করোনায় কমে গেছে অনেকের আয়। ফলে সঞ্চয়ও কমে যাওয়ার কথা। কিন্তু সংকটেও সঞ্চয় বেড়েছে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে।
মহামারির বছরেও এসব প্রতিষ্ঠানের আমানত সংগ্রহ ও ঋণ বিতরণ দুটোই বেড়েছে। ২০২০ সাল শেষে আমানত বেড়েছে ১ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা। আর একই সময়ে ঋণ বিতরণ ৯৯০ কোটি টাকা বেড়েছে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিডি ফিন্যান্সের কোম্পানি সচিব মুন্সি আবু নাঈম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনার মধ্যে টাকা অনেকের হাতে ছিল, তারা সেটা সঞ্চয় করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু সুবিধার কারণে করোনার নেতিবাচক প্রভাব আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তেমন পড়েনি। তবে সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবস্থা যে ভালো, তা নয়। কিছু কিছু কোম্পানি গ্রাহকদের আস্থা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। অনেকের হাতে টাকা আছে কিন্তু ব্যবসা মন্দা থাকায় বিনিয়োগ করতে পারেনি। তারা সেই টাকা সঞ্চয় করেছে।’
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, করোনার বছরে ঋণ পরিশোধে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনেক ছাড় দিয়েছে। ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণ শোধ না করলেও কোনো গ্রাহক খেলাপি হয়নি। তবে করোনার মধ্যেও অনেক গ্রাহক ঋণ নিয়মিত শোধ করেছে। সে তুলনায় নতুন ঋণ বিতরণ হয়নি। আর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এসব প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন নীতি-সহায়তা দেয়া হয়েছে। ফলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায় তেমন নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এসব বিশেষ সুবিধা বন্ধ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
আমানতের সিংহভাগ রাজধানীতে
বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২০ সালের প্রথম প্রান্তিক (জানুয়ারি-মার্চ) শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমানতের পরিমাণ ছিল ৪৩ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা, যা জুনে কমে হয় ৪৩ হাজার ২৬৪ কোটি টাকা। তবে সেপ্টেম্বরে আবার আমানত বেড়ে ৪৪ হাজার ৬৮৪ কোটি টাকায় ওঠে। আর ডিসেম্বর শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট আমানত আরো বেড়ে হয় ৪৪ হাজার ৭৯৬ কোটি টাকা।
২০১৯ সাল শেষে আমানত ছিল ৪৩ হাজার ১২১ কোটি টাকা। অর্থাৎ মহামারির বছরে আমানত বেড়েছে ১ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা।
তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে ৩৫টির মধ্যে ৩৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং অন্য কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের তথ্যও যুক্ত রয়েছে। এগুলো হলো কর্মসংস্থান ব্যাংক, আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক। এ ছাড়া আমানত নিতে পারে না, এমন কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তথ্যও প্রতিবেদনে রয়েছে।
এই আমানতের ৯২ দশমিক ২৬ শতাংশই রাজধানী ঢাকার ভেতরের শাখাগুলোতে রয়েছে। এরপরেই চট্টগ্রামে আছে ৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
এ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানতের বড় একটি অংশের জোগানদাতা ব্যাংক। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে ব্যাংকের মতো নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে (এনবিএফ) তারল্য সহায়তা দিতে বেশ কিছু নীতি-সহায়তা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ছাড়া বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যাতে এনবিএফআই থেকে আমানত তুলে না নেয়, সে জন্যও ব্যাংকগুলোকে দফায় দফায় নির্দেশনা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ঋণ বিতরণ ঢাকায় বেশি
আমানতের পাশাপাশি লিজিং কোম্পানিগুলোর ঋণ বিতরণও বেড়েছে।
২০২০ সালের মার্চের শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণের পরিমাণ ছিল ৬৯ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। তা জুনে কিছুটা কমে হয় ৬৯ হাজার ৫১১ কোটি টাকা। আর সেপ্টেম্বরে ঋণ আরও কমে ৬৮ হাজার ৯৩১ কোটি টাকায় নামে। তবে ডিসেম্বর শেষে এনবিএফআইগুলোর বিতরণ করা ঋণ বা অগ্রিমের পরিমাণ দাঁড়ায় ৭০ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
২০১৯ সালের ডিসেম্বর শেষে এ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ৬৯ হাজার ৩১০ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত এক বছরে ৯৯০ কোটি টাকা ঋণ বেড়েছে ।
বিতরণকৃত ঋণের মধ্যে বেসরকারি খাতের ঋণ ছিল ৬৯ হাজার ৮৯৪ কোটি টাকা। আর সরকারি ঋণ ৪ হাজার ৪৮ কোটি টাকা।
২০১৯ সালের একই সময়ে বেসরকারি ঋণ ছিল ৬৮ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা। আর সরকারি ঋণ ছিল ৪ হাজার ৯৪৪ কোটি টাকা।
সবচেয়ে বেশি ঋণ গেছে শিল্প খাতে, প্রায় ৩৮ শতাংশ। ব্যবসা ও বাণিজ্য খাতে ২৩ শতাংশ, ভোক্তাঋণ ১৪ শতাংশ, নির্মাণ খাতে ১৪ শতাংশ, কৃষিতে ৩ শতাংশ এবং অন্যান্য খাতে ৭ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো।
আমানতের মতো ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে শীর্ষ অবস্থানে আছে রাজধানী। ৮৪ দশমিক ৫২ শতাংশ ঋণই রাজধানী ঢাকার ভেতরের শাখাগুলোতে রয়েছে। এরপরেই চট্টগ্রামে ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, আগে অনেক ঋণের সুদের হার ১৬-১৭ শতাংশ ছিল। ব্যাংকের ঋণের সুদ ৯ শতাংশ নির্দিষ্ট করে দেয়ার পর আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণের সুদও কমেছে। করোনাভাইরাসের কারণে সরকারঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের একটি বড় অংশ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে বিতরণ করা হচ্ছে। এ জন্য মহামারিতে এসব প্রতিষ্ঠানের ঋণ বিতরণ বেড়েছে।
তহবিল ব্যয় কমেছে
তহবিল ব্যবস্থাপনায় ব্যয় কমিয়েছে এসব প্রতিষ্ঠান।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর মার্চ শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ১০০ টাকা তহবিল সংগ্রহে গড়ে ৯ টাকা ১১ পয়সা ব্যয় করেছে। অন্যান্য খরচ মিলিয়ে তাদের গড় ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১০ টাকা ২৫ পয়সা। চলতি বছরের মার্চ শেষে তহবিল সংগ্রহে ব্যয় কমে হয়েছে ৭ টাকা ০২ পয়সা। আর খরচ মিলিয়ে তাদের গড় এই ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৮ টাকা ২৪ পয়সা। বছরের ব্যবধানে এ ব্যয় কমেছে ২ শতাংশের বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, বর্তমানে ব্যাংকবহির্ভূত এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যাংকনির্ভরতা কমিয়ে আমানত সংগ্রহে তুলনামূলক বেশি জোর দেয়ায় তহবিল ব্যয় কমছে। এতে করে তাদের ঋণের সুদহারও কমছে। বর্তমানে প্রায় ৪০ শতাংশ তহবিল নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সংগ্রহ করা হচ্ছে যা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সহায়ক।
২০১৩ সালে এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক সুদহার ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে তহবিল ব্যয় সূচক চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ওই প্রজ্ঞাপনে নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের তহবিল সংগ্রহের ব্যয়, বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত নগদ জমার হার (সিআরআর) ও বিধিবদ্ধ সংরক্ষণের হার (এসএলআর), প্রশাসনিক ব্যয় এবং উদ্যোক্তা মূলধনের ব্যয় নির্বাহের হিসাব করে মোট ব্যয়ের হিসাব রাখতে বলা হয়। এসব ব্যয়ের পর যে সুদ নেবে তা হবে ওই প্রতিষ্ঠানের পরিচালন মুনাফা।
বেশির ভাগ শাখা শহরাঞ্চলে
সারা দেশে এনবিএফআইগুলোর শাখা রয়েছে ৭৯৬টি। এর মধ্যে শহরাঞ্চলে ৬৮২ এবং গ্রামাঞ্চলে ১১৪ টি শাখা রয়েছে। এর মধ্যে চারটি সরকারি এনবিএফআইয়ের শাখা রয়েছে ৫৮টি। বেসরকারি ৩০টি এনবিএফআইয়ের শাখা রয়েছে ২৪৪টি।
বিভাগের হিসেবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঢাকাতে ৩০০টি, চট্টগ্রামে ১৪০, খুলনায় ৭২, রাজশাহীতে ৮৪, বরিশালে ৪২, সিলেটে ৫০, রংপুরে ৫৫ ও ময়মনসিংহে ৫৩টি শাখা রয়েছে।
ব্যাংকের মতো সব ধরনের লেনদেনের লাইসেন্স না থাকলেও বেশ কিছু এনবিএফআই মেয়াদি আমানত নিতে পারে। এ ধরনের এনবিএফআইগুলো নন-ব্যাংক ডিপোজিটরি করপোরেশন হিসেবে বিবেচিত হয়।
আরও পড়ুন:ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্টে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ৪৭ তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি পেশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া নাহিদ ইসলাম।
বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আজ জবানবন্দি পেশ শেষ করেন নাহিদ। তিনি গতকাল জবানবন্দি পেশ শুরু করেন।
আজ বিকেলে তাকে জেরা করবেন এই মামলায় পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন।
এ মামলায় প্রসিকিউসন পক্ষে আজ চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এসএইচ তামিম শুনানি করেন। সেই সাথে অপর প্রসিকিউটররা শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন।
উক্ত মামলায় পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। এ মামলায় গ্রেফতার হয়ে পরে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
একপর্যায়ে এ মামলায় দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী হতে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আবেদন মঞ্জুর করেন ট্র্যাইব্যুনাল। পরবর্তীকালে এ মামলার ৩৬ তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন রাজসাক্ষী পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
এ মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, এর দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধের বিচার কাজ চলছে
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ৩১৩টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৩৫৭টি গাড়ি ডাম্পিং ও ১০২টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বুধবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
অনেকে মনে করেন ভাত খেলেই ওজন বেড়ে যায়, বাড়ে ভুঁড়ি। তাই অনেকেই ভাত খাওয়া কমিয়ে দেন বা একেবারেই ছেড়ে দেন। অথচ পুষ্টিবিদরা বলছেন, ভাতেরও রয়েছে প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ—যা শরীরের জন্য অপরিহার্য।
ভারতীয় পুষ্টিবিদ সুরভি আগরওয়াল জানান, ভাত ভিটামিন বি, ফলিক অ্যাসিড ও ম্যাগনেশিয়ামের ভালো উৎস। এটি অন্ত্র ও ত্বকের জন্য উপকারী। কালো চাল অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ, বাদামি চাল ফাইবারে ভরপুর এবং লাল চাল প্রদাহবিরোধী বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন। নিয়ম মেনে খেলে ভাত এমনকি ক্যানসার প্রতিরোধেও সহায়ক হতে পারে।
অন্য পুষ্টিবিদ রেশমী রায়চৌধুরী বলেন, ভাতে কার্বোহাইড্রেট ও স্টার্চ বেশি থাকায় গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জিআই) উঁচু হয়, ফলে ওজন ও রক্তে শর্করা বাড়তে পারে। তবে রান্নার পদ্ধতি ও খাবারের সঙ্গে মিশ্রণে এ প্রভাব নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
রান্নার সঠিক নিয়ম
চাল আধ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে নতুন পানিতে ভাত রান্না করুন।
মাড় গালা ভাত খেলে স্টার্চ কমে যায়, ফলে কার্বোহাইড্রেটও কমবে।
কতটুকু খাবেন?
দিনে ৩০ গ্রাম চাল দিয়ে রান্না করা এক কাপ ভাত যথেষ্ট (১৫০–১৭০ ক্যালোরি)।
ভাতের সঙ্গে সবজি, মাছ, সালাদ খেলে ওজন বাড়ে না।
কখন খাবেন?
দিনে ভাত খাওয়া নিরাপদ, কারণ নড়াচড়া বেশি হয়।
রাতে ভাত না খেয়ে হালকা খাবার খাওয়াই ভালো।
ভাত খাওয়ার পর করণীয়
ভাত খাওয়ার পর ভাতঘুম নয়, বরং হালকা হাঁটাহাঁটি বা স্ট্রেচিং করুন।
চাইলে গ্রিন টি পান করতে পারেন, এতে হজমে সহায়তা হয়।
যশোরের কেশবপুরে উৎসবমুখর পরিবেশে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৭ সেপ্টম্বর) বিকেলে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কেশবপুর সরকারি পাইলট উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ওই প্রস্তুতিমূলক সভার আয়োজন করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ রেকসোনা খাতুনের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শরীফ নেওয়াজ, সেনাবাহি-নীর ওয়ারেন্ট অফিসার ফখরুল ইসলাম, কেশবপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খান শরিফুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুস সামাদ বিশ্বাস, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মাষ্টার রফিকুল ইসলাম, পৌর জামায়াতে ইসলামীর আমির প্রভাষক জাকির হোসেন, সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক আলাউদ্দীন আলা,উপজেলা এনসিপির সমন্বয়ক সম্রাট হোসেন, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দুলাল চন্দ্র সাহা, উপজেলা পূজা উদযাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক বিশ্বজিৎ ঘোষ প্রমুখ । অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা বিমল কুমার কুন্ডু। সভায় কেশবপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ৯৭টি মন্দিরে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা উদযাপনের লক্ষ্যে বিভিন্ন আলোচনা করেন বক্তারা। এবার কেশবপুর উপজেলার যে সকল এলাকায় পূজা উদযাপন হবে। ১নং ত্রিমোহিনী ইউনিয়নে একটি,২নং সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নে ১৩ টি, ৩ নং মজিদপুর ইউনিয়নে ৬টি, ৪ নং বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়নে ৫ টি, ৫নং মঙ্গলকোট ইউনিয়নে ৫ টি, ৬ নং সদর ইউনিয়নে ৭ টি, ৭ নং পাঁজিয়া ইউনিয়নে ৮ টি, ৮নং সুপলাকাটি ইউনিয়নে ১২ টি, ৯নং গৌরিঘোনা ইউনিয়নে ১৩ টি, ১০ নং সাতবাড়িয়া ইউনিয়নে ১২ টি, ১১ নং হাসানপুর ইউনিয়নে ০৮ টি, কেশবপুর পৌর সভায় ৭টি সহ সর্বমোট ৯৭ টি পূজা মন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। আসন্ন পূজা উদযাপন উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সহ রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সুন্দর ভাবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অনুষ্ঠান টি উদযাপনের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ রেকসোনা খাতুন বলেন কেও কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাইনোর চেষ্টা করলে তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে।
জয়পুরহাটে অনতিবিলম্বে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ভুক্তভোগীদের বেহাত হওয়া জমি উদ্ধারসহ ৪ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে জেলা দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলন (বিডিইআরএম)। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় শহরের পাঁচুর মোড় জিরো পয়েন্টে বিডিইআরএম ও নাগরিক উদ্যোগের যৌথ আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
তাদের দাবিগুলো হলো- অনতিবিলম্বে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের বেহাত হওয়া জমি উদ্ধার ও হস্তান্তর, ভুক্তভোগী রবিদাস পরিবার উচ্ছেদ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের পাশাপাশি বসতবাড়ি পুনর্নির্মাণে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব গ্রহণ এবং ভুক্তভোগীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
এসময় জেলা দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলনের (বিডিইআরএম) আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট বাবুল রবিদাসের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শিপন কুমার রবিদাস, আদিবাসী সংঘ কেন্দ্রীয় কমিটির আইন উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট এ এইচ আল মুরাদ (দোয়েল), জেলা রবিদাস ফোরামের সভাপতি মনিলাল রবিদাস, জেলা সাম্যবাদী আন্দোলনের সমন্বয়ক ওবায়দুল্লাহ মুসা এবং জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কোষাধ্যক্ষ সুধীর তিরকি প্রমুখ।
জলবায়ু পরিবর্তন : প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি বিষয়ক কুড়িগ্রামে কৃষক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে বেসরকারি সংস্থা আফাদ এর মিলনায়তনে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় নারী পক্ষ প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক ফরিদা ইয়াসমিন এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন,জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন,জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পদোন্নতি পাওয়া অতিরিক্ত উপপরিচালক মো: আসাদুজ্জামান, সদর উপজেলা উপসহকারী প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা খান,জেলা মৎস্য জরিপ কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের ফিল্ড সুপারভাইজার মাইদুল ইসলাম, আফাদ এর নির্বাহী পরিচালক সাইদা ইয়াসমিন প্রমুখ।
ইউএনওমেন এর অর্থায়নে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের কারিগরি সহায়তার মাধ্যমে জলবায়ু সহিষ্ণু সমাজের জন্য নারীর ক্ষমতায়ন,ফেইস প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।
দিনব্যাপী কৃষক সংলাপ সদর উপজেলাসহ রাজারহাট, চিলমারী, উলিপুর, ফুলবাড়ি,নাগেশ্বরী এবং ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ৫০জন কৃষক- কৃষাণীসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা অংশ গ্রহণ করেন।
দিনব্যাপি কৃষক সংলাপে নারী নেতৃত্বাধীন সুশীল সমাজ সংগঠনের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে নেটওয়ার্ক গঠন,সভা, পরামর্শ সভা এবং ডায়লোগ সেশন আয়োজন করা,স্থানীয় প্রশাসন, সুশীল সমাজের কর্মীদের ও কমিউনিটির সক্ষমতা বৃদ্ধি করা,কমিউনিটি পর্যায়ের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের ক্যাম্পেইন এর মূলক উপকরণ তৈরি,জেন্ডার সংবেদনশ প্রণোদনা প্রয়োশে মাধ্যমে কমিউনিটিকে সহায়তা করাসহ আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে জলবায়ুর সাথে খাপ খাইয়ে মৎস্য, কৃষি, প্রাণী সম্পদ বৃদ্ধির জন্য করণীয় বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলার ভক্ত রাসেল মোল্লা হত্যা মামলায় নুরাল পাগলার দরাবার থেকে জেনারেটর চুরির দায়ে মো. মিজানুর রহমান (২৪) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত মিজানুর রহমান রাজবাড়ীর লক্ষীকোল সোনাকান্দা এলাকার হারুনার রশিদ এর ছেলে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে জেলা গোয়েন্দা ডিবি ও গোয়ালন্দ থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে তাকে জেনারেটর সহ গ্রেফতার করা হয়।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) শরীফ আল রাজীব।
তিনি জানান, ভিডিও ফুটেজ দেখে ও পর্যালোচনা করে দেখা গেছে মিজানুর রহমান নুরাল পাগলার দরবার থেকে একটি জেনারেটর নিয়ে যাচ্ছে। ফুটেজের উপর ভিত্তি করে তাকে শনাক্ত করা হয়। পরে তাকে নুরাল পাগলার দরবারের ভক্ত রাসেলের পিতা আজাদ মোল্লার দায়ের করা মামলায় গুরুতর জখম, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, হত্যা, কবর থেকে লাশ উত্তোলন, পোড়ানো মামলায় গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত নজরুল ইসলামকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, দুটি মামলায় এ পর্যন্ত মোট ২৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৯ জন আসামিকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
মন্তব্য