গত অর্থবছরে ব্যাংক থেকে ৭২ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা ধার করেছিল সরকার। কিন্তু এবার ধার না করে উল্টো আগের ঋণ পরিশোধ করা হচ্ছে।
করোনাভাইরাস মহামারির ধাক্কায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিও তছনছ হয়ে যাওয়ায় সরকারের খরচ কমে গেছে। তাই ঋণ শোধ করার এই সুযোগ এসেছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদেরা।
উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ধীরগতি, সঞ্চয়পত্র থেকে অস্বাভাবিক ঋণ এবং রাজস্ব আয়ে গতি আসায় ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ নেয়ার প্রয়োজন হচ্ছে না।
এ ছাড়া করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার কাছ থেকে পর্যাপ্ত ঋণ পাওয়ায় প্রয়োজনীয় খরচ মেটানোর পরও বেশ কিছু অর্থ সরকারের কোষাগারে জমা থাকছে।
ঋণের বোঝা লাঘব করতে সেই অর্থ দিয়ে সরকার আগের ঋণ শোধ করছে বলে অর্থনীতির বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন।
ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নিয়ে প্রতিবছরই সরকারকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। মিডিয়াতেও ফলাও করে সংবাদ প্রকাশ হয়। সরকার ব্যাংক থেকে বেশি ঋণ নিলে বেসরকারি খাত ঋণ বঞ্চিত হওয়ায় বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে বলে অর্থনীতিবিদেরা সমালোচনা করেন। কিন্তু এবার মিডিয়ায় খবরও নেই, সমালোচনা নেই।
রাজস্ব আদায়ে নাজুক অবস্থা এবং সঞ্চয়পত্রের বিক্রি কমে যাওয়ায় গত অর্থবছরের শুরু থেকে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের বেশি ঋণ নেওয়ার প্রবণতা ছিল। তার মধ্যে অর্থবছরের শেষ দিকে এসে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে অর্থনীতির সব হিসাব এলোমেলো হয়ে যাওয়ায় সেই ঋণনির্ভরতা আরও বেড়েছিল।
অর্থবছরের শেষ তিন মাসে (এপ্রিল-জুন) আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থাগুলোর কাছ থেকে ৩০০ কোটি ডলারের মত ঋণ সহায়তা পেয়েছিল বাংলাদেশ। তারপরও ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষে ব্যাংক থেকে সরকারের নেয়া ঋণের পরিমাণ রেকর্ড ৭২ হাজার ২৪৬ কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকে।
এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সরকার ব্যাংক থেকে ৩৪ হাজার ৫৮৭ কোটি টাকা নিয়েছিল। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ঋণের অংক ছিল ১১ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যে দেখা যায়, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের দশ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার যে পরিমাণ ঋণ নিয়েছে, পরিশোধ করেছে তার চেয়ে বেশি। ফলে সরকারের নিট ঋণগ্রহণ ঋণাত্মক হয়ে গেছে।
গত ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষে অর্থাৎ ২০২০ সালের ৩০ জুন তারিখে ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণস্থিতি ছিল ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮২৩ কোটি টাকা। ২০২১ সালের ৩০ এপ্রিল তা কমে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬৪ হাজার ১৯৬ কোটি টাকা।
এই হিসাবে গত ১০ মাসে সরকারের ব্যাংক ঋণ ১৩ হাজার ৬২৭ কোটি টাকা কমেছে।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, করোনাভাইরাসের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফসহ বিভিন্ন দাতাসংস্থা প্রচুর ঋণ সহায়তা দেওয়ায় সরকারকে এখন আর ব্যাংক তেমন ঋণ নিতে হচ্ছে না।
তিনি বলেন, ‘সরকারের উন্নয়ন বাজেটের (এডিপি) বাস্তবায়ন খুবই কম। অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ের ক্ষেত্রেও কড়াকড়ি অবস্থান নিয়েছে সরকার। তাই ব্যয় কম হচ্ছে। অন্যদিকে রাজস্ব আদায় খুব বেশি ভালো না হলেও প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে। আবার সঞ্চয়পত্র বিক্রি অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে সেই টাকা ধার হিসেবে নিয়ে খরচ করতে হচ্ছে সরকারকে।
‘তাই সবমিলিয়ে সরকারকে এখন আর ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হচ্ছে না। উল্টো অন্যান্য উৎস থেকে যে টাকা পাওয়া যাচ্ছে, তা খরচ করেও বেঁচে যাচ্ছে। সেই টাকাই শোধ করছে সরকার।’
অর্থনীতির আরেক গবেষক বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, মূলত দুটি কারণে এবার সরকারকে ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হচ্ছে না। প্রথমত, মেগা প্রকল্পের বাইরে আপাতত তেমন কোনো উন্নয়ন কাজ হচ্ছে না। দ্বিতীয়ত, ব্যাংকে আমানতের সুদের হার অনেক কমে যাওয়ায় সবাই এখন সঞ্চয়পত্র কিনছে। বিক্রি অস্বাভাবিক বাড়ছে। আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের সুদ-আসল পরিশোধের পরও অনেক টাকা কোষাগারে থেকে যাচ্ছে। সে কারণে আর ব্যাংকের দারস্ত হতে হচ্ছে না সরকারকে।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘সরকার যে বাজেট দেয় বাস্তবের সঙ্গে তার কোনো মিল নেই। ব্যয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল তার অর্ধেকও হয়নি। আবার কম খরচে বিদেশি ঋণ পাওয়া গেলেও খরচের ক্ষেত্রে বেশি জবাবদিহিতা থাকায় সরকারি কর্মকর্তারা তা খরচ করতে চান না। সবমিলিয়ে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির কারণে সার্বিক ব্যয় কম।’
বাজেট ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ নিয়ে থাকে সরকার। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা ও সঞ্চয়পত্র বিক্রির মাধ্যমেই সবচেয়ে বেশি ঋণ নেওয়া হয়ে থাকে।
চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৮৪ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। তবে, নিট হিসাবে দেখা যাচ্ছে, এপ্রিল পর্যন্ত সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ না নিয়ে উল্টো ১৩ হাজার ৬২৭ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) ২ লাখ ৯ হাজার ২৭২ কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মাত্র ৪২ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে।
অন্যদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য বলছে, এই ৯ মাসে ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৬৩ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৭ শতাংশ বেশি।
এদিকে, চলতি অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্য ধরেছিল সরকার। কিন্তু অর্থবছরের আট মাসেই অর্থাৎ জুলাই-ফেব্রুয়ারির সময়েই তার থেকে প্রায় দেড় গুণ ২৯ হাজার ৩১১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা নিয়ে ফেলেছে সরকার।
অর্থবছরের বাকি চার মাসে (মার্চ-জুন) সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণের পরিমাণ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, সেটা নিয়ে চিন্তিত আহসান মনসুর।
তিনি বলেন, ‘সঞ্চয়পত্রের সুদের হার সবচেয়ে বেশি। এটি বিক্রি বেড়ে গেলে সরকারকে গ্রাহকদের বেশি বেশি সুদ দিতে হয়। এতে বাজেট ব্যবস্থাপনায় চাপ পড়ে।’
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে ১৪ হাজার ৪২৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিল সরকার।
তার আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে নিয়েছিল ৪৯ হাজার ৯৩৯ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। ওই অংক ছিল এ যাবতকালে সঞ্চয়পত্র থেকে নেয়া সরকারের সবচেয়ে বেশি ঋণ।
২০১৭-১৮ অর্থবছরে নিয়েছিল ৪৬ হাজার ৫৩০ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৭ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি ঋণ-সহায়তা পেয়েছিল বাংলাদেশ, যা ছিল আগের বছরের চেয়ে ১১ দশমিক ৭৪ শতাংশ বেশি। তার মধ্যে ৪ বিলিয়ন ডলার ছিল শেষের তিন মাসে (এপ্রিল-জুন)।
সেই ধারাবাহিকতা চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরেও অব্যাহত আছে। এই অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) ৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার ঋণ-সহায়তা এসেছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়েরে চেয়ে ৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ বেশি।
আরও পড়ুন:ফরিদপুরের সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের আছিরউদ্দিন মুন্সির ডাঙ্গী গ্রামে পরকীয়ার জের ধরে প্রবাসী স্বামী আলমাস খান কে (৪০) হত্যা করার অভিয়োগ উঠেছে খোদ স্ত্রী হোসনেয়ারা বেগম (৩৩) এর বিরুদ্ধে। গত শনিবার দিবাগত রাতে স্বামীকে হত্যার অভিযোগে স্ত্রী হোসনেয়ারা বেগমকে আটক করেছে পুলিশ । ঘটনার পর থেকে আরেক আসামী পরকীয়া প্রেমিক আলী শেখ (৫৫) রয়েছে আত্ম গোপনে ।এ নিয়ে নিহতের পিতা হাতেম খান বাদী হয়ে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এদিকে হত্যার সঙ্গে জড়ীত পরকীয়া প্রেমিক আলী শেখকে আটকসহ তাদের ফাঁসির দাবিতে বুধবার (০২ জুলাই) মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী।
এ সময় নিহতের পিতা হাতেম খান, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী প্রবাসীদল ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি মির্জা প্রিন্স আলী সহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন ।
তারা বলেন, পুলিশ ঘটনার সাথে জড়ীত থাকার সন্দেহে স্ত্রী হোসনেয়ারা বেগম কেআটক করলেও কথিত পরকীয়া প্রেমিক আলী শেখকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি। অতি দ্রত আলী শেখকে গ্রেফতার করে তাদের ফাঁসিতে ঝোলানোর দাবি জানান মানববন্ধন থেকে।
পরে এলাকার কয়েকশত নারীপুরুষ বিচারের দাবিতে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে এলাকা প্রদক্ষিণ করে।
ফরিদপুরের কোতয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক মোঃ আসাদুজ্জামান তালুকদার জানিয়েছেন, ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই মামলার প্রধান আসামি হোসনেয়ারা বেগমকে আটক করা হয়েছে। এছাড়াও অন্য আসামি আলী শেখকে ধরতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চলছে। হোসনেয়ারা বেগমের রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হয়েছে । এই ঘটনার ব্যাপারে পুলিশ তৎপর রয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার তারানগর ইউনিয়নের কাঠালতলী গ্রামে একটি ডুপ্লেক্স বাড়িতে সংঘবদ্ধ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (০২ জুলাই) গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, আব্দুল আজিজের মালিকানাধীন ডুপ্লেক্স বাড়িতে ছাদের মাধ্যমে ৬-৮ জনের একটি ডাকাতদল প্রবেশ করে। তারা ঘরের সদস্যদের হাত-পা, চোখ-মুখ বেঁধে ফেলে। এসময় আগ্নেয়াস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তারা বাড়ির চাবি আদায় করে এবং ঘরের ভেতরে থাকা স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ অর্থ লুট করে নেয়।
ডাকাত দল প্রায় ৬.৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, ৬ লাখ ৬৮ হাজার ৫ টাকা নগদ অর্থ এবং একটি সনি ব্র্যান্ডের ক্যামেরা নিয়ে যায়। তবে সৌভাগ্যবশত এই ঘটনায় বাড়ির কোনো সদস্য শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
ভুক্তভোগী ও বাড়ির মালিক আব্দুল আজিজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রাত আনুমানিক ৩টা ২০ মিনিটের দিকে ছাদের দিক থেকে কয়েকজন লোক ঘরে ঢুকে পড়ে। মুহূর্তেই আমাদের সবাইকে হাত-পা বেঁধে ফেল পরে আগ্নেয়াস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ঘরের চাবি নিয়ে যায়। তারা ঘর তছনছ করে স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ অর্থ নিয়ে যায়। আল্লাহর রহমতে তারা আমাদের কোনো শারীরিক ক্ষতি করেনি। তবে পরিবারের সবাই এখন আতঙ্কে আছে।
ঘটনার খবর পেয়ে সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কেরাণীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল হক ডাবলু, সিআইডি এবং অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। তারা ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে তদন্ত শুরু করেছেন।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল হক ডাবলু জানান, অপরাধীদের শনাক্ত করতে আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অনুসন্ধান চলছে। খুব শিগগিরই ডাকাত চক্রকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
ময়মনসিংহের পাগলায় ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকাডুবির ২২ ঘন্টা পর নিখোঁজ দুই শিশু মরদেহ উদ্ধার করেছে নিহতের স্বজনেরা। বুধবার (০২ জুলাই) পাগলা থানার টাংগাব ইউনিয়নের বাঁশিয়া এলাকার ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে তাদের মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত শিশুরা হলো, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চরআলগী এলাকার বাসিন্দা হাবিব মিয়ার ছেলে আবির (৬) এবং মুমতাজ উদ্দিনের ছেলে জুবায়েদ (৬)। তারা দুজনই বিরুই নদীর পাড় দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (০১ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯ টার কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চরআলগী এলাকা থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ পাড়ি দিয়ে মাদ্রাসায় যেতে ছোট একটি নৌকায় উঠেন ৯ শিক্ষার্থী। ময়মনসিংহের পাগলা থানার দত্তের বাজার সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছানোর পূর্বেই ডুবে যায় নৌকাটি। এর মধ্যে ৬ জন সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও ডুবে যায় তিন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে মঙ্গলবার দুপুরে শাপলা আক্তারের (১৫) মরদেহটি ঘটনাস্থলের খানিকটা দুর থেকে উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
পাকুন্দিয়া উপজেলার চরফরাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ভোরে নিহতের স্বজনরা নৌকা নিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে নিখোঁজ আবির ও জুবায়েদকে খোঁজতে বের হয়। খোঁজাখুজির একপর্যায়ে টাংগাব ইউনিয়নের বাঁশিয়া এলাকায় ব্রক্ষ্মপুত্র নদে দুজনের মরদেহ ভাসতে দেখে। ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূর থেকে তাদের মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয় বলেও জানান এই জনপ্রতিনিধি।
চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। বুধবার (০২ জুলাই) দুপুরে দামুড়হুদা উপজেলার ঝাঁঝাডাঙ্গা সীমান্তে ওই ঘটনা ঘটে। নিহত ইব্রাহিম বাবু (৩২) ঝাঁঝাডাঙ্গা গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে। ওই ঘটনায় পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে বিজিবি।
নিহতের পিতা নুর ইসলাম জানান, দুপুরে আমার ছেলেসহ ৪-৫ জন গরুর ঘাস কাটার জন্য সীমান্তের গালার মাঠে যায়। এ সময় অসাবধনতাবশত সীমান্তের ৭৯ নম্বর মেন পিলার পার হয়ে ভারতে ঢুকে পড়লে সেখানকার ৩২ বিএসএফ হালদারপাড়া ক্যাম্পের সদস্যরা ২ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। এতে বিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় বাবু।
চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল নাজমুল হাসান গুলিবর্ষণের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, কয়েকজন স্বর্ণ চোরাকারবারির ওপর বিএসএফ গুলিবর্ষণ করেছে বলে জানা গেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থানার সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার (০১ জুলাই) বিকালে শ্রীঘর বাজারের নজরুল ইসলামের দোকানের সন্মুখ থেকে ১৮ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে। এ সময় আক্কাছ মিয়া (৩২) ও ছিদ্দিকুর রহমান (২১) নামের দুই মাদক ব্যবসায়িকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা যায়- সলিমগঞ্জ ফাঁড়ির পুলিশ শ্রীঘর বাজারের চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন কালে সন্দেহ জনক একটি সিএনজিকে থামিয়ে তল্লাশি করে। আক্কাছ মিয়া কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বাঙ্গরা বাজার এলাকার মৃত শহীদ মিয়ার ছেলে। ছিদ্দিকুর রহমান নবীনগর উপজেলার বড়াইল গ্রামের আতিকুর রহমানের ছেলে।
নবীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহিনুর ইসলাম জানান- এ ঘটনায় নবীনগর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ফেনীর পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া সীমান্ত এলাকা থেকে কয়েকটি গরুসহ কোটি টাকার ভারতীয় মালপত্র জব্দ করেছে বিজিবি। বুধবার (০২ জুলাই) উপজেলাদ্বয়ের ভারত সীমান্ত এলাকায় এসব মালপত্র জব্দ করা হয়। বিজিবি জানায়, ছাগলনাইয়া ও পরশুরাম সীমান্ত এলাকায় টহল দিচ্ছিল বিজিবি। টহল দলকে দেখে চোরাকারবারিরা বিপুল পরিমাণ ভারতীয় মোবাইল ডিসপ্লে ভর্তি কার্টন ও কয়েকটি গরু রেখে পালিয়ে যায়। বিজিবি সদস্যরা মালপত্র ও গরুগুলো জব্দ করে। এসবের আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ১ লাখ ২৮ হাজার টাকা। জব্দকৃত মালপত্র স্থানীয় কাস্টমসে জমা দেওয়া হয়েছে ।
ফেনীর ৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মোশারফ হোসেন জানান, সীমান্তে নিরাপত্তা রক্ষা ও চোরাচালান প্রতিরোধসহ অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে বিজিবির অভিযানিক কর্মকাণ্ড ও গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
ঝিনাইদহে সাপ নিয়ে খেলা করতে গিয়ে সাপের কামড়ে প্রাণ গেল মাহাফুজুর রহমান (১৬) নামের এক কিশোরের। মঙ্গলবার (০১ জুলাই) রাতে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের বিষয়খালীর কেশবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত কিশোর মাহাফুজুর রহমান ওই গ্রামের মত. মতিয়ার রহমান মতির একমাত্র ছেলে।
স্বজন ও বন্ধু সোহান জানায়, গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কাছের একটি তালগাছ থেকে সোমবার (৩০ জুন) বিকালে মাহাফুজুর রহমান একটি সাপ ধরে টিফিন বাটিতে করে আটকে রাখে। যা পরদিন মঙ্গলবার দুপুরে ওই তালগাছের কাছে গিয়ে সাপ নিয়ে খেলা করতে গিয়ে মঙ্গলবার (০১ জুলাই) তার হাতে ছোবল দিলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে ঝিনাইদহ হাসপাতালে ভর্তিরপর অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়।
মন্তব্য