পুঁজিবাজারে মঙ্গলবার বেশির ভাগ সময় সূচক ছিল ছয় হাজার পয়েন্টে। তবে লেনদেন শেষে সূচকের সামান্য উত্থানে শেষ হয়েছে দিনের কার্যক্রম।
লেনদেন আগের দিনের তুলনায় বাড়লেও সূচকের উত্থানে বড় ভূমিকা রাখতে পারেনি ব্যাংক খাত। সোমবার বিমা খাতের শেয়ারের দরপতন হলেও মঙ্গলবার ঢালাওভাবে বেড়েছে এ খাতের শেয়ারের দর।
এক দিন বাদেই ঘোষণা করা হবে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট। এরই মধ্যে আলোচনায় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও নন-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর কামনোর খবর। বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম সম্প্রতি এক ডায়ালগে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য করপোরেট করের সুবিধা দেয়া হলে ভালো মানের কোম্পানি তালিকাভুক্ত হবে- এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক দেবব্রত কুমার সরকার।
এ ছাড়া আসন্ন বাজেটে ব্রোকার হাউসগুলোর ট্রেডিংয়ের ওপর অগ্রিম আয়কর কমানো, পুঁজিবাজারের মাধ্যমে অপ্রকাশিত অর্থ সাদা করার সুযোগ ও লভ্যাংশের ওপর করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার লেনদেনে দিনের সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধির তালিকায় সবচেয়ে বেশি ছিল বিমা খাতের কোম্পানি। এ ছাড়া বস্ত্র খাতের কিছু কোম্পানির উপস্থিতি ছিল এ তালিকায়।
আগ্রহে আবারও বিমা
গত দুই সপ্তাহ ধরে থেমে থেমে বেড়েছে তালিকাভুক্ত বিমা খাতের শেয়ার দর। মঙ্গলবার সে ধারা থেকে বের হয়ে দর বেড়েছে ঢালাওভাবে। দিনের সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধি পাওয়া প্রায় ১০টি কোম্পানির সাতটিই ছিল বিমার।
২০২০ সালের শেয়ারধারীদের ৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণার পর মঙ্গলবার প্রগতি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিটির শেয়ার দরের কোনো সীমা ছিল না। ফলে এদিন কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ২০ দশমিক ৯০ শতাংশ। শেয়ার দর ৮১ টাকা ৮০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৯৮ টাকা ৯০ পয়সা।
এ তালিকায় থাকা গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে দিনের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ। শেয়ার প্রতি দর ৫১ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৬ টাকা ১০ পয়সা।
মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৯৭ শতাশ। শেয়ার দর ৪৮ টাকা ১০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫২ টাকা ৯০ পয়সা।
রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার প্রতি দর ৭১ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৭৮ টাকা ৪০ পয়সা।
স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর ৯ দশমিক ৯১ শতাংশ বেড়েছে। শেয়ার দর ৫৪ টাকা ৬০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৯ টাকা ৭০ পয়সা।
গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৯১ শতাংশ। এদিন কোম্পানিটির শেয়ার দর ৯৪ টাকা ৮০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১০৪ টাকা ২০ পয়সা।
প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ। ফেডারেল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এ তালিকায় আছে ইর্স্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ফনিক্স ইন্স্যুরেন্স, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স, পিপলস ইন্স্যুরেন্স, পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৭ শতাংশ পর্যন্ত।
এদিন দর কমেছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৬ দশমিক ৮০ শতাংশ। দর পাল্টায়নি ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের।
বাড়েনি ব্যাংকের শেয়ার দর
চলতি সপ্তাহের শুরুতে কিছুটা উত্থান দেখা গেলেও পরবর্তী সময়ে ব্যাংকের শেয়ারের ঢালাওভাবে উত্থান দেখা যায়নি।
মঙ্গলবার লেনদেনে ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র ছয়টির। দর পাল্টায়নি একটির। বাকি ২৪টির দর কমেছে। আগের দিন সোমবার লেনদেন শেষে দর বেড়েছিল মাত্র পাঁচটির।
ব্যাংকখাতের এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ার দর মঙ্গলবার সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। এদিন ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি দর ৩৭ টাকা ৩০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৮ টাকা ৯০ পয়সা।
তারপরে ছিল ডাচ বাংলা ব্যাংক, যার শেয়ার প্রতি দর ৭৬ দশমিক ২০ পয়সা থেকে ৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেড়ে হয়ছে ৭৯ দশমিক ২০ পয়সা।
আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে ২ দশমিক ৬৩ শতাংশ। এবি ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে ১ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
কিছু ব্যাংকের শেয়ার দরে উত্থান থাকলে কমেছে সবচেয়ে বেশি। এদিন ঢাকা ব্যাংকের শেয়ার দর সবচেয়ে বেশি পতন হয়েছে ৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ। শেয়ার দর ১৬ টাকা থেকে কমে হয়েছে ১৪ টাকা ৯০ পয়সা।
ইউসিবির শেয়ার দর কমেছে ৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ। লেনদেনে ১৮ টাকা ৫০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ১৭ টাকা ৬০ পয়সা।
ইর্স্টান ব্যাংক লিমিটেডের শেয়ার দর কমেছে ৩ দশমিক ৭৩ শতাংশ। ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ২ দশমিক ৯০ শতাংশ। ওয়ান ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ২ দশমিক ৬৮ শতাংশ। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ২ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ২ দশমিক ০২ শতাংশ। লেনদেনে ৯ টাকা ৯০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৯ টাকা ৭০ পয়সা।
এছাড়া রূপালী ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, শাহজালাল ব্যাংক, যমুনা ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে দেড় শতাংশ পর্যন্ত।
বিশ্লেষকদের বক্তব্য
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক প্রধান গবেষণা কর্মকর্তা দেবব্রত সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, একদিন পরই ঘোষণা করা হবে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট। সেখানে কী কী বিষয় থাকতে পারে সেটিরও কিছু আভাস পাওয়া গেছে। এরমধ্যে করপোরেট কর হার কমানো, ব্রোকার হাউজগুলোকে বাজেটে সুবিধা প্রদান উল্লেখযোগ।
তিনি জানান, বিমার শেয়ার দর বেশ কিছু দিন কমেছে। বেশির ভাগ কোম্পানির মূল্য সংশোধন হয়েছে। তবে যেভাবে বিমার শেয়ার দরের উত্থান হয়েছে মূল্য সংশোধন আরও কিছু হওয়া উচিত ছিল।
ব্যাংকের শেয়ার দর যে অবস্থায় আছে তা থেকে আরও উত্থান প্রয়োজন। কারণ পুঁজিবাজারে ফান্ডামেন্টাল বলতে ব্যাংক, নন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোকেই বলা হয়। কিন্তু এগুলোর ধারাবাহিক কোনো উত্থান নেই। লেনদেন ভালো হচ্ছে। সে সঙ্গে ভালো কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর বাড়লে পুঁজিবাজারও ঝুঁকিমুক্ত হতো।
সূচক ও লেনদেন
মঙ্গলবার লেনদেন শুরুর তিন মিনিটের মাথায় সূচক উঠে ৬ হাজার ৩৫ পয়েন্টে। এবং দিনের সর্বোচ্চ সূচক উঠে ৯ মিনিটে ৬ হাজার ৪০ পয়ন্টে। এর আগে গত রোববার ৩০ এপ্রিল সূচক ৩৯ মাসের মধ্যো সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে ৬ হাজার ৮ পয়েন্টে।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টা ৬ হাজার পয়েন্টে অবস্থান ছিল সূচকের। এরপর বেলা ১২ টা ১০ মিনিটে সূচক নেমে আসে ৫ হাজার ৯৯৫ পয়েন্টে। ১২ টা ১৭ মিনিটি সূচক আবার ৬ হাজার পয়েন্টে উঠে আসে।
বেলা ১টা ৫২ মিনিনে আবারও সূচক ৬ হাজার পয়েন্টে থেকে নেমে আসে। এরপর আর ৬ হাজার পয়েন্টে যেতে পারেনি সূচক। দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স -এর অবস্থান ছিল ৫ হাজার ৯৯৩ পয়েন্টে।
শরিয়াহ ভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ২ দশমিক ১২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৮৪ পয়েন্টে।
বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ১২ দশমিক ১৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৯৩ পয়েন্টে।
লেনদেন হয়েছে মোট ১ হাজার ৯০৩ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৭৩৬ কোটি টাকা। ফলে একদিনের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে ৪৬৭ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১৬ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৩৭৫ পয়েন্টে।
লেনদেন হয়েছে মোট ৯২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় মায়ের সাথে অভিমান করে গলায় ফাঁস দিয়ে জোনায়েদ শেখ নামের ১৪ বছর বয়সী মাদ্রাসাপড়ুয় এক শিশু আত্মহত্যা করেছে।
শুক্রবার বিকেলে উপজেলার তারাশী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জোনায়েদ তারাশী গ্রামের মৃদুল শেখের ছেলে ও পিনজুরী কওমী মাদ্রাসার তৃতীয় জামাতের ছাত্র।
শুক্রবার বিকেল ফাঁকা ঘরে দরজা বন্ধ করে ঘরের আড়ার সাথে গলায় ফাঁস দেয় জোনায়েদ। বিকেল ৫ টার দিকে জোনায়েদের মা আছিয়া বেগম ঘরের বন্ধ দেখে ও কারো সাড়াশব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীদের নিয়ে দরজা ভেঙে ভিতরে গিয়ে আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় জোনায়েদ কে দেখতে পান। দ্রুত তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত্যু ঘোষণা করেন।
নিহত জোনায়েদের চাচা রাসেল শেখ বলেন, কয়েকদিন আগে জোনায়েদ মাদ্রাসা থেকে বাড়িতে আসে। এরপর আর মাদ্রাসায় যেতে চাচ্ছিল না। এ নিয়ে মায়ের সাথে তার মনোমালিন্য ছিল। ধারণা করা হচ্ছে মায়ের উপর অভিমান করে হয়তো এই ঘটনা ঘটেছে।
কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার হাফিজুর রহমান জানান, পরিবার ও এলাকাবাসীর কোন অভিযোগ না থাকায় উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
শনিবার সকালে তারাশী কবরস্থানে শিশু জোনায়েদের দাফন সম্পন্ন হয়।
গাজাগামী ত্রাণবহর ফ্লোটিলায় অংশ নেওয়ায় বাংলাদেশের খ্যাতিমান আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলমের সাহসী পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
শনিবার এক ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ‘গাজাগামী ফ্লোটিলায় শহিদুল আলমের পদক্ষেপ কেবল সংহতি প্রকাশ নয়, এটি বিবেকের গর্জন। বাংলাদেশের পতাকা বহন করে তিনি বিশ্বকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে এদেশের মানুষ কখনও নিপীড়ন ও অন্যায়ের কাছে মাথা নত করে না।’
তিনি আরও লিখেছেন, বিএনপি সবসময় শহিদুল আলম ও ফিলিস্তিনের জনগণের পাশে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
দেশের প্রবীণ এই আলোকচিত্রীকে বহনকারী জাহাজটি ইসরাইলি বাহিনী আটকে দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই ফেসবুকে এই পোস্ট দেন তারেক রহমান। সেখানে তিনি শহিদুল আলমের প্রতি বিএনপির সমর্থন জানান।
গাজায় তথ্য ও সংবাদ অবরোধ ভাঙার উদ্যোগে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে শহিদুল আলম ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি)’র মিডিয়া ফ্লোটিলায় যোগ দিয়েছেন।
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে সাগর নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর সোর্স পরিচয়ে বেপরোয়া চাঁদা দাবির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাগর রামগতি উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সিরাজ উদ্দিনের ছেলে ও রামগতি বাজারের ইলেকট্রনিক ব্যাবসায়ী।
ভুক্তভোগী বড়খেরী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি মোঃ মেহেরাজ অভিযোগ করে বলেন, গত ৫ আগস্টের পর থেকে সাগর নিজেকে কখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কখনো সেনাবাহিনীর সোর্স পরিচয় দিয়ে এলাকাতে বিভিন্নভাবে চাঁদা দাবি করে যাচ্ছে। তিনি নিজেই একজন ভুক্তভোগী। সাধারণ মানুষকে নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। তার ভয়ে রামগতি মাছঘাটের সাধারণ মাছ ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সবসময় আতঙ্ক থাকেন।
আরেক ভুক্তভোগী আব্দুর রহিম মাছ ব্যাপারী বলেন, সাগরের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ মানুষ। সাগর কিছুদিন আগে তার কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেন। তার চাহিদা মাফিক চাঁদা না দেওয়ায় তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে হেনস্তা করেন। বিশেষ করে মাছঘাটের ব্যবসায়ীরা তার যন্ত্রণায় তটস্থ। সে নিজেকে সেনাবাহিনীর সোর্স পরিচয় দিয়ে বেড়ায়। মুলত ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করাই সাগরের মুল উদ্দেশ্য।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনজন ব্যক্তি এ প্রতিবেদককে জানান, ৫ আগস্টের পর বড়খেরী ও চরগাজী ইউনিয়নের রামগতি বাজার, রামগতি মাছঘাট এলাকার সাধারণ জেলে ও মাছ ব্যবসায়ী এবং রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স পরিচয় দিয়ে অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত সাগর। সাগরের ভয়ভীতি প্রদর্শনের অনেকটা অসহায় তারা। এমন অবস্থায় সাগরের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন সাধারণ মানুষ।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সাগর বলেন, অভিযোগকারী কাউকে আমি চিনিনা। তারা কেন এসব মিথ্যা অভিযোগ করলো? তাছাড়া আমি তো এলাকায় থাকিনা। এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করতে এ প্রতিবেদককে বিশেষ অনুরোধ জানান তিনি।
রামগতি সেনাক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, সেনাবাহিনীর কোন সোর্স নেই। এগুলো এক প্রকার প্রতারণা। ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ পেলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রামগতি থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ কবির হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স পরিচয় দিয়ে এই ধরনের অপরাধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের সীমান্তবর্তী তেঁতুলিয়া প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে ঘেরা এ উপজেলা এখন দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। আকাশ পরিষ্কার থাকলেই এখান থেকেই দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘার অপূর্ব সৌন্দর্য। সমতলের চা বাগান, বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট, মহানন্দা নদীর তীর, জেলা পরিষদ ডাক বাংলো ও তেঁতুলিয়া পিকনিক কর্নারসহ নানা দর্শনীয় স্থান দেখতে প্রতিনিয়ত পর্যটকের ভিড় লেগেই থাকে।
কিন্তু এসবের বাইরে সম্প্রতি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে একটি গাছ। তেঁতুলিয়ার প্রাণকেন্দ্র চৌরাস্তা বাজারে দাঁড়িয়ে থাকা শতবর্ষী ঐতিহাসিক তেঁতুল গাছ এখন সেজেছে একেবারে নতুন সাজে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে।
স্থানীয়রা বলছেন,বহু বছর ধরে দাঁড়িয়ে থাকা এই তেঁতুল গাছ স্থানীয়দের কাছে যেমন ঐতিহ্য, ছায়া ও বিশ্রামের প্রতীক ছিল, পর্যটকদের কাছেও এটি এক ধরনের ঐতিহাসিক কৌতূহল। কিন্তু দীর্ঘদিন তেমন গাছটি অবহেলিত থাকায় গাছটির প্রতি তেমন কোনো নজর দেয়া হয়নি।
সম্প্রতি তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গাছটির চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। পাশাপাশি নেওয়া হয় ব্যতিক্রমী আলোকসজ্জার উদ্যোগ। এখন প্রতিদিন সন্ধ্যা নামতেই গাছটি ভরে ওঠে নানা রঙের ঝলমলে আলোয়। দূর থেকে মনে হয়, যেন কোনো শিল্পকর্ম সাজিয়ে রাখা হয়েছে।
এই দৃশ্য পর্যটকদের নজর কেড়েছে দারুণভাবে। এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ভাইরাল হয়েছে আলোকিত তেঁতুল গাছের ছবি।
ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা আব্দুর রহমান নামে এক পর্যটক বলেন,আগেও তেঁতুলিয়ায় এসেছিলাম, তখন এই তেঁতুল গাছ অবহেলিত অবস্থায় ছিল,তেমন কোন উদ্যােগ চোখে পড়েনি। এবার এসে দেখি একেবারে অন্যরকম রূপ। রাতে আলো জ্বললে মনে হয় না এটি সেই পুরোনো গাছ। বরং যেন নতুন এক সৃষ্টি। খুব সুন্দর দেখাচ্ছে।
রংপুর থেকে আসা পর্যটক মালিয়া খানম জানান,তেঁতুলিয়ায় এসে প্রথমেই চোখে পড়েছে ঐতিহাসিক তেঁতুল গাছটি। দিনের বেলায় সাধারণ মনে হলেও রাতে আলোকসজ্জার কারণে একেবারে অন্যরকম লাগে। অনেক ছবি তুলেছি।
স্থানীয়রা মনে করেন, এই উদ্যোগ শুধু একটি গাছকে আলোকিত করেনি, বরং তেঁতুলিয়ার পর্যটন খাতেও এনেছে নতুন মাত্রা।
পর্যটন নিয়ে কাজ করা তেঁতুলিয়ার নর্থবাংলা ট্রাভেল এন্ড ট্যুরিজমের পরিচালক আহসান হাবিব বলেন,এই ঐতিহাসিক গাছটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ছিল। উপজেলা প্রশাসন সেটিকে নতুন সাজে সাজিয়েছে। নিঃসন্দেহে এটি একটি মহৎ উদ্যোগ। আমরা চাই, এ ধরনের উদ্যোগের মাধ্যমে তেঁতুলিয়ার পর্যটন শিল্প আরও সমৃদ্ধ হোক।
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফরোজ শাহীন খসরু বলেন,ঐতিহাসিক তেঁতুল গাছটি এই অঞ্চলের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও স্মৃতি বহন করে। দিনে মানুষ গাছের ছায়ায় বসে, আর রাতে আলোকসজ্জার কারণে উপভোগ করে ভিন্ন এক সৌন্দর্য। আমরা গাছটির চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেছি এবং আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করেছি। পর্যটকরা এতে দারুণ আনন্দ পাচ্ছেন।”
তিনি আরও জানান, তেঁতুলিয়ার পর্যটনকে নতুন রূপ দিতে শুধু তেঁতুল গাছ নয়, পাশাপাশি আরও নানা প্রকল্প নেয়া হয়েছে।আমরা ইতোমধ্যে তেঁতুলিয়া পিকনিক কর্নার ও মহানন্দা পার্ক ঢেলে সাজাচ্ছি। মহানন্দা নদীর ধারে নির্মাণ করা হয়েছে ওয়াকওয়ে। শিশুদের জন্য নির্মিত হচ্ছে আলাদা পার্ক। আমরা চাই, তেঁতুলিয়া পর্যটকদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ গন্তব্য হয়ে উঠুক।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শেষে যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দেশে ফিরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের নেতা তারেক রহমান যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, সেভাবেই আমরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। গণতন্ত্র উত্তরণের এই প্রক্রিয়ায় গোটা পৃথিবীর সমর্থন রয়েছে, বিশেষ করে গণতান্ত্রিক বিশ্বের পূর্ণ সমর্থন আমাদের সঙ্গে আছে।’
যুক্তরাষ্ট্র সফর সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, দেশের ইতিহাসে এটি বিরল ঘটনা যে, সরকার প্রধান রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন। জাতীয় ঐক্য প্রদর্শনের জন্যই সবাইকে নিয়ে এ সফর। জাতিসংঘের অধিবেশনের বাইরেও বিভিন্ন সভা হয়েছে, বিশেষ করে প্রবাসীদের উপস্থিতিতে, যা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক।
তিনি বলেন, বিদেশ সফরে গিয়ে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। যারা গিয়েছিলেন তাদের সঙ্গেই আলাপ হয়েছে, এটা তো স্বাভাবিক। আমাদের প্রত্যাশা অনেকটাই পূরণ হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিবের ভাষায়, প্রধান উপদেষ্টা কয়েকটি দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এতে জাতীয় ঐক্যের একটি দৃষ্টান্ত তৈরি হয়েছে। জাতিসংঘের অধিবেশনের বাইরেও বিভিন্ন সভা হয়েছে, বিশেষ করে প্রবাসীদের উপস্থিতিতে, যা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক।’
তিনি উল্লেখ করেন, গণতন্ত্রের স্বার্থে এসব আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সফর চলাকালে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেও তা বড় করে দেখার কিছু নেই।
এর আগে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে গত ২১ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন। এ সময় তার সফরসঙ্গী হিসেবে সেখানে যান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও এনসিপির সদস্য সচিবসহ ৩টি রাজনৈতিক দলের ৬ নেতা।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টায় তারা দেশে ফেরেন।
দেশের ৮ অঞ্চলের ওপর দিয়ে দুপুরের মধ্যে সর্বোচ্চ ৬০ কিমি বেগে ঝড় বয়ে যেতে পারে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
শনিবার দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিমি বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এদিকে, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুরের অধিকাংশ এলাকায় এবং রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণের শঙ্কা রয়েছে।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের কিশামত সদর গ্রামে রোগাক্রান্ত গরু জবাই করার পর একই গ্রামের অন্তত ১১ জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ দেখা দিয়েছে। তাদের মধ্যে সাত জন গাইবান্ধা শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বাকিরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় আক্রান্তরা গাইবান্ধা রাবেয়া ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোম ও রাবেয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা নেন। গুরুতর আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন- মোজা মিয়া, মোজাফফর মিয়া, শফিকুল ইসলাম ও মাহবুর রহমান।
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. মঞ্জুরুল করিম প্রিন্স আক্রান্তদের চিকিৎসা দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে অধ্যাপক ডা. মো. মঞ্জুরুল করিম প্রিন্স জানান, সাত জন রোগীর শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ পাওয়া গেছে। তাদের হাতে, মুখে, চোখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোসকা ও পচন ধরেছে। জ্বর, ব্যথা, ঘা ও চুলকানিতে ভুগছেন তারা। প্রাথমিক চিকিৎসা ও পরামর্শ দিয়ে আক্রান্তদের বাড়ি পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘মূলত অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত বা রোগাক্রান্ত পশু থেকেই এ রোগ ছড়ায়। আক্রান্তরা একটি অসুস্থ গরু জবাই ও মাংস কাটার কাজে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। ওই সময় তাদের শরীরে রোগ ছড়িয়ে পড়ে। তবে এটি কোনও ছোঁয়াচে রোগ নয়। আক্রান্তরা এর আগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছিলেন। বিষয়টি জেলা সিভিল সার্জনকেও জানানো হয়েছে। নিয়মিত চিকিৎসা নিলে রোগীরা সুস্থ হয়ে উঠবেন, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’
কিশামত সদর গ্রামে বাসিন্দা বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) মো. হাফিজার রহমান জানান, গত শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) গ্রামের মাহবুর রহমানের একটি অসুস্থ গরু জবাই করে গ্রামের অন্তত ১২০ জনের মধ্যে ভাগ করা হয়। জবাই ও মাংস কাটাকাটির কাজে ১০–১৫ জন সরাসরি যুক্ত ছিলেন। চার দিন পর থেকেই তাদের শরীরে ফোসকা ও ঘা দেখা দেয়। এর মধ্যে আক্রান্ত কয়েকজন স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও শহরের ক্লিনিকে চিকিৎসা নেন।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দিবাকর বসাক জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে ৪-৫ জন অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে গাইবান্ধা ও রংপুর মেডিক্যালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। হাত, পা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে তাদের উপসর্গ দেখা গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি অ্যানথ্রাক্স।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. মোজাম্মেল হক জানান, পাশের পীরগাছা উপজেলায় অ্যানথ্রাক্সের প্রকোপ ছিল, এখন সুন্দরগঞ্জেও ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ঘাঘট ও তিস্তা নদীবেষ্টিত বামনডাঙ্গা, সর্বানন্দ, তারাপুর, বেলকা ও পৌরসভা এলাকায় এ রোগ শনাক্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব এলাকায় টিকা প্রদান চলছে।
তার ভাষায়, ‘আক্রান্ত পশু পরিচর্যা বা জবাই করলে মানুষের শরীরে অ্যানথ্রাক্স ছড়াতে পারে। তবে মাংস খেলে এ রোগ ছড়ায় না। তাই কোনও অবস্থাতেই রোগাক্রান্ত পশু জবাই করা যাবে না।’
এদিকে, অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানোর কথা জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজ কুমার বিশ্বাস। তিনি জানান, প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সভা করে এলাকায় লিফলেট বিতরণ, মাইকিংসহ সচেতনতা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি আক্রান্ত পশু জবাই না করার বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য