পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানি খুলনা পাওয়ার লিমিটেড বা কেপিসিএলের মেয়াদ শেষ হতে চলা দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রকে আরও কয়েক বছর চালু রাখার সুযোগ দেয়া হতে পারে।
তবে বাড়তি মেয়াদে তারা কোনো ক্যাপাসিটি চার্জ, অর্থাৎ বিদ্যুৎ কেনা না হলে সরকার কেন্দ্র বসিয়ে রেখে যে অর্থ দেয়, সেটি দেবে না।
কোম্পানিটির বিদ্যুৎকেন্দ্র ছিল তিনটি। এর মধ্যে মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ২০১৮ সাল থেকে কেন্দ্র আছে দুটি।
খুলনায় স্থাপিত ৪০ ও ১১৫ মেগাওয়াটের কেন্দ্র দুটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা যথাক্রমে ৩১ ও ২৮ মে।
এই দুটি কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেলে কোম্পানির থাকবে কেবল একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎকেন্দ্রের অংশীদারত্ব।
তবে মেয়াদ শেষ হতে চলা কেন্দ্র দুটির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেছে কোম্পানিটি। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ থাকলেও তবে এই বিষয়ে কোনো পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তথ্য দেয়া হচ্ছে না।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, ‘কেপিসিএলের বিদ্যুৎকেন্দ্রকে “নো ইলেকট্রিসিটি নো পে" ভিত্তিতে রাখার অনুমোদন দেয়া হতে পারে।'
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, রামপাল বা রূপসা বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু না হওয়া পর্যন্ত খুলনা এলাকায় কিছু বিদ্যুৎ সংকট আছে। এই অবস্থায় দুই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রয়োজন হলে সরকার বিদ্যুৎ কিনবে।
খুলনার রূপসায় ৮০০ মেগাওয়াটের কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। খুলনার খালিশপুরে বন্ধ হয়ে যাওয়া নিউজপ্রিন্ট কারখানার জমিতে এটি স্থাপন হবে।
এ প্রকল্পে প্রাথমিক জ্বালানি হিসেবে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) ব্যবহার হবে। বিকল্প জ্বালানি হিসেবে থাকছে ডিজেল (এইচএসডি)।
২০১৮ সালের জুনে প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদনের সময় ২০২২ সালের জুনের মধ্যে কেন্দ্রটি নির্মাণের পরিকল্পনার কথা বলা হয়।
তবে এখন পর্যন্ত এর কাজ শেষ হয়েছে ৩০ শতাংশ। ফলে সময়মতো কাজ শেষ না হওয়া নিয়ে শঙ্কা আছে।
অন্যদিকে বাগেরহাটের রামপালে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট আগামী আগস্টে আর দ্বিতীয় ইউনিট আরও ছয় মাস পর আসার কথা।
এই পরিস্থিতিতে কোম্পানি নিয়ে অনিশ্চতয়ার মধ্যে শেয়ারধারীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ।
মার্চের শেষে বিষয়টি নিয়ে কেপিসিএলের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। এই বৈঠক নিয়েও আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য আসেনি।
পরে নিউজবাংলার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে বিএসইসির একজন কমিশনার জানান, তারা বিদ্যুৎ বিভাগকে কেপিসিএলের কেন্দ্র দুটির মেয়াদ বাড়ানোর সুপারিশ করেছেন। তবে কেপিসিএল কিছু জানায়নি।
যোগাযোগ করা হলে বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে বিএসইসির পক্ষ থেকেও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে বলা হয়েছিল। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে অবগত করা হয়েছিল। কিন্তু এখনও এ বিষয়ে বিএসইসির কাছে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি।’
শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সরকার কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই। নতুন করে কুইক রেন্টাল অনুমোদন দেয়ার পক্ষে আমিও না। তবে যেসব কুইক রেন্টাল অনুমোদন দেয়া হয়েছে তারা আরও ২০ বছর পরিচালনা করতে পারবে। সে সুযোগ তাদের দেয়া উচিত।’
এ বিষয়ে জানতে কেপিসিএলের কোম্পানি সচিব আরিফুল ইসলাম চৌধুরীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল ধরেননি।
পরে কেপিসিএলের প্রধান হিসাব কর্মকর্তা সোহরাব আলী খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা আবেদন করেছি এবং চেষ্টা তদবিরও চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করি নবায়ন হবে।’
‘নো ইলেকট্রিসিটি, নো পে’ ভিত্তিতে অনুমোদনের বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের ওই কর্মকর্তা যা বলেছেন, সে বিষয়ে জানতে চাইলে সোহরাব খান বলেন, ‘না, এ বিষয়ে আমরা কিছু জানি না।’
লেনদেনে গতি
গত ৭ এপ্রিল বিএসইসি কেপিসিএলের ফ্লোর প্রাইস বা শেয়ারদরের প্রান্তসীমা বাতিল করে।
এর আগে কোম্পানি নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে এর লেনদেন হতো না বললেই চলে। তবে ফ্লোর প্রাইস বাতিল হওয়ার পর টানা ১৪ কার্যদিবস দাম কমলেও লেনদেন গতি পায়।
তবে ১৫তম দিনে ২৯ এপ্রিল পাল্টে যায় চিত্র। সেদিন কেবল ১০ শতাংশ দাম বাড়েনি, হাতবদলও হয় ৩৯ লাখ ১৪ হাজার ২৭৫টি শেয়ার।
পরের দিনও দাম বাড়ে প্রায় ১০ শতাংশ। দাম হয় ৩৮ টাকা ৫০ পয়সা। সেদিনও হাতবদল হয় ১৭ লাখ ৩১ হাজার ২৯৪টি শেয়ার।
এরপর আবার টানা পাঁচ কার্যদিবস দাম কমে ৩৫ টাকায় নেমে আসে। আর সেদিন লেনদেন হয় ৩৪ লাখ ৬০ হাজার ২০২টি শেয়ার।
এরপর আরও তিন কার্যদিবস বেড়ে দাম দাঁড়ায় ৩৯ টাকা ৯০ পয়সা।
এরপর দুই দিন কমলেও একদিনে প্রায় ১০ শতাংশ বেড়ে দাম দাঁড়িয়েছে টাকা ৩০ পয়সা।
লেনদেন হয়েছে ৩৬ রাখ ১০ হাজার ৩০৩টি।
আর্থিক অবস্থা
জুন অর্থবছরের কোম্পানিটি ইতোমধ্যে তাদের দ্বিতীয় প্রান্তিক প্রকাশ করেছে। এই ঘোষণা অনুযায়ী অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৬৬ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে আয় ছিল ৮৫ পয়সা। ফলে এই সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস কমেছে ১৯ পয়সা বা ২৮ শতাংশ।
আর অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে আয় দাঁড়িয়েছে এক টাকা ৫৭ পয়সা।
কেপিসিএলের কেন্দ্রগুলোর কী অবস্থা
কোম্পানিটির তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্র ছিল। এর মধ্যে একটির মেয়াদ ২০১৮ সালে শেষ হওয়ায় আর নবায়ন করা হয়নি।
বাকি দুটির মধ্যে খানজাহান আলী পাওয়ার লিমিটেডের ৪০ মেগাওয়াট কেন্দ্রের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ৩১ মে। আর খুলনা পাওয়ার কোম্পানি ইউনিট টু ১১৫ মেগাওয়াট কেন্দ্রের মেয়াদ শেষ হবে ২৮ মে।
কোম্পানিটির তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্র ছিল। এর মধ্যে একটির মেয়াদ ২০১৮ সালে শেষ হওয়ায় আর নবায়ন করা হয়নি।
বাকি দুটির মধ্যে খানজাহান আলী পাওয়ার লিমিটেডের ৪০ মেগাওয়াট কেন্দ্রের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ৩১ মে। আর খুলনা পাওয়ার কোম্পানি ইউনিট টু ১১৫ মেগাওয়াট কেন্দ্রের মেয়াদ শেষ হবে ২৮ মে।
কোনো কোম্পানি অবসায়ন হলে সেই কোম্পানির শেয়ার বাই ব্যাক করার কোনো আইন বাংলাদেশে নেই। এই অবস্থায় কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে উৎকণ্ঠিত অনেক মানুষ।
মূল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে গেলে কেপিসিএলের হাতে থাকবে কেবল সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পায়রা পাওয়ার প্লান্ট। গত ১৮ জানুয়ারি থেকে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করেছে এটি।
পটুয়াখালী জেলার খলিসাখালী এলাকায় ১৫ বছর মেয়াদি ১৫০ মেঘাওয়াটের এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৩৫ শতাংশের মালিকানা রয়েছে খুলনা পাওয়ারের।
লভ্যাংশের ইতিহাস
তালিকাভুক্তির বছরে ২০০৯ থেকে ২০১০ সালের জুন মাস পর্যন্ত সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ১৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে বিতরণ করে।
এরপর ২০১০ সালের জন্য ২০ শতাংশ, ২০১১ সালের জন্য ২৫ শতাংশ, ২০১২ সালের জন্য ১২.৫ শতাংশ, ২০১৩ সালের জন্য ৫ শতাংশ এবং ২০১৮ সালের জন্য আবার ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে বিতরণ করে।
১৯৪ টাকা ভিত্তি ধরে ১০ বছরের বোনাস শেয়ার হিসাব করলে দাম দাঁড়ায় ৮৬ টাকা ৫৫ পয়সা।
পাঁচ বছর ধরে নগদ লভ্যাংশের দিকে জোর দেন কোম্পানির উদ্যোক্তারা। ২০১৬ সালে ৭৫ শতাংশ (শেয়ারপ্রতি সাড়ে সাত টাকা), ২০১৭ সালে ৫৫ শতাংশ, ২০১৮ সালে ৩০ শতাংশ, ২০১৯ সালে ৪০ শতাংশ এবং ২০২০ সাল ৩৪ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়।
শেয়ারের মালিকানার তথ্য
২০১০ সালে চাঙা পুঁজিবাজারে সরাসরি তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি হয় গড়ে ১৯৪ টাকা করে। ছয় বছর বোনাস শেয়ার দিয়ে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩৯৭ কোটি ৪১ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ১২ দশমিক ২৭ শতাংশ শেয়ার ছিল প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে। আর ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগকারীদের কাছে ছিল ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ শেয়ার।
চলতি বছরের জানুয়ারি ৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ বা ১ কোটি ৪৬ লাখ ৬৪ হাজার শেয়ার বিক্রি করেছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগাকরীরা। যার পুরোটা কিনেছে ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগকারীরা।
তবে গত এক মাসে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করেছেন বেশি, আর কিনেছেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা।
৩০ এপ্রিলের হিসাব অনুযায়ী এখন কোম্পানির ৯.২ শতাংশ মালিকানা আছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ২০.৫১ শতাংশ।
এক মাসে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বিক্রি করেছেন ০.৮৪ শতাংশ, যার পুরোটাই কিনেছেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা।
ফলে বর্তমানে ৮ কোটি ১৫ লাখ ৯ হাজার ৪৪৩টি শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। যদি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ আর নবায়ন না হয়, তাহলে এরা সবাই অনিশ্চয়তায় পড়বেন।
আরও পড়ুন:গাজাগামী ত্রাণবহর ফ্লোটিলায় অংশ নেওয়ায় বাংলাদেশের খ্যাতিমান আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলমের সাহসী পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
শনিবার এক ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ‘গাজাগামী ফ্লোটিলায় শহিদুল আলমের পদক্ষেপ কেবল সংহতি প্রকাশ নয়, এটি বিবেকের গর্জন। বাংলাদেশের পতাকা বহন করে তিনি বিশ্বকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে এদেশের মানুষ কখনও নিপীড়ন ও অন্যায়ের কাছে মাথা নত করে না।’
তিনি আরও লিখেছেন, বিএনপি সবসময় শহিদুল আলম ও ফিলিস্তিনের জনগণের পাশে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
দেশের প্রবীণ এই আলোকচিত্রীকে বহনকারী জাহাজটি ইসরাইলি বাহিনী আটকে দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই ফেসবুকে এই পোস্ট দেন তারেক রহমান। সেখানে তিনি শহিদুল আলমের প্রতি বিএনপির সমর্থন জানান।
গাজায় তথ্য ও সংবাদ অবরোধ ভাঙার উদ্যোগে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে শহিদুল আলম ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি)’র মিডিয়া ফ্লোটিলায় যোগ দিয়েছেন।
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে সাগর নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর সোর্স পরিচয়ে বেপরোয়া চাঁদা দাবির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাগর রামগতি উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সিরাজ উদ্দিনের ছেলে ও রামগতি বাজারের ইলেকট্রনিক ব্যাবসায়ী।
ভুক্তভোগী বড়খেরী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি মোঃ মেহেরাজ অভিযোগ করে বলেন, গত ৫ আগস্টের পর থেকে সাগর নিজেকে কখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কখনো সেনাবাহিনীর সোর্স পরিচয় দিয়ে এলাকাতে বিভিন্নভাবে চাঁদা দাবি করে যাচ্ছে। তিনি নিজেই একজন ভুক্তভোগী। সাধারণ মানুষকে নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। তার ভয়ে রামগতি মাছঘাটের সাধারণ মাছ ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সবসময় আতঙ্ক থাকেন।
আরেক ভুক্তভোগী আব্দুর রহিম মাছ ব্যাপারী বলেন, সাগরের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ মানুষ। সাগর কিছুদিন আগে তার কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেন। তার চাহিদা মাফিক চাঁদা না দেওয়ায় তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে হেনস্তা করেন। বিশেষ করে মাছঘাটের ব্যবসায়ীরা তার যন্ত্রণায় তটস্থ। সে নিজেকে সেনাবাহিনীর সোর্স পরিচয় দিয়ে বেড়ায়। মুলত ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করাই সাগরের মুল উদ্দেশ্য।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনজন ব্যক্তি এ প্রতিবেদককে জানান, ৫ আগস্টের পর বড়খেরী ও চরগাজী ইউনিয়নের রামগতি বাজার, রামগতি মাছঘাট এলাকার সাধারণ জেলে ও মাছ ব্যবসায়ী এবং রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স পরিচয় দিয়ে অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত সাগর। সাগরের ভয়ভীতি প্রদর্শনের অনেকটা অসহায় তারা। এমন অবস্থায় সাগরের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন সাধারণ মানুষ।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সাগর বলেন, অভিযোগকারী কাউকে আমি চিনিনা। তারা কেন এসব মিথ্যা অভিযোগ করলো? তাছাড়া আমি তো এলাকায় থাকিনা। এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করতে এ প্রতিবেদককে বিশেষ অনুরোধ জানান তিনি।
রামগতি সেনাক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, সেনাবাহিনীর কোন সোর্স নেই। এগুলো এক প্রকার প্রতারণা। ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ পেলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রামগতি থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ কবির হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স পরিচয় দিয়ে এই ধরনের অপরাধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের সীমান্তবর্তী তেঁতুলিয়া প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে ঘেরা এ উপজেলা এখন দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। আকাশ পরিষ্কার থাকলেই এখান থেকেই দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘার অপূর্ব সৌন্দর্য। সমতলের চা বাগান, বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট, মহানন্দা নদীর তীর, জেলা পরিষদ ডাক বাংলো ও তেঁতুলিয়া পিকনিক কর্নারসহ নানা দর্শনীয় স্থান দেখতে প্রতিনিয়ত পর্যটকের ভিড় লেগেই থাকে।
কিন্তু এসবের বাইরে সম্প্রতি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে একটি গাছ। তেঁতুলিয়ার প্রাণকেন্দ্র চৌরাস্তা বাজারে দাঁড়িয়ে থাকা শতবর্ষী ঐতিহাসিক তেঁতুল গাছ এখন সেজেছে একেবারে নতুন সাজে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে।
স্থানীয়রা বলছেন,বহু বছর ধরে দাঁড়িয়ে থাকা এই তেঁতুল গাছ স্থানীয়দের কাছে যেমন ঐতিহ্য, ছায়া ও বিশ্রামের প্রতীক ছিল, পর্যটকদের কাছেও এটি এক ধরনের ঐতিহাসিক কৌতূহল। কিন্তু দীর্ঘদিন তেমন গাছটি অবহেলিত থাকায় গাছটির প্রতি তেমন কোনো নজর দেয়া হয়নি।
সম্প্রতি তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গাছটির চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। পাশাপাশি নেওয়া হয় ব্যতিক্রমী আলোকসজ্জার উদ্যোগ। এখন প্রতিদিন সন্ধ্যা নামতেই গাছটি ভরে ওঠে নানা রঙের ঝলমলে আলোয়। দূর থেকে মনে হয়, যেন কোনো শিল্পকর্ম সাজিয়ে রাখা হয়েছে।
এই দৃশ্য পর্যটকদের নজর কেড়েছে দারুণভাবে। এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ভাইরাল হয়েছে আলোকিত তেঁতুল গাছের ছবি।
ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা আব্দুর রহমান নামে এক পর্যটক বলেন,আগেও তেঁতুলিয়ায় এসেছিলাম, তখন এই তেঁতুল গাছ অবহেলিত অবস্থায় ছিল,তেমন কোন উদ্যােগ চোখে পড়েনি। এবার এসে দেখি একেবারে অন্যরকম রূপ। রাতে আলো জ্বললে মনে হয় না এটি সেই পুরোনো গাছ। বরং যেন নতুন এক সৃষ্টি। খুব সুন্দর দেখাচ্ছে।
রংপুর থেকে আসা পর্যটক মালিয়া খানম জানান,তেঁতুলিয়ায় এসে প্রথমেই চোখে পড়েছে ঐতিহাসিক তেঁতুল গাছটি। দিনের বেলায় সাধারণ মনে হলেও রাতে আলোকসজ্জার কারণে একেবারে অন্যরকম লাগে। অনেক ছবি তুলেছি।
স্থানীয়রা মনে করেন, এই উদ্যোগ শুধু একটি গাছকে আলোকিত করেনি, বরং তেঁতুলিয়ার পর্যটন খাতেও এনেছে নতুন মাত্রা।
পর্যটন নিয়ে কাজ করা তেঁতুলিয়ার নর্থবাংলা ট্রাভেল এন্ড ট্যুরিজমের পরিচালক আহসান হাবিব বলেন,এই ঐতিহাসিক গাছটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ছিল। উপজেলা প্রশাসন সেটিকে নতুন সাজে সাজিয়েছে। নিঃসন্দেহে এটি একটি মহৎ উদ্যোগ। আমরা চাই, এ ধরনের উদ্যোগের মাধ্যমে তেঁতুলিয়ার পর্যটন শিল্প আরও সমৃদ্ধ হোক।
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফরোজ শাহীন খসরু বলেন,ঐতিহাসিক তেঁতুল গাছটি এই অঞ্চলের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও স্মৃতি বহন করে। দিনে মানুষ গাছের ছায়ায় বসে, আর রাতে আলোকসজ্জার কারণে উপভোগ করে ভিন্ন এক সৌন্দর্য। আমরা গাছটির চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেছি এবং আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করেছি। পর্যটকরা এতে দারুণ আনন্দ পাচ্ছেন।”
তিনি আরও জানান, তেঁতুলিয়ার পর্যটনকে নতুন রূপ দিতে শুধু তেঁতুল গাছ নয়, পাশাপাশি আরও নানা প্রকল্প নেয়া হয়েছে।আমরা ইতোমধ্যে তেঁতুলিয়া পিকনিক কর্নার ও মহানন্দা পার্ক ঢেলে সাজাচ্ছি। মহানন্দা নদীর ধারে নির্মাণ করা হয়েছে ওয়াকওয়ে। শিশুদের জন্য নির্মিত হচ্ছে আলাদা পার্ক। আমরা চাই, তেঁতুলিয়া পর্যটকদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ গন্তব্য হয়ে উঠুক।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শেষে যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দেশে ফিরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের নেতা তারেক রহমান যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, সেভাবেই আমরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। গণতন্ত্র উত্তরণের এই প্রক্রিয়ায় গোটা পৃথিবীর সমর্থন রয়েছে, বিশেষ করে গণতান্ত্রিক বিশ্বের পূর্ণ সমর্থন আমাদের সঙ্গে আছে।’
যুক্তরাষ্ট্র সফর সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, দেশের ইতিহাসে এটি বিরল ঘটনা যে, সরকার প্রধান রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন। জাতীয় ঐক্য প্রদর্শনের জন্যই সবাইকে নিয়ে এ সফর। জাতিসংঘের অধিবেশনের বাইরেও বিভিন্ন সভা হয়েছে, বিশেষ করে প্রবাসীদের উপস্থিতিতে, যা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক।
তিনি বলেন, বিদেশ সফরে গিয়ে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। যারা গিয়েছিলেন তাদের সঙ্গেই আলাপ হয়েছে, এটা তো স্বাভাবিক। আমাদের প্রত্যাশা অনেকটাই পূরণ হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিবের ভাষায়, প্রধান উপদেষ্টা কয়েকটি দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এতে জাতীয় ঐক্যের একটি দৃষ্টান্ত তৈরি হয়েছে। জাতিসংঘের অধিবেশনের বাইরেও বিভিন্ন সভা হয়েছে, বিশেষ করে প্রবাসীদের উপস্থিতিতে, যা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক।’
তিনি উল্লেখ করেন, গণতন্ত্রের স্বার্থে এসব আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সফর চলাকালে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেও তা বড় করে দেখার কিছু নেই।
এর আগে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে গত ২১ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন। এ সময় তার সফরসঙ্গী হিসেবে সেখানে যান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও এনসিপির সদস্য সচিবসহ ৩টি রাজনৈতিক দলের ৬ নেতা।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টায় তারা দেশে ফেরেন।
দেশের ৮ অঞ্চলের ওপর দিয়ে দুপুরের মধ্যে সর্বোচ্চ ৬০ কিমি বেগে ঝড় বয়ে যেতে পারে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
শনিবার দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিমি বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এদিকে, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুরের অধিকাংশ এলাকায় এবং রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণের শঙ্কা রয়েছে।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের কিশামত সদর গ্রামে রোগাক্রান্ত গরু জবাই করার পর একই গ্রামের অন্তত ১১ জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ দেখা দিয়েছে। তাদের মধ্যে সাত জন গাইবান্ধা শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বাকিরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় আক্রান্তরা গাইবান্ধা রাবেয়া ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোম ও রাবেয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা নেন। গুরুতর আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন- মোজা মিয়া, মোজাফফর মিয়া, শফিকুল ইসলাম ও মাহবুর রহমান।
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. মঞ্জুরুল করিম প্রিন্স আক্রান্তদের চিকিৎসা দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে অধ্যাপক ডা. মো. মঞ্জুরুল করিম প্রিন্স জানান, সাত জন রোগীর শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ পাওয়া গেছে। তাদের হাতে, মুখে, চোখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোসকা ও পচন ধরেছে। জ্বর, ব্যথা, ঘা ও চুলকানিতে ভুগছেন তারা। প্রাথমিক চিকিৎসা ও পরামর্শ দিয়ে আক্রান্তদের বাড়ি পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘মূলত অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত বা রোগাক্রান্ত পশু থেকেই এ রোগ ছড়ায়। আক্রান্তরা একটি অসুস্থ গরু জবাই ও মাংস কাটার কাজে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। ওই সময় তাদের শরীরে রোগ ছড়িয়ে পড়ে। তবে এটি কোনও ছোঁয়াচে রোগ নয়। আক্রান্তরা এর আগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছিলেন। বিষয়টি জেলা সিভিল সার্জনকেও জানানো হয়েছে। নিয়মিত চিকিৎসা নিলে রোগীরা সুস্থ হয়ে উঠবেন, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’
কিশামত সদর গ্রামে বাসিন্দা বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) মো. হাফিজার রহমান জানান, গত শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) গ্রামের মাহবুর রহমানের একটি অসুস্থ গরু জবাই করে গ্রামের অন্তত ১২০ জনের মধ্যে ভাগ করা হয়। জবাই ও মাংস কাটাকাটির কাজে ১০–১৫ জন সরাসরি যুক্ত ছিলেন। চার দিন পর থেকেই তাদের শরীরে ফোসকা ও ঘা দেখা দেয়। এর মধ্যে আক্রান্ত কয়েকজন স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও শহরের ক্লিনিকে চিকিৎসা নেন।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দিবাকর বসাক জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে ৪-৫ জন অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে গাইবান্ধা ও রংপুর মেডিক্যালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। হাত, পা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে তাদের উপসর্গ দেখা গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি অ্যানথ্রাক্স।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. মোজাম্মেল হক জানান, পাশের পীরগাছা উপজেলায় অ্যানথ্রাক্সের প্রকোপ ছিল, এখন সুন্দরগঞ্জেও ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ঘাঘট ও তিস্তা নদীবেষ্টিত বামনডাঙ্গা, সর্বানন্দ, তারাপুর, বেলকা ও পৌরসভা এলাকায় এ রোগ শনাক্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব এলাকায় টিকা প্রদান চলছে।
তার ভাষায়, ‘আক্রান্ত পশু পরিচর্যা বা জবাই করলে মানুষের শরীরে অ্যানথ্রাক্স ছড়াতে পারে। তবে মাংস খেলে এ রোগ ছড়ায় না। তাই কোনও অবস্থাতেই রোগাক্রান্ত পশু জবাই করা যাবে না।’
এদিকে, অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানোর কথা জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজ কুমার বিশ্বাস। তিনি জানান, প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সভা করে এলাকায় লিফলেট বিতরণ, মাইকিংসহ সচেতনতা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি আক্রান্ত পশু জবাই না করার বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
দেশজুড়ে শুরু হয়েছে মা ইলিশ রক্ষায় সরকারি অভিযান। প্রতিবছরের মতো এবারও মা ইলিশ সংরক্ষণে ২২ দিনব্যাপী নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। ঝালকাঠি জেলায় এ উপলক্ষে জেলা মৎস্য দপ্তরের তৎপরতা দেখা গেলেও বাস্তবে কতটা সফল হবে এ অভিযান তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে রয়েছে প্রশ্ন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল জানিয়েছেন, ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে আগামী ২২দিন মা ইলিশ ধরা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এজন্য নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড, র্যাব, সেনাবাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়ে নদীতে টহল জোরদার করা হবে। ঝালকাঠি জেলায় দিনে ও রাতে পৃথক ভাবে ৮টি টহল টিম অভিযান পরিচালনা করবে। পাশাপাশি জেলেদের সচেতন করতে আগে থেকেই বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণা চালানো হয়েছে।
তবে মাঠপর্যায়ে এসব কার্যক্রম কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তাদের দাবি, প্রতি বছরই অভিযান চললেও অনেক জায়গায় গোপনে মা ইলিশ ধরা ও বিক্রি অব্যাহত থাকে। তাই শুধুমাত্র হাকডাক নয়, কঠোর নজরদারি ও বাস্তবায়নই পারে এই উদ্যোগকে সফল করতে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞার সঠিক বাস্তবায়ন হলে ইলিশের প্রজনন সুরক্ষিত হবে এবং আগামীতে আরও বেশি ইলিশ পাওয়া যাবে। এখন দেখার বিষয় কথায় নয়, বাস্তবে কতটা কার্যকর হয় এ অভিযান।
মন্তব্য