ঈদের ছুটির আগে পুঁজিবাজারের আচরণ নিয়ে বাজার বিশ্লেষকদের মধ্যে আশাবাদ দেখা দিয়েছিল, তার প্রতিফলন দেখা গেল ঈদ শেষে প্রথম কর্মদিবসে।
ব্যাংক, বস্ত্র, ওষুধ ও রসায়ন ও আরও নানা খাতে দর বৃদ্ধির প্রবণতায় সূচকে উত্থান হয়েছে। ব্রোকারেজ হাউজে বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতি কম থাকলেও লেনদেন দেড় হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি হয়েছে।
প্রতি বছর ঈদের আগে টাকা তোলার প্রবণতায় বাজারে দর পতন একটি স্বাভাবিক চিত্র। এবার লকডাউন নিয়ে ছিল আতঙ্কও। তবে এবার সেই চিত্র ছিল না বাজারে। সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনও।
ছুটির আগে ব্যাংক ও বস্ত্র খাতের সুদিনের আভাস দিয়ে ঈদের ছুটিতে গিয়েছিল পুঁজিবাজার। ছুটি শেষে প্রথম কার্যদিবস রোববারও বেশি চাঙ্গাভাব মূলত এই দুই খাতেই। বেড়েছে প্রায় সবকটি ব্যাংক ও বস্ত্র কোম্পানির শেয়ার মূল্যও। তবে লকডাউনের পর থেকে টানা বাড়তে থাকা বিমা খাতে দেখা গেছে ভাটার টান।
লেনদেনে ব্যাংক খাতে তালিকাভুক্ত ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে রোববার দর কমেছে মাত্র একটির। পাল্টায়নি পাঁচটির। বাকি ২৫ ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে।
বস্ত্র খাতের উত্থান ছিল সবচেয়ে বেশি। এ খাতের তালিকাভুক্ত ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৪৬টির। কমেছে আটটির। দর পাল্টায়নি দুটির।
টানা দর বাড়তে থাকা বিমা খাতের শেয়ার দর কমেছে বেশির ভাগ কোম্পানির। এদিন লেনদেনে থাকা ৫০টি কোম্পানির মধ্যে দর কমেছে ৩৩টির। দর পাল্টায়নি চারটির। দর বেড়েছে ১৩টি কোম্পানির।
সকাল ১০টায় লেনদেনের শুরুতে পাঁচ মিনিটে সূচক বাড়ে ৩০ পয়েন্টে। তারপর ২২ মিনিটের শেয়ার বিক্রির চাপে ধাক্কা লাগে সূচকে। কমে আসে ১৬ পয়েন্ট। তবে এরপর আর কমেনি, সূচক শুধুই বেড়েছে, যা লেনদেন শেষ পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।
দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে ৬২ পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪১৭ কোটি টাকা। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ২৩১টির। কমেছে ৮৮টির। দর পাল্টায়নি ৪৯টির।
সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধিতে বস্ত্র খাত
দিনের সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধি পাওয়া চারটি কোম্পানির মধ্যে দুটি ছিল বস্ত্র খাতের। একটি ছিল প্রকৌশল খাতের, আরেকটি ছিল ওষুধ ও রাসায়ন খাতের।
বস্ত্র খাতের দুটি কোম্পানির মধ্যে নূরানী ডাইং অ্যান্ড সোয়েটার লিমিটেডের শেয়ার দর বেড়েছে ১০ শতাংশ। এবং জেড ক্যাটাগরির কোম্পানি তুং হাই নিটিং কোম্পানির শেয়ার দরও বেড়েছে দিনের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ।
জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন লিমিটেডের শেয়ার দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
সায়হাম টেক্সটাইল মিলসের শেয়ার দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ। রিং সাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের শেয়ার দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
ডেল্টা স্পিনিংয়ের শেয়ার দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ। হামিদ ফেব্রিকসের শেয়ার দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ।
ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক প্রধান গবেষণা কর্মকর্তা দেবব্রত কুমার সরকার বলেন, ‘বস্ত্র খাতের প্রতি আগ্রহের কারণ কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশ দেয়ার সময় চলে এসেছে। বেশিরভাগ কোম্পানির অর্থবছর শেষে হচ্ছে জুন মাসে। এছাড়া এ খাতের অনেক কোম্পানির শেয়ার দর এখন অনেক কম।
ব্যাংকের কী চিত্র
টানা ছয় দিন দিনের সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধি পেয়েছে এনআরবিসি ব্যাংকের। এদিন ব্যাংকটির শেয়ার দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ। ১৯ টাকা ৬০ পয়সা নিয়ে ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার পর প্রথম কর্মদিবসে দাম দাঁড়িয়েছে ২০ টাকা ৫০ পয়সা।
চলতি বছর প্রথম প্রান্তিতে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় তিন গুণ মুনাফা করা প্রাইম ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে ১ টাকা ৮০ পয়সা। মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের বেড়েছে ১ টাকা ৭০ পয়সা।
এ ছাড়া আইএফআইসি ও ইউসিবির ৭০ পয়সা করে, এনবিএলের ৬০ পয়সা, ব্র্যাক, সিটি ও ডাচ বাংলার দাম বেড়েছে ৫০ পয়সা করে। বাকি সবগুলোর দাম বেড়েছে ১০ থেকে ৩০ পয়সা।
ব্যাংকের মতো উত্থান দেখা গেছে আর্থিক খাতেও। এই খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬টির। কমেছে কেবল দুটির। একটির লেনদেন স্থগিত কয়েক মাস ধরে। বাকি চারটির দর অপরিবর্তিত ছিল।
এই খাতের কোম্পানির মধ্যে টাকার অংকে সবচেয়ে বেড়েছে আইসিবির শেয়ার। ৭ টাকা ২০ পয়সা বা ৭.৪৪ শতাংশ বেড়ে এখন দাম দাঁড়িয়েছে ১০৪ টাকা।
শতকরা হিসেবে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ন্যাশনাল হাউজিং ফিনান্সের দর। ৮.১৩ বা তিন টাকা বেড়ে এই কোম্পানির শেয়ার দর দাঁড়িয়েছে ৩৯ টাকা ৯০ পয়সা।
৩৭টি মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতেও গেল আরও একটি ভালো দিন। ৩৭টি ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৩টির। কমেছে মাত্র পাঁচটির দাম। বাকি নয়টির দাম ছিল অপরিবর্তিত।
এখন বিমার পড়তি সময়
৫ এপ্রিল লকডাউন শুরুর পর থেকে কেবল বিমা খাতে ভর করেই এগিয়েছে পুঁজিবাজার। শেয়ারের দাম দেড় থেকে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে এক মাসে।
তবে ঈদের আগে আগে এই খাতে দেখা দেয় পতন। মাঝে একদিন উত্থান ছাড়া বাজার পড়েছে পাঁচ দিন। ঈদ শেষেও একই প্রবণতা দেখা গেল।
সবচেয়ে বেশি দর পতন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে ছিল মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্স, যার শেয়ার দর কমেছে ৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
এরপরেই ছিল যথাক্রমে ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, যার শেয়ার দর কমেছে ৩ দশমিক ৬২ শতাংশ। কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
এছাড়া সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্স, সন্ধানী ইন্স্যুরেন্স, প্রভাতি ইন্স্যুরেন্স, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স, মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ২ শতাংশ পর্যন্ত।
অন্যান্য খাতে যে প্রবণতা
লকডাউনের পর থেকে প্রথমে বিমা, পরে মিউচ্যুয়াল ফান্ড, এরপর ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান আর শেষে বস্ত্র খাতে উত্থানের পরও আরও বেশ কিছু খাত ছিল ঘুমিয়েই।
ঈদের ছুটি শেষে বড় খাতগুলোর মধ্যে প্রকৌশলের কোম্পানিগুলোর প্রতিও বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ দেখা গেল।
এই খাতের ৪২টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ২৮টির। সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি হয়েছে যেসব কোম্পানির, তার মধ্যে আছে প্রকৌশল খাতের সুহৃদ ও বিডি ওয়েল্ডিং। দুটির দরই বেড়েছে একদিনে যত বাড়া সম্ভব ততই।
খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ২০টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৪টির। এই বাতে শতকরা হিসেবে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ফাইন ফুডের দর। শেয়ার প্রতি তিন টাকা ২০ পয়সা বা ৬.৯৬ শতাংশ বেড়েছে এই কোম্পানির দর।
তথ্য প্রযুক্তি খাতের ১১টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে নয়টির। সবচেয়ে বেশি দুই টাকা বেড়েছে আমার নেটের দর।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ২২টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির। কমেছে পাঁচটির। আর পাল্টায়নি একদিন দর।
ওষুধ ও রসায়ন খাতের ৩১টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ২০টির। কমেছে পাঁচটির। আর পাল্টায়নি বাকি ছয়টির দর।
সূচক ও লেনদেন
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৬২ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৮১৩ পয়েন্টে।
শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস বেড়েছে ৭ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৮২ পয়েন্টে।
বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক বেড়েছে ৫ দশমিক ৭৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৯২ পয়েন্টে।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৯৯ দশমিক ২০ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৮৫৭ পয়েন্টে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৮৬টির, কমেছে ৭১টির। পাল্টায়নি ৩২টির। মোট লেনদেন হয়েছে ৬৩ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগসহ দেশের বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারি, রাজারহাট, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, বরিশাল এবং পটুয়াখালী জেলাসহ ঢাকা, রাজশাহী এবং খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
এছাড়া সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস জানায়।
আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চল হয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রংপুর বিভাগের ডিমলায়, ২২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আজ ভোর ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৭৮ শতাংশ।
ঢাকায় বাতাসের গতি পশ্চিম অথবা দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হতে পারে।
ঢাকায় আজ সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৬টা ৩১ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ভোর ৫টা ১৯ মিনিটে।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, এই প্রজন্মই দেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ।
তিনি তার ভেরিফাইড ফেসবুকে ‘কয়েকটি কথা’ শিরোনামে আজ একটি পোস্টে এই কথা বলেছেন।
তিনি সেখানে লিখেছেন, ‘একটি দলের এক্টিভিস্টরা বারবার লীগ নিষিদ্ধের আইনি প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে ছাত্ররা রাজি ছিল না, এটা বলে বেড়াচ্ছেন। মিথ্যা কথা। ক্যাবিনেটে প্রথম মিটিং ছিল আমার। আমি স্পষ্টভাবে এই আইনের অনেকগুলো ধারা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলাম। নাহিদ-আসিফও আমার পক্ষে ছিল স্বভাবতই। দল হিসেবে বিচারের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হলে একজন উপদেষ্টার জবাব ছিল ন্যুরেমবার্গ ট্রায়ালের মত পশ্চাৎপদ উদাহরণ আমরা আমলে নিতে পারি কি-না। এই যুক্তি যিনি দিয়েছিলেন, একটি দলের এক্টিভিস্টরা আজ সমানে তার পক্ষে স্ট্যাটাস দিয়ে যাচ্ছেন ছাত্রদের কুপোকাত করতে। অথচ, উনার সাথে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। মিছে বিরোধ লাগানোর অপচেষ্টা করে কোনো লাভ নেই।
বলে রাখা ভালো, দু’জন আইন ব্যাকগ্রাউন্ডের উপদেষ্টা (একজন ইতোমধ্যে মারা গিয়েছেন) ও আমাদের বক্তব্যের পক্ষে ছিলেন। সংস্কৃতি উপদেষ্টাও পক্ষে ছিলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে কথা হয়েছে। দল হিসেবে লীগের বিচারের প্রভিশন অচিরেই যুক্ত করার আশ্বাস দিয়েছেন উক্ত উপদেষ্টা। উনাকে ধন্যবাদ।
মিথ্যা বলা বন্ধ করুন। ঘোষণাপত্র নিয়ে আপনাদের দুই মাস টালবাহানা নিয়ে আমরা বলব। ছাত্রদের দল ঘোষণার প্রাক্কালে আপনারা দলীয় বয়ানের একটি ঘোষণাপত্র নিয়ে আলোচনা শুরু করেছিলেন। সমস্যা নেই, আমরাও চাই সবাই স্বীকৃত হোক। কিন্তু, এখন সেটাও হতে দিবেন না। দোষ আমাদেরও কম না। আমরা আপনাদের দলীয় প্রধানের আশ্বাসে আস্থা রেখেছিলাম।
পুনশ্চ: আমরা নির্বাচন পেছাতে চাইনা। ডিসেম্বর টু জুনের মধ্যে নির্বাচন হবেই।
আপনারা যদি মনে করেন, ছাত্ররা নিজেদের আদর্শ ও পরিকল্পনা নিতে পারে না বরং এখান থেকে ওখান থেকে অহি আসলে আমরা কিছু করি। তাহলে আপনারা হয় ছাত্রদের খাটো করে দেখছেন, নয়তো ছাত্রদের ডিলেজিটিমাইজ করার পরিকল্পনায় আছেন। সেই আগস্ট থেকেই আমরা জাতির জন্য যা ভালো মনে করেছি, সবার পরামর্শ নিয়েই করেছি। বরং, উক্ত দলকেই আমরা বেশি ভরসা করেছি। সবার আগে উনাদের সাথেই পরামর্শ করেছি। ভরসার বিনিময়ে পেয়েছি অশ্বডিম্ব। সব দোষ এখন ছাত্র উপদেষ্টা নন্দঘোষ!
আমরা উক্ত দলকে বিশ্বাস করতে চাই। উক্ত দলের প্রধানকে বিশ্বাস করতে চাই। উনি আমাদের বিশ্বাসের মূল্য দিয়ে লীগ নিষিদ্ধ প্রশ্নে ও ঘোষণাপত্র প্রকাশে দেশপ্রেমিক ও প্রাগমাটিক ভূমিকা রাখবেন বলেই আস্থা রাখি। উক্ত দলকে নিয়ে কে কি বলবে জানি না কিন্তু আমরা চাই উক্ত দল ছাত্রদের সাথে নিয়ে দেশের পক্ষে, অভ্যুত্থানের শত্রুদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ঐকমত্যের নেতৃত্ব দিক। দেশপ্রেমিক ও সার্বভৌমত্বের পক্ষের শক্তি হিসাবে নেতৃত্ব দিলে ছাত্ররা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় উনাদের সাথে চলবেন।
ঐক্যবদ্ধ হোন। নেতৃত্ব দিন। এই প্রজন্মকে হতাশ করবেন না।‘এই প্রজন্ম দেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ।’
মাহফুজ আলম ২০২৪ এর জুলাইয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটির একজন সমন্বয়ক ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন মাহফুজ আলম।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও জনগণের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার যে দাবি উঠেছে, তা অন্তর্বর্তী সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে।
আজ শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও জনগণের পক্ষ থেকে স্বৈরশাসন ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার যে দাবি উঠেছে, তা সরকার গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে। এ ব্যাপারে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ইতোমধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করেছে, তাদের সাথে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
সকলকে ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের নেতা ও সমর্থকদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিষয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন সরকার বিবেচনায় রাখছে। সে পর্যন্ত সকলকে ধৈর্য ধারণ করার আহ্বান জানাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে সরকার জনদাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রচলিত আইনের অধীনে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সরকারের পক্ষে থেকে মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে জড়িত সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দেশত্যাগের বিষয়ে বলা হয়, ফ্যাসিবাদী সরকারের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও হত্যা মামলার আসামি আবদুল হামিদের বিদেশ গমন সম্পর্কে জনমনে ক্ষোভের বিষয়ে সরকার অবগত। এ ঘটনার সাথে জড়িত সকলের বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনগত ব্যবস্থা নিতে সরকার বদ্ধপরিকর রয়েছে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দেশত্যাগের ঘটনায় পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শককে (প্রশাসন) প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) এই কমিটি গঠন করা হয় বলে জানান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফয়সাল হোসেন।
হামিদের দেশত্যাগের ঘটনায় ইতোমধ্যে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এছাড়া এই ঘটনায় ইমিগ্রেশন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এসপি) তাহসিনা আরিফকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একইসঙ্গে মো. আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জের সদর থানায় দায়ের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. আজহারুল ইসলাম ও এসবির এটিএসআই মো. সোলায়মাকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এর আগে সকালেই খবর ছড়িয়ে পড়ে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুইবার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করা আবদুল হামিদ বুধবার শেষ রাতে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে দেশ ছেড়েছেন। তিনি চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে গেছেন বলে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
জুলাই অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মীর নামে মামলা হয়েছে। কিশোরগঞ্জ সদর থানার একটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আব্দুল হামিদকেও আসামি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীকে চেয়ারম্যান করে আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গঠন করেছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার আইন ও বিচার বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রাপ্ত অভিযোগ ও অভিযুক্তের সংখ্যা, দ্রুত বিচার-নিষ্পত্তির প্রয়োজন, কাজের চাপ ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালটি গঠন করা হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের সদস্য পদে নিয়োগ পেয়েছেন, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মঞ্জুরুল বাছিদ এবং মাদারীপুরের জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর চেয়ারম্যান ও সদস্যরা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকের প্রাপ্য বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা প্রাপ্ত হবেন।
এছাড়া প্রজ্ঞাপনে বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার, বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বিদ্যমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
ভারত ও পাকিস্তানের চলমান সংঘাতকে ঘিরে যশোরের ৭০ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। তবে বিজিবি টহল জোরদারের পাশাপাশি গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানোয় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে।
বিজিবির দেওয়া তথ্যমতে, যশোরে ৭০ কিলোমিটার এই সীমান্ত রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে সাতক্ষীরার ৭০ ব্যাটালিয়ন রয়েছে। সীমান্ত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নীরব নজরদারির সঙ্গে বিজিবি জোরদার করেছে টহল। এলাকাবাসীও সীমান্তের দিকে নজর রাখছেন।
সীমান্তবাসী আল মামুন জানিয়েছেন, এখনও যশোর সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। বিএসএফের অপতৎপরতায় কোনো প্রকার অনুপ্রবেশ বা চোরাচালান বিজিবির কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রতিহত করতে প্রস্তুত এলাকাবাসী।
সীমান্ত এলাকার জনপ্রতিনিধি আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তানের থাকলেও এই সীমান্ত এখন স্বাভাবিক। তবে আগে ৫০০ গজ অন্তর একজন বিএসএফ সদস্য দায়িত্ব পালন করলেও এখন ৩০০ গজ অন্তর দেখতে পাওয়া গেছে। এটা কিছুটা ভাবিয়ে তুলেছে। যদি বিএসএফ কোনোরকম তৎপরতা দেখায়, তাহলে বিজিবিকে সঙ্গে নিয়ে তা প্রতিহত করা হবে।’
৪৯ বিজিবির কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী জানান, সীমান্তে বিজিবিকে কঠোর আবস্থানে রাখা হয়েছে।
নিরাপওা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ভারত থেকে যাতে কোনো অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে, সেজন্য বিজিবিও টহল ব্যবস্থা জোরদার করেছে।
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে থেমে থাকা রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সে বাসের ধাক্কায় নারীসহ ৫ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও ৩ জন। হতাহতের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ মে) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের নীমতলি এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন— আব্দুস সামাদ ফকির, তার ছেলে বিল্লাহ ফকির, মেয়ে আফসানা ও এ্যাম্বুলেন্স চালক। অপরজনের নাম জানা যায়নি।
আহতরা জানান, তাদের বাড়ি মাদারীপুরের সদর উপজেলার মিঠাপুকুর এলাকায়। বিল্লাল ফকিরের স্ত্রী রোজিনা বেগম (৩০) অন্তঃসত্ত্বা। চলতি মাসের ২৩ তারিখ তার বাচ্চা প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ রয়েছে। তবে গতরাত থেকে তার ব্যাথা হচ্ছিল। এজন্য সকালে একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে তাতে পরিবারটির ১০ জন মিলে ঢাকার পথে আসছিলেন। ঢাকার ধানমন্ডি এলাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার কথা ছিল। অ্যাম্বুলেন্সে করে রওনা দেওয়ার পর এক্সপ্রেসওয়ের নীমতলি এলাকায় আসার পর সেটির চাকা ব্লাস্ট হয়ে যায়। এরপর রাস্তার ডান পাশে চাপিয়ে সেটির চাকা মেরামত করছিলেন চালক। আর তারা কয়েকজন অ্যাম্বুলেন্সের ভিতরে বসে ছিলেন, আর কয়েকজন পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। মেরামত প্রায় শেষের দিকে গোল্ডেন লাইন পরিবহনের একটি বাস পিছন থেকে এসে সজোরে অ্যাম্বুলেন্সে ধাক্কা দেয়।
এদিকে, গোল্ডেন লাইন পরিবহনের বাসটির হেল্পার সাইফুল ইসলাম শান্ত জানান, তারা কুষ্টিয়া থেকে যাত্রীবোঝাই বাসটি নিয়ে আসতেছিলেন ঢাকার আব্দুল্লাহপুর এলাকায়। নীমতলি এলাকায় এক্সপ্রেসওয়ের ডান পাশের লেনে দাঁড় করানো ছিল অ্যাম্বুলেন্সটি। তখন দ্রুতগতির বাসটি চালক ফয়সাল (৪০) ব্রেক করেও থামাতে পারেনি। সজোরে গিয়ে ধাক্কা লাগে থেমে থাকা অ্যাম্বুলেন্সের পিছনে।
এদিকে হাসাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী জানান, মাওয়ার নিমতলা এলাকায় একটি অ্যাম্বুলেন্সে বাস ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে একজন মারা যান। আর আহতদের সবাইকে ঢাকা মেডিকেল পাঠান হয়েছে। ঢাকা মেডিকেলে কেউ মারা গিয়েছে কিনা সেটি তার জানা নেই। তবে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। ঘটনাস্থলে যেই নারী নিহত হয়েছেন তার লাশ পুলিশ হেফাজতে আছে। বাস, অ্যাম্বুলেন্স দুটিই জব্দ করা হয়েছে।
মন্তব্য