দেখা নেই, চেনা নেই। তাতে কী? লাগবে না কোনো জামানতও। চাইলেই পেয়ে যাবেন ঋণ। আশ্চর্য হচ্ছেন? ভাবছেন, কাঠখড় পুড়িয়ে, জুতার তলা ক্ষয় করেও যেখানে ঋণ পাওয়া যায় না, সেখানে কীভাবে এত সহজে সম্ভব?
ভার্চুয়াল দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে এমন ঋণের ফাঁদ। না জেনে, না বুঝে কেউ কেউ সেই ফাঁদে পা দিচ্ছেন। পরিণতিতে পড়তে হচ্ছে বিপাকে।
ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামসহ নানা অ্যাপে পাতা হচ্ছে ঋণের প্রলোভনের ফাঁদ। মানুষ তাতে সাড়াও দিচ্ছেন, জিজ্ঞাসা করছেন নানা কিছু। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে প্রশ্ন। সমালোচনা করতেও ছাড়ছে না কেউ কেউ।
নানান অঙ্কের টাকা ঋণ দেয়ার আগ্রহ জানান দিচ্ছে বেশ কয়েকটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, এনজিওসহ কয়েকটি অনুমোদিত মাধ্যম ছাড়া অদৃশ্য কোনো প্রতিষ্ঠান ঋণ দিলে তা সন্দেহজনক। ভার্চুয়াল মাধ্যমে ঋণপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে সরকারের কোনো নির্দেশনা বা নিয়ম নেই।
কারা দিতে চায় ঋণ
ভার্চুয়াল মাধ্যমে ফেসবুক আইডি কিংবা ইনস্টাগ্রামে অ্যাকাউন্ট খুলেই ঋণ দেয়ার প্রলোভন দেখানো হচ্ছে। টাকায়ালা, ক্যাশম্যান, এসম্যানেজার, ইনস্ট্যান্ট স্যালারি ডটকম, ক্যাশক্যাশসহ আরও বেশ কয়েকটি ভার্চুয়াল প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ দেয়ার আগ্রহ প্রচার করা হচ্ছে।
এ ক্ষেত্রে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে নানা গ্রাফিক্যাল উপস্থাপনা। টাকার ছবি দিয়ে গ্রাফিক্স ছাড়াও অডিও-ভিজ্যুয়াল বিজ্ঞাপনও দিচ্ছেন কেউ কেউ।
চটকদার নানান কথায় মানুষের আস্থা অর্জনে সচেষ্ট এসব অ্যাপ ও আইডি। বলা হচ্ছে, কাগজবিহীন আবেদন করা যাবে। কোনো ক্রেডিট ইতিহাসের প্রয়োজন নেই। স্বল্প ও যথাসময়ে ঋণ পর্যালোচনা করার আশ্বাসও দেয়া হচ্ছে। এমনকি ১০ মিনিটেও ঋণ পৌঁছানোর প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে কেউ কেউ।
‘টাকায়ালা’ আইডি থেকে দাবি করা হচ্ছে, ২ লাখ লোককে ঋণ দেবার সফলতা আছে তাদের।
বাংলাদেশে এই প্রথম চাকরিজীবীদের জন্য সুদহীন ও জামানতহীন ঋণ সুবিধা দেয়ার দাবি করছে ইনস্ট্যান্ট স্যালারিজ ডটকম নামে একটি অনলাইন পোর্টাল। বলা হচ্ছে, সাত কার্যদিবসের মধ্যে ঋণের ধরন জানা যাবে। পাওয়া যাবে টাকা।
কত টাকা ঋণের প্রলোভন
২ হাজার টাকা থেকে শুরু করে কেউ দিতে চায় ২০ হাজার টাকা, কেউ ৩০ হাজার টাকা। আবার কেউ কেউ বেতনের সমান ঋণ দেয়ার আগ্রহ দেখাচ্ছে। তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে ঋণ পরিশোধের শর্ত জুড়ে দেয়া হচ্ছে। সুদ কোনো কোনো ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ।
‘ক্যাশমান’ আইডি থেকে বলা হচ্ছে, ২ হাজার টাকা ঋণ নিলে তিন মাসে দিতে হবে ২ হাজার ৩৫ টাকা। ৫ হাজার টাকায় ৪ মাসে দিতে হবে ৫ হাজার ৯৫ টাকা। ৮ হাজার টাকায় ৫ মাসে ৮ হাজার ১২৫ টাকা। আর ১০ হাজারে ৬ মাসে গুনতে হবে ১০ হাজার ২৬৫ টাকা।
‘টাকায়ালা’ আইডিতে বলা হচ্ছে, ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ দেয়া হবে। সে ক্ষেত্রে মাসিক সুদহার ২ দশমিক ৯৪ ভাগ। প্রসেসিং ফি মোট ঋণের ৫ ভাগ। সময়কাল ৯২ থেকে ১২০ দিন। ঋণ পেতে হলে বয়স হতে হবে ১৮ বছরের বেশি। বছরে সুদহার বা এপিআর হবে ২০ ভাগ।
‘ইনস্ট্যান্ট স্যালরি ডটকম’ সাইট থেকে ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে, চাকরিজীবীদের জন্য সুদহীন ও জামানতমুক্ত ঋণ সুবিধা দিচ্ছে তারা।
রেজিস্ট্রেশনের জন্য এটি ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে নাম, ফোন নম্বর, ই-মেইল ঠিকানা চায়। ঋণের জন্য আবেদন করতে ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্র, ই-টিন, কোম্পানি আইডি, ভিজিটিং কার্ডের ছবি, স্যালারি স্টেটমেন্ট, কোম্পানি পে-স্লিপ, সিনিয়র গ্যারান্টর বা ইন্ট্রোডিউসারের জাতীয় পরিচয়চত্র, ভিজিটিং কার্ড ও মোবাইল নম্বর চাওয়া হচ্ছে।
‘ক্যাশক্যাশ’ সাইটে বলা হচ্ছে, ৫ হাজার টাকা ঋণে দিতে হবে ৫ হাজার ৫০ টাকা, ৮ হাজার টাকায় ৮ হাজার ১০০ টাকা, ১০ হাজার টাকা নিলে শোধ করতে হবে ১০ হাজার ১৫০ টাকা।
মানুষের আগ্রহ ও সমালোচনা
জামানতবিহীন ঋণের হাতছানিতে এসব আইডিতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে মানুষ। বাড়ছে লাইক, ফলোয়ার। জিজ্ঞাসা অনেক, কৌতূহলের কমতি নেই। সন্দেহও প্রকাশ করছে কেউ কেউ।
কেউ ঋণ পাওয়ার উপায় জানতে চাইলে উত্তরে বলা হচ্ছে, ‘আপনার ফোন নম্বর দিন। আমরা আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করব।’
কেউ কেউ আবার অতি উৎসাহী হয়ে আগেই ফোন নম্বর দিয়ে রাখছেন।
একটি ফেসুবক পেজে একজন ইউজার লিখেছেন, তিনি ৩ হাজার টাকা ঋণের জন্য আবেদন করলে জানানো হয়েছে, তারা ২ হাজার ১২৪ টাকা নগদ দেবে। ৮ দিন পর সুদসমেত কেটে নেবে ৩ হাজার ৩০ টাকা। বাকি টাকা তারা বিভিন্ন খাতে দেখিয়েছে।
ওই ইউজার প্রশ্ন করেন, ‘৩ হাজার টাকা ঋণে যদি ৯০০ টাকা কেটে নেয়া হয় তাহলে ঋণ নিয়ে লাভ কী?’
আরেকজন লিখেছেন, ‘কাস্টমার সার্ভিসের জন্য তাদের যে মোবাইল নং দেয়া হয়েছে সেখানে সারা দিনে একবারও কল যায় না।’
কথিত ঋণদাতাদের ব্যাখ্যা
‘এসম্যানেজার’ অ্যাপে নিবন্ধন করে এক যুবক। মোবাইল নম্বর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম নিবন্ধন করে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়। একদিন পর নিবন্ধিত মোবাইল ফোনে অ্যাপ থেকে ফোন দিয়ে ব্যবসা এবং ঋণ সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চান।
জানানো হয়, এই অ্যাপের সঙ্গে ১৯টি ব্যাংকের চুক্তি আছে। তাই ঋণসহ নানাবিধ ব্যবসায়িক সুবিধা পাওয়া যাবে।
জানতে চাওয়া হয়, জামানত ছাড়া কীভাবে ঋণ পাওয়া যাবে? বলা হয়, অ্যাপের কাজ মাধ্যম হিসেবে ব্যাংকের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন। তবে অ্যাপে সংযুক্ত থাকতে হলে টাকা দিতে হবে। সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রেও দিতে হবে ভিন্ন ভিন্ন ফি।
‘টাকায়ালা’ অ্যাপে থাকা ফোন নম্বরে ফোন দিলে কাস্টমার কেয়ার থেকে বলা হয়, এটি সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক ঋণ কার্যক্রম। অফিস বা কোনো ধরনের ব্যক্তির সংস্পর্শে যাওয়ার নিয়ম নেই। বলা হয়, ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে এনআইডি কার্ডের দুই পাশের ছবি, ঋণ যে নিতে চায় তার সেলফি, দুইজন আত্মীয়ের ছবিসহ অন্যান্য তথ্য দিতে হবে।
প্রশ্ন ছিল, যদি কেউ টাকা নিয়ে ফেরত আর না দেয়, তাহলে? বলা হয়, প্রথমে ২ হাজার টাকা ঋণ দেয়া হবে। পরে পরিশোধ করলে বেশি পরিমাণ ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে এনআইডি কার্ডই জামানত। যদি টাকা না দেয়, তবে ঠিকানা ধরে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ঋণ কার্যক্রমে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো অনুমতি আছে কি না জানতে চাওয়া হলে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নেই।
আইনগত ভিত্তি নেই
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘কোনো চক্র যদি অনলাইনে এমন অ্যাপ খুলে ঋণ দিতে চায়, সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কিছু করার থাকে না। কারণ, বারবার গ্রাহককে বিভিন্নভাবে সতর্ক করা হয়েছে এসব ফাঁদে যেন না পড়ে। কিন্তু এরপরও একটি শ্রেণি এটার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।’
বাংলাদেশে ধর্ম, জাতি ও গোত্রের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
শনিবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। বক্তব্যে উৎসবে আমন্ত্রণের জন্য সেনাপ্রধান আয়োজনকারীদের ধন্যবাদ জানান।
সেনাপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ সম্প্রীতির দেশ। শত বছর ধরে এখানে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, পাহাড়ি, বাঙালি, উপজাতি সবাই মিলে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছে। এই দেশ সবার। আমরা সবাই এই দেশের নাগরিক। এখানে কোনো ধর্ম, জাতি বা গোত্রের মধ্যে ভেদাভেদ থাকবে না। এই দেশের প্রতিটি বিষয়ে আমাদের সমান অধিকার। সেইভাবেই আমরা সামনের সোনালি দিনগুলো দেখতে চাই।’
অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খানসহ অন্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সেনাপ্রধান আরও বলেন, ‘আজকের এই দিনে আমাদের অঙ্গীকার হবে— আমরা সবসময় শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখব এবং সবাই মিলে শান্তিতে বসবাস করব। সারা বাংলাদেশে স্বশস্ত্র বাহিনী মোতায়েত রয়েছে। আমরা সব সময় জনগণের পাশে থাকব এবং এক হয়ে আপনাদের সাথে কাজ করে যাব।’
তিনি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা নিশ্চিন্তে এ দেশে বসবাস করবেন এবং আপনারা আপনারা ধর্মীয় উৎসব আনন্দের সঙ্গে উদযাপন করবেন। আমরা একসঙ্গে এই আনন্দ ভাগাভাগি করব।’
সেনাপ্রধান আশাপ্রকাশ করেন, ‘জন্মাষ্টমীর এই দিনে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়বে। এই আদর্শের ভিত্তিতেই আমরা একসঙ্গে সুন্দরভাবে বসবাস করব।’
কুড়িগ্রামে রৌমারী উপজেলার রৌমারী সদর ইউনিয়নের কালোর ও জিঞ্জিরাম নদী দ্বারা বিচ্ছিন্ন সীমান্তবর্তি ভন্দুরচর গ্রামে পরিকল্পিত ভাবে একই পরিবারের তিনজনক হত্যা করা হয় গত ২৪জুলাই। এই ঘটনার প্রতিবাদে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৬জুলাই শনিবার দুপুরে রৌমারী উপজেলার সর্বস্তরের জনগনের ব্যানারে এই কর্মসূচি করা হয়। রৌমারী টু ঢাকা মহাসড়কে ঘন্টাব্যাপি বিক্ষোভ ও মানববন্ধন পালন করে স্বজন ও এলাকাবাসী। এসময় বক্তব্য রাখেন, ওয়াজেদ আলী,ইকতার হোসেন, আনোয়ার হোসেন,নিহত বুলু মিয়ার স্ত্রী আসকেতারা বেওয়া,কন্যা শাপলা বেগম,ফুলবাবুর স্ত্রী ফুলোরানী বেওয়া এবং নুরুল আমিনের স্ত্রী আনজু আরা বেওয়া প্রমুখ।
উল্লেখ্য,গত ১৯ জুলাই ভন্দুর চরের রাজু আহমেদের গরু প্রতিবেশি শাহজামালের বীজতলার ধানের চারা খেয়ে ফেলে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শাহজামালের লোকজন গরু বেঁধে রাখতে বলে। এরই জেরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রায় ২০/২৫জনের একটি দল শাহজামালের বাড়িতে হামলা চালিয়ে মহিলাদেরকে মারধর করে ও বাড়িঘর ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় ২০জুলাই আহত নুরজাহান বাদী হয়ে রৌমারী থানায় একটি অভিযোগ করেন। কিন্তু সেই অভিযোগ আমলে না নিয়ে বাদীপক্ষকে মীমাংসা করে নিতে বলে পুলিশ। থানায় অভিযোগ দেবার জের ধরে গত ২৪জুলাই আবারও রাজু আহমেদের গ্রপের সদস্যরা দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় প্রতিপক্ষ শাহজামালদের উপর। দিনদুপুরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে একই পরিবারের তিন সদস্যকে হত্যা করে। নিহতরা হলেন,শাহজামালের দুই ভাই ফুলবাবু,বুলু মিয়া এবং ভাতিজা নুরুল আমিন। উভয় পক্ষের প্রায় ১০জন আহত হয়। এই ঘটনায় গত ২৬ জুলাই নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী রৌমারী থানা ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে।
পরে শাহজামাল বাদী হয়ে ২৪জুলাই ৩৪জনের নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা ৮/১০জনকে আসামী করে রৌমারী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৮জনকে গ্রেফতার করেছে।
এই বিষয়ে রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লুৎফর রহমান ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকদের উদ্দেশে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, আপনাদের মতে চিকিৎসা খাতে ৪-৫ বিলিয়ন ডলারের একটা বাজার আছে। এই বাজার আপনারা নিতে পারেন না? কেন মানুষ চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে চায়? ভারত, ব্যাংককে এমন মানুষও চিকিৎসা নিতে যায়, যারা কখনও ঢাকায় আসেনি। তারা বিরক্ত ও নিরুপায় হয়ে যায়। তাদের যাওয়া বন্ধ করেন। এখানে সেবা দিলে মানুষ কখনোই বিদেশ যাবে না। যাওয়ার কোনও কারণই নাই। এই বাজার দখল করলে আপনাদের লাভ, দেশেরও লাভ।
শনিবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর শহীদ আবু সাইদ ইন্টারন্যাশনাল কনভনেশন সেন্টারে বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির অভিষেক ও বার্ষিক সাধারণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, অনেক চিকিৎসক অনর্থক টেস্ট দেন। আমার বাসার হেল্পিং হ্যান্ড, গরিব ছেলে, ঢাকার একটি হাসপাতালে ১৪টি টেস্ট দিয়েছে। সে রাগ করে বাড়ি চলে গেছে। সেখান থেকে টেস্ট ছাড়া ভালো হয়ে ফেরত এসেছে। ওখানে তার পরিচিত ডাক্তার ছিল। এই অত্যাচার বন্ধ হয় নাই। গরিব রোগীদের অনর্থক ১৪-১৫টা টেস্ট দেওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ করা দরকার। আরেকটা বিষয় হলো, নির্দিষ্ট ওষুধ কিনতে হবে, কেন? পৃথিবীতে কোন জায়গায় প্রাইভেট ক্লিনিকে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধির জন্য নির্দিষ্ট সময় থাকে ডাক্তারের। আপনারা কি ওষুধ কোম্পানির দালাল, এ দেশের বড় বড় হাসপাতালের ডাক্তাররা কি ওষুধ কোম্পানির মধ্যসত্ত্বভোগী? কোন জায়গায় নামান আপনারা নিজেদের!
আইন উপদেষ্টা বলেন, আরেকটা অভিযোগ করা হয়, টেস্টের রেজাল্ট ভুল। অনেক জায়গায় অনেক ভালো রেজাল্ট হয়, আমি খারাপ জায়গার কথা বলছি। একটা জেনারেল কমপ্লেইন যেটা আমার কাছে হৃদয়বিদারক লাগে, নার্সদের ব্যবহার খারাপ। নার্সদের মন খারাপ থাকে, হাসপাতালের কর্মচারীদের মন খারাপ থাকে, তারা ক্ষিপ্ত হয়ে থাকেন, ভালো সেবা দিতে চায় না। কেন চায় না– নার্সদের বেতন ১২ হাজার টাকা, আপনারা কি কম টাকা লাভ করেন? আপনারা যারা অনেকে হাসপাতালের মালিক আছেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি, আপনাদের কোটি টাকার বাগানবাড়ি থাকতে পারে, নার্সদের ভালো বেতন দিতে পারেন না? নার্স যদি ১২ হাজার টাকা বেতন পায়, তাহলে কি ভালো সেবা দেবে? সে তো বিরক্ত হয়ে থাকবে। আপনারা লাভ করেন কিন্তু ন্যায্যভাবে করেন।
তিনি বলেন, আজ মানুষ ভারত-থাইল্যান্ড যেতে চায় না। আপনাদের চিকিৎসা দেওয়ার সক্ষমতা আছে। আপনারা করোনাকালে প্রমাণ করেছেন। নিজের জীবন উৎসর্গ করে সেবা দিয়েছেন। কর্মীর যদি বেতন বাড়িয়ে দেন সামান্য লাভ থেকে কতো টাকা চলে যাবে? যদি ১০০ কোটি টাকা লাভ করেন, তাহলে ১০ শতাংশ কম লাভ হয়। ১০ শতাংশ কম লাভের বিনিময় সেই কর্মী যে সেবা দেবে সেটা দিয়ে পূরণ হয়ে যায়। আপনারা এদিকে একটু লক্ষ্য রাখবেন।
শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার রাতে দেওয়া এক শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি সকলের সুস্বাস্থ্য, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করেন।
শুভেচ্ছা বার্তায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, জন্মাষ্টমী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত পুণ্যতিথি ও গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব। এটি শুধু আনন্দ-উৎসবের দিন নয়, বরং ভ্রাতৃত্ব, সৌহার্দ্য ও শান্তির বাণী ছড়িয়ে দেওয়ার এক মহামিলন ক্ষেত্র।
তিনি বলেন, জন্মাষ্টমী সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়ের জন্য অবারিত উৎসবের প্রাঙ্গণ সৃষ্টি করে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, বাংলাদেশের সমাজ সংস্কৃতির মূল ভিত্তি হলো ধর্মীয় সম্প্রীতি। ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করেছে। আমরা সব ধর্মের মানুষের সমঅধিকারে বিশ্বাসী। হিংসা, বিদ্বেষ, অশান্তি, হানাহানি, বৈষম্য ও অবিচার দূর করে সমাজকে শান্তিময় করে তুলতে আমাদের সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব এ সময় দেশবাসীর প্রতি সম্প্রীতি, শান্তি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করার আহ্বান জানান।
ময়মনসিংহের ভালুকায় বিশেষ অভিযানে ৪৩ পিস ইয়াবাসহ চার মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় উপজেলার জামিরদিয়া এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
থানা সূত্রে জানা যায়, ভালুকা মডেল থানার একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে চারজনকে হাতেনাতে আটক করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন—জামিরদিয়ার মোঃ আবুল হোসেনের ছেলে মোঃ সজিব মিয়া (২৬), একই এলাকার মোঃ নাবিল হোসেন নবীর ছেলে মোঃ আলী হোসেন ওরফে নাজমুল (২৫), গাজীপুরের শ্রীপুরের উদয়খালী এলাকার মোঃ মফিজ উদ্দিনের ছেলে মোঃ রফিকুল ইসলাম (২৭) এবং ডুমবারিরচালা এলাকার মোঃ রফিকুল ইসলামের ছেলে মোঃ নাঈম খান (২৫)।
এসময় সময় তাদের কাছ থেকে ৪৩ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে ভালুকা মডেল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়।
ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, মাদক নির্মূলে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি। এ ধরনের অভিযান নিয়মিতভাবে চালানো হবে।
নওগাঁর আত্রাই নদীর একটি স্থানে কয়েক সেন্টিমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে ঢুকছে পানি।
শনিবার (১৬ আগস্ট) সকালে মান্দা উপজেলার কসব ইউনিয়নের তালপাতিলা এলাকায় এই বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যায়। এতে তালপাতিলা গ্রামসহ আশেপাশের চকবালু, চকরামপুরসহ কয়েকটি গ্রামে পানি প্রবেশ করে। পানি বন্দী হয়ে পড়েন কয়েকশ পরিবার।
স্থানীয়রা বলছে, এই একই স্থানে গেলো বছর ভেঙ্গে যায়। এরপর মাসখানেক আগে বেড়িবাঁধের এই অংশটুকু মেরামত করা হয়। কিন্তু নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আবার ভেঙে গেছে।
বেড়িবাঁধ ভাঙ্গার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শক করেছেন মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আখতার জাহান সাথী। এসময় তিনি উক্ত দ্রুত সময়ের মধ্যে বেড়িবাঁধ মেরামতের আশ্বাস দেন।
এদিকে দুপুর ১২টার দিকে দেওয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী আত্রাই নদীর মান্দা উপজেলার জোত বাজার পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ও রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে বিপদ সীমার ৩১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও নওগাঁর ছোট যমুনা ও পুনর্ভবা নদীর পানি বিদসীমার নিচে থাকলেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার উপরে প্রবাহিত হওযায় মান্দা উপজেলার চকরামপুর, উত্তর চকরামপুর, কয়লাবাড়ী, জোকাহাট, দ্বারিয়াপুর, নুরুল্লাবাদ, পারনুরুল্লাবাদ ও তালপাতিলা এলাকার অন্তত ১০টি বেড়িবাঁধকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ মূল বাধের লক্ষ্মীরামপুর, আয়াপুর, পাঁজরভাঙ্গা, পলাশবাড়ী, মিঠাপুর, নিখিরাপাড়া ও গোয়ালমান্দাসহ অন্তত ২০টি পয়েন্টকে উচ্চ ঝুঁকির তালিকায় রাখা হয়েছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষিমার্কেট পরিদর্শন করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি দেশব্যাপী নিষিদ্ধ পলিথিনের উৎপাদন, পরিবহন ও বিপণন রোধে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এই মার্কেট পরিদর্শন করেন ।
আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদপুরের কৃষিমার্কেটে যান। এরপর তিনি কৃষিমার্কেটের বিভিন্ন দোকান পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দোকানিদের পলিথিন ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করেন এবং পলিথিন ব্যবহারের ভয়াবহতা তুলে ধরেন ।
মন্তব্য