করোনায় কমে গেছে অনেকের আয়। ফলে সঞ্চয়ও কমে যাওয়ার কথা। কিন্তু সংকটেও সঞ্চয় বেড়েছে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে।
মহামারির বছরেও এসব প্রতিষ্ঠানের আমানত সংগ্রহ ও ঋণ বিতরণ দুটোই বেড়েছে। ২০২০ সাল শেষে আমানত বেড়েছে ১ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা। আর একই সময়ে ঋণ বিতরণ ৯৯০ কোটি টাকা বেড়েছে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিডি ফিন্যান্সের কোম্পানি সচিব মুন্সি আবু নাঈম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনার মধ্যে টাকা অনেকের হাতে ছিল, তারা সেটা সঞ্চয় করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু সুবিধার কারণে করোনার নেতিবাচক প্রভাব আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তেমন পড়েনি। তবে সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবস্থা যে ভালো, তা নয়। কিছু কিছু কোম্পানি গ্রাহকদের আস্থা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। অনেকের হাতে টাকা আছে কিন্তু ব্যবসা মন্দা থাকায় বিনিয়োগ করতে পারেনি। তারা সেই টাকা সঞ্চয় করেছে।’
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, করোনার বছরে ঋণ পরিশোধে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনেক ছাড় দিয়েছে। ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণ শোধ না করলেও কোনো গ্রাহক খেলাপি হয়নি। তবে করোনার মধ্যেও অনেক গ্রাহক ঋণ নিয়মিত শোধ করেছে। সে তুলনায় নতুন ঋণ বিতরণ হয়নি। আর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এসব প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন নীতি-সহায়তা দেয়া হয়েছে। ফলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায় তেমন নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এসব বিশেষ সুবিধা বন্ধ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
আমানতের সিংহভাগ রাজধানীতে
বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২০ সালের প্রথম প্রান্তিক (জানুয়ারি-মার্চ) শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমানতের পরিমাণ ছিল ৪৩ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা, যা জুনে কমে হয় ৪৩ হাজার ২৬৪ কোটি টাকা। তবে সেপ্টেম্বরে আবার আমানত বেড়ে ৪৪ হাজার ৬৮৪ কোটি টাকায় ওঠে। আর ডিসেম্বর শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট আমানত আরো বেড়ে হয় ৪৪ হাজার ৭৯৬ কোটি টাকা।
২০১৯ সাল শেষে আমানত ছিল ৪৩ হাজার ১২১ কোটি টাকা। অর্থাৎ মহামারির বছরে আমানত বেড়েছে ১ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা।
তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে ৩৫টির মধ্যে ৩৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং অন্য কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের তথ্যও যুক্ত রয়েছে। এগুলো হলো কর্মসংস্থান ব্যাংক, আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক। এ ছাড়া আমানত নিতে পারে না, এমন কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তথ্যও প্রতিবেদনে রয়েছে।
এই আমানতের ৯২ দশমিক ২৬ শতাংশই রাজধানী ঢাকার ভেতরের শাখাগুলোতে রয়েছে। এরপরেই চট্টগ্রামে আছে ৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
এ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানতের বড় একটি অংশের জোগানদাতা ব্যাংক। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে ব্যাংকের মতো নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে (এনবিএফ) তারল্য সহায়তা দিতে বেশ কিছু নীতি-সহায়তা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ছাড়া বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যাতে এনবিএফআই থেকে আমানত তুলে না নেয়, সে জন্যও ব্যাংকগুলোকে দফায় দফায় নির্দেশনা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ঋণ বিতরণ ঢাকায় বেশি
আমানতের পাশাপাশি লিজিং কোম্পানিগুলোর ঋণ বিতরণও বেড়েছে।
২০২০ সালের মার্চের শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণের পরিমাণ ছিল ৬৯ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। তা জুনে কিছুটা কমে হয় ৬৯ হাজার ৫১১ কোটি টাকা। আর সেপ্টেম্বরে ঋণ আরও কমে ৬৮ হাজার ৯৩১ কোটি টাকায় নামে। তবে ডিসেম্বর শেষে এনবিএফআইগুলোর বিতরণ করা ঋণ বা অগ্রিমের পরিমাণ দাঁড়ায় ৭০ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
২০১৯ সালের ডিসেম্বর শেষে এ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ৬৯ হাজার ৩১০ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত এক বছরে ৯৯০ কোটি টাকা ঋণ বেড়েছে ।
বিতরণকৃত ঋণের মধ্যে বেসরকারি খাতের ঋণ ছিল ৬৯ হাজার ৮৯৪ কোটি টাকা। আর সরকারি ঋণ ৪ হাজার ৪৮ কোটি টাকা।
২০১৯ সালের একই সময়ে বেসরকারি ঋণ ছিল ৬৮ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা। আর সরকারি ঋণ ছিল ৪ হাজার ৯৪৪ কোটি টাকা।
সবচেয়ে বেশি ঋণ গেছে শিল্প খাতে, প্রায় ৩৮ শতাংশ। ব্যবসা ও বাণিজ্য খাতে ২৩ শতাংশ, ভোক্তাঋণ ১৪ শতাংশ, নির্মাণ খাতে ১৪ শতাংশ, কৃষিতে ৩ শতাংশ এবং অন্যান্য খাতে ৭ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো।
আমানতের মতো ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে শীর্ষ অবস্থানে আছে রাজধানী। ৮৪ দশমিক ৫২ শতাংশ ঋণই রাজধানী ঢাকার ভেতরের শাখাগুলোতে রয়েছে। এরপরেই চট্টগ্রামে ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, আগে অনেক ঋণের সুদের হার ১৬-১৭ শতাংশ ছিল। ব্যাংকের ঋণের সুদ ৯ শতাংশ নির্দিষ্ট করে দেয়ার পর আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণের সুদও কমেছে। করোনাভাইরাসের কারণে সরকারঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের একটি বড় অংশ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে বিতরণ করা হচ্ছে। এ জন্য মহামারিতে এসব প্রতিষ্ঠানের ঋণ বিতরণ বেড়েছে।
তহবিল ব্যয় কমেছে
তহবিল ব্যবস্থাপনায় ব্যয় কমিয়েছে এসব প্রতিষ্ঠান।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর মার্চ শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ১০০ টাকা তহবিল সংগ্রহে গড়ে ৯ টাকা ১১ পয়সা ব্যয় করেছে। অন্যান্য খরচ মিলিয়ে তাদের গড় ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১০ টাকা ২৫ পয়সা। চলতি বছরের মার্চ শেষে তহবিল সংগ্রহে ব্যয় কমে হয়েছে ৭ টাকা ০২ পয়সা। আর খরচ মিলিয়ে তাদের গড় এই ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৮ টাকা ২৪ পয়সা। বছরের ব্যবধানে এ ব্যয় কমেছে ২ শতাংশের বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, বর্তমানে ব্যাংকবহির্ভূত এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যাংকনির্ভরতা কমিয়ে আমানত সংগ্রহে তুলনামূলক বেশি জোর দেয়ায় তহবিল ব্যয় কমছে। এতে করে তাদের ঋণের সুদহারও কমছে। বর্তমানে প্রায় ৪০ শতাংশ তহবিল নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সংগ্রহ করা হচ্ছে যা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সহায়ক।
২০১৩ সালে এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক সুদহার ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে তহবিল ব্যয় সূচক চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ওই প্রজ্ঞাপনে নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের তহবিল সংগ্রহের ব্যয়, বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত নগদ জমার হার (সিআরআর) ও বিধিবদ্ধ সংরক্ষণের হার (এসএলআর), প্রশাসনিক ব্যয় এবং উদ্যোক্তা মূলধনের ব্যয় নির্বাহের হিসাব করে মোট ব্যয়ের হিসাব রাখতে বলা হয়। এসব ব্যয়ের পর যে সুদ নেবে তা হবে ওই প্রতিষ্ঠানের পরিচালন মুনাফা।
বেশির ভাগ শাখা শহরাঞ্চলে
সারা দেশে এনবিএফআইগুলোর শাখা রয়েছে ৭৯৬টি। এর মধ্যে শহরাঞ্চলে ৬৮২ এবং গ্রামাঞ্চলে ১১৪ টি শাখা রয়েছে। এর মধ্যে চারটি সরকারি এনবিএফআইয়ের শাখা রয়েছে ৫৮টি। বেসরকারি ৩০টি এনবিএফআইয়ের শাখা রয়েছে ২৪৪টি।
বিভাগের হিসেবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঢাকাতে ৩০০টি, চট্টগ্রামে ১৪০, খুলনায় ৭২, রাজশাহীতে ৮৪, বরিশালে ৪২, সিলেটে ৫০, রংপুরে ৫৫ ও ময়মনসিংহে ৫৩টি শাখা রয়েছে।
ব্যাংকের মতো সব ধরনের লেনদেনের লাইসেন্স না থাকলেও বেশ কিছু এনবিএফআই মেয়াদি আমানত নিতে পারে। এ ধরনের এনবিএফআইগুলো নন-ব্যাংক ডিপোজিটরি করপোরেশন হিসেবে বিবেচিত হয়।
আরও পড়ুন:নাটোরের নলডাঙ্গায় এক স্কুলছাত্রকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
উপজেলার পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত ভবনে বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো হিমেল হোসেন (১৫) উপজেলার পিপরুল গ্রামের ফারুক সরদারের ছেলে। সে পাটুল-হাপানিয়া স্কুল ও কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
নলডাঙ্গা থানার ওসি মো. মনোয়ারুজ্জামান জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে হিমেলকে তার সহপাঠী ফোন করে বাড়ি থেকে ডেকে নেয়। এরপর থেকে হিমেলের মোবাইল ফোনটি বন্ধ পান তার স্বজনরা। পরে রাত হলেও বাড়িতে না ফিরলে পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন এবং বিষয়টি পুলিশকে জানান।
ওসি বলেন, পুলিশ হিমেলকে উদ্ধারে অভিযানে নামে। অভিযানে হিমেলের বন্ধু পার্থকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। পার্থের দেয়া তথ্য অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত ভবনে রক্তাক্ত ও ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় হিমেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। হিমেলের মাথায় আঘাত, গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় মেহেদি, শিমুল ও সুজন নামে আরও তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এ বিষয়ে একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:আগামী জুনের মধ্যে ১০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করবে সরকার। সে জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রুমানা আলী।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে শুক্রবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে এ কথা জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী বলেন, শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কেউ যেন প্রতারিত না হয় কিংবা কেউ যেন প্রতারণা না করতে পারে সে জন্য সরকার সব ব্যবস্থা নেবে। আগামী জুনের মধ্যেই ১০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘আমি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ কেন্দ্রে পরিদর্শন করেছি। সেখানে খুব ভালোভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে, তবে এ বছর নিয়োগ পরীক্ষায় প্রার্থীর সংখ্যা কিছুটা কম।’
এ সময় প্রতিমন্ত্রী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ও শেষ ধাপের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় আজ। ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে বেলা ১১টা পর্যন্ত চলে লিখিত পরীক্ষা।
এ ধাপে কুমিল্লা জেলায় ৩২ হাজার ১৯৯ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে নারী ১৪ হাজার ৭৬৭ জন এবং পুরুষ ১৭ হাজার ৪৩২ জন।
আরও পড়ুন:দেশের চারটি বিভাগে বৃষ্টির আভাস দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, অন্য অঞ্চলগুলোতে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
বৃষ্টিপাত নিয়ে বলা হয়, ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এ ছাড়া দেশের অন্যান্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
আজকের তাপমাত্রা নিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
আরও পড়ুন:কুমিল্লার বরুড়ায় ভাইকে হত্যার দায়ে ছোট ভাই, বোন ও ভগ্নিপতিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
উপজেলার শালুকিয়া গ্রাম থেকে বৃহস্পতিবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে বুধবার সকালে নিজ বসতঘর থেকে শরিফ হোসেন (৩৫) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন শরিফের ছোট ভাই আরিফ হোসেন, বড় বোন খুকি আক্তার ও ভগ্নিপতি নাছির উদ্দিন।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ উদ্ধারের পর বুধবার নিহত শরীফের মা বরুড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুল বলেন, ‘শরীফ মাদকাসক্ত ছিল। কিছুদিন আগে শরীফ মাদকের টাকা যোগাড়ের জন্য ভাই আরিফের অটোরিকশা বিক্রি করে দেয়। মাদকের টাকার জন্য মাকেও মারধর করত সে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে শরিফের ছোট ভাই আরিফ ও তার বোন খুকি মিলে পরিকল্পনা করে শরীফকে পঙ্গু করে ঘরে রেখে দেবে। বাকি জীবন তাকে ঘরে বসিয়ে খাওয়াবে। পরিকল্পনা মোতাবেক ২৬ মার্চ রাত ১ টার দিকে পুকুরপাড়ে শরীফকে হাত পা বেঁধে পেটানো হয়। বাড়িতে এনে আরেক দফা পেটানো শেষে হাত পা বেঁধে ঘরের ভেতর ফেলে রাখা হয়। এ অবস্থায় শরীফ মারা যায়।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল জানান, তথ্য প্রযুক্তিসহ নিজস্ব গোয়েন্দা ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাদের আদালতে প্রেরণ করলে সেখানে তারা ১৬৪ ধারায় খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়।
আরও পড়ুন:সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও বাতাসের নিম্ন মানে প্রথম সারিতে রয়েছে ঢাকা।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বাতাসের মানবিষয়ক প্রযুক্তি কোম্পানি আইকিউ এয়ারের র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকাল ১০টা ২৮ মিনিটে ১৮০ স্কোর নিয়ে ১০০টি শহরের মধ্যে বায়ুর নিম্ন মানে দ্বিতীয় ছিল ঢাকা।
একই সময়ে প্রথম ও তৃতীয় অবস্থানে ছিল থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই ও ভারতের দিল্লি।
আইকিউএয়ার জানিয়েছে, আজ দিনের ওই সময়ে ঢাকার বাতাসে অতি ক্ষুদ্র কণা পিএম২.৫-এর উপস্থিতি ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আদর্শ মাত্রার চেয়ে ২২ দশমিক ৩ গুণ বেশি।
নির্দিষ্ট স্কোরের ভিত্তিতে কোনো শহরের বাতাসের ক্যাটাগরি নির্ধারণের পাশাপাশি সেটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি ক্ষতিকর, তা জানায় আইকিউএয়ার।
কোম্পানিটি শূন্য থেকে ৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘ভালো’ ক্যাটাগরিতে রাখে। অর্থাৎ এ ক্যাটাগরিতে থাকা শহরের বাতাস জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।
৫১ থেকে ১০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘মধ্যম মানের বা সহনীয়’ হিসেবে বিবেচনা করে কোম্পানিটি।
আইকিউএয়ারের র্যাঙ্কিংয়ে ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরিতে ধরা হয়।
১৫১ থেকে ২০০ স্কোরে থাকা শহরের বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরির বিবেচনা করা হয়।
র্যাঙ্কিংয়ে ২০১ থেকে ৩০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়।
তিন শর বেশি স্কোর পাওয়া শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করে আইকিউএয়ার।
আজ সকাল ১০টা ২৮ মিনিটে ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ১৮০। এর মানে হলো ওই সময়টাতে নিঃশ্বাসের সঙ্গে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাস নিতে হয় রাজধানীবাসীকে।
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজার শহরে বুধবার ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ভেতরে গ্রাহককে অজ্ঞান করে ৮১ হাজার টাকা লুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তানভীর হাবিব চৌধুরী রুমেল নামের ওই গ্রাহক মৌলভীবাজার মডেল থানায় অভিযোগটি করেন।
ব্যাংকের ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, বুধবার বেলা ১১টা সাত মিনিটে ঘটনাটি ঘটে।
অভিযোগের বিষয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি কে এম নজরুল বলেন, ‘মৌলভীবাজারের শহরের সেন্ট্রাল রোডে অবস্থিত ডাচ-বাংলা ব্যাংক পিএলসিতে বুধবার সকালে ১১টার দিকে প্রবাস থেকে আসা টাকা তুলতে যান ব্যবসায়ী তানভীর। দুই লাখ টাকা তুলে তানভীর এক হাজার টাকার নোট দেয়ার জন্য ব্যাংক কর্মকর্তাকে বলেন। এ সময় ব্যাংক কর্মকর্তা এক হাজার টাকার বান্ডিল দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে তাকে ৫০০ টাকা নোটের বান্ডেল প্রদান করেন।
‘তখন কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একজন রুমেলকে বলেন, তিনি এক হাজার টাকার বান্ডেল এক্সচেঞ্জ করবেন। তখন রুমেলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তিনি গুনতে থাকেন। টাকা হাতে নেয়ার পর রুমেল কিছু সময়ের জন্য অজ্ঞান অনুভব করেন। তখন ওই চক্র ৮১ হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়।’
অভিযোগকারী রুমেল বলেন, ‘ওই ব্যক্তির হাতে থাকা টাকার বান্ডেল আমাকে গুনতে দিয়ে আমাকে একটি চেয়ারে নিয়ে বসান। আমি টাকা হাতে নেয়ার পর নিস্তেজ অনুভব করি। সবকিছু আমার কাছে কিছু সময়ের মধ্যে এলোমেলো মনে হয়। প্রায় পাঁচ মিনিট পরে একটু স্বাভাবিক হলে গুনে দেখি, তারা আমার কাছ থেকে ৮১ হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়।
‘পরবর্তী সময়ে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, তারা ১১টা সাত মিনিটে আমার কাছ থেকে টাকা নিয়ে যায়। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে ওই চক্রের ছবি শনাক্ত করা হয়।’
ডাচ-বাংলা ব্যাংক পিএলসির মৌলভীবাজার শাখা ব্যবস্থাপক আবদুল কাদের বলেন, ‘সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখলাম, ব্যাংকের একজন গ্ৰাহকের সঙ্গে কয়েকজন লোক গল্পগুজব করে উনার সঙ্গে বিদায় নিয়ে চলে গেছে। এরপর তিনি বুঝতে পারেন, উনার টাকা নিয়ে চলে গেছে। তিনি পুলিশে অভিযোগ করেন।’
মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি কে এম নজরুল বলেন, ‘একজন ব্যাংক গ্ৰাহক অভিযোগ করেন। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।’
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় নদীতে গোসল করতে নেমে বজ্রপাতে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার চর বাউশিয়া বড়কান্দি গ্রাম সংলগ্ন গোমতী নদীতে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। প্রাণ হারানো শাহেদ (১৪) ওই গ্রামের মোশারফ মিয়ার ছেলে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিকেলে গোমতী নদীতে বন্ধুদের সঙ্গে গোসল করতে যায় শাহেদ। ওই সময় হঠাৎ করে বজ্রসহ বৃষ্টি শুরু হলে বজ্রপাতে মারা যায় সে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠালে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানা যায়, বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তাদের হাসপাতালে শাহেদকে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গজারিয়া থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) আজাদ রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমরা অবগত রয়েছি, নিহতের লাশ গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে।’
নিহতের পরিবারের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য