প্রথম দিন ঢালাও পতন, তবে তৃতীয় দিনেই পাল্টে গেল চিত্র।
নতুন করে যে ৩০ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস বা শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্য প্রত্যাহার করা হয়েছে, তার মধ্যে পাঁচটির উঠে এল সেই ফ্লোরের ওপরে।
আগের ৬৬টির মতো এই শেয়ারগুলোও দিনে কমতে পারবে সর্বোচ্চ দুই শতাংশ, তবে বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাকি সব শেয়ারের মতোই সর্বোচ্চ ১০ শতাংশের সীমা থাকবে।
খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের বঙ্গজের দাম এখন বাতিল করা ফ্লোর প্রাইস ১১৬ টাকা ৯০ পয়সা থেকে বেশি।
যদিও রোববার প্রথম দিন প্রায় ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ কমে হয়েছিল ১১৪ টাকা ৬০ পয়সা। পরের দিন আরও প্রায় দুই শতাংশ কমে হয় ১১২ টাকা ৪০ পয়সা।
মঙ্গলবার এই অবস্থান থেকে দাম আরও দুই শতাংশের মতো কমে হয় ১১০ টাকা ৪০ পয়সা। কিন্তু এর পরেই আবার ক্রয় চাপে সেটি ঘুরে দাঁড়ায়। পরে আগের দিনের তুলনায় দাম ৫ টাকা ২০ পয়সা বেড়ে হয় ১১৭ টাকা ৬০ পয়সা।
লেনদেনও বেড়েছে। গত এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পরিমাণ শেয়ার বিক্রি হয়েছে কোম্পানিটির। হাতবদল হয়ে মোট ১ লাখ ৭০ হাজার ৯৭টি শেয়ার।
ফ্লোর প্রাইস তোলার আদেশ আসার দিন এর লেনদেন ছিল ১ হাজার ৭২৬টি।
গত বছরের ২২ অক্টোবর থেকে এক দিনেই ফ্লোর প্রাইস ১০৬ টাকা ৯০ পয়সার বেশিতে হাতবদল হয়েছিল অ্যাপেক্স ট্যানারির দর। ফ্লোর প্রত্যাহারের পর রোববার প্রথম কার্যদিবসেই সেখান থেকে দাম কমে যায় প্রায় দুই শতাংশ। অথচ দ্বিতীয় দিনই সেখান থেকে দাম বেড়ে বাতিল হওয়া ফ্লোর প্রাইস ছাড়িয়ে যায়। তৃতীয় দিন দাম আরও খানিকটা বেড়ে হয়েছে ১০৯ টাকা।
এই দাম ২০২০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বরের পর সর্বোচ্চ।
ফ্লোর প্রাইসের শেষ দিন বৃহস্পতিবার ১০০টি শেয়ার হাতবদল হলেও মুক্ত হওয়ার পর রোববার হাতবদল হয় দুই হাজার ২২৯টি। মঙ্গলবার তারও ১০ গুণের বেশি হাতবদল হয়েছে। লেনদেন হয়েছে ২৪ হাজার ৮৮৯টি।
এটলাসের ফ্লোর প্রাইস ছিল ১০৯ টাকা ৪০ পয়সা। রোববার দাম কমে হয় ১০৮ টাকা ৯০ পয়সা। সোমবার আরও এক দফা কমে গিয়ে দাম দাঁড়ায় ১০৭ টাকা ১০ পয়সা। মঙ্গলবার দিনের শুরুতে দাম আরও কমে দাঁড়ায় ১০৫ টাকা। কিন্তু সেখান থেকে পরে ঘুরে দাম এক পর্যায়ে হয় ১১৩ টাকা ৯০ পয়সা। শেষ পর্যন্ত দাম দাঁড়ায় ১১০ টাকা ২০ পয়সা।
ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের আগে শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার দিন দুটি কোম্পানির শেয়ার হাতবদল হয়েছিল। রোববার লেনদেন হয় তিনটি কোম্পানির শেয়ার। আর ফ্লোরের চেয়ে বেশি দামে মঙ্গলবার হাতবদল হয় ১৯ হাজার ৭১৫টি।
তবে চমক ছিল জেমিনি সি ফুডসের।
গত ১০ জানুয়ারি থেকে ফ্লোর প্রাইস ১৪৪ টাকা ৩০ পয়সার ওপরে উঠতে না পারা শেয়ারটি মুক্ত হওয়ার পর দুই কার্যদিবস আরও কমে দাম দাঁড়ায় ১৩৯ টাকা ১০ পয়সা। অথচ তৃতীয় কার্যদিবসেই অবিশ্বাস্যভাবে শতকরা প্রায় ১০ শতাংশ দাম বেড়ে হয়ে যায় ১৫৩ টাকা। এক দিনে এর চেয়ে বেশি দাম বৃদ্ধি পাওয়া সম্ভব ছিল না।
এই শেয়ারটিও দিনের শুরুতে ১৩৬ টাকা ৬০ পয়সায় নেমে এসেছিল। সেখান থেকেই হয় উত্থান।
কোনো এক দিনে গত এক বছরের মধ্যে শেয়ারটির হাতবদলও হয়েছে সর্বোচ্চ। সর্বোচ্চ দামে শেয়ারটি হাতবদল হয়েছে মোট এক লাখ ৩২ হাজার ৯০৫টি। অথচ ফ্লোর প্রাইসের শেষ দিনে হাতবদল হয়েছিল কেবল ৭১৪টি।
ডেফোডিল কম্পিউটারের দর ফ্লোর প্রাইস ৫৩ টাকা ৪০ পয়সা থেকে রোববার ১ দশমিক ৮৭ শতাংশ কমে হয় ৫২ টাকা ৪০ পয়সা। মঙ্গলবার ঘুরে দাঁড়িয়ে দর দাঁড়ায় ৫৪ টাকা ৬০ পয়সা।
ফ্লোরে থাকার শেষ দিন বৃহস্পতিবার ২৯ হাজার ৯০টি শেয়ার হাতবদল হলেও রোববার লেনদেন হয় ১৭ হাজার ২১টি। মঙ্গলবার হয়েছে ২২ হাজার ৪৬১টি।
গত বছর করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পর প্রতিটি শেয়ারেরই ফ্লোর প্রাইস ঠিক করে দেয়া হয়। সে সময় বেশ কিছু কোম্পানির শেয়ারের দাম বেশি থাকায় ফ্লোর প্রাইসও বেশি ছিল। তবে পরে সেই দাম আর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যৌক্তিক মনে হয়নি। এ কারণে শেয়ারগুলো বিক্রি হচ্ছিল না বললেই চলে।
এই পরিস্থিতিতে গত ৭ এপ্রিল প্রথমে ৬৬টি কোম্পানির ফ্লোর প্রত্যাহার করা হয়। শুরুতে আতঙ্কে দাম কমলেও পরে দেখা যায় এর প্রভাব ইতিবাচক।
এই ৬৬ কোম্পানির প্রায় অর্ধেকের দাম এখন প্রত্যাহার করা ফ্লোর প্রাইসের চেয়ে বেশি। একটি বড় অংশের দাম সেই ফ্লোরের আশেপাশে। তবে কিছু কোম্পানির বড় পতন হয়েছে।
কিন্তু যে লাভ হয়েছে, সেটি হলো বিনিয়োগকারীদের আটকে যাওয়া টাকা মুক্ত হয়েছে। প্রতিদিনই এখন বিপুল পরিমাণ শেয়ার লেনদেন হচ্ছে।
সেই ৬৬ কোম্পানির অভিজ্ঞতা থেকেই এবার ৩০টির ফ্লোর প্রত্যাহার করা হয়। এগুলোও ফ্লোরের দামে হাতবদল হচ্ছিল না বললেই চলে। তবে সর্বনিম্ন দাম তুলে দেয়ার পর হাতে গোনা দুই একটি ছাড়া বেশিরভাগের লেনদেনেই বেড়েছে।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ
কী বলছেন বিশ্লেষক
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ফ্লোর প্রাইসের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে সিংহভাগ কোম্পানির লেনদেনে একটা বাধা ছিল, সেটি এখন কাটতে শুরু করেছে। শেয়ার হাতবদল বাড়লে তা ইতিবাচক। আগে যে ৬৬টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস বাতিল করা হয়েছিল সেগুলোর শেয়ার দরও এখন ঊর্ধ্বমুখী। বিনিয়োগকারীরা সেগুলোর শেয়ার লেনদেন করে শেয়ার সমন্বয়সহ ক্রয় বিক্রয় করতে পারছে।’
তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজারে যেভাবে উত্থান হচ্ছে, লেনদেন বাড়ছে তাতে ফ্লোর প্রাইসের প্রয়োজনীয়তা কতদিন থাকবে সেটি বিবেচনা করা উচিত।’
বাকি ২৫ কোম্পানির কী অবস্থা
অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের দর ফ্লোর প্রাইস ২১৯ টাকা ৩০ পয়সা থেকে রোববার ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ কমে হয় ২১৫ টাকা। সেখান থেকে কিছুটা ঘুরে মঙ্গলবার দর দাঁড়িয়েছেল ২১৭ টাকা ৮০ পয়সা। বৃহস্পতিবার তিন হাজার ৩৫১টি শেয়ার হাতবদল হলেও রোববার হয়েছিল দুই হাজার ৪৬৭টি। মঙ্গলবার হাতবদল হয়েছে ৭ হাজার ১১৭টি।
রেনউইক যগেশ্বরের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৯০০ টাকা। ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর প্রথম লেনদেনে রোববার কোম্পানিটির শেয়ার দর দিনের সর্বোচ্চ ২ শতাংশ কমে হয়েছিল ৮৮২ টাকা। একদিন বাদে তৃতীয় দিনে লেনদেন আরও কমে হয়েছে ৮৪৭ টাকা ২০ পয়সা।
ফ্লোর উঠানোর আগে বৃহস্পতিবার লেনদেন ছিল আটটি। রোববার বেড়ে হয়েছে ২১টি। মঙ্গলবার লেনদেন বেড়ে হয়েছে ৮১৭টির।
মুন্নু অ্যাগ্রোর দর ফ্লোর প্রাইস ৭৯৪ টাকা ৮০ পয়সা থেকে দুই শতাংশ কমে হয় ৭৭৮ টাকা ৯০ পয়সা। মঙ্গলবার লেনদেন আরও কমে হয়েছে ৭৪৮ টাকা ২০ পয়সা।
ফ্লোরে থাকার শেষ দিন কোনো শেয়ার হাতবদল না হলেও রোববার লেনদেন হয়েছিল ৩১টি। মঙ্গলবার লেনদেন বেড়ে হয়েছে ৬০টি।
নর্দার্ন জুট কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস ছিল ৩২৪ টাকা ৯০ পয়সা। রোববার কোম্পানিটি দর হারায় ২ শতাংশ। এদিন ৩০৭টি শেয়ার হাতবদল হয় ৩১৮ দশমিক ৪০ পয়সায়। মঙ্গলবার শেয়ারদর ছিল ৩০৫ টাকা ৯০ পয়সা।
ফ্লোর উঠার দিন লেনদেন ছিল ১৮টি। মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৭৪৮টি।
ইস্টার্ন কেবলের ফ্লোর প্রাইস ছিল ১৪০ টাকা ১০ পয়সা। ২ টাকা ৮০ পয়সা বা ২ শতাংশ কমে রোববার দাম ছিল ১৩৭ টাকা ৩০ পয়সা। মঙ্গলবার লেনদেন হয় ১৩২ টাকায়।
ফ্লোর ওঠার আগের দিন ১১৬টি শেয়ার হাতবদল হলেও রোববার হাতবদল হয় এক হাজার ৫৪৫টি। আর মঙ্গলবার হাতবদল হয়েছে ২ হাজার ৯২১টি।
গত অর্থবছরে বিপুল পরিমাণ লোকসান দেয়া বাটা শুর ফ্লোর প্রাইস ৬৯৩ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন হচ্ছিল না বললেই চলে। ফ্লোর মুক্ত দিনে রোববার কোম্পানিটির ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ কমে দাম হয়েছিল ৬৭৯ দশমিক ৪০ পয়সা। মঙ্গলবার লেনদেন শেষে শেয়ার দর দাঁড়িয়েছে ৬৫২ টাকা ৬০ পয়সা।
বৃহস্পতিবার হাতবদল হয়েছেল ৭৯৯টি। রোববার হয়েছে দুই হাজার ১৯৭টি। মঙ্গলবার হাতবদল হয়েছে ৩ হাজার ৭১৯টি।
ওয়াটা ক্যামিকেলের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৩০৬ টাকা ৮০ পয়সা। ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ কমে রোববার দাম হয় ৩০০ টাকা ৭০ পয়সা। মঙ্গলবার লেনদেন শেষে শেয়ার দর দাঁড়িয়েছে ২৮৮ টাকা ৯০ পয়সা।
বৃহস্পতিবার ১১৬টি শেয়ার হাতবদল হলেও রোববার লেনদেন বেড়ে হয়েছিল এক হাজার ৫৪৮টি। মঙ্গলবার হাতবদল হয়েছে ৬ হাজার ৭২টি।
অ্যাপেক্স স্পিনিংয়ের দর ১৩০ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ কমে রোববার হয়েছিল ১২৩ টাকা ১০ পয়সা। ফ্লোরের শেষ দিন কোনো লেনদেন না হওয়া কোম্পানিটিরও জট খুলেছে।
রোববার দাম কমার পর হাতবদল হয় ৪০০টি। মঙ্গলবার হাতবদল হয়েছে ৮ হাজার ৭৬টি।
সিভিও পেট্রো কেমিক্যালের দাম ১১৫ টাকা ৪০ পয়সা থেকে রোববার ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ কমে হয়েছিল ১১৩ টাকা ১০ পয়সা। মঙ্গলবার লেনদেন শেষে শেয়ার দর দাঁড়ায় ১০৮ টাকা ৭০ পয়সা।
ফ্লোর প্রাইস ওঠার সিদ্ধান্তের দিন বৃহস্পতিবার মাত্র তিনটি শেয়ার হাতবদল হলেও ফ্লোর থেকে মুক্ত হওয়ার পর রোববার হাতবদল হয় ৪১১টি। মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছে ৪ হাজার ৪৮৪টি।
সোনালী পেপারের দাম ২৭৩ টাকা থেকে রোববার ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ কমে হয়েছে ২৬৭ টাকা ৬০ পয়সা। মঙ্গলবার লেনদেন শেষে শেয়ার দর হয়েছে ২৫৭ টাকা ১০ পয়সা। বৃ্হস্পতিবার ২০টি শেয়ার হাতবদল হলেও রোববার হয়েছিল দুটি। মঙ্গলবার হাতবদল হয়েছে ২১৪টি।
কে অ্যান্ড কে-এর দর ২০৭ টাকা ৪০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ কমে রোববার হয়েছিল ২০৩ টাকা ৩০ পয়সা। মঙ্গলবার হয়েছে ১৯৫ টাকা ৪০ পয়সা।
বৃ্হস্পতিবার হাতবদল হয়েছিল ৮৬৯টি। রোববার হয়েছিল একটি। মঙ্গলবার হাতবদল হয়েছে ২৪৩টি।
স্টাইলক্রাফটের দর ১৪৬ টাকা ৩০ পয়সা থেকে রোববার ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ কমে হয়েছিল ১৪৩ টাকা ৩০ পয়সা। মঙ্গলবার লেনদেন হয় ১৩৭ টাকা ৮০ পয়সা।
বৃহস্পতিবার ফ্লোর প্রাইসে ২ হাজার ৯৩টি শেয়ার লেনদেন হলেও রোববার হাতবদল হয় দ্বিগুণ। লেনদেন হয় চার হাজার ২৯২টি। মঙ্গলবার হাতবদল হয় ১৯ হাজার ৯৬৫টি।
বিডিঅটোকারের দর ১৪৭ টাকা ৩০ পয়সা থেকে রোববার ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ কমে হয়ে ১৪৪ টাকা ৪০ পয়সা। মঙ্গলবার লেনদেন হয় ১৩৮ টাকা ৮০ পয়সা। ফ্লোর প্রাইসের শেষ দিন বৃহস্পতিবার তিনটি শেয়ার হাতবদল হলেও মুক্ত হওয়ার পর রোববার হাতবদল হয় ৩৩৫টি। মঙ্গলবার হাতবদল হয়েছে ১ হাজার ৫৫৯টি।
সমতা লেদারের দর ফ্লোর প্রাইস ১০৬ টাকা ৯০ পয়সা থেকে রোববার ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ কমে হয়েছিল ১০৪ টাকা ৮০ পয়সা। মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছে ১০০ টাকা ৭০ পয়সায়।
বৃহস্পতিবার ফ্লোর প্রাইসে একটি শেয়ার লেনদেন হলেও রোববার হাতবদল হয় ১৭টি। মঙ্গলবার হাতবদল হয়েছে ১০৫টি।
আজিজ পাইপের দর ফ্লোর প্রাইস ৯৭ টাকা ৫০ পয়সা থেকে রোববার ১ দশমিক ৯৫ শতাংশ কমে হয়েছিল ৯৫ টাকা ৬০ পয়সা। মঙ্গলবার দর আরও কমে হয় ৯১ টাকা ৯০ পয়সা।
ফ্লোরে থাকার শেষ দিন বৃহস্পতিবার ৭১০ শেয়ার হাতবদল হলেও মুক্ত হওয়ার পর রোববার লেনদেন হয় ১ হাজার ৪৯৫টি। মঙ্গলবার হাতবদল হয়েছে ১১ হাজার ৩৫৯টি।
ন্যাশনাল টিউবের দর ১০৩ টাকা ১০ পয়সা থেকে রোববার ১ দশমিক ৯৪ শতাংশ কমে হয়েছিল ১০১ টাকা ১০ পয়সা। মঙ্গলবার শেয়ার প্রতি দর আরও এক ধাপ কমে হয়েছে ৯৭ টাকা ২০ পয়সা।
বৃহস্পতিবার ১৪১টি শেয়ার হাতবদল হলেও রোববার লেনদেন হয়েছিল ৭০৮টি। মঙ্গলবার হাতবদল হয়েছে ২ হাজার ৯৯টি।
ওরিয়ন ইনফিউশনের দর ৭২ টাকা ১০ পয়সা থেকে রোববার ১ দশমিক ৯৪ শতাংশ কমে হয় ৭০ টাকা ৭০ পয়সা। মঙ্গলবার শেয়ার প্রতি দর ছিল ৬৮ টাকা।
ফ্লোরে থাকার শেষ দিন ১০ হাজার শেয়ার হাতবদল হলেও রোববার হাতবদল হয়েছিল দুই হাজার ৩৭৪টি। মঙ্গলবার হাতবদল হয়েছে ২ হাজার ৫০৬টি।
ন্যাশনাল পলিমারের দর ৫৬ টাকা ৬০ পয়সা থেকে রোববার ১ দশমিক ৯৪ শতাংশ কমে হয়েছিল ৫৫ টাকা ৫০ পয়সা। মঙ্গলবার শেয়ার প্রতি দর ছিল ৫৩ টাকা ৪০ পয়সা।
ফ্লোরে থাকার শেষ দিন বৃহস্পতিবার হাতবদল হয় দুই লাখ ৫৩ হাজার ৩৫১টি। রোববার হাতবদল হয় ৩৮ হাজার ১০৯টি। মঙ্গলবার হাতবদল হয়েছে ৪ লাখ ৭২ হাজার ৮৩১টি।
এসকে ট্রিমসের দর ৬২ টাকা ২০ পয়সা থেকে রোববার ১ দশমিক ৯৩ শতাংশ কমে হয়েছে ৬১ টাকা। মঙ্গলবার আরেক দফা শেয়ার দর কমে লেনদেন হয় ৫৮ টাকা ৬০ পয়সায়।
ফ্লোরের শেষ দিন বৃহস্পতিবার একটি শেয়ারও লেনদেন না হওয়া কোম্পানিটির রোববার ১৬টি শেয়ার হাতবদল হয়েছিল। মঙ্গলবার হাতবদল হয় ২২৭টি।
লিগ্যাসি ফুটওয়ারের দর ৬২ টাকা ৯০ পয়সা থেকে রোববার ১ দশমিক ৯১ শতাংশ কমে হয় ৬১ টাকা ৭০ পয়সা। মঙ্গলবার শেয়ার প্রতি দর ছিল ৫৯ টাকা ৩০ পয়সা।
ফ্লোরে থাকার শেষ দিন বৃহস্পতিবার এটিরও কোনো শেয়ার লেনদেন হয়নি। তবে রোববার হাতবদল হয়েছিল ৮ হাজার ১১৯টি। মঙ্গলবার হাতবদল হয়েছে ৫ হাজার ৬৬৫টি।
সি পার্লের দর ফ্লোর প্রাইস ৭৯ টাকা ১০ পয়সা থেকে রোববার ১ দশমিক ৯০ শতাংশ কমে হয় ৭৭ টাকা ৭০ পয়সা। মঙ্গলবার শেয়ার প্রতি দর ছিল ৭৪ টাকা ৬০ পয়সা।
ফ্লোরে থাকার শেষ দিন বৃহস্পতিবার এটিরও কোনো শেয়ার লেনদেন হয়নি। রোববার হাতবদল হয়েছে ১১টি। মঙ্গলবার হাতবদল হয়েছে ৫টি।
হাক্কানি পাল্পের দর ফ্লোর প্রাইস ৭৪ টাকা থেকে রোববার ১ দশমিক ৮৯ শতাংশ কমে হয় ৭২ টাকা ৬০ পয়সা। মঙ্গলবার দর ছিল ৬৮ টাকা ৮০ পয়সা।
ফ্লোরে থাকার শেষ দিন বৃহস্পতিবার এক হাজার ১০১টি শেয়ার হাতবদল হলেও রোববার লেনদেন হয়েছিল ২২টি। মঙ্গলবার হাতবদল হয়েছে ১ হাজার ২৭৬টি।
কোহিনুর ক্যামিকেলের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৪৭২ টাকা ৮০ পয়সা। এর দরও রোববার ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ কমে হয় ৪৬৩ টাকা ৪০ পয়সা। মঙ্গলবার দর ছিল ৪৪৫ টাকা ২০ পয়সা।
ফ্লোরে থাকার শেষ দিন কোনো লেনদেন না হওয়া কোম্পানিটির জট খুলেছে। রোববার ৫১৬টি শেয়ার হাতবদল হয়েছিল। মঙ্গলবার হাতবদল হয়েছে ৫২টি।
মুন্নু সিরামিকের দর ১২৬ টাকা ৮০ পয়সা থেকে রোববার ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ কমে হয় ১২৪ টাকা ৩০ পয়সা। মঙ্গলবার লেনদেন হয় ১১৯ টাকা ৫০ পয়সায়।
ফ্লোর প্রাইসের শেষ দিন বৃহস্পতিবার ৭৪ শেয়ার হাতবদল হলেও মুক্ত হওয়ার পর রোববার হাতবদল হয়েছিল ১ হাজার ২৫১টি। মঙ্গলবার হাতবদল হয় ১ হাজার ১৪৫টি।
স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের দর ৩০৭ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ কমে রোববার হয় ৩০১ টাকা ৮০ পয়সা। মঙ্গলবার লেনদেন শেষে শেয়ার দর দাঁড়িয়েছে ২৮৯ টাকা ৯০ পয়সা।
বৃহস্পতিবার হাতবদল হয়েছিল ১২০টি শেয়ার, রোববার হাতবদল হয়েছে ৯২টি। মঙ্গলবার হাতবদল হয়েছে ১০৭টি।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (১৪ জুলাই) পুঁজিবাজারে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন কমেছে। ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, সোমবার (১৪ জুলাই) ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৪ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৬১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১ পয়েন্ট বেড়ে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৮ পয়েন্ট কমে যথাক্রমে ১১০৪ ও ১৯০০ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
এদিন ডিএসইতে ৫৬৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে, যা আগের কার্যদিবসের চেয়ে ১০০ কোটি টাকা কম। আগের দিন ডিএসইতে ৬৬৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছিল।
সোমবার (১৪ জুলাই) ডিএসইতে ৩৯৫টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫৬টি কোম্পানির, কমেছে ১৬৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৭৬টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দর।
এদিন লেনদেনের শীর্ষে থাকা ১০টি প্রতিষ্ঠান হলো- ব্র্যাক ব্যাংক, খান ব্রাদার্স, বিচ হ্যাচারি, বিএটিবিসি, সী পার্ল, ওরিয়ন ইনফিউশন, ইসলামী ব্যাংক, আলিফ ইন্ডাস্ট্রি, রহিমা ফুড ও মিডল্যান্ড ব্যাংক।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক সূচক সিএএসপিআই সোমবার (১৪ জুলাই) ২৮ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৪ হাজার ৯৭ পয়েন্টে। এদিন সিএসইতে হাত বদল হওয়া ২৩৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ১০৮টির, কমেছে ৯৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩২টি কোম্পানির শেয়ার দর।
সোমবার (১৪ জুলাই) সিএসইতে ৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিনের চেয়ে প্রায় ১ কোটি টাকা কম। আগের দিন সিএসইতে ৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছিল।
প্রথমবারের মতো নিলামের মাধ্যমে রোববার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে ১৭ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
রেমিট্যান্স প্রবাহ ও রপ্তানি আয় বাড়ার ফলে মার্কিন ডলারের দাম টাকার তুলনায় গত এক সপ্তাহ ধরে কমছে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে।
এই ডলার কেনার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি ডলারের দাম ১২১ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করেছে, যা বেশিরভাগ ব্যাংকের দেওয়া প্রায় ১২০ টাকা দামের চেয়ে বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাসস’কে জানান, টাকার বিপরীতে ডলারের দাম স্থির রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ডলার কিনেছে।
তিনি বলেন, যদি ডলারের বিনিময় হার টাকার তুলনায় বেড়ে যায়, তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক একইভাবে নিলামের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করবে।
তিনি আরও বলেন, টাকার বিপরীতে ডলারের বিনিময় হার যেন স্থির থাকে, সেটা নিশ্চিত করতে প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ ব্যাংক যেকোনো সময় বাজারে হস্তক্ষেপ করতে পারে।
একটি শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন ট্রেজারি কর্মকর্তা জানান, রোববার প্রতি ডলারের বিনিময় হার ছিল ১২০ টাকা। আজ তা বেড়ে ১২১ টাকা ৫০ পয়সায় পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রোববার অধিকাংশ ব্যাংক প্রতি ডলারের বিনিময় হার প্রায় ১২০ টাকা নির্ধারণ করেছিল। এক সপ্তাহ আগে এই হার ছিল ১২৩ টাকারও বেশি।
চীনের রপ্তানি ৫.৮ শতাংশ বেড়েছে গত জুন মাসে, যা পূর্বাভাসের চেয়েও ভালো ফলাফল। এ সময় ওয়াশিংটন ও বেইজিং পরস্পরের ওপর আরোপিত উচ্চ শুল্ক কমাতে একটি প্রাথমিক চুক্তিতে পৌঁছায়।
বেইজিং থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
চীনের শুল্ক প্রশাসনের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, জুনে রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫.৮ শতাংশ বেড়েছে। যদিও অর্থনীতিবিদদের নিয়ে ব্লুমবার্গের করা সমীক্ষায় ৫ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল।
এছাড়া, একই মাসে চীনের আমদানিও ১.১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সেটিও পূর্বাভাস দেওয়া ০.৩ শতাংশের চেয়ে ভালো।
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ের প্রথম ১২ দিনে ১০৭ কোটি ১০ লাখ (১.০৭ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন বিভিন্ন দেশে বসবাস করা প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ (এক ডলার ১২১ টাকা ধরে) প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, জুলাইয়ের প্রথম ১২ দিনে ১০৭ কোটি ১০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। যা গত বছরের একই সময়ে আসে (২০২৪ সালের জুলাইয়ের ১২ দিন) ৯৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার। সে হিসাবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১২ কোটি ৩০ লাখ ডলার বা প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বেশি এসেছে।
এর আগে সদ্যবিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষ মাস জুনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে পাঠিয়েছেন প্রায় প্রায় ২৮১ কোটি ৮০ লাখ (২.৮২ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স। দেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৩৪ হাজার ৪০৪ কোটি টাকার বেশি। আর প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ৯ কোটি ৪০ লাখ ডলার বা ১ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা।
এটি একক মাস হিসেবে তৃতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। এর আগে মে মাসে দেশে এসেছে ২.৯৭ বিলিয়ন ডলার, যা ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
অন্যদিকে বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে জুন পর্যন্ত পুরো সময়ে মোট ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে এসেছে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে এসেছে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার, মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার, এপ্রিলে আসে ২৭৫ কোটি ডলার, মে মাসে এসেছে ২৯৭ কোটি ডলার এবং সবশেষ জুন মাসে এসেছে ২৮২ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স।
কানাডা থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ১ আগস্ট থেকে এ শুল্ক কার্যকর হবে।
বৃহস্পতিবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নিকে পাঠানো এক চিঠিতে তিনি এই কথা জানান।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, সোমবার থেকে এ পর্যন্ত ট্রাম্পের এমন ধরনের ২০টিরও বেশি চিঠি গেছে বিশ্বের নানা দেশের নেতার কাছে। চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের অংশ হিসেবেই এসব পদক্ষেপ নিচ্ছেন তিনি।
কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে একটি বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আগামী ২১ জুলাইয়ের মধ্যে সমঝোতায় পৌঁছানোর লক্ষ্য রয়েছে। তবে ট্রাম্পের সর্বশেষ এই হুমকিতে আলোচনার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
একইসঙ্গে কানাডা ও মেক্সিকো উভয়ই ট্রাম্পকে সন্তুষ্ট করতে চেষ্টা করছে, যাতে উত্তর আমেরিকার তিন দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (ইউএসএমসিএ) আবার সঠিক পথে ফিরে আসে।
২০২০ সালের জুলাইয়ে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে পুরোনো (নাফটা) বাতিল করে ইউএসএমসিএ চালু করা হয়। ২০২৬ সালের জুলাইয়ে এর পরবর্তী পর্যালোচনা হওয়ার কথা। তবে দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে ট্রাম্প নানা দেশে শুল্ক আরোপ করে পর্যালোচনার প্রক্রিয়াই অস্থির করে তুলেছেন।
শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র ২৫ শতাংশ শুল্ক বসায় কানাডা ও মেক্সিকোর বহু পণ্যের ওপর। কানাডার জ্বালানির ক্ষেত্রে অবশ্য কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়।
বাণিজ্যের পাশাপাশি অবৈধ অভিবাসন ও মাদক পাচার ঠেকাতে যথেষ্ট উদ্যোগ না নেওয়ার অভিযোগে প্রতিবেশী এ দুই দেশকে একাধিকবার সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প।
তবে পরবর্তীতে ইউএসএমসিএ চুক্তির আওতায় থাকা পণ্যের ক্ষেত্রে তিনি ছাড় দেন, যার ফলে বড় পরিসরের পণ্য শুল্কমুক্ত হয়।
বৃহস্পতিবারের চিঠিটি এমন এক সময় এলো, যখন ট্রাম্প ও কার্নির মধ্যে সম্পর্ক কিছুটা উষ্ণ হচ্ছিল। এমনকি এর আগে কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য বানানো নিয়েও মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প।
গত ৬ মে কানাডার প্রধানমন্ত্রী হোয়াইট হাউসে এসে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন। এর পরের মাসে কানাডায় অনুষ্ঠিত জি-৭ সম্মেলনেও আবার দেখা হয় দুই নেতার। সম্মেলনে ট্রাম্পকে বাণিজ্যযুদ্ধ থেকে সরে আসার আহ্বান জানান বিশ্বনেতারা।
এ ছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর কানাডা যে কর আরোপ করেছিল, তা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেয়। এর ফলে ট্রাম্প আলোচনার টেবিল ত্যাগ করলেও পরে আবার আলোচনা শুরুর পথ খুলে যায়।
অন্যদিকে, এনবিসি’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, যেসব দেশকে এখনো এ ধরনের চিঠি পাঠানো হয়নি, তাদের ওপরও ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের বিষয়টি বিবেচনায় আছে। সেটিও কার্যকর হবে ১ আগস্ট থেকে।
তিনি জানান, ব্রাজিলের জন্য সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে, যদি এর আগেই কোনো সমঝোতা না হয়।
এনবিসি’কে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭ টি দেশের উদ্দেশে চিঠি পাঠানো হবে ‘আজ বা আগামীকাল (শুক্রবার)’।
এদিকে, ট্রাম্পের হুমকির পর বৃহস্পতিবার ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা বলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী। তবে দেশটি পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনা করছে।
ট্রাম্পের পাঠানো চিঠিতে ব্রাজিলের সাবেক ডানপন্থি প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর প্রতি আচরণ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে।
খুলনা অঞ্চলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পাট, পাটজাত পণ্য, চিংড়ি, সবজি ও ফলমূল রপ্তানি করে আয় হয়েছে ৫ হাজার ৯৭১ কোটি ৪০ লাখ টাকা।রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) দেওয়া তথ্যমতে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে বিদেশে নতুন বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হওয়ায় খুলনা থেকে পাট, পাটজাত পণ্য এবং চিংড়ি রপ্তানি বেড়েছে।
ইপিবি আরও জানায়, বিশ্ব অর্থনীতির উন্নতির কারণেও রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত খুলনা অঞ্চলের রপ্তানি আয় ছিল ৫ হাজার ৩৭৬ কোটি ১৭ লাখ টাকা। আর চলতি অর্থবছরে একই সময়ে আয় দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৯৭১ কোটি টাকায়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট ১৩ হাজার ১৯ দশমিক ৮০ টন হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি করে আয় হয়েছে ১ হাজার ৯৯০ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
এছাড়া কুচিয়া, কাঁকড়া, সবজি, কাঁচা পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানিও বেড়েছে।
মাসভিত্তিক রপ্তানি আয়ের হিসাবে দেখা যায়, খুলনা অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা জুলাইয়ে ৫১৭ কোটি ৬৮ লাখ, আগস্টে ৪৪৭ কোটি ৫৩ লাখ, সেপ্টেম্বরে ৬০১ কোটি ৯৮ লাখ, অক্টোবরে ৫৬৬ কোটি ৯৬ লাখ, নভেম্বরে ৫২৩ কোটি ১৩ লাখ, ডিসেম্বরে ৪৫৭ কোটি ৩৭ লাখ, জানুয়ারিতে ৪২৩ কোটি ৬৫ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ৪০২ কোটি ৫২ লাখ, মার্চে ৪৩৮ কোটি ৯১ লাখ, এপ্রিলে ৫৫০ কোটি ৮৭ লাখ, মে মাসে ৬১১ কোটি ৬৯ লাখ এবং ২০২৫ সালের জুনে ৪২৯ কোটি ১১ লাখ টাকার পণ্য রপ্তানি করেছেন।
খুলনা ইপিবির পরিচালক জিনাত আরা জানান, বৈশ্বিক অর্থনীতির উন্নতি, বৈদেশিক মুদ্রার স্থিতিশীলতা এবং বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ফিরে আসায় রপ্তানি বেড়েছে।
তিনি বলেন, ‘পূর্ববর্তী সরকারের আমলে সরকারি পাটকল ও চিংড়ি কারখানা বন্ধসহ নানা কারণে খুলনা অঞ্চলের রপ্তানি কমে গিয়েছিল।’
পাট ও বস্ত্র উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন সম্প্রতি খুলনা সফর করেছেন উল্লেখ করে তিনি জানান, খুলনা অঞ্চল পাট, চিংড়ি ও অন্যান্য পণ্য রপ্তানিতে তার আগের গৌরব ফিরে পাবে। সরকার বন্ধ থাকা পাটকলগুলো বেসরকারি খাতে ইজারা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে, যাতে সেগুলো পুনরায় চালু করা যায়।
বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএফইএ)’র সাবেক সহ-সভাপতি মো. আবদুল বাকী বাসসকে বলেন, ‘খুলনার ব্যবসায়ীরা মনে করছেন দেশে অনুকূল ব্যবসায়িক পরিবেশের কারণে চিংড়ি, পাট, পাটজাত পণ্য ও অন্যান্য পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
তিনি আরও জানান, খুলনায় মোট ৬৩টি চিংড়ি প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা থাকলেও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে উৎপাদন ও বৈদেশিক চাহিদা কমে যাওয়ায় ৩৩টি কারখানা বন্ধ হয়ে যায়।
যোগাযোগ করা হলে পাট ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ পাট অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএ)-এর সাবেক সহ-সভাপতি ও পাট ব্যবসায়ী শরীফ ফজলুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববাজারে কাঁচা পাট ও পাটজাত পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। খুলনায় এর বড় সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ সরকারের নীতির তীব্র সমালোচনা করে তিনি অভিযোগ করেছেন, পতিত সরকার দেশের পাট খাত ধ্বংস করে দিয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ আজ বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিরীক্ষক এবং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের আর্থিক প্রতিবেদন ও নিরীক্ষায় আরও স্বচ্ছতা ও সততা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগকারীরা যখন একটি দেশের ব্যবসা পরিবেশ সম্পর্কে স্পষ্ট ও নির্ভরযোগ্য তথ্য পান, তখন তারা সেই অর্থনীতিতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হন।’
রাজধানীর একটি হোটেলে ‘অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড অডিটিং সামিট’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিশ্বব্যাংক এবং ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (এফআরসি) যৌথভাবে ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক শাসনে এফআরসি’র ভূমিকা’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ. মনসুর, ঢাকাস্থ বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর সৌলেমানে কুলিবালি এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।
অর্থসচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এবং ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (এফআরসি) চেয়ারম্যান ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন ভূঁইয়া মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে নিরীক্ষা ও হিসাবরক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে যারা এসব কাজে জড়িত তাদের স্বচ্ছতা ও সততা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ।
ড. আহসান এইচ. মনসুর বলেন, দেশীয় ও বিদেশি উভয় বিনিয়োগকারীর আস্থা অর্জনের জন্য ব্যাংকগুলোর নিরীক্ষা প্রতিবেদন স্বচ্ছভাবে এবং যথাযথ তথ্যসহ উপস্থাপন করা উচিত।
তিনি বলেন, একটি সুদৃঢ়, সহনশীল ও ভবিষ্যতমুখী আর্থিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে দেশের সব ব্যাংকে রিস্ক-বেসড সুপারভিশন (আরবিএস) চালু করা হবে।
মূল প্রবন্ধে এফআরসি চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, বাংলাদেশ যখন একটি উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশের পথে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন সুসংগঠিত প্রতিষ্ঠান ও সুশাসন কাঠামোর প্রয়োজনীয়তা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি।
তিনি বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল একটি সুস্পষ্ট ম্যান্ডেট নিয়ে কাজ করছে যা আর্থিক প্রতিবেদন, নিরীক্ষা, মূল্যায়ন এবং সঠিক মানদণ্ডে সততা, শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে।’
তিনি আরও বলেন, এফআরসি চায় সব পক্ষ যেন পূর্ণ প্রকাশসহ সত্য আর্থিক প্রতিবেদন প্রস্তুত করে, যাতে অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা বজায় থাকে এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) প্রকৃত ও কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব—আয়কর ও ভ্যাট—সংগ্রহ করতে পারে।
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘ভুয়া বা মিথ্যা আর্থিক প্রতিবেদনই কর ফাঁকি ও কর এড়ানোর প্রধান হাতিয়ার।’
মন্তব্য