বাড়তে থাকা পুঁজিবাজারে এবার ভাটার টান লেগেছে। ব্যাংকসহ বিমার মূল্য সংশোধন আর অতিমূল্যায়িত হওয়ার শেয়ারে পর্যবেক্ষণ সময় নিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা।
এমন অবস্থায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের বড় পতন হয়েছে। আগের দিনের তুলনায় কমেছে লেনদেনও।
ঈদরে ছুটির পর পুঁজিবাজারে পাঁচ কার্যদিবসে তিনদিনই কমেছে সূচক। বৃহস্পতিবার হাজার কোটি টাকা লেনদেন হলেও আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় ৪৪৭ কোটি টাকা কমেছে।
লেনদেন কমলেও টানা ১৪ দিনের মতো হাজার কোটি টাকা লেনদেন ধরে রেখেছে পুঁজিাবাজারে। এর আগের ১২ ডিসেম্বর থেকে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত টানা ২৪ দিন লেনদেন ছিল হাজার কোটি টাকা। এরপর ২৯ এপ্রিল থেকে বাড়তে থাকা লেনদেন এখনও হাজার কোটি টাকার ঘরে আছে।
এর মাঝে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার ঘোষিত লকডাউনে ৫ এপ্রিল পুঁজিবাজারে প্রথম কার্যদিবসে লেনদেন নেমে আসে ২৩৬ কোটি টাকায়। সেই লকডাউন এখনও অব্যাহত আছে, যা ২২ মে পর্যন্ত চলবে।
লকডাউনের এই সময়ে টানা নয় কার্যদিবস বেড়েছে সূচক। একই সঙ্গে গত এক যুগে ঈদের আগে ও পরে হাজার কোটি টাকা লেনদেনে পরিসংখ্যান ছিল না পুঁজিবাজারে, যা এবার দেখা গেছে।
গত দুই মাসের বেশি সময় ধরে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো তাদের শেয়ারধারীদের জন্য ২০২০ সালের লভ্যাংশ ঘোষণা করে আসছে। লভ্যাংশ ঘোষণার প্রথম দিকে ব্যাংকে খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীদের তেমন আগ্রহ ছিল না। এপ্রিলের শেষের দিকে এসে পর্যায়ক্রমে বাড়তে থাকে এ খাতের শেয়ারের দর।
পুঁজিবাজার ঈদের ছুটিতে যাওয়ার আগ থেকেই ব্যাংক খাতের উত্থান ঈদের ছুটির শেষে বুধবার পর্যন্ত তা অব্যাহত ছিল। সেদিন ব্যাংক খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে মাত্র একটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া বাকি সবগুলোর দর বেড়েছে। বৃহস্পতিবার উত্থানের এ ধারায় পতনের ধাক্কা লেগেছে।
এদিন ব্যাংক খাতে তালিকাভুক্ত ৩১টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ছয়টির, কমেছে ২৩টির; পাল্টায়নি দুটির।
সাত কার্যদিবস ধরে টানা বাড়তে থাকা এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ারের দরও কমেছে বৃহস্পতিবার।
বিমা খাতের সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ার দর কমলেও দিনের সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধি পাওয়া শীর্ষ তালিকায় ছিল এ খাতের দুটি কোম্পানি। এদিন তালিকাভুক্ত ৫০টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে নয়টির। কমেছে ৩৭টির; দর পাল্টায়নি চারটির।
বস্ত্র খাতের তালিকাভুক্ত ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ছয়টির। কমেছে ৪৫টির। দর পাল্টায়নি পাঁচটির।
বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক কমেছে ৬০ দশমিক ০৬ পয়েন্ট। শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস কমেছে ৯ দশমিক ৫৯ পয়েন্টে। বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক কমেছে ২২ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট।
কমেছে ব্যাংকের শেয়ার দর
গত সাত কার্যদিবস ধরে টানা বেড়েছে পুঁজিবাজারে সদ্য তালিকাভুক্ত এনআরবিসি ব্যাংক। এর মধ্যে চারদিন বড়েছে দিনের সর্বোচ্চ দরে। এ সময়ে ১২ টাকা দরের শেয়ার উঠে আসে ৩০ টাকায়। বুধবার পর্যন্ত ছিল এ উত্থান।
বৃহস্পতিবার এসে থামলে ব্যাংকটির শেয়ার দরের উত্থান। শেয়ার প্রতি দর কমেছে ১০ পয়সা বা ৩৬ শতাংশ। এদিন লেনদেন শেষে বেশির ভাগ ব্যাংকের শেয়ারের দর কমলেও দর বৃদ্ধি পাওয়া শীর্ষ তালিকায় ছিল এ খাতের বেশকিছু কোম্পানি।
এদিন এবি ব্যাংক ছিল দর বৃদ্ধি পাওয়া শীর্ষ তালিকার সাত নম্বরে। আর ওয়ান ব্যাংক ছিল ১২ নম্বরে। এবি ব্যাংকের শেয়ারে দর বেড়েছে ৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ। শেয়ার প্রতি দর ১১ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১২ টাকা।
ওয়ান ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে ৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ। শেয়ার প্রতি দর ১১ টাকা ৬০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১২ টাকা।
দর বেড়েছে স্যোসাল ইসলামী ব্যাংকের। এদিন ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি দর ১৩ টাকা ৬০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১৩ টাকা ৮০ পয়সা। এনসিসি ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে ১ দশমিক ১৮ শতাংশ। মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে দশমিক ৪৬ শতাংশ।
পতন হওয়া ব্যাংকগুলোর মধ্যেন সবচেয়ে বেশি দরপতন হয়েছে প্রাইম ব্যাংকের ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। আইএফআইসি ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
ইস্টার্ন ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ। প্রিমিয়ার ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ৩ দশমিক ১৫ শতাংশ।
এ ছাড়া সিটি ব্যাংক, শাহজালাল ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে বৃহস্পতিবার।
বাড়েনি বিমার আগ্রহ
গত দেড় মাস ধরে টানা বাড়তে থাকা তালিকাভুক্ত বিমা খাতের প্রতি এখন অনেকটাই বিমুখ বিনিয়োগকারীরা। তালিকায় থাকা ৫০টি কোম্পানির মধ্যে দুটি-তিনটি কোম্পানি দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে আসলে ঢালাওভাবে আর বাড়ছে না বিমার শেয়ার দর।
বৃহস্পতিবার দর বৃদ্ধি পাওয়া শীর্ষ কোম্পানির তালিকায় ছিল প্রভাতি ইন্স্যুরেন্স, যার শেয়ার প্রতি দর ১৬৭ টাকা ১০ পয়সা থেকে ৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১৮৩ দশমকি ৮০ পয়সা।
তৃতীয় অবস্থানে ছিল এশিয়া ইন্সুরেন্স, যার শেয়ার দর বেড়েছে ৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ। পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৩ দশমিক ৪১ শতাংশ।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় থাকলেও বৃহস্পতিবার বিমা খাতের সবচেয়ে বেশি দর পতন হওয়ার কোম্পানির তালিকাতেও ছিল এ খাতের কোম্পানি।
এদিন মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্স, যার শেয়ার প্রতি দর কমেছে ৮ দশমিক ০৩ শতাংশ। ইর্স্টান ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার প্রতি দর কমেছে ৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ। কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার প্রতি দর কমেছে ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ। সিটি ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার প্রতি দর কমেছে ৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
হঠাৎ বেড়ে মন্থর বস্ত্র খাত
ঈদের ছুটিতে যাওয়ার আগে হঠাৎ দুদিন বাড়তে থাকে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানির শেয়ার দর। তালিকাভুক্ত ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারের উত্থান ছিল তখন, যা ঈদের ছুটির পর প্রথম কার্যদিবসেও অব্যাহত ছিল।
কিন্ত চলতি সপ্তাহের ৫ কার্যদিবসের মধ্যে চার দিনই কমল এ খাতের শেয়ার দর। বৃহস্পতিবার এখাতের ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে দর কমেছে ৪৫টি। দর বেড়েছে ছয়টির।
দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির মধ্যে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে মতিন স্পিনিংয়ের ৭০ পয়সা। এ ছাড়া দর বেড়েছে এইচআর টেক্সটাইল, হাওয়েল টেক্সটাইল, রহিম টেক্সটাইল, আলহাজ্ব টেক্সটাইল ও স্কয়ার টেক্সটাইল।
বলা হয়েছিল বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলোর অর্থবছর শেষ হচ্ছে জুনে। সিংহভাগ কোম্পানি তাদের তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ করেছে। আগামী তিন চার মাসের ব্যবধানে কোম্পানিগুলো তাদের শেয়ারধারীদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করবে।
এমন অবস্থায় এ খাতের শেয়ারের দর বৃদ্ধি ছিল স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু হঠাৎ দর বৃদ্ধি পেয়ে আবার কমে আসায় বিপাকে পড়েছেন সে সময় এ খাতের বিনিয়োগকারীরা।
কী বলছেন বিশ্লেষকরা
ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক প্রধান গবেষণা কর্মকর্তা দেবব্রত কুমার সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ব্যাংক খাতের যে উত্থান ছিল সেটি হওয়া উচিত ছিল এবং যে পরিমাণ বেড়েছে তাতে ব্যাংকের শেয়ারের দর অতিমূল্যায়িত হয়েছে সেটি বলা যাবে না।
তবে দীর্ঘ সময় ধরে বাড়লে সেখান থেকে মুনাফা উত্তলনের প্রবণতা দেখা যায়। এছাড়া বিমা খাতের যেভাবে শেয়ারের দর বেড়েছে তাতে এ খাতের মূল্য সংশোধন জরুরি। যদিও এখন ঢালাওভাবে না বাড়লেও একটি দুটি কোম্পানির শেয়ার দর দিনের সর্বোচ্চ বাড়ছে।
তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের জন্য সবচেয়ে ভালো যে দিকটি দেখা যাচ্ছে, এখন ঢালাওভাবে সব কোম্পানির শেয়ারের পতন হচ্ছে না। একটি খাতের বা বেশি কিছু কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে। যা সরাসরি সূচককে প্রভাবিত করছে না। একই সঙ্গে হাজার কোটি টাকা লেনদেন পুঁজিবাজারের জন্য ভালো দিক।
সূচক ও লেনদেন
বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ৬০ দশমিক ০৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৮১৩ পয়েন্টে। শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ৯ দশমিক ৫৯ পয়েন্টে কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৭২ পয়েন্টে। বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ২২ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৭৮ পয়েন্টে।
মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৯৯ কোটি টাকা।
লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৬৮টির। কমেছে ২৩৪টির। দর পাল্টায়নি ৫৭টির।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই আগের দিনের তুলনায় ২১৪ দশমিক ৮০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৮৩৭ পয়েন্টে। লেনদেন হয়েছে ৯৯ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়নে বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকের মাসব্যাপী ‘উদ্যোক্তা উন্নয়ন কর্মসূচি’র সমাপনী ও সনদ প্রদান অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধায়নে এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে পরিচালিত অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মসূচি “স্কিলস ফর ইন্ডাস্ট্রি কম্পিটিটিভনেস অ্যান্ড ইনোভেশন প্রোগ্রাম (এসআইসিআইপি)” প্রকল্পের অংশ হিসেবে বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করে।
মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, রাজধানীর দিলকুশায় বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকের ট্রেনিং সেন্টারে আয়োজিত সমাপনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিবিও কে. এম. আওলাদ হোসেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমইএসপিডি এর পরিচালক নওশাদ মোস্তফা। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এসএমইএসপিডি এর অতিরিক্ত পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম, এসএমইএসপিডি এর যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ ওয়াসিম, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান রফিক আহমেদ ও এসএমই বিভাগের প্রধান জ্যোতির্ময় চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ২৫ জন উদ্যোক্তার মাঝে সনদপত্র ও ব্যাংকের পক্ষ থেকে উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়। প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্য থেকে সেরা তিনজন উদ্যোক্তাকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
শক্ত গড়নের পাঁজর আর দীর্ঘদেহী গ্রে-হাউন্ড কুকুর জেলার সরাইল উপজেলার ঐতিহ্যবাহী একটি প্রাণী। সাহস আর রণকৌশলে অন্যসব কুকুরের চেয়ে আলাদা। দৌড়ের গতিও অন্যসব কুকুরের চেয়ে বেশি। তীক্ষ্ণ দৃষ্টি আর শিকারে পারদর্শিতার কারণে গ্রে-হাউন্ড কুকুর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ডগ স্কোয়াডেও ব্যবহৃত হয়েছে বলে জানা যায়।
ঐতিহ্যবাহী এই গ্রে-হাউন্ড কুকুর এখন অস্তিত্ব সংকটে। পুরো সরাইল জুড়ে হাতেগোনা কয়েকটি বাড়িতে দেখা মেলে এই কুকুরের। ঐতিহ্যবাহী ও দামি বিরল প্রজাতির এই কুকুরকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে গ্রে-হাউন্ড প্রজনন কেন্দ্র গড়ে তোলার কথা ভাবছে প্রশাসন। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোশারফ হোসাইন বাসসের সাথে আলাপকালে একথা জানান।
তিনি বলেন, বাণিজ্যিকভাবে গ্রে-হাউন্ড কুকুর উৎপাদন ও বাজারজাত করার বিষয়টি নিয়ে আমরা প্রাথমিক আলোচনা ও সম্ভাব্যতা যাচাই করেছি। গ্রে-হাউন্ড কুকুরের জাত টিকিয়ে রাখার জন্য একটি প্রজনন কেন্দ্র করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এই বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সম্মলিতভাবে কাজ করছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঐতিহ্য ধরে রাখতে একটি পরিবার এখনও বংশ পরম্পরায় গ্রে-হাউন্ড কুকুর পালন করছে। সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের চৌরাগুদা গ্রামের দুই ভাই তপন লাল রবিদাস ও যতন লাল রবিদাস বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে গ্রে-হাউন্ড কুকুর পালন করছেন। তবে ব্যয়বহুল খাদ্যাভ্যাসের কারণে গ্রে-হাউন্ড কুকুর পালন তাদের জন্য কষ্টসাধ্য।
জনশ্রুতি আছে, প্রায় দুইশ বছর আগে সরাইলের জমিদার দেওয়ান মোস্তফা আলী হাতি নিয়ে কলকাতা যাচ্ছিলেন। পথে এক ইংরেজ সাহেবের কাছে একটি সুন্দর কুকুর দেখতে পান। তিনি কুকুরটি কেনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে তিনি একটি হাতির বিনিময়ে ইংরেজ সাহেবের কাছ থেকে ঐ স্ত্রী কুকুরটি নিয়ে আসেন।
এলাকার প্রবীণদের সাথে কথা বলে জানা যায়, একসময় সরাইল উপজেলার প্রতিটি বাড়িতে দেখা মিলত গ্রে-হাউন্ড কুকুরের। মূলত বাড়ির নিরাপত্তা এবং শেয়াল তাড়ানোর জন্য গ্রে-হাউন্ড কুকুর পালনে উৎসাহী হন সরাইলের বাসিন্দারা। ধীরে ধীরে এই কুকুর বাণিজ্যিকভাবেও লালন-পালন শুরু করেন অনেকে। তবে অন্যসব কুকুরের তুলনায় গ্রে-হাউন্ড পালন কিছুটা ব্যয় সাপেক্ষ। এর ফলে অনেকেই গ্রে-হাউন্ড কুকুর পালন বন্ধ করে দেন। এতেই কমতে থাকে গ্রে-হাউন্ড কুকুরের সংখ্যা। এখন হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার শখের বশে গ্রে-হাউন্ড কুকুর পালন করছে। তবে ঐতিহ্য ধরে রাখার পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে মাত্র তপন রবিদাস ও যতন রবিদাস গ্রে-হাউন্ড কুকুর পালন করছেন।
কুকুর ছানাগুলো বিক্রি করা হয় স্ট্যাম্প করে। তবে পেশায় মুচি তপন ও যতনের জন্য গ্রে-হাউন্ড পালন করা এখন কষ্টকর হয়ে উঠেছে। স্বল্প আয়ে সংসার চালাতেই হিমশিম খেতে হয় তাদের। এর ফলে অর্থের অভাবে ঠিকভাবে গ্রে-হাউন্ড কুকুরের পরিচর্যা করতে পারছেন না দুই ভাই।
তপন লাল রবিদাস বলেন, বড় প্রত্যেকটি কুকুরের জন্য প্রতিদিন অন্তত ৩০০ টাকার খাবারের প্রয়োজন হয়। ভাত, মাছ, মাংস, ডিম ও দুধ ছাড়া অন্য কোনো খাবার খায় না গ্রে-হাউন্ড কুকুর। কিন্তু সবসময় আমরা এই খাবার খাওয়াতে পারি না। আর্থিক টানাপোড়নের সংসারে আমাদের নিজেদের চলতেই কষ্ট হয়। এর মধ্যে কুকুরের খাবারের জন্য বাড়তি টাকা খরচ করা আমাদের জন্য কষ্টকর। শুধুমাত্র পূর্ব পুরুষরা কুকুর পালন করতেন বলেই আমরা এখনও পালন করছি।
প্রাণিসম্পদ বিশেষজ্ঞদের মতে, ঐতিহ্যবাহী এই কুকুরের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। এই কুকুর কেবল সরাইলের ঐতিহ্যই নয়, এটি নিরাপত্তার কাজেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এর সঠিক প্রজনন, রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজেও এদের ব্যবহার করা সম্ভব।
তাদের মতে, সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ ও পৃষ্ঠপোষকতায় ঐতিহ্যবাহী সরাইলের বিরল প্রজাতির মূল্যবান গ্রে-হাউন্ড কুকুরকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করা প্রয়োজন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৩ সালে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় সরাইল উপজেলা সদরে একটি গ্রে-হাউন্ড কুকুর সংরক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছিল।
তবে উপযুক্ত চিকিৎসা, সুষ্ঠু পরিচালনা ও আর্থিক সংকটের কারণে কয়েক বছর পরই কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যায়। উপজেলা সদরের বড়দেওয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা শাহজাহান ঠাকুর ২০০১ সালে সরাইলে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কুকুর প্রজননের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত তার উদ্যোগটিও টেকেনি।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোশারফ হোসাইন বলেন, সরাইলের ঐতিহ্যের কথা বলতে গেলে বিখ্যাত গ্রে-হাউন্ড কুকুরকে বাদ দেওয়া যাবে না। দেশ বিদেশে এই কুকুর সরাইলের পরিচিতি বহন করে। এছাড়া গ্রে-হাউন্ড কুকুর প্রভুভক্ত। পাশাপাশি গ্রে-হাউন্ড কুকুর বাড়িঘর পাহারা দেয়। গোয়েন্দা তৎপরতার মত গুণও রয়েছে তাদের। সূত্র: বাসস
প্রাইম ব্যাংক পিএলসি গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের সহযোগিতায় সম্প্রতি আয়োজন করেছে “ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন: এঙ্গেজিং অ্যান্ড ইনস্পায়ারিং ইয়ুথ ইন ব্যাংকিং” শীর্ষক এক সেমিনার। অনুষ্ঠানটি ব্যাংকের বিশেষ উদ্যোগ ‘প্রাইম একাডেমিয়া’ প্ল্যাটফর্মের আওতায় অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গ্রিন ইউনিভার্সিটির মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন। তিনি বলেন, “টেকসই উন্নয়ন ও যুবশক্তির ক্ষমতায়নে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি অপরিহার্য।” এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. খাজা ইফতেখার উদ্দিন আহমেদ, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. ফাইজুর রহমান, ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তারেক আজিজ, এবং রেজিস্ট্রার ক্যাপ্টেন (নৌ.) এস. এম. সালাউদ্দিন (এনজিপি, পিএসসি) সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য সিনিয়র শিক্ষকবৃন্দ।
প্রাইম ব্যাংকের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন শায়লা আবেদিন, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব লায়াবিলিটি, যিনি তরুণদের জন্য ব্যাংকের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরেন।
এছাড়া এম এম মাহবুব হাসান, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ও স্কুল ব্যাংকিং, ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব গঠনে আর্থিক সচেতনতার ভূমিকা নিয়ে বক্তব্য রাখেন।
সেমিনারের শেষে প্রাইম ব্যাংক ও গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির মাধ্যমে শিল্প ও শিক্ষাঙ্গনের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা, শিক্ষার্থী-কেন্দ্রিক কর্মসূচি এবং যৌথ উদ্যোগ আরও জোরদার হবে।
প্রাইম একাডেমিয়া প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে প্রাইম ব্যাংক দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে একীভূত আর্থিক সমাধান প্রদান করছে—যার আওতায় রয়েছে ডিজিটাল ফি সংগ্রহ, পেরোল সেবা, স্কুল ব্যাংকিং এবং শিক্ষার্থী উপযোগী একাউন্ট সুবিধা—সবকিছু এক প্ল্যাটফর্মে সংযুক্ত।
শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের প্রাণবন্ত অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়। এতে তরুণরা অনুপ্রাণিত হয় আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও জাতীয় উন্নয়নের সঙ্গে নিজেদের স্বপ্নকে যুক্ত করতে উদ্বুদ্ধ হয়।
কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি.’র পরিচালনা পর্ষদের ৬৯তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২২ অক্টোবর, ২০২৫) পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ ও কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি’র চেয়ারম্যান জনাব বাহারুল আলম বিপিএম। উক্ত সভায় কয়েকটি বিনিয়োগ প্রস্তাব ও ব্যাংকের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
জনাব এ কে এম শহিদুর রহমান, বিপিএম, পিপিএম, এনডিসি, মহাপরিচালক, র্যাব; জনাব এ. কে. এম. আওলাদ হোসেন, অ্যাডিশনাল আইজি (অ্যাডমিন), বাংলাদেশ পুলিশ; জনাব মোঃ আকরাম হোসেন, বিপিএম (সেবা), অ্যাডিশনাল আইজি (ফিন্যান্স), বাংলাদেশ পুলিশ; জনাব আবু নাছের মোহাম্মদ খালেদ, বিপিএম, অ্যাডিশনাল আইজি (এইচআরএম), বাংলাদেশ পুলিশ; জনাব মোঃ ছিবগাত উল্লাহ, বিপিএম (সেবা), পিপিএম, অ্যাডিশনাল আইজি (সিআইডি), বাংলাদেশ পুলিশ; জনাব সরদার নূরুল আমিন, বিপিএম (সেবা), অ্যাডিশনাল আইজি (ডেভেলপমেন্ট), বাংলাদেশ পুলিশ; জনাব কাজী মো. ফজলুল করিম, বিপিএম (সেবা), অ্যাডিশনাল আইজি, বাংলাদেশ পুলিশ; জনাব কামরুল আহসান, ডিআইজি (কনফিডেন্সিয়াল), বাংলাদেশ পুলিশ; জনাব মুনতাসিরুল ইসলাম, পিপিএম, অ্যাডিশনাল ডিআইজি (হাইওয়ে পুলিশ), বাংলাদেশ পুলিশ; জনাব আহম্মদ মুঈদ, বিপিএম (সেবা), অ্যাডিশনাল ডিআইজি, বাংলাদেশ পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ পুলিশ; জনাব কামরুল হাসান তালুকদার, ইন্সপেক্টর, বাংলাদেশ পুলিশ; ড. মোঃ মোর্শেদ হাসান খান, স্বতন্ত্র পরিচালক; জনাব সৈয়দ রফিকুল হক, স্বতন্ত্র পরিচালক; জনাব মোহাম্মদ তফাজ্জুল হোসেন, এফসিএ, স্বতন্ত্র পরিচালক; জনাব কিমিয়া সাআদত, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব), কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি. এবং কোম্পানি সচিব জনাব সাইফুল আলম এফসিএস সভায় উপস্থিত ছিলেন।
আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ের সম্পৃক্ততা আরও জোরদার করার লক্ষ্যে ঢাকা অঞ্চলের জন্য এজেন্ট মিট ২০২৫ আয়োজন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
১০ অক্টোবর ২০২৫ কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত এই এজেন্ট মিটে অংশ নেন ব্র্যাক ব্যাংকের ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর অঞ্চলের মোট ১১৬টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটের এজেন্ট প্রতিনিধিরা। আর্থিক অন্তর্ভুক্তি প্রসারের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এই আয়োজনটি ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে এজেন্টদের সরাসরি মতবিনিময়ের এক অনন্য প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করেছে।
আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও তারেক রেফাত উল্লাহ খান, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড হেড অব এসএমই ব্যাংকিং সৈয়দ আব্দুল মোমেন, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিএফও এম. মাসুদ রানা এফসিএ, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড চিফ অপারেটিং অফিসার মো. সাব্বির হোসেন, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড হেড অব অল্টারনেট ব্যাংকিং চ্যানেলস নাজমুল রাহিম এবং হেড অব এজেন্ট ব্যাংকিং মো. নাজমুল হাসান। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতি এই আয়োজনকে তাৎপর্যপূর্ণ ও অনুপ্রেরণামূলক করে তুলেছে।
দিনব্যাপী এই আয়োজনে মতবিনিময়, এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রমের হালনাগাদ তথ্য, ভবিষ্যৎ লক্ষ্য নির্ধারণ এবং মাঠ পর্যায়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় করণীয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। ব্যাংকটির কর্মকর্তারা এজেন্টদের বিভিন্ন বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন, যাতে তাঁরা দেশের অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য আর্থিক সেবার পরিসর আরও বিস্তৃত করতে উদ্বুদ্ধ হন।
অনুষ্ঠানে প্রান্তিক পর্যায়ে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দিতে অসামান্য অবদান রাখা সেরা পারফর্মিং এজেন্টদের ‘ডায়মন্ড’ ক্যাটাগরিতে স্বীকৃতি ও পুরস্কার প্রদান করা হয়। এই স্বীকৃতি শুধু তাঁদের ব্যক্তিগত অর্জনই নয়, বরং ব্র্যাক ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সক্ষমতার প্রতিফলন।
এজেন্টদের সক্রিয় অংশগ্রহণ, আলোচনা ও আইডিয়া শেয়ারিং অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত ও অর্থবহ করে তোলে। এটি এজেন্ট ব্যাংকিং সেবার নেটওয়ার্ককে আরও শক্তিশালী করার ব্যাপারে ব্যাংকটির প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
ব্যাংকের প্রযুক্তি সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্ক গ্রাহকদের জন্য নিরাপদ, সুরক্ষিত ও সুবিধাজনক ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করে যাচ্ছে। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহকরা খুব সহজেই অ্যাকাউন্ট খোলা, টাকা জমা দেওয়া, লোন নেওয়া ও রেমিটেন্সের টাকা উত্তোলন করতে পারছেন।
ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি.:
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের অর্থায়নে অগ্রাধিকার দেয়ার ভিশন নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি. ২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত দেশের অন্যতম দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী একটি ব্যাংক। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ‘BRACBANK’ প্রতীকে ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেন হয়। ২৯৮টি শাখা ও উপশাখা, ৩৩০টি এটিএম, ৪৪৬টি এসএমই ইউনিট অফিস, ১,১২১টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং দশ হাজারেরও বেশি মানুষের বিশাল কর্মীবাহিনী নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক কর্পোরেট ও রিটেইল সেগমেন্টেও সার্ভিস দিয়ে আসছে। ব্যাংকটি দৃঢ় ও শক্তিশালী আর্থিক পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে এখন সকল প্রধান প্রধান মাপকাঠিতেই ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষে অবস্থান করছে। বিশ লাখেরও বেশি গ্রাহক নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বিগত ২৪ বছরেই দেশের সবচেয়ে বৃহৎ জামানতবিহীন এসএমই অর্থায়নকারী ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও নিয়মানুবর্তিতায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
দেশের ২৩টি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ৪২ জন মেধাবী শিক্ষার্থীর অ্যাকাডেমিক সাফল্য উদযাপন করেছে ব্রিটিশ কাউন্সিল। এ উপলক্ষে গতকাল ২১ অক্টোবর র্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন ঢাকায় আয়োজিত হয় ‘ব্রিটিশ কাউন্সিল স্কলার্স’ অ্যাওয়ার্ড ২০২৫।’
২০২৫ সালের মে/জুন সেশনের কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল এবং পিয়ারসন এডএক্সেল-এর (ও লেভেল/আইজিসিএসই/ইন্টারন্যাশনাল জিসিএসই) পরীক্ষায় নয়টি বা তার বেশি বিষয়ে সর্বোচ্চ গ্রেড অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের এ সম্মানজনক পুরস্কার প্রদান করা করা হয়। যুক্তরাজ্যের এক্সাম বোর্ডগুলোর পক্ষে ব্রিটিশ কাউন্সিল এই পরীক্ষা পরিচালনা করে। ব্রিটিশ কাউন্সিলের পুরস্কারপ্রাপ্ত মেধাবী শিক্ষার্থীদের কঠোর পরিশ্রম, সৃজনশীলতা ও শেখার আগ্রহের প্রতিফলন, যারা দেশের ভবিষ্যৎ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ব্রিটিশ কাউন্সিলের কান্ট্রি ডিরেক্টর বাংলাদেশ, স্টিফেন ফোর্বস বলেন,
“আজ আমরা শিক্ষার্থীদের নিষ্ঠা ও সাফল্য উদযাপন করছি; একইসাথে শিক্ষার্থীদের সাফল্যে অভিভাবক এবং শিক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। ব্রিটিশ কাউন্সিল শিক্ষা ও কর্মজীবন, উভয় ক্ষেত্রেই তরুণদের পূর্ণ সম্ভাবনা বিকাশে ভূমিকা রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যুক্তরাজ্যের এক্সাম বোর্ড পরীক্ষার ফলাফল তাদের ভবিষ্যতের যাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমরা আশাবাদী। যারা এবার কাঙ্ক্ষিত ফল অর্জন করতে পারেননি, তাদের প্রচেষ্টাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ; সামনে নিশ্চয়ই তারা প্রচেষ্টার সুফল পাবেন। সকল শিক্ষার্থীকে স্বপ্নপূরণের পথে অভিনন্দন ও শুভকামনা জানাই।”
অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন স্কুলের দুই শ’রও বেশি শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিত্ব, শিক্ষক, অভিভাবক ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের পার্টনার স্কুলের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য রাখেন বিশেষ অতিথি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সচিব অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম।
অনুষ্ঠানে একটি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়, যেখানে ব্রিটিশ কাউন্সিলের বৈশ্বিক শিক্ষা কার্যক্রমের প্রভাব এবং পূর্বে পুরস্কারপ্রাপ্তদের আন্তর্জাতিক সাফল্য তুলে ধরা হয়। এরপর, কীভাবে বাংলাদেশের আরও বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনে এগিয়ে যেতে পারেন এ নিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের চলমান বিভিন্ন উদ্যোগ সম্পর্কে ধারণা দেন সংস্থাটির এক্সামস ডিরেক্টর বাংলাদেশ ম্যাক্সিম রাইমান।
আয়োজনের মূল আকর্ষণ ছিল পুরস্কার প্রদান পর্ব। ৪২ জন শিক্ষার্থীকে তাদের অনন্য ফলাফলের স্বীকৃতিস্বরূপ ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে পুরস্কারপ্রাপ্ত দু’জন শিক্ষার্থী তাদের অভিজ্ঞতা, চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ লক্ষ্য নিয়ে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য রাখেন। ব্রিটিশ কাউন্সিলের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর তাহনি ইয়াসমিনের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপনী ঘোষণা করা হয়। শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের অংশগ্রহণে এক প্রাণবন্ত ও উৎসবমুখর পরিবেশে আয়োজনটি শেষ হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন এক্সাম বোর্ডের প্রতিনিধিবৃন্দ। অনুষ্ঠানের অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে ছিলেন কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্টের কান্ট্রি লিড সারওয়াত রেজা; পিয়ারসন এডএক্সেল বাংলাদেশ ও নেপালের রিজিওনাল ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল মামুন বিন কুদ্দুস; পিয়ারসন এডএক্সেল বাংলাদেশের রিজিওনাল ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার জান্নাতুল ফেরদৌস সিগমা; এবং অক্সফোর্ড একিউএ’র কান্ট্রি ডিরেক্টর বাংলাদেশ শাহিন রেজা।
বাংলাদেশের তরুণদের আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা, সৃজনশীলতা ও ব্যক্তিগত বিকাশের মাধ্যমে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি নিয়ে কাজ করছে ব্রিটিশ কাউন্সিল। ‘ব্রিটিশ কাউন্সিল স্কলার্স’ অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ ব্রিটিশ কাউন্সিলের সে অঙ্গীকারেরই প্রতিফলন। ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সর্বাঙ্গীণ শিক্ষাই আত্মবিশ্বাসী ও নেতৃত্বগুণসম্পন্ন নাগরিক তৈরি করতে পারে বলে বিশ্বাস করে ব্রিটিশ কাউন্সিল।
মন্তব্য