়ন খরচ কমাতে হবে।
এই তিনটি ‘স’ বাস্তবায়ন হলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো সাশ্রয়ী এবং স্থানীয়ভাবে উপযোগী প্রযুক্তি ব্যবহার করা শুরু করবে। তারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতায় ভালো করতে পারবে। বাংলাদেশের উৎপাদন খাত ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত থাকবে।
প্রতিবেদনে বিশ্ব ব্যাংক ঢাকা অফিসের আবাসিক প্রতিনিধি মার্সি টেম্বন বলেন, ‘বাংলাদেশের পোশাক খাত ৪০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এই খাত দেশটির অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় অবদান রাখছে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অটোমেশনের কারণে এ খাতে কর্মসংস্থান হ্রাস পেয়েছে। মহামারি পরবর্তী মহাবিশ্বে এই প্রবণতা আরও ত্বরান্বিত হবে।
‘এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের সস্তা শ্রমিকনির্ভর উৎপাদনশীলতার প্রতিযোগিতা থেকে উচ্চ উৎপাদনশীলতার প্রতিযোগিতা করার জন্য জরুরিভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে হবে। আর এ জন্য সবাইকে সবক্ষেত্রে আরও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে।’
বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ এবং এই প্রতিবেদনের সহ-সমন্বয়ক সিদ্ধার্থ শর্মা বলেন, ‘বাংলাদেশের আরও উন্নয়নের জন্য আরও বেশি কর্মসংস্থানের দিকে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া উচিৎ। সে কারণে তৈরি পোশাকসহ উৎপাদন প্রক্রিয়ার সব ক্ষেত্রেই আরও উন্নত প্রযুক্তি গ্রহণ করতে হবে। টেকসই এবং আরও ভাল বেতনের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। একই সঙ্গে দেশটিকে রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণ করতে হবে। তাহলে বাংলাদেশের ভবিষৎ উজ্জ্বল হবে।
আরও পড়ুন:বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
খোলা সয়াবিন তেলের দাম কমার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান তিনি।
সয়াবিন তেলের দাম নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘…১৪৯ টাকা যেটা খোলাবাজারে ছিল, সেটাকে দুই টাকা কমিয়ে ১৪৭ টাকা সর্বোচ্চ খোলাবাজারে সয়াবিন তেল বিক্রি হবে।
‘আর আমাদের সয়াবিন তেলের প্রতি লিটার, বোতল যেটা, পেট বোতলে যেটা, যেটার মধ্যে সিল করা থাকে, সেইটা আমাদের নির্ধারিত ছিল ১৬৩ টাকা। সেইখান থেকে বৃদ্ধি করে ১৬৭ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে।’
খোলা সয়াবিন তেলের পাঁচ লিটারের বোতলের দামের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আর খোলাবাজারে সয়াবিন তেল পাঁচ লিটারের বোতল ৮০০ টাকা ছিল। সেটাকে ৮১৮ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে।’
পাম অয়েলের দাম নিয়ে টিটু বলেন, ‘সুপার পাম অয়েল তেল প্রতি লিটার, এটা আগে নির্ধারণ করা ছিল না। এবার আমরা নির্ধারণ করে দিচ্ছি। সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১৩৫ টাকা লিটার।
‘তো এই চারটা পণ্যের দাম, এইটা কিন্তু আমরা নির্ধারণ করলাম না। আমাদের যারা অ্যাসোসিয়েশনের, তাদের রিকমেন্ডেশনে এবং আমাদের ট্যারিফ কমিশনের অনুমোদনক্রমে উনারা উনাদের অ্যাসোসিয়েশন থেকে চিঠি দিয়ে আগামীকাল থেকে এই মূল্য উনাদের মিল গেট থেকে উনারা কার্যকরী করবে।’
আরও পড়ুন:কেন্দ্রীয় ব্যাংক সম্প্রতি জানিয়েছিল যে আর কোনো ব্যাংককে একীভূতকরণের সুযোগ দেয়া হবে না। তবে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে বিদেশি ব্যাংক আলফালাহকে অধিগ্রহণের জন্য ব্যাংক এশিয়াকে অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
নতুন মাত্রার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক এশিয়া বিদেশি ব্যাংক আলফালাহকে অধিগ্রহণের পরিকল্পনা করছে। সূত্র: ইউএনবি
করাচিভিত্তিক ব্যাংক আলফালাহ বুধবার (১৭ এপ্রিল) পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জকে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রকাশিত তথ্যে জানা যায়, ব্যাংক আলফালাহ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের বাংলাদেশ পরিচালনা, সম্পদ ও দায় অধিগ্রহণের জন্য প্রাপ্ত বাধ্যবাধকতামুক্ত ইঙ্গিতমূলক প্রস্তাবের ক্ষেত্রে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে।
এতে বলা হয়, ব্যাংক আলফালাহ বাংলাদেশের ব্যাংক এশিয়ার জন্য যথাযথ কার্যক্রম শুরুর জন্য স্টেট ব্যাংক অফ পাকিস্তানের অনুমোদন চাইছে।
ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেল আর কে হুসেইন বলেন, ‘এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং এটি একীভূতকরণ নিয়ে খুব বেশি আলোচনার অংশ নয়।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে দুই ব্যাংকের নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠকে অধিগ্রহণের বিষয়টি চূড়ান্ত রূপ পাবে বলে।
বিষয়বস্তু অবহিত না করে ওয়ালটনের আদর্শ ও নীতিমালার পরিপন্থিভাবে ‘রূপান্তর’ শিরোনামের একটি নাটক প্রচার করায় বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠান ‘লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট’কে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে ওয়ালটন।
পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সব ধরনের বিজ্ঞাপনী চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিষয়টির জন্য ওয়ালটন গ্রুপ ক্রেতা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিকট আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে।
ওয়ালটনের পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠান ‘লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট’ এর স্বত্বাধিকারী মোহন আহমেদকে মঙ্গলবার ওই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়।
ওয়ালটনের পক্ষে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট রাইসুল ইসলাম রিয়াদ স্বাক্ষরিত আইনি নোটিশে উল্লেখ করে যা বলা হয়, ‘আপনি লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠান এর স্বত্বাধিকারী। আপনার প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে আপনার নির্মিত ছয়টি নাটকে ওয়ালটন ফ্রিজ ব্র্যান্ডিং করতে সম্মত হয়। শর্ত থাকে যে, উক্ত নাটকসমূহে দেশের আইন, নীতি, নৈতিকতা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হয় এরকম কোনো বিষয় অর্ন্তভুক্ত হবে না। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক যে, উক্ত নাটকসমূহের মধ্যে ‘রূপান্তর’ নাটকটিতে এমন কিছু বিষয় অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে, যাতে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে ও মানুষের অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে।’
নোটিশে আরও বলা হয়, ‘ওয়ালটন কর্তৃপক্ষকে নাটকটির বিষয়বস্তু সম্পর্কে পূর্বে অবহিত না করে রূপান্তর নাটক প্রচার করায় আপনার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হলো এবং সেই সঙ্গে কেন আপনার বিরুদ্ধে ওয়ালটনের আদর্শ ও নীতিমালার পরিপন্থিভাবে নাটক প্রচারের জন্য আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা নোটিশ প্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে জানানোর জন্য বলা হলো।’
এর আগে ফেসবুক-ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম থেকে ‘রূপান্তর’ নাটকটি প্রত্যাহারের জন্য বিজ্ঞাপনী সংস্থাকে নির্দেশ দেয় ওয়ালটন। তাৎক্ষণিকভাবে ফেসবুক-ইউটিউবসহ সব মাধ্যম থেকে নাটকটি প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।
এরপর বিজ্ঞাপনী সংস্থার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে ওয়ালটন গ্রুপের আদর্শ ও নীতিমালার পরিপন্থি নাটকে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কেন আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে বিজ্ঞাপনী সংস্থা ‘লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট’কে লিগাল নোটিশ দেয় ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ।
আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে ওয়ালটনের ভাষ্য, দেশের মানুষের ধর্মীয় ও সামাজিক অনুভূতিতে আঘাত করে এমন কোনো কর্মকাণ্ড কখনও তারা সমর্থন করে না এবং এসব কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকে না। অনাকাঙ্ক্ষিত এই বিষয়টির জন্য ওয়ালটন গ্রুপ মর্মাহত এবং সম্মানিত ক্রেতা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিকট আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন:রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন রূপালী ব্যাংক পিএলসির মহাব্যবস্থাপক মো. ফয়েজ আলম। সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সরকার কর্তৃক পদোন্নতিপ্রাপ্ত হয়ে তিনিসহ রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন ব্যাংকের আট জন মহাব্যবস্থাপককে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে পদোন্নতি দেয়া হয়।
ডিএমডি হিসেবে পদোন্নতি হওয়ার আগে তিনি রূপালী ব্যাংক পিএলসিতে মহাব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
মো. ফয়েজ আলম ১৯৯৮ সালে বিআরসির মাধ্যমে সিনিয়র অফিসার পদে রূপালী ব্যাংকে যোগদান করেন। কর্মজীবনে ব্যাংকের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শাখার শাখা ব্যবস্থাপক, জোনাল অফিস এবং প্রধান কার্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। পেশাগত প্রয়োজনে তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপ ও আরব অঞ্চলের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণসহ দেশ-বিদেশে ব্যাংকিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও সেমিনারে অংশগ্রহণ করেছেন।
ফয়েজ আলমের জন্ম ১৯৬৮ সালে নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার যোগীরনগুয়া গ্রামে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে বিএ অনার্সসহ এমএ পাশ করার পর এমফিল ডিগ্রিও অর্জন করেন খ্যাতিমান এই ব্যাংকার।
পেশাগত জীবনের বাইরে ফয়েজ আলম একজন সফল লেখকও। বাংলাদেশে তিনি অগ্রণী উত্তর উপনিবেশী তাত্ত্বিক, প্রাবন্ধিক ও কবি হিসেবে বিশেষ খ্যাতিমান। এডওয়ার্ড সাঈদের বিখ্যাত গ্রন্থ অরিয়েন্টালিজম-এর অনুবাদক হিসেবেও তার আলাদা খ্যাতি আছে। তার পনেরটির বেশি গ্রন্থ এ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে।
ভোজ্যতেলের ওপর শুল্ক অব্যাহতির সময়সীমা শেষ হয়েছে সোমবার (১৫ এপ্রিল)। এ অবস্থায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম লিটারে ১০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।
বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিভিওআরভিএমএফএ) সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে।
বিভিওআরভিএমএফএ’র নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম মোল্লার পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, কাঁচামাল আমদানি ও ভোজ্যপণ্য উৎপাদনে কর অব্যাহতির মেয়াদ ১৫ এপ্রিল শেষ হচ্ছে বিধায় পরদিন ১৬ এপ্রিল থেকে ভ্যাট অব্যাহতির আগের নির্ধারিত মূল্যে পণ্য সরবরাহ করা হবে।
নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের বোতল ১৭৩ টাকা, পাঁচ লিটারের বোতল ৮৪৫ টাকা ও এক লিটার পাম তেল ১৩২ টাকায় বিক্রি করা হবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গত ফেব্রুয়ারিতে পরিশোধিত ও অপরিশোধিত (অপরিশোধিত) সয়াবিন ও পাম তেলের মূল্য সংযোজন কর ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করে।
এদিকে মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। ভোজ্যতেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজার দরের সঙ্গে সমন্বয় করা যেতে পারে, তবে সময় লাগবে।
‘ভোজ্যতেলের নতুন চালান আমদানির ক্ষেত্রে দাম বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।’
আরও পড়ুন:প্রবাসীদের আয়ের একটি বড় অংশই আসে ঢাকায় অবস্থিত ব্যাংকের শাখাগুলোতে। অর্থাৎ প্রবাসীদের পরিবারের বেশিরভাগই ঢাকায় থাকেন বা তাদের অধিকাংশ অ্যাকাউন্ট ঢাকার ব্যাংক শাখায়।
ইউএনবি জানায়, রেমিট্যান্সের জেলাভিত্তিক চিত্র নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক বিশ্লেষণে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম। সিলেট তৃতীয় এবং কুমিল্লা চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে।
এরপরে রয়েছে উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী, মৌলভীবাজার, চাঁদপুর ও নরসিংদীর অবস্থান।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জেলাভিত্তিক প্রবাসী আয় প্রতিবেদনে গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হিসাব প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮ মাসে প্রবাসীরা ১ হাজার ৫০৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে এসেছে ২১৬ কোটি ডলার। তার আগের মাস জানুয়ারিতে দেশে প্রবাসী আয় ছিল ২১০ কোটি ডলার।
জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়কালে ঢাকা জেলায় এসেছে ৫২৩ কোটি ডলার এবং চট্টগ্রাম জেলায় এসেছে ১৪২ কোটি ডলার।
এই সময়ে সিলেট জেলা ৮৭০ মিলিয়ন ডলার, কুমিল্লা ৮১০ মিলিয়ন ডলার এবং নোয়াখালী ৪৬০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৮ কোটি, ফেনীতে ৩৭ কোটি, মৌলভীবাজারে ৩৬ কোটি, চাঁদপুরে ৩৫ কোটি ডলার এবং নরসিংদীতে ২৫০ মিলিয়ন ডলার এসেছে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, প্রবাসী অধ্যুষিত জেলাগুলো থেকে বেশি প্রবাসী আয় আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। কিন্তু এমনটা হচ্ছে না। কারণ অনেক প্রবাসী বিদেশে স্থায়ী হয়েছেন। বরং তারা (প্রবাসীরা) দেশে থাকা সম্পদ বিক্রি করে বিদেশে নিয়ে যাচ্ছেন। ফলে অর্থ পাচার বাড়ছে।
আরও পড়ুন:চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ছয় দশমিক এক শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)।
আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংকটি তাদের এপ্রিলের এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুকে (এডিও) এমন পূর্বাভাস দিয়েছে।
এডিওতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার বিষয়ে এডিবি বলেছে, ২০২৪ (২০২৩-২৪) অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ছয় দশমিক এক শতাংশ পর্যন্ত। ২০২৫ (২০২৪-২৫) অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি আগের অর্থবছরের চেয়ে বেড়ে হতে পারে ছয় দশমিক ছয় শতাংশ।
বাংলাদেশে কোনো বছরের জুলাই থেকে পরবর্তী বছরের জুন পর্যন্ত ১২ মাসকে এক অর্থবছর ধরা হয়। সে হিসাবে ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষ হচ্ছে চলতি বছরের ৩০ জুন।
এডিওতে বলা হয়, বিশ্বজুড়ে চাহিদা কমে যাওয়ার পরও বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী সস্তা তৈরি পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। ডলার সংকটের কারণে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা দেশে তৈরি সুতা ও বস্ত্র ব্যবহার করছেন।
মূল্যস্ফীতির বিষয়ে বলা হয়, মূল্যস্ফীতি কমার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন পণ্য ও সেবার ভোগ বাড়তে পারে। অন্যদিকে ভর্তুকি কম দেয়া এবং কৃচ্ছ্রতার ব্যবস্থাগুলো অব্যাহত রাখায় সরকারি পর্যায়ে ভোগও সামান্য বাড়তে পারে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য