২০১০ সালের মহাধসের পর সাড়ে ১০ বছরে সর্বোচ্চ লেনদেনে পরপর দুই দিনে রেকর্ড হলো ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে।
২০১০ সালে মহাধসের আগে ৫ জানুয়ারি লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৭১০ কোটি টাকা।
এর সাড়ে ১০ বছর পর গত রোববার লেনদেন হয় ২ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা।
বুধবার ইতিহাসের সর্বোচ্চ সেই লেনদেন ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা তৈরি হলেও শেষ ঘণ্টায় গতি কিছুটা কমে হয় ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। যা সর্বকালের সর্বোচ্চ লেনদেনের চেয়ে মাত্র ১০ কোটি টাকা কম।
এদিন দাম বেড়েছে ২০৮টি কোম্পানির, কমেছে ১২৪টির। আর অপরিবর্তিত ছিল ৩৭টির। বেশির ভাগ শেয়ারের দাম বৃদ্ধির দিন সূচকও বেড়েছে ৩১ পয়েন্ট, যদিও দিনের শুরুতে এর চেয়ে বেশি বৃদ্ধির ইঙ্গিত ছিল।
সকালে লেনদেনের শুরুতেই উত্থান ঘটা পুঁজিবাজারে একপর্যায়ে সূচক ৭৩ পয়েন্ট বেড়েছিল। তবে শেষ দেড় ঘণ্টায় ৩১ পয়েন্ট ও শেষ আধা ঘণ্টায় ১৮ পয়েন্ট হারিয়ে শেষ পর্যন্ত সূচক দাঁড়ায় ৬০৫৫ পয়েন্টে।
২০১৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির পর সূচকের এটি সর্বোচ্চ অবস্থান। সেদিন সূচক ছিল ৬ হাজার ৫০ পয়েন্ট।
গত রোববারের মতোই লেনদেন সাড়ে ১০ বছরের মধ্যে নতুন উচ্চতায় পৌঁছার দিন পুঁজিবাজারে উচ্ছ্বাস আর হতাশার মিশ্র অনুভূতি দেখা গেছে।
টানা দ্বিতীয় সপ্তাহের মতো ব্যাংক খাত দর হারাচ্ছে। দুই সপ্তাহে দুই দিন ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েও পরের দিন আবার দর হারিয়েছে বাজার।
রোববার সূচক পড়ে যাওয়ায় দেখা দেয় উৎকণ্ঠা। কারণ, বাজার সংশোধনের দিন বিক্রয় চাপ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নেতিবাচকতার ইঙ্গিত বলে ধারণা করা হয়।
পরের দুই দিনে বাজারে বড় ধরনের পতন হয়। সেই সঙ্গে কমে আসে লেনদেন। তবে সূচক পড়ার দিন লেনদেন কমা আবার ইতিবাচকতার ইঙ্গিত বহন করে বাজারে। এটা বোঝা যায় যে, শেয়ারধারীরা এই দামে শেয়ার বিক্রি করতে রাজি না।
সোমবার ১৫ পয়েন্ট আর পরদিন সূচক পড়ে ৬২ পয়েন্ট। তবে লেনদেন থাকে ২ হাজার কোটি টাকার ওপরেই।
তবে তৃতীয় দিন মঙ্গলবারে এসে ঘুড়ে দাঁড়ায় পুঁজিবাজার। সেদিন উত্থান ঘটে ৪৭ পয়েন্ট। আর লেনদেন আরও কিছুটা কমে। তবে সেদিনও তা থাকে ২ হাজার কোটির ঘরে।
বুধবার সকাল থেকেই লেনদেনে রেকর্ডের ইঙ্গিত ছিল। প্রথম এক ঘণ্টা ১০ মিনিটেই লেনদেন ১ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। পরের সোয়া এক ঘণ্টায় লেনদেনের গতি কিছুটা কমলেও ২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায় চার ঘণ্টাতেই। শেষ বেলাতে টান টান উত্তেজনাতেও একটুর জন্য রেকর্ডের আগেই থেমে যায় পুঁজিবাজার।
শুরু থেকেই বাজারে ছিল ঊর্ধ্বগতি। ব্যাংক, বিমা, বস্ত্র, প্রকৌশল, খাদ্যসহ প্রধান খাতগুলোর শেয়ার মূল্য বাড়তে থাকে। তবে শেষ আধা ঘণ্টায় আবার এসব শেয়ারের কিছুটা দরপতন ঘটে। বিশেষ করে ব্যাংকের শেয়ার আবার দর হারানোর পরিপ্রেক্ষিতে সূচকের উত্থান অনেকটাই কমে যায়।
ব্যাংকের দর পতনের দিন অবশ্য শেয়ারের দাম বেড়েছে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক খাতে। এই খাতেরও একটি কোম্পানি দর বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে।
বিমা খাতে দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা। কিছু কোম্পানির শেয়ার মূল্য বেশ ভালো পরিমাণে বাড়লেও কিছু কোম্পানির আবার দর পতন হয়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে।
তবে গত টানা দুই সপ্তাহের মতো লেনদেনের রাজা থাকে এই খাতই।
এদিন বাজারে ব্যাপকভাবে দর বেড়েছে বস্ত্র খাতের। এই খাতের পাঁচটি কোম্পানির দাম বেড়েছে এক দিনে যত বাড়া সম্ভব ততই।
দীর্ঘদিন ধরে ঘুমিয়ে থাকা প্রকৌশল খাতও অনেকটাই জেগে উঠেছে। এই খাতেরও দুটি কোম্পানির দর বেড়েছে এক দিনে যতটা বাড়া সম্ভব ততটাই। আরও দুটি কোম্পানি দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমার কাছাকাছি লেনদেন হয়।
উত্থান হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে। খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, ওষুধ ও রসায়ন খাতও আড়মোড়া ভাঙার ইঙ্গিত দিয়েছে।
ব্যাংক খাত পতনেই
এই খাতে লেনদেন হয়েছে ২০২ কোটি টাকা। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে নয়টির। দর কমেছে ১৭টির। পাল্টায়নি পাঁচটির।
সবচেয়ে বেশি দর কমছে লভ্যাংশ ঘোষণা করা ইউসিবিএলের দর। ব্যাংকটি ২০২০ সালের জন্য শেয়ারধারীদের ৫০ পয়সা নগদ ও প্রতি ২০টি শেয়ারে একটি বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণার পর শেয়ারের দাম কমেছে ৭০ পয়সা বা ৪.০৫ শতাংশ।
শেয়ার দর ১৭ টাকা ৩০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ১৬ টাকা ৬০ পয়সা।
এবি ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ৩ দশমিক ৪২ শতাংশ। শেয়ার দর ১৪ টাকা ৬০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ১৪ টাকা ১০ পয়সা।
প্রাইম ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ৩ দশমিক ০৭ শতাংশ। শেয়ার দর ২২ টাকা ৮০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ২২ টাকা ১০ পয়সা।
ওয়ান ব্যাংকের দর ১৩ টাকা ৪০ পয়সা থেকে ২ দশমিক ৯৮ শতাংশ কমে হয়েছে ১৩ টাকা।
ঢাকা ব্যাংকের দর কমেছে ২ দশমিক ৮৯ শতাংশ, ব্যাংক এশিয়ার কমেছে ২ দশমিক ১৭ শতাংশ।
যমুনা ব্যাংকের দর কমেছে ১ দশমিক ৮৭ শতাংশ। গত ৩০ মে ব্যাংকটির শেয়ারের এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ দর ওঠে ২৩ টাকা ৪০ পয়সা। এরপর পাঁচ কার্যদিবস টানা পতনে নেমে আসে ২০ টাকা ৮০ পয়সায়।
বস্ত্র খাতে আগ্রহ
বুধবার বস্ত্র খাতের বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। এর আগে ঈদের ছুটির আগের দুদিন ও ঈদের ছুটির পর প্রথম এক দিন লেনদেনে বস্ত্র খাতের ঢালাও উত্থান দেখছিল পুঁজিবাজার। তারপরও অনেকটাই নেতিয়ে ছিল এ খাত।
বুধবার সে অবস্থা থেকে বেরিয়ে আবারও জানান দিল বস্ত্র খাত। এদিন বস্ত্র খাতের মোট লেনদেন হয়েছে ৩২৩ কোটি টাকা।
বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলোর অর্থবছর শেষ হচ্ছে জুনে। ফলে আগামী দুই থেকে তিন মাস পর কোম্পানিগুলো তাদের ২০২১ সালের জন্য শেয়ারধারীদের লভ্যাংশ ঘোষণা করবে।
এই খাতের ভিএফএস থ্রেড ডাইংয়ের শেয়ার দর বেড়েছে ১০ শতাংশ। লেনদেনে ২৬ টাকা শেয়ার দিন শেষে হয়েছে ২৮ টাকা ৬০ পয়সা।
এসকোয়ার টিট কোম্পানির দর ৯.৮২ শতাংশ বেড়ে ২৮ টাকা ৫০ পয়সা থেকে হয়েছে ৩১ টাকা ৩০ পয়সা।
রিং শাইনের দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ; ৯ টাকা ২০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১০ টাকা ১০ পয়সা।
আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের দরও বেড়েছে ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ। ২৫ টাকা ৮০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ২৮ টাকা ৩০ পয়সা।
নুরানী ডায়িংয়ের দরও ৭ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৮ টাকা ১০ পয়সা। এর চেয়ে বেশি এক দিনে বাড়া সম্ভব ছিল না। শতকরা হিসেবে দর বেড়েছে ৯.৪৫ শতাংশ।
বিমা খাতে দুই চিত্রই আছে
বুধবার একক খাত হিসেবে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে এই খাতেই। হাতবদল হয়েছে ৬৩৬ কোটি টাকার শেয়ার।
এই খাতের মোট ৫০টি কোম্পানির মধ্যে ২১টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। একটির দর পাল্টায়নি। বাকি ২৮টির দর কমেছে।
তবে দিনের সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধি পাওয়া কয়েকটি কোম্পানি ছিল বিমা খাতের। তবে বেশির ভাগ কোম্পানি ছিল দর পতনের তালিকায়।
বুধবার এ খাতের সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানি ছিল পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ৯.৯৭ শতাংশ। তারপরেই ছিল রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স, যার শেয়ারের দরও বেড়েছে একই হারে। পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ৯.৫৯ শতাংশ।
সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ৮.৭৫ শতাংশ। লেনদেনে ১১২ টাকার শেয়ার বেড়ে হয়েছে ১২১ টাকা ৮০ পয়সা। মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের দর বেড়েছে ৮.৪৩ শতাংশ।
দিনের সর্বোচ্চ দরপতন হওয়া কোম্পানি তালিকায়ও ছিল বিমা।
ফেডারেল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের দর কমেছে ৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ। লেনদেনে ৪৮ টাকা ৭০ পয়সার শেয়ার কমে হয়েছে ৪৫ টাকা ১০ পয়সা।
ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের ৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ। ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের দর কমেছে ৪.৯৪ শতাংশ, ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের ৪.৭০ শতাংশ, এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স, জনতা ইন্স্যুরেন্সের দর কমেছে ৪ শতাংশ পর্যন্ত।
সবচেয়ে বেড়েছে তথ্যপ্রযুক্তি
এই খাতে ১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১০টির। গত কয়েক মাসে এমন চিত্র দেখা যায়নি। সবচেয়ে বেশি দর বাড়া ১০টি কোম্পানির দুটি এই খাতের।
এর মধ্যে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়ার পর পতনমুখী ডেফোডিলস কম্পিউটারের দাম ৯.৯৪৫ শতাংশ আর জেনেক্সিলের দাম বেড়েছে ৯.৯৪১ শতাংশ।
এই খাতে লেনদেন হয়েছে মোট ৬৩ কোটি ২০ লাখ টাকা।
প্রকৌশল খাতে আগ্রহ বৃদ্ধি
বাজেটে করপোরেট কর আড়াই শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করার পর থেকে এই খাতের শেয়ারেও বেড়েছে আগ্রহ।
তৃতীয় সর্বোচ্চ ৩১১ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে এই খাতে।
সবচেয়ে বেশি দাম বাড়া ২০টি কোম্পানির মধ্যে এই খাতের আছে দুটি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করার পর পতনমুখী ন্যাশনাল পলিমার। ৯.৯২ শতাংশ বেড়ে ৫৮ টাকা ৭০ পয়সা দাঁড়িয়েছে দাম।
গোল্ডেনসনের দাম ৯.২৫ শতাংশ বেড়ে ১৭ টাকা ৭০ পয়সা দাঁড়িয়েছে। আগের দিন জেড ক্যাটাগরির শেয়ারটির দাম ছিল ১৬ টাকা ২০ পয়সা।
এর বাইরে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ২০টি কোম্পানির মধ্যে ১৩টি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ২২টি কোম্পানির মধ্যে ১৪টি, আর্থিক খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে ১৫টির, ওষুধ ও রসায়ন খাতের ৩১টির মধ্যে ১৬টির দাম বেড়েছে।
সূচক ও লেনদেন
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩১ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৫৫ পয়েন্টে।
শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ৫ দশমিক ৭০ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৯৬ পয়েন্টে।
বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২০২ পয়েন্টে। লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে বুধবার দর বেড়েছে ২০৮টির, কমেছে ১২৪টির। দর পাল্টায়নি ৩৭টির।
লেনদনে হয়েছে মোট ২ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৬৫ কোটি টাকা। এক দিনের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ৬৪০ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই আগের দিনের চেয়ে ৮৪ দশমিক ৩৬ পয়ন্টে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৫১৫ পয়েন্টে। লেনদেন হয়েছে মোট ৭৬ কোটি টাকা। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৮২ টির, কমেছে ৯৬টির। দর পাল্টায়নি ৩১টির।
আরও পড়ুন:ঝালকাঠি পৌর এলাকার পুরাতন কলেজ ও পৌরসভা খেয়াঘাটের উন্মুক্ত ইজারায় উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ জারি হয়েছে।
রিটকারী আইনজীবী তরিকুল ইসলাম শুক্রবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
উন্মুক্ত ইজারা স্থগিত করায় মাঝিমাল্লা সম্প্রদায়ের ইজারা পেতে আর কোনো বাধা থাকল না।
মাঝিমাল্লা বহুমুখী সমবায় সমিতি সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর শতকরা ১০ ভাগ মূল্য বৃদ্ধিতে এ সমিতি ইজারা নিয়ে ঘাট পরিচালনা করে আসছে। এ বছর উন্মুক্ত ইজারা আহ্বান করায় উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করে মাঝিমাল্লা বহুমুখী সমবায় সমিতি। পিটিশনের প্রেক্ষিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে।
উচ্চ আদালতের আদেশের অ্যাডভোকেট প্রত্যয়ন কপিসহ ইজারাদার কর্তৃপক্ষ ঝালকাঠি পৌর মেয়র বরাবরে আবেদন করেন মাঝিমাল্লা সমিতির নেতারা। পরে নির্বাহী প্রকৌশলীকে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার।
রিটকারী আইনজীবী তরিকুল ইসলাম জানান, ঝালকাঠির খেয়াঘাট সমূহের জন্য ঝালকাঠি পৌরসভা একটি উন্মুক্ত ইজারা আহ্বান করেছে। নীতিমালা অনুযায়ী মাঝিমাল্লা (পাটনি) সম্প্রদায়ের পাওয়ার কথা। উন্মুক্ত ইজারাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট পিটিশন করা হয়। পিটিশনের শুনানি শেষে আদালত উন্মুক্ত ইজারা স্থগিত করেছে।
তিনি আরও জানান, এখন থেকে প্রথমে মাঝিমাল্লা সমিতি ইজারা নেবে। যদি কোনো কারণে সমিতির পক্ষ থেকে ইজারা নিতে অস্বীকার বা অপারগতা প্রকাশ করে তাহলে উন্মুক্ত ইজারা আহ্বান করতে পারবে। উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের মাধ্যমে মাঝিমাল্লা সম্প্রদায় তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পেয়েছে।
পৌর সচিব শাহিন সুলতানা বলেন, ‘আমরা শুধু আবেদিত দরপত্রসমূহ উন্মুক্ত করে প্রকাশ করছি। বাছাই করে গুছিয়ে রাখছি। আমরা এর বেশি কিছুই করতে পারব না।’
নির্বাহী প্রকৌশলী অলোক সমদ্দার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঝালকাঠির পুরাতন কলেজ ও পৌর খেয়াঘাটের ইজারা বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা আছে। এ মুহূর্তে আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না। দরপত্র আহ্বানের পরে টেক কমিটি আছে তারাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’
পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী অলোক সমদ্দার, পৌর সচিব শাহিন সুলতানাসহ পৌর কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ দুপুরে এসব ঘাট ইজারার দরপত্র বাক্স উন্মুক্ত করা হয়।
আরও পড়ুন:নাটোরের নলডাঙ্গায় এক স্কুলছাত্রকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
উপজেলার পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত ভবনে বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো হিমেল হোসেন (১৫) উপজেলার পিপরুল গ্রামের ফারুক সরদারের ছেলে। সে পাটুল-হাপানিয়া স্কুল ও কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
নলডাঙ্গা থানার ওসি মো. মনোয়ারুজ্জামান জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে হিমেলকে তার সহপাঠী ফোন করে বাড়ি থেকে ডেকে নেয়। এরপর থেকে হিমেলের মোবাইল ফোনটি বন্ধ পান তার স্বজনরা। পরে রাত হলেও বাড়িতে না ফিরলে পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন এবং বিষয়টি পুলিশকে জানান।
ওসি বলেন, পুলিশ হিমেলকে উদ্ধারে অভিযানে নামে। অভিযানে হিমেলের বন্ধু পার্থকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। পার্থের দেয়া তথ্য অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত ভবনে রক্তাক্ত ও ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় হিমেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। হিমেলের মাথায় আঘাত, গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় মেহেদি, শিমুল ও সুজন নামে আরও তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এ বিষয়ে একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার পুটখালী সীমান্তে পায়ুপথে স্বর্ণের বার পাচারের ঘটনায় একজনকে আটক করেছে খুলনা-২১ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা।
মসজিদবাড়ী এলাকার বিজিবি চেকপোস্টের সামনে থেকে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে আটক করা হয়।
আটক হওয়া মনোর উদ্দিনের বাড়ি বেনাপোল পোর্ট থানার পুটখালী গ্রামে।
খুলনা-২১ বিজিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘খুলনা-২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পুটখালী ক্যাম্পের কমান্ডার সুবেদার মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে সীমান্তের মেইন পিলার ১৭ এর ৭ এস এর ১৬৮ আর পিলার হতে ৫০০ গজ বাংলাদেশের ভেতরে মসজিদবাড়ী বিজিবি চেকপোস্ট এলাকায় গোপন অবস্থান করে।
‘স্বর্ণ পাচারকারী মনোর উদ্দিন একটি ইজিবাইকে করে স্বর্ণের চালানটি ভারতে পাচারের উদ্দেশে সীমান্তের দিকে যাচ্ছিল। তখন মনোর উদ্দিনকে সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয়।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘প্রথমে তার শরীর তল্লাশি করে কোনো স্বর্ণ পাওয়া যায়নি। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে স্বীকার করে তার পায়ুপথে স্বর্ণের বারগুলো আছে।
‘এ সময় তাকে আটক করে বেনাপোল বাজারে রজনী ক্লিনিকে শরীর স্ক্যানিং করে পায়ুপথে ছয় পিস স্বর্ণের বারের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। তারপর তার কাছ থেকে স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়, যার ওজন ৭০০ গ্রাম।’
খুলনা-২১ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খুরশিদ আনোয়ার স্বর্ণসহ এক পাচারকারী আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, উদ্ধারকৃত স্বর্ণের চালানটি যশোর ট্রেজারিতে আছে। আটক ব্যক্তিকে বেনাপোল পোর্ট থানায় পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:আগামী জুনের মধ্যে ১০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করবে সরকার। সে জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রুমানা আলী।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে শুক্রবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে এ কথা জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী বলেন, শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কেউ যেন প্রতারিত না হয় কিংবা কেউ যেন প্রতারণা না করতে পারে সে জন্য সরকার সব ব্যবস্থা নেবে। আগামী জুনের মধ্যেই ১০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘আমি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ কেন্দ্রে পরিদর্শন করেছি। সেখানে খুব ভালোভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে, তবে এ বছর নিয়োগ পরীক্ষায় প্রার্থীর সংখ্যা কিছুটা কম।’
এ সময় প্রতিমন্ত্রী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ও শেষ ধাপের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় আজ। ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে বেলা ১১টা পর্যন্ত চলে লিখিত পরীক্ষা।
এ ধাপে কুমিল্লা জেলায় ৩২ হাজার ১৯৯ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে নারী ১৪ হাজার ৭৬৭ জন এবং পুরুষ ১৭ হাজার ৪৩২ জন।
আরও পড়ুন:দেশের চারটি বিভাগে বৃষ্টির আভাস দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, অন্য অঞ্চলগুলোতে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
বৃষ্টিপাত নিয়ে বলা হয়, ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এ ছাড়া দেশের অন্যান্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
আজকের তাপমাত্রা নিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
আরও পড়ুন:কুমিল্লার বরুড়ায় ভাইকে হত্যার দায়ে ছোট ভাই, বোন ও ভগ্নিপতিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
উপজেলার শালুকিয়া গ্রাম থেকে বৃহস্পতিবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে বুধবার সকালে নিজ বসতঘর থেকে শরিফ হোসেন (৩৫) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন শরিফের ছোট ভাই আরিফ হোসেন, বড় বোন খুকি আক্তার ও ভগ্নিপতি নাছির উদ্দিন।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ উদ্ধারের পর বুধবার নিহত শরীফের মা বরুড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুল বলেন, ‘শরীফ মাদকাসক্ত ছিল। কিছুদিন আগে শরীফ মাদকের টাকা যোগাড়ের জন্য ভাই আরিফের অটোরিকশা বিক্রি করে দেয়। মাদকের টাকার জন্য মাকেও মারধর করত সে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে শরিফের ছোট ভাই আরিফ ও তার বোন খুকি মিলে পরিকল্পনা করে শরীফকে পঙ্গু করে ঘরে রেখে দেবে। বাকি জীবন তাকে ঘরে বসিয়ে খাওয়াবে। পরিকল্পনা মোতাবেক ২৬ মার্চ রাত ১ টার দিকে পুকুরপাড়ে শরীফকে হাত পা বেঁধে পেটানো হয়। বাড়িতে এনে আরেক দফা পেটানো শেষে হাত পা বেঁধে ঘরের ভেতর ফেলে রাখা হয়। এ অবস্থায় শরীফ মারা যায়।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল জানান, তথ্য প্রযুক্তিসহ নিজস্ব গোয়েন্দা ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাদের আদালতে প্রেরণ করলে সেখানে তারা ১৬৪ ধারায় খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়।
আরও পড়ুন:সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও বাতাসের নিম্ন মানে প্রথম সারিতে রয়েছে ঢাকা।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বাতাসের মানবিষয়ক প্রযুক্তি কোম্পানি আইকিউ এয়ারের র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকাল ১০টা ২৮ মিনিটে ১৮০ স্কোর নিয়ে ১০০টি শহরের মধ্যে বায়ুর নিম্ন মানে দ্বিতীয় ছিল ঢাকা।
একই সময়ে প্রথম ও তৃতীয় অবস্থানে ছিল থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই ও ভারতের দিল্লি।
আইকিউএয়ার জানিয়েছে, আজ দিনের ওই সময়ে ঢাকার বাতাসে অতি ক্ষুদ্র কণা পিএম২.৫-এর উপস্থিতি ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আদর্শ মাত্রার চেয়ে ২২ দশমিক ৩ গুণ বেশি।
নির্দিষ্ট স্কোরের ভিত্তিতে কোনো শহরের বাতাসের ক্যাটাগরি নির্ধারণের পাশাপাশি সেটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি ক্ষতিকর, তা জানায় আইকিউএয়ার।
কোম্পানিটি শূন্য থেকে ৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘ভালো’ ক্যাটাগরিতে রাখে। অর্থাৎ এ ক্যাটাগরিতে থাকা শহরের বাতাস জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।
৫১ থেকে ১০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘মধ্যম মানের বা সহনীয়’ হিসেবে বিবেচনা করে কোম্পানিটি।
আইকিউএয়ারের র্যাঙ্কিংয়ে ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরিতে ধরা হয়।
১৫১ থেকে ২০০ স্কোরে থাকা শহরের বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরির বিবেচনা করা হয়।
র্যাঙ্কিংয়ে ২০১ থেকে ৩০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়।
তিন শর বেশি স্কোর পাওয়া শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করে আইকিউএয়ার।
আজ সকাল ১০টা ২৮ মিনিটে ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ১৮০। এর মানে হলো ওই সময়টাতে নিঃশ্বাসের সঙ্গে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাস নিতে হয় রাজধানীবাসীকে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য