পুঁজিবাজারে বিমা খাতের পর বস্ত্রে উত্থানের মধ্যে লোকসানি ও বন্ধ থাকা কোম্পানির দাম বৃদ্ধির যে প্রবণতা, তা অব্যাহত রয়েছে।
রোববার বস্ত্র খাতের ১৪টি কোম্পানি দিনের সর্বোচ্চ দর ১০ শতাংশ বা তার আশেপাশে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১১টি থেকে কোনো লভ্যাংশ আসার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কারণ, তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত কোম্পানিগুলো ব্যাপক লোকসানে আছে।
জুন শেষে যে অর্থবছর শেষ হচ্ছে, তাতে এপ্রিল থেকে তিন মাসে ব্যবসায় অলৌকিক মুনাফা না করলে সেগুলো লোকসানের বৃত্তেই থাকবে।
অথচ এই ১১টি কোম্পানিই দাম বেড়ে দিনের সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে যায়।
এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ বেড়েছে তিনটি। বাকিগুলো ১০ পয়সার ড্রিপের হিসাবে কিছুটা কম বাড়তে পেরেছে।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পুঁজিবাজারের যে খাতওয়ারি উত্থান হচ্ছে, তাতে কি লোকসানি, কি অস্তিস্থহীন কোনো কিছুইর বালাই নেই। মনে হচ্ছে সিন্ডিকেট ট্রেডিং হচ্ছে। তা না হলে যে খাতের শেয়ারের দাম বাড়ে সেটি ক্রমাগত বাড়তে থাকে। এটি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পক্ষ করা কঠিন।’
তিনি বলেন, ‘বস্ত্র খাতের আগামীতে লভ্যাংশ ঘোষণা আছে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে এটি একটি কারণ হতে পারে। তবে লোকসানি বা বন্ধ কোম্পানি থেকে ভালো কিছু পাওয়ার আশা করার তো কোনো কারণ দেখি না।’
কোন কোম্পানির শেয়ার মূল্য কত বাড়ল
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির গত কমিশনের আমলে বস্ত্র খাতের বেশ কিছু কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে, যেগুলোর মান নিয়ে প্রশ্ন আছে।
তালিকাভুক্ত হওয়ার আগে কোম্পানিগুলো প্রতি বছর মুনাফা দেখালেও পুঁজিবাজার থেকে টাকা তোলার পর পরই তারা লোকসান করতে থাকে। এক পর্যায়ে বেশ কিছু কোম্পানি বন্ধ করে দেয়া হয়।
গত বছর করোনা সংক্রমণের পর সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় যেসব খাতের ব্যবসা, তার অন্যতম বস্ত্র খাত। পুঁজিবাজারে প্রতি প্রান্তিকের যে হিসাব দেয়া হয়, তাতেও বিষয়টি স্পষ্ট।
চলতি বছর যেসব কোম্পানি তৃতীয় প্রান্তিকের হিসাব জমা দিয়েছে, তার মধ্যে বস্ত্র খাতের ২০টি কোম্পানি লোকসানে আছে। আর দ্বিতীয় প্রান্তিক জমা দেয়া আরও দুটি কোম্পানি লোকসানে। সব মিলিয়ে ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে ২২টিই লোকসানি- এই চিত্র পুঁজিবাজারে আর একটিও নেই।
কিন্তু বিমা খাতে অস্বাভাবিক ঢালাও উত্থানের পর মে মাসের শেষ দিক থেকে বস্ত্র খাতেও দর বৃদ্ধির যে প্রবণতা দেখা দিয়েছে, তাতেও দেখা যাচ্ছে লাভে থাকা আর লোকসানি কোম্পানির মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।
বরং লোকসান ও ব্যবসায় অনিশ্চয়তার কারণে অভিহিত মূল্যের অর্ধেক বা এক তৃতীয়াংশ বা এক চতুর্থাংশ দামে নেমে আসা কোম্পানিগুলোর দাম শতকরা হিসেবে বাড়ছে মৌলভিত্তিক ভালো কোম্পানির তুলনায় বেশি।
যে তিনটি কোম্পানির দর ১০ শতাংশ বেড়েছে, তার মধ্যে দুটি ওটিসি মার্কেট থেকে লেনদেন শুরু করেছে আজই। মুন্নু ফেব্রিক ও তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল ২০০৯ সালের পর প্রথমবারের মতো বাজারে আসার পর দাম বাড়বে, এটা অনুমেয়ই ছিল। আর ১০ শতাংশ বাড়তি দামে যে শেয়ারধারীরা শেয়ার বিক্রি করতে রাজি নয়, তাও স্পষ্ট।
মুন্নুর শেয়ার তাও হাতবদল হয়েছে এক হাজার ৫০১টি। কিন্তু তমিজউদ্দিনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে কেবল একটি।
এর বাইরে ফ্যামিলি টেক্স, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, মিথুন নিটিং, জেনারেশন নেক্সট, সাফকো স্পিনিং, তাল্লু স্পিনিং, অলটেক্স, জাহিন স্পিনিং, জাহিন টেক্সটাইল, তুংহাই নিটিং, আর এন স্পিনিং, সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের দাম বেড়েছে এক দিনে যত বাড়া সম্ভব ততই।
এগুলোর মধ্যে কেবল আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ মুনাফায় আছে।
বাকি কোম্পানির মধ্যে ফ্যামিলি টেক্সের মালিকরা তাদের হাতে থাকা শেয়ার ঘোষণা না দিয়ে বিক্রি করে কোম্পানি বন্ধ করে দিয়েছেন। কোম্পানিকে বাঁচাতে বিএসইসি পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে দিয়েছে। কিন্তু নতুন বোর্ড যে প্রতিবেদন দিয়েছে, তাতে এই কোম্পানিটিকে বাঁচানো যাবে না বলে ধারণা করছেন বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম।
এই কোম্পনির শেয়ার দর ৩ টাকা থেকে ১০ শতাংশ বেড়ে ৩ টাকা ৩০ পয়সা হয়েছে।
একই অবস্থা সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের। ফ্যামিলিটেক্সের পাশাপাশি এই কোম্পানির মালিকদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করার কথা ভাবছে বিএসইসি।
ফ্যামিলি টেক্সটাইলের দর ২ টাকা ২০ পয়সা থেকে ৭.৪১ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ২ টাকা ৯০ পয়সা।
মিথুন নিটিং এর মালিকরা কোম্পানি বিক্রি করে দিতে চান বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। এরা সব শেষ লভ্যাংশ দিয়েছে ২০১৬ সালে।
চলতি বছর তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে এক টাকা ২৩ পয়সা। এই কোম্পানির শেয়ার দর ৯.৯ শতাংশ বা এক টাকা বেড়ে হয়েছে ১১ টাকা ১০ পয়সা।
জেনারেশন নেক্সট ২০১৮ সালের পর থেকে লোকসানের কারণে লভ্যাংশ দিতে পারছে না। চলতি বছরও তিন প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি ৩ পয়সা লোকসান দেয়া কোম্পানির শেয়ার দর ৯.৮ শতাংশ বেড়ে ৫ টাকা ১০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫ টাকা ৬০ পয়সা।
সাফকো স্পিনিং চলতি বছর প্রথম তিন প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি লোকসান দিয়েছে ৪ টাকা ৩০ পয়সা। কোম্পানিটি সব শেষ লভ্যাংশ দিয়েছে ২০১৮ সালে। কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে ২৯ এপ্রিল থেকে দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
যেদিন বাড়তে শুরু করে, সেদিন কোম্পানির শেয়ারের মূল্য ছিল ৯ টাকা ৭০ পয়সা। সেটি এখন দাঁড়িয়েছে ১৮ টাকায়।
এর মধ্যে রোববার ৯.৭ বেড়ে শেয়ার মূল্য ১৬ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বেড়েছে এক টাকা ৬০ পয়সা।
দুই বছর ধরে তাল্লু স্পিনিং কোনো আয় ব্যয়ের হিসাব দিচ্ছে না, সব শেষ লভ্যাংশ দিয়েছে ২০১৫ সালে। এই কোম্পানির শেয়ার দর ৯.৬ শতাংশ বেড়ে ৫ টাকা ২০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫ টাকা ৭০ পয়সা।
অলটেক্স সব শেষ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ২০১৫ সালে। আর সব শেষ মুনাফা করতে পেরেছে ২০১৬ সালে। চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে তাদের লোকসান শেয়ার প্রতি ৪ টাকা ১০ পয়সা।
এই কোম্পানির শেয়ার দরও এক দিনে ৯.৬ শতাংশ বেড়ে ৯ টাকা ৬০ পয়সা থেকে হয়েছে ১০ টাকা ৫০ পয়সা।
বস্ত্র খাতে হতাশার দুই নাম জাহিন স্পিনিং ও জাহিন টেক্সটাইল।
জাহিন স্পিনিং মিলস বিপুল পরিমাণ সম্পদ নিয়েও ২০২০ সালে শেয়ার প্রতি ৩ টাকা ৩৯ পয়সা আর চলতি বছর প্রথম তিন প্রান্তিকে এক টাকা ৩৭ পয়সা লোকসান দিয়েছে কোম্পানিটি।
এ কারণে চলতি বছর এক পর্যায়ে দাম নেমে যায় ৪ টাকা ৯০ পয়সায়। তবে গত ২৮ এপ্রিল থেকেই কোম্পানির শেয়ার মূল্য বাড়তে শুরু করে।
এই কোম্পানির শেয়ার দর ৯.১ শতাংশ বেড়ে ৭ টাকা ৭০ পয়সা থেকে হয়েছে ৮ টাকা ৪০ পয়সা।
অন্যদিকে জাহিন টেক্সটাইল টানা তিন বছর ধরে লোকসানে। ২০১৯ সালে শেয়ার প্রতি ২ টাকা ২৪ পয়সা, পরের বছর ৩ টাকা ৭৭ পয়সা লোকসান দেয়া কোম্পানিটি চলতি বছর ৯ মাসে লোকসান দিয়েছে ২ টাকা ৫২ পয়সা।
গত বছর এক পর্যায়ে কোম্পানির শেয়ার মূল্য তিন টাকা ৯০ পয়সায় নেমে আসে। পরে কিছুটা বাড়ে।
তবে সাম্প্রতিক উত্থান শুরু গত ৩ মে থেকে। সেদিন শেয়ার মূল্য ছিল ৫ টাকা ২০ পয়সা। এই কয়দিনে দাম বাড়ল ৪৪ শতাংশ।
এই কোম্পানির শেয়ার মূল্য ৮.৭ শতাংশ বেড়ে ৬ টাকা ৯০ পয়সা থেকে হয়েছে ৭ টাকা ৬০ পয়সা।
তুংহাই নিটিং সব শেষে হিসাব দিয়েছে ২০১৭ সালে। শেষ লভ্যাংশ দিয়েছে ২০১৬ সালে। বন্ধ থাকা কোম্পানির মালিকপক্ষ কোনো তথ্যই দিচ্ছে না।
তার আগের চার বছর লোকসান ছিল যথাক্রমে শেয়ার প্রতি ৫ টাকা ৪৭ পয়সা, ৬ টাকা ৯ পয়সা, ৭ টাকা ৯৭ পয়সা ও ২ টাকা ১৩ পয়সা।
এমন বিপুল লোকসানি কোম্পানিতে বিনিয়োগকারীরা কী আশায় বিনিয়োগ বাড়িয়ে চলেছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে।
এই কোম্পানির শেয়ার মূল্যও দিনের সর্বোচ্চ সীমায় উঠে ৩ টাকা ৬০ পয়সা থেকে ৩ টাকা ৯০ পয়সা হয়েছে। শতকরা হিসেবে দাম বেড়েছে ৮.৩৩ শতাংশ।
বস্ত্র খাতে পুঁজিবাজারে আর এন স্পিনিং এর শেয়ার নিয়ে প্রায়ই নানা ‘খেলা’ হয়। ২০১৭ সালে ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত চার বছরের জন্য হিসাব পর্যালোচনা করে সালে ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়। সে সময় শেয়ার মূল্য ৬ টাকা থেকে বেড়ে ৩০ টাকা ছাড়িয়ে যায়।
এরপর ২০১৭ ও ২০১৮ সালে আবার ১০ শতাংশ করে বোনাস শেয়ার দেয়া হয়। কিন্তু লোকসানের কারণে পরে আর কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। এর মধ্যে ২০১৯ সালের এপ্রিলে কুমিল্লায় কোম্পানির কারখানা আগুনে পুড়ে যায় পুরোপুরি। সেই ক্ষতি আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি তারা।
চলতি বছর প্রথম তিন প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি ১৬ পয়সা লোকসান দেয়া কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য আছে কেবল ১৭ পয়সা। অথচ গত ৮ জুন থেকে প্রায় ১৩ শতাংশ দাম বাড়ল কোম্পানিটির।
এর মধ্যে আজ এক দিনেই বাড়ল ৮.২ শতাংশ। ৪ টাকা ৯০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫ টাকা ৩০ পয়সা।
সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের দাম ২ টাকা ৭০ পয়সা ছিল বৃহস্পতিবার। এখান থেকে ২০ পয়সা বেড়ে দাম হওয়ার সুযোগ ছিল ২ টাকা ৯০ পয়সা। হয়েছেও তাই।
এই কোম্পানিটি ২০১৭ সালে বন্ধ করে দেয়ার পর থেকে কোনো হিসাব দিচ্ছে না।
আরও পড়ুন:
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
মন্তব্য