বিশ্বে সবচেয়ে বেশি পরিবেশবান্ধব সবুজ পোশাক কারখানা বাংলাদেশে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ১৪৩টি কারখানা পরিবেশবান্ধব সবুজ কারখানার সনদ পেয়েছে। যার মধ্যে ৪১টি প্লাটিনাম কারখানা।
বিশ্বের শীর্ষ ১০০টি কারখানার ৩৯টিই এখন বাংলাদেশের। আরও প্রায় ৫০০টি কারখানা সনদের অপেক্ষায় আছে।
সাভারের রানা প্লাজা ধসের পর পরিবেশবান্ধব কারখানা স্থাপনের দিকে মনোযোগ দেন তৈরি পোশাকশিল্প মালিকরা। এখন সে সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পমালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি সভাপতি ফারুক হাসান নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আমাদের উদ্যোক্তাদের দূরদর্শিতা ও প্রবল ইচ্ছা শক্তি ও উদ্যোগের কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। সবুজ শিল্পায়নে এই সাফল্যের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি) পৃথিবীর প্রথম ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন হিসেবে বিজিএমইএকে ‘২০২১ লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ দিয়েছে।
সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে সবুজ কারখানার খেতাব পাওয়া বাংলাদেশের তিনটি পোশাক কারখানা হচ্ছে রেমি হোল্ডিংস, তারাসিমা অ্যাপারেলস এবং প্লামি ফ্যাশনস।
প্লামি ফ্যাশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও নিট পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ’র সাবেক সভাপতি ফজলুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পরিবেশবান্ধব কারখানার সংখ্যার দিক দিয়ে আমাদের ধারেকাছেও নেই কোনো প্রতিযোগী দেশ। সাধারণত অন্যান্য স্থাপনার চেয়ে পরিবেশবান্ধব স্থাপনায় ৫ থেকে ২০ শতাংশ খরচ বেশি হয়। তবে বাড়তি খরচ হলেও দীর্ঘমেয়াদি সুফল পাওয়া যায়। সব মিলিয়ে পরিবেশবান্ধব স্থাপনায় ২৪-৫০ শতাংশ বিদ্যুৎ, ৩৩-৩৯ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ ও ৪০ শতাংশ পানির ব্যবহার কমানো সম্ভব।’
পোশাকের দাম বেশি পাচ্ছেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হাঁ, দাম একটু বেশি পাচ্ছি। তবে তা প্রত্যাশার চেয়ে কম।’
বাংলাদেশের পোশাক শিল্প উদ্যোক্তাদের অদম্য মনোবল ও প্রচেষ্টার স্বীকৃতি স্বরূপ তাদের সংগঠন বিজিএমইএকে ইউএসজিবিসি এই পুরস্কার দিয়েছে বলে জানান বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।
‘পৃথিবীর প্রথম সংগঠন হিসেবে আমরা এই পুরস্কার পেয়ে গর্বিত’-বলেন তিনি।
সারা বিশ্বের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান পরিবেশবান্ধব স্থাপনার সনদ দিয়ে থাকে। তাদের মধ্যে একটি যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি)। তারা ‘লিড’নামে পরিবেশবান্ধব স্থাপনার সনদ দিয়ে থাকে। লিডের পূর্ণাঙ্গ রূপ হলো লিডারশিপ ইন এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন।
এই সনদ পেতে একটি প্রকল্পকে ইউএসজিবিসির তত্ত্বাবধানে নির্মাণ থেকে উৎপাদন পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে সর্বোচ্চ মান রক্ষা করতে হয়। ভবন নির্মাণ শেষ হলে কিংবা পুরোনো ভবন সংস্কার করেও আবেদন করা যায়।
১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ইউএসজিবিসি। সংস্থাটির অধীনে কলকারখানার পাশাপাশি বাণিজ্যিক ভবন, স্কুল, হাসপাতাল, বাড়ি, বিক্রয়কেন্দ্র, প্রার্থনাকেন্দ্র ইত্যাদি পরিবেশবান্ধব স্থাপনা হিসেবে গড়ে তোলা যায়।
গত বছরের ডিসেম্বরে সারা বিশ্বে লিড সনদ পাওয়া বাণিজ্যিক স্থাপনার সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে যায়। লিড সনদের জন্য নয়টি শর্ত পরিপালনে মোট ১১০ পয়েন্ট আছে। এর মধ্যে ৮০ পয়েন্টের ওপরে হলে ‘লিড প্লাটিনাম’, ৬০-৭৯ হলে ‘লিড গোল্ড’, ৫০-৫৯ হলে ‘লিড সিলভার এবং ৪০-৪৯ হলে ‘লিড সার্টিফায়েড’ সনদ মেলে।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে ধসে পড়েছিল নয়তলা ভবন রানা প্লাজা। এটি ছিল দেশের পোশাক শিল্পে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি। ভবন ধসে প্রাণ হারান হাজারেরও বেশি মানুষ। যারা প্রাণে বেঁচে গেছেন, তারাও পঙ্গুত্ব নিয়ে কাটাচ্ছেন মানবেতর জীবন।
রানা প্লাজা ধসের পর থেকেই পরিবেশবান্ধব কারখানা স্থাপনের বিষয়টি আলোচনায় চলে আসে।
শনিবার বিজিএমইএ’র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ইউএসজিবিসি থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ১৪৩টি কারখানা পরিবেশবান্ধব হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এর মধ্যে ৪১টি পোশাক কারখানা ‘লিড প্লাটিনাম’ সনদ পেয়েছে। এছাড়া ‘লিড গোল্ড’ পেয়েছে ৮৯টি আর ‘লিড সিলভার’ পেয়েছে ১১টি।
‘সব মিলিয়ে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ক্যাটাগরিতে বিশ্বের শীর্ষ ১০০টি কারখানার ৩৯টিই বাংলাদেশে অবস্থিত। আরও প্রায় ৫০০টি কারখানা সনদের অপেক্ষায় আছে।’
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘পোশাক খাতে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনার পর আমরা শিল্পটিকে পুনর্গঠনের চ্যালেঞ্জ নেই। গত এক দশকে আমাদের উদ্যোক্তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম, নিরাপত্তা খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় এবং সরকার-ক্রেতা-উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তায় আজ বাংলাদেশের পোশাকশিল্প একটি নিরাপদ শিল্প হিসেবে বিশ্বে রোল মডেল হিসেবে নিজের অবস্থান তৈরি করেছে।’
তিনি বলেন, ‘পরিবেশ ও শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে আমরা শিল্পে আমূল পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের এই উদ্যোগ ও অর্জন বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে।
‘এ খাতে নিরাপদ, টেকসই ও পরিবেশবান্ধব শিল্পায়নে গর্ব করার মতো অনেক অর্জন আছে’ উল্লেখ করে ফারুক বলেন, হংকংভিত্তিক আন্তর্জাতিক অডিট প্রতিষ্ঠান ‘কিউআইএম‘ এর মতে এথিকাল সোর্সিংয়ের দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় শীর্ষস্থানে। মূলত গ্লোবাল সাপ্লাই চেইনের গুণগত মান, কমপ্লায়েন্স, কর্মঘণ্টা ও শ্রম মানের বিভিন্ন দিক মূল্যায়ন করে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি এমন একটি সময়ে এসেছে যখন করোনার মহামারির কারণে এ শিল্পে একটি সংকটময় সময় পার করছে। শত প্রতিকূলতার মধ্যেও এই অর্জন নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়।’
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘লিঙ্গ বৈষম্য কমানোর ক্ষেত্রেও এ শিল্পে কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি, কমপ্লায়েন্স, কারখানায় পেশাগত নিরাপত্তা বিধানেও বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে।
‘এসব অর্জনের মাধ্যমে যে বিষয়টি প্রমাণিত হয় তা হলো- আমাদের সহনশীলতা, উদ্যোক্তাদের একনিষ্ঠতা, গতিশীলতা, ত্যাগ ও ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয়। আর এসব অর্জনের মাধ্যমে আমরা আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের আস্থা ধরে রাখতে সফল হয়েছি। বিশ্বে বাংলাদেশ তার দ্বিতীয় স্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।’
তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, ‘নানা বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও গত ১০ বছরে আমরা আমাদের রপ্তানি দ্বিগুণের বেশি করতে সক্ষম হয়েছি। ২০১১ সালে যেখানে রপ্তানি ছিল ১৪ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার, সেখানে ২০১৯ সালে আমরা ৩৩ দশমিক এক বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছি।
‘২০২০ সালে রপ্তানিতে বৈশ্বিক মহামারির একটি প্রভাবটি খুবই স্পষ্ট। আমরা চেষ্টা করছি, আমাদের সমস্ত শক্তি ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে সকলের সহায়তায় এই বিপর্যয় থেকে ঘুরে দাঁড়াতে। আশা করছি সফল হব।’
‘এই যে আমরা একটা ভালো পুরস্কার পেলাম, সম্মান পেলাম-এটা আমাদের আরও অনুপ্রেরণা দেবে। শক্তি-সাহস জোগাবে। আর এর মধ্য দিয়ে আমরা কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলা করে মাথা উঁচু করে দাঁড়াব’-বলেন বিজিএমইএ সভাপতি।
আরও পড়ুন:কুড়িগ্রামে রৌমারী উপজেলার রৌমারী সদর ইউনিয়নের কালোর ও জিঞ্জিরাম নদী দ্বারা বিচ্ছিন্ন সীমান্তবর্তি ভন্দুরচর গ্রামে পরিকল্পিত ভাবে একই পরিবারের তিনজনক হত্যা করা হয় গত ২৪জুলাই। এই ঘটনার প্রতিবাদে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৬জুলাই শনিবার দুপুরে রৌমারী উপজেলার সর্বস্তরের জনগনের ব্যানারে এই কর্মসূচি করা হয়। রৌমারী টু ঢাকা মহাসড়কে ঘন্টাব্যাপি বিক্ষোভ ও মানববন্ধন পালন করে স্বজন ও এলাকাবাসী। এসময় বক্তব্য রাখেন, ওয়াজেদ আলী,ইকতার হোসেন, আনোয়ার হোসেন,নিহত বুলু মিয়ার স্ত্রী আসকেতারা বেওয়া,কন্যা শাপলা বেগম,ফুলবাবুর স্ত্রী ফুলোরানী বেওয়া এবং নুরুল আমিনের স্ত্রী আনজু আরা বেওয়া প্রমুখ।
উল্লেখ্য,গত ১৯ জুলাই ভন্দুর চরের রাজু আহমেদের গরু প্রতিবেশি শাহজামালের বীজতলার ধানের চারা খেয়ে ফেলে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শাহজামালের লোকজন গরু বেঁধে রাখতে বলে। এরই জেরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রায় ২০/২৫জনের একটি দল শাহজামালের বাড়িতে হামলা চালিয়ে মহিলাদেরকে মারধর করে ও বাড়িঘর ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় ২০জুলাই আহত নুরজাহান বাদী হয়ে রৌমারী থানায় একটি অভিযোগ করেন। কিন্তু সেই অভিযোগ আমলে না নিয়ে বাদীপক্ষকে মীমাংসা করে নিতে বলে পুলিশ। থানায় অভিযোগ দেবার জের ধরে গত ২৪জুলাই আবারও রাজু আহমেদের গ্রপের সদস্যরা দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় প্রতিপক্ষ শাহজামালদের উপর। দিনদুপুরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে একই পরিবারের তিন সদস্যকে হত্যা করে। নিহতরা হলেন,শাহজামালের দুই ভাই ফুলবাবু,বুলু মিয়া এবং ভাতিজা নুরুল আমিন। উভয় পক্ষের প্রায় ১০জন আহত হয়। এই ঘটনায় গত ২৬ জুলাই নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী রৌমারী থানা ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে।
পরে শাহজামাল বাদী হয়ে ২৪জুলাই ৩৪জনের নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা ৮/১০জনকে আসামী করে রৌমারী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৮জনকে গ্রেফতার করেছে।
এই বিষয়ে রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লুৎফর রহমান ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকদের উদ্দেশে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, আপনাদের মতে চিকিৎসা খাতে ৪-৫ বিলিয়ন ডলারের একটা বাজার আছে। এই বাজার আপনারা নিতে পারেন না? কেন মানুষ চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে চায়? ভারত, ব্যাংককে এমন মানুষও চিকিৎসা নিতে যায়, যারা কখনও ঢাকায় আসেনি। তারা বিরক্ত ও নিরুপায় হয়ে যায়। তাদের যাওয়া বন্ধ করেন। এখানে সেবা দিলে মানুষ কখনোই বিদেশ যাবে না। যাওয়ার কোনও কারণই নাই। এই বাজার দখল করলে আপনাদের লাভ, দেশেরও লাভ।
শনিবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর শহীদ আবু সাইদ ইন্টারন্যাশনাল কনভনেশন সেন্টারে বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির অভিষেক ও বার্ষিক সাধারণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, অনেক চিকিৎসক অনর্থক টেস্ট দেন। আমার বাসার হেল্পিং হ্যান্ড, গরিব ছেলে, ঢাকার একটি হাসপাতালে ১৪টি টেস্ট দিয়েছে। সে রাগ করে বাড়ি চলে গেছে। সেখান থেকে টেস্ট ছাড়া ভালো হয়ে ফেরত এসেছে। ওখানে তার পরিচিত ডাক্তার ছিল। এই অত্যাচার বন্ধ হয় নাই। গরিব রোগীদের অনর্থক ১৪-১৫টা টেস্ট দেওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ করা দরকার। আরেকটা বিষয় হলো, নির্দিষ্ট ওষুধ কিনতে হবে, কেন? পৃথিবীতে কোন জায়গায় প্রাইভেট ক্লিনিকে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধির জন্য নির্দিষ্ট সময় থাকে ডাক্তারের। আপনারা কি ওষুধ কোম্পানির দালাল, এ দেশের বড় বড় হাসপাতালের ডাক্তাররা কি ওষুধ কোম্পানির মধ্যসত্ত্বভোগী? কোন জায়গায় নামান আপনারা নিজেদের!
আইন উপদেষ্টা বলেন, আরেকটা অভিযোগ করা হয়, টেস্টের রেজাল্ট ভুল। অনেক জায়গায় অনেক ভালো রেজাল্ট হয়, আমি খারাপ জায়গার কথা বলছি। একটা জেনারেল কমপ্লেইন যেটা আমার কাছে হৃদয়বিদারক লাগে, নার্সদের ব্যবহার খারাপ। নার্সদের মন খারাপ থাকে, হাসপাতালের কর্মচারীদের মন খারাপ থাকে, তারা ক্ষিপ্ত হয়ে থাকেন, ভালো সেবা দিতে চায় না। কেন চায় না– নার্সদের বেতন ১২ হাজার টাকা, আপনারা কি কম টাকা লাভ করেন? আপনারা যারা অনেকে হাসপাতালের মালিক আছেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি, আপনাদের কোটি টাকার বাগানবাড়ি থাকতে পারে, নার্সদের ভালো বেতন দিতে পারেন না? নার্স যদি ১২ হাজার টাকা বেতন পায়, তাহলে কি ভালো সেবা দেবে? সে তো বিরক্ত হয়ে থাকবে। আপনারা লাভ করেন কিন্তু ন্যায্যভাবে করেন।
তিনি বলেন, আজ মানুষ ভারত-থাইল্যান্ড যেতে চায় না। আপনাদের চিকিৎসা দেওয়ার সক্ষমতা আছে। আপনারা করোনাকালে প্রমাণ করেছেন। নিজের জীবন উৎসর্গ করে সেবা দিয়েছেন। কর্মীর যদি বেতন বাড়িয়ে দেন সামান্য লাভ থেকে কতো টাকা চলে যাবে? যদি ১০০ কোটি টাকা লাভ করেন, তাহলে ১০ শতাংশ কম লাভ হয়। ১০ শতাংশ কম লাভের বিনিময় সেই কর্মী যে সেবা দেবে সেটা দিয়ে পূরণ হয়ে যায়। আপনারা এদিকে একটু লক্ষ্য রাখবেন।
শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার রাতে দেওয়া এক শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি সকলের সুস্বাস্থ্য, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করেন।
শুভেচ্ছা বার্তায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, জন্মাষ্টমী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত পুণ্যতিথি ও গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব। এটি শুধু আনন্দ-উৎসবের দিন নয়, বরং ভ্রাতৃত্ব, সৌহার্দ্য ও শান্তির বাণী ছড়িয়ে দেওয়ার এক মহামিলন ক্ষেত্র।
তিনি বলেন, জন্মাষ্টমী সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়ের জন্য অবারিত উৎসবের প্রাঙ্গণ সৃষ্টি করে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, বাংলাদেশের সমাজ সংস্কৃতির মূল ভিত্তি হলো ধর্মীয় সম্প্রীতি। ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করেছে। আমরা সব ধর্মের মানুষের সমঅধিকারে বিশ্বাসী। হিংসা, বিদ্বেষ, অশান্তি, হানাহানি, বৈষম্য ও অবিচার দূর করে সমাজকে শান্তিময় করে তুলতে আমাদের সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব এ সময় দেশবাসীর প্রতি সম্প্রীতি, শান্তি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করার আহ্বান জানান।
ময়মনসিংহের ভালুকায় বিশেষ অভিযানে ৪৩ পিস ইয়াবাসহ চার মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় উপজেলার জামিরদিয়া এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
থানা সূত্রে জানা যায়, ভালুকা মডেল থানার একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে চারজনকে হাতেনাতে আটক করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন—জামিরদিয়ার মোঃ আবুল হোসেনের ছেলে মোঃ সজিব মিয়া (২৬), একই এলাকার মোঃ নাবিল হোসেন নবীর ছেলে মোঃ আলী হোসেন ওরফে নাজমুল (২৫), গাজীপুরের শ্রীপুরের উদয়খালী এলাকার মোঃ মফিজ উদ্দিনের ছেলে মোঃ রফিকুল ইসলাম (২৭) এবং ডুমবারিরচালা এলাকার মোঃ রফিকুল ইসলামের ছেলে মোঃ নাঈম খান (২৫)।
এসময় সময় তাদের কাছ থেকে ৪৩ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে ভালুকা মডেল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়।
ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, মাদক নির্মূলে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি। এ ধরনের অভিযান নিয়মিতভাবে চালানো হবে।
নওগাঁর আত্রাই নদীর একটি স্থানে কয়েক সেন্টিমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে ঢুকছে পানি।
শনিবার (১৬ আগস্ট) সকালে মান্দা উপজেলার কসব ইউনিয়নের তালপাতিলা এলাকায় এই বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যায়। এতে তালপাতিলা গ্রামসহ আশেপাশের চকবালু, চকরামপুরসহ কয়েকটি গ্রামে পানি প্রবেশ করে। পানি বন্দী হয়ে পড়েন কয়েকশ পরিবার।
স্থানীয়রা বলছে, এই একই স্থানে গেলো বছর ভেঙ্গে যায়। এরপর মাসখানেক আগে বেড়িবাঁধের এই অংশটুকু মেরামত করা হয়। কিন্তু নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আবার ভেঙে গেছে।
বেড়িবাঁধ ভাঙ্গার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শক করেছেন মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আখতার জাহান সাথী। এসময় তিনি উক্ত দ্রুত সময়ের মধ্যে বেড়িবাঁধ মেরামতের আশ্বাস দেন।
এদিকে দুপুর ১২টার দিকে দেওয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী আত্রাই নদীর মান্দা উপজেলার জোত বাজার পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ও রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে বিপদ সীমার ৩১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও নওগাঁর ছোট যমুনা ও পুনর্ভবা নদীর পানি বিদসীমার নিচে থাকলেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার উপরে প্রবাহিত হওযায় মান্দা উপজেলার চকরামপুর, উত্তর চকরামপুর, কয়লাবাড়ী, জোকাহাট, দ্বারিয়াপুর, নুরুল্লাবাদ, পারনুরুল্লাবাদ ও তালপাতিলা এলাকার অন্তত ১০টি বেড়িবাঁধকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ মূল বাধের লক্ষ্মীরামপুর, আয়াপুর, পাঁজরভাঙ্গা, পলাশবাড়ী, মিঠাপুর, নিখিরাপাড়া ও গোয়ালমান্দাসহ অন্তত ২০টি পয়েন্টকে উচ্চ ঝুঁকির তালিকায় রাখা হয়েছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষিমার্কেট পরিদর্শন করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি দেশব্যাপী নিষিদ্ধ পলিথিনের উৎপাদন, পরিবহন ও বিপণন রোধে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এই মার্কেট পরিদর্শন করেন ।
আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদপুরের কৃষিমার্কেটে যান। এরপর তিনি কৃষিমার্কেটের বিভিন্ন দোকান পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দোকানিদের পলিথিন ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করেন এবং পলিথিন ব্যবহারের ভয়াবহতা তুলে ধরেন ।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে পাথর কোয়ারি থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন ও লুটের ঘটনায় মামলা করেছে খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি)।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিএমডি মহাপরিচালক আনোয়ারুল হাবিব বাদী হয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানায় এই মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত ১৫০০ থেকে ২০০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, অজ্ঞাতনামা কিছু দুষ্কৃতিকারীর মাধ্যমে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময় থেকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার গেজেভুক্ত পাথর কোয়ারি থেকে অবৈধ বা অননুমোদিতভাবে সম্প্রতি কোটি কোটি টাকার পাথর লুট করা হয়েছে মর্মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, পাথর লুটপাটে অজ্ঞাত ১৫০০ থেকে ২০০০ ব্যক্তি জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে, যাদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়নি। সরকারের গেজেটভুক্ত কোয়ারি থেকে লুট বা চুরি এ ধরনের কর্মকাণ্ড খনি ও খনিজ সম্পদ (নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন) আইন, ১৯৯২-এর ধারা ৪(২) (ঞ) এবং খনি ও খনিজ সম্পদ বিধিমালা ২০১২-এর বিধি ৯৩ (১)-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টিগোচর হওয়ায় মৌখিক নির্দেশনায় খনি ও খনিজ সম্পদ (নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন) আইন, ১৯৯২ এর ৫ ধারা অপরাধে ও দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ৩৭৯ নম্বর ধারা ও ৪৩১ ধারায় অভিযোগ দায়ের করা প্রয়োজন। এ অবস্থায় সরকারি স্বার্থে ভোলাগঞ্জ কোয়ারি থেকে পাথর লুট ও চুরির ঘটনায় দায়ী অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে।
সম্প্রতি সিলেটের দুই পর্যটনকেন্দ্র কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথর ও গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং থেকে পাথর লুটের ঘটনা ঘটে। সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি করা এ ঘটনায় হাইকোর্ট পাথর উদ্ধার করে যথাস্থানে প্রতিস্থাপন এবং লুটেরাদের তালিকা আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেন।
এরপর সিলেটসহ সারা দেশে সাঁড়াশি অভিযানে নামে র্যাব, পুলিশসহ যৌথবাহিনী। গত তিন দিনে জাফলং ও সাদাপাথর থেকে লুট হওয়া পাথরের মধ্যে মোট ১ লাখ ৯ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এর মধ্যে অবশ্য নারায়ণগঞ্জ থেকে গত বৃহস্পতিবার রাতে উদ্ধার হওয়া ৪০ হাজার টন পাথরও রয়েছে।
সর্বশেষ সিলেট জেলার জৈন্তাপুর থানাধীন আসাম পাড়া এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ পাথর উদ্ধার করেছে র্যাব। র্যাব-৯-এর টহল দল, সাদা পোশাকধারী সদস্য এবং সিলেট জেলা প্রশাসনের সহায়তায় একটি যৌথ আভিযানিক দল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আসাম পাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে আনুমানিক ৭ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
মন্তব্য