অর্থবছর শেষ হতে এখনও এক মাস বাকি। এরই মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩১৭ কোটি (৩.১৭ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে।
এই অঙ্ক গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের পুরো সময়ের চেয়ে ৩২ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছর শেষে যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রতি বছর দেশে যে রেমিট্যান্স আসে, তার প্রায় অর্ধেক পাঠান সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশিরা।
স্বাধীনতার পর থেকেই সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন সৌদি আরবে থাকা বাংলাদেশিরা। এতদিন দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত।
তবে গত বছরের মার্চে বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এরপর যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। এ কারণে আমিরাতকে ডিঙিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র।
আগামী ৩০ জুন শেষ হতে যাওয়া ২০২০-২১ অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসীরা যেখানে মোট ৩১৬ কোটি ৭৬ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন, সেখানে আমিরাতপ্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২২৬ কোটি ডলার। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি ৫২৭ কোটি ১৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে সৌদি আরব থেকে।
২০১৯-২০ অর্থবছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী বাংলাদেশিরা ১ হাজার ৮২০ কোটি ৫০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠান। এর মধ্যে সৌদি আরব থেকে ৪০১ কোটি ৫১ লাখ ডলার, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ২৪৭ কোটি ২৫ লাখ ডলার এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৪০ কোটি ৩৪ লাখ ডলার পাঠান প্রবাসীরা।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে সৌদিপ্রবাসীরা ৩১১ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন। সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এসেছিল ২৫৪ কোটি ডলার। আর যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছিল ১৮৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার।
এ হিসাবে গত অর্থবছরে সৌদি আরব থেকে রেমিট্যান্স বেড়েছিল ২৯ দশমিক ১ শতাংশ। আমিরাত থেকে কমেছিল ২ দশমিক ৭ শতাংশ। আর যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেড়েছিল সবচেয়ে বেশি ৩০ দশমিক ৪ শতাংশ।
গত অর্থবছরের ধারাবাহিকতায় বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে সৌদি আরব থেকে গত অর্থবছরের পুরো সময়ের (১২ মাস, জুলাই-জুন) চেয়ে ৩১ দশমিক ২৮ শতাংশ বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে তার চেয়ে বেশি ৩১ দশমিক ৮ শতাংশ।
আমিরাত থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহে নেতিবাচক ধারা লক্ষ করা যাচ্ছে। গত অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে দেশটি থেকে ২৪০ কোটি ডলার পাঠান প্রবাসীরা। এই অর্থবছরের একই সময়ে পাঠিয়েছেন ২২৬ কোটি ডলার। এ হিসাবে দেখা যাচ্ছে, এই ১১ মাসে আমিরাত থেকে রেমিট্যান্স কমেছে ৬ শতাংশের মতো।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা রেমিট্যান্সের পরিমাণ এবারই প্রথম বছরে ৩ বিলিয়ন ডলারের ‘ঘর’ অতিক্রম করেছে। ইতিমধ্যে (১১ মাসে) ৩১৬ কোটি ৭৬ লাখ ডলার এসেছে।
অর্থবছরের শেষ মাস জুনে যদি মে মাসের মতো ৩৩ কোটি ৩৪ লাখ ডলারের কিছু কমও আসে, তাও সাড়ে ৩ বিলিয়ন (৩৫০ কোটি) ডলারের বেশি হবে।
২০১২ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসত কুয়েত থেকে। একক দেশ হিসেবে কুয়েত থেকে আসা রেমিট্যান্সের পরিমাণ এখন ষষ্ঠ অবস্থানে।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ১ কোটি ২০ লাখ বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। তাদের বড় অংশই রয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে; কাজ করছেন বিভিন্ন শ্রমঘন পেশায়।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশির সংখ্যা সব মিলিয়ে ১০ লাখের মতো হবে। এর মধ্যে নিউ ইয়র্কেই থাকেন প্রায় তিন লাখ। নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস ও জ্যামাইকায় বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশির বসবাস।
ইউএসএ-বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক ক্লাবের চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান হাসান নিউ ইয়র্কেই থাকেন। যুক্তরাষ্ট্রে আবাসন নির্মাণসহ আরও কিছু ব্যবসা রয়েছে তার। বাংলাদেশেও ব্যবসা রয়েছে তার।
অবহেলিত উত্তরাঞ্চলের রংপুরের তারাগঞ্জে তিনি গড়ে তুলেছেন ব্লিং লেদার প্রোডাক্টস লিমিটেড নামের অত্যাধুনিক জুতা কারখানা।
মহামারির এই কঠিন সময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স কেন বাড়ছে, এমন প্রশ্নের উত্তরে মঙ্গলবার মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে হাসানুজ্জামান হাসান বলেন, এখন যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসীরা যে টাকা দেশে পাঠাচ্ছেন, তার প্রায় পুরোটাই ব্যাংকিং চ্যানেলে যাচ্ছে। সে কারণেই এখন বেশি রেমিট্যান্স পাচ্ছে বাংলাদেশ।
‘তবে ইউএসএ থেকে রেমিট্যান্স বাড়ার একটি বড় কারণ হলো বাংলাদেশ সরকারের ২ শতাংশ নগদ প্রণোদনা। এখন যদি কেউ এখান থেকে ১০০ ডলার দেশে পাঠান, তাহলে এর সঙ্গে বাড়তি ১৭০ টাকার মতো প্রণোদনা পান। সে কারণেই প্রবাসীরা বেশি রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহী হচ্ছেন।’
হাসানুজ্জামান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশির সংখ্যা বাড়ছে। নানা পেশায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছেন তারা। অনেকের উপার্জনও ভালো।
‘যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংকে টাকা রাখলে মুনাফা পাওয়া যায় না। কিন্তু দেশে টাকা পাঠিয়ে প্রবাসী বন্ড কিনলে ১২ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা পাওয়া যায়। ২ শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনা এবং বন্ড কিনে মুনাফার আশায় এখন ইউএসএ থেকে বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা।’
প্রবাসী এই ব্যবসায়ী বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসীরা পেশাগতভাবে ‘তুলনামূলকভাবে ভালো অবস্থানে’ আছেন। ফলে তাদের উপার্জনও হয় বেশি।
‘সে কারণে যুক্তরাষ্ট্র থেকে যারা দেশে টাকা পাঠান, তারা তুলনামূলকভাবে একটু বেশি অর্থ দেশে পাঠাতে পারেন। তাদের অনেকেই আবার বন্ডে বিনিয়োগ করেন।’
হাসানুজ্জামান বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে চাকরি হারানোর ভয় নেই। আপাতত কিছুদিন আয় হয়তো কমে যাবে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকলে সে সমস্যাও মিটে যাবে।
আগামী দিনগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহে খুব বেশি সমস্যা হবে না বলে মনে করছেন এই ব্যবসায়ী।
তিনি বলেন, ‘ঠিকঠাক কাগজপত্র নেই, এমন অনেক প্রবাসীও নিউ ইয়র্কে বসবাস করেন। মহামারির সময়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকার তাদেরও প্রণোদনা দিচ্ছে।
‘এই প্রণোদনার অর্থও অনেকে পরিচিত কারও ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে দেশে পরিবার-পরিজনের কাছে পাঠাচ্ছেন।’
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক ও রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জায়েদ বখতও মনে করেন, মহামারির মধ্যে রেকর্ড রেমিট্যান্স আসার পেছনে ২ শতাংশ নগদ সহায়তা এবং হুন্ডি বন্ধ হওয়ার বিষয়টি ভূমিকা রেখেছে।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমেরিকা থেকে যে রেমিট্যান্স বাড়ছে, সেটা একটা ভালো খবর। এটা যদি ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকে, তাহলে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে রেমিট্যান্স কমে গেলেও সামগ্রিক রেমিট্যান্স প্রবাহ যদি ইতিবাচক থাকে, তাহলে তা আমাদের অর্থনীতির জন্য খুবই ভালো হবে।’
তবে একটু ভিন্ন কথা বলেছেন ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর।
দীর্ঘসময় ধরে রেমিট্যান্সের এই উল্লম্ফন অব্যাহত থাকবে, এমনটা ভেবে আত্মতুষ্টিতে ভোগা ঠিক হবে না বলে সতর্ক করছেন তিনি।
আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে আমাদের একজন প্রবাসীরও কিন্তু বেতন বাড়েনি। উল্টো অনেকে চাকরি হারিয়েছেন; কারও কারও বেতনও কমেছে। এ অবস্থায় রেমিট্যান্স কেন বাড়ছে, সেটা ভালো করে খতিয়ে দেখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এ কথা ঠিক যে এক বছরের বেশি সময় ধরে রেমিট্যান্স প্রবাহে ভালো গতি লক্ষ করা যাচ্ছে। কিন্তু একটা কথা মনে রাখতে হবে, এই গতি কিন্তু অনন্তকাল থাকবে না।
‘আমি গবেষণা করে দেখেছি, এখন যে বাড়তি রেমিট্যান্স আসছে, সেটা আসলে প্রকৃত রেমিট্যান্স নয়। এই যে এখন প্রবাসীরা মহামারির কারণে নিজ দেশসহ অন্য কোনো দেশে প্রয়োজনীয় কাজসহ বেড়াতে যেতে পারছে না, ছেলেমেয়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, সে খরচও বেঁচে যাচ্ছে। অনেকে আবার সরকারের কাছ থেকে প্রণোদনাও পাচ্ছে।
‘এসব টাকাই এখন তারা দেশে পরিবার-পরিজনের প্রয়োজনে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। এটা কিন্তু তারা বেশি দিন পাঠাতে পারবেন না। তখন কিন্তু রেমিট্যান্সে ধস নামবে। এই বিষয়টি কিন্তু সরকারের নীতিনির্ধারকদের বিবেচনায় রাখতে হবে।’
অনেক উন্নত দেশেই ব্যাংকে টাকা রেখে মুনাফা পাওয়া পায় না। সে কারণে প্রবাসীদের অনেকে মাসের খরচ মেটানোর পর যে টাকা সঞ্চয় করেন, তা কোথায় রাখবেন তা নিয়ে চিন্তায় থাকেন।
সেই টাকা দেশে পাঠিয়ে তারা যাতে লাভবান হতে পারেন, সে জন্য বাংলাদেশে রয়েছে ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড, তিন বছর মেয়াদি ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড ও ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এই তিন বন্ডে ২০ হাজার কোটি টাকার মতো বিনিয়োগ করেছেন প্রবাসীরা।
এক বছর আগে এই বন্ডগুলোতে বিনিয়োগের অঙ্ক ছিল ১২ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। তারও আগে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিনিয়োগ ছিল প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা।
তিন বন্ডের মধ্যে ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ডের মেয়াদ পাঁচ বছর। এই বন্ডে ২৫ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করা যায়। মেয়াদ শেষে মুনাফা পাওয়া যায় ১২ শতাংশ। প্রতি ছয় মাস অন্তর মুনাফা তোলার সুযোগ রয়েছে।
কেউ যদি ছয় মাসে মুনাফা না তোলেন, তাহলে মেয়াদপূর্তিতে মূল অঙ্কের সঙ্গে ষান্মাসিক ভিত্তিতে ১২ শতাংশ চক্রবৃদ্ধি হারে মুনাফা দেয়া হয়। আট কোটি টাকা বা তার চেয়ে বেশি বিনিয়োগ করলে সিআইপি সুবিধা পাওয়া যায়।
প্রবাসীরা ছাড়াও এই বন্ড কিনতে পারেন বিদেশে লিয়েনে কর্মরত বাংলাদেশি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বিদেশে বাংলাদেশি দূতাবাসে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, যারা বৈদেশিক মুদ্রায় বেতন-ভাতা পান। মুনাফার হার বেশি হওয়ায় প্রবাসে থাকা অনেকেই এই বন্ডে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হন।
ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ডের মেয়াদ তিন বছর। এই বন্ডে ৫০০ ডলার থেকে ৫০ হাজার ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগ করা যায়। মেয়াদ শেষে মুনাফা সাড়ে ৭ শতাংশ।
প্রতি ছয় মাস অন্তর সরল সুদে মুনাফা তোলা যায়। তবে মেয়াদপূর্তির আগে বন্ড ভাঙতে চাইলে ১ থেকে দেড় শতাংশ সুদ কম পাওয়া যায়।
ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডের মেয়াদও তিন বছর। এতে সাড়ে ৬ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা পাওয়া যায়। ৫০ হাজার ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগ করা যায়।
বৈধ পথে প্রবাসী আয় বাড়াতে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ২ শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনা ঘোষণা করে সরকার। সে অনুযায়ী ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে ১ জুলাই থেকে প্রবাসীরা ১০০ টাকা দেশে পাঠালে তার সঙ্গে ২ টাকা যোগ করে ১০২ টাকা পাচ্ছেন।
বিদায়ী অর্থবছরের বাজেটেও এই প্রণোদনা অব্যাহত ছিল। নতুন ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটেও এই সুবিধা রাখার ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে অন্য দেশগুলোর মধ্যে কুয়েত থেকে ১৩৭ কোটি ২২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। যুক্তরাজ্য থেকে এসেছে ১৮৮ কোটি ডলার।
এ ছাড়া ওমান থেকে ১৪১ কোটি ৭১ লাখ ডলার, মালয়েশিয়া থেকে ১৮৯ কোটি ৭০ লাখ, কাতার থেকে ১৩০ কোটি ডলার, ইতালি থেকে ৭৩ কোটি ৪১ লাখ ডলার এবং সিঙ্গাপুর থেকে ৫৮ কোটি ১৩ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
সব মিলিয়ে এই ১১ মাসে ২ হাজার ২৮৩ কোটি ৭০ লাখ (২২.৮৩ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৯ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি।
আরও পড়ুন:কুড়িগ্রামে শতাধিক দুস্থ অসহায় বাবা মায়ের জন্য ভ্রাম্যমাণ শাড়ি লুঙ্গির হাটের আয়োজন করেছে ফাইট আনটিল লাইট (ফুল) নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
ভ্রাম্যমাণ এ হাটে আট টাকা দরে একটি শাড়ি, একটি লুঙ্গি এবং দুই টাকায় একটি ব্লাউজের পিস বিক্রি করা হয়।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙা ইউনিয়নের কুমোরপুর দাখিল উলুম মাদ্রাসা মাঠে শুক্রবার দুপুরে এসব শাড়ি, লুঙ্গি বিক্রি করা হয়েছে।
আট টাকায় শাড়ি পেয়ে বৃদ্ধ আমেনা বেওয়া বলেন, ‘বর্তমানে বাজারে একটা শাড়ির দাম নিম্নে ৩০০ টাকা। সেই শাড়ি আট টাকায় পেয়ে খুব উপকার হলো।’
লুঙ্গি পেয়ে হামিদ মিয়া বলেন, ‘৬৫ বছর বয়সে কোন দিন দেহি নাই আট টাহায় এহান (একটা) লুঙ্গি পাওয়া যায়। আইজ সেই আট টাহায় লুঙ্গি কিনলাম। খুব খুশি নাগছে।’
ভোগডাঙা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান বলেন, “‘ফুল’ দীর্ঘদিন ধরে জেলায় স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অসহায় বাবা মাকে নিয়ে কাজ করে আসছে। তাদের আজকের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।”
ফাইট আনটিল লাইটের নির্বাহী পরিচালক আবদুল কাদের বলেন, ‘কুড়িগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সামাজিক সংগঠন ফুল শহর গ্রাম ও প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের মানুষ মাঝে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক উন্নয়নে এক যুগের বেশি সময় ধরে কাজ করে আসছে।
‘আমরা ত্রাণে নয়, বিনিময়ে উপহার দিয়ে মানুষের মানসিকতার পরিবর্তন আনতে চাই। তাই অসহায় বাবা-মায়ের কাছে মাত্র আট টাকার বিনিময়ে শাড়ি লুঙ্গি বিক্রি করার ব্যবস্থা করছি।’
আরও পড়ুন:অতি তীব্র দাবদাহের মধ্যে মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়।
সীমান্তবর্তী জেলাটিতে শুক্রবার বেলা তিনটায় ৪২ দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
জেলায় অতি তীব্র দাবদাহে ওষ্ঠাগত জনজীবন। গরমে একটু স্বস্তি পেতে গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছেন অনেকে। কেউ কেউ পান করছেন ফুটপাতের অস্বাস্থ্যকর পানীয়।
তীব্র গরমে চুয়াডাঙ্গার হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে গরমজনিত রোগী। এতে ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ।
পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে সেচ কার্যক্রম। তা ছাড়া অতি গরমে নষ্ট হচ্ছে ধান, আম, লিচু ও কলাসহ মাঠের অন্যান্য ফসল।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তালতলা গ্রামের কৃষক আবু তালেব বলেন, ‘এই তাপে মাঠে দাঁড়ানো যাচ্ছে না। ভ্যাপসা গরমে কৃষিকাজ করা যাচ্ছে না।
‘ধানের জমি শুকিয়ে যাচ্ছে। ধানে বেশি সেচ লাগছে, কিন্তু সেচ পাম্পে ঠিকমতো পানিও উঠছে না।’
আবহাওয়া অধিদপ্তরের চুয়াডাঙ্গা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘গতকাল (বৃহস্পতিবার) থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র দাবদাহ অব্যাহত রয়েছে। আগামী তিন দিন এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে।’
দেশের কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেখানে মৃদু তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ বইছে ধরা হয়।
তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তীব্র দাবদাহ ধরা হয়। অন্যদিকে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে বলা হয় অতি তীব্র দাবদাহ।
আবহাওয়া অধিদপ্তর শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানায়, চুয়াডাঙ্গা ও যশোর জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:থাইল্যান্ডে রাষ্ট্রীয় সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির গভর্নর হাউসে শুক্রবার থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে তিনি এ মন্তব্য করেন বলে বার্তা সংস্থা ইউএনবির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, খাদ্য নিরাপত্তা, পর্যটন, জনস্বাস্থ্য, জ্বালানি ও আইসিটি খাতে সহযোগিতা জোরদারের সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে অনুভব করি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, খাদ্য নিরাপত্তা, পর্যটন, জনস্বাস্থ্য, জ্বালানি, আইসিটি, জনগণ থেকে জনগণে যোগাযোগ ও সংযোগের ক্ষেত্রে এবং বিমসটেকের অধীনে আমাদের সহযোগিতা জোরদার করার সুযোগ রয়েছে।’
এর আগে দুই নেতা গভর্নর হাউসে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে যোগ দেয়ার আগে ১৫ মিনিটের জন্য একান্ত বৈঠক করেন।
বৈঠক শেষে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় নথি—একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও একটি লেটার অফ ইনটেন্ট (এলওআই) সই করা হয়।
মধ্যাহ্নভোজে শেখ হাসিনা বলেন, নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বন্ধুত্ব আমাদের ঐতিহাসিক, ভাষাগত ও অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, টেকসই উন্নয়ন, জনগণ থেকে জনগণে যোগাযোগ ও সংযোগসহ সহযোগিতার বহুমুখী ক্ষেত্রে আমাদের দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী থাভিসিন ও তিনি পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা করতে এবং দুই দেশের সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার মধ্যে আরও আলাপ-আলোচনাকে উৎসাহিত করতে সম্মত হয়েছি। একইভাবে দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগের প্রসার ও সুবিধার্থে আমাদের সব রকম প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘শুক্রবার ঢাকা ও ব্যাংকক যে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই করেছে, তা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য একটি দৃঢ় কাঠামো প্রদান করবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, সফরটি ‘প্রতিবেশী’ নীতির বৃহত্তর ফোকাসের অংশ, যা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গতি আরও নবায়নের জন্য দুই দেশকে চমৎকার সুযোগ করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে, এই সফর আমাদের দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গভীর করতে সাহায্য করবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, এই সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পূর্ণ সম্ভাবনায় অত্যন্ত প্রয়োজনীয় গতি সঞ্চার করবে।
তিনি বলেন, ‘এই সরকারি সফর আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে, যা আমাদের দুই দেশের মধ্যে ফলপ্রসূ অংশীদারত্বের এক নতুন যুগের সূচনা করেছে।
‘আগামী দিনগুলোয় আমাদের জনগণ ও দেশের পারস্পরিক সুবিধার জন্য আমাদের সম্পর্কের নতুন গতি বজায় রাখতে হবে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর উপকণ্ঠ সাভারের আশুলিয়ায় একটি নির্জন বাঁশবাগানের ভেতর থেকে এক নারী পোশাকশ্রমিকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আশুলিয়ার কাঠগড়া নয়াপাড়া এলাকার বাঁশবাগান থেকে শুক্রবার সকালে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো আনজু খাতুন আশুলিয়ার নরসিংহপুরের হা-মীম গ্রুপের একটি তৈরি পোশাক কারখানার অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। তার বাড়ি গাইবান্ধা সদর থানার ঘাগুয়া ইউনিয়নে।
পুলিশের ভাষ্য, বাঁশবাগানের ভেতর নারী পোশাকশ্রমিকের মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। এর পরিপ্রেক্ষিতে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ আরও জানায়, ওই নারীর গলায় ঝোলানো পরিচয়পত্রে দেখা যায়, তিনি হা-মীম গ্রুপের একটি পোশাক কারখানার অপারেটর।
হা-মীম গ্রুপের টিআইএসডব্লিএল-১ কারখানার মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘আনজু খাতুন নামে এক নারী শ্রমিক গতকাল রাত ৯টা ১৫ মিনিটের পরে কারখানা থেকে বাসায় যায়, কিন্তু আজ সকালে তিনি আর কারখানায় আসেননি।
‘পরে লাইনের সুপারভাইজার আনজুকে কল দিলেও সে রিসিভ করেনি।’
আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ভজন চন্দ্র বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে কেউ তাকে (পোশাকশ্রমিক) হত্যা করে ফেলে রেখে যেতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের কারণ উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।’
আরও পড়ুন:লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তের ওপারে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে আবুল কালাম ডাকু (২২) নামের বাংলাদেশি রাখাল নিহত হয়েছেন।
উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ঝালাংগী বিজিবি ক্যাম্পের ৮৪৮ নম্বর মেইন পিলারের ৯ নম্বর সাব পিলার এলাকায় শুক্রবার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও যুবকের পরিবারের কাছ থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে কয়েকজন রাখালসহ শ্রীরামপুর ইউনিয়ন সীমান্তের ৮৪৮ নম্বর মেইন পিলারের ৯ নম্বর সাব পিলারের ওপারে ভারতীয় গরু ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় গরু আনতে যান আবুল কালাম ডাকু। গরু নিয়ে ফেরার পথে শুক্রবার ভোররাতে বিএসএফের ডোরাডাবরী ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। ওই সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে ডাকু গুরুতর আহত হলে সঙ্গীরা তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে বাংলাদেশ সীমান্তে। পরে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
এ বিষয়ে পাটগ্রাম ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ঝালাংগী ক্যাম্পের ইনচার্জ নায়েক সুবেদার নুরুল আমিন বলেন, ‘বিএসএফের গুলিতে আবুল কালাম ডাকু নামে একজন যুবক নিহত হয়েছেন। পাটগ্রাম থানা পুলিশ পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিহতের মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদপত্র পাঠিয়ে বিএসএফকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়েছে।’
নিহত যুবকের মা মমতা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলের বিয়ে ঠিক হয়েছে। কী অপরাধের জন্য বিএসএফ তাকে গুলি করে হত্যা করল জানি না। আমি এই হত্যার বিচার চাই।’
পাটগ্রাম থানার ওসি আবু সাইদ বলেন, ‘বিএসএফের গুলিতে আহত যুবক আবুল কালাম ডাকুকে পরিবারের সদস্যরা পাটগ্রাম হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যান। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় একটি ইউডি (অপমৃত্যুর) মামলা করা হবে।’
আরও পড়ুন:মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় তিন চাকার ভ্যানের সঙ্গে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় দুই সবজি ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।
উপজেলার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গোলড়া বাসস্ট্যান্ডে শুক্রবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো আবদুস সালাম (৫০) ও ছানোয়ার হোসেন (৪৫) মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কাটিগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। তারা স্থানীয় কাটিগ্রাম বাজারে সবজির ব্যবসা করতেন।
গোলড়া হাইওয়ে থানার ওসি সুখেন্দু বসু বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সকালে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জাগীর বন্দর আড়ত থেকে চাষীদের কাছ থেকে সবজি কিনে তিন চাকার ভ্যানের মাধ্যমে কাটিগ্রাম যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী আবদুস সালাম ও ছানোয়ার হোসেন, কিন্তু ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গোলড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছালে পাটুরিয়াগামী একটি কাভার্ড ভ্যান ওভারটেক করতে গিয়ে ওই তিন চাকার ভ্যানকে ধাক্কা দেয়।
এতে ঘটনাস্থলেই আবদুস সালাম নিহত হন এবং গুরুত্ব অবস্থায় ছানোয়ার হোসেনকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি জানান, নিহতদের একজনের মরদেহ সদর হাসপাতালে এবং অপরজনের মরদেহ গোলড়া থানায় রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর কাভার্ড ভ্যানের চালক ও হেলপার পালিয়ে গেলেও কাভার্ড ভ্যানটি জব্দ করা হয়।
এ ঘটনায় গোলড়া থানায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণ করতে থাইল্যান্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক পার্কেও থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ কামনা করেছেন।
বার্তা সংস্থা ইউএনবির প্রতিবেদনে জানানো হয়, থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে শুক্রবার গভর্নমেন্ট হাউসে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশি চিকিৎসাকর্মীদের প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি তাকে বাংলাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণেরও প্রস্তাবও দিয়েছি।’
বৈঠক শেষে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় নথি, একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও একটি লেটার অফ ইনটেন্টে (এলওআই) সই করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ককে বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। আমাদের বন্ধুত্ব আমাদের ঐতিহাসিক, ভাষাগত ও অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত।
‘সহযোগিতার বহুমুখী ক্ষেত্রে আমাদের দুই দেশের মধ্যে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
বৈঠকে দুই নেতা পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
এ নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গতিশীল অর্থনীতির সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে থাইল্যান্ডকে আমরা এক গুরুত্বপূর্ণ ও গতিশীল অংশীদার হিসেবে দেখি।’
বাণিজ্য সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের বর্তমান পরিসর বাড়ানোর জন্য দীর্ঘ পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও ব্যবসা সহজীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আমি প্রধানমন্ত্রীকে (থাভিসিন) আশ্বস্ত করেছি। আমি থাই পক্ষকে আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক পার্কে বিনিয়োগ করার ও শুধু থাইল্যান্ডের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য