নয় মাস পর বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে (ব্যালান্স অফ পেমেন্ট) ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। ২০২০-২১ অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) এই ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে চার কোটি ৭০ লাখ ডলার।
অথচ মার্চ মাস শেষেও অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক ৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার উদ্বৃত্ত ছিল। জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে উদ্বৃত্ত ছিল ১৩৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার। ছয় মাসে অর্থাৎ জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে উদ্বৃত্ত ছিল সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার।
সাম্প্রতিক সময়ে আমদানি বাড়ায় লেনদেন ভারসাম্য উদ্বৃত্ত থেকে ঘাটতি দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতির গবেষক আহসান এইচ মনসুর। রপ্তানি না বাড়লে এই ঘাটতি নিয়েই অর্থবছর শেষ হবে বলে মনে করছেন তিনি।
তবে ব্যালান্স অফ পেমেন্টে ঘাটতি (ঋণাত্মক) দেখা দেয়ায় খুব একটা চিন্তিত নন অর্থনীতির আরেক গবেষক জায়েদ বখত। তিনি জানান, সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যে (ওভারঅল ব্যালেন্স) এবং আর্থিক হিসাবে (ফাইন্যানশিয়াল অ্যাকাউন্ট) এখনও বড় উদ্বৃত্ত রয়েছে। তাই তেমন সমস্যা হবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংক রোববার হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, আগামী ৩০ জুন শেষ হতে যাওয়া ২০২০-২১ অর্থবছরের দশ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে (ব্যালান্স অব পেমেন্ট) ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের এই দশ মাসে ঘাটতি ছিল অনেক বেশি; ৩৭৭ কোটি ২০ লাখ ডলার।
গত বছরের মার্চে দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর রপ্তানির পাশপাশি আমদানিতেও ধস নামে। কয়েক মাসের মধ্যে রপ্তানি ঘুরে দাঁড়ালেও আমদানি কমতেই থাকে। ফলে লেনদেন ভারসাম্যে বড় উদ্বৃত্ত দেখা দেয়। কিন্তু গত দুই-তিন মাস ধরে আমদানি বেশ বাড়ায় সেই উদ্বৃত্ত আর ধরে রাখা যায়নি; এপ্রিল শেষে তা ঋণাত্মক (-) হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, গত ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষ হয়েছিল ৪৮৪ কোটি ৯০ লাখ (প্রায় ৫ বিলিয়ন) ডলারের বড় ঘাটতি নিয়ে। কিন্তু ২০২০-২১ অর্থবছর শুরু হয় উদ্বৃত্ত দিয়ে। প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) এই উদ্বৃত্তের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩৫৩ কোটি ৪০ লাখ (৩ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন) ডলার।
এর পরের তিন মাস ধারাবাহিকভাবে বাড়তে বাড়তে জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে তা ৪৩২ কোটি ২০ লাখ (৪ দশমিক ৩২ বিলিয়ন) ডলারে ওঠে।
কিন্তু দেশে করোনাভাইরাস মহামারির প্রথম ঢেউয়ের প্রকোপ কমতে থাকলে আমদানি বেড়ে যায়। সে কারণে জানুয়ারি শেষে অর্থাৎ জুলাই-জানুয়ারি সময়ে সেই উদ্বৃত্ত ২২৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারে নেমে আসে।
ফেব্রুয়ারি শেষে যা আরও কমে ১৫৫ কোটি ৭০ লাখ ডলারে নেমে আসে। জুলাই-মার্চে তা আরও কমে নেমে আসে ৭ কোটি ৯০ লাখ ডলারে।
সর্বশেষ জুলাই-এপ্রিল সময়ে লেনদেন ভারসাম্যে ৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার ঘাটতি দেখা দিলো।
গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ও ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, আমদানি বাড়ায় লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। গত অর্থবছরও বড় ঘাটতি নিয়ে শেষ হয়েছিল। এবার অতোটা না হলেও ঘাটতি নিয়ে যে বছর শেষ হবে, এটা নিশ্চিত। এখন রপ্তানি বাড়ানোর এই ঘাটতি যতোটা কম রাখা যায় ততোই মঙ্গল।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিতষ্ঠানের (বিআইডিএসস) গবেষক রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জায়েদ বখত নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আশার কথা হচ্ছে, কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যেই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। সবাই বুঝতে পেরেছে, করোনাকে সঙ্গে নিয়েই আমাদের চলতে হবে। সে কারণে আমদানিতে যে মন্দাভাব ছিল, সেটা আর নেই। এটা অর্থনীতির জন্য ভালো।
‘আমদানি বাড়া মানে দেশে বিনিয়োগ বাড়া, অর্থনীতিতে গতিসঞ্চার হওয়া। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হওয়া।’
২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশের লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতি ছিল ৫১০ কোটি ২০ লাখ ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ঘাটতি ছিল ৯৫৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
নিয়মিত আমদানি-রপ্তানিসহ অন্যান্য আয়-ব্যয় চলতি হিসাবের অন্তর্ভুক্ত। এই হিসাব উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হলো নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোনো ঋণ করতে হচ্ছে না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়।
সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্য
তবে সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যে (ওভারঅল ব্যালেন্স) এখনও বড় উদ্বৃত্ত ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। অর্থবছরের দশ মাসে এই উদ্বৃত্তের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৪৯ কোটি ৮০ লাখ ডলার।
গত বছরের একই সময়ে এই উদ্বৃত্ত ছিল মাত্র ৭১ কোটি ৩০ লাখ ডলার।
আর্থিক হিসাবেও বড় উদ্বৃত্ত
আর্থিক হিসাবেও (ফাইন্যানশিয়াল অ্যাকাউন্ট) বড় উদ্বৃত্ত ধরে রেখেছে বাংলাদেশ।
অর্থবছরের তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ৭৫ কোটি ৫৫ লাখ ডলারের ঘাটতি ছিল। জুলাই-নভেম্বর সময়ে তা ৯৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার উদ্বৃত্তে চলে আসে। ছয় মাসে সেই উদ্বৃত্ত বেড়ে হয় ২২০ কোটি ১০ লাখ ডলার।
সাত মাসে তা আরও বেড়ে ৪৪৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার হয়। আট মাসে উদ্বৃত্ত ছিল ৫৬১ কোটি ৮০ লাখ ডলার। নয় মাস শেষে তা বেড়ে হয় ৬৯৪ কোটি ২০ লাখ ডলার হয়েছে। ১০ মাস শেষে অর্থাৎ জুলাই-এপ্রিল সময়ে তা আরও বেড়ে ৭৮৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার হয়েছে।
গত বছরের এই দশ মাসে ৪৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলারের উদ্বৃত্ত ছিল।
বাণিজ্য ঘাটতি ১৭.২৩ বিলিয়ন ডলার
আমদানি বাড়ায় পণ্য বাণিজ্যে ঘাটতিও বাড়ছে। অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) এই ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭২২ কোটি ৭০ লাখ (১৭.২৩ বিলিয়ন) ডলার। এই অঙ্ক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২১ দশমিক ১৩ শতাংশ বেশি।
অর্থাৎ বিদায়ী অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে রপ্তানির চেয়ে ১৭.২৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি পণ্য আমদানি হয়েছে।
মহামারির কারণে আমদানি কমায় কিছুদিন পণ্য বাণিজ্যে ঘাটতি নিন্মমুখী ছিল। কিন্তু গত কয়েক মাসে আমদানি বাড়ায় এই ঘাটতি ফের ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৩ হাজার ১৩৩ কোটি ১০ লাখ ডলার আয় করেছে। আর আমদানিতে ব্যয় করেছে ৪ হাজার ৮৫৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার।
এই ১০ মাসে রপ্তানি বেড়েছে ৯ শতাংশ। আর আমদানি বেড়েছে ১৩ শতাংশ।
প্রায় ১৮ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে গত অর্থবছর শেষ করেছিল বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে অর্থাৎ জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে তা কমে ৬৪৬ কোটি ৫০ লাখ ডলারে নেমে আসে। গত বছরের একই সময়ে এই ঘাটতি ছিল ৮২২ কোটি ৩০ লাখ ডলার। জুলাই-জানুয়ারি সময়ে সেই ঘাটতি বেড়ে ৯৭৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারে ওঠে।
আট মাসে অর্থাৎ জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। জুলাই-মার্চে তা বেড়ে হয় ১৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার।
সর্বশেষ জুলাই-এপ্রিল সময়ে তা আরও বেড়ে হয়েছে ১৭ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার।
জুলাই-এপ্রিল সময়ে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১১৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার। জুলাই-মার্চ সময়ে ছিল ১৯৫ কোটি ৭০ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে ঘাটতি ছিল ২২৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
মূলত বিমা, ভ্রমণ ইত্যাদি খাতের আয়-ব্যয় হিসাব করে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি পরিমাপ করা হয়।
রেমিট্যান্স বাড়ছেই
মহামারির মধ্যেও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের উল্লম্ফন অব্যাহত রয়েছে। প্রতি মাসেই বাড়ছে এই অংক। অর্থনীতির সূচকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থায় রয়েছে এই সূচক।
অর্থবছরের দশ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) ২ হাজার ৬৫ কোটি ৬০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। গত বছর এই দশ মাসে পাঠিয়েছিলেন ১ হাজার ৪৮৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৯ শতাংশ।
প্রতি সপ্তাহেই রেমিট্যান্স প্রবাহের তথ্য প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাতে দেখা যায়, চলতি মে মাসের ২৭ দিনে (১ থেকে ২৭ মে) ১৯৫ কোটি ১৬ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
সবমিলিয়ে অর্থবছরের ১০ মাস ২৭ দিনে (২০২০ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২১ সালের ২৭ মে) ২ হাজার ২৬১ কোটি ৭৫ লাখ (২২.৬২ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স এসেছে দেশে।
রাজনৈতিক আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এখন সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানা বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের ওপর দায় চাপানোর অপরাজনীতি করছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
এক বিবৃতিতে সোমবার তিনি এ মন্তব্য করেন। এতে মাদারীপুরে রোববারের সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান সেতুমন্ত্রী।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজনৈতিক আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এখন সড়ক দুর্ঘটনা নিয়েও রাজনীতি করছে। নেতিবাচক রাজনীতি করতে করতে এবং মিথ্যা কথা বলতে বলতে বিএনপির অবস্থা এখন এমন হয়েছে যে, বজ্রপাতে মৃত্যু হলেও তার দায় সরকারের ওপর চাপানোর অপরাজনীতিতে লিপ্ত হয়।
‘অথচ এই বিএনপির শাসনামলেই সড়ক যোগাযোগ খাত ছিল সবচেয়ে অবহেলিত। বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় আসার পর যোগাযোগ খাতকে অগ্রাধিকার দেন এবং তার সুদক্ষ নেতৃত্বে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বৈপ্লবিক পরিবর্তন দৃশ্যমান হয়েছে। এ সত্যটি স্বীকার করতেও বিএনপি লজ্জা পায়।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি মৃত্যুই বেদনার। আমরা সড়কে একটি মৃত্যুও চাই না। রোববার সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার ও স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
‘সড়ক ও পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং দুর্ঘটনা রোধে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বহুল প্রতীক্ষিত সড়ক পরিবহন আইন- ২০১৮-এর অধীনে প্রণীত বিধিমালাও কার্যকর করা হয়েছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশব্যাপী জাতীয় মহাসড়কগুলো, পর্যায়ক্রমে সার্ভিসলেনগুলো ছয় লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি জাতীয় মহাসড়ক সার্ভিসলেন ছয় লেনে উন্নীত করার কাজ শেষ হয়েছে। একটি প্রকল্পের মাধ্যমে দুর্ঘটনাপ্রবণ স্পট ঝুঁকিমুক্ত করা হয়েছে। অন্যান্য স্পট ঝুঁকিমুক্ত করার কাজও হাতে নেয়া হয়েছে।
‘দুর্ঘটনাপ্রবণ সড়ক মোহনা চিহ্নিত করে প্রকৌশলগত সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। স্থাপন করা হচ্ছে প্রয়োজনীয় সাইন-সিগনাল। পণ্য পরিবহন চালকদের বিশ্রামের জন্য সিরাজগঞ্জের পাঁচিলায়, কুমিল্লার নিমসারে, হবিগঞ্জের জগদীশপুরে এবং মাগুরার লক্ষীকান্দরে চারটি বিশ্রামাগার নির্মাণ করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়নের আগে বাধ্যতামূলকভাবে পেশাজীবী গাড়িচালকদের দক্ষতা ও সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক রিফ্রেশার প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নকালে বাধ্যতামূলকভাবে প্রার্থীদের ডোপটেস্ট সনদ বা রিপোর্ট গ্রহণ করা হচ্ছে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি সড়কে চালক, পরিবহন শ্রমিক ও পথচারীদের মধ্যে সচেতনা বৃদ্ধির জন্যও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এসব পদক্ষেপের জন্য সরকারকে সাধুবাদ না জানিয়ে হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলে শুধু সমালোচনার জন্য সরকারের সমালোচনা করে যাচ্ছে বিএনপি।’
আরও পড়ুন:সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে থাকা পুলিশ হত্যা মামলার আসামি আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির আবেদন গ্রহণের কথা শুনেছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
চট্টগ্রামের এনায়েত বাজার পুলিশ ফাঁড়ির নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন শেষে সোমবার দুপুরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
পুলিশপ্রধান বলেন, ‘আরাভ খানের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য ইন্টারপোলসহ বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ শুরু করেছি। আমি কিছুক্ষণ আগে জানতে পেরেছি যে, তার যে নামে আমরা চার্জশিট দিয়েছি, ওই নামে রেড নোটিশ জারির একটা বিষয় (আবেদন/অনুরোধ) দিয়েছি। এটা বোধ হয় ইন্টারপোল গ্রহণ করেছে, এ রকম একটা খবর আমি পেয়েছি। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি, কীভাবে কাজ করছি সেটা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাচ্ছি না তদন্তের স্বার্থে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশ থেকে যদি কোনো আসামি পলায়ন করে বিদেশে চলে যায়, যখন আমরা তার সম্পর্কে মোটামুটি কিছু তথ্য পাই, তখন আমরা একটা রেড নোটিশ জারি করি। এটা ইন্টারপোল হেড কোয়ার্টারে যায়। আমি যেটা খবর পেয়েছি যে, এটা তারা অ্যাকসেপ্ট করেছে।’
এর আগে গত শনিবার পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলার ফেরারি আসামি আরাব খান ওরফে রবিউল ইসলামকে দেশে ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলকে চিঠি দেয়ার খবর জানায় বাংলাদেশ পুলিশ।
ইন্টারপোল বাংলাদেশ ডেস্কের এক কর্মকর্তা ওই দিন বিকেলে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা এই বিষয়ে (আরাবকে দেশে ফেরানো) ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইন্টারপোলকে মেইল করেছি। তারা আমাদের দেয়া তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে।’
একই দিনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের জানান, আরাবকে ফেরাতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলার পলাতক আসামি আরাবকে দেশে ফেরানোর উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘ইন্টারপোলের সহায়তায় তাকে ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে তাকে ধরতে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
‘আমরা অনেক কিছুই শুনেছি, জেনেছি। যেসব তথ্য আমাদের কাছে এসেছে, তা যাচাই-বাচাই করে বাদবাকি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আরাবকে নিয়ে আলোচনার শুরু যেখান থেকে
আরাবের এই জুয়েলারি শপের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ পান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এ নিয়ে সাকিব আল হাসানের ভিডিওবার্তার পর বিষয়টি নজরে আসে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি)।
সে সময় ডিবি মতিঝিল বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, ‘পুলিশ পরিদর্শককে হত্যা মামলার চার্জশিট হয়েছে অনেক আগেই। রবিউল চার্জশিটভুক্ত পলাতক আসামি। জুয়েলারি শপ উদ্বোধনের ঘোষণার পর আইডেন্টিফাই করি, যে ব্যক্তি আরাব খান নামে আইডিটি পরিচালনা করছেন, তিনি পুলিশ পরিদর্শক মামুন এমরান খাঁন হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম। তার ভারতীয় একটি পাসপোর্ট ও বাংলাদেশি পাসপোর্ট আমাদের কাছে রয়েছে।’
রবিউলকে ইন্টারপোলের সহায়তায় দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছিলেন ডিবি মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার রাজিব আল মাসুদ।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেছিলেন, ‘আমরা তাকে অনেক দিন ধরেই খুঁজছিলাম। দুবাইতে তিনি অবস্থান করছেন, এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। ফলে এখন আমরা ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নেব।’
ফেরারি আসামি আরাব খানের মালিকানাধীন আরাব জুয়েলার্স উদ্বোধন হয় ১৫ মার্চ রাতে। দুবাইয়ে নিউ গোল্ড সোক হিন্দ প্লাজার ৫ নম্বর ভবনের ১৬ নম্বর দোকানটি আরাবের।
তার ফেসবুক প্রোফাইল ঘেঁটে দেখা যায়, সাকিব আল হাসানের পাশাপাশি পাকিস্তানের ক্রিকেটার মোহাম্মদ আমির, আফগানিস্তানের ক্রিকেটার হযরতউল্লাহ জাজাই, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটার এভিন লুইস, ইংল্যান্ডের বেনি হাওয়েল, শ্রীলঙ্কার ইসুরু উদানা, বাংলাদেশি লেখক সাদাত হোসাইন, অভিনেত্রী দীঘি, আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলম, চলচ্চিত্র পরিচালক দেবাশীষ বিশ্বাস, কণ্ঠশিল্পী নোবেল, বেলাল খানসহ অনেকে জুয়েলারি শপ উদ্বোধন উপলক্ষে শুভেচ্ছাবার্তা দেন। তাদের একটি বড় অংশ দুবাইতে গিয়ে অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
আরও পড়ুন:ব্যাংক নিয়োগের প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক নিখিল রঞ্জন ধরকে।
২০২১ সালের নভেম্বরের ওই মামলায় সোমবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম রেজাউল করিম চৌধুরির আদালতে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল।
এদিন আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন নিখিল রঞ্জন ধর। রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে নিখিল রঞ্জন ধরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। একই সঙ্গে মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য ৫ এপ্রিল দিন ঠিক করেন।
এর আগে ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম শহিদুল ইসলাম এ মামলায় অভিযোগপত্র গ্রহণ করে নিখিল রঞ্জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
গত ৩১ জানুয়ারি অধ্যাপক নিখিলের নাম আসামির তালিকায় যুক্ত করে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শামীম আহমেদ।
তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে নিখিল ধরকে ‘পলাতক’ দেখিয়ে এবং কোনো আদালত থেকে জামিন না নেয়ায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির জন্য আদালতে আবেদন করেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির আওতায় ২০২১ সালের ৬ নভেম্বর ঢাকায় বিভিন্ন কেন্দ্রে রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচ ব্যাংকে অফিসার (ক্যাশ) নিয়োগের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয়। এক হাজার ৫১১টি পদের বিপরীতে ওই পরীক্ষায় অংশ নেন এক লাখ ১৬ হাজার ৪২৭ জন।
পরীক্ষা শেষে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ তোলেন পরীক্ষার্থীরা। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্তে নেমে প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রমাণ পাওয়ার কথাও জানায়।
ঢাকাসহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রশ্ন ফাঁস চক্রের বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। পরে প্রশ্ন ফাঁস করে উত্তর বিক্রির অভিযোগে আহ্ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক দেলোয়ার হোসেন, পারভেজ মিয়া ও প্রেসকর্মী রবিউল আউয়ালকে জিজ্ঞাসাবাদে ‘চাঞ্চল্যকর’ তথ্য পাওয়ার কথা জানায় ডিবি।
প্রশ্ন ফাঁসের ওই ঘটনায় সেসময় রূপালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার ৩০ বছর বয়সী জানে আলম মিলন, ৩৮ বছর বয়সী পূবালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান মিলন ও ৩৬ বছর বয়সী রাইসুল ইসলাম স্বপন এবং জনতা ব্যাংকের গুলশান শাখার অফিসার ৩৪ বছর বয়সী শামসুল হক শ্যামলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওই তদন্তেই বুয়েটের ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান নিখিল রঞ্জন ধরের নাম পাওয়ার কথা জানান ডিবির কর্মকর্তারা। পরে ২০২১ সালের ২১ নভেম্বর ওই বিভাগের প্রধানের পদ থেকে তাকে সরিয়ে দিয়ে ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করে বুয়েট প্রশাসন।
আহ্ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিয়ন দেলোয়ার তার স্বীকারোক্তিতে নিখিল রঞ্জনের নাম উল্লেখ করেন।
দেলোয়ার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেন, ‘প্রশ্নপত্র ছাপার বিভিন্ন কাজে তিনি আহ্ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাপাখানায় যেতেন। বুয়েট শিক্ষক নিখিল রঞ্জন ধর নিজেই তার ব্যাগে প্রশ্নপত্র ঢুকিয়ে নিতেন। তিনি নিজেও নিখিল রঞ্জনের ব্যাগে প্রশ্ন ঢুকিয়ে দিতেন।’
আরও পড়ুন:ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) পরবর্তী ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে নিজস্ব প্রক্রিয়ায় ভর্তি পরীক্ষা নিতে চায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান।
১২৫ তম একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় রোববার সকাল ১১টার দিকে গুচ্ছে না যেতে মত দেন সদস্যরা।
সভায় উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম, উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হাসান ভূঁইয়া এবং বিভিন্ন বিভাগ ও অনুষদের ডীন, শিক্ষকসহ অন্তত ১৬০ জন।
এদিন সভায় একমাত্র এজেন্ডা ছিল গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ায় ইবি অংশ নিবে কি না বিষয়টি চূড়ান্তকরণ। সভায় উপস্থিত সব শিক্ষক গুচ্ছের ভোগান্তি, সমস্যাগুলো তুলে ধরে নিজস্ব ভর্তি প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা নেয়ার পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার বলেন, ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা গুচ্ছ থেকে বের হয়ে এসে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিতে দাবি জানিয়ে আসছিলেন। উপাচার্য বরাবর লিখিত দাবিও জানানো হয়েছিল। রোববারের সভায় ভর্তি প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা, সমন্বয়হীনতা ও উচ্চশিক্ষার বৈষম্য ইত্যাদি কারণে গুচ্ছে থাকার বিপক্ষে মত দেন শিক্ষকরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আগামী ৩০ জুনের মধ্যে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করে পহেলা জুলাই থেকে ক্লাস শুরু করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়েছি।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘অল্প সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির সঙ্গে মিটিং ডেকে এটি বাস্তবায়নের জন্য কার্যক্রম শুরু করবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষকরা সবাই গুচ্ছের বিপক্ষে মত দিয়েছেন। যেহেতু ভর্তি কার্যক্রম তারাই পরিচালনা করবেন তাই তাদের মত গ্রহণযোগ্যতা পাবে। সোমবার এ বিষয়ে ঢাকায় ইউজিসির সাধারণ সভা রয়েছে। আশা করি এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।’
আরও পড়ুন:সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ব্যালট পেপার ছিনতাই ও পুলিশের কাজে বাধাসহ তিন মামলায় জামিন পেয়েছেন এ নির্বাচনের বিএনপিপন্থি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী। আর একটি মামলায় জামিন পেয়েছেন আরও ১১ জন।
বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার তাদেরকে ৮ সপ্তাহের আগাম জামিন দেয়।
তিন মামলায় জামিন পেয়েছেন সভাপতি প্রার্থী মাহববু উদ্দিন খোকন ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী রুহুল কুদ্দুস কাজলস।
আরেক মামলায় জামিন পাওয়া আইনজীবীরা হলেন মঞ্জুরুল আলম সুজন, মাহফুজ বিন ইউসুফ, নুরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ, মাহদিন চৌধুরী, গোলাম আক্তার জাকির, কামরুল ইসলাম সজল, কামরুল ইসলাম, মোক্তার কবির খান, আশরাফ উজ জামান খান, কাজী জয়নাল আবেদীন ও মাহবুবুর রহমান খান।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও কায়সার কামাল।
রুহুল কুদ্দুস কাজল জানান, আদালত তাদের আট সপ্তাহের অথবা পুলিশ রিপোর্ট দাখিল করা পর্যন্ত আগাম জামিন দিয়েছে।
গত ১৫ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ব্যালট ছিনতাই ও হট্টগোলের ঘটনায় বিএনপির শতাধিক আইনজীবীর বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা করেন আওয়ামী লীগের মনোনীত নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান মো. মনিরুজ্জামান। একই অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টের প্রশাসনিক কর্মকর্তা রবিউল হাসান আরেকটি মামলা করেন।
এরপর ১৬ মার্চ পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় আরেকটি মামলা করে।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামীপন্থি আইনজীবী ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের মধ্যে বিরোধ হয়। ভোট নেয়াকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও মারামারির ঘটনাও ঘটে। এ সময় পুলিশের হামলায় সাংবাদিকসহ অনেক আইনজীবী আহত হন।
বিএনপি ভোটে না যাওয়ায় এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা ১৪ পদে জয় লাভ করেন।
আরও পড়ুন:রাজধানীর লালবাগের আজিমপুর বাস স্ট্যান্ডে এক গাড়ির ধাক্কায় বাসের হেলপার নিহত হয়েছেন।
লালবাগের আজিমপুর বাস স্ট্যান্ডে সোমবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ২৬ বছর বয়সী সানোয়ার হোসেনের গ্রামের বাড়ি শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার পলাশিয়ায়।
সানোয়ারকে হাসপাতালে নিয়ে আসা তার সহকর্মী জাহিদ হাসান বলেন, ‘সানোয়ার ও আমি দেওয়ান পরিবহনে হেলপার হিসাবে কাজ করি। সোমবার সকালে আজিমপুর বাস স্ট্যান্ডে কাজে যোগ দিতে এসে গাড়ি ধাক্কায় সে গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল নিয়ে আসলে সোমবার সকাল ৮টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত্যু বলে জানান।’
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়া জানান, কোন গাড়ির ধাক্কায় সানোয়ার নিহত হয়েছেন তা জানা যায়নি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি লালবাগ থানাকে জানানো হয়েছে।
আগামী কয়েক দিন দেশের তাপমাত্রা বাড়তে পারে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, এমন অবস্থা চলতে পারে রোজার শুরুর সময়েও।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবির সোমবার দুপুরে নিউজবাংলাকে জানান, গত কয়েক দিন বৃষ্টিপাতের কারণে তাপমাত্রা কমে এসেছিল। সেটি আগামী কয়েক দিন বাড়তে পারে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৪ মার্চ থেকে রোজা শুরু হবে। সে সময়ে তাপমাত্রা বাড়তে পারে কি না জানতে চাইলে এ আবহাওয়াবিদ বলেন, সে সময়ে তাপমাত্রা এখনকার তুলনায় সামান্য বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাস
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে রয়েছে।
দিনভর আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়ে বলা হয়, ঢাকা, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গা এবং রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল এবং চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়া হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।
তাপমাত্রার বিষয়ে পূর্বাভাসে জানানো হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার অবস্থা নিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে পারে এবং তাপমাত্রা বাড়তে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, রোববার দেশের সর্বোচ্চ ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায়। সোমবার দেশের সর্বনিম্ন ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় রাজশাহীতে।
আজ ঢাকায় সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে সূর্যাস্ত হবে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, মঙ্গলবার ঢাকায় সূর্যোদয় হবে ভোর ৬টা ৩ মিনিটে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য