দর সংশোধনে দুই দিন লেনদেন কিছুটা কমলেও আবার শেয়ার দর বাড়তে থাকায় লেনদেন বেড়েছে। এ দুদিন থেকেই বিপুল পরিমাণ শেয়ার কিনেছেন বিনিয়োগাকরীরা।
ঈদের পর দ্বিতীয়বারের মতো দুই হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই)।
একই সঙ্গে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বাড়ল ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার দর।
বিমা খাতের শেয়ারের দর বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা থাকলেও কোনোভাবেই থামানো যায়নি এ খাতের শেয়ারের দর বৃদ্ধি।
তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো অন্য খাতের তুলনায় ঈর্ষণীয় লভ্যাংশ দেয়ার পরও দর বৃদ্ধি না পাওয়ায় হতাশা ছিল বিনিয়োগকারীদের। সেই হতাশা এখন অনেকটাই কেটে গেছে ব্যাংকের শেয়ারের দর বৃদ্ধিতে।
ইউনিটপ্রতি আয়ে এখনও লোভনীয় স্থানে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো। আর শেয়ারপ্রতি আয় প্রকাশে আগ্রহের তালিকায় পিছিয়ে নেই নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার। মঙ্গলবার সব খাতের শেয়ারের দর বৃদ্ধিতে উৎফুল্ল ছিল বিনিয়োগকারীরা।
মাঝে দুদিন মূল্য সংশোধনে সূচকের পতন হলেও ঢালাও শেয়ার বিক্রি করেননি বিনিয়োগকারীরা। আগে টানা সূচক বাড়ার পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক থাকত, এখন সূচকের পতন হবে। আর যখনই সূচকের পতন হতো, তখন টানা অব্যাহত থাকত সেই পতন।
এমন অবস্থা থেকে বের হয়ে এখন বিনিয়োগকারীরা খাতওয়ারি বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন। কোনো একটি খাত থেকে মুনাফার বিপরীতে শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়লেও সেদিনই অন্য একটি খাতের উত্থান হয়। ফলে সূচকে বড় ধরনের কোনো প্রভাব দেখা যায় না।
মঙ্গলবার লেনদেনে ব্যাংক খাতের ৩১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দর বেড়েছে ২৮টির; কমেছে দুটির, দর পাল্টায়নি একটির।
বিমা খাতের ৫০টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৪১টির; দর কমেছে ছয়টির; দর পাল্টায়নি তিনটির।
মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৩৭টি ইউনিটের মধ্যে দর বেড়েছে ১৩টির; কমেছে ১৩টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১১টির।
নন-ব্যাংক আর্থিক খাতের ২৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দর বেড়েছে ১২টির; দর কমেছে সাতটির; পাল্টায়নি চারটির।
বিমার শেয়ার কেনার ধুম
তিন মাসের বেশি সময় ধরে চলছে পুঁজিবাজারে বিমার শেয়ার কেনার ধুম। ঈদের ছুটির আগে ও পরে চার কার্যদিবসে ঢালাওভাবে বিমার শেয়ারের দরপতন দেখা গেছে। কিন্তু তারপর আর এমন পতন দেখা যায়নি।
দিনের সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির তালিকায় থাকছে এ খাতের শেয়ার। ফলে বিমার শেয়ার কিনতে পিছুপা হচ্ছেন না বিনিয়োগকারীরা।
যদিও বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বিমার শেয়ারের দর বৃদ্ধিতে যৌক্তিক কোনো কারণ নেই। বিমা কোম্পানির শেয়ারের দর যেভাবে বাড়ছে তার সঙ্গে পুরো বিমা খাতের আয়ের কোনো সম্পর্ক নেই।
মঙ্গলবার লেনদেন শেষে দিনের সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির তালিকায় ছিল ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স, যার শেয়ার প্রতি দর ৩৫ টাকা থেকে ১০ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৩৮ টাকা ৫০ পয়সা।
গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের দরও বেড়েছে একই হারে। এদিন কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি দর ৪৯ টাকা থেকে ১০ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৫৩ টাকা ৯০ পয়সা।
নর্দান ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ। শেয়ার প্রতি দর ৫০ টাকা ১০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৫ টাকা ১০ পয়সা।
গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ। পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার প্রতি দর ১১৩ টাকা ১০ পয়সা থেকে ৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১২৩ টাকা ৮০ পয়সা।
ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ। রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স, প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে যথাক্রমে ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ এবং ৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৬ দশমিক ১৭ মতাংশ। এ ছাড়া এদিন ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স, পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে পাঁচ শতাংশের বেশি।
আগ্রহ বাড়ছে ব্যাংকে
তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের কোম্পানি এবি ব্যাংক ২০২০ সালের জন্য তাদের শেয়ারধারীদের ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি রাইট ইস্যুর মাধ্যমে প্রতি ৬টি শেয়ারের বিপরীতে একটি শেয়ার প্রদান করবে।
ব্যাংকটি এমন ঘোষণা করে গত ২৮ এপ্রিল। তখন কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি দর ছিল ৯ টাকা ৬০ পয়সা। রাইট ইস্যুতে প্রতিটি শেয়ারের অভিহিত মূল্য ধরা হয় ১০ টাকা। কিন্তু দ্বিধা ছিল যে, শেয়ারের মার্কেট প্রাইস ৯ টাকার কিছু বেশি সেটি ১০ টাকায় কীভাবে ইস্যু হবে।
সে অবস্থা থেকে পুরোপুরে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ব্যাংকটি। মঙ্গলবার দিনের সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির তালিকায় ছিল এবি ব্যাংক। আর গত ১৪ কার্যদিবসে ব্যাংকটির শেয়ার দর বেড়েছে ৩৫ শতাংশ।
এ দিন ব্যাংকটির শেয়ার দর ১৩ টাকা থেকে ১০ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১৪ টাকা ৩০ পয়সা।
২০২০ সালের জন্য তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো তার শেয়ারধারীদের ভালো লভ্যাংশ দেয়ার পরও এ খাতের শেয়ারের কাঙ্খিত দর বৃদ্ধি না পাওয়ায় হতাশা ছিল বিনিয়োগকারীদের। এখন সেই হতাশা অনেকটাই কেটে গেছে।
মঙ্গলবার দর বৃদ্ধি পাওয়া ব্যাংক খাতের কোম্পানির মধ্যে ছিল এনআরবিসি ব্যাংক, যার শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ। ওয়ান ব্যাংকের শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৯ দশমিক ০১ শতাংশ।
ইউসিবি ব্যাংকের শেয়ার প্রতি দর ১৬ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১৮ টাকা ২০ পয়সা। ট্রাস্ট ব্যাংকের শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৬ দশমিক ১৯ শতাংশ। আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। সাউথ ইস্ট ব্যাংকের শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
দর বেড়েছে নন ব্যাংক ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের
মঙ্গলবার নন ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের জিএসপি ফিন্যান্সের শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ১০ শতাংশ বা দিনের সর্বোচ্চ। এ দিন প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার দর ১৯ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২০ টাকা ৮০ পয়সা।
ইসলামী ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
মাইডাস ফিন্যান্সের শেয়ার প্রতি দর ২০ টাকা ৪০ পয়সা থেকে ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ২২ টাকা ১০ পয়সা।
মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতের ফনিক্স ফিন্যান্স ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৯০ শতাংশ। এ দিন ফান্ডটির ইউনিটি প্রতি দর ১০ টাকা ১০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১১ টাকা ১০ পয়সা।
যা বলছেন বিশ্লেষকরা
ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক প্রধান গবেষণা কর্মকর্তা দেবব্রত কুমার সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শেয়ারের দর বাড়ছে এ জন্য সূচক বাড়ছে। শেয়ারের দর কমলে সূচক কমবে। কিন্তু এ দুটির মধ্যে প্রধান হচ্ছে লেনদেন কেমন হচ্ছে। যদি লেনদেন ঠিক থাকে তাহলে ধরে নিতে হবে পুঁজিবাজার সঠিক পথেই এগোচ্ছে।’
তিনি বলেন, খাতওয়ারী লেনদেনে ব্যাংক, নন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মিউচ্যুয়াল ফান্ডের প্রধান্য বাড়ছে। এটিও পুঁজিবাজারের জন্য ভালো দিক।
সূচক ও লেনদেন
গত ১৯ মে পর আবারও দুই হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে পুঁজিবাজারে। একই সঙ্গে বেড়েছে সূচকসহ লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর।
মঙ্গলবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৪১ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৮৮৪ পয়েন্টে।
শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস দশমিক ৬৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৭০ পয়েন্টে।
বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ২ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৭০ পয়েন্টে।
লেনদেন হয়েছে মোট ২ হাজার ৮ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৮২০ কোটি টাকা। ফলে একদিনের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ১৮৮ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১৩৪ দশমিক ৫২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৭০ পয়েন্টে। লেনদেন হয়েছে মোট ১৪৯ কোটি টাকা।
এ দিন লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৪৬টির, কমেছে ১১৯টির, দর পাল্টায়নি ২৯টির।
আরও পড়ুন:২০২৫ সালের প্রথম নয় মাসে ব্র্যাক ব্যাংকের ব্রাঞ্চ নেটওয়ার্ক ১৩,৫০০ কোটি টাকার নিট ডিপোজিট প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর ২০২৫ সময়কালে এই ডিপোজিট প্রবৃদ্ধি আমানত সংগ্রহে ব্যাংকটির টেকসইতার প্রতিফলন।
বিগত কয়েক বছর ধরে ব্র্যাক ব্যাংকের ব্রাঞ্চ ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্কের এই লক্ষণীয় ডিপোজিট প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ব্যাংকটির ব্রাঞ্চ নেটওয়ার্কের এমন মাইলফলক ব্যাংকিং খাতে আমানত সংগ্রহে নতুন বেঞ্চমার্ক তৈরি করে চলেছে।
এই সাফল্য উদ্যাপনের লক্ষ্যে ব্যাংকটি ১৩ অক্টোবর ২০২৫ ঢাকায় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। আয়োজনে ব্রাঞ্চ নেটওয়ার্কের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগ দেন ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও তারেক রেফাত উল্লাহ খান এবং ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড হেড অব ব্রাঞ্চ ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক শেখ মোহাম্মদ আশফাক। এ সময় ব্র্যাংকটির ব্রাঞ্চ ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্কের রিজিওনাল হেড, ক্লাস্টার হেড এবং ব্রাঞ্চ ম্যানেজারসহ উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র জোনাল হেড (নর্থ) এ. কে. এম. তারেক এবং সিনিয়র জোনাল হেড (সাউথ) তাহের হাসান আল মামুন।
ব্যাংকের এমন সাফল্যে গ্রাহক আস্থা এবং গ্রাহকদের সাথে সুসম্পর্কের বিষয়টির ওপর জোর দিয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও তারেক রেফাত উল্লাহ খান বলেন, “গ্রাহকের সাথে আস্থার সম্পর্ককে আমরা আমানত সংগ্রহে সবচেয়ে বড় দক্ষতা হিসেবে দেখি। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ২০২৫ সালের বাকি সময়ে এবং সামনের বছরগুলোতেও ডিপোজিট প্রবৃদ্ধিতে আমাদের এমন সাফল্য অব্যাহত থাকবে।”
ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি.:
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের অর্থায়নে অগ্রাধিকার দেয়ার ভিশন নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি. ২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত দেশের অন্যতম দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী একটি ব্যাংক। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ‘BRACBANK’ প্রতীকে ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেন হয়। ২৯৮টি শাখা ও উপশাখা, ৩৩০টি এটিএম, ৪৪৬টি এসএমই ইউনিট অফিস, ১,১১৯টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং দশ হাজারেরও বেশি মানুষের বিশাল কর্মীবাহিনী নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক কর্পোরেট ও রিটেইল সেগমেন্টেও সার্ভিস দিয়ে আসছে। ব্যাংকটি দৃঢ় ও শক্তিশালী আর্থিক পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে এখন সকল প্রধান প্রধান মাপকাঠিতেই ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষে অবস্থান করছে। বিশ লাখেরও বেশি গ্রাহক নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বিগত ২৪ বছরেই দেশের সবচেয়ে বৃহৎ জামানতবিহীন এসএমই অর্থায়নকারী ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও নিয়মানুবর্তিতায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা সুইসকন্টাক্ট-এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে। যার লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশকে আরো শক্তিশালী করা এবং টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা।
গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিডা সম্মেলন কক্ষে ওই সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানে বলা হয়, চুক্তির আওতায় তিনটি মূল লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সেগুলো হলো- প্রমাণনির্ভর বিনিয়োগ পরিবেশ বিশ্লেষণ ও সমন্বয় জোরদার, বিডাকে একটি বিশ্বমানের বিনিয়োগ প্রচার সংস্থা হিসেবে শক্তিশালী করা ও খাতভিত্তিক বিনিয়োগ সম্প্রসারণ ও ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ উন্নয়ন।
অনুষ্ঠানে আরো জানানো হয়, বিডা দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়নে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে আসছে। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি বিনিয়োগ নীতিমালা সংস্কার, সেবার ডিজিটালাইজেশন এবং বিভিন্ন সরকারি সংস্থার মধ্যে সমন্বয় জোরদারে কাজ করছে। সুইসকন্টাক্ট ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত একটি প্রকল্পের আওতায় বিডার সহযোগিতায় বাংলাদেশের বিভিন্ন পৌরসভায় ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ ও প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করেছে।
বিডার জনসংযোগ দপ্তর জানায়, আগের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বিডা ও সুইসকন্টাক্ট এখন নতুন একটি উদ্যোগ গ্রহণে সম্মত হয়েছে, যা বিডার ‘হিট ম্যাপ’ অনুযায়ী বিভিন্ন খাতভিত্তিক বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়নে সহায়ক হবে।
বিডা চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী) চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গঠনে সরকার নানামুখী সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সুইসকন্টাক্টের সঙ্গে এই অংশীদারিত্ব আমাদের ‘ইনভেস্টর-ফার্স্ট’ মডেল বাস্তবায়নের পথে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আমাদের লক্ষ্য হলো বিনিয়োগকারীরা যেন বাংলাদেশকে দক্ষ, সেবাবান্ধব ও সম্ভাবনাময় গন্তব্য হিসেবে অনুভব করেন।
বিডা জানায়, সুইসকন্টাক্ট দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের টেকসই উন্নয়ন, বাণিজ্য প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা শক্তিশালীকরণে কাজ করে আসছে। সংস্থাটি বিশ্বাস করে, এই সহযোগিতা প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে, বিশেষ করে তরুণ ও নারীদের জন্য।
বিডা ও সুইসকন্টাক্ট উভয় প্রতিষ্ঠানই আশা প্রকাশ করেছে, এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ আরও উন্নত হবে, মানসম্পন্ন বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে এবং টেকসই শিল্পায়নের মাধ্যমে অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে।
বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) ১৮তম নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দিয়েছেন মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন।
তিনি প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দেন এবং মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমানের স্থলাভিষিক্ত হন।
বেপজায় যোগদানের আগে মোয়াজ্জেম হোসেন সপ্তম পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) এবং বরিশালে এরিয়া কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
গতকাল বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, তিনি ১৯৯২ সালের ২০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আর্টিলারি কোরে কমিশন লাভ করেন। তার দীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে তিনি বিভিন্ন কমান্ড, স্টাফ এবং নির্দেশনামূলক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং ব্যতিক্রমধর্মী নেতৃত্ব ও পেশাদারিত্ব প্রদর্শন করেছেন।
মোয়াজ্জেম হোসেন দুইটি আর্টিলারি ব্রিগেড ও দুইটি আর্টিলারি রেজিমেন্টের কমান্ড করেছেন। তিনি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে (বিএমএ) প্লাটুন কমান্ডার, সেনাবাহিনীর সদরদপ্তরে একটি ডিভিশনের কর্নেল স্টাফ এবং পরিচালক (বাজেট) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি রাজধানীর মিরপুরের ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ (ডিএসসিএসসি) থেকে স্নাতক এবং ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ (এনডিসি) থেকে ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স (এনডিসি) ও আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্স (এএফডব্লিউসি) সম্পন্ন করেছেন।
এছাড়া তিনি বিদেশে উন্নত সামরিক প্রশিক্ষণ ও মহড়ায় অংশগ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে চীনের নানজিং আর্টিলারি একাডেমি ও পাকিস্তানের স্কুল অব আর্টিলারি রয়েছে।
তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) থেকে এমফিল সম্পন্ন করেছেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে পিএইচডি করছেন।
বাংলাদেশ টেকসই পোশাক উৎপাদনে বৈশ্বিক নেতৃত্ব আরও সুদৃঢ় করেছে, কারণ নতুন করে পাঁচটি কারখানা লিড (লিডারশিপ ইন এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন) সার্টিফিকেশন অর্জন করেছে।
সর্বশেষ এই সংযোজনের ফলে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের সর্বাধিক ২৬৮টি লিড-সার্টিফায়েড কারখানার অধিকারী। এর মধ্যে ১১৪টি পেয়েছে প্লাটিনাম ও ১৩৫টি পেয়েছে গোল্ড সার্টিফিকেশন।
এই পাঁচটি নতুন কারখানাসহ বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ ১০০টি সর্বোচ্চ রেটপ্রাপ্ত লিড সার্টিফায়েড কারখানার মধ্যে ৬৮টি বাংলাদেশে অবস্থিত, যা দেশের পোশাক শিল্পের পরিবেশবান্ধব উৎপাদন ও জ্বালানি দক্ষতার ধারাবাহিক অঙ্গীকারের প্রতিফলন।
নতুন সার্টিফিকেশন পাওয়া পাঁচটি কারখানা হলো- পাকিজা নিট কম্পোজিট লিমিটেড, সাভার, ঢাকা ঙ+গ: এক্সিস্টিং বিল্ডিং ৪.১ ক্যাটাগরিতে ৮৭ পয়েন্ট পেয়ে লিড প্লাটিনাম সার্টিফিকেশন অর্জন করেছে; ফ্যাশন পালস লিমিটেড, বিসিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট, ঢাকা বিডি+সি: নিউ কন্সট্রাকশন ভি৮ ক্যাটাগরিতে ৮৭ পয়েন্ট পেয়ে লিড প্লাটিনাম সার্টিফিকেশন পেয়েছে; গাভা প্রাইভেট লিমিটেড, প্লট ১১৪১২০, ঢাকা ইউ+ঈ: নিউ কন্সট্রাকশন ভি৪ ক্যাটাগরিতে ৮৭ পয়েন্টে লিড প্লাটিনাম সার্টিফিকেশন অর্জন করেছে; ভিজুয়াল নিটওয়্যারস লিমিটেড, চট্টগ্রাম ঙ+গ: এক্সিস্টিং বিল্ডিং ভি৪.১ ক্যাটাগরিতে ৭৬ পয়েন্ট পেয়ে লিড গোল্ড সার্টিফিকেশন পেয়েছে; এবং ট্যালিসম্যান পারফরম্যান্স লিমিটেড, সিইপিজেড, চট্টগ্রাম ইউ+ঈ: নিউ কন্সট্রাকশন ভি৪ ক্যাটাগরিতে ৬২ পয়েন্ট পেয়ে লিড গোল্ড সার্টিফিকেশন অর্জন করেছে।
এই নতুন সংযোজনগুলো বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের টেকসই উৎপাদন এবং বৈশ্বিক সবুজ রূপান্তরের ধারাবাহিক অগ্রগতিকে আরো জোরালোভাবে তুলে ধরেছে। গত এক দশকে দেশের তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাত আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পরিবেশবান্ধব মানদণ্ড গ্রহণের মাধ্যমে এক ধরনের সবুজ বিপ্লবের নেতৃত্ব দিয়েছে।
লিড-সার্টিফায়েড কারখানাগুলো যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইইউজিবিসি)-এর কঠোর টেকসই মানদণ্ড অনুসরণ করে, যেখানে জ্বালানি ও পানির দক্ষ ব্যবহার, কার্বন নির্গমন হ্রাস, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং কর্মীদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত কর্মপরিবেশের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
শিল্প বিশেষজ্ঞরা এই সাফল্যের কৃতিত্ব দিচ্ছেন উদ্যোক্তাদের উদ্যোগ, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)-এর ভূমিকা এবং সবুজ শিল্পায়নে সরকারের সহায়ক নীতিমালাকে। বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান সবুজ কারখানার সংখ্যা শুধু দেশকে একটি দায়িত্বশীল উৎপাদন গন্তব্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করছে না, বরং টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিল্প ভবিষ্যতের লক্ষ্যে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
বস্ত্র ও পাট, বাণিজ্য এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, প্রায় ১০০ কোটি টাকার ফান্ড দিয়ে জেডিপিসির মাধ্যমে প্রায় ১০০৬ জন উদ্যোক্তার অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে চেষ্টা করছি বাজারে পাটের একটা সাংস্কৃতিক পরিবর্তন যাতে আনতে পারি।
অতীতের মতো আমরা কী করে পাটের ব্যাগ ব্যবহার করতে পারি। পাটের স্কোয়ার মিটার, মাইলেজ, এর পরিধি বাড়াতে গবেষণার দরকার। র্যাপিং (মোড়ক) উপকরণ হিসেবে বিশ্বব্যাপী পাটের বিশাল বাজার আছে।
বুধবার রাজধানীর বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ইয়ার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের উদ্যোগে টেকসই উন্নয়নে পাটের ভূমিকাবিষয়ক সেমিনার ‘হাফিজউদ্দিন আহমেদ ও ফাতেমা আহমেদ ট্রাস্ট লেকচার-২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেছেন।
উপস্থিত শিক্ষার্থীদের ‘ফিউচার ক্যাপ্টেন’ উল্লেখ করে বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, আপনারা অনেক জায়গায় রিফাইন্ড ক্যারেক্টার দেখিয়েছেন। বলেছেন মানি না। পাটব্যাগের জন্য কালচারাল চেঞ্জ (সাংস্কৃতিক পরিবর্তন) দরকার আমাদের, কাউকে বাধ্য করে নয়। পাটপণ্য ইনোভেশন ও খরচ কমিয়ে এর বাণিজ্যিক সফলতা তৈরি করতে সক্ষমতা বাড়াতে হবে যা প্লাস্টিককে হারাতে পারে। এজন্য নীতি, পদক্ষেপ ও প্রচেষ্টার সমন্বিত উদ্যোগ রাখতে হবে। উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর মাধ্যমে শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ে। আপনারা যেখানে কাজ করবেন সে প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ করতে কাজ করতে হবে। শ্রেষ্ঠত্ব তৈরি করতে হবে।
বক্তব্য শেষে অনুষ্ঠানের সভাপতি বাংলাদেশ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের (বুটেক্স) উপাচার্য প্রফেসর ড. ইঞ্জি. মো. জুলহাস উদ্দিন প্রধান অতিথি উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন-এর হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে মূল বক্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইয়ার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগম দেশের অর্থনীতিকে টেকসই ও পরিবেশবান্ধব করতে পাট চাষ ও এর রপ্তানি এবং এর ভবিষ্যতের নানা দিক উপস্থাপন করেন। সেইসাথে আগামী বাণিজ্য মেলায় একমাত্র পাটব্যাগ প্রচলনের দাবি জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক রাশিদা আখতার খানম, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট-এর মহাপরিচালক ড. নারগিস আখতার, আইইবির ভাইস-প্রেসিডেন্ট ইঞ্জি. খান মঞ্জুর মোরশেদ, আইটিইটির আহ্বায়ক ইঞ্জি. আহসানুল করিম কায়সার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেছেন, সরকার ভিসা ফি প্রদানের প্রক্রিয়াকে ডিজিটালাইজড এবং সামগ্রিক ভিসা নীতিমালা সংশোধনে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিচ্ছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে ভিসা ফি প্রদানের প্রক্রিয়াকে ডিজিটাল করার কাজ চলছে। পরিকল্পিত এই সংস্কারের ফলে আবেদনকারীরা ঘরে বসেই অনলাইনে ফি পরিশোধ করতে পারবেন। ফলে ফি প্রদানের জন্য শারীরিকভাবে উপস্থিত হওয়ার প্রয়োজন হবে না।’
বুধবার রাজধানীতে বিডার মাল্টিপারপাস মিলনায়তনে ‘ওয়ার্ক পারমিট ও সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স প্রসেস’ বিষয়ক এক কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চৌধুরী আশিক মাহমুদ বলেন, ‘সরকার সামগ্রিক ভিসা নীতিমালার ক্ষেত্রেও বড় পরিসরে সংস্কারের কাজ করছে।
এই বিস্তৃত নীতি সংস্কারের লক্ষ্য হলো বর্তমান ব্যবস্থায় দীর্ঘদিনের বিদ্যমান নানা সমস্যার সমাধান করা।’
তিনি বলেন, ‘অনলাইন সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স প্রক্রিয়া ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হয়েছে। আগে যেখানে ৩৪টি নথি জমা দিতে হতো, সেখানে এখন তা কমিয়ে ১১টিতে আনা হয়েছে। এটি একটি বড় অর্জন, কারণ অতীতে বিভিন্ন দিকনির্দেশনার কারণে নানা দপ্তর থেকে একাধিক নথি চাওয়া হতো।’
বিডা চেয়ারম্যান জোর দিয়ে বলেন, ‘বিডাসহ সরকারের সব কার্যক্রমে জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ে কোনো আপসের সুযোগ নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এমন কিছু করতে চাই না যা জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে বা আপসের সম্ভাবনা তৈরি করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা বিডা- সকলের লক্ষ্য এক এবং আমরা একই উদ্দেশে কাজ করছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য একটাই- সব সংস্থা যেন সমন্বিতভাবে কাজ করে সমস্যা সমাধান করে এবং জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়।’
কর্মশালায় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিডা তাদের নিজ নিজ উপস্থাপনা তুলে ধরেছে।
এতে অন্যান্যের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. দেলোয়ার হোসেন ও বিডা মহাপরিচালক মো. আরিফুল হক বক্তৃতা দেন।
আরিফুল হক জানান, কর্মশালায় এসবি, এনএসআই, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক সংস্থাগুলোর নির্দিষ্ট তথ্য ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করা হয়।
তিনি বলেন, ‘সব সংস্থা একই পরিবারের সদস্য হিসেবে একই উদ্দেশে কাজ করছে।’
আরিফুল হক মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান, তারা যেন তাদের অভিজ্ঞতা ও সমস্যা নিয়মিতভাবে জানান। কারণ এসব তথ্যই পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া সহজ করবে।
শরীয়াহ্ ভিত্তিক ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি. আমদানি, রপ্তানী ও রেমিটেন্স বৃদ্ধিকল্পে গ্রাহকদেরকে সকল প্রকার সহযোগিতা করছে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জন হয়েছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ব্যাংকের ১৭৪ টি শাখা ও উপ-শাখায় এ সেবা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক আহ্বান জানাচ্ছে।
মন্তব্য