× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

অর্থ-বাণিজ্য
মহামারিতেও অটুট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা
google_news print-icon

মহামারিতেও অটুট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা

মহামারিতেও-অটুট-বাংলাদেশের-অগ্রযাত্রা
চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য ওঠানামার চিত্র। ছবি: নিউজবাংলা
করোনাকালে বেশির ভাগ দেশের অর্থনীতি নানাভাবে বিপর্যয়ে পড়লেও বাংলাদেশের অধিকাংশ সূচক অটুট। আঞ্চলিকভাবে বাংলাদেশ এখন অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। প্রথম ঢেউয়ের পর দ্বিতীয় ঢেউও দমিয়ে রাখতে পারেনি এ অগ্রযাত্রা।

প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স, বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ, রপ্তানি আয়, আমদানিসহ অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলো এখনও ইতিবাচক। মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে আছে। পুঁজিবাজারেও কিছুদিন ধরে চাঙা ভাব।

মাথাপিছু আয়ে ভারতকেও ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানকে ছাড়িয়েছে অনেক আগেই। বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা মেটাতে বন্ধুপ্রতিম দেশ শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশের শরণাপন্ন হওয়ায় দেশটিকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ২০ কোটি ডলার ধার দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আর এসব খবরে ওই তিন দেশের গণমাধ্যম নিজ নিজ দেশের সরকারের তীব্র সমালোচনা করছে; প্রশংসা করছে বাংলাদেশের।

তবে বাংলাদেশের বিনিয়োগে স্থবিরতা এখনও রয়েই গেছে। ইতিবাচক খবরে আত্মতুষ্টিতে না ভুগে মহামারি মোকাবিলার পাশাপাশি বিনিয়োগ বাড়ানোর দিকে সরকারকে বেশি নজর দিতে পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা।

অনেক সমালোচনা হলেও দেশের এক কোটি মানুষকে এরই মধ্যে করোনার টিকা দিয়ে ফেলেছে সরকার। বাকিদের টিকার আওতায় আনতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ফাইজারের ১ লাখ ৬ হাজার ডোজ টিকা আসবে ২ জুন।

বদলে যাওয়া শুরু

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। শেখ হাসিনা ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি দ্বিতীয়বারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন।

এরপর আরও দুই দফায় আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই সময়ে বাংলাদেশ অর্জন করেছে প্রশংসনীয় অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি।

২০০৯ সাল থেকে শুরু হয় নতুন বাংলাদেশের যাত্রা। টানা তিন মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে শেখ হাসিনা দেশকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। বাংলাদেশ এখন আর স্বল্পোন্নত (এলডিসি) দেশ নয়, উন্নয়নশীল দেশ।

মহামারিতেও অটুট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা

২০১৮ সালের ২২ মার্চ বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের প্রাথমিক যোগ্যতা অর্জন করায় ঢাকায় আনন্দমিছিল বের হয়। ছবি: সংগৃহীত

অর্থনৈতিক সূচকের পাশাপাশি সামাজিক সূচকেও বাংলাদেশ অনেক উন্নতি করেছে এই ১২ বছরে। অনেক ক্ষেত্রে ভারত ও পাকিস্তানের চেয়েও এগিয়ে গেছে। দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ উন্নয়নে বাংলাদেশের অগ্রগতি দেশের সীমা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও এখন আলোচিত। অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ী অমর্ত্য সেন সুযোগ পেলেই বাংলাদেশের এই সাফল্যের কথা দেশি-বিদেশি মানুষকে শোনান।

পাকিস্তানের প্রথিতযশা অর্থনীতিবিদ ও বিশ্বব্যাংকের সাবেক উপদেষ্টা আবিদ হাসান বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করে দিয়েছেন চমকপ্রদ তথ্য। তিনি বলেছেন, পাকিস্তানের অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা বজায় থাকলে আগামী এক দশকের মধ্যে দেশটিকে বাংলাদেশের কাছে হাত পাততে হতে পারে।

মহামারিতেও অটুট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ফাইল ছবি

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ‘দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল’-এ সোমবার প্রকাশিত এক নিবন্ধে তিনি এ মন্তব্য করেন।

‘এইড ফ্রম বাংলাদেশ’ নামের ওই নিবন্ধে আবিদ বলেন, ‘২০ বছর আগেও চিন্তা করা যেত না যে ২০২০ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় পাকিস্তানের দ্বিগুণ হবে। বাংলাদেশের অগ্রগতি অব্যাহত থাকলে এটি ২০৩০ সালের মধ্যে অর্থনৈতিক শক্তিকেন্দ্রে পরিণত হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পাকিস্তানের এখনকার পরিস্থিতির পরিবর্তন না ঘটলে ২০৩০ সালের দিকেই হয়তো বাংলাদেশের কাছে আমাদের সাহায্য চাইতে হবে।’

বাংলাদেশের সফল অগ্রযাত্রাকে ভালো উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করে আবিদ বলেন, গত দুই দশকে প্রধান অর্থনৈতিক সূচকগুলোতে পাকিস্তানকে ছাড়িয়েছে বাংলাদেশ। ২০ বছরে বাংলাদেশের জিডিপি বেড়েছে ৫০০ শতাংশ, যা পাকিস্তানের চেয়ে আড়াই গুণ বেশি।

তিনি লিখেছেন, ২০০০ সালে পাকিস্তানের রপ্তানির পরিমাণ বাংলাদেশের ৫০ শতাংশ বেশি ছিল। এরপর থেকে বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়েছে ৭০০ শতাংশ, যা পাকিস্তানের বৃদ্ধির চেয়ে প্রায় সাড়ে তিন গুণ বেশি। ২০২০ সালে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ পাকিস্তানের প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

জিডিপি

করোনাভাইরাস মহামারির আগপর্যন্ত বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি (অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি) বেড়েই চলেছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ। ধারাবাহিক অগ্রগতির পথ ধরে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে বাংলাদেশ, যা ছিল দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি।

গত এক দশকে জিডিপি প্রবৃদ্ধির গড় হার ছিল ৬ দশমিক ৬ শতাংশ। আর চার বছরে এই হার ছিল ৭ শতাংশের উপরে।

মহামারিতেও অটুট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা
মহামারিতেও জিডিপির প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ। ফাইল ছবি

তবে করোনার ধাক্কায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ অর্জিত হবে বলে প্রাথমিক হিসাব দিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। মহামারির কারণে পৃথিবীর প্রায় সব দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমেছে। কোনো কোনো দেশে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হলেও এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম বাংলাদেশ।

মাথাপিছু আয়

জিডিপি প্রবৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মাথাপিছু আয়। বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এখন ২ হাজার ২২৭ মার্কিন ডলার। ভারতের ১ হাজার ৯৪৭ ডলার ও পাকিস্তানের ১ হাজার ২৬০ ডলার। শ্রীলঙ্কার মাথাপিছু আয় ৩ হাজার ৬৮২ ডলার।

২০০৮-০৯ অর্থবছরে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ৭৫৯ ডলার। এ হিসাবে দেখা যাচ্ছে, এক যুগে মাথাপিছু আয় প্রায় তিন গুণ বেড়েছে।

মাথাপিছু আয়ে ভারতকে বাংলাদেশের ছাড়িয়ে যাওয়া নিয়ে গত কয়েক দিনে ভারতের গণমাধ্যম মোদি সরকারের তীব্র সমালোচনা করছে; প্রশংসা করেছে বাংলাদেশের।

মহামারিতেও অটুট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা
মাথাপিছু আয়ে অনেক প্রতিবেশীর চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। ছবি: সাইফুল ইসলাম

গত রোববার দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এখন ২ হাজার ২২৭ মার্কিন ডলার। বর্তমান বাজারদরে বাংলাদেশি মুদ্রায় এই অঙ্ক ১ লাখ ৮৮ হাজার ৮৫০ টাকা। আর প্রতিবেশী দেশ ভারতের মানুষের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৯৪৭ ডলার। বাংলাদেশি টাকায় যা ১ লাখ ৬৫ হাজার ১০৫ টাকা।

এ হিসাবে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের চেয়ে ভারতের মাথাপিছু আয় ২৮০ ডলার কম। অর্থাৎ ভারতের একজন নাগরিকের চেয়ে বাংলাদেশের একজন নাগরিক এখন বছরে ২৩ হাজার ৭৪৪ টাকা বেশি আয় করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাস মহামারি ও প্রাণঘাতী এই রোগ মোকাবিলায় নেয়া লকডাউন ভারতের অর্থনৈতিক সংকোচনের অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

মূল্যস্ফীতি

বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান সূচক মূল্যস্ফীতি বেশ কিছুদিন ধরে সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছর শেষে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৭ দশমিক ৬ শতাংশ। এখন (এপ্রিল) তা কমে ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশে নেমে এসেছে।

রেমিট্যান্স বা প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ

অর্থনীতির সূচকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থায় আছে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বা প্রবাস আয়। প্রতিবছরই বাড়ছে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক। এমনকি করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের উল্লম্ফন অব্যাহত রয়েছে।

গত এপ্রিল মাসেও ২০৬ কোটি ৭০ লাখ (২ দশমিক ০৬ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এটি গত বছরের এপ্রিলের চেয়ে ৮৯ দশমিক ১১ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশের ইতিহাসে এক মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহে এত বেশি প্রবৃদ্ধি আগে কখনো হয়নি।

মহামারিতেও অটুট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা
করোনা মহামারিতেও প্রবাসীদের পাঠানো অর্থে উল্লম্ফন দেখা গেছে। ছবি: সংগৃহীত

সব মিলিয়ে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) ২ হাজার ৬৭ কোটি ২০ লাখ (২০.৬৭ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এই অঙ্ক গত অর্থবছরের পুরো সময়ের (জুলাই-জুন) চেয়েও ১২ দশমিক ২৩ শতাংশ বেশি। আর গত অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ের চেয়ে ৩৯ শতাংশ বেশি।

চলতি ১-২০ মে ১৫৮ কোটি ৮৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে দেশে, যা গত বছরের পুরো মে মাসের চেয়েও ৮ কোটি ৪২ লাখ ডলার বেশি।

সব মিলিয়ে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের ১০ মাস ২০ দিনে (২০২০ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২১ সালের ২০ মে) ২ হাজার ২২৫ কোটি ৪৬ লাখ (২২ দশমিক ২৫ বিলিয়ন) রেমিট্যান্স এসেছে দেশে।

বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে এক বছর বা অর্থবছরে এত বেশি রেমিট্যান্স পাঠাননি প্রবাসীরা।

অর্থবছর শেষ হতে আরও ১ মাসের বেশি বাকি। ৩০ জুন শেষ হবে এই অর্থবছর।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের আশা, অর্থবছর শেষে এবার রেমিট্যান্সের অঙ্ক ২৫ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকবে।

২০১৯-২০ অর্থবছরে ১ হাজার ৮২০ কোটি ৫০ লাখ (১৮.২০ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে।

১২ বছর আগে ২০০৮-০৯ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল ৯ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার। এ হিসাবে দেখা যাচ্ছে, এ সময়ে রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় তিন গুণ।

নতুন উচ্চতায় রিজার্ভ

প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর ভর করে মহামারির মধ্যেই বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ ৪৫ বিলিয়ন (৪ হাজার ৫০০ কোটি) ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। ৩ মে রিজার্ভ এই নতুন উচ্চতায় পৌঁছায়।

২০০৮-০৯ অর্থবছর শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। এ হিসাবে দেখা যাচ্ছে, ১২ বছরে রিজার্ভ বেড়েছে ছয় গুণ।

আমদানি

অর্থনীতির অন্য সূচকগুলোর মতো আমদানিও বেড়েছে সমানতালে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে পণ্য আমদানিতে মোট ব্যয় হয়েছিল ২২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। ২০১৯-২০ অর্থবছরে সেই ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৫৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) ব্যয় হয়েছে ৪২ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ শতাংশের বেশি।

রপ্তানি

২০০৮-০৯ অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি থেকে ১৫ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার আয় করেছিল বাংলাদেশ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সেই আয় আড়াই গুণের বেশি বেড়ে ৪০ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল। কিন্তু করোনার কারণে ২০১৯-২০ অর্থবছরে তা কমে ৩৩ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারে নেমে যায়।

মহামারিতেও অটুট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা
চলতি অর্থবছরে বেড়েছে রপ্তানি। ফাইল ছবি

তবে মহামারির মধ্যেও চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের ইতিবাচক ধারা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) ৩ হাজার ২০৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই আয় গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেশি।

রাজস্ব আয়

প্রতি বছর বাজেটের আকার যেমন বেড়েছে, রাজস্ব আদায়ের পরিমাণও তেমনি বেড়েছে। এমনকি মহামারির এই কঠিন সময়েও রাজস্ব আদায়ের ইতিবাচক ধারা ধরে রেখেছে বাংলাদেশ।

২০০৮-০৯ অর্থবছরে ৬৪ হাজার ৫৭০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছিল। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে তা বেড়ে ২ লাখ ১৮ হাজার ৪০৬ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। চলতি অর্থবছরের নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) আদায় হয়েছে ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৬৩ কোটি টাকা। এই অঙ্ক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৭ দশমিক ৩১ শতাংশ বেশি।

কৃষি খাত

কৃষিতেও সরকারের সাফল্য ঈর্ষণীয়। মহামারিতে বিভিন্ন খাতের ক্ষতি হলেও কৃষি খাতের তেমন ক্ষতি হয়নি।

মহামারিকালে দুই ফসল মৌসুমেই কৃষকেরা ধানের ভালো দাম পেয়েছে। গত মৌসুমেও ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা ধানের মণ দাম পেয়েছে কৃষকেরা। এটি ধান উৎপাদনে কৃষকের আগ্রহ ধরে রাখায় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।

জনসংখ্যা বৃদ্ধি, কৃষিজমি কমতে থাকাসহ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও বৈরী প্রকৃতির মধ্যেও খাদ্যশস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উদাহরণ। ধান, গম ও ভুট্টায় বিশ্বের গড় উৎপাদনকে পেছনে ফেলে ক্রমেই এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। সবজি উৎপাদনে তৃতীয় আর মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে চতুর্থ অবস্থানে।

মহামারিতেও অটুট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা
মহামারিতে বিভিন্ন খাতের ক্ষতি হলেও কৃষির ওপর প্রভাব তেমন পড়েনি। ফাইল ছবি

মোট দেশজ উৎপাদন তথা জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান এখন ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ।

দেশে কৃষির বাণিজ্যিক রূপান্তর শুরু হয়েছে। খাদ্যশস্য উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশের স্থান দশম।

বিনিয়োগে স্থবিরতা কাটছে না

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণের সময় বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ছিল পাঁচের ঘরে। ১০ বছরে সেই প্রবৃদ্ধি বেড়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশে উঠেছিল।

কিন্তু বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা বলছে, গত ১২ বছরে দেশে বিনিয়োগের পরিমাণ জিডিপির আনুপাতিক হারে বেড়েছে সামান্যই। সেই ৩১/৩২ শতাংশেই আটকে আছে বিনিয়োগ।

করোনার ধাক্কায় গত এক বছরে অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ ৯ শতাংশের নিচে। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের ৯ মাসে সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন হয়েছে ৪২ শতাংশ, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে কম।

গত কয়েক মাস ধরে আমদানি বাড়লেও কল-কারখানা স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধনী যন্ত্রপাতি (ক্যাপিটাল মেশিনারি) আমদানি খুব একটা বাড়েনি।

অর্থনীতিবিদদের পরামর্শ

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যে কারণেই হোক না কেন, এখন পর্যন্ত কোভিড বাংলাদেশকে খুব বেশি কাবু করতে পারেনি। মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা এখনও সহনীয়ই আছে। তবে আগামীতে কী হবে সেটা বলা মুশকিল। যে করেই হোক, সেখান থেকেই হোক, যতো টাকাই লাগুক, সবাইকে দ্রুততর সময়ের মধ্যে টিকা দিতে হবে। একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, ভারতের মতো অবস্থা হলে কিন্তু আমরা সামাল দিতে পারব না। সব দিক দিয়ে শেষ হয়ে যাব। তাই সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিয়ে রাখতে হবে।’

গত এক যুগে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অনেক উন্নতি করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তবে এতে আত্মতুষ্টিতে ভুগলে চলবে না। ব্যাংকিং খাত ও রাজস্ব প্রশাসনে ব্যাপক সংস্কার করতে হবে। আমাদের ব্যাংকিং খাত কিন্তু ভঙ্গুর অবস্থায় আছে। ব্যাংকগুলো যে বিপুল অঙ্কের প্রণোদনার ঋণ দিচ্ছে, সেগুলো যদি ঠিকমতো আদায় না হয়, তাহলে আরও সংকটে পড়বে।

‘রাজস্ব আদায় বাড়াতে হবে; ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত কমপক্ষে ১৪-১৫তে নিয়ে যেতে হবে। যে করেই হোক বিনিয়োগ বাড়াতেই হবে।’

মুদ্রা বিনিময়ের (কারেন্সি সোয়াপ) আওতায় শ্রীলঙ্কাকে ২০ কোটি ডলার ঋণ প্রসঙ্গে আহসান মনসুর বলেন, ‘বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো এভাবে ডলার দিচ্ছে। এতে বাংলাদেশের সুনাম হবে। আন্তর্জাতিক অঙ্গণে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বাড়বে।’

আরেক অর্থনীতিবিদ বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণা পরিচালক মঞ্জুর হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সংকটের সময় নতুন নতুন সম্ভাবনা দেখা দেয়। আমরা যদি সেগুলো ভালোভাবে বিচার-বিশ্লেষণ, পর্যবেক্ষণ করে সঠিক সিদ্ধান্ত নেই, তাহলে সেসব সম্ভাবনার সুফল পাব।’

উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘এই সময় যদি আমরা বিশ্ব পরিস্থিতি মাথায় রেখে সুনির্দিষ্ট খাত চিহ্নিত করে বিনিয়োগ করি, সহায়তা দেই তাহলে দেশীয় বাজারের পাশাপাশি বিশ্ববাজারও ধরতে পারব।

‘এখন কঠিন সময়। কোভিডের মধ্যে চার-পাঁচ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও যথেষ্ট। আগামী অর্থবছরগুলোতে যাতে প্রবৃদ্ধি বেশি হয়, সেদিকেই বেশি নজর দিতে হবে।’

ব্যবসায়ী নেতা ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখন ছোট ও মাঝারি শিল্পের দিকে সবচেয়ে বেশি নজর দিতে হবে। সরকার প্রথম দফায় যে সোয়া লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেছিল, তার বেশিরভাগ বড় উদ্যোক্তারা পেয়েছে। যারা করোনায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেই ছোট-মাঝারি শিল্পোদ্যোক্তারা কিন্তু বঞ্চিত হয়েছে। এখন নতুন করে তাদের সহায়তা দিতে হবে।

‘মনে রাখতে হবে, ছোট-মাঝারি শিল্পগুলো ঘুরে না দাঁড়ালে বড় বড় শিল্পগুলোও কিন্তু ধাক্কা সামলে উঠতে পারবে না।’

তিনি বলেন, ‘পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থতির কারণে চায়না ও ভিয়েতনামের তৈরি পোশাকের অর্ডার এখন বাংলাদেশে আসছে। সে সুযোগগুলো ঠিকমতো কাজে লাগাতে পারলে আমাদের রপ্তানি আয় আরও বাড়বে।’

বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল

বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের গণ্ডি পেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উন্নীত হওয়ার দ্বারপ্রান্তে।

জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির তিনটি সূচকেই পাসের চেয়ে বেশি নম্বর পেয়েছে বাংলাদেশ। এই তিনটি সূচক হলো মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা। এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে উত্তরণের জন্য তিনটি সূচকের যেকোনো দুটি অর্জনের শর্ত ছিল। তবে তিনটিতেই উত্তীর্ণ হয়েছে বাংলাদেশ।

উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণকে বাংলাদেশের জন্য বড় অর্জন আখ্যায়িত করে প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যমওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলেছে, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন ও ভিয়েতনামের উন্নয়নের সঙ্গে মিল রয়েছে বাংলাদেশের। বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার সফল অর্থনীতির দেশ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।

মন্তব্য

আরও পড়ুন

অর্থ-বাণিজ্য
The fire may continue for another 72 hours

আরও ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে দাবদাহ

আরও ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে দাবদাহ গরমের তীব্রতা বাড়ার মধ্যে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় গোসল করছেন এক ব্যক্তি। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস/নিউজবাংলা
সতর্কবার্তায় বলা হয়, ‘দেশের ওপর চলমান তাপপ্রবাহ আজ (২৫ এপ্রিল, ২০২৪) হতে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে।’

দেশজুড়ে চলমান দাবদাহ আরও ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বৃহস্পতিবার তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন।

সতর্কবার্তায় বলা হয়, ‘দেশের ওপর চলমান তাপপ্রবাহ আজ (২৫ এপ্রিল, ২০২৪) হতে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে।’

৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাস

আবহাওয়া অধিদপ্তর বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ নিয়ে জানায়, খুলনা বিভাগসহ দিনাজপুর, নীলফামারী, রাজশাহী, পাবনা, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ বরিশাল বিভাগ এবং রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

তাপমাত্রার বিষয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।

আরও পড়ুন:
ফের ৪১ ডিগ্রি ছাড়াল চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা
দিনের তাপমাত্রা বাড়তে পারে, অস্বস্তি থাকতে পারে
ছয় জেলায় তীব্র দাবদাহ, দুই বিভাগে বৃষ্টির আভাস
দাবদাহে পুড়ছে জীবন, পুড়বে আরও
নতুন করে ৭২ ঘণ্টার ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
288 Myanmar soldiers and BGP members returned

ফেরত গেলেন মিয়ানমারের ২৮৮ সেনা ও বিজিপি সদস্য

ফেরত গেলেন মিয়ানমারের ২৮৮ সেনা ও বিজিপি সদস্য কড় নিরাপত্তায় পানি পথে ফেরত পাঠানো হয় মিয়ানমারের সেনা ও বিজিপি সদস্যদের। ছবি: নিউজবাংলা
বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়া বিআইডব্লিটিএ জেটি ঘাট থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাদের টাগবোটে তুলে দেয়া হয়।

সশস্ত্র বিদ্রোহীদের সঙ্গে যুদ্ধের মধ্যে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের সেনা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ২৮৮ জন সদস্যকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়া বিআইডব্লিটিএ জেটি ঘাট থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাদের টাগবোটে তুলে দেয়া হয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন জানান, গভীর সাগরে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে অপেক্ষায় থাকা মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজ চিন ডুইনে তাদের তুলে দেয়া হবে।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া সেনা ও সীমান্তরক্ষীদের ফেরত নিতে মিয়ানমারের ওই জাহাজ বুধবারই বাংলাদেশের জলসীমায় পৌঁছায়। ওই জাহাজে করেই ১৭৩ জন বাংলাদেশি ফিরে এসেছেন। যারা বিভিন্নভাবে মিয়ানমারে আটকা পড়েছিলেন বা সাজা পেয়ে জেলখানায় ছিলেন।

মিয়ানমার নৌবাহিনীর ওই জাহাজে করে দেশটির ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলও বুধবার দুপুরে কক্সবাজার পৌঁছায়। পরে তারা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ ব্যাটালিয়নে বিজিবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান। সেখানে পৌঁছানোর পর তারা মিয়ানমারের বিজিপি ও সেনা সদস্যদের যাচাই-বাছাইসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়।

বিজিবি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ১১টি বাসে করে মিয়ানমারের বিজিপি ও সেনা সদস্যদের কক্সবাজার শহরের বিআইডব্লিউটিএ জেটি ঘাটে নিয়ে আসা হয়।

সেখানে আনার পর ইমিগ্রেশন ও ডকুমেন্টেশনের আনুষ্ঠানিকতা সেরে শুরু হয় হস্তান্তর প্রক্রিয়া। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিজিবি, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও কোস্ট গার্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাংলাদেশশে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতসহ দেশটির প্রতিনিধি দলের কাছে তাদের হস্তান্তর করেন।

এরপর সকাল ৭টার দিকে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের কর্ণফুলি টাগবোটে তুলে দেয়া হয়। কোস্ট গার্ডের একটি ট্রলার টাগবোটটিকে পাহারা দিয়ে গভীর সাগরে নিয়ে যায়।

দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে, যার আঁচ লেগেছে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকাতেও। সীমান্তের ওপারের মর্টার শেল ও গুলি এসে এপারে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।

ওই সংঘাতের মধ্যে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যসহ ৩৩০ জনকে প্রথম দফায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ফেরত পাঠিয়েছিল সরকার।

তাদের মধ্যে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ-বিজিপি ৩০২ জন, তাদের পরিবারের চার সদস্য, দুজন সেনা সদস্য, ১৮ জন ইমিগ্রেশন সদস্য এবং চারজন বেসামরিক নাগরিক ছিলেন।

এরপর বান্দরবান ও কক্সবাজার সীমান্ত নিয়ে কয়েক দফায় আরো ২৮৮ জন সীমান্তরক্ষী ও সেনা সদস্য এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। এবার তাদের ফেরত পাঠানো হলো।

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Death toll in Sajeke dump truck ditch rises to 9

সাজেকে ডাম্প ট্রাক খাদে, নিহত বেড়ে ৯

সাজেকে ডাম্প ট্রাক খাদে, নিহত বেড়ে ৯ খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক উদয়পুর সীমান্তবর্তী সড়ক নির্মাণের জন্য ডাম্প ট্রাকে ১৪ জন শ্রমিক জামান ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির সেতুর কাজে যাচ্ছিলেন। পথে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ের ঢালে পড়ে যায়। ছবি: নিউজবাংলা
বাঘাইছড়ি থানার সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল আওয়াল বুধবার রাতে জানান, আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তিনজনকে মৃত বলে জানান।

রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি থানাধীন সাজেকে শ্রমিকবাহী ডাম্প ট্রাক খাদে পড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯ জনে দাঁড়িয়েছে।

বাঘাইছড়ি থানার সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল আওয়াল বুধবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তিনজনকে মৃত বলে জানান।

এর আগে বিকেলে সাজেকের উদয়পুর সীমান্ত সড়কের ৯০ ডিগ্রি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

পুলিশের ভাষ্য, খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের উদয়পুর সীমান্তবর্তী সড়ক নির্মাণের জন্য ডাম্প ট্রাকে ১৪ জন শ্রমিক জামান ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির সেতুর কাজে যাচ্ছিলেন। পথে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ের ঢালে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে ছয়জনের মৃত্যু হয়।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরিন আক্তার সাংবাদিকদের জানান, যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি খুবই দুর্গম এলাকা। আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী, তবে তাৎক্ষণিকভাবে কারও নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

আরও পড়ুন:
কুমিল্লায় বাসচাপায় দুই নারী ও শিশু নিহত, আহত আরেক শিশু
ছাত্রলীগ নেতা রকি হত্যা মামলার আসামি বাসচাপায় নিহত
বাসের ধাক্কায় দুই চুয়েট শিক্ষার্থী নিহত, আহত ১
চট্টগ্রামে অটোরিকশায় ট্রাকের ধাক্কা, নিহত ২
গাছে বাসের ধাক্কায় একজন নিহত, আহত ৭

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
288 members of Myanmar Army BGP are going back

ফেরত যাচ্ছেন মিয়ানমারের সেনা-বিজিপির ২৮৮ সদস্য

ফেরত যাচ্ছেন মিয়ানমারের সেনা-বিজিপির ২৮৮ সদস্য মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য ঘাটে রাখা হয় ২৮৮ জনকে। ছবি: নিউজবাংলা
গত ১১ মার্চ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির জামছড়ি ও আশারতলী সীমান্তে দিয়ে প্রথম দফায় ১৭৯ জন মিয়ানমারের বিজিপির সদস্য আশ্রয় নেন। পরে কয়েক দফায় ঘুমধুম, তুমর্রু ও কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে দিয়ে মোট ২৮৮ জন মিয়ারমারের সেনা ও বিজিপির সদস্য আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশে।

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ২৮৮ জন বিজিপি ও সেনা সদস্যকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার ভোর রাতে নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবি বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে থেকে কক্সবজার ইনানী নৌবাহিনী জেটি ঘাটে নেয়া হয় তাদের। সেখানে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে তাদেরকে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

গত ১১ মার্চ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির জামছড়ি ও আশারতলী সীমান্তে দিয়ে প্রথম দফায় ১৭৯ জন মিয়ানমারের বিজিপির সদস্য আশ্রয় নেন। পরে কয়েক দফায় ঘুমধুম, তুমর্রু ও কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে দিয়ে মোট ২৮৮ জন মিয়ারমারের সেনা ও বিজিপির সদস্য আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশে।

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা বিজিপি ও সেনা সদস্যদেরকে নাইক্ষ্যংছড়ি বর্ডার গার্ড সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিজিবির হেফাজতে রাখা হয়েছিল। তাদের সে দেশের নৌবাহিনীর জাহাজে করে মিয়ানমারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজিবি কর্মকর্তারা।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে বিদ্রোহীদের আক্রমণের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যসহ ৩৩০ জন। পরে ১৫ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার উখিয়ার ইনানী নৌ-বাহিনীর জেটিঘাট দিয়ে তাদের মিয়ানমারে পাঠানো হয়েছিল।

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Expulsion of 64 BNP leaders with show cause notice 5
উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ

বিএনপির ৬৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ, বহিষ্কার ৫

বিএনপির ৬৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ, বহিষ্কার ৫
বিএনপির নেতাদের মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ২৪ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২১ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কারণ দর্শানো নোটিশ সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হলে তাকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলের সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হবে।

স্থানীয় সরকার নির্বাচন বর্জনের দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় ৬৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিএনপি। পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয়ায় ইতোমধ্যে পাঁচ নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সূত্রের উল্লেখ করে বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, নির্বাচনে অংশ নেয়া নেতাদের মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ২৪ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২১ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা বলছেন, কারণ দর্শানো নোটিশের সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হওয়া নেতাদের প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলের সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন সহ-দপ্তর সম্পাদক জানান, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত বিএনপির ৬৪ জন নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।

এর আগে বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে যেকোনো নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপির হাইকমান্ড।

এদিকে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আসন্ন পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয়ায় ইতোমধ্যে পাঁচ নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি।

সংগঠনটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নেয়ায় নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফাহমিদ ফয়সল চৌধুরীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এছাড়া দিনাজপুরের বিরল উপজেলার সহ-সভাপতি সাদেক আলী, উত্তর চট্টগ্রামের চিকনন্দী ইউনিয়নের সহকারী আহ্বায়ক রাশেদ আলী মাহমুদ, কক্সবাজার জেলা বিএনপি নেতা জহুরুল আলম ও কক্সবাজার জেলা মৎস্যজীবী দলের নেতা এম হান্নান মিয়াকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয়ায় বহিষ্কার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:
দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে প্রার্থী হলেন সাবেক মন্ত্রী জাহিদ মালেকের ফুফাতো ভাই

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Fake juice ice cream was being made in the army mans establishment

সেনা সদস্যের প্রতিষ্ঠানে তৈরি হচ্ছিল নকল জুস আইসক্রিম

সেনা সদস্যের প্রতিষ্ঠানে তৈরি হচ্ছিল নকল জুস আইসক্রিম ছবি: নিউজবাংলা
আব্দুস সালামের বাবা ওহাব আলী বলেন, ‘আমার ছেলে ছুটিতে এসে এই কারখানাটি দিয়েছিল। এখনও সরকারিভাবে অনুমোদন পাইনি। তবে অল্পদিনেই লাইসেন্স হাতে পাওয়ার কথা রয়েছে।’

মেহেরপুরে নকল মোড়ক বানিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির ভেজাল মানহীন আইসক্রিম, রোবো, আইস ললি ও জুস বানানো কারখানায় অভিযান চালিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এ সময় এসব নকল খাদ্যপণ্য তৈরি ও বিক্রি করার অপরাধে আইকন আইসক্রিম ফুড ও বেভারেজ কোম্পানির ম‍্যানেজার লিখন আহমেদকে ৫০ হাজার টাকা এবং জব্দকৃত মালামাল ধ্বংস করার পাশাপাশি কারখানিটি বন্ধ সাময়িক রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বুধবার দুপুরে জেলার গাংনী উপজেলার কাজিপুর ইউনিয়নের হাড়াভাঙ্গা মোল্লাপাড়ার আব্দুস সালামের বাড়িতে এই অভিযান চালানো হয়।

কোম্পানির মালিক আব্দুস সালাম পেশায় একজন সেনা সদস্য।

অভিযান পরিচালনা করেন জেলা ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তা সজল আহমেদ।

এসব তথ‍্য নিশ্চিত করে তিনি বলেন, ‘আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি হাড়াভাঙ্গা গ্রামের মোল্লা পাড়ার সেনা সদস্য আব্দুস সালামের বাড়িতে বিভিন্ন কোম্পানির নকল মোড়ক বানিয়ে কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে, নকল আইস ললি, রোবো, জুস ও আইসক্রিমসহ শিশুখাদ‍্য যা দণ্ডনীয় অপরাধ।

‘আমরা এ ভেজাল কারখানায় অভিযান চালিয় নকল এসব পণ‍্য ও পণ‍্য তৈরিতে ব‍্যবহৃত কেমিক্যাল জব্দের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার লিখন আহমেদ আটক করে নগদ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করাসহ জব্দকৃত মালামাল নষ্ট করার পাশাপাশি কারখানাটি বন্ধের নির্দেশ দেই।’

আইকন ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ম‍্যানেজার লিখন আহমেদ বলেন, ‘আমার মহাজন সালাম মিলিটারি মাস ছয়েক হবে কারখানাটি চালু করেছেন। উনি ফোনের মাধ‍্যমে ব‍্যবসার দেখভাল করেন। আমরা এই কারখানায় আইস ললি, রোবো, জুস ও আইসক্রিম তৈরি করে কয়েকটি জেলায় বিক্রি করতাম। আজ অভিযানের পর বুঝতে পারলাম এ পণ‍্যগুলো বিক্রি ও বানানো অপরাধ।’

আব্দুস সালামের বাবা ওহাব আলী বলেন, ‘আমার ছেলে ছুটিতে এসে এই কারখানাটি দিয়েছিল। এখনও সরকারিভাবে অনুমোদন পাইনি। তবে অল্পদিনেই লাইসেন্স হাতে পাওয়ার কথা রয়েছে।’

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Naogaon madrasa girl teacher in jail in attempted rape case

নওগাঁয় মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় শিক্ষক কারাগারে

নওগাঁয় মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় শিক্ষক কারাগারে ছবি: নিউজবাংলা
এদিন আসামির উপস্থিতিতে তাকে দেয়া সাজার রায় পড়ে শোনানো হয় এবং শেষে তাকে জেলা কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন বিচারক।

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার উত্তর পাকুরীয়া গ্রামের এক নাবালিকা ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা মামলায় এক মাদ্রাসা শিক্ষককে দশ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড হয়েছে।

নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. মেহেদী হাসান তালুকদার বুধবার এ রায় দেন। জরিমানার অর্থ ভুক্তভোগী ছাত্রীকে প্রদানের নির্দেশ দেন বিচারক।

দণ্ডাদেশ পাওয়া ওই শিক্ষকের নাম আবুল হাসান। ২৫ বছর বয়সী আবুল হাসান বদলগাছী উপজেলার উত্তর পাকুরীয়া গ্রামের বাসিন্দা ও একটি মাদ্রাসার আরবি বিষয়ের শিক্ষক।

আদালত সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ২৯ মে সকাল ছয়টার সময় নয় বছর বয়সী ওই মেয়েটি একই গ্রামের আরবি শিক্ষক আবুল হাসানের বাড়িতে আরবি পড়তে যায়। সে সময় অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীরা না আসায় তাকে একা পেয়ে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন তিনি। পরবর্তীতে ভুক্তভোগীর মা বদলগাছী থানায় অভিযোগ করলে তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা মেলায় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। আদালত আট জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বুধবার রায়ের জন্য দিন ধার্য করেন।

এদিন আসামির উপস্থিতিতে তাকে দেয়া সাজার রায় পড়ে শোনানো হয় এবং শেষে তাকে জেলা কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন বিচারক।

রাষ্ট্রপক্ষে বিশেষ কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট আজিজুল হক ও আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ মামলা পরিচালনা করেন। রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করে এবং আসামিপক্ষ উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানায়।

মন্তব্য

p
উপরে