পুঁজিবাজারে মঙ্গলবার বেশির ভাগ সময় সূচক ছিল ছয় হাজার পয়েন্টে। তবে লেনদেন শেষে সূচকের সামান্য উত্থানে শেষ হয়েছে দিনের কার্যক্রম।
লেনদেন আগের দিনের তুলনায় বাড়লেও সূচকের উত্থানে বড় ভূমিকা রাখতে পারেনি ব্যাংক খাত। সোমবার বিমা খাতের শেয়ারের দরপতন হলেও মঙ্গলবার ঢালাওভাবে বেড়েছে এ খাতের শেয়ারের দর।
এক দিন বাদেই ঘোষণা করা হবে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট। এরই মধ্যে আলোচনায় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও নন-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর কামনোর খবর। বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম সম্প্রতি এক ডায়ালগে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য করপোরেট করের সুবিধা দেয়া হলে ভালো মানের কোম্পানি তালিকাভুক্ত হবে- এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক দেবব্রত কুমার সরকার।
এ ছাড়া আসন্ন বাজেটে ব্রোকার হাউসগুলোর ট্রেডিংয়ের ওপর অগ্রিম আয়কর কমানো, পুঁজিবাজারের মাধ্যমে অপ্রকাশিত অর্থ সাদা করার সুযোগ ও লভ্যাংশের ওপর করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার লেনদেনে দিনের সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধির তালিকায় সবচেয়ে বেশি ছিল বিমা খাতের কোম্পানি। এ ছাড়া বস্ত্র খাতের কিছু কোম্পানির উপস্থিতি ছিল এ তালিকায়।
আগ্রহে আবারও বিমা
গত দুই সপ্তাহ ধরে থেমে থেমে বেড়েছে তালিকাভুক্ত বিমা খাতের শেয়ার দর। মঙ্গলবার সে ধারা থেকে বের হয়ে দর বেড়েছে ঢালাওভাবে। দিনের সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধি পাওয়া প্রায় ১০টি কোম্পানির সাতটিই ছিল বিমার।
২০২০ সালের শেয়ারধারীদের ৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণার পর মঙ্গলবার প্রগতি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিটির শেয়ার দরের কোনো সীমা ছিল না। ফলে এদিন কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ২০ দশমিক ৯০ শতাংশ। শেয়ার দর ৮১ টাকা ৮০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৯৮ টাকা ৯০ পয়সা।
এ তালিকায় থাকা গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে দিনের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ। শেয়ার প্রতি দর ৫১ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৬ টাকা ১০ পয়সা।
মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৯৭ শতাশ। শেয়ার দর ৪৮ টাকা ১০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫২ টাকা ৯০ পয়সা।
রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার প্রতি দর ৭১ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৭৮ টাকা ৪০ পয়সা।
স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর ৯ দশমিক ৯১ শতাংশ বেড়েছে। শেয়ার দর ৫৪ টাকা ৬০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৯ টাকা ৭০ পয়সা।
গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৯১ শতাংশ। এদিন কোম্পানিটির শেয়ার দর ৯৪ টাকা ৮০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১০৪ টাকা ২০ পয়সা।
প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ। ফেডারেল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এ তালিকায় আছে ইর্স্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ফনিক্স ইন্স্যুরেন্স, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স, পিপলস ইন্স্যুরেন্স, পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৭ শতাংশ পর্যন্ত।
এদিন দর কমেছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৬ দশমিক ৮০ শতাংশ। দর পাল্টায়নি ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের।
বাড়েনি ব্যাংকের শেয়ার দর
চলতি সপ্তাহের শুরুতে কিছুটা উত্থান দেখা গেলেও পরবর্তী সময়ে ব্যাংকের শেয়ারের ঢালাওভাবে উত্থান দেখা যায়নি।
মঙ্গলবার লেনদেনে ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র ছয়টির। দর পাল্টায়নি একটির। বাকি ২৪টির দর কমেছে। আগের দিন সোমবার লেনদেন শেষে দর বেড়েছিল মাত্র পাঁচটির।
ব্যাংকখাতের এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ার দর মঙ্গলবার সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। এদিন ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি দর ৩৭ টাকা ৩০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৮ টাকা ৯০ পয়সা।
তারপরে ছিল ডাচ বাংলা ব্যাংক, যার শেয়ার প্রতি দর ৭৬ দশমিক ২০ পয়সা থেকে ৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেড়ে হয়ছে ৭৯ দশমিক ২০ পয়সা।
আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে ২ দশমিক ৬৩ শতাংশ। এবি ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে ১ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
কিছু ব্যাংকের শেয়ার দরে উত্থান থাকলে কমেছে সবচেয়ে বেশি। এদিন ঢাকা ব্যাংকের শেয়ার দর সবচেয়ে বেশি পতন হয়েছে ৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ। শেয়ার দর ১৬ টাকা থেকে কমে হয়েছে ১৪ টাকা ৯০ পয়সা।
ইউসিবির শেয়ার দর কমেছে ৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ। লেনদেনে ১৮ টাকা ৫০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ১৭ টাকা ৬০ পয়সা।
ইর্স্টান ব্যাংক লিমিটেডের শেয়ার দর কমেছে ৩ দশমিক ৭৩ শতাংশ। ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ২ দশমিক ৯০ শতাংশ। ওয়ান ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ২ দশমিক ৬৮ শতাংশ। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ২ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ২ দশমিক ০২ শতাংশ। লেনদেনে ৯ টাকা ৯০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৯ টাকা ৭০ পয়সা।
এছাড়া রূপালী ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, শাহজালাল ব্যাংক, যমুনা ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে দেড় শতাংশ পর্যন্ত।
বিশ্লেষকদের বক্তব্য
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক প্রধান গবেষণা কর্মকর্তা দেবব্রত সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, একদিন পরই ঘোষণা করা হবে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট। সেখানে কী কী বিষয় থাকতে পারে সেটিরও কিছু আভাস পাওয়া গেছে। এরমধ্যে করপোরেট কর হার কমানো, ব্রোকার হাউজগুলোকে বাজেটে সুবিধা প্রদান উল্লেখযোগ।
তিনি জানান, বিমার শেয়ার দর বেশ কিছু দিন কমেছে। বেশির ভাগ কোম্পানির মূল্য সংশোধন হয়েছে। তবে যেভাবে বিমার শেয়ার দরের উত্থান হয়েছে মূল্য সংশোধন আরও কিছু হওয়া উচিত ছিল।
ব্যাংকের শেয়ার দর যে অবস্থায় আছে তা থেকে আরও উত্থান প্রয়োজন। কারণ পুঁজিবাজারে ফান্ডামেন্টাল বলতে ব্যাংক, নন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোকেই বলা হয়। কিন্তু এগুলোর ধারাবাহিক কোনো উত্থান নেই। লেনদেন ভালো হচ্ছে। সে সঙ্গে ভালো কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর বাড়লে পুঁজিবাজারও ঝুঁকিমুক্ত হতো।
সূচক ও লেনদেন
মঙ্গলবার লেনদেন শুরুর তিন মিনিটের মাথায় সূচক উঠে ৬ হাজার ৩৫ পয়েন্টে। এবং দিনের সর্বোচ্চ সূচক উঠে ৯ মিনিটে ৬ হাজার ৪০ পয়ন্টে। এর আগে গত রোববার ৩০ এপ্রিল সূচক ৩৯ মাসের মধ্যো সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে ৬ হাজার ৮ পয়েন্টে।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টা ৬ হাজার পয়েন্টে অবস্থান ছিল সূচকের। এরপর বেলা ১২ টা ১০ মিনিটে সূচক নেমে আসে ৫ হাজার ৯৯৫ পয়েন্টে। ১২ টা ১৭ মিনিটি সূচক আবার ৬ হাজার পয়েন্টে উঠে আসে।
বেলা ১টা ৫২ মিনিনে আবারও সূচক ৬ হাজার পয়েন্টে থেকে নেমে আসে। এরপর আর ৬ হাজার পয়েন্টে যেতে পারেনি সূচক। দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স -এর অবস্থান ছিল ৫ হাজার ৯৯৩ পয়েন্টে।
শরিয়াহ ভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ২ দশমিক ১২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৮৪ পয়েন্টে।
বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ১২ দশমিক ১৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৯৩ পয়েন্টে।
লেনদেন হয়েছে মোট ১ হাজার ৯০৩ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৭৩৬ কোটি টাকা। ফলে একদিনের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে ৪৬৭ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১৬ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৩৭৫ পয়েন্টে।
লেনদেন হয়েছে মোট ৯২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:মিরপুর পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (পিওএম) কর্মরত পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সুচিকিৎসার জন্য কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের বহির্বিভাগ উদ্বোধন করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
গতকাল শুক্রবার মিরপুর পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট পুলিশ লাইন্সে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের সার্বিক সহযোগিতায় ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. সরওয়ার-এর তত্ত্বাবধানে পুলিশ সদস্যদের জন্য এই সুবিধা চালু করা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিএমপি কমিশনার বলেন, পুলিশ সদস্যদের সার্বিক কল্যাণে এটি ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে। এর ফলে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে রোগীর চাপ কমার পাশাপাশি পুলিশ সদস্যরা একই স্থানে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারবেন এবং রোগ নির্ণয়ে প্রয়োজনীয় নমুনাও সংগ্রহ করা যাবে। এছাড়া অন্যান্য সেবার মধ্যে থাকবে সরকারি বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ, ফিজিওথেরাপি এবং অবজারভেশন সুবিধা।
ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল শুক্রবার এ তথ্য জানানো হয়।
কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের পরিচালক (ডিআইজি) মো. সায়েদুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. মাসুদ করিম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মো. শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হাসান মো. শওকত আলী, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. জিললুর রহমানসহ ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
রোববার (৫ অক্টোবর) থেকে বাংলাদেশ সচিবালয়ে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক (এসইউপি) সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করা এসব পণ্য বন্ধে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।
শনিবার (৪ অক্টোবর) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, সচিবালয়ের সব প্রবেশপথে চেকিং করা হবে। ভেতরে পলিথিন বা একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক পাওয়া গেলে তার ব্যবহার রোধ করা হবে।
যাদের কাছে নিষিদ্ধ ব্যাগ পাওয়া যাবে, তাদের কাগজের তৈরি ব্যাগ দেওয়া হবে। প্রবেশপথসহ সচিবালয়ের বিভিন্ন জায়গায় সচেতনতার জন্য সাইনবোর্ড বসানো হয়েছে। পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণে মনিটরিং টিম কাজ করছে বলে জানানো হয়।
এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সব মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছে। সচিবালয়ে এসইউপি ব্যবহার বন্ধ করে পুনর্ব্যবহারযোগ্য সামগ্রী নিশ্চিত করতে হবে। সভা-সেমিনারে বোতল, কাপ, প্লেট ও চামচের মতো একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক আর ব্যবহার করা যাবে না। তার পরিবর্তে পাটজাত, কাপড়ের বা পুনর্ব্যবহারযোগ্য ব্যাগ ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
একইসঙ্গে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এসইউপি ব্যবহার বন্ধে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সভা-সেমিনারে কাগজ বা পরিবেশবান্ধব খাবারের প্যাকেট দেওয়া হবে। সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিসে ব্যবহারের জন্য বিকল্প সামগ্রী সরবরাহ করা হবে। প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে একজন ফোকাল পারসন (নির্ধারিত প্রতিনিধি) নিয়োগ ও মনিটরিং কমিটি গঠন করারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আগামীকাল থেকে সচিবালয়ে এসইউপি মুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করা হয়।
ইসলামী ব্যাংকে কর্মরত চট্টগ্রামের প্রায় চার শতাধিক কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত ও ৪ থেকে ৫ হাজার কর্মকর্তাকে ওএসডি করার প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মানববন্ধন ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন কর্মকর্তারা। চাকরিতে পুনর্বহালসহ ছয় দফা দাবিতে তারা এ কর্মসূচি পালন করছেন।
শনিবার (৪ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রামের ফৌজদার হাট এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে অবস্থান নিয়ে ইসলামী ব্যাংকের শত শত কর্মকর্তা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এরপর পৌনে ১২টার দিকে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ শুরু করেন। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক অবরোধের কারণে দুই পাশে কয়েক কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে যাতায়াতকারী লোকজনকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
অবরোধকারীরা অভিযোগ করেন, চট্টগ্রাম অঞ্চলে ইসলামী ব্যাংকের প্রায় ৪০০ কর্মকর্তাকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। পাশাপাশি আরও ৪ থেকে ৫ হাজার কর্মকর্তাকে ওএসডি করে কর্মস্থলে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে। এতে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন, পরিবার নিয়ে পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।
এর আগে শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলন করে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা রবিবার থেকে টানা কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে শনিবার সকাল থেকেই মানববন্ধন ও অবরোধ কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের আন্দোলন শুরু হয়।
আন্দোলনরত কর্মকর্তাদের প্রতিনিধি ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের প্রায় ৪০০ জন কর্মকর্তাকে সম্পূর্ণ অন্যায় ও অমানবিকভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। পাশাপাশি আরও প্রায় পাঁচ হাজার কর্মকর্তাকে ওএসডি করে কর্মস্থলে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রাখা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের পুনর্বহাল, ওএসডি প্রত্যাহারসহ মোট ছয় দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আজ আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছি।’
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া মিজানুর রহমান নামের অপর এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে আমাদের স্যালারি অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দিয়েছে। আমাদের অ্যাকাউন্টে থাকা বেতনের টাকাও আমরা তুলতে পারছি না। এ ছাড়া আইডি কার্ড ব্লক করার পাশাপাশি আমাদেরকে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। চাকরি হারিয়ে আমরা এখন পথে বসে গেছি।’
৬ দফা দাবি হলো
১. চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে বিনা কারণে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের স্বপদে পুনর্বহাল করতে হবে।
২. প্রহসনমূলক পরীক্ষা বয়কটের জন্য আমাদের কর্মকর্তাদের যে পানিশমেন্ট ট্রান্সফার দেওয়া হচ্ছে, তা অনতিবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
৩. বৈষম্যহীন ও রাজনীতিমুক্ত কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
৪. শর্ত আরোপ করে সব ধরনের অ্যাসেসমেন্ট টেস্ট বন্ধ করতে হবে।
৫. চট্টগ্রামের কর্মকর্তাদের ওপর চালানো মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে এবং পুনরায় কর্মস্থলে তাদের ফিরিয়ে নিতে হবে।
৬. পরীক্ষা বর্জনের জন্য আমাদের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ও সাইবার ক্রাইমে হয়রানিমূলক মামলা করা হয়েছে, তা অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
দুর্গাপূজা এবং সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা চার দিনের ছুটি শেষ হচ্ছে আজ। কর্মস্থলে যোগ দিতে অনেকেই শহরে ফিরেছেন। ফলে রাজধানীর টার্মিনালগুলোতে বেড়েছে যাত্রীদের চাপ। তবে প্রধান সড়কগুলোতে তেমন যানজট দেখা যায়নি।
শনিবার (৪ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন, সায়দাবাদ, যাত্রাবাড়ীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার, গুলিস্তান, জিরো পয়েন্ট, পল্টন, কাকরাইল এলাকায় সরেজমিনে এমন চিত্র দেখা যায়।
বেসরকারি একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা কিশোর অধিকারী রংপুর থেকে ট্রেনে ফিরেছেন ঢাকায়। তিনি জানান, বছরে একটি ঈদ আর পূজায় বাড়ি যাওয়া হয়। পূজার সময় আত্মীয়-স্বজন সবাই বাড়িতে আসে। গত মঙ্গলবার অফিস করে বাড়ি গিয়েছি। আগামীকাল আবার অফিসে যেতে হবে, তাই আজ চলে এসেছি। যাওয়া-আসায় তেমন কষ্ট হয়নি। আনন্দ নিয়েই পূজা উদযাপন করতে পেরেছি।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বোরহান উদ্দিন চাঁদপুর থেকে ফিরেছেন সায়দাবাদ বাস টার্মিনালে। তিনি জানান, ঈদের মতোই ঢাকা ফিরতি যাত্রীর চাপ রয়েছে। দুর্ভোগ এড়াতে সকাল সকাল ঢাকায় ফিরেছি। আগামীকাল অফিস করতে হবে, তাই আজ চলে এসেছি।
এ দিকে সরেজমিনে রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে যানজট দেখা যায়নি। মালিবাগ, শান্তিনগর, কাকরাইল, পল্টনে ছুটির দিনের মতোই যাত্রীবাহী গাড়ির চাপ কম। তবে অটোরিকশার পরিমাণ ছিল অনেক বেশি। তবে সায়দাবাদ, দয়াগঞ্জ, ধোলাইপাড় এলাকায় তীব্র যানজট দেখা গেছে।
সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে দুর্গাপূজার ছুটি মিলিয়ে গত বুধবার থেকে শনিবার পর্যন্ত ছুটি রয়েছে সরকারি অফিস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে। ১ ও ২ অক্টোবর (বুধবার ও বৃহস্পতিবার) দুর্গাপূজার ছুটি এবং ৩ ও ৪ অক্টোবর (শুক্রবার ও শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটি। তাই সরকারি অফিস আগামীকাল রোববার (৫ অক্টোবর) থেকে পুনরায় শুরু হবে।
বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গা পূজা উপলক্ষে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে টানা পাঁচ দিন আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর আজ শনিবার সকাল থেকে দু'দেশের মধ্যে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য পুনরায় শুরু হয়েছে। আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হওয়ায় দু'বন্দরে কর্মচঞ্চল্যতা ফিরে এসেছে। আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য চালু হওয়ার কথা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন বেনাপোল কাস্টমস এর কার্গো সুপারিনটেনডেন্ট আবু তাহের ।
ভারতের পেট্রাপোল বন্দর ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্ত্তিক চক্রবর্তী বলেন, “শারদীয় দুর্গাপূজায় ২৮ সেপ্টেম্বর (রোববার) থেকে ০২ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত পেট্রাপোল - বেনাপোল বন্দর দিয়ে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ ছিল। ছুটি শেষে আজ শনিবার সকাল থেকে দুই দেশে মধ্যে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হয়েছে। কর্মচঞ্চলতা ফিরে এসেছে বান্দর এলাকায়।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, পূজার ছুটি শেষে আজ সকাল থেকে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য পুনরায় চালু হয়েছে। তবে পেট্রাপোল বন্দরে সিএন্ডএফ অফিসের স্টাফদের উপস্থিতি কম থাকায় আমদানী রপ্তানি বাণিজ্যের গতি অন্যান্য দিনের চেয়ে কম।
বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) মো. শামীম হোসেন বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে পাঁচ দিন সরকারি ছুটি ছিল । ৫ দিন সরকারি ছুটি থাকার কারণে এ পাঁচ দিন বেনাপোল পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ ছিল। ছুটি শেষে আজ শনিবার (৪ অক্টোবর )সকাল থেকে দু'দেশের মধ্যে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য পুনরায় চালু হয়েছে। আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য চালু হওয়ায় কর্মচঞ্চলতা ফিরে এসেছে উভয় বন্দর এলাকায়। তবে বন্ধের এ কয়দিন বেনাপোল কাস্টমস হাউস ও বেনাপোল বন্দর সীমিত পরিসরে কার্যক্রম চালু রেখে শুল্কায়ন কার্যক্রম চালু সহ ও বন্দরে লোড আনলোডের কার্যক্রম সীমিত পরিসরে হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর।
উত্তরবঙ্গের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড় মাটি ও আবহাওয়ার কারণে চা চাষের জন্য ইতিমধ্যেই তৃতীয় স্থানে জায়গা করে নিয়েছে।
শুধু চা নয়, বাণিজ্যিকভাবে নানা রকম ফল ও ফসল চাষ হচ্ছে এ জেলায়। এরই ধারাবাহিকতায় বোদা উপজেলায় দেশি মালটা চাষেরও ব্যাপক সাফল্য দেখা যাচ্ছে।
পঞ্চগড় বোদা উপজেলার ২ নং ময়দানদিঘী ইউনিয়নের ভিমপুকুর এলাকার সাদেকুল ইসলাম নিজস্ব দুই বিঘা জমিতে ২১৭ টি মালটা গাছ রোপণ করেন। প্রতিটি গাছে দেশি মালটা ফলন হয়, ৫০ থেকে ৮০ কেজি, রোপণ করার দুই বছরের মধ্যে বিক্রি করেন দুই লক্ষ টাকা,এ বছরে ৪ লক্ষ টাকার বিক্রি করার আশা করেন।
সাদেকুল আরও জানান গত ১/১/২০২২ সালে বোদা উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ২১৭ টি দেশি মালটা গাছ ফ্রী পান এবং রাসায়নিক সার সহ কিভাবে পরিচর্যা করবেন সেই বিষয় ট্রেনিং করান।
উপজেলার ৩ নং বনগ্রাম বেংহাড়ী ইউনিয়নের তেপুখুরিয়া টোকরা পাড়া এলাকায় শাহিনুর তিনি জানান ২১ একর জায়গায় দেশি মালটার চাষ করি, এবং দেশি মালটার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। নভেম্বর মাসে ২৫০০ টাকা মণ বিক্রি যাওয়ার কথা, প্রতি বছর এ মাসে ফলের দাম বেশি থাকে, তাই আমি নভেম্বর মাসে বিক্রি করবো।
আহমেদ রাশেদ উন -নবী , উপজেলা কৃষি অফিসার জানান, মাটি ও আবহাওয়া মালটা চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। তারা কৃষকদের মালটা ও অন্যান্য বাণিজ্যিক ফলের চাষে উৎসাহিত করছেন। এতে কৃষকদের আয় যেমন বাড়ছে, তেমনি স্থানীয় বাজারে দেশি ফলের চাহিদাও পূরণ হচ্ছে। এ বছর ৪৭ হেক্টর জায়গায় মালটা চাষ হচ্ছে বোদা উপজেলায়।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় মায়ের সাথে অভিমান করে গলায় ফাঁস দিয়ে জোনায়েদ শেখ নামের ১৪ বছর বয়সী মাদ্রাসাপড়ুয় এক শিশু আত্মহত্যা করেছে।
শুক্রবার বিকেলে উপজেলার তারাশী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জোনায়েদ তারাশী গ্রামের মৃদুল শেখের ছেলে ও পিনজুরী কওমী মাদ্রাসার তৃতীয় জামাতের ছাত্র।
শুক্রবার বিকেল ফাঁকা ঘরে দরজা বন্ধ করে ঘরের আড়ার সাথে গলায় ফাঁস দেয় জোনায়েদ। বিকেল ৫ টার দিকে জোনায়েদের মা আছিয়া বেগম ঘরের বন্ধ দেখে ও কারো সাড়াশব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীদের নিয়ে দরজা ভেঙে ভিতরে গিয়ে আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় জোনায়েদ কে দেখতে পান। দ্রুত তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত্যু ঘোষণা করেন।
নিহত জোনায়েদের চাচা রাসেল শেখ বলেন, কয়েকদিন আগে জোনায়েদ মাদ্রাসা থেকে বাড়িতে আসে। এরপর আর মাদ্রাসায় যেতে চাচ্ছিল না। এ নিয়ে মায়ের সাথে তার মনোমালিন্য ছিল। ধারণা করা হচ্ছে মায়ের উপর অভিমান করে হয়তো এই ঘটনা ঘটেছে।
কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার হাফিজুর রহমান জানান, পরিবার ও এলাকাবাসীর কোন অভিযোগ না থাকায় উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
শনিবার সকালে তারাশী কবরস্থানে শিশু জোনায়েদের দাফন সম্পন্ন হয়।
মন্তব্য