শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রমালিকানাধীন রূপালী ব্যাংক শেয়ারধারীদের লভ্যাংশ দিতে পারবে কি না সে বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি ও নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে না পারার কারণে এই প্রশ্ন উঠেছে।
লভ্যাংশ ঘোষণা সংক্রান্ত বৈঠক করার আগে ব্যাংকটির শেয়ার দরে হঠাৎ উল্লম্ফনের কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
গত ছয় কার্যদিবসে ব্যাংকটির শেয়ারদর ২২ টাকা ১০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ২৯ টাকা ৬০ পয়সা। শতকরা হিসেবে দাম বেড়েছে প্রায় ৩৪ শতাংশ।
এর মধ্যে একদিন দাম কমেছে। আর পাঁচ দিন বেড়েছে।
ব্যাংকটির একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেছেন, তাদের লভ্যাংশ বিতরণে বাধা নেই। যদিও প্রধান অর্থ কর্মকর্তা বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাইছেন না। বলেন, এটি পরিচালনা পর্ষদ সিদ্ধান্ত নেবে।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে সমাপ্ত আর্থিক বছরের জন্য ব্যাংকটি ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল। কিন্তু পরিচালনা পর্ষদের লভ্যাংশের সেই প্রস্তাবটি অনুমোদন করেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
করোনা সংকটের মধ্যে ব্যাংকের তারল্য প্রবাহ ও মূলধন ভিত্তি শক্তিশালী রাখতে গত ৭ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকের লভ্যাংশ ঘোষণার ক্ষেত্রে কিছু শর্ত আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য খরচ বাদে বাংকগুলা সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে পারবে, যার মধ্যে ১৫ শতাংশ হবে বোনাস, ১৫ শতাংশ হবে নগদ।
এভাবে কোনো ব্যাংককে সামর্থ্য অনুসারে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ, কোনো ব্যাংককে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ, কোনো ব্যাংককে ১২ শতাংশ, কোনো ব্যাংককে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ আর কোনো ব্যাংককে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণার সুযোগ দেয়া হয়।
পরে ১৬ মার্চ আরেক আদেশে লভ্যাংশের সীমা কিছুটা বাড়িয়ে সঞ্চিতি সংরক্ষণসহ অন্যান্য খরচ বাদে মূলধন সংরক্ষণ করতে পারার ওপর ভিত্তি করে সর্বোচ্চ লভ্যাংশের সীমা ৩৫ শতাংশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এতে বলা হয়, যেসব ব্যাংকের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ন্যূনতম মূলধন ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ ১০ দশমিক ৬২৫ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১১ দশমিক ৮৭৫ শতাংশ হবে, তারা সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারবে।
এই প্রজ্ঞাপন আসার পর তালিকাভুক্ত ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে এখন পর্যন্ত লভ্যাংশ ঘোষণা সংক্রান্ত পর্ষদ বৈঠক করেছে ২৭টি। এর মধ্যে কেবল আইসিবি ইসলামী ব্যাংক লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি।
আর সর্বনিম্ন পাঁচ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক। তবে তাদের আর্থিক সক্ষমতা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ন্যূনতম সীমার চেয়ে ভালো ছিল। কারণ তারা আড়াই শতাংশ স্টক লভ্যাংশের পাশাপাশি সমান সংখ্যক নগদ লভ্যাংশও দিয়েছে।
রূপালী ব্যাংকের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ন্যূনতম মূলধন ক্যাপিটাল কনজারভেশন কত, সে বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। আর পরিচালনা পর্ষদও এখন পর্যন্ত লভ্যাংশ ঘোষণা সংক্রান্ত সভা আহ্বান করেনি।
তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক লভ্যাংশের সীমা বেঁধে দিয়ে আদেশ জারির পর কয়েকটি অনলাইন দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ হয় যে, এবারও রূপালী ব্যাংক কোনো লভ্যাংশ দিতে পারবে না। এরপর ব্যাংকটির শেয়ারদর কমে যেতে থাকে।
গত ১৭ জানুয়ারি ব্যাংকটির শেয়ারদর ছিল ৩১ টাকা ২০ পয়সা। এরপর ধারাবাহিকভাবে কমতে কমতে ৪ মে দাম দাঁড়ায় ২২ টাকা ১০ পয়সা। কিন্তু পরদিন থেকে দেখা দেয় উল্লম্ফন।
দুই দিনেই দাম বাড়ে ৪ টাকা ৭০ পয়সা। এরপর এক দিন ৫০ পয়সা দাম কমলেও পরের দুই দিন বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়ে যায় দাম।
পুঁজিবাজারে কোনো কোম্পানির শেয়ারদর একদিন বাড়তে পারবে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ। ১১ ও ১২ মে দুই দিন এই সর্বোচ্চ পরিমাণে দাম বাড়ার পর বিক্রেতাও ছিল না।
রূপালীর শেয়ার দাম ২৯ টাকা ৩০ পয়সা দাম নিয়ে শুরু হয় ঈদের ছুটি। তিন দিন পর রোববার এক পর্যায়ে দাম কিছুটা কমে ২৮ টাকা ৮০ পয়সা হয়ে যায়। কিন্তু শেষ বেলায় দাম আবার বেড়ে হয় ২৯ টাকা ৩০ পয়সা।
বোর্ড সভা ঘোষণার আগে আগে রূপালী ব্যাংকের দাম বৃদ্ধি লভ্যাংশ ঘোষণার সম্ভাবনার কারণে কি না- এমন প্রশ্নে ব্যাংকটির একজন উপমহাব্যবস্থাপক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ বছর বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দেব। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম মেনেই এ বছর লভ্যাংশ দেয়া যাবে।’
তার এই বক্তব্যের বিষয়ে ব্যাংকটির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা শওকত জাহান খান অবশ্য মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি কোনো কথা বলব না। পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকের পর এ বিষয়ে জানা যাবে।’
২০২০ সালের ২৮ জুন লভ্যাংশ ঘোষণা সংক্রান্ত সভা করেছিল রূপালী ব্যাংক।
গত ২৮ অক্টোবর পরিচালনা পর্ষদের শেষ বৈঠক অনুযায়ী ২০২০ সালের তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি আয় ছিল ৫০ পয়সা। এটি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৫ শতাংশ বেশি। তখন শেয়ার প্রতি আয় ছিল ৪০ পয়সা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে রূপালীর খেলাপি ঋণের হার ১২ দশমিক ৭০ শতাংশ। এসময়ে ব্যাংকটির প্রভিশন ঘাটতি ৮২১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। আর মূলধন ঘাটতি রয়েছে ৬৭১ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন:ঈদ উৎসবের প্রস্তুতির সময়ে গ্রাহকদের প্রয়োজন এবং অনুভূতির কে প্রাধান্য দিয়ে সিঙ্গার।বেকো নিয়ে এসেছে অভিনব “সলিউশন কার্ড” ক্যাম্পেইন।এই “সলিউশন কার্ড” এ গ্রাহকদের জন্য রয়েছে এমন সব আকর্ষণীয় ও দরকারি অফার, যা এই ঈদে গ্রাহকদের জীবনকে সহজ ও স্বস্তিময় করে তুলবে। ভোক্তা ও বাজার গবেষণার ভিত্তিতে তৈরি এই "সলিউশন কার্ড" শুধুমাত্র একটি সেলস প্রোমোশন নয় এটি সিঙ্গার।বেকো এর গ্রাহক সেবা, সহানুভূতি এবং কঠিন সময়ে পাশে থাকার এক বাস্তব উদাহরণ।
ইতোমধ্যেই সারা দেশে এই ক্যাম্পেইন ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। আজ রাজশাহীর মোছা: জিন্নাতুনাছ একটি ফ্রিজার কেনার মাধ্যমে “সলিউশন কার্ড” স্ক্রাচ করে জিতে নিয়েছেন প্রথম "হাউসফুল অ্যাপ্লায়েন্স" অফার। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্তের আরও অনেক গ্রাহক সিঙ্গার বা বেকো পণ্য কিনে সলিউশন কার্ডের আকর্ষণীয় পুরস্কার জিতে নিচ্ছেন, যা তাদের ঈদ-উল-আযহার প্রস্তুতিকে করে তুলছে আরও সহজ ও স্বস্তিময় ।
যে কোনো সিঙ্গার বা বেকো স্টোর থেকে রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, টিভি, ওয়াশিং মেশিন বা মাইক্রোওয়েভ ওভেন ক্রয় করলে গ্রাহকরা পাচ্ছেন একটি সলিউশন কার্ড। এই “সলিউশন কার্ড” স্ক্র্যাচ করেই গ্রাহকরা জিতে নিতে পারবেন সম্পূর্ণ হাউসফুল অ্যাপ্লায়েন্স অফার, যার মধ্যে রয়েছে একটি রেফ্রিজারেটর, এয়ার কন্ডিশনার, টিভি, ওয়াশিং মেশিন, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, গ্রাইন্ডার ও রিচার্জেবল ফ্যান। এছাড়াও গ্রাহকরা পেতে পারবেন যেকোনো একটি নির্দিষ্ট অ্যাপ্লায়েন্স যেমন টিভি, ওয়াশিং মেশিন, ওভেন, রিচার্জেবল ফ্যান বা গ্রাইন্ডার জেতার সুযোগ । এছাড়াও সলিউশন কার্ডে আরো আছে এলপিজি গ্যাস বিল ডিসকাউন্ট, ঈদ বাজার ডিসকাউন্ট যা গ্রাহকদের উৎসব কে আরও অর্থবহ করে তুলবে। এই অফার ঈদের দিন পর্যন্ত চলমান থাকবে।
সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও, মি. এম এইচ এম ফাইরোজ বলেন, “সিঙ্গার।বেকোতে আমরা শুধুমাত্র পণ্য বিক্রি করি না আমরা গ্রাহকের সম্ভাব্য সমস্যার সমাধান দেবার চেষ্টা করি । সলিউশন কার্ড ক্যাম্পেইন এমন একটি উদ্যোগ, যা প্রমাণ করে আমরা গ্রাহকদের কথা শুনি , গ্রাহকদের প্রয়োজন বা সমস্যা গুলো বোঝার চেষ্টা করি । আমরা আমাদের গ্রাহকদের জীবনে সত্যিকারের পরিবর্তন আনতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বিশেষ করে ঈদ-উল-আযহার মতো তাৎপর্যপূর্ণ সময়ে।”
ঈদের প্রস্তুতিকে আরও সহজ ও স্বস্তিময় করতে আজই আপনার নিকটস্থ সিঙ্গার বা বেকো স্টোরে যান অথবা ভিসিট করুন সিঙ্গারবিডি ডট কম ।
আওয়ামী লীগের শাসনামলে বছরের পর বছর লাগামহীন অনিয়মে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত হিমশিম খাচ্ছে দুর্বল মূলধন নিয়ে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালের শেষে ব্যাংক খাতজুড়ে মূলধন ঝুঁকিজনিত সম্পদের অনুপাত (সিআরএআর) নেমে এসেছে মাত্র তিন দশমিক শূন্য আট শতাংশে। যেখানে আন্তর্জাতিক কাঠামো বাসেল থ্রি অনুযায়ী থাকা উচিত ন্যূনতম ১০ শতাংশ। তিন মাস আগেও এই হার ছিল ছয় দশমিক ৮৬ শতাংশ এবং ২০২৪ সালের জুনে ছিল ১০ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
কিছু ব্যাংক এখনো তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী মূলধন ধরে রাখতে পারলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যাঅনুযায়ী এই খাতে রয়েছে বড় ফারাক। রাষ্ট্রায়ত্ত, ইসলামি শরিয়াভিত্তিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা আরও অবনতি হয়েছে, অপরও দিকে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক ও বিদেশি ব্যাংকগুলো অপেক্ষাকৃত স্থিতিশীল অবস্থানে রয়েছে।
ডিসেম্বরের শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর সিআরএআর ছিল ঋণাত্মক আট দশমিক ৪২ শতাংশ, ইসলামি ব্যাংকগুলোর ছিল ঋণাত্মক চার দশমিক ৯৫ শতাংশ এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর ছিল ঋণাত্মক ৪১ দশমিক শূন্য দুই শতাংশ।
এর বিপরীতে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সিআরএআর ১০ দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং বিদেশি ব্যাংকগুলো ৪২ দশমিক শূন্য নয় শতাংশ— যা বাসেল থ্রি কাঠামো অনুযায়ী ন্যূনতম প্রয়োজনীয়তার অনেক ওপরে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য থেকে জানা যায়।
সিআরএআর হচ্ছে একটি ব্যাংকের মূলধন ও তার ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের অনুপাত, যেখানে ঝুঁকির মাত্রা অনুযায়ী সম্পদের হিসাব নির্ধারণ করা হয়।
ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্ট অভ্যন্তরীণ সূত্রগুলো জানিয়েছে, ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি গোটা আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতাকেই হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
তারা উল্লেখ করেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংকগুলোর প্রতি বিনিয়োগকারী ও আমানতকারীদের আস্থা কমে যায় এবং সেই ব্যাংকগুলোর ক্রেডিট রেটিং কমে যায়। ফলে তাদের জন্য তহবিল সংগ্রহ করা কঠিন ও ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, ২০২৪ সালের আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর খারাপ ঋণের আসল পরিমাণ সামনে আসে। এই তথ্য উদ্ঘাটনের ফলে অনেক ব্যাংক আরও বড় আকারে মূলধন সংকটে পড়েছে।
২০২৪ সালের শেষ নাগাদ ছয়টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকসহ মোট ১৯টি ব্যাংক সম্মিলিতভাবে এক লাখ ৭১ হাজার ৭০০ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতিতে পড়ে, যা রেকর্ড সর্বোচ্চ। এটা বেড়েছে মূলত তিন লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা খেলাপি ঋণের কারণে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেন, অনেক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংক এখন লোকসানে চলছে। তাদের জন্য ঋণ দেওয়া কঠিন হয়ে পড়তে পারে।
তিনি বলেন, ‘তারা এখন অনেক ক্ষেত্রেই মূলধন ঠিক রাখার চেষ্টায় ঋণ দিতে পারছে না।’
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর নতুন করে বেশ কয়েকটি ব্যাংক পুঁজি ঘাটতিতে থাকা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক এবং আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক। এর বেশির ভাগই পতিত সরকারের সময় রাজনীতি সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল।
যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, খারাপ ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি এবং অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঋণের টাকা ফেরত না আসায় প্রভিশন ঘাটতি বেড়ে যায়। এর ফলে মূলধন ঘাটতিও বহু গুণ বেড়ে যায়।
ব্যাংকগুলোকে তাদের পরিচালন মুনাফার একটি নির্দিষ্ট অংশ প্রভিশন হিসেবে রাখতে হয় ঋণের বিপরীতে এবং এই প্রভিশন পর্যাপ্ত না হলে মূলধন ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
২০২৪ সালের শেষে জনতা ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি বেড়ে দাঁড়ায় ৫২ হাজার ৮৯০ কোটি টাকায়, যার প্রধান কারণ ছিল ৬৭ হাজার ১৪৮ কোটি টাকার খারাপ ঋণ-যা ব্যাংকটির বিতরণ করা মোট ঋণের ৭২ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, জনতা ব্যাংকের প্রধান ঋণখেলাপিদের মধ্যে রয়েছে আননটেক্স, ক্রিসেন্ট, বেক্সিমকো, থারম্যাক্স ও এস আলম গ্রুপ। তাদের সম্মিলিত ঋণের পরিমাণ ৪৫ হাজার কোটি টাকার বেশি।
অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মধ্যে ২০২৪ সালের শেষে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ১৮ হাজার ১৮৮ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংকের পাঁচ হাজার ১০০ কোটি টাকা, অগ্রণী ব্যাংকের চার হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা, বেসিক ব্যাংকের তিন হাজার ১৫০ কোটি টাকা এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের দুই হাজার ৪০০ কোটি টাকা মূলধন ঘাটতি ছিল।
এত বেশি মূলধন ঘাটতির কারণে একক ঋণগ্রহীতা সীমার আওতায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো এখন বড় অংকের ঋণ দিতে পারছে না।
বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে ইউনিয়ন ব্যাংকের ১৫ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ১৩ হাজার ৯৯১ কোটি টাকা, ইসলামী ব্যাংকের ১২ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ১১ হাজার ৭০৮ কোটি টাকা, আইএফআইসি ব্যাংকের নয় হাজার কোটি টাকা এবং ন্যাশনাল ব্যাংকের সাত হাজার ৭০০ কোটি টাকা মূলধন ঘাটতি ছিল।
এ ছাড়া, পদ্মা ব্যাংকের ঘাটতি চার হাজার ৯০০ কোটি টাকা, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের দুই হাজার ৯০০ কোটি টাকা, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের এক হাজার ৯০০ কোটি টাকা, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা, এবি ব্যাংকের ৫০০ কোটি টাকা এবং আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের ২৫০ কোটি টাকা।
ব্যাংক সংস্কার টাস্কফোর্সের সদস্য এবং ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, পুনরায় মূলধন জোগাড় করাই হচ্ছে সবচেয়ে সহজ সমাধান। ব্যাংক রেজলিউশন অর্ডিন্যান্স পাসসহ বিভিন্ন সংস্কার উদ্যোগের মাধ্যমে এটা করা যেতে পারে।
তবে তিনি সতর্ক করেন, দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে অর্থ ঢালার আগে অবশ্যই সেসব প্রতিষ্ঠানের অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও দুর্নীতি নির্মূল করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘সরকার যদি পুনরায় মূলধন দেওয়ার কথা বিবেচনা করে, তার আগে সমস্যাসংকুল ব্যাংকগুলো থেকে অনিয়ম দূর করতেই হবে।’
পুঁজিবাজারে এপ্রিল মাসটা মোটেও ভালো কাটেনি বিনিয়োগকারীদের। ঈদের ছুটি কাটিয়ে শুরু হওয়া লেনদেনে লাগাতার পতনে ঘটায় এ মাসে ঢাকার বাজারে প্রধান সূচক কমেছে ৩০২ পয়েন্ট এবং বাজার পুঁজি হারিয়েছে ১৭ হাজার কোটি টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পুরো মাসের লেনদেন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ৫২১৯ পয়েন্ট নিয়ে শুরু হওয়া লেনদেন মাস শেষে এসে ঠেকেছে ৪৯১৭ পয়েন্টে।
মাসে মোট ১৮ কার্যদিবস বাজারে লেনদেন হয়েছে, যার মধ্যে ১৫ কার্যদিবসেই হয়েছে পতন। পতনের ধাক্কায় বাজার থেকে অর্থ তুলে নিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা, হয়নি নতুন করে অর্থলগ্নি। এতে করে বাজার হারিয়েছে ১৭ হাজার কোটি টাকার পুঁজি।
শুধু প্রধান সূচক নয়, মাসিক লেনদেনে বেহাল দশা শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএসেও। পুরো মাসে এ খাতের সূচক কমেছে ৭৪ পয়েন্ট। অন্যদিকে, বাছাইকৃত ভালো কোম্পানির শেয়ারেও হয়েছে বড় পতন। ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৯২ পয়েন্ট।
সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের পরিসংখ্যান বলছে, এক মাসে ১১ হাজার ৪২৯ জন বিনিয়োগকারী নিজেদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্ট থেকে সব টাকা তুলে নিয়েছেন। বাজারে জিরো ব্যালেন্সের বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ৩ লাখ ৮০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। চালু থাকা বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা এক মাসে ১০ হাজারের ওপরে কমেছে।
বিনিয়োগকারীরা বলছেন, এভাবে বাজারে পতন হতে থাকলে দেশের পুঁজিবাজার থেকে বিনিয়োগকারীরা মুখ ফিরিয়ে নেবে। যারা বুকে আশা বেঁধে এখনও বাজারে আছেন, প্রতিদিনই আশাভঙ্গ হচ্ছে তাদের। বাজারের ওপর থেকে আস্থা উঠে যাওয়ায় কোনোভাবেই বাজার ঠিক করা যাচ্ছে না।
প্রায় পাঁচ বছর ধরে শেয়ার ব্যবসা করছেন তারেক হোসেন। তিনি বলেন, ‘আগে কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হতো, ভালো কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করলে লোকসান হবে না। বিনিয়োগকারীরা মন্দ শেয়ারে বিনিয়োগ করে, তাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গত কয়েক মাসে যেসব শেয়ারের দাম কমেছে তার বেশিরভাগই ভালো কোম্পানি। কী করে ১০০ টাকার শেয়ার ৩০-৪০ টাকায় নেমে আসে-এর জবাব কমিশন দিতে ব্যর্থ।’
আরেক বিনিয়োগকারী মনসুর আলী বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে মার্জিন ঋণের কারণে। এই ঋণ নিয়ে যারা শেয়ার কিনেছেন, ফোর্স সেলের কারণে তাদের ভালো শেয়ারও বিক্রি হয়ে গেছে। এতে করে বাজারে প্রতিটি শেয়ারের ওপর খারাপ প্রভাব পড়েছে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুঁজিবাজার সংস্কারে গঠিত টাস্কফোর্সের এক সদস্য বলেন, ‘মার্জিন ঋণ বাজারে গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়য়েছে। এতদিন এই ঋণ প্রদান ও গ্রহণে শক্ত কোনো রীতি ছিল না। সম্প্রতি কমিশনের কাছে টাস্কফোর্স মার্জিন ঋণ নিয়ে নতুন প্রস্তাব দিয়েছে। মার্জিন ঋণের সর্বোচ্চ সীমা ১০ কোটি টাকা, সর্বনিম্ন ১০ লাখ টাকা এবং বাজার বিনিয়োগ না থাকলে ঋণ দেওয়া হবে না মর্মে সুপারিশ করা হয়েছে।’
কমিশনের কাছে লক-ইন শেয়ার, উদ্যোক্তা শেয়ার, প্লেসমেন্ট, অতালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান, বন্ড, ডিবেঞ্চার ও অতালিকাভুক্ত মিউচুয়াল ফান্ডে মার্জিন ঋণের অর্থ ব্যবহার না করার সুপারিশ জানিয়েছে টাস্কফোর্স।
বাজারে পুঁজি জোগানদাতা প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) চেয়ারম্যান আবু আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের বড় বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোকে বাজারে নিয়ে আসতে হবে। এসব কোম্পানি বাজারে আনতে পারলে বিনিয়োগকারীরা আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবে।’
তবে কমিশনের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর বাজারে বড় কোনো আইপিও আসার তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই। এতে করে বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর আশু কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।’
তার ওপর সম্প্রতি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) অভ্যন্তরীণ গোলোযোগ এবং পরবর্তীতে ২১ কর্মকর্তাকে বহিষ্কারের মতো ঘটনা বাজারে ভালো কোনো বার্তা বয়ে আনেনি বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
নিত্যপণ্যের দাম কোনোভাবেই সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আসছে না। কিছু দিন পর দাম বাড়ায় নাভিশ্বাস উঠেছে সীমিত আয়ের মানুষের। লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধিতে চরম বিপাকে পড়েছে শ্রমজীবী ও সাধারণ ক্রেতারা। মাছ, মুরগি, সবজি- কোনো কিছুতেই নেই স্বস্তি।
রাজধানীর বাজারে এখন সব ধরনের সবজির দামই বাড়তি। গেল এক সপ্তাহে মুরগির কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা। মাছের দামও ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। এখন প্রায় অধিকাংশ সবজি কিনতে গুনতে হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা। অথচ মাসখানেক আগেও ৪০/৪৫ টাকা কেজির মধ্যে অনেক সবজিই পাওয়া যেত। পেঁয়াজের দামও কয়েক সপ্তাহ বেড়ে এখন ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় আটকে আছে।
তবে দীর্ঘ সময় পর বাজারে চালের দাম নিম্নমুখী। ইরি-বোরো ধানের চাল আসায় নতুন মিনিকেট চালের দাম কমেছে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা এমন চিত্র দেখা গেছে।
ব্যবসায়ীরা বলেছেন, শীত মৌসুমে বাজারে সবজির সরবরাহ তুলনামূলক বেশি থাকে। ফলে এ সময় সবজির দাম কমে আসে। কিন্তু এখন সে তুলনায় গ্রীষ্মকালীন সবজির সরবরাহ কম। তাই দাম বেশি। গতকাল বাজারে বিভিন্ন ধরনের সবজির মধ্য করল্লা, ঝিঙে, ধুন্দুল, ঢ্যাঁড়শ ৬০ থেকে ৮০ টাকা, বরবটি, পটোল ৮০ থেকে ৯০ টাকা, কচুর লতি, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ এক মাস আগেও এসব সবজি কেজিতে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত কমে বিক্রি হয়েছে।
তবে টম্যাটো, পেঁপে ও আলুর দাম তুলনামূলক কম আছে। প্রতি কেজি টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপে ৪০ থেকে ৫০ টাকা ও আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কাঁচা মরিচের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা।
বাজারে মাছের দামও কিছুটা বাড়তি। সপ্তাহের ব্যবধানে কোনো কোনো মাছের দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেশিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। বিশেষ করে ইলিশসহ চিংড়ি মাছের দাম বেশি। প্রতি ৭০০ গ্রামের এক হালি ইলিশ ৫ হাজার টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে। এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ প্রতিপিস দুই থেকে তিন হাজার টাকা দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা। ৪০০-৫০০ গ্রামের মাছ ১২০০-১৫০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। দাম বেড়ে প্রতি কেজি চাষের চিংড়ি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং নদীর চিংড়ি ১০০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। স্বাভাবিক সময়ে এর দাম কেজিতে ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত কম থাকে। কই, শিং, শোল, ট্যাংরা ও পুঁটির দাম বাড়তি। চাষের রুই, তেলাপিয়া ও পাঙাশও আগের চেয়ে ২০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। প্রতি কেজি চাষের রুই, কাতলা ৩২০-৩৬০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০-২৪০ টাকা ও পাঙাশ ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রামপুরা, খিলগাঁও ও তালতলা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নতুন মিনিকেট চাল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৪ থেকে ৮০ টাকায়। যেখানে পুরোনো একই চালের দাম ৭৮ থেকে ৮৮ টাকা পর্যন্ত। সে হিসাবে চালের দাম কেজিপ্রতি প্রায় ৪ থেকে ৮ টাকা কমেছে।
বিক্রেতারা বলছেন, নতুন চালের দাম প্রতি বস্তায় (২৫ কেজি) ১০০ থেকে ২০০ টাকা কমেছে। এখন প্রতি বস্তা মিনিকেটের দাম ২০০০ টাকার মধ্যে এসেছে, যা আগে ২২০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। বাজারে প্রচলিত প্রায় সব ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের দামই কমেছে। তবে পুরোনো কোনো চালের দাম এখনো কমেনি বলে জানান তারা। এদিকে বাজারে মোটা চাল ৫৮ থেকে ৬২ টাকা, মাঝারি চালের দাম ৬৪ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি সরু নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকার মধ্যে।
অন্যদিকে পেঁয়াজের চড়া দামে অস্বস্তিতে ক্রেতারা। বাজারে খুচরা পর্যায়ে ভালো মানের প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। পাড়া-মহল্লায় এ দাম আরো ৫ টাকা বেশি। এ ছাড়া বেশ কয়েক সপ্তাহ নিম্নমুখী ডিমের দরে তেমন পরিবর্তন দেখা যায়নি। প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা দামে। মাসখানেক ধরেই এই দামের আশপাশে রয়েছে ডিমের দর।
মুরগির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি ১৭০ থেকে ১৮০ এবং সোনালি জাতের মুরগি ২৭০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য আগামী সাত মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা ছয় গুণ বাড়ানোর একটি উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
তিনি আজ তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে লেখেন ‘অধ্যাপক ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিষয়টির গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন। তারা চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা ছয় গুণ বাড়িয়ে ৭.৮৬ মিলিয়ন টিইইউতে উন্নীত করার একটি উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা উন্মোচন করেছে’।
শফিকুল আলম বলেন, শীর্ষস্থানীয় বৈশ্বিক বন্দর পরিচালকদের সঙ্গে অংশীদারিত্ব ছাড়া এটি সম্ভব নয়।
সফল হলে, এমন অংশীদারিত্ব আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীদের কাছে একটি শক্ত বার্তা পৌঁছে দেবে: বাংলাদেশ ব্যবসার জন্য উন্মুক্ত।
‘আগামী সাত মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়টা বাংলাদেশকে গড়ে তুলতেও পারে, আবার ব্যর্থ করতেও পারে’ তিনি যোগ করেন।
বিশ্বের বৃহত্তম রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতি প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, নিউ ইয়র্ক টাইমস, ওয়ার্ল্ড স্ট্রিট জার্নাল বা ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস পড়লেই বোঝা যায়: ব্রেটন উডস চুক্তির পর যে পুরোনো অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা গড়ে উঠেছিল এবং যা ডব্লিউটিও দ্বারা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছিল, তা এখন বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, সেই যুগের সবচেয়ে বড় বিজয়ীরা ছিল জাপান, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, চীন, ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়া- যারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় বাজারমুখী রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতি গড়ে তুলে সমৃদ্ধ হয়েছে।
শফিকুল আলম আরও বলেন, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনও ধীরে ধীরে এই পথে অগ্রসর হয়েছে। তবে দক্ষিণ এশিয়া পিছিয়ে ছিল।
‘এখন হয়তো অবশেষে বাংলাদেশের সময় এসেছে। আমরা কি এই মুহূর্তকে কাজে লাগাতে পারবো?’ তিনি প্রশ্ন তোলেন।
রাজনীতি এখানে একটি মূল ভূমিকা রাখবে উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, আশাব্যঞ্জকভাবে, এমনকি ইসলামপন্থীরাও এখন ব্যবসাবান্ধব হওয়ার প্রয়োজনীয়তা বুঝতে শুরু করেছে।
তবে তিনি বলেন, লজিস্টিক সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জই হতে পারে সবচেয়ে বড় বাধা।
‘বৃহৎ পরিমাণ পণ্য দ্রুত ও কার্যকরভাবে পরিবহণের সক্ষমতা শীঘ্রই পরীক্ষার সম্মুখীন হবে। এ ক্ষেত্রে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ যে একটি উৎপাদনশীল শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চায়, সে আকাঙ্ক্ষা মুখ থুবড়ে পড়বে’ তিনি বলেন।
বাংলাদেশ এখন আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্বব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল নয় বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, ‘আইএমএফের সব শর্ত মেনে আমরা ঋণ নিতে চাই না।’
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. সালেহউদ্দিন এ কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘সার্বিকভাবে আমি বলবো—অনেকের ধারণা যে আমরা শুধু অর্থ আনতে গেছি। আসলে সেটা কিন্তু না। ডেফিনিটলি আইএমএফের সঙ্গে আমাদের যে নেগোসিয়েশনটা (সমঝোতা) চলছিল দুইটা টার্মস নিয়ে, সেটা কন্টিনিউ করার জন্য...। এছাড়া বিশ্বব্যাংক আছে তাদের সঙ্গে ইসে (আলোচনা) করার জন্য গিয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের এবারের সফর সফল হয়েছে। কারণ আমি তো বিশ্বব্যাংক, এআইবি, আইওএম, আইএমএফ, আইএফসি, ওপেক ফান্ডসহ যুক্তরাষ্ট্রের বড় একটা ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল, সে দেশের সরকারের এনার্জি বিভাগ, স্টেট বিভাগ, লেবার, কৃষি খাত এবং ট্রেজারি বিভাগের সঙ্গে কথা বলেছি। সবাই কিন্তু আমাদের সঙ্গে আন্তরিকভাবে কথা বলেছেন এবং আমন্ত্রণ দিয়েছেন। তারা পূর্ণ প্রিপারেশন নিয়ে এসেছেন। ’
সালেহউদ্দিন বলেন, ‘এ বছর বিভিন্ন দেশের মন্ত্রীরা বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের পেছনে না ঘুরে বরং তারা ইউএস প্রেসিডেন্ট ও অফিসের লোকজনের কাছে যাচ্ছেন। সবাই এখন বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের থেকে তাদের বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে।’
অর্থের সংস্থানের জন্য তিন চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘৬৫০ মিলিয়ন ডলার বে-টার্মিনাল, ২০০ মিলিয়ন ডলার সেফটিনেট ও রিজিলিয়েন্স প্রকল্পে (আসবে) সই হয়েছে । এছাড়া ওপেক ফান্ডের সঙ্গে ১০০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি হয়েছে। তারা বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ করবে। আর আইএফসির সঙ্গে কথা হয়েছে, তারাও ৫০০ মিলিয়ন ডলার বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ করবে। ’
আইএমএফের বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আইএমএফের দুই-একটা ইস্যু আছে, যেটা মেজর না। কিছু শর্ত আছে, যেগুলোর সব আমরা পরিপালন করতে চাই না। আমরা সেসব বিষয় নিয়ে তাদের সঙ্গে আরগুমেন্ট (যুক্তিতর্ক) করেছি। তারা বলেছে, এই কর সেই কর—আমরা সে পথে হাঁটবো না। বাংলাদেশের মোটামুটি ম্যাক্রোইকোনমিকস ( প্রধান অর্থনীতি) অনেক ভালো। ডিসেম্বর থেকে এখন অনেক ভালো। দ্রুত রিফর্ম করেছে, যেটা ভালো হয়েছে। আইএমএফ থেকে টাকা পয়সা না নিয়ে ফরেন এক্সচেঞ্জ মার্কেট ও রিজার্ভ স্থিতিশীল আছে। এই সরকার আসার পর কিন্তু আমরা আইএমএফ থেকে কোনো টাকা পাইনি। তাদের বলেছি, তোমাদের টাকা ছাড়াই আমরা ম্যাক্রোইকোনমিকস স্থিতিশীল করতে পেরেছি। এজন্য এখন তারা...বুঝতে পেরেছে। তারা বলেছে আমরা কন্টিনিউ করছি৷’
তিনি বলেন, ‘এছাড়া প্রকল্প সহায়তা অনেক আছে। বিশ্বব্যাংক, এডিবির (সহায়তা) পাইপলাইনে আছে। এআইবি থেকে এক মিলিয়ন ডলার চেয়েছি। এনডিবি ও ইসলামী ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক থেকে সহায়তা চেয়েছি। ফলে প্রকল্প সহায়তার ব্যাপারে তেমন কোনো সমস্যা দেখছি না। তবে বাজেট সাপোর্টের বিষয়ে একটু আলোচনা চলছে। আইএমএফের অনেক শর্ত থাকে৷ তাই আমরা চিন্তাভাবনা করছি নিজেদের মতো করে বাজেট দিতে চেষ্টা করব।’
আইএমএফের কী শর্ত আছে এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘তাদের শর্তের মধ্যে আমরা বলেছি এনবিআর সেপারেশন করবো। ফরেন এক্সচেঞ্জ মার্কেটটাকে বলেছে সহজ করতে। আমরা বলেছি একেবারে ওপেন করবো না৷ আমাদের স্টাবিলাইজেশন ফান্ডে তাদের এক বিলিয়ন ডলার দেওয়ার জন্য বলেছি। ওরা বলেছে ৫০০ মিলিয়ন ডলার দেবে। তবু আমরা বলেছি চিন্তাভাবনা করে সিদ্ধান্ত দেবো। সব মিলিয়ে কিন্তু দুঃখ করার কোনো কারণ নেই।’
আইএমএফ যদি কোনো কারণ ঋণ দেওয়া চালিয়ে না যায়, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ অন্যান্য জায়গা থেকে তা পেতে পারে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘আইএমএফের একটা বিষয় হলো বাজেট সাপোর্ট, সেটা আবার পাঁচ বছরের মধ্যে দিতে হয়। আর আইএমএফ টাকা দিলেই যে নেবো এমন নাতো। আমরা তো ঋণের বোঝা নিতে চাই না। আমরা যদি ঋণ নিতে থাকি। আর এক্সচেঞ্জ রেট যদি কমে যায়। তাহলে তো ৩ বিলিয়ন দেওয়ার কথা থাকলে ৫ বিলিয়ন শোধ করতে হবে। এসব বিষয় নিয়ে আমরা চিন্তা ভাবনা করছি। ’
আইএমএফ কি টাকা দিচ্ছে না, তারা কি তাহলে তাদের প্রোগ্রাম রাখছে না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আইএমএফের টাকাই কি টাকা, আমরা তো শক্ত সিদ্ধান্ত নেবো, প্রোগ্রামে থাকবো কি না। এ সিদ্ধান্ত আমরা নেবো। ওদের চাকরি-বাকরি আছে তো...। ইন্দোনেশিয়ায় টাকা দিতে না পেরে ওদের কয়েকজনের চাকরি চলে গেছে। আমরা না নিলে দেখবেন সেখানে কয়জনের চাকরি যায়৷ সার্বিকভাবে এখন আর আমরা আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক নির্ভরশীল না। সেই দিন চলে গেছে। বিশ্বব্যাংকের প্রজেক্ট ঋণটা তারা বলেছে কন্টিনিউ করবে। ’
দুই প্রকল্পে বাংলাদেশকে ৮৫ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ১০ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)। চাকরি সৃষ্টি, বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং দেশের সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিক করার লক্ষ্যে এ ঋণ দেওয়া হবে।
গত বৃহস্পতিবার বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস এ তথ্য জানিয়েছে।
সংস্থাটি জানায়, বাংলাদেশ এবং বিশ্বব্যাংকের মধ্যে বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে একটি আর্থিক চুক্তি সই হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরে বাংলাদেশের পক্ষে ছিলেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার সিদ্দিকী এবং বিশ্বব্যাংকের পক্ষে অংশ নেন অন্তর্বর্তীকালীন কান্ট্রি ডিরেক্টর ফর বাংলাদেশ গেইল। বাংলাদেশ সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং দক্ষিণ এশিয়ার জন্য বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজারও উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্বব্যাংক জানায়, বাংলাদেশকে দেওয়া আর্থিক প্যাকেজের মধ্যে দুটি প্রধান প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ‘স্ট্রেন্থেনিং সোশ্যাল প্রোটেকশন ফর ইম্প্রুভড রেজিলিয়েন্স, ইনক্লুশন, অ্যান্ড টার্গেটিং (এসএসপিআইআরআইটি)’ প্রকল্পের আওতায় ২০ কোটি ডলার ব্যয় করা হবে। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো দেশের সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিকীকরণ করা এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা।
এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৪৫ লাখ মানুষ সরাসরি নগদ অর্থ ও জীবিকা নির্বাহের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা পাবে। এই প্রকল্পে যুব, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, নারী এবং জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের শ্রমিকদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। যা প্রকৃত সুবিধাভোগীদের চিহ্নিত করতে এবং তাদের কাছে সহায়তা পৌঁছে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়ন, উদ্যোক্তা তৈরি, ক্ষুদ্রঋণ এবং পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে প্রায় ২৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশা করা যায়।
অপর প্রকল্পটি হলো- বে-টার্মিনাল মেরিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট। এই প্রকল্পে ৬৫ কোটি ডলার ব্যয় করা হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বে-টার্মিনাল গভীর সমুদ্র বন্দরের সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি করা হবে। এর ফলে বন্দরের জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের ক্ষমতা বাড়বে এবং পরিবহন খরচ ও সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে।
বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তারা মনে করছেন, এই বন্দরের উন্নয়ন বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যে নতুন গতি সঞ্চার করবে এবং প্রতিদিন প্রায় এক মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করা সম্ভব হবে। মাদার ভ্যাসেলের মতো বড় জাহাজ আসতে সুবিধা তৈরি হওয়ায় আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ আরও সুদৃঢ় হবে। এ ছাড়াও প্রকল্পটি নারী উদ্যোক্তা এবং বন্দর পরিচালনায় নারী কর্মীদের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের পক্ষে অন্তর্বর্তীকালীন কান্ট্রি ডিরেক্টর ফর বাংলাদেশ গেইল মার্টিন বলেন, টেকসই প্রবৃদ্ধির পথে থাকতে হলে বাংলাদেশকে তার জনসংখ্যার জন্য, বিশেষ করে প্রতি বছর শ্রমবাজারে প্রবেশকারী প্রায় ২০ লাখ যুবকের জন্য মানসম্পন্ন কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে। এই আর্থিক প্যাকেজটি বাণিজ্য ও রপ্তানি সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সবচেয়ে দুর্বলদের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি থেকে উত্তরণে ও চাকরির বাজারের জন্য প্রস্তুত হতে সাহায্য করার মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে একটি গেম-চেঞ্জার হবে।
ইআরডি শাহরিয়ার সিদ্দিকী বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি এবং দেশের উন্নয়ন আকাঙ্ক্ষা অর্জনে সহায়তা করার জন্য বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের একটি শক্তিশালী ও দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারিত্ব রয়েছে। এই প্রকল্পগুলো দেশের জলবায়ু স্থিতিশীলতা এবং একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।
মন্তব্য