৫০ বছর আগে ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল বাংলাদেশ। তখনকার সময়ে অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী প্রতিবেশী দেশ ছিল পাকিস্তান। আর কেবল যুদ্ধ আর দুর্ভিক্ষের মধ্য দিয়ে সদ্য জন্ম নেয়া বাংলাদেশ তার স্বাধীন মানচিত্র হাতে পেয়েছিল।
মুক্তিযুদ্ধের সময় লাখ লাখ বাঙালি পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীর নৃশংসতা থেকে বাঁচতে তখনকার পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ) থেকে আশ্রয় নিয়েছিল দক্ষিণ এশিয়ার আরেকটি সমৃদ্ধ দেশ ভারতে।
পাকিস্তানের মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্র স্বাধীনতা-পরবর্তী যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বলেছিল এটি ধ্বংসের পথে রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার এ দেশকে তুলনা করেছিলেন তলাবিহীন ঝুড়ির সঙ্গে।
এ সময় প্রথমবারের মতো যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের সহায়তায় জর্জ হ্যারিসন ও রবি শংকর আয়োজন করেছিলেন কনসার্টের।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে, চলতি মাসে বাংলাদেশের মন্ত্রিপরিষদ সচিব সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, গত কয়েক বছরে দেশটির মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বেড়েছে ৯ শতাংশ হারে। এর ফলে দেশটির মাথাপিছু আয় বেড়ে হয়েছে ২,২২৭ ইউএস ডলারে।
অন্যদিকে, একসময় অনেক এগিয়ে থাকা পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় চলতি বছর দাঁড়িয়েছে ১,৫৪৩ ইউএস ডলারে।
যুদ্ধের সময়ে পশ্চিম পাকিস্তান (বর্তমানে পাকিস্তান) পূর্ব-পাকিস্তানের (বর্তমানে বাংলাদেশ) চেয়ে ৭০ শতাংশ বেশি ধনী ছিল। বর্তমানে বাংলাদেশ পাকিস্তানের চেয়ে ৪৫ শতাংশ বেশি ধনী দেশে পরিণত হয়েছে।
প্রেক্ষাপটের এমন পটপরিবর্তনে, পাকিস্তানের এক অর্থনীতিবিদ সম্প্রতি জানিয়েছেন, হয়তো ২০৩০ সালে বাংলাদেশের কাছে সহায়তা চাইতে হতে পারে পাকিস্তানকে।
মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গে প্রকাশিত মতামতে এমনটি জানিয়েছেন ভারতীয় অর্থনীতিবিদ ও কলামিস্ট মিহির শর্মা।
ভারতের বদ্ধমূল ধারণা ছিল অর্থনৈতিক বিবেচনায় দক্ষিণ এশিয়ায় এগিয়ে রয়েছে দেশটি। তবে বর্তমানে এই শক্তিধর ভারতকেও মাথাপিছু আয়ের হিসাবে পেছনে ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশ। চলতি বছর ভারতের মাথাপিছু আয় রেকর্ড করা হয়েছে মাত্র ১,৯৪৭ ইউএস ডলার।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বেড়ে হয়েছে ২,২২৭ ইউএস ডলার।
তবে এমনটি প্রত্যাশা করা ঠিক হবে না যে, এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের প্রশংসা করবে ভারত।
ডানপন্থি ভারতীয় রাজনীতিবিদরা বাংলাদেশকে দরিদ্র দেশ হিসেবে দেখাতে ব্যস্ত। তারা দাবি করেন, সীমান্ত পাড়ি দিয়ে অবৈধ পথে অভিবাসীরা বাংলাদেশ থেকে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করছে।
কিন্তু বাস্তবতা তাদের দাবির পুরো উল্টো। হিন্দু জাতীয়তাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা ভারতের সীমান্তবর্তী বঞ্চিত রাজ্যগুলোর চেয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন অনেক এগিয়ে।
যুক্তরাজ্যের পিছিয়ে পড়া অঙ্গরাজ্য মিসিসিপিতে ছুটে যাচ্ছেন কানাডার নাগরিকরা। এমন তথ্যের যেমন কোনো বাস্তব সত্যতা নেই, ঠিক তেমনটি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতে বাংলাদেশিরা ছুটে যাচ্ছেন, এমন তথ্যের কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
আর সম্ভবত এ কারণেই ভারতের জিডিপির ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সেখানকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে ভারতকে ছাড়িয়ে যাবার সংবাদ খুব একটা গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করা হয়নি। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির ধারাবাহিক উন্নতি বাংলাদেশিদের মাঝে এমন আত্মবিশ্বাস অর্জনে সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে।
বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ও উন্নতির ধারাবাহিকতা মূলত তিনটি মূল ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। এগুলো হচ্ছে রপ্তানি, সামাজিক উন্নয়ন ও অর্থ ব্যবস্থাপনায় সক্ষমতা।
২০১১ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত প্রতিবছর বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়েছে ৮ দশমিক ৬ শতাংশ হারে। যেখানে বিশ্বব্যাপী রপ্তানিতে গড় প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। রপ্তানিতে বাংলাদেশের এমন অসামান্য সফলতার পেছনে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল পোশাক খাতের।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের শ্রমবাজারে নারীর অংশগ্রহণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। তবে ভারত ও পাকিস্তানে দেখা গেছে উল্টো চিত্র। সেখানে নারীর অংশগ্রহণের হার নিচের দিকে নামছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতি যখন আরও পরিপক্ব হবে, তখন বিভিন্ন পরিবর্তনশীল অবস্থার সঙ্গে সহজে খাপ খাওয়ার সক্ষমতাও বাড়বে দেশটির। যেমনটি হয়েছে ভিয়েতনামসহ অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে। তখন পোশাক খাতের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের উচ্চ চাহিদাসম্পন্ন পণ্যের রপ্তানিতে আরও মনোযোগী হতে হবে দেশটিকে।
ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এখনই বাংলাদেশ সরকারকে পরবর্তী দশকগুলো সামনে রেখে কৌশলগত ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি কীভাবে আরও সহজে বিশ্বায়নের সঙ্গে মিশে গিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখা যায় তার উপায় বের করতে হবে।
বিশেষ সুবিধা জিএসপির মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার আগে থেকেই উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় পর্যায়ে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি সই করা শুরু করতে হবে বাংলাদেশকে।
দেশটির ১৬ কোটির বেশি মানুষ উর্বর একটি ব-দ্বীপে বসবাস করছে, যেখানকার জনসংখ্যার ঘনত্ব ভ্যাটিকান সিটির চেয়েও বেশি। ধারাবাহিক উন্নতির ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ অবশ্যই হয়ে উঠবে দক্ষিণ এশিয়ায় অদম্য এক শক্তি আর জ্বলজ্বলে নক্ষত্রে।
আরও পড়ুন:রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আঞ্চলিক কার্যালয় স্থানান্তরের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অফিসটি সরিয়ে মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদ সংলগ্ন মোহাম্মদপুর কমিউনিটি সেন্টারে নেয়া হচ্ছে। এই কমিউনিটি সেন্টারে হবে ডিএনসিসি’র অঞ্চল-০৫ এর অস্থায়ী আঞ্চলিক কার্যালয়।
বৃহস্পতিবার সকালে আঞ্চলিক কার্যালয়ের মালামাল স্থানান্তরের কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়।
কারওয়ান বাজারে ডিএনসিসির আঞ্চল-৫ এর কার্যালয়ের সামনে সকালে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাকাব্বীর আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ডিএনসিসির কার্যালয় স্থানান্তরের মাধ্যমে কারওয়ান বাজারের স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। ঈদের আগে অফিসের সবকিছু সরিয়ে নেয়া হবে এবং ঈদের পর ভবনটি ভাঙা হবে। ঈদের পর ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবনে থাকা ১৭৬টি দোকান গাবতলীতে সরিয়ে নেয়া হবে। একইসঙ্গে অস্থায়ী আরও ১৮০টি দোকান গাবতলীতে স্থানান্তর করা হবে।’
প্রসঙ্গত, কারওয়ান বাজার থেকে ডিএনসিসির পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবন থেকে সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক কার্যালয়সহ দোকানপাট স্থানান্তরের বিষয়ে ১৮ মার্চ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে ডিএনসিসি। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
সভায় ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদের পর কারওয়ান বাজারে ডিএনসিসির পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙে ফেলা হবে। কারণ যেকোনো সময় এটি ধসে পড়তে পারে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কারণে বহু মানুষের জীবন হুমকিতে রয়েছে। কারওয়ান বাজারের পাইকারি কাঁচাবাজারের এই ব্যবসায়ীদের গাবতলিতে ডিএনসিসির পাইকারি কাঁচাবাজারে স্থানান্তর করা হবে।’
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মালিকানাধীন কোনো স্থানে ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ না করতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বৃহস্পতিবার সংস্থাটির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান এ সংক্রান্ত নির্দেশনা মাঠ পর্যায়ে পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে-
(ক) কমিশন ভোট গ্রহণের তারিখের অন্যূন ১৫ দিন আগে চূড়ান্ত তালিকা সরকারি গেজেটে প্রকাশ করবে এবং প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে যেসব এলাকার ভোটারগণ ভোটদান করবেন সেসব এলাকার নামও চূড়ান্ত তালিকায় উল্লেখ করতে হবে। তবে শর্ত থাকে যে, ওই চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পরও বিশেষ পরিস্থিতিতে কমিশন যেকোনো ভোটকেন্দ্র পরিবর্তন করতে পারবে।
(খ) রিটার্নিং অফিসার প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটকেন্দ্রের তালিকা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট উপজেলার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোটকেন্দ্রের ব্যবস্থা করবেন।
(গ) সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয় এরূপ স্থানকে ভোটকেন্দ্র হিসেবে নির্ধারণ করা যাবে না।
(ঘ) পুরুষ ও মহিলা ভোটারগণ যাতে পৃথকভাবে ভোট প্রদান করতে পারেন সে উদ্দেশ্যে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে প্রয়োজনীয়সংখ্যক ভোট কক্ষের ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং প্রতিটি ভোট কক্ষে ভোট চিহ্ন প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্থান রাখতে হবে।
(ঙ) কোনো প্রার্থীর মালিকানাধীন বা নিয়ন্ত্রণাধীন কোনো স্থানে কোনো ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা যাবে না।
(চ) প্রার্থিতা চূড়ান্তকরণের পর কোনো প্রার্থীর মালিকানাধীন বা নিয়ন্ত্রণাধীন কোনো ভোটকেন্দ্র স্থাপিত হয়ে থাকলে কমিশন তা পরিবর্তন করতে পারবে।
(ছ) প্রত্যেক ভোটকেন্দ্রের প্রতিটি ভোট কক্ষে ভোট চিহ্ন প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক গোপন কক্ষ থাকবে।
উপজেলা নির্বাচনে ছুটির দিনেও অফিস খোলা রাখার নির্দেশ
উপজেলা পরিষদে প্রথম ধাপের নির্বাচন উপলক্ষে সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও অফিস খোলা রেখে কাজ করার জন্য মাঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বৃহস্পতিবার ইসি থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা মাঠ পর্যায়ের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিনে অফিস খোলা রেখে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনার ব্যবস্থা করতে হবে।
আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে ১৫২ উপজেলা পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপের নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৫ এপ্রিল। মনোনয়নপত্র বাছাই ১৭ এপ্রিল। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল, আর ভোট গ্রহণ হবে ৮ মে।
নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিল আবেদন নিষ্পত্তি করবেন আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে জেলা প্রশাসক।
মোট চার ধাপে অনুষ্ঠেয় ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পরবর্তীতে তিন ধাপের ভোটগ্রহণ ২৩ ও ২৯ মে এবং ৫ জুন অনুষ্ঠিত হবে। দেশে মোট উপজেলার সংখ্যা ৪৯৫টি।
আরও পড়ুন:ঈদের পর সমাধান করা হবে- স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এমন আশ্বাসে এক মাসের জন্য আন্দোলন থামালেন বেতন-ভাতা বাড়ানো ও বকেয়া ভাতা পরিশোধসহ চার দফা দাবিতে কর্মবিরতি কর্মসূচি পালনকারী পোস্ট গ্রাজুয়েট ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চিকিৎসকরা যে দাবিগুলো করেছেন সেগুলো যৌক্তিক। চিকিৎসকরা হাসপাতালকে বাঁচিয়ে রাখে। তাদের বেতন বাড়ানোর বিষয়ে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, চিকিৎসকদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন হবে। তারা কাজে যোগদান করুক।’
বিষয়টি কতদিনে বাস্তবায়িত হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কিছুদিন তো লাগবেই। তবে ঈদের পর হয়তো বলতে পারব, কতদিনের মধ্যে বেতন বাড়বে।’
এর আগে গত শনিবার (২৩ মার্চ) চার দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন করেন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না বলেই স্বাধীনতার মর্মার্থকে অকার্যকর করতে চায়।
বৃহষ্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি একথা বলেন। বিএনপি নেতাদের মিথ্যা, বানোয়াট ও দুরভিসন্ধিমূলক বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতে এই বিবৃতি দেয়া হয়। খবর বাসসের
ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের প্রত্যেক মানুষ এখন স্বাধীনতার সুফল পাচ্ছে। অগণতান্ত্রিক ও উগ্র-সাম্প্রদায়িক অপশক্তির প্রতিভূ বিএনপির ফ্যাসিবাদী দর্শনে জনগণ কখনো সাড়া দেয়নি, দেবেও না। তাই বিএনপি সর্বদা জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
তিনি বলেন, পাকিস্তানি ভাবাদর্শকে পুঁজি করে রাজনীতি করা বিএনপির একান্ত কাম্যই হলো যে কোনো উপায়ে ক্ষমতা দখল, জনকল্যাণ নয়। তারা ক্ষমতায় গিয়ে নিজেদের আখের গুছিয়ে নিয়েছিল। বাংলার জনগণ তাদের দ্বারা প্রতারণার শিকার হয়েছিল। সুতরাং বাংলার জনগণ এই প্রতারক গোষ্ঠীকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
‘বিএনপি নেতাকর্মীদের ঘর-বাড়ি, ব্যবসা-বাণিজ্য দখল করে নেয়া হচ্ছে’- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তিনি (মির্জা ফখরুল) সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য-প্রমাণ না দিয়ে ঢালাওভাবে বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বক্তব্য দিয়েছেন। বরং আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, বিএনপির নেতাকর্মীরা বহাল তবিয়তে ব্যবসা-বাণিজ্য করছে। কোথাও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে লাখ লাখ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে ঘর-বাড়ি ছাড়তে হয়েছিল, নৌকায় ভোট দেওয়ার অপরাধে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নির্মম অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল। বিএনপি-জামাতের ক্যাডারবাহিনী দ্বারা হাজার হাজার নারী ধর্ষিত হয়েছিল। সারা দেশে আওয়ামী লীগের ২১ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের পথ-পরিক্রমায় বাঙালি জাতি ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সশস্ত্র লড়াইয়ের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করে। স্বাধীনতা অর্জনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পরিচালিত হতে থাকে।
তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের ভিত্তিতে জাতিকে সংবিধান উপহার দেন। ধর্মের ভিত্তিতে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর খুনি জিয়া-মোশতাক চক্র মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধূলিসাৎ করে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান নিজের অবৈধ ও অসাংবিধানিক ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে ধর্মের কার্ড ব্যবহার করে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি প্রচলন করে। স্বৈরাচার জিয়া রাষ্ট্র ও সমাজের সকল স্তরে সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষের বীজ বপন ও উগ্র-সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করে। তখন থেকে বিভেদের রাজনীতির গোড়াপত্তন হয়। বিরোধী দল বিশেষ করে আওয়ামী লীগকে নির্মূল করার লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় অত্যাচার-নির্যাতনের স্টিম রোলার চালানো হয়।
মানিকগঞ্জ শহরের প্রবেশপথে যানজট নিরসনে ও পথচারীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
পৌরসভা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড ও পৌর সুপার মার্কেটের সামনের সড়ক ও ফুটপাত থেকে শতাধিক হকার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান করা হয়।
প্যানেল মেয়র তসলিম মিয়া জানান, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অস্থায়ী কিছু ব্যবসায়ীরা ফুটপাত ও সড়কের একাংশ দখল করে ব্যবসা করে আসছেন। এতে করে শহরে যানজটের সৃষ্টি হয় এবং পথচারীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। পথচারীদের সুবিধার্থে যানজট দূর করতেই এই উচ্ছেদ অভিযান।
উচ্ছেদ অভিযানে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জহিরুল আলম, পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ মো. তসলিম মিয়া ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর রাজিয়া সুলতানাসহ থানা পুলিশ ও পৌরসভার কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠির রাজাপুরে নদীর তীর থেকে এক ভ্যানচালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।
স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো যুবকের মামুন হোসেন, যার বয়স ২৫ বছর। তিনি রাজাপুরের পশ্চিম সাতুরিয়া গ্রামের মোকসেদ আলীর ছেলে।
ভ্যানচালক মামুন দুই দিন আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন জানিয়ে রাজাপুর থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, ‘স্থানীয়দের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে সাতুরিয়া গ্রামের ইদুরবাড়ি এলাকায় কচা নদীর তীর থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেয়া হয়। লাশের ময়নাতদন্তসহ পরবর্তী সময়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে, তবে এটি হত্যা নাকি দুর্ঘটনা, সেটি তদন্তে বের হবে।’
এ পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কেউ অভিযোগ করেনি। সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পূর্ব পূয়ালী গ্রামের আব্দুর রহিম হাওলাদারের একমাত্র ছেলে রাব্বি হাওলাদার।
২৫ বছর বয়সী রাব্বির দুটি কিডনিই নষ্ট। ডাক্তারের পরামর্শ তার কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে। বর্তমানে তার চিকিৎসার জন্য প্রায় ১০ লাখ টাকার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
রাব্বির কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য এতো টাকা লাগবে শোনার পর থেকেই তার কৃষক বাবা সাহায্যের জন্য ছুটছেন চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ স্থানীয় বিত্তবানদের কাছে। কেন না তার সবকিছুই বিক্রি করে দিলেও এক থেকে দেড় লাখ টাকার বেশি জোগাড় করার সামর্থ্য হচ্ছে না।
রাব্বি বর্তমানে ঢাকার মিরপুর কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এমন অবস্থায় কৃষক বাবা তার সন্তানকে বাঁচাতে দেশবাসীর কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন। দেশের বিত্তবানরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেই হয়ত বেঁচে যাবে তার সন্তান।
রাব্বির পরিবার সূত্রে জানা যায়, রাব্বি হাওলাদার কয়েক মাস আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (সেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে যান তার পরিবার। সেখানে চিকিৎসক তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলেন রাব্বির দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। পরে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত চিকিৎসা চলছিল রাব্বির, কিন্তু কিছুদিন আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে মিরপুর কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এরই মধ্যে প্রায় আড়াই লাখ টাকার ওপরে শুধু হাসপাতাল ও ওষুধের বিল দিতে হয়েছে। দরিদ্র এই পরিবারটি আত্মীয়স্বজনসহ সবার সহায়তায় ওই বিল দেয়া সম্ভব হয়।
রাব্বির মা রেভা বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘এভাবে আর কয়দিন চিকিৎসা করাতে পারব জানি না। কারণ আমাদের সামর্থ্য শেষ হয়ে এসেছে। শুধু টাকার অভাবে তাকে ভালো কোনো হাসপাতালেও নিতে পারছি না, কিন্তু কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য অপারেশনের ধকল সহ্য করার মতো সুস্থ অবস্থায় আনা খুব জরুরি।’
রাব্বির বাবা আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে সবার কাছে অনুরোধ করা হচ্ছে আপনাদের ভালোবাসা ও সাহায্য আমাদের খুব প্রয়োজন। কারণ শুধু টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় আমার একমাত্র ছেলে অকালে ঝরে যাবে তা আমার জীবন থাকতে মানতে পারছি না।’
তাকে কেউ সাহায্য করতে চাইলে ০১৯৯৭-২২৮৯৭৫ ও ০১৯৮৭-৩৬৬৫৬৮ (বিকাশ-পার্সোনাল) নাম্বারে পাঠাতে পারেন ও যোগাযোগ করতে পারেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য