ন্যাশনাল ব্যাংকের যে দর, সেখান থেকেও রোববার সর্বোচ্চ বাড়তে পারবে ৮০ পয়সা। কমতেও পারবে একই পরিমাণ।
অন্যদিকে উৎপাদন শুরুর অপেক্ষায় থাকা রিং শাইন টেক্সটাইলের ৮০ পয়সা বাড়ার সুযোগ থাকলেও কমতে পারবে ১০ পয়সা।
রিং শাইনের কমার তো সুযোগ আছে, কিন্তু আরএন স্পিনিংয়ের দাম ৪ টাকা ৭০ পয়সা থেকে এক দিনেই বেড়ে ৫ টাকা ১০ পয়সা হওয়ার সুযোগ আছে। কিন্তু এখান থেকে কমতে পারবে না।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে দর বৃদ্ধি এবং কমার সর্বোচ্চ সীমা ১০ শতাংশ। কেবল লভ্যাংশ ঘোষণার পরদিন থাকে না কোনো সীমা।
এর মধ্যে রিং শাইনের এই বিশেষ সুবিধার কারণ, এটি সেই ৬৬ কোম্পানির একটি, যেগুলোর সর্বনিম্ন মূল্য বা ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়া হয়েছে। আর বিধি অনুযায়ী এসব কোম্পানির দর এক দিনে কমতে পারবে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ।
২০২০ সালে করোনার প্রাদুর্ভাবের পর ধস ঠেকাতে ১৯ মার্চ সব শেয়ারের সর্বমূল্য বা ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয়া হয়।
চলতি বছর করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে যখন লকডাউন শুরু হয়, তখন হঠাৎ করেই ৭ এপ্রিল ৬৬ কোম্পানির ফ্লোর তুলে দেয়া হয়।
এই কোম্পানিগুলোর শেয়ার সর্বনিম্ন মূল্যেও লেনদেন হচ্ছিল না। আর ফ্লোর প্রত্যাহারের পরদিনই বেশির ভাগ শেয়ার প্রায় ১০ শতাংশ দর হারায়।
প্রথম দিনের অভিজ্ঞতার পর নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) দেয় নতুন নির্দেশনা। তারা জানায়, এই ৬৬ কোম্পানির দর সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ বাড়তে পারবে, তবে কমতে পারবে ২ শতাংশ।
এই নির্দেশনার ফলে যেগুলোর দাম ৫ টাকার কম, সেগুলোর দাম কমতে পারবে না, যেগুলোর দাম ৫ টাকা থেকে ১০ টাকার নিচে, সেগুলো এক দিনে কমতে পারবে ১০ পয়সা, যেগুলোর দাম ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকার কম, সেগুলো কমতে পারবে ২০ পয়সা।
এই নির্দেশনার পর দর পতনের হার ঠেকলেও দাম হারাতে থাকে কোম্পানিগুলো। তবে একপর্যায়ে অর্ধেক কোম্পানির দাম ফ্লোর প্রাইস ছাড়িয়েছে। বাকিদের মধ্যে সিংহভাগের দামই ফ্লোরের কাছাকাছি। সবচেয়ে বড় কথা, শেয়ারগুলোর হাতবদল বেড়েছে। ফলে কেনাবেচা করে বিনিয়োগকারীরা লাভবান হতে পারছেন।
দাম বাড়ার সুযোগ
দর হারানোর ক্ষেত্রে অন্য কোম্পানির তুলনায় সার্কিট ব্রেকার পাঁচ ভাগের এক ভাগ হওয়ায় এই ৬৬টি কোম্পানির যেকোনোটির শেয়ার মূল্য দ্রুত বাড়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
পুঁজিবাজারে নানা সময় বিভিন্ন কোম্পানির ক্ষেত্রে যৌক্তিক কারণ ছাড়া দাম বাড়ার ইতিহাস আছে। এর পেছনে কাজ করে নানা গুঞ্জন, গুজব।
এই গুজব বা গুঞ্জন ছড়িয়ে যদি এই ৬৬ কোম্পানির কোনোটির দাম দুই দিন সর্বোচ্চ পরিমাণে বেড়ে যায়, তাহলে তা কমে একই পর্যায়ে আসতে সময় লাগবে অনেক বেশি।
রিং শাইনের শেয়ারমূল্য এখন ৮ টাকা ৩০ পয়সা হওয়ায় রোববার সর্বোচ্চ পরিমাণে বেড়ে হতে পারবে ৯ টাকা ১০ পয়সা। পরের দিন আবার ৯০ পয়সা বেড়ে হতে পারবে ১০ টাকা।
দুই দিনে ১ টাকা ৭০ পয়সা বাড়ার সুযোগ থাকলেও এক দিন কমতে পারবে সর্বোচ্চ ২০ পয়সা, আর বাকি ১০ পয়সা কমে আবার ৮ টাকা ৩০ পয়সায় আসতে আসতে সময় লাগবে ১৬ কার্যদিবস।
অন্যদিকে এনবিএলের বর্তমান দাম ৮ টাকা ৬০ পয়সা হওয়ায় পরের কার্যদিবস বেড়ে ৯ টাকা ৪০ পয়সা এবং পরদিন আবার ৯০ পয়সা বেড়ে ১০ টাকা ৩০ পয়সা হতে পারবে। আবার সেখান থেকে ৮ টাকা ৬০ পয়সায় আসতে সময় লাগবে আরও দুই কার্যদিবস।
কী বলছে বিএসইসি, বিশ্লেষক
৬৬ কোম্পানির এই বিশেষ সুবিধা কত দিন থাকবে, জানতে চাইলে বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা কোনো দীর্ঘমেয়াদি বিষয় না। একটা অবস্থার ফ্লোর প্রাইস এবং যেগুলোর ফ্লোর প্রত্যাহার করা হয়েছে, সেগুলোর দর পতন ঠেকাতে এই সুবিধা দেয়া হয়েছে। এটা অব্যাহত থাকবে।’
তবে তিনি এও বলেন, ‘দীর্ঘ মেয়াদে পুঁজিবাজারের জন্য ফ্লোর প্রাইস কার্যকর নয়। পুঁজিবাজার আরও কিছুটা ভালো হোক, পর্যায়ক্রমে আমরা তা উঠিয়ে দেব।’
ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক প্রধান গবেষণা কর্মকর্তা দেবব্রত সরকার এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এই মুহূর্তে পুঁজিবাজারের প্রতি বিনিয়োগকরীদের যে আস্থা তৈরি হয়েছে, তাতে ফ্লোর প্রাইস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। যেসব কোম্পানির শেয়ার দর ফ্লোর প্রাইস বা ফ্লোর প্রাইসের কাছাকাছি আছে, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ধারণা হয়েছে, এ দরের নিচে আর নামবে না। ফলে লোকসানও একটি সীমার মধ্যে আছে।’
ফ্লোর প্রাইস পর্যায়ক্রমে উঠিয়ে দেয়া হলে কিছুদিন এই ৬৬ কোম্পানির মতোই দর পতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
সেই কোম্পানিগুলোর কী চিত্র
যে ৬৬ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করা হয়েছে, তার মধ্যে পিপলস লিজিংয়ের লেনদেন স্থগিত আছে। বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেডের লেনদেন হওয়ার ইতিহাস নেই বললেই চলে।
বাকিগুলোর মধ্যে ২৫টি কোম্পানির শেয়ার দর উঠে এসেছে ফ্লোর প্রাইসের ওপরে। দুটি কোম্পানি এখন আগের ফ্লোর প্রাইসেই লেনদেন হচ্ছে। আর কমেছে ৩৫টির দাম।
তবে এই ৩৫টির মধ্যে অন্তত ২০টি কোম্পানি আছে, যেগুলো একটি ভালো দিনেই উঠে যেতে পারে বাতিল হওয়া ফ্লোর প্রাইসের ওপরে।
যেগুলোর দাম বেড়েছে
মেট্রো স্পিনিং মিলসের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৮ টাকা ৫০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ১৪ টাকা ৭০ পয়সা।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কাট্টালী টেক্সটাইলের দর। এর ফ্লোর প্রাইস ছিল ৯ টাকা ৩০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ১৭ টাকা ৫০ পয়সা।
প্রাইম টেক্সটাইলের ফ্লোর প্রাইস ছিল ১৫ টাকা ৮০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ১৭ টাকা ৩০ পয়সা।
স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৪০ টাকা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ৫৫ টাকা ৬০ পয়সা।
যে ৬৬ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করা হয়
রূপালী ব্যাংকের ফ্লোর প্রাইস ছিল ২৪ টাকা ৪০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ৩১ টাকা ৪০ পয়সা।
স্কয়ার নিট কম্পোটিজ লিমিটেডের ফ্লোর প্রাইস ছিল ২১ টাকা ৯০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ২৬ টাকা ৪০ পয়সা।
ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৪০ টাকা ১০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ৫৫ টাকা ৮০ পয়সা।
আইপিডিসি ফিন্যান্স লিমিটেডের ফ্লোর প্রাইস ছিল ২২ টাকা ৬০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ২৭ টাকা ৮০ পয়সা।
ফিনিক্স ফিনান্স ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ফ্লোর প্রাইস ছিল সাত টাকা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ১০ টাকা ৯০ পয়সা।
ফিনিক্স ফিনান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ফ্লোর প্রাইস ছিল ২২ টাকা ৭০ পয়সা। সোমবার এর দাম দাঁড়িয়েছে ২৫ টাকা ৫০ পয়সা।
এসইএমএল এফবিএলএসএল গ্রোথ ফান্ডের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৭ টাকা ৮০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ৯ টাকা ৬০ পয়সা।
বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমস লিমিটেডের ফ্লোর প্রাইস ছিল ১৬ টাকা ২০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ১৬ টাকা ৮০ পয়সা।
আরএন স্পিনিং মিলসের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৩ টাকা ৭০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ৪ টাকা ৭০ পয়সা।
আইএফআইএল ইসলামী মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ান ফ্লোর প্রাইস ছিল ৬ টাকা ২০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ৬ টাকা ৬০ পয়সা।
ভিএফএস থ্রেড ডাইংয়ের ফ্লোর প্রাইস ছিল ২২ টাকা ৫০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ২৩ টাকা ৬০ পয়সা।
ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৬ টাকা ৯০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ৭ টাকা ৫০ পয়সা।
দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেডের ফ্লোর প্রাইস ছিল ১০ টাকা ৪০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা।
প্যাসিফিক ডেনিম লিমিটেডের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৮ টাকা ৫০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ১০ টাকা।
সাফকো স্পিনিং ফ্লোর প্রাইস ছিল ১১ টাকা ২০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ১৩ টাকা ১০ পয়সা।
রিং শাইন টেক্সটাইলের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৬ টাকা ৪০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ৮ টাকা ৩০ পয়সা।
রিজেন্ট টেক্সটাইল মিলসের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৭ টাকা ৮০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ৯ টাকা।
সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের ফ্লোর প্রাইস ছিল ১৪ টাকা ৬০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ১৪ টাকা ৮০ পয়সা।
কুইন সাউথ টেক্সটাইলের ফ্লোর প্রাইস ছিল ২৪ টাকা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ২৫ টাকা ৮০ পয়সা।
অলেম্পিক একসেসরিসের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৬ টাকা ৮০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ৭ টাকা ৪০ পয়সা।
নাভানা সিএনজি লিমিটেডের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৩৩ টাকা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ৩৩ টাকা ৬০ পয়সা।
যে দুটি ফ্লোর প্রাইসে
কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ফ্লোর প্রাইস ছিল ২০ টাকা ৭০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ২০ টাকা ৭০ পয়সা।
ইভিন্স টেক্সটাইলের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৮ টাকা ২০ পয়সা। সোমবার দাম দাঁড়িয়েছে ৮ টাকা ২০ পয়সা।
যেগুলোর দাম কমেছে
ফ্লোর প্রাইস থেকে কমেছে সবচেয়ে বেশি এমএল ড্রাইং লিমিটেডের। এটির ফ্লোর প্রাইস ছিল ৫০ টাকা। বৃহস্পতিবার দাম ছিল ৩০ টাকা ৫০ পয়সা।
সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের ফ্লোর প্রাইস ছিল ২১ টাকা ৭০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ১৬ টাকা।
সোনারগাঁও টেক্সটাইলও অনেক দর হারিয়েছে। এর ফ্লোর প্রাইস ছিল ২৪ টাকা ৫০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ১৯ টাকা ৪০ পয়সা।
খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের ফ্লোর প্রাইস ছিল ১৭ টাকা ৬০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ৪০ পয়সা।
ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৩৯ টাকা ৫০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ৩২ টাকা ৫০ পয়সা।
সায়হাম টেক্সটাইলের ফ্লোর প্রাইস ছিল ২৪ টাকা ৫০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ১৯ টাকা ৯০ পয়সা।
নাহী অ্যালুমিনিয়ামের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৪৭ টাকা ১০ পয়সা। সোমবার দাম দাঁড়িয়েছে ৩৯ টাকা ২০ পয়সা।
দুলামিয়া কটনের ফ্লোর প্রাইস ৪৮ টাকা ১০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ৪১ টাকা ৫০ পয়সা।
আরএসআরএম স্টিল মিলসের ফ্লোর প্রাইস ছিল ২২ টাকা ৯০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ১৯ টাকা।
ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের ফ্লোর প্রাইস ছিল ১১ টাকা ৫০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ৯ টাকা ৯০ পয়সা।
ওয়াইমেক্স ইলেকট্রোডের ফ্লোর প্রাইস ছিল ২৪ টাকা ৩০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ২২ টাকা ৫০ পয়সা।
উত্তরা ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৪৩ টাকা ৬০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ৩৯ টাকা।
শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ফ্লোর প্রাইস ছিল ১৫ টাকা ১০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ৭০ পয়সা।
গোল্ডেন হারভেস্ট এগ্রোর ফ্লোর প্রাইস ছিল ১৬ টাকা ৭০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ১৪ টাকা ৪০ পয়সা।
ফার ক্যামিকেলের প্রাইস ছিল ৯ টাকা ৮০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ৮ টাকা ৯০ পয়সা।
ইন্দোবাংলা ফার্মাসিউটিক্যালের ফ্লোর প্রাইস ছিল ১৯ টাকা ১০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ১৭ টাকা ৫০ পয়সা।
প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৪৮ টাকা ৯০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ৪৪ টাকা ২০ পয়সা।
ইয়াকিন পলিমারের ফ্লোর প্রাইস ছিল ১১ টাকা ১০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ৯ টাকা ৮০ পয়সা।
নূরানী ডাইংয়ের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৭ টাকা ৭০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ৭ টাকা।
আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ফ্লোর প্রাইস ছিল ২৬ টাকা ২০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ২৩ টাকা ৪০ পয়সায়।
সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৪৮ টাকা ১০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ৪৫ টাকা ৭০ পয়সা।
এএফসি অ্যাগ্রো বায়োটেক লিমিটেডের ফ্লোর প্রাইস ছিল ১৭ টাকা। বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৫ টাকা ৮০ পয়সায়।
সায়হাম কটনের ফ্লোর প্রাইস ছিল ১৬ টাকা ১০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ১৪ টাকা ৯০ পয়সা।
সিলভা ফার্মার ফ্লোর প্রাইস ছিল ১৮ টাকা ৩০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ১৭ টাকা ৮০ পয়সা।
এডভান্ট ফার্মা লিমিটেডের ফ্লোর প্রাইস ছিল ২২ টাকা ৮০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দর দাঁড়িয়েছে ২১ টাকা ৩০ পয়সা।
গ্লোবাল হ্যাভি ক্যামিকেল লিমিটেডের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৩১ টাকা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ২৯ টাকা ৮০ পয়সা।
কেপিসিএলের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৪৫ টাকা ৩০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ৪২ টাকা ২০ পয়সা।
উসমানিয়া গ্লাস শিটের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৪৪ টাকা ৮০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ৪২ টাকা ৪০ পয়সা।
শাসা ডেনিমের ফ্লোর প্রাইস ছিল ২১ টাকা ৬০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ২০ টাকা ৩০ পয়সা।
জাহিন স্পিনিং মিলসের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৬ টাকা ৩০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ৬ টাকা ১০ পয়সা।
হামিদ ফেব্রিক্স লিমিটেডের ফ্লোর প্রাইস ছিল ১৫ টাকা ৭০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ১৫ টাকা ৬০ পয়সা।
ডেসকোর ফ্লোর প্রাইস ছিল ৩৪ টাকা ৮০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ৩৪ টাকা ৩০ পয়সা।
আরগন ডেনিমে ফ্লোর প্রাইস ছিল ১৯ টাকা ২০ পয়সা। বৃহস্পতিবার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৯ টাকা ১০ পয়সা।
বেঙ্গল উন্ডশন থার্মোপ্লাস্টিস ফ্লোর প্রাইস ছিল ১৭ টাকা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ১৬ টাকা ৮০ পয়সা।
মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ফ্লোর প্রাইস ২৪ টাকা ১০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ২৩ টাকা ৯০ পয়সা।
বিচ হ্যাচারির ফ্লোর প্রাইস ছিল ১৩ টাকা ৬০ পয়সা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ৮০ পয়সা।
সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যাল ফ্লোর প্রাইস ছিল ১২ টাকা। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ৩০ পয়সা।
আরও পড়ুন:প্রতারণার মাধ্যমে শেয়ার বাজার থেকে ২৫৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন বাদী হয়ে সংস্থাটির সমন্বিত ঢাকা জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এসব তথ্য জানান।
আক্তার হোসেন বলেন, তিনটি কোম্পানির শেয়ারে সাকিব আল হাসান বিনিয়োগ করেছেন। বিনিয়োগ কার্যক্রমে মার্কেট ম্যানিপুলেট করা হয়েছে। মার্কেট ম্যানিপুলেশনের সঙ্গে তিনি (সাকিব) জড়িত।
এর আগে গত সোমবার সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। সাকিব ছাড়া ১৪ আসামি হলেন— সমবায় অধিদপ্তরের উপনিবন্ধক মো. আবুল খায়ের (ওরফে হিরু) ও তার স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান, আবুল কালাম মাদবর, কনিকা আফরোজ, মোহাম্মদ বাশার, সাজেদ মাদবর, আলেয়া বেগম, কাজী ফুয়াদ হাসান, কাজী ফরিদ হাসান, শিরিন আক্তার, জাভেদ এ মতিন, মো. জাহেদ কামাল, মো. হুমায়ুন কবির ও তানভির নিজাম।
আসামিদের বিরুদ্ধে ২৫৬ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার ৩০৪ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক দ্রুত আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার অসৎ অভিপ্রায়ে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ সংক্রান্ত প্রচলিত আইন ও বিধি (সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬১ এর ১৭ ধারা) পরিকল্পিতভাবে লঙ্ঘনপূর্বক নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিও অ্যাকাউন্টসমূহে অসাধু, অনৈতিক ও অবৈধ উপায়ে ফটকা ব্যবসার মতো একাধিক লেনদেন, জুয়া ও গুজবের মাধ্যমে বাজারের কারচুপি করেছেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, পরিকল্পিতভাবে নির্দিষ্ট কিছু শেয়ার সংঘবদ্ধভাবে ক্রমাগত ক্রয়-বিক্রয়পূর্বক কৃত্রিমভাবে দাম বাড়িয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ওই শেয়ারসমূহে বিনিয়োগে প্রতারণাপূর্বক প্রলুব্ধ করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে তাদের ২৫৬ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার ৩০৪ টাকা আত্মসাৎপূর্বক অস্বাভাবিক রিয়ালাইজড ক্যাপিটাল গেইনের নামে অর্জিত অপরাধলব্ধ অর্থ বা প্রসিড অব ক্রাইম শেয়ার বাজার থেকে সংঘবদ্ধভাবে উত্তোলন করেছেন। আসামি মো. আবুল খায়ের (ওরফে হিরু) কর্তৃক তার স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসানের সহায়তায় ক্যাপিটাল গেইনের নামে অর্জিত অপরাধলব্ধ অর্থের ২১ কোটি ১৪ লাখ ৪২ হাজার ১৮৫ টাকার উৎস গোপনের অভিপ্রায়ে লেয়ারিং করে বিভিন্ন খাতে স্থানান্তর করেন। তিনি ১৭টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সর্বমোট ৫৪২ কোটি ৩১ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ টাকার অস্বাভাবিক, অযৌক্তিক এবং সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।
ওই মামলায় সাকিব আল হাসানের সম্পৃক্ততা প্রসঙ্গে বলা হয়, আসামি মো. আবুল খায়ের (ওরফে হিরু) কর্তৃক শেয়ার বাজারে কারসাজিকৃত প্যারামাউন্ট ইস্যুরেন্স লি., ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স লি. এবং সোনালী পেপারস লি.-এর শেয়ারে সাকিব আল হাসান বিনিয়োগ করে বাজার কারসাজিতে যোগসাজশ করেন। সরাসরি সহায়তাপূর্বক সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কারসাজিকৃত শেয়ারে বিনিয়োগে প্রতারণাপূর্বক প্রলুব্ধ করে তাদের ২ কোটি ৯৫ লাখ ২ হাজার ৯১৫ টাকা রিয়ালাইজড ক্যাপিটাল গেইনের নামে অপরাধলব্ধ আয় হিসেবে শেয়ার বাজার হতে উত্তোলনপূর্বক আত্মসাৎ করেছেন।
আসামিদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) এবং দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/১২০বি/১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
চলতি বছরের এপ্রিলে সাকিবের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। অর্থপাচার ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য দুদকের উপ-পরিচালক মাহবুবুল আলমের নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ফলাফলের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডক্টর আলী রীয়াজ জুলাই মাসের মধ্যে একটি জাতীয় সনদ তুলে ধরার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
গতকাল বিকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দিনব্যাপী দ্বিতীয় দফার আলোচনার পর এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আলোচনা অত্যন্ত ইতিবাচক। আমাদের প্রতিনিয়তই অগ্রগতি হচ্ছে এবং আমরা আশা করছি যে জুলাই মাসের মধ্যে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত জাতীয় সনদে পৌঁছাতে পারব এবং রাষ্ট্রীয় স্বার্থে সেখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে আমরা ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করতে পারব।’
আলোচ্য বিষয় নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রথম দফার আলোচনার পর সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের কিছু বিষয়ে পুনর্বিবেচনার কথা রাজনৈতিক দলগুলো বলেছিলেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার আবার এ বিষয়ে আলোচনা করার পর আমরা এ বিষয়ে একমত হতে পেরেছি যে ৭০ অনুচ্ছেদের বিদ্যমান বিধান পরিবর্তন করে অর্থবিল ও আস্থা ভোটের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য বাধ্যবাধকতা থাকবে যেন তারা দলের পক্ষে ভোট দেন।
তিনি বলেন, দ্বিতীয়ত, গতদিনের আলোচনার তুলনায় একটি অগ্রগতি হয়েছে এবং আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে পারি যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ওই ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে চারটি কমিটি অর্থাৎ পাবলিক একাউন্টস কমিটি, প্রিভিলেজ কমিটি, এস্টিমেশন কমিটি এবং পাবলিক আন্ডারটেকিং কমিটিসহ জন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সংক্রান্ত কমিটিগুলোর সভাপতির পদ আসনের সংখ্যানুপাতিক হারে বিরোধী দলকে প্রদানের বিষয়ে সকলে একমত হয়েছেন।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ আরো বলেন, জাতীয় সংসদের নারী প্রতিনিধিত্বের বিষয় দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা হয়েছে। সকলেই জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য ১০০টি আসন সংরক্ষিত করার জন্য সকলে একমত হয়েছেন। তবে এর পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা অব্যাহত থাকবে। আমরা আশা করছি আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে একমত হওয়া যাবে।
তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে যেটি সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদে আছে তার পাশাপাশি সংবিধানের ৪৮ (৩) অনুচ্ছেদে আছে সেগুলো সংশোধনের ব্যাপারে এক ধরনের ঐক্যমত হয়েছে। কিন্তু আমরা এই বিষয়টি আগামী সপ্তাহে আবার আলোচনা করব যেন একটি নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত আমরা আসতে পারি। কিন্তু প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ব্যবস্থা পরিবর্তনের বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টের বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে কিন্তু তার সঙ্গে নীতিগতভাবে কিছু কিছু দল এর বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিন্তু এটা কম বেশি সকলে স্বীকার করেছেন যে এ বিষয়ে পুনর্বিবেচনার দরকার আছে।
এ সময় কমিশনের একটি বড় স্টেকহোল্ডার হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর গতকালের আলোচনায় অনুপস্থিতির কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন , যে কোনো পরিস্থিতির উদ্ভব হলে আমরা সার্বক্ষণিকভাবে সব দলের সাথে যোগাযোগ রাখি যেন তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়। কমিশনের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে, আমরা আশা করি গতকাল উপস্থিত না থাকতে পারলেও আজ তারা বা তাদের প্রতিনিধিরা এখানে উপস্থিত থাকবেন।
উল্লেখ্য, অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ চূড়ান্ত করা এবং বহুল আলোচিত ‘জুলাই সনদ’ প্রস্তুতের লক্ষ্যে গতকাল থেকে শুরু হয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা।
বেলা এগারোটা চল্লিশ মিনিটে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে এ আলোচনার আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়।
আলোচনায় কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে আরো অংশ নেন জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, আইয়ুব মিয়া, মো. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
এছাড়াও, বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, বিএনপি চেয়ারপার্সন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ,খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, জাতীয় গণফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, এবি পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (বিএলডিপি) চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, বাংলাদেশ জাসদের পক্ষ থেকে ডা. মুশতাক হোসেনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
তবে, আমন্ত্রণ পেলেও বৈঠকে উপস্থিত হননি জামায়াতে ইসলামীর কোনো প্রতিনিধি।
এর আগে, এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জানায়, ১৭, ১৮ ও ১৯ জুন এই তিনদিন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে ভয়হীন ও পক্ষপাতহীনভাবে কাজ করবেন বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, কেউ বোমা মারলেও তিনি ভয় পাবেন না।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে পুরোনো হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারপতিদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ত্বরান্বিত করতে গত ৮ মে ট্রাইব্যুনাল-২ গঠন করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনার মাধ্যমে ট্রাইব্যুনাল-২ এর কার্যক্রম শুরু হয়ে গেল। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা আল্লাহর ওপর নির্ভর করে পথ চলি। তার ওপর নির্ভর করে কাজ করি। কেউ বোমা মারলেও ভয় পাব না। কেউ গুলি করে মেরে ফেললে আমার সব গুনাহ নিয়ে যাবে। ফলে আমার ভয়ের কারণ নেই। আমি কবরের পাশে দাঁড়ানো, আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। ভয়ের কিছু নেই। বিচারের এই তরি বয়ে নিয়ে যাব।’ বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী আরও বলেন, কিছু লোক গত ১৫ বছর ক্ষমতা দখল করে রেখেছিল। তারা নিষ্ঠুরভাবে শাসন করেছে। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলার সাহস করেনি। মানুষ নিজেদের কথা বলতে পারেনি। সেই ফ্যাসিস্টরা এখনো ফিরে আসার চেষ্টা করছে।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, শত শত ছাত্র-জনতা জীবন দিয়ে মানুষকে স্বাধীনভাবে কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছেন। অনেকে আহত হয়েছেন। তাদের অনেকে এখনো যথাযথ চিকিৎসা পাননি। বিচারকেরা চেষ্টা করছেন ছাত্র-জনতার দুর্ভোগ কমাতে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তাদের নাম উল্লেখ করে বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ভয়হীন ও পক্ষপাতহীনভাবে তারা কাজ করবেন। তাদের কাছ থেকে ন্যায়বিচার আশা করা যায়। তারা আন্তর্জাতিক নিয়ম ও প্রক্রিয়া মেনে চলবেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের বিষয়গুলোও মেনে চলবেন বলেও উল্লেখ করেন নজরুল ইসলাম চৌধুরী। এ সময় ট্রাইব্যুনাল-২ এর সদস্য বিচারপতি মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও বিচারপতি নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংবর্ধনার পর অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা দেখতে চাই আমাদের এই বিচার নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে যেন কোন প্রশ্ন না ওঠে। আমরা দেখতে চাই এই বিচার যেন হয় আন্তর্জাতিক মানের।’
চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, আজকের সংবর্ধনায় এজলাসে বসা শুরুর মধ্য দিয়ে ট্রাইব্যুনাল-২ এর যাত্রা শুরু হলো। ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে কিছু মামলা এখানে আসবে বলে আশা করছি। আর কিছু নতুন মামলা এখানে দাখিল করব। ইনশাআল্লাহ, বিচারের অগ্রগতি দেশবাসী দেখতে পাবে। গত ৮ মে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীকে চেয়ারম্যান করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গঠন করে সরকার। এই ট্রাইব্যুনালের সদস্য পদে নিয়োগ পান অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মঞ্জুরুল বাছিদ এবং মাদারীপুরের জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর। এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান ও সদস্যরা হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকের প্রাপ্য বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা পাবেন। এছাড়া প্রজ্ঞাপনে বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদার, বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বিদ্যমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার, তার দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছে বলে শত শত অভিযোগ জমা পড়ে। জাজ্বল্যমান এসব অপরাধের বিচার অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
সরকার ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতের উপর নিবিড়ভাবে নজর রাখছে জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এই মুহূর্তে জ্বালানির দাম বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই।
তিনি বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। যদি সংঘাত দীর্ঘায়িত হয়—তাহলে এটি আমাদের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। তবে আপাতত, আমরা অপেক্ষা করব।’
মঙ্গলবার (১৭ জুন) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নতুন সম্মেলন কক্ষে অর্থনৈতিক বিষয় সম্পর্কিত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এবং পাবলিক ক্রয় সম্পর্কিত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
এই সংঘাত অভ্যন্তরীণ জ্বালানির দামের উপর প্রভাব ফেলতে পারে কিনা এমন প্রশ্নে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘আন্তর্জাতিকভাবে এরই মধ্যে দাম সামান্য বেড়েছে, তবে আমাদের আগের দেওয়া ক্রয়াদেশগুলোকে এটি প্রভাবিত করেনি।’
তিনি আরও বলেন, সরকার গ্যাস ও এলএনজির দামও পর্যবেক্ষণ করছে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘যদি এলএনজির দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে, তবে আমরা আমাদের পরিকল্পনায় এটি বিবেচনা করব। সৌভাগ্যবশত, আজ আমরা যে এলএনজি আমদানি প্রস্তাবটি অনুমোদন করেছি তা পুরোনো দামেই। আমরা ভাগ্যবান যে এটি আগের হারে পাচ্ছি।’
বাণিজ্যের উপর বর্তমানে কোনো প্রভাব পড়ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না, বর্তমানে বাণিজ্যের উপর কোনো প্রভাব পড়ছে না।’
ভবিষ্যতে সম্ভাব্য বিঘ্নের আশঙ্কায় সরকার কোনো বিশেষ প্রস্তুতি নিচ্ছে কিনা জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘আজ আমরা যে এলএনজি এবং সার আমদানি প্রস্তাবগুলো অনুমোদন করেছি তা আগের দামেই রয়েছে। ভবিষ্যতে নতুন যেকোনো প্রস্তাব মূল্যে উপর প্রভাব পড়তে পারে।’
যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে তাক্ষণিক পরিকল্পনা সম্পর্কে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, জ্বালানি মন্ত্রণালয় বিকল্পগুলো নিয়ে কাজ করছে। ‘আমরা এলএনজির উপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করি। এই সংঘাত কেবল জ্বালানি নয়, সার আমদানি এবং সামুদ্রিক পরিবহনকেও প্রভাবিত করতে পারে। হরমুজ প্রণালী দিয়ে জাহাজ চলাচল করে যার প্রভাব পড়তে পারে। তবে আমি মনে করি না যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হবে।’
বিশ্বব্যাপী জ্বালানির দাম ইতোমধ্যে বেড়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, অনেক দেশে দাম বেড়েছে, তবে আমরা এখনও কোনো পরিবর্তন করছি না। আমরা অপেক্ষা করব এবং দেখব।’
পালকি ছিল এক সময় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য, বর-কনের বাহন। এটা ছাড়া বিয়ের কথা ভাবাই যেত না। সারা দেশের মতো রূপগঞ্জেও একই অবস্থা ছিল। কালের বির্বতনে চিরায়ত গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের ধারক পালকি রূপগঞ্জে আজ আর চোখে পড়ে না। পালকি এখন মিউজিয়াম পিস হয়ে কালের সাক্ষী হয়ে আছে জাদুঘরে। বেহারাদের সুর করে সেই গ্রাম ঘুরে মাঠ-ঘাট-প্রান্তর পেরিয়ে গন্তব্যের কাছে দূর থেকে সেই ছয় বেহারাদের আর দেখা যাচ্ছে না। তাদের ছন্দিত লয়ে হাঁটার সঙ্গে সঙ্গে এ গাঁ থেকে ওগাঁয়ে নাইয়র, বিয়ের কনে বর কিংবা মান্যগন্য ব্যক্তিদের নিয়ে যাওয়ার এ চক্রবিহীন যান সম্ভবত তার অন্তিম যাত্রা করেছে। ছন্দের জাদুকর সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ভাষায়, রবীন্দ্রনাথের কবিতায়, হেমন্তের গানে কিংবা ভুপেন হাজারিকার মাদল তালে চলা পালকি এখন ঐতিহ্যের খাতায় নাম লিখিয়েছে।
সেই ন্যাংটা পুঁটো ছেলেটা আর বলে না পালকি চলে পালকি চলে.....আদুল গাঁয়ে যাচ্ছে কারা হনহনিয়ে। রবি ঠাকুরের ‘বীর পুরুষ’ কবিতার খোকা তার মাকে পালকিতে নিয়ে যাওয়ার সময় ডাকাতদের সাথে লড়ে যখন ওরা আসে তেড়ে ‘হারে রে রে’ বলে। সেই ভীষণ যুদ্ধের বর্ণনাও দিতে পারে না মাকে। মাও বলতে পারে না, ভাগ্যেস খোকা ছিল তার সঙ্গে। দাদা তার সদ্য বিয়ে হওয়া দিদিকে আর বলে না, আর কটাঁ দিন থাক না দিদি, কেঁদে কেটে কঁকিয়ে, দুদিন বাদে তো নিয়েই যাবে পালকি করে সাজিয়ে। ‘মৈমনসিং গীতিকার’ দেওয়ানা মদিনা ও ছুটবে না পালকিতে আবের পাংখা নিয়ে আর পালকি বহরের সেই পরিচিত দৃশ্য এখন আর দেখা যায় না।
আধুনিক যোগাযোগের গোগ্রাসে পালকি হারিয়ে যাচ্ছে বিস্মৃতির অতল তলে প্রাচীন বাংলার এ বাহনটি। এক সময় গ্রাম-বাংলার হাটবাজারে পালকি সাজিয়ে রাখা হত। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার আগেই পালকিওয়ালাদের কাছে ছুটে যেতেন বরের লোকজন। পালকি কাঠ দিয়ে তৈরি করা হতো। ছয়জন মিলে পালকি বহন করতো। সামনে পেছনে দুজন ও মাঝখানে দুজন করে পালকি কাঁদে নিত। প্রথমে বরকে পালকিতে করে তার নিজ বাড়ি থেকে কনের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হতো। বিয়ের কার্যক্রম সম্পূর্ণ হওয়ার পর বর-কনেকে এক সঙ্গে আবার বরের বাড়িতে নিয়ে আসতো।
আসলে পালকি নামটির উৎপত্তি ফারসি ও সংস্কৃত উভয় ইন্দো ভারতীয় ভাষা থেকে আর সেই সঙ্গে ফরাসি থেকেও। পল্লীকবি জসিম উদ্দিন তাঁর স্মৃতি কথায় এ গাঁ থেকে ওগাঁয়ে যাওয়া বেহারাদের পালকি নিয়ে চলার যে বিবরণ দিয়েছেন তা আমাদের আবহমান গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের অংশ। বিলুপ্ত এ পালকি এখন বিভিন্ন জাদুঘরে শোভা পাচ্ছে। বিয়ে বাড়িতে নব বর-বধুদের আনা নেয়ায় পালকি ব্যবহার করা হতো। চক্রযানের বিপ্লবে পালকির জায়গা দখল করে নিয়েছে আধুনিকতার এ যুগে প্রাইভেটকার, নোহা, বাস ও মাইক্রোবাস। হালের লাঙ্গল যেমন গ্রামেও অচল তেমনি ধনী গরিব নির্বিশেষে সকলের নানা অনুষ্ঠানে ব্যবহার করছে আধুনিক যান্ত্রিক যানবাহন। এসব যানের রমরমা ব্যবসাও এ কারণেই জমে ওঠেছে।
আধুনিকতার ছোঁয়ায় ইদানিং বর-কনের বাহনে যোগ হয়েছে হেলিকপ্টারও। রূপগঞ্জের মুড়াপাড়া এলাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে বর যাত্রা গিয়েছেন সফিক মিয়া। হেলিকপ্টারে বর-কনে বহনের ঘটনা তখন পুরো এলাকায় বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। ছড়ায় বলা হতো বউ সাজবে কালকি, চড়বে সোনার পালকি! সোনার বরনী কন্যা এখন আর পালকিবদ্ধ পরিবেশে যাবে না, উঠবে আসল বা নকল ফুলের সাজানো এয়ারকন্ডিশন গাড়িতে।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) ভোর সাড়ে চারটার দিকে পাবনা বাইপাস মহাসড়কের ইয়াকুব ফিলিং স্টেশন এর সামনে দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ট্রাকচালক সেলিম হোসেন (৩৮) মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহারবাটি গ্রামের মৃত আব্দুল গনির ছেলে।
আহতরা হলেন- বাসের হেলপার তারেক (৩৫) ট্রাকের হেল্পার আলামিন (৩৫)। তাদের রাজশাহী মেডিকেল। কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ট্রাকচালক সেলিম সুনামগঞ্জ থেকে পাথর ভর্তি করে মাওয়া যাচ্ছিলেন।অপরদিক পাবনা এক্সপ্রেস বাসটি ঢাকা থেকে পাবনা বাস টার্মিনালে যাত্রী নামিয়ে হেলপার আলামিন গাড়ি গ্যারেজ করার জন্য দ্রুতগতিতে গাড়ি চালিয়ে ইয়াকুব ফিলিং স্টেশনের সামনে পৌঁছালে ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
স্থানীয় লোকজন ফায়ার সার্ভিসকে জানালে তাৎক্ষিনক ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম আহত তিনজনকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ট্রাক চালক সেলিম কে মৃত ঘোষণা করেন।
অপরদিকে আহত ট্রাকের হেলপার ও বাসের হেলপারের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্থানান্তর করা হয়।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সদর থানা হেফাজতে আনা হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাক ও বাসটি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার দ্বিতীয় পর্বের আলোচনায় যোগ দেয়নি জামায়েতে ইসলামীর কোনো প্রতিনিধি। বিএনপি ও এনসিপির মাঝে জামায়াতের জন্য সংরক্ষিত আসনটি মধ্যাহ্নভোজের আগ পর্যন্ত ছিল ফাঁকা।
জামায়াতের আলোচনায় যোগ না দেয়ায় নানা রাজনৈতিক দল নানা মত দিয়েছেন। অনেকে বলছেন, কমিশনের বেশ কয়েকটি বিষয়ে জামায়াতের বনিবনা না হওয়ায় মঙ্গলবারের আলোচনায় তারা যোগ দেননি।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘কেন জামায়াত আলোচনায় যোগ দেয়নি সেই উত্তর কমিশনই ভালো দিতে পারবে।’
জামায়াতের আলোচনায় যোগ না দেয়া প্রসঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘আমরা যতদূর জানি জামায়াত আজকের বৈঠক প্রতীকী বয়কট করেছে। ঐকমত্য কমিশনের আজকের আলোচ্য বেশ কয়েকটি বিষয়ে জামায়াত হয়তো একমত হতে পারেনি। তাই আলোচনায় অংশ নেয়নি।’
জামায়াতের আলোচনায় যোগ না দেয়া প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল হিসেবে আজকের আলোচনায় জামায়াতের থাকা উচিত ছিল। তারা এই আলোচনা বয়কট করেছে কিনা সে বিষয়ে পরিষ্কার কিছু জানায়নি। যদি মধ্যাহ্নভোজের পরেও জামায়াত আলোচনায় না আসে তাহলে পুরো ব্যাপারটি বোঝা যাবে।’
ইসলামী আন্দোলনের এই নেতা বলেন, ‘আদর্শিক জায়গা থেকে আমরা বেশিরভাগ বিষয়েই একমত হয়েছি। কিন্তু নারীদের জন্য আলাদা করে সংরক্ষিত ১০০ আসন রাখার প্রয়োজন দেখি না। নারীর ক্ষমতায়ন আমরাও চাই, কিন্তু কোনো বৈষম্যমূলক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে না।’
বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল মনে করছে, নারী আসনসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে কমিশনের সঙ্গে মতানৈক্য হওয়ায় আলোচনার প্রথম পর্যায়ে জামায়াত যোগ দেয়নি।
মন্তব্য