পুঁজিবাজারে বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষ হওয়ার পর বেশ আলোচনা ছিল বিমা খাত নিয়ে। এই খাতে দরপতন হয় কি না, এ নিয়ে যুক্তি পাল্টা-যুক্তির মধ্যে মূল ঝড়টা গেল ব্যাংক খাতের ওপর।
বিমাও বাদ যায়নি, এই খাতেরও সিংহভাগ কোম্পানির দর হারিয়েছে। সবচেয়ে বেশি দর হারানো ১০টি কোম্পানির পাঁচটিই এই খাতের।
অন্যদিকে দিনের সর্বোচ্চ দরপতনের তালিকায় না থাকলেও ব্যাংক খাতের প্রতি তিনটি কোম্পানির দুটিই দর হারিয়েছে।
সবচেয়ে বড় বাজার মূলধনের ব্যাংক খাতে দরপতনের কারণে পতন হলো সূচকেও। যদিও দরপতনের বিপরীতে দর বাড়ার সংখ্যাটিও নেহায়েত কম না।
১৯২টি কোম্পানি দর হারানোর বিপরীতে বেড়েছে ১৫৯টির দর। অপরিবর্তিত ছিল ২১টি।
এপ্রিলে লকডাউনের শুরু থেকে দুই মাসে প্রায় এক হাজার পয়েন্ট উত্থানের পর পুঁজিবাজারে দর সংশোধন হবে বলে যে আলোচনা ছিল গত দুই দিন ধরে, তার কিছুটা নমুনা দেখা গেল সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে।
দিনভর যুদ্ধ করেও শেষ বেলায় এসে পতন হলো সূচকের। সেই সঙ্গে লেনদেনও কমল উল্লেখযোগ্য পরিমাণে।
দিন শেষে সূচক পড়েছে ৩০ পয়েন্ট। অথচ দিনের শুরুতে লেনদেন শুরুর ১২ মিনিটে সূচক বেড়েছিল ৩২ পয়েন্ট। সেখান থেকে বেলা একটা ৪০ মিনিট পর্যন্ত সূচক ধরে রাখার লড়াই চলেছে। তবে শেষ পৌনে এক ঘণ্টায় কেবল নিচের দিকেই নেমেছে।
সূচক কমার দিন লেনদেনও কমেছে ব্যাপক হারে। দিন শেষে দুই হাজার কোটি টাকার বেশিই লেনদেন হলেও সেটি আগের দুই দিনের তুলনায় ব্যাপক কম।
লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৬৯ কোটি ৭ লাখ টাকা।
গত বুধবার লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা, আর বৃহস্পতিবার দুই হাজার ৬৬৯ কোটি টাকার কিছু বেশি।
ব্যাংকের ৩১টি কোম্পানির মধ্যে দর হারিয়েছে ২২টিই। এর মধ্যে ব্যতিক্রম কেবল লভ্যাংশ ঘোষণার অপেক্ষায় থাকা রূপালী ও ট্রাস্ট ব্যাংক। রূপালী ব্যাংকের দাম পরপর দ্বিতীয় দিনের মতো প্রায় ১০ শতাংশ বেড়ে হাতবদল হয়েছে। অতটা না বাড়লেও ট্রাস্ট ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে ১ টাকা ৩০ পয়সা বা প্রায় ৪ শতাংশ।
বিমা খাতে পতন যেমন ছিল, তেমনি উত্থানও ছিল।
এই খাত নিয়ে তুমুল আলোচনা একটি শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন প্রকাশের পর। গত বছর করোনায় সাধারণ ছুটি শেষে বিশেষ করে সাধারণ বিমার শেয়ার দর বেড়েছে পাগলা ঘোড়ার মতো। এমনকি ১০ গুণ হয়েছে একটি কোম্পানির দর। কোনো কোনোটির তিন থেকে চার গুণ, কোনো কোনোটির পাঁচ থেকে ছয় বা সাত গুণ হয়েছে।
ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিমা খাতের শেয়ারধারীদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক তৈরি হয়। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্পষ্টত দুটি ভাগ তৈরি হয়। একটি ভাগ বলতে থাকে বিমার দাম আরও বাড়বে, একটি পক্ষ বলতে থাকে ব্যাপকভাবে পড়বে। এই পরিস্থিতিতে রোববার কী হয়, এ নিয়ে দৃষ্টি ছিল।
দিনের শুরুটা একেবারে খারাপ ছিল না। তবে শেষ বেলায় বিমা খাতেও গেছে ঝড়।
অবশ্য এই খাতের ৫০টি কোম্পানির মধ্যে অন্তত আটটির দাম বেড়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। অন্যদিকে নয়টি কোম্পানির পতন হয়েছে ব্যাপক হারে। বাকিগুলো দর হারালেও শতকরা হিসেবে তা তেমন উল্লেখযোগ্য নয়।
সর্বাধিক দর বৃদ্ধি পেয়ে যেসব কোম্পানির শেয়ার দিনের সর্বোচ্চ দামে উঠেছিল, তার মধ্যে বিমা খাতের রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সও আছে। এক দিনেই ৯ টাকা ৬০ পয়সা বা ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ বেড়েছে দাম।
সব মিলিয়ে এই খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৪টির, দুটি ছিল অপরিবর্তিত, একটির লেনদেন রেকর্ড ডেটের কারণে স্থগিত। কমেছে বাকি ৩৩টির দাম।
বিমায় লেনদেনের চিত্র
সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে রিলায়েন্স ইন্স্যরেন্সের ৯.৯৬ শতাংশ।
এ ছাড়া অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের ৯.৯৩ শতাংশ, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের ৫.০৫ শতাংশ, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের ৪.৪৬ শতাংশ, প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের দর বেড়েছে ৩ দশমিক ২২ শতাংশ।
আর দর পতনের দিক দিয়ে শীর্ষে ছিল সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্স ৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। এদিন দিনের সর্বোচ্চ দর পতন হয়েছে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের, যার পরেই আছে সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্স।
বিমা খাতের প্রভাতি ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ৭ দশমকি ৭৬ শতাংশ। রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দর কমেছে ৬.৫৬ শতাংশ।
এ ছাড়া বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের ৫.৫৬ শতাংশ, সান লাইফের ৫.১১ শতাংশ, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের ৫.০৮ শতাংশ, ফেডারেল ইন্স্যুরেন্সের ৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ ও সন্ধানী ইন্স্যুরেন্সের দর কমেছে ৪ দশমিক ১০ শতাংশ।
এছাড়া ঢাকা, গ্লোবাল, জনতা, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ২ শতাংশ পর্যন্ত।
দরপতনের পাশাপাশি এই খাতে লেনদেনও কমে এসেছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। রোববার হাতবদল হয়েছে মোট ৩৭৮ কোটি ২৯ লাখ টাকার। যা গত বৃহস্পতিবারও ছিল ৬০০ কোটি টাকার বেশি।
এদিন মোট লেনদেনের ১৮ শতাংশ হয়েছে বিমা খাতে। কিছুদিন আগেও যা ছিল ৩৬ শতাংশেরও বেশি।
ব্যাংকে আরও পতন
বাজেট ঘোষণার দিন ৩ জুন থেকে ব্যাংকে যে ধারাবাহিক পতন হচ্ছে, সেটি থামার কোনো নামই নেই।
দর পতন হওয়ার কোম্পানির তালিকার শীর্ষে ছিল ব্যাংক খাতের আল আরাফাহ ইসলাম ব্যাংকের ৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ। একদিন ব্যাংকটির শেয়ারের কোনো ক্রেতা ছিল না।
এর বাইরে এবি ব্যাংকের দর কমেছে ৪.৩৮ শতাংশ, ডাচ বাংলার ৩.৪১ শতাংশ, যমুনা ব্যাংকের ৩. ২৮ শতাংশ, প্রাইম ব্যাংকের ৩.১৮ শতাংশ, ওয়ান ব্যাংকের ৩.১০ শতাংশ দর কমেছে।
এছাড়া মার্কেন্টাইল ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দরও কমেছে এক শতাংশ করে।
লভ্যাংশ ঘোষণার অপেক্ষায় থাকা রূপালী ও ট্রাস্ট ছাড়া ছাড়া কেবল আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের ২.৬২ শতাংশ, এনবিএলের ১.২৭, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ১.১৪ শতাংশ আর ইসলামী ব্যাংকের ০.৩৬ শতাংশ দম বেড়েছে।
এই খাতে লেনদেন হয়েছে মোট ১১৭ কোটি টাকা, যা মোট লেনদেনের ৫.৬৭ শতাংশ।
বস্ত্র খাতই এখন আলোচনার কেন্দ্রে
লভ্যাংশ ঘোষণার সময় এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বস্ত্র খাতে লেনদেন বাড়িয়েই চলেছেন বিনিয়োগকারীরা। তবে এই খাতের লাভে থাকা কোম্পানির চেয়ে বন্ধ ও লোকসানি কোম্পানির দাম রকেট গতিতে ছুটতে থাকায় এসব কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজির আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।
এদিন ওটিসি মার্কেট থেকে যে চারটি কোম্পানি এদিন মূল মার্কেটে ফিরেছে, তার মধ্যে মুন্নু ফেব্রিক আর তমিজউদ্দিন টেক্সটাইলের ১০ শতাংশ করে দাম বেড়েছে। তবে এগুলোর বিক্রেতা ছিল না। মুন্নুর দেড় হাজার শেয়ার লেনদেন হলেও তমিজউদ্দিনের শেয়ার হাতবদল হয়েছে কেবল একটি শেয়ার।
এ ছাড়া ফ্যামিলি টেক্স, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, মিথুন নিটিং, জেনারেশন নেক্সট, সাফকো স্পিনিং, তাল্লু স্পিনিং, অলটেক্স, জাহিন স্পিনিং, জাহিন টেক্সটাইল, তুংহাই নিটিং, আর এন স্পিনিং, সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের দাম বেড়েছে একদিন যত বাড়া সম্ভব ততই।
এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে কেবল আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ মুনাফায় আছে। বাকিগুলো হয় বন্ধ নয় বিপুল পরিমাণ লোকসান গুনেছে।
এই খাতে লেনদেন হয়েছে মোট ২৮৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা যা মোট লেনদেনের ১৩.৮৮ শতাংশ।
সবচেয়ে বেশি উত্থান মিউচ্যুয়াল ফান্ডে
জুন মাসের আর দুই সপ্তাহ পার করলেই মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই লভ্যাংশ ঘোষণা করবে।
এসব ফান্ডের মধ্যে সিংহভাগই তিন প্রান্তিক শেষে ব্যাপক মুনাফায় আছে। আবার চতুর্থ প্রান্তিকে পুঁজিবাজারে সূচক বেড়েছে ৮০০ পয়েন্টেরও বেশি। এর সুফল অবশ্যই পাবে ফান্ডগুলো। কিন্তু বেশিরভাগ ফান্ডই অভিহিত মূল্যের নিচে লেনদেন হচ্ছে।
এই অবস্থায় গত দুই সপ্তাহ ধরেই মাঝেমধ্যেই মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দাম বাড়তে দেখা যায়, যার আরও একটি নমুনা দেখা গেল আজ।
৩৭টি ফান্ডের মধ্যে দাম কমেছে কেবল একটির, একটির লেনদেন হয়নি, দুটির দাম পাল্টায়নি, বেড়েছে বাকি ৩৩টির দামই।
শতকরা হিসেবে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে এক্সিম ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দর। ৭.২৪ শতাংশ বেড়ে ৬ টাকা ৯০ পয়সার ফান্ড হয়েছে ৭ টাকা ৪০ পয়সা।
ইবিএল ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড ৭ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৮ টাকা।
পিএইচপি ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড ৬ টাকা ৬০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৭ টাকা।
ইবিএল ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড ৬ টাকা ৮০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৭ টাকা ২০ পয়সা।
এই খাতে লেনদেন হয়েছে মোট ৮৬ কোটি ১০ লাখ টাকা যা সাম্প্রতিক কালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
অন্যান্য বড় খাতের মধ্যে প্রকৌশল খাতে ১৯০ কোটি টাকা, ওষুধ ও রসায়ন খাতে ১৮০ কোটি টাকা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৯৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, ব্যাংক বহির্ভুত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৯৫ কোটি টাকা, খাদ্য ও আনুষঙ্গিত খাতে ৪২ কোটি ৯০ লাখ টাকা হাতবদল হয়েছে।
সূচক ও লেনদেন
রোববার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএস আগের দিনের তুলনায় ৩০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩৮ পয়েন্টে।
শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইস ৬ দশমিক ০৫ পয়েন্টে কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৯৩ পয়েন্টে।
বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ১২ দশমিক ৫৩ পয়েন্টে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৯২ পয়েন্টে। মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৬৯ কোটি টাকা যা আগের দিনের চেয়ে ৬০০ কোটি টাকা কম।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই আগের দিনের তুলনায় ৫৬ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট কমেছে ১৭ হাজার ৫২৮ পয়েন্টে। লেনদেন হয়েছে মোট ৯০ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজারে চলতি সপ্তাহ মোটেই ভালো কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের পতনের পর নববর্ষের ছুটি শেষে দ্বিতীয় কার্যদিবসেও বড় পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম—দেশের উভয় পুঁজিবাজার। এদিন কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৭ পয়েন্ট। মন্দাবস্থা চলছে বাকি দুই সূচকেও। শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১০ এবং বাছাইকৃত শেয়ারের ব্লু-চিপ সূচক কমেছে ১৮ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে সিংহভাগের দরপতন হয়েছে। আজ ৯৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৫৫টি কোম্পানি এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসেবে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘জেড’—তিন ক্যাটাগরিতেই প্রধান্য পেয়েছে দর কমা কোম্পানির সংখ্যা। বিশেষ করে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১১টির এবং কমেছে ৬৭টির; আর লেনদেন অপরিবর্তিত ছিল ৫টি কোম্পানির।
লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেশিরভাগেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। মাত্র ৭টি কোম্পানির ইউনিটের দাম বৃদ্ধি হয়েছে, কমেছে ২৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টির।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে আজ ২৬টি কোম্পানির মোট ৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে মারিকো বাংলাদেশ।
ডিএসইতে সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। সারা দিনে মোট ৪৪৬ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, গতদিন যার পরিমাণ ছিল ৪১৪ কোটি টাকা।
৯.৯৪ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় আছে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড। ১৪২.৯০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়ে দিন শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫৭.১০ টাকা।
অন্যদিকে, ৯.৯৬ শতাংশ দর হারিয়ে আজ একেবারে তলানিতে ঠাঁই হয়েছে খান ব্রাদার্সের। প্রতিটি শেয়ার ১৩৪.৫০ টাকা দরে লেনদেন শুরু হলেও দিন শেষে দাম কমে ১২১.১০ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে।
চট্টগ্রামেও বড় পতন
.ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের বড় পতন হয়েছে। সারা দিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ১০০ পয়েন্ট।
লেনদেন অংশ নেওয়া ২১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৪টির, বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ২২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।
সূচকের পাশাপাশি সিএসইতি আজ লেনদেনও কমেছে। গত কার্যদিবসে ১৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হলেও মঙ্গলবার তা কমে ৭ কোটি টাকায় নেমেছে।
এদিন ৯.৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে আর্থিক মূল্যে শীর্ষ শেয়ার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। অপরদিকে ৯.৭৭ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে নেমেছে দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে আবারও সূচকের পতন ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে। দুই পুঁজিবাজারে সবকটি সূচক কমলেও বেড়েছে সামগ্রিক লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসএস ১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ কমেছে আধা পয়েন্টের বেশি।
সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। ডিএসইতে মোট ৪৮২ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগেরদিন ছিল ৪৫১ কোটি টাকা।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫০, বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৬ কোম্পানির। সারাদিনের লেনদনে দাম অপরিবর্তিত ছিল ৫৯ কোম্পানির শেয়ারের।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ এবং জেড ক্যাটাগরির বেশিরভাগ শেয়ারেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। বি ক্যাটাগরিতে দাম বেড়েছে অধিকাংশ শেয়ারের। মধ্যম মানের শেয়ারের এই ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ৮২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৯, কমেছে ৩৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে তালিকাভুক্ত ৩৬ কোম্পানির ২৪টিরই দাম ছিল উর্ধ্বমুখী। দাম কমেছে ৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির।
ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া ২৬ কোম্পানির ২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে ব্যাংক এশিয়া সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করেছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে তাল্লু স্পিনিং মিলস।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো পতন হয়েছে চট্টগ্রামের সূচকেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১ পয়েন্টের বেশি।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসই'র বাজারে। সারাদিনে সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৩ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৬, কমেছে ৭৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে পদ্মা ইসলামি লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড এবং ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দাম কমে তলানিতে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকার পুঁজিবাজারে প্রধান সূচকের উত্থান হলেও সার্বিক সূচক কমেছে চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১ ও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক কমেছে ১১ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩১, কমেছে ৬৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৩০ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১৩ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ৭০ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৪০, কমেছে ১৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৭৩ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:টানা দুই দিন উত্থানের পর তৃতীয় দিন মঙ্গলবারও ঢাকার পুঁজিবাজারে বইছে সুবাতাস।
সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় শেয়ার ও ইউনিট ক্রয়-বিক্রয় ছাড়িয়েছে ৩০০ কোটি টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪৭ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক ডিএসইএস এবং ব্লু-চিপ কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট করে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগেরই দাম বেড়েছে। ১০৯ কোম্পানির দরপতন এবং ৫৩ কোম্পানির দাম অপরিবর্তিত থাকার বিপরীতে দাম বেড়েছে ২৩০ কোম্পানির।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারেও বইছে চনমনে হাওয়া। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১০২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৭ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৭, কমেছে ৫১ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৯ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে সিএসইতে ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রবিবারের লেনদেনে সূচকের উত্থান হয়েছে ঢাকার পুঁজিবাজারে; বেড়েছে সবকটি সূচক।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে পতন দিয়ে শুরু হয়েছে লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরিয়াহভিত্তিক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে এবং বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপ সূচকের উত্থান হয়েছে ৫ পয়েন্ট।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় দাম বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের। দরবৃদ্ধির ২৪৫ কোম্পানির বিপরীতে দর কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইতে দিনের শুরুতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৯০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৫ পয়েন্ট। সূচক কমলেও বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেন হওয়া ১০২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৫, কমেছে ২৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম দুই ঘণ্টায় লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:গত সপ্তাহের উত্থানের ধারা ধরে রেখে এ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন হয়েছে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে থাকলেও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক বেড়েছে ৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬৯, কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর ৩০ মিনিটে ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ৫০ কোটি টাকা। ঢাকার মতোই চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২২, কমেছে ৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম আধা ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৩০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য