পুঁজিবাজারে টানা দুই সপ্তাহ পতনের পর ব্যাংক খাত ঘুরে দাঁড়াল। পতন থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে বাড়ল বিমা খাতের বেশিরভাগ শেয়ারের দরও।
তবে এই দুই খাতে দাম বাড়ার পরও পুঁজিবাজারে দরপতন হলো টানা দ্বিতীয় দিনের মতো। এর কারণ, বস্ত্র, প্রকৌশল খাত।
উল্টো চিত্র বস্ত্র ও প্রকৌশল খাতে, যে দুটি খাত গত ৩ জুলাই বাজেট প্রস্তাবের পর থেকে ফুলছিল বেলুনের মতো। এই দুই খাতে পতন হয়েছে ঢালাও। লোকসানি কয়েকটি কোম্পানির শেয়ার দর পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটতে থাকার পর তাতে বিনিয়োগ বাড়িয়ে হাতেনাতে শিক্ষা পেলেন বিনিয়োগকারীরা।
বস্ত্র খাতের ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে দর হারিয়েছে ৪৫টি। একটির দর ছিল অপরিবর্তিত। আর বেড়েছে ১২টির, যার মধ্যে দুটি সদ্য ওটিসি মার্কেট থেকে মূল মার্কেটে ফিরেছে রোববার।
আগের দিন এই খাতের ১৪টি কোম্পানির দর বেড়েছিল এক দিনে যত বাড়া সম্ভব ততই। এর মধ্যে ১১টি ছিল লোকসানি অথবা বন্ধ হয়ে যাওয়া কোম্পানি।
প্রকৌশল খাতের অবস্থা আরও খারাপ। এই খাতের ৪২টি কোম্পানির মধ্যে দর হারিয়েছে ৩৬টি। বেড়েছে কেবল ছয়টি।
আগের দিন এই খাতে ৪২টি কোম্পানির মধ্যে দর হারিয়েছিল ২৪টির। বেড়েছিল বাকি ১৮টির।
অন্যদিকে ব্যাংক খাতে ৩১টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ২০টি। অথচ আগের দিন দর হারিয়েছিল ২২টি কোম্পানি।
বিমা খাতের ৫০টি কোম্পানির মধ্যে একটির লেনদেন ছিল স্থগিত, কমেছে ১৮টির দাম আর বেড়েছে বাকি ৩১টির।
আগের দিন এই খাতের ৩৩টি কোম্পানি দর হারিয়েছিল।
আগের দিন সবচেয়ে বেশি দাম বাড়া মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাত এদিন হতাশ করেছে সবচেয়ে বেশি। ৩৭টি ফান্ডের মধ্যে দর হারিয়েছে ৩৩টি। একটির লেনদেন ছিল স্থগিত। বাকি তিনটির ছিল অপরিবর্তিত।
আগের দিন ৩৭টি ফান্ডের মধ্যে দাম বেড়েছিল দুটি ছাড়া সবগুলোর। কমেছিল কেবল একটির। একটির সেদিন লেনদেন হয়নি।
সব মিলিয়ে পুঁজিবাজারে আগের দিন ৩০ পয়েন্টের পর সোমবার প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমল ২২ পয়েন্ট।
বৃহস্পতিবারের তুলনায় রোববার লেনদেন কমেছিল ৬০০ কোটি টাকা। আর রোববারের তুলনায় আজ লেনদেন কমল আড়াইশ কোটি টাকার বেশি।
গত ২ জুন থেকে টাকা আট কার্যদিবস দুই হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হওয়ার পর প্রথমবারের মতো তা নামল।
এদিন হাতবদল হয়েছে এক হাজার ৭৪০ কোটি ১৬ লাখ ৭১ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড।
আগের দিন হাতবদল হয়েছিল দুই হাজার ৬৯ কোটি ৭ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।
ঝড় গেছে মিউচ্যুয়াল ফান্ডে
সোমবার খাতওয়ারি বিশ্লেষণে দেখা যায় মূল ঝড়টা গেছে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ওপর দিয়ে। যদিও মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর সর্বশেষ প্রকাশিত ইউনিট প্রতি দর এখনও লোভনীয়।
সোমবার লেনদেন শেষে সবচেয়ে বেশি দর হারিয়েছে এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ফান্ডের ৪ দশমিক ৪২ শতাংশ। এদিন ফান্ডটির দর ১১ টাকা ৩০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ১০ টাকা ৮০ পয়সা।
পিএইচপি ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটি প্রতি দর কমেছে ৪ দশমিক ২৮ শতাংশ। ইউনিটি প্রতি দর ৭ টাকা থেকে কমে হয়েছে ৬ টাকা ৭০ পয়সা।
এক্সিম ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটি প্রতি দর কমেছে ৪ দশমিক ০৫ শতাংশ। ইউনিট প্রতি দর ৭ টাকা ৪০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৭ টাকা ১০ পয়সা।
ইবিএল ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটি প্রতি দর কমেছে ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। ইউনিট প্রতি দর ৮ টাকা থেকে কমে হয়েছে ৭ টাকা ৭০ পয়সা।
সিএপিএম বিডিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দর কমেছে ৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ। এছাড়া এমবিএল ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড, প্রাইম ফিন্যান্স ফার্স্ট মিউচ্যুয়া ফান্ডের ইউনিটি প্রতি দর কমেছে ৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ইউনিটি প্রতি দর কমেছে ২১ টাকা থেকে হয়েছে ২০ টাকা ৩০ পয়সা।
এই খাতে লেনদেনও কমেছে ব্যাপকভাবে। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ৮৬ কোটি ১০ লাখ টাকা। সেটি কমে হয়েছে ৪০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।
ব্যাংক খাতে অনেক দিন পর ভালো দিন
দুই সপ্তাহ ধরে ব্যাংক খাতের পতন খানিকটা বিস্ময়ই জাগিয়েছিল পুঁজিবাজারে। ব্যাপক লভ্যাংশ, আয়ে প্রবৃদ্ধির পরও দর পড়তে থাকার কারণ বুঝতে পারছিলেন না বিনিয়োগকারী।
সোমবারের লেনদেন এই খাতের শেয়ারধারীদের কিছুটা হলেও আশান্বিত করেছে।
গত দুই দিনের ধারাবাহিকতায় এদিনও দর বৃদ্ধির শীর্ষে ছিল রূপালী ব্যাংক। আগের দিন ৩৩ টাকা ৭০ পয়সা দাম থাকায় এদিন দামার বাড়ার সুযোগ ছিল ৩৭ টাকা পর্যন্ত। আর এই একটি দামেই হাতবদল হলো চার লাখ ৭ হাজার ৫১টি শেয়ারের। এ নিয়ে তিন কার্যদিবসে শেয়ারটির দাম বাড়ল ৯ টাকা বা ৩২.১৪ শতাংশ।
বেড়েছে ডাচ বাংলা ব্যাংকের শেয়ার দরও। বেড়েছে ৮.৮২ শতাংশ। শেয়ার দর ৭৯ টাকা ৩০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৮৬ টাকা ৩০ পয়সা।
এ ছাড়া এনআরবিসি ব্যাংকের ৫ শতাংশ, এবি ব্যাংকের ৩.৮১ শতাংশ, প্রাইম ব্যাংকের দর বেড়েছে ২.৮১ শতাংশ।
ওয়ান ব্যাংকের শেয়ার দর ২.৪০ শতাংশ বেড়ে ১২ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১২ টাকা ৮০ পয়সা।
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের শেয়ার দর ২.২৭ শতাংশ বেড়ে ৮ টাকা ৮০ পয়সা থেকে হয়েছে ৯ টাকায়। ব্যাংক এশিয়ার শেয়ার দর বেড়েছে ১ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
দর পতন হওয়া ব্যাংকগুলোর মধ্যে আছে ইস্টার্ন ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ২.২৭ শতাংশ। শেয়ার দর ৩৫ টাকা ১০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৩৪ টাকা ৩০ পয়সা।
আরও কমেছে ইসলামী, ব্র্যাক, পূবালী, ট্রাস্ট, ন্যাশনাল ও যমুনা ব্যাংকের দর।
এই খাতে হাতবদল হয়েছে মোট ১৮৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা, যা আগের দিনের তুলনায় ৭২ কোটি টাকা বেশি।
রোববার লেনদেন হয়েছিল ১১৭ কোটি টাকা।
আতঙ্ক কমল বিমা নিয়ে
গত কয়েকদিন ধরে টানা পতনে এই খাতের শেয়ারধারীদের মধ্যে যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, তা থেকে কিছুটা হলেও উত্তরণ ঘটেছে এদিন।
লেনদেনও এই খাতে বেড়েছে।
সোমবার হাতবদল হয়েছে ৪১১ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে বেশি।
রোববার দুই হাজার কোটি টাকার মধ্যে ৩৭৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা লেনদেন হলেও সোমবার পৌনে দুই হাজার কোটি টাকার মধ্যে হাতবদল হয়েছে এর চেয়ে ৩৩ কোটি টাকা বেশি।
দিনের সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধি পাওয়া বেশি কিছু কোম্পানি ছিল এ খাতের।
স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সের ৯.৯৪ শতাংশ, রিলায়েন্সের ৯.৯১ শতাংশ, প্রভাতীর ৯.৩৩ শতাংশ, ঢাকার ৮.১৭ শতাংশ, সোনারবাংলার ৮.০৬ শতাংশ, অগ্রণীর ৬.৫৪ শতাংশ দাম বেড়েছে।
ইউনাইটেড, প্রগতী, ইস্টার্ন, সেন্ট্রাল ও নর্দান ইন্স্যুরেন্সের দর বেড়েছে ৪ শতাংশ পর্যস্ত।
সবচেয়ে বেশি পতন হওয়া কোম্পানির পাঁচটিই বস্ত্র খাতের
গত সপ্তাহ থেকে এই দুই খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়ে চলছিলেন বিনিয়োগকারীরা। তবে এর মধ্যে লোকসানি কোম্পানিগুলো দাম বৃদ্ধি নিয়ে তৈরি হয় প্রশ্ন।
দিনের শুরুতে বিশেষ করে বস্ত্র খাতের শেয়ারগুলোর দাম আবার বাড়তে থাকে। তবে দুপুরের পর আবার কমতে থাকে।
শেষ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি দর হারানো পাঁচটি কোম্পানির প্রতিটিই এই খাতের দেখা যায়।
এগুলো হলো মালেক স্পিনিং, ফারইস্ট স্পিনিং, জেনারেশন নেক্সট, আলিফ ও ড্রাগন সোয়েটার।
তবে এর মধ্যেও দিনের সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধির তালিকায় ১০টি কোম্পানির মধ্যে এই খাতের ছিল তিনটি।
সবচেয়ে বেশি বেড়েছে সাফকো স্পিনিং ও মুন্নু ফেব্রিকের ১০ শতাংশ করে। আর তমিজউদ্দিন টেক্সটাইলের দাম বেড়েছে ৯.৮৪ শতাংশ।
তিনটি কোম্পানির মধ্যে মুন্নু ও তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল ওটিসি মার্কেট থেকে মূল মার্কেটে ফিরেছে রোববার।
কোম্পানি দুটির মধ্যে মুন্নুর শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬২ হাজার ১০০টি, আর তমিজউদ্দিনের কেবল একটি।
মুন্নুর দাম ১১ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১২ টাকা ১০ পয়সা, আর তমিজউদ্দিনের ১৩ টাকা ২০ পয়সা থেকে ১৪ টাকা ৫০ পয়সা।
বেড়েও কমল প্রকৌশল খাত
মিউচ্যুয়াল ফান্ডের পর সবচেয়ে বেশি পড়েছে এই খাতের শেয়ার দর।
এই খাতের শেয়ারগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দর হারিয়েছে অ্যাপোলো ইস্পাত; ৫ শতাংশ। আগের দিনের দর ৮ টাকা থেকে কমে হয়েছে ৭ টাকা ৬০ পয়সা, যদিও দিনের শুরুতে দাম বেড়ে ৮ টাকা ৪০ পয়সা হয়েছিল।
১৬ টাকা ৭০ পয়সা থেকে কমে গোল্ডেনসনের দাম দাঁড়িয়েছে ১৫ টাকা ৯০ পয়সা, যদিও দিনের শুরুতে দাম ১৭ টাকা হয়েছিল। শতকরা হিসেবে দাম কমেছে ৪.৭৯ শতাংশ।
রানার অটোর শেয়ারদরও ৬৩ টাকা ৭০ পয়সা থেকে বেড়ে ৬৪ টাকা ৯০ পয়সা হয়েও দিন শেষ করেছে ৬১ টাকা ৯০ পয়সায়।
পতনের মধ্যেও সবচেয়ে বেশি দাম বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দুটি এই খাতের। কপারটেকের দাম ৩২ টাকা ৮০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৬ টাকা। শতকরা হিসেবে দাম বেড়েছে ৯.৭৬ শতাংশ।
এস আলম কোল্ডরিচের দামও ৩০ টাকা ২০ পয়সা থেকে শতকরা ৯.৯৩ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৩৩ টাকা ২০ পয়সা।
সূচক ও লেনদেন
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২২ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১৩ পয়েন্টে।
শরিয়াহ ভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ৮ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৮৪ পয়েন্টে।
বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ১৯ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৭২ পয়েন্টে।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৬৩ দশমিক ২১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৪৬৫ পয়েন্টে। লেনদেন হয়েছে ৭৯ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
মন্তব্য