ব্যাংক হিসাব খুলতে গেলে গ্রাহকদের কাছ থেকে ব্যাংকগুলো নিজেদের ইচ্ছামতো টাকা জমা রাখে। কোনো কোনো ব্যাংক গ্রাহককে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জমা রাখতে বাধ্য করে। এবার এ সীমা উঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।
এখন থেকে গ্রাহকরা ৫০০ টাকা দিয়ে সঞ্চয়ী হিসাব এবং চলতি হিসাব খোলার ক্ষেত্রে ১ হাজার টাকা জমা করে নিজ নিজ নামে ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবেন। তবে বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত হিসাব খোলার ক্ষেত্রে ন্যূনতম জমার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।
পাশাপাশি ব্যাংকের আমানত-ঋণে রক্ষণাবেক্ষণ চার্জ কমানোর নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করে সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বরাবর পাঠিয়েছে।
হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ ফি
সঞ্চয়ী হিসাবে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত গড় আমানত স্থিতির ক্ষেত্রে কোনো অ্যাকাউন্টস মেইনটেন্যান্স ফি নেই।
যদি কোনো সঞ্চয়ী হিসাবে গড় আমানত ১০ হাজার টাকা থেকে ২৫ হাজার টাকার মধ্যে হয় তাহলে ওই হিসাবধারীর কাছ থেকে ব্যাংক ষান্মাসিক ভিত্তিতে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা ফি নিতে পারে।
যদি গড় আমানত স্থিতি ২৫ হাজার টাকার বেশি, কিন্তু দুই লাখ টাকার কম হয়, তাহলে অ্যাকাউন্ট মেইনটেন্যান্স ফি ছিল ছয় মাসে ২০০ টাকা।
দুই লাখ টাকার বেশি কিন্তু ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত গড় আমানত হিসাবের ক্ষেত্রে এই ফি ছিল ছয় মাসে ২৫০ টাকা।
১০ লাখ টাকার বেশি গড় আমানত স্থিতির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ফি ছিল ছয় মাসে ৩০০ টাকা।
কিন্তু চলতি বছরের এপ্রিলে এক নির্দেশে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত গড় আমানতবিশিষ্ট সঞ্চয়ী হিসাবের বিপরীতে বছরে একবার ২৫০ টাকা অ্যাকাউন্ট মেইনটেন্যান্স ফি দিতে হবে বলে সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। যেটা ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর।
কিন্তু নতুন নির্দেশনায় ১০ লাখ টাকার বেশি গড় আমানত স্থিতির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ফি ছিল ছয় মাসে ৩০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
চলতি হিসাবে প্রতি ষান্মাসিকে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা ও স্পেশাল নোটিম ডিপোজিট হিসাবে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা আদায় করা যাবে।
বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত হিসাবে কোনো প্রকার হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ ফি আদায় করা যাবে না।
অন্য শাখায় হিসাব স্থানান্তর
একই ব্যাংকের অন্য শাখায় হিসাব স্থানান্তরের ক্ষেত্রে একই জেলায় সর্বোচ্চ ৫০ টাকা এবং অন্য জেলায় সর্বোচ্চ ১০০ টাকা ফি আদায় করা যাবে।
বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়ী হিসাবের ক্ষেত্রে অক্টিভেশন অফ ডরমেন্ট হিসাব বাবদ কোনো ফি আদায় করা যাবে না।
মেয়াদপূর্ব নগদায়ন ফি
বিভিন্ন মাসিক সঞ্চয়ী হিসাব (ডিপোজিট পেনশন স্কীম) বা এফডিআর বা অন্য কোন মেয়াদী আমানত মেয়াদপূর্তির পূর্বে নগদায়নের ক্ষেত্রে নগদায়ন ফি বা অনুরূপ ফি আরোপ করা যাবে না।
হিসাব বন্ধকরণ ফি
হিসাব বন্ধকরণ চার্জ হিসেবে সঞ্চয়ী হিসাবে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা, চলতি হিসাবে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা এবং এসএনডি হিসাবে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা আদায় করা যাবে।
তবে বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত হিসাবগুলো হিসাব বন্ধকরণ বাবদ কোনো ফি আদায় করা যাবে না।
চেক বই ইস্যু
বিভিন্ন ধরনের হিসাবের বিপরীতে চেক বই ইস্যুর ক্ষেত্রে প্রকৃত খরচের ভিত্তিতে চার্জ নির্ধারণ করতে হবে। চেক বই হারানোর ক্ষেত্রে নতুন চেক বই ইস্যু বাবদ প্রকৃত খরচ ছাড়া অতিরিক্ত চার্জ/প্রসেসিং ফি আদায় করা যাবে না।
অন্যান্য ফি
বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়ী ও চলতি হিসাবে আরোপিত ন্যূনতম ব্যালেন্স ফি, ইনসিডেন্টাল চার্জ, লেজার ফি, সার্ভিস চার্জ, কাউন্টার ট্রানজেকশন ফি বা অনুরূপ ফি আদায় করা যাবে না।
‘বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত হিসাব’ বলতে কৃষক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, দুস্থ, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন শ্রমিক, পথশিশু ও কর্মজীবী শিশুকিশোর, ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির সুবিধাভোগী, তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিক, পাদুকা ও চামড়াজাত পণ্য প্রস্তুতকারী ক্ষুদ্র কারখানার কারিগর এবং স্কুল ব্যাংকিং হিসাবধারীদের ব্যাংক হিসাবসহ সব ধরনের ১০, ৫০ ও ১০০ টাকায় খোলা হিসাবগুলোতে বলা হয়েছে।
ঋণ প্রদান
ঋণ প্রসেসিং ফি হিসেবে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের ক্ষেত্রে মোট মঞ্জুরীকৃত ঋণের সর্বোচ্চ দশমিক ৫০ শতাংশ আদায় করা যাবে, তবে এর পরিমাণ ১৫ হাজার টাকার বেশি হবে না।
৫০ লাখ টাকার অধিক পরিমাণ ঋণের ক্ষেত্রে এ হার হবে সর্বোচ্চ দশমিক ৩০ শতাংশ, তবে এর পরিমাণ ২০ হাজার টাকার বেশি হবে না।
ঋণ আবেদন ফি নামে কোনো ফি আদায় করা যাবে না।
কটেজ, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি এন্টারপ্রাইজ এবং কৃষি খাতে ঋণ পুনঃতফসিলিকরণ/পুনগর্ঠনের ক্ষেত্রে ঋণ প্রসেসিং/পুনঃতফসিলিকরণ/পুনর্গঠন ফি নামে কোন ফি/চার্জ/কমিশন আদায় করা যাবে না। তবে সিএমএসএমই ও কৃষি খাত ছাড়া অন্যান্য খাতে ঋণ পুনঃতফসিলিকরণ/পুনগর্ঠনের ক্ষেত্রে পুনঃতফসিলিকরণ/পুনগর্ঠন ফি বাবদ সর্বোচ্চ দশমিক ২৫ শতাংশ আদায় করা যাবে, তবে এর পরিমাণ ১০ হাজার টাকার বেশি হবে না।
ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে ডকুমেন্টেশন ফি, সিআইবি চার্জ, স্ট্যাম্প চাজর্ এবং আইনী ও জামানত মূল্যায়ন ফি প্রকৃত ব্যয়ের ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে।
রপ্তানি ঋণসহ যে কোনো ধরনের ঋণের ক্ষেত্রে সুদ/মুনাফা হারের অতিরিক্ত কোনো সার্ভিস চার্জ, ঋণ ব্যবস্থাপনা ফি, মনিটরিং/সুপারভিশন চার্জ, ঝুঁকি প্রিমিয়াম বা অনুরূপ অন্য যে কোন নামে অতিরিক্ত কোন চার্জ/ ফি/কমিশন আরোপ/আদায় করা যাবে না।
গ্রাহক কর্তৃক গৃহীত ঋণ নির্দিষ্ট মেয়াদের পূর্বে পরিশোধের ক্ষেত্রে বকেয়া ঋণের সর্বোচ্চ দশমিক ৫০ শতাংশ বা অনুরূপ ফি আদায় করা যাবে। তবে কটেজ, মাইক্রো ও ক্ষুদ্র খাতে প্রদত্ত ঋণ এবং চলতি ঋণ বা ডিমান্ড লোনের ক্ষেত্রে মেয়াদপূর্তির পূর্বে সমন্বয়ের ক্ষেত্রে ফি আদায় করা যাবে না।
স্থানীয় ও বৈদেশিক বাণিজ্য/রেমিট্যান্স
শতভাগ নগদ মার্জিনে এলসি খোলার কমিশন প্রতি ত্রৈমাসিকে সর্বোচ্চ দশমিক ২৫ শতাংশ, ডেফার্ড/ইউজান্স এলসি খোলার কমিশন প্রতি ত্রৈমাসিকে দশমিক ৫০ শতাংশ এবং সাইট ও ব্যাক টু ব্যাকসহ অন্যান্য এলসি খোলার কমিশন প্রতি ত্রৈমাসিকে দশমিক ৪০ শতাংশ নির্ধারণ করা যাবে।
এলসি ট্রান্সমিশন, অ্যামেন্ডমেন্ট, কনফারমেশন, ক্যানসেলেশন, ফরেন করেসপন্ডেন্ট চার্জের ক্ষেত্রে মেইলিং, কুরিয়ার, টেলেক্স, সুইফট ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রকৃত ব্যয়ের ভিত্তিতে চার্জ নির্ধারণ করা যাবে।
এলসি এডভাইসিং, অ্যামেন্ডমেন্ট ও ট্রান্সফার চার্জ বাবদ ৭৫০ টাকা নির্ধারণ করা যাবে।
এলসি অ্যাকসেপটেন্স চার্জ প্রতি ত্রৈমাসিকে সর্বোচ্চ দশমিক ৪০ শতাংশ এবং এলসি কনফারমেশন চার্জ প্রতি ত্রৈমাসিকে দশমিক ২০ শতাংশ নির্ধারণ করা যাবে।
ফরেন করেসপন্ডেন্ট চার্জ (স্থানীয় অংশ), ডাটা ম্যাক্স, হ্যান্ডেলিং চার্জ, কপি ডকুমেন্ট এনডোর্সমেন্ট চার্জ, এলসি বাতিল কিংবা মেয়াদোত্তীর্ণ অব্যবহৃত এলসি চার্জ আদায় করা যাবে না।
রপ্তানি বিল নেগোসিয়েশন কমিশন ও রপ্তানি বিল কালেকশন কমিশন সর্বোচ্চ দশমিক ১৫ শতাংশ নির্ধারিত হবে। তবে রপ্তানি বিল নেগোসিয়েশন ও কালেকশনের ক্ষেত্রে যেখানে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ের মাধ্যমে এক্সচেঞ্জ গেইন হয় সেক্ষেত্রে কমিশন বাবদ ৫০০ টাকার বেশি আদায় করা যাবে না।
ব্যাক টু ব্যাক এলসি সার্টিফিকেট ইস্যু, সিএন্ডএফ সার্টিফিকেট ইস্যু, রপ্তানি মূল্য আদায়ের সার্টিফিকেট ইস্যুর চার্জ ৫০০ টাকার অধিক আদায় করা যাবে না।
ব্যাংক গ্যারান্টি প্রদানের ক্ষেত্রে কমিশন বাবদ ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে সর্বোচ্চ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং ন্যূনতম ১ হাজার টাকা নির্ধারণ করা যাবে।
এলসি খোলা/ অ্যাকসেপটেন্স/ কনফারমেশন/ব্যাংক গ্যারান্টি এক ত্রৈমাসিক বা এর চেয়ে কম সময়ের জন্য হলে সেক্ষেত্রে ব্যাংক নিজস্ব বিবেচনায় সর্বোচ্চ এক ত্রৈমাসিকের সমপরিমাণ চার্জ/কমিশন আদায় করতে পারবে। তবে, মেয়াদ যদি এক ত্রৈমাসিকের চেয়ে বেশি সময়ের জন্য হয় সেক্ষেত্রে যে তারিখে মেয়াদ পূর্ণ হবে শুধুমাত্র ওই নির্ধারিত তারিখ পর্যন্ত সময়কালের জন্য চার্জ/কমিশন আদায় করা যাবে।
বৈদেশিক মুদ্রায় ডিমান্ড ড্রাফট (উউ), টেলিগ্রাফিক, মেইল ট্রান্সফার প্রভৃতি ইন্সট্রুমেন্ট ইস্যুর ক্ষেত্রে অনধিক এক লাখ টাকা সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা, একলাখ এক হতে অনধিক ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২০০ টাকা, ৫ লাখ ১ টাকা হতে অনধিক ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা এবং ১০ লাখ টাকার অধিক সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা চার্জ/ফি আদায় করা যাবে।
ইন্সট্রুমেন্টসমূহ বাতিলের ক্ষেত্রে প্রতিবার সর্বোচ্চ ২০০ টাকা চার্জ/ফি আদায় করা যাবে।
হিসাব সংক্রান্ত ও অন্যান্য
স্থিতি নিশ্চিতকরণ সনদ ফি ষান্মাসিক ও বাৎসরিক ভিত্তিতে অর্থাৎ বছরে ২ বার ব্যাংকের আমানত ও ঋণ হিসাবধারী প্রত্যেক গ্রাহককে হিসাবের স্থিতি নিশ্চিতকরণ সনদ (হিসাব বিবরণীসহ) প্রদানের জন্য কোন চার্জ/ফি আদায় করা যাবে না। তবে গ্রাহককে বছরে ২ বারের বেশি এ সনদ গ্রহণ করতে হলে সে ক্ষেত্রে প্রতিবার সর্বোচ্চ ১০০ টাকা চার্জ/ফি আদায় করা যাবে।
স্বচ্ছলতা সনদ প্রদানের ক্ষেত্রে প্রতিবার সর্বোচ্চ ২০০ টাকা চার্জ/ফি আদায় করা যাবে।
চেক ফেরতের ক্ষেত্রে প্রতিবার সর্বোচ্চ ৫০ টাকা চার্জ আদায় করা যাবে।
বিও হিসাব খোলার ক্ষেত্রে বিও সনদ প্রদানের চার্জ সর্বোচ্চ ১০০ টাকা আদায় করা যাবে।
গ্রাহক কর্তৃক হিসাব/চেকে প্রদত্ত অর্থ প্রদান নির্দেশনা স্থগিতকরণ চার্জ প্রতিবার অনুরোধের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা এবং অর্থ প্রদান নির্দেশনা স্থগিতকরণ বাতিলের ক্ষেত্রে প্রতিবার অনুরোধে সর্বোচ্চ ৫০ টাকা আদায় করা যাবে।
পে-অর্ডার ইস্যুর ক্ষেত্রে অনধিক ১ হাজার টাকা পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২০ টাকা, ১,০০১ হতে অনধিক ১ লাখ টাকা পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৫০ টাকা এবং ১ লাখ টাকার অধিক পরিমাণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা চার্জ/ফি আদায় করা যাবে। পে-অর্ডার বাতিলের ক্ষেত্রে প্রতিবার সর্বোচ্চ ৫০ টাকা চার্জ/ফি আদায় করা যাবে।
ডিমান্ড ড্রাফট, টেলিগ্রাফিক ট্রান্সফার, মেইল ট্রান্সফার ইন্সন্ট্রুমেন্ট ইস্যুর ক্ষেত্রে অনধিক ১ হাজার টাকা পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২০ টাকা, ১,০০১ হতে অনধিক ১,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৫০ টাকা, ১,০০,০০১ হতে অনধিক ৫,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১০০ টাকা, ৫,০০,০০১ হতে অনধিক ১০,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২০০ টাকা এবং ১০,০০,০০০ টাকার অধিক পরিমাণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা চাজর্/ফি আদায় করা যাবে। ইন্সন্ট্রুমেন্টসমূহ বাতিলের ক্ষেত্রে প্রতিবার সর্বোচ্চ ৫০ টাকা চার্জ/ফি আদায় করা যাবে।
সিডিউল অব চাজের্স এর সর্বশেষ হালনাগাদকৃত পূর্ণ তালিকা স্ব স্ব ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়, সকল শাখা, উপশাখা ও এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দর্শনীয় স্থানে/নোটিশ বোর্ডে এবং ব্যাংকের ওয়েবসাইটের হোম পেজ এ দিতে হবে।
ঘোষিত/প্রকাশিত তালিকা বহির্ভূত কোনো চার্জ/ফি/কমিশন আরোপ করা যাবে না।
প্রতিবছর ৩০ জুন ও ৩১ ডিসেম্বর তারিখের মধ্যে (ষান্মাসিক ভিত্তিতে) পরবর্তী ছয় মাসের (জুলাই-ডিসেম্বর ও জানুয়ারি-জুন) ঘোষিত চার্জ/ফি/কমিশনের তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রেরণ করতে হবে।
চার্জ/ফি/কমিশনের কোনো পরিবর্তন হলে আবশ্যিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগকে জানাতে হবে।
কানাডা থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ১ আগস্ট থেকে এ শুল্ক কার্যকর হবে।
বৃহস্পতিবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নিকে পাঠানো এক চিঠিতে তিনি এই কথা জানান।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, সোমবার থেকে এ পর্যন্ত ট্রাম্পের এমন ধরনের ২০টিরও বেশি চিঠি গেছে বিশ্বের নানা দেশের নেতার কাছে। চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের অংশ হিসেবেই এসব পদক্ষেপ নিচ্ছেন তিনি।
কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে একটি বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আগামী ২১ জুলাইয়ের মধ্যে সমঝোতায় পৌঁছানোর লক্ষ্য রয়েছে। তবে ট্রাম্পের সর্বশেষ এই হুমকিতে আলোচনার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
একইসঙ্গে কানাডা ও মেক্সিকো উভয়ই ট্রাম্পকে সন্তুষ্ট করতে চেষ্টা করছে, যাতে উত্তর আমেরিকার তিন দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (ইউএসএমসিএ) আবার সঠিক পথে ফিরে আসে।
২০২০ সালের জুলাইয়ে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে পুরোনো (নাফটা) বাতিল করে ইউএসএমসিএ চালু করা হয়। ২০২৬ সালের জুলাইয়ে এর পরবর্তী পর্যালোচনা হওয়ার কথা। তবে দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে ট্রাম্প নানা দেশে শুল্ক আরোপ করে পর্যালোচনার প্রক্রিয়াই অস্থির করে তুলেছেন।
শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র ২৫ শতাংশ শুল্ক বসায় কানাডা ও মেক্সিকোর বহু পণ্যের ওপর। কানাডার জ্বালানির ক্ষেত্রে অবশ্য কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়।
বাণিজ্যের পাশাপাশি অবৈধ অভিবাসন ও মাদক পাচার ঠেকাতে যথেষ্ট উদ্যোগ না নেওয়ার অভিযোগে প্রতিবেশী এ দুই দেশকে একাধিকবার সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প।
তবে পরবর্তীতে ইউএসএমসিএ চুক্তির আওতায় থাকা পণ্যের ক্ষেত্রে তিনি ছাড় দেন, যার ফলে বড় পরিসরের পণ্য শুল্কমুক্ত হয়।
বৃহস্পতিবারের চিঠিটি এমন এক সময় এলো, যখন ট্রাম্প ও কার্নির মধ্যে সম্পর্ক কিছুটা উষ্ণ হচ্ছিল। এমনকি এর আগে কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য বানানো নিয়েও মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প।
গত ৬ মে কানাডার প্রধানমন্ত্রী হোয়াইট হাউসে এসে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন। এর পরের মাসে কানাডায় অনুষ্ঠিত জি-৭ সম্মেলনেও আবার দেখা হয় দুই নেতার। সম্মেলনে ট্রাম্পকে বাণিজ্যযুদ্ধ থেকে সরে আসার আহ্বান জানান বিশ্বনেতারা।
এ ছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর কানাডা যে কর আরোপ করেছিল, তা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেয়। এর ফলে ট্রাম্প আলোচনার টেবিল ত্যাগ করলেও পরে আবার আলোচনা শুরুর পথ খুলে যায়।
অন্যদিকে, এনবিসি’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, যেসব দেশকে এখনো এ ধরনের চিঠি পাঠানো হয়নি, তাদের ওপরও ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের বিষয়টি বিবেচনায় আছে। সেটিও কার্যকর হবে ১ আগস্ট থেকে।
তিনি জানান, ব্রাজিলের জন্য সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে, যদি এর আগেই কোনো সমঝোতা না হয়।
এনবিসি’কে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭ টি দেশের উদ্দেশে চিঠি পাঠানো হবে ‘আজ বা আগামীকাল (শুক্রবার)’।
এদিকে, ট্রাম্পের হুমকির পর বৃহস্পতিবার ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা বলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী। তবে দেশটি পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনা করছে।
ট্রাম্পের পাঠানো চিঠিতে ব্রাজিলের সাবেক ডানপন্থি প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর প্রতি আচরণ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে।
খুলনা অঞ্চলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পাট, পাটজাত পণ্য, চিংড়ি, সবজি ও ফলমূল রপ্তানি করে আয় হয়েছে ৫ হাজার ৯৭১ কোটি ৪০ লাখ টাকা।রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) দেওয়া তথ্যমতে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে বিদেশে নতুন বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হওয়ায় খুলনা থেকে পাট, পাটজাত পণ্য এবং চিংড়ি রপ্তানি বেড়েছে।
ইপিবি আরও জানায়, বিশ্ব অর্থনীতির উন্নতির কারণেও রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত খুলনা অঞ্চলের রপ্তানি আয় ছিল ৫ হাজার ৩৭৬ কোটি ১৭ লাখ টাকা। আর চলতি অর্থবছরে একই সময়ে আয় দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৯৭১ কোটি টাকায়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট ১৩ হাজার ১৯ দশমিক ৮০ টন হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি করে আয় হয়েছে ১ হাজার ৯৯০ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
এছাড়া কুচিয়া, কাঁকড়া, সবজি, কাঁচা পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানিও বেড়েছে।
মাসভিত্তিক রপ্তানি আয়ের হিসাবে দেখা যায়, খুলনা অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা জুলাইয়ে ৫১৭ কোটি ৬৮ লাখ, আগস্টে ৪৪৭ কোটি ৫৩ লাখ, সেপ্টেম্বরে ৬০১ কোটি ৯৮ লাখ, অক্টোবরে ৫৬৬ কোটি ৯৬ লাখ, নভেম্বরে ৫২৩ কোটি ১৩ লাখ, ডিসেম্বরে ৪৫৭ কোটি ৩৭ লাখ, জানুয়ারিতে ৪২৩ কোটি ৬৫ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ৪০২ কোটি ৫২ লাখ, মার্চে ৪৩৮ কোটি ৯১ লাখ, এপ্রিলে ৫৫০ কোটি ৮৭ লাখ, মে মাসে ৬১১ কোটি ৬৯ লাখ এবং ২০২৫ সালের জুনে ৪২৯ কোটি ১১ লাখ টাকার পণ্য রপ্তানি করেছেন।
খুলনা ইপিবির পরিচালক জিনাত আরা জানান, বৈশ্বিক অর্থনীতির উন্নতি, বৈদেশিক মুদ্রার স্থিতিশীলতা এবং বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ফিরে আসায় রপ্তানি বেড়েছে।
তিনি বলেন, ‘পূর্ববর্তী সরকারের আমলে সরকারি পাটকল ও চিংড়ি কারখানা বন্ধসহ নানা কারণে খুলনা অঞ্চলের রপ্তানি কমে গিয়েছিল।’
পাট ও বস্ত্র উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন সম্প্রতি খুলনা সফর করেছেন উল্লেখ করে তিনি জানান, খুলনা অঞ্চল পাট, চিংড়ি ও অন্যান্য পণ্য রপ্তানিতে তার আগের গৌরব ফিরে পাবে। সরকার বন্ধ থাকা পাটকলগুলো বেসরকারি খাতে ইজারা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে, যাতে সেগুলো পুনরায় চালু করা যায়।
বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএফইএ)’র সাবেক সহ-সভাপতি মো. আবদুল বাকী বাসসকে বলেন, ‘খুলনার ব্যবসায়ীরা মনে করছেন দেশে অনুকূল ব্যবসায়িক পরিবেশের কারণে চিংড়ি, পাট, পাটজাত পণ্য ও অন্যান্য পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
তিনি আরও জানান, খুলনায় মোট ৬৩টি চিংড়ি প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা থাকলেও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে উৎপাদন ও বৈদেশিক চাহিদা কমে যাওয়ায় ৩৩টি কারখানা বন্ধ হয়ে যায়।
যোগাযোগ করা হলে পাট ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ পাট অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএ)-এর সাবেক সহ-সভাপতি ও পাট ব্যবসায়ী শরীফ ফজলুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববাজারে কাঁচা পাট ও পাটজাত পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। খুলনায় এর বড় সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ সরকারের নীতির তীব্র সমালোচনা করে তিনি অভিযোগ করেছেন, পতিত সরকার দেশের পাট খাত ধ্বংস করে দিয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ আজ বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিরীক্ষক এবং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের আর্থিক প্রতিবেদন ও নিরীক্ষায় আরও স্বচ্ছতা ও সততা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগকারীরা যখন একটি দেশের ব্যবসা পরিবেশ সম্পর্কে স্পষ্ট ও নির্ভরযোগ্য তথ্য পান, তখন তারা সেই অর্থনীতিতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হন।’
রাজধানীর একটি হোটেলে ‘অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড অডিটিং সামিট’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিশ্বব্যাংক এবং ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (এফআরসি) যৌথভাবে ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক শাসনে এফআরসি’র ভূমিকা’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ. মনসুর, ঢাকাস্থ বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর সৌলেমানে কুলিবালি এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।
অর্থসচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এবং ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (এফআরসি) চেয়ারম্যান ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন ভূঁইয়া মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে নিরীক্ষা ও হিসাবরক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে যারা এসব কাজে জড়িত তাদের স্বচ্ছতা ও সততা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ।
ড. আহসান এইচ. মনসুর বলেন, দেশীয় ও বিদেশি উভয় বিনিয়োগকারীর আস্থা অর্জনের জন্য ব্যাংকগুলোর নিরীক্ষা প্রতিবেদন স্বচ্ছভাবে এবং যথাযথ তথ্যসহ উপস্থাপন করা উচিত।
তিনি বলেন, একটি সুদৃঢ়, সহনশীল ও ভবিষ্যতমুখী আর্থিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে দেশের সব ব্যাংকে রিস্ক-বেসড সুপারভিশন (আরবিএস) চালু করা হবে।
মূল প্রবন্ধে এফআরসি চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, বাংলাদেশ যখন একটি উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশের পথে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন সুসংগঠিত প্রতিষ্ঠান ও সুশাসন কাঠামোর প্রয়োজনীয়তা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি।
তিনি বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল একটি সুস্পষ্ট ম্যান্ডেট নিয়ে কাজ করছে যা আর্থিক প্রতিবেদন, নিরীক্ষা, মূল্যায়ন এবং সঠিক মানদণ্ডে সততা, শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে।’
তিনি আরও বলেন, এফআরসি চায় সব পক্ষ যেন পূর্ণ প্রকাশসহ সত্য আর্থিক প্রতিবেদন প্রস্তুত করে, যাতে অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা বজায় থাকে এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) প্রকৃত ও কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব—আয়কর ও ভ্যাট—সংগ্রহ করতে পারে।
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘ভুয়া বা মিথ্যা আর্থিক প্রতিবেদনই কর ফাঁকি ও কর এড়ানোর প্রধান হাতিয়ার।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের রপ্তানি বৃদ্ধির কারণে ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে বিশ্ব বাণিজ্য প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ডলার বেড়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
জেনেভা থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন (আঙ্কটাড) অর্থনীতিবিদ আলেসান্দ্রো নিকিতা এএফপিকে জানিয়েছেন যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর শুল্ক আরোপের মাধ্যমে শুরু হওয়া বাণিজ্য যুদ্ধ সত্ত্বেও ২০২৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধের তুলনায় বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রায় ১.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তবে ‘নীতিগত অনিশ্চয়তা, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি হ্রাসের ইঙ্গিত, এইসব বিষয় ২০২৫ সালের দ্বিতীয়ার্ধে বাণিজ্যের জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে বলে ওই বিবৃতিতে জানিয়েছে আঙ্কটাড।
নিকিতা বলেন, মার্কিন কোম্পানিগুলো ৫ এপ্রিল শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগে পণ্যের মজুত করে ফেলায় আমদানির বড় এই বৃদ্ধিটি ঘটেছে।
আঙ্কটাডর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সেবা বাণিজ্যই ছিল প্রবৃদ্ধির মূল চালিকা শক্তি।
২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রায় ১.৫ শতাংশ বেড়েছে এবং দ্বিতীয় প্রান্তিকে তা ২ শতাংশে পৌঁছেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে উন্নত অর্থনীতি উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় ভালো করেছে। যা সাম্প্রতিক সময়ে গ্লোবাল সাউথের পক্ষে থাকা প্রবণতাকে উল্টে দিয়েছে।’
এই পরিবর্তনের পেছনে ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিতে ১৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের রপ্তানিতে ছয় শতাংশ প্রবৃদ্ধি ভূমিকা রেখেছে।’ তবে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে আমদানি দুই শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ট্রাম্প তার ব্যাপক শুল্ক আরোপের কারণ হিসাবে যে বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা উল্লেখ করেছেন, তা ‘গত চার প্রান্তিকে আরও গভীর হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বৃহত্তর ঘাটতি রয়েছে এবং চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ক্রমবর্ধমান উদ্বৃত্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়ামসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক বাণিজ্য বিভাজনের ঝুঁকি বাড়িয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
তবে আঙ্কটাড জানিয়েছে এখনও স্থিতিস্থাপকতার লক্ষণ রয়ে গেছে। যদিও তা ‘নীতিগত স্পষ্টতা, ভূ-অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সরবরাহ লাইনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতার ওপর নির্ভর করবে।
হঠাৎ করে নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে একগুচ্ছ ‘শুল্ক চিঠি’ প্রকাশ করে বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন করে আলোড়ন তুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সোমবার (০৭ জুলাই) স্থানীয় সময় দুপুরে প্রকাশিত এসব চিঠিতে জানানো হয়, আগামী ১ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের ওপর নতুন আমদানি শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছে।
চিঠি প্রকাশের পরপরই এর প্রভাব পড়ে বিশ্ববাজারে। যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে মাত্র এক ঘণ্টার ব্যবধানে দেখা দেয় বড় ধস। ডাও জোন্স সূচক পড়ে যায় ৪২২ পয়েন্ট, আর নাসডাক ও এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক যথাক্রমে ০.৯ শতাংশ ও ০.৮ শতাংশ কমে যায়।
বিশ্ববাজারেও এর প্রভাব পড়ে। টয়োটা, নিসান, হোন্ডা, এলজি ও এসকে টেলিকম-এর মতো কোম্পানির শেয়ারের দাম তাৎক্ষণিকভাবে কমে যায়। কিছু কিছু কোম্পানির শেয়ার ৭ শতাংশ পর্যন্ত দরপতনের মুখে পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ কৌশলবিদ রস মেফিল্ড সিএনএনকে বলেন, প্রস্তাবিত শুল্কের হার বাজারের প্রত্যাশার চেয়ে বেশি হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা ব্যাপকভাবে শেয়ার বিক্রি শুরু করেন।
শুল্ক ঘোষণার প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি বন্ডের বাজারেও চাপ পড়ে। ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের সুদহার বেড়ে ৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ এবং ৩০ বছর মেয়াদি বন্ডের হার বেড়ে ৪ দশমিক ৯২ শতাংশে দাঁড়ায়।
ট্রাম্প আরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ব্রিকস জোটের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখা দেশগুলোর ওপরও অতিরিক্ত ১০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। তার দাবি, এসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী নীতি অনুসরণ করছে এবং তার শুল্কনীতির অযৌক্তিক সমালোচনা করছে।
অন্যদিকে, ট্রাম্পের ঘোষণার পর ইউএস ডলার ইনডেক্স বেড়েছে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ। এর ফলে জাপানি ইয়েন, দক্ষিণ কোরীয় ওয়ান ও দক্ষিণ আফ্রিকান র্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি প্রধান মুদ্রা ডলারের তুলনায় দুর্বল হয়ে পড়ে।
তবে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সকাল থেকে এশিয়ার কিছু শেয়ারবাজারে সাময়িক চাঙাভাব দেখা গেছে, এবং সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও কিছুটা উত্থান দেখা দিতে শুরু করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি শুধু বাণিজ্য সম্পর্কেই নয়, বৈশ্বিক অর্থনীতির ভারসাম্যেও বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা নিষ্পত্তিহীন পণ্য দ্রুত নিলাম, বিলিবন্দেজ বা ধ্বংসের মাধ্যমে সরানোর জন্য একটি ‘নিলাম কমিটি’ গঠন করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বিশেষ আদেশে গঠিত এ কমিটি আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত যানবাহন ব্যতীত ফেলে রাখা সব পণ্য নিষ্পত্তির মাধ্যমে সরিয়ে ইয়ার্ড খালি করবে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ শফিউদ্দিন এক অফিস আদেশে জানান, নিলাম কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ তফছির উদ্দিন ভূঁঞা। সদস্য হিসেবে রয়েছেন অতিরিক্ত কমিশনার মো. রুহুল আমিনসহ কাস্টম হাউসের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা। সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন নিলাম শাখার উপ বা সহকারী কমিশনার।
অফিস আদেশে বলা হয়েছে, কাস্টমস আইন মেনে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। দীর্ঘদিন পড়ে থাকা অখালাসকৃত, বাজেয়াপ্ত অথবা অনিষ্পন্ন পণ্য দ্রুত নিষ্পত্তির মাধ্যমে বন্দর কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখা এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয়রোধই এ উদ্যোগের মূল লক্ষ্য। এই কমিটি দ্রুত নিলাম ও ধ্বংস কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে কন্টেইনার জট নিরসন, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং পণ্যের প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
শেয়ারট্রিপ ও মনিটরের যৌথ উদ্যোগে এয়ারলাইন অব দ্য ইয়ার-২০২৪ শীর্ষক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে গোল্ড পদকসহ মোট ৫ টি পদক লাভ করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। দীর্ঘ দূরত্বের আন্তর্জাতিক পথে ফ্লাইট পরিচালনা, ইকোনমি ক্লাসে শ্রেষ্ঠ ইনফ্লাইট খাবার, বাংলাদেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় এয়ারলাইন্স ব্র্যান্ডস ক্যাটাগরিতে গোল্ড পদক পেয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এছাড়াও বেস্ট ইম্প্রুভড এয়ারলাইন্স ও অভ্যন্তরীণ পথে ফ্লাইট পরিচালনায় যথাক্রমে সিলভার ও ব্রোঞ্জ পদক লাভ করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
মন্তব্য