× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

অর্থ-বাণিজ্য
২৩ ব্যাংকের লভ্যাংশ ২ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা
google_news print-icon

২৩ ব্যাংকের লভ্যাংশ ২ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা

২৩-ব্যাংকের-লভ্যাংশ-২-হাজার-৩৫৩-কোটি-টাকা
পুঁজিবাজারে লেনদেন দেখছেন বিনিয়োগকারীরা। ছবি: নিউজবাংলা
বেশির ভাগ ব্যাংকের শেয়ার দর এখন অভিহিত মূল্যের কাছাকাছি বা দ্বিগুণের কম হওয়ায় ব্যাংকে টাকা রাখার চেয়ে শেয়ার কিনে রাখাই বেশি লাভজনক হচ্ছে। এখন ব্যাংকে টাকা রাখলে বছরে সাড়ে ৪ থেকে ৬ শতাংশ সুদ পাওয়া যায়। অথচ শেয়ারমূল্যের তুলনায় নগদ লভ্যাংশ পাওয়া যাচ্ছে এর চেয়ে বেশি হারে।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে নগদে লভ্যাংশ বিতরণের প্রবণতা আরও বেড়েছে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ২৩টি ব্যাংক ২ হাজার ৩৫৩ কোটি ৯০ লাখ ৪৮ হাজার ৬৪৮ টাকা ২০ পয়সা নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।

এর মধ্যে ১৬টি ব্যাংক নগদের পাশাপাশি বোনাস শেয়ারও দিতে যাচ্ছে। আর সাতটি ব্যাংক কেবল নগদে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।

আর তিনটি ব্যাংক কেবল বোনাস এবং একটি ব্যাংক লভ্যাংশ না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

আরও দুটি ব্যাংক গত বছর ২০০ কোটি টাকা নগদে বিতরণ করেছিল, যেগুলো এখনও লভ্যাংশ সংক্রান্ত সভা করেনি। তারা গত বছরের মতোই লভ্যাংশ দিলে শেষ পর্যন্ত নগদ লভ্যাংশ আড়াই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।

এখন পর্যন্ত লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে মোট ২৭টি ব্যাংক। আরও চারটির লভ্যাংশ ঘোষণা সংক্রান্ত সভা বাকি আছে।

লভ্যাংশ বিতরণে বিধিনিষেধ
এবার করোনা পরিস্থিতিতে শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৭৫ পয়সার বেশি নগদে লভ্যাংশ বিতরণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর এই সর্বোচ্চ পরিমাণ নগদে লভ্যাংশ দিয়েছে তিনটি ব্যাংক। এগুলো হলো সিটি, ইবিএল ও যমুনা ব্যাংক।

টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি নগদ লভ্যাংশ বিতরণ করতে যাচ্ছে সিটি ব্যাংক। তারা ১৭৭ কোটি টাকারও বেশি বিতরণ করতে যাচ্ছে। এ ছাড়া প্রাইম ব্যাংক ১৬৯ কোটি, ইসলামী ব্যাংক, ইবিএল ১৪২ কোটি, ব্র্যাক ১৩২ কোটি, প্রিমিয়ার ব্যাংক ১৩০ কোটি টাকা লভ্যাংশ বিতরণ করতে যাচ্ছে।

পুঁজিবাজারে এর আগে কখনও কোনো খাতের এমনকি ব্যাংকিং খাতেরও এত বিপুল পরিমাণে নগদ লভ্যাংশ বিতরণের ইতিহাস নেই।

২৩ ব্যাংকের লভ্যাংশ ২ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা
করোনাকালে এবার বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে লভ্যাংশের সীমা বেঁধে দিয়েছিল

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ব্যাংকগুলো যখন বেশি বেশি স্টক দিচ্ছিল, তখন ক্যাশ লভ্যাংশের বিষয়টি এসেছিল। এতে পুঁজিবাজারের জন্য ভালো হয়েছে। এতে বিনিয়োগকারীরা অন্তত লভ্যাংশ পাওয়ার আশায় ব্যাংকে বিনিয়োগ করবেন।’

ব্যাংকে টাকার রাখার চেয়ে শেয়ার কিনলে লাভ বেশি

চলতি বছর বেশ কিছু ব্যাংক যে পরিমাণ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে সেটি সঞ্চয়ের সুদহারের চেয়ে বেশি।

বেশির ভাগ ব্যাংকের শেয়ারদর এখন অভিহিত মূল্যের কাছাকাছি বা দ্বিগুণের কম হওয়ায় এখন ব্যাংকে টাকার রাখার চেয়ে শেয়ার কিনে রাখাই বেশি লাভজনক হচ্ছে।

এখন ব্যাংকে টাকা রাখলে বছরে সাড়ে ৪ থেকে ৬ শতাংশ সুদ পাওয়া যায়। অথচ শেয়ারমূল্যের তুলনায় নগদ লভ্যাংশ পাওয়া যাচ্ছে এর চেয়ে বেশি হারে।

গত এক বছরে প্রাইম ব্যাংকের শেয়ারদর ছিল ১৪ টাকা ২০ পয়সা থেকে ১৮ টাকা ৬০ পয়সা। এই ব্যাংকের শেয়ারধারীরা এবার দেড় টাকা করে লভ্যাংশ পেতে যাচ্ছেন। অর্থাৎ শেয়ারদরের তুলনায় লভ্যাংশ (ইল্ড) ছিল ৮ থেকে সাড়ে ১০ শতাংশ।

প্রিমিয়ার ব্যাংক এবার শেয়ার প্রতি ১ টাকা ২৫ পয়সা নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। গত এক বছরে এই ব্যাংকের শেয়ারদর ছিল ৯ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ১৪ টাকা ২০ পয়সা। এই হিসাবে এই ব্যাংকের শেয়ারধারীরা ৯ থেকে ১২ দশমিক ৬০ শতাংশ মুনাফা পাবেন।

গত এক বছরে মার্কেন্টাইলে ব্যাংকের শেয়ারদর ছিল ১০ টাকা ৬০ পয়সা থেকে ১৪ টাকা ২০ পয়সা। এই ব্যাংকের শেয়ারধারীরা এক টাকা করে নগদ পেতে যাচ্ছেন। এই ব্যাংকের শেয়ারধারীদের ইল্ড ৭ থেকে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ।

২৩ ব্যাংকের লভ্যাংশ ২ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা
গত ছয় বছর ধরে যমুনা ব্যাংক নগদে সবচেয়ে বেশি লভ্যাংশ দিয়ে আসছে

যমুনা ব্যাংকের দাম গত এক বছরে সর্বনিম্ন ছিল ১৬ টাকা, আর সর্বোচ্চ ২০ টাকা ৪০ পয়সা। এই ব্যাংকের শেয়ারধারীরা নগদ লভ্যাংশ পেতে যাচ্ছেন ১ টাকা ৭৫ পয়সা।

যাদের শেয়ার কেনা ১৬ টাকায়, তারা শেয়ারমূল্যের প্রায় ১১ শতাংশ পাচ্ছেন লভ্যাংশ হিসেবে, আর যাদের কেনা ২০ টাকা ৪০ পয়সায়, তারা পাচ্ছেন ৮ দশমিক ৫ শতাংশ।

এ রকম আরও অন্তত ১০টি ব্যাংক আছে যেগুলোর লভ্যাংশের ইল্ড বাজারে বর্তমানে সুদহারের চেয়ে বেশি। পাশাপাশি পাওয়া গেছে বোনাস শেয়ার।

এত বেশি হারে লভ্যাংশ বিতরণ করলেও ব্যাংকের শেয়ারের দর একেবারে তলানিতে।

নিয়মিত লভ্যাংশ দিয়ে আসা তিনটি ব্যাংকের শেয়ারদর এখন ১০ টাকার নিচে। আরও একটি লোকসানি ব্যাংকের শেয়ারদর ৫ টাকার নিচে।

নিয়মিত লভ্যাংশ দেয়া অন্য একটি ব্যাংকের শেয়ারদর ১০ টাকা।

১০ থেকে ১৫ টাকার মধ্যে দাম আছে নয়টির। এর মধ্যে একটি কেবল এবার ৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। বাকি সবগুলোই ১০ বা তার চেয়ে বেশি হারে লভ্যাংশ দিয়েছে। এর মধ্যে একটি ২০ ও একটি ১৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে।

সাতটি ব্যাংকের শেয়ারদর এখন ১৫ থেকে ২০ টাকার মধ্যে। এর মধ্যে দুটি সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। সর্বোচ্চ ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে একটি।

অর্থনীতিবিদ আবু আহমেদ বলেন, ‘পুঁজিবাজারে যে লেনদেন হয় তার ৯০ শতাংশ গেমলিং করে হয়। ব্যাংকে গেমলিং কম, কারণ তাদের ইক্যুইটি বেশি। বিনিয়োগকারীরা এখন স্বল্প সময়ের লেনদেন করে মুনাফা তুলে নেয়ার পক্ষে, যা ব্যাংকে হচ্ছে না।’

নগদে লভ্যাংশের প্রবণতা বাড়ে গত বছর থেকে

পুঁজিবাজারে নগদ লভ্যাংশের প্রবণতা বাড়ে ২০১৯ সালের বাজেটে কর প্রস্তাবের পর। তখন বলা হয়, কোনো কোম্পানি নগদ লভ্যাংশের সমপরিমাণ বোনাস দিলে বোনাসের উপর কর দিতে হবে না। আর শুধু বোনাস দিলে অথবা নগদ লভ্যাংশের চেয়ে বেশি বোনাস দিলে ১০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে।

এই বিধানের পর ২০২০ সাল থেকেই ব্যাংকগুলো বোনাসের সমপরিমাণ নগদ লভ্যাংশ দিতে থাকে। যদিও করোনা পরিস্থিতিতে ব্যাংকের হাতে নগদ টাকা রাখার সুবিধার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকগুলোকে কেবল বোনাস শেয়ার দিকে বাড়তি করারোপের শর্ত থেকে মুক্তি দেয়া হয়। তার পরেও কোম্পানিগুলো বোনাসের পাশাপাশি নগদ লভ্যাংশ বিতরণ করে।

২৩ ব্যাংকের লভ্যাংশ ২ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা
২০১৯ সালের বাজেটে বলা হয়, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি কেবল বোনাস শেয়ার দিলে বেশি কর দিতে হবে। এরপর থেকে নগদে লভ্যাংশ বাড়ে

মহামারি পরিস্থিতিতে টানা দ্বিতীয় বছর এই প্রবণতা চালু রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তালিকাভুক্ত ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যার আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শেয়ারহোল্ডারদের মনোবল ধরে রাখতে প্রায় প্রতিটি ব্যাংক ভালো লভ্যাংশ দিয়েছে। ব্যাংকের আর্থিক হিসাব অনেকটাই স্বচ্ছ। যে কারণে এ খাত থেকে প্রতি বছর ভালো লভ্যাংশ দেয়া হয়।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে শেয়ারবাজারে অন্যান্য খাতের তুলনায় ব্যাংক খাত এখনও বিনিয়োগযোগ্য। লভ্যাংশের তুলনায় ব্যাংকের চেয়ে কম দামে অন্য কোনো শেয়ার নেই বললেই চলে। কিন্তু এরপরেও বিনিয়োগকারীরা সেদিকে যেতে চান না। অনেকে গুজবনির্ভর বিনিয়োগে যান।’

শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের কোম্পানি সচিব আবুল বাশার বলেন, ‘ব্যাংকগুলোর লভ্যাংশ থেকে ভালো রিটার্ন পাওয়া সম্ভব। ব্যাংকের শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা যেন আরও সুদৃঢ় হয় সেজন্য করোনাতে ব্যাংকগুলো শেয়ারধারীদের ভালো লভ্যাংশ দিয়েছে।’

কোন ব্যাংক কত নগদ লভ্যাংশ দিল

আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক এবার শেয়ার প্রতি দেড় টাকা করে লভ্যাংশ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ব্যাংকটির শেয়ার সংখ্যা ১০৬ কোটি ৪৯ লাখ ২ হাজার ১৮৫টি। এই হিসাবে ব্যাংকটি লভ্যাংশ দেবে ১৫৯ কোটি ৭৩ লাখ ৫৩ হাজার ২৭৭ টাকা ৫০ পয়সা।

ব্যাংক এশিয়া শেয়ার প্রতি লভ্যাংশ দিচ্ছে ১ টাকা করে। এই হিসাবে ব্যাংকটি বিতরণ করবে ১১৬ কোটি ৫৯ লাখ ৬ হাজার ৮৬০ টাকা।

শেয়ার প্রতি ১ টাকা হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংক লভ্যাংশ বিতরণ করবে ১৩২ কোটি ৫৮ লাখ ৭৮ হাজার ৪৭৬ টাকা। পাশাপাশি ৫ শতাংশ হারে প্রতি ১০০ শেয়ারে পাঁচটি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লভ্যাংশ দিচ্ছে সিটি ব্যাংক। শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৭৫ পয়সা হিসেবে তারা বিতরণ করবে ১৭৭ কোটি ৮৬ লাখ ৭৬ হাজার ৬৫৬ টাকা ৭৫ পয়সা। পাশাপাশি ৫ শতাংশ হারে প্রতি ১০০ শেয়ারে পাঁচটি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

২৩ ব্যাংকের লভ্যাংশ ২ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা
টাকার অংকে এবার সবচেয়ে বেশি নগদ লভ্যাংশ দিতে যাচ্ছে সিটি ব্যাংক

ঢাকা ব্যাংক শেয়ার প্রতি ৬০ পয়সা করে বিতরণ করবে মোট ৫৩ কোটি ৭৫ লাখ ২৩ হাজার ৪৪৬ টাকা। পাশাপাশি ৬ শতাংশ হারে প্রতি ১০০ শেয়ারে ছয়টি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

শেয়ার প্রতি দেড় টাকা করে ডাচ বাংলা ব্যাংক দিচ্ছে ৯৪ কোটি ৮৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। পাশাপাশি ১৫ শতাংশ হারে প্রতি ১০০ শেয়ারে ১৫টি বোনাস শেয়ারও দিয়েছে ব্যাংকটি।

ইবিএল শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৭৫ পয়সা করে বিতরণ করবে মোট ১৪২ কোটি ৬ লাখ ৪৯ হাজার ২০৬ টাকা। পাশাপাশি ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ হারে প্রতি ২০০ শেয়ারে ৩৫টি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

২৩ ব্যাংকের লভ্যাংশ ২ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা
গত ডিসেম্বরে সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য নগদ ও বোনাস মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি লভ্যাংশ দিতে যাচ্ছে ইবিএল

এক্সিম ব্যাংক শেয়ার প্রতি ৭৫ পয়সা করে লভ্যাংশ দেবে মোট ১০৫ কোটি ৯১ লাখ ৮৮ হাজার ৩০১ টাকা। পাশাপাশি ২ দশমিক ৫ শতাংশ হারে প্রতি ২০০ শেয়ারে পাঁচটি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

ইসলামী ব্যাংক শেয়ার প্রতি ১ টাকা করে বিতরণ করবে মোট ১৬০ কোটি ৯৯ লাখ ৯০ হাজার ৬৬৮ টাকা।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক শেয়ার প্রতি ৫০ পয়সা করে নগদ ও প্রতি ১০০ শেয়ারে পাঁচটি বোনাস শেয়ার দিতে যাচ্ছে। এই হিসেবে এই ব্যাংকটি বিতরণ করবে মোট ৪৭ কোটি ৪৩ লাখ ৮০ হাজার ১০১ টাকা ৫০ পয়সা।

শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৭৫ পয়সা করে মোট ১৩১ কোটি ১১ লাখ ৪৪ হাজার ৮৮৭ টাকা ৫০ পয়সা বিতরণ করবে যমুনা ব্যাংক।

মার্কেন্টাইল ব্যাংক শেয়ার প্রতি ১ টাকা করে বিতরণ করবে মোট ১০৩ কোটি ৩২ লাখ ১৭ হাজার ২৮ টাকা। পাশাপাশি ৫ শতাংশ হারে প্রতি ১০০ শেয়ারে পাঁচটি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

২৩ ব্যাংকের লভ্যাংশ ২ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা
গত ছয় বছর ধরেই বেশ ভালো অংকের নগদ মুনাফা দিয়ে আসছে মার্কেন্টাইল ব্যাংক

শেয়ার প্রতি ৭৫ পয়সা করে মোট ৭০ কোটি ৯৪ লাখ ৪৪ হাজার ৮৬০ টাকা ৭৫ পয়সা লভ্যাংশ দেবে এনসিসি ব্যাংক। পাশাপাশি ৭.৫ শতাংশ হারে প্রতি ২০০ শেয়ারে ১৫টি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

নতুন তালিকাভুক্ত এনআরবিসি ব্যাংক বিতরণ করবে ৫২ কোটি ৬৮ লাখ ৮৭ হাজার ৭৪৮ টাকা ৫০ পয়সা। পাশাপাশি ৫ শতাংশ হারে প্রতি ১০০ শেয়ারে পাঁচটি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

শেয়ার প্রতি ৬০ পয়সা হিসেবে ওয়ান ব্যাংক দিচ্ছে মোট ৫৩ কোটি ১২ লাখ সাত হাজার ৮৪৩ টাকা। সঙ্গে সাড়ে ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ারও দেয়ার প্রস্তাবও দিয়েছে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ। এই হিসাবে প্রতি ২০০ শেয়ারে ১১টি বোনাস শেয়ার পাওয়া যাবে।

শেয়ার প্রতি ১ টাকা ২৫ পয়সা হারে ১৩০ কোটি টাকা ৩৮ লাখ ৩৮ হাজার ৪০৮ টাকা ৭৫ পয়সা লভ্যাংশ দেবে প্রিমিয়ার ব্যাংক। পাশাপাশি ৭.৫ শতাংশ হারে প্রতি ২০০ শেয়ারে ১৫টি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

প্রাইম ব্যাংক শেয়ার প্রতি দেড় টাকা হারে বিতরণ করতে যাচ্ছে মোট ১৬৯ কোটি ৮৪ লাখ ২৫ হাজার ২১৫ টাকা ৫০ পয়সা।

২৩ ব্যাংকের লভ্যাংশ ২ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা
প্রাইম ব্যাংকও এবার লভ্যাংশ হিসেবে প্রায় পৌনে দুইশ কোটি টাকা বিতরণ করতে যাচ্ছে

পূবালী ব্যাংক শেয়ার প্রতি ১ টাকা ২৫ পয়সা হারে মোট ১২৮ কোটি ৫৩ লাখ ৬৭ হাজার ৭৭৩ কোটি ৭৫ পয়সা লভ্যাংশ বিতরণ করতে যাচ্ছে।

শেয়ার প্রতি ৭০ পয়সা করে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক বিতরণ করেছে মোট ৬৮ কোটি ৪৩ লাখ ৪৯ হাজার ৪৭৩ টাকা। পাশাপাশি ৫ শতাংশ হারে প্রতি ১০০ শেয়ারে পাঁচটি বোনাস শেয়ারও দিয়েছে ব্যাংকটি।

শেয়ার প্রতি ৫০ পয়সা করে এসআইবিএল লভ্যাংশ দেবে মোট ৪৬ কোটি ৯০ লাখ চার হাজার ২১২ টাকা। পাশাপাশি ৫ শতাংশ হারে প্রতি ১০০ শেয়ারে পাঁচটি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

শেয়ার প্রতি টাকা হারে সাউথ ইস্ট ব্যাংক দিতে যাচ্ছে মোট ১১৮ কোটি ৮৯ লাখ ৪০ হাজার ৫২২ টাকা।

টাকার অঙ্কে সবচেয়ে কম লভ্যাংশ দিতে যাচ্ছে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক। এই ব্যাংকটি শেয়ার প্রতি ২৫ পয়সা করে বিতরণ করতে যাচ্ছে মোট ২৫ কোটি ১৪ লাখ ৯৭ হাজার ৬৯৭ টাকা। পাশাপাশি ২.৫ শতাংশ হারে প্রতি ২০০ শেয়ারে পাঁচটি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

উত্তরা ব্যাংক শেয়ার প্রতি ১ টাকা ২৫ পয়সা করে বিতরণ করতে যাচ্ছে মোট ৬২ কোটি ৭৪ লাখ ২৫ হাজার ৯৮৭ টাকা ৫০ পয়সা। পাশাপাশি ১২.৫ শতাংশ হারে প্রতি ২০০ শেয়ারে ২৫টি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

কেবল বোনাস শেয়ার দিল যারা

আরও তিনটি ব্যাংক এখন পর্যন্ত লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে যারা কেবল বোনাস শেয়ার দেবে। এর মধ্যে এবি ও আইএফআইসি ব্যাংক কেবল ৫ শতাংশ হারে (প্রতি ১০০ শেয়ারে পাঁচটি) এবং মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ১০ শতাংশ হারে (প্রতি ১০ শেয়ারে একটি) বোনাস শেয়ার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

২৩ ব্যাংকের লভ্যাংশ ২ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা
গত ডিসেম্বরে সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য কেবল বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে এমটিবি, এবি ও আইএফআইসি ব্যাংক

টানা লোকসানে থাকা আইসিবি ইসলামী ব্যাংক এবারও শেয়ারধারীদের মধ্যে কোনো লভ্যাংশ বিতরণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

যেসব ব্যাংক এখনও লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি

ন্যাশনাল, রূপালী, ট্রাস্ট ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক বা ইউসিবি এখনও লভ্যাংশ ঘোষণা সংক্রান্ত সভার কথাই জানায়নি।

আরও পড়ুন:
ব্যাংকের শেয়ারে এমন দিন আসেনি বহু বছর

মন্তব্য

আরও পড়ুন

অর্থ-বাণিজ্য
Traders want to increase the price of edible oil by 10 taka per liter not the state minister

ভোজ্যতেলের দাম লিটারে ১০ টাকা বাড়াতে চান ব্যবসায়ীরা, প্রতিমন্ত্রীর ‘না’

ভোজ্যতেলের দাম লিটারে ১০ টাকা বাড়াতে চান ব্যবসায়ীরা, প্রতিমন্ত্রীর ‘না’
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। দাম আন্তর্জাতিক বাজার দরের সঙ্গে সমন্বয় করা যেতে পারে, তবে সময় লাগবে। ভোজ্যতেলের নতুন চালান আমদানির ক্ষেত্রে দাম বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।’

ভোজ্যতেলের ওপর শুল্ক অব্যাহতির সময়সীমা শেষ হয়েছে সোমবার (১৫ এপ্রিল)। এ অবস্থায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম লিটারে ১০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।

বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিভিওআরভিএমএফএ) সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে।

বিভিওআরভিএমএফএ’র নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম মোল্লার পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, কাঁচামাল আমদানি ও ভোজ্যপণ্য উৎপাদনে কর অব্যাহতির মেয়াদ ১৫ এপ্রিল শেষ হচ্ছে বিধায় পরদিন ১৬ এপ্রিল থেকে ভ্যাট অব্যাহতির আগের নির্ধারিত মূল্যে পণ্য সরবরাহ করা হবে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের বোতল ১৭৩ টাকা, পাঁচ লিটারের বোতল ৮৪৫ টাকা ও এক লিটার পাম তেল ১৩২ টাকায় বিক্রি করা হবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গত ফেব্রুয়ারিতে পরিশোধিত ও অপরিশোধিত (অপরিশোধিত) সয়াবিন ও পাম তেলের মূল্য সংযোজন কর ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করে।

এদিকে মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। ভোজ্যতেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজার দরের সঙ্গে সমন্বয় করা যেতে পারে, তবে সময় লাগবে।

‘ভোজ্যতেলের নতুন চালান আমদানির ক্ষেত্রে দাম বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।’

আরও পড়ুন:
ভোজ্যতেলের আমদানিনির্ভরতা কমবে: খাদ্যমন্ত্রী
ভোজ্যতেলে ভ্যাটমুক্ত সুবিধা তিন মাস বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন
ভোজ্যতেলের দাম বাড়াতে সেই পুরোনো কৌশল

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
In the current financial year the majority of remittances have come to Dhaka district
বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশ্লেষণ

চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্সের সিংহভাগ এসেছে ঢাকা জেলায়

চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্সের সিংহভাগ এসেছে ঢাকা জেলায়
জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮ মাসে প্রবাসীরা ১ হাজার ৫০৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকা জেলায় ৫২৩ কোটি ও চট্টগ্রাম জেলায় ১৪২ কোটি ডলার এসেছে। এই সময়ে সিলেট জেলা ৮৭০ মিলিয়ন, কুমিল্লা ৮১০ মিলিয়ন ও নোয়াখালী ৪৬০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে।

প্রবাসীদের আয়ের একটি বড় অংশ‌ই আসে ঢাকায় অবস্থিত ব্যাংকের শাখাগুলোতে। অর্থাৎ প্রবাসীদের পরিবারের বেশিরভাগই ঢাকায় থাকেন বা তাদের অধিকাংশ অ্যাকাউন্ট ঢাকার ব্যাংক শাখায়।

ইউএনবি জানায়, রেমিট্যান্সের জেলাভিত্তিক চিত্র নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক বিশ্লেষণে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম। সিলেট তৃতীয় এবং কুমিল্লা চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে।

এরপরে রয়েছে উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী, মৌলভীবাজার, চাঁদপুর ও নরসিংদীর অবস্থান।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জেলাভিত্তিক প্রবাসী আয় প্রতিবেদনে গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হিসাব প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮ মাসে প্রবাসীরা ১ হাজার ৫০৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে এসেছে ২১৬ কোটি ডলার। তার আগের মাস জানুয়ারিতে দেশে প্রবাসী আয় ছিল ২১০ কোটি ডলার।

জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়কালে ঢাকা জেলায় এসেছে ৫২৩ কোটি ডলার এবং চট্টগ্রাম জেলায় এসেছে ১৪২ কোটি ডলার।

এই সময়ে সিলেট জেলা ৮৭০ মিলিয়ন ডলার, কুমিল্লা ৮১০ মিলিয়ন ডলার এবং নোয়াখালী ৪৬০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৮ কোটি, ফেনীতে ৩৭ কোটি, মৌলভীবাজারে ৩৬ কোটি, চাঁদপুরে ৩৫ কোটি ডলার এবং নরসিংদীতে ২৫০ মিলিয়ন ডলার এসেছে।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, প্রবাসী অধ্যুষিত জেলাগুলো থেকে বেশি প্রবাসী আয় আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। কিন্তু এমনটা হচ্ছে না। কারণ অনেক প্রবাসী বিদেশে স্থায়ী হয়েছেন। বরং তারা (প্রবাসীরা) দেশে থাকা সম্পদ বিক্রি করে বিদেশে নিয়ে যাচ্ছেন। ফলে অর্থ পাচার বাড়ছে।

আরও পড়ুন:
ঈদের আগের সপ্তাহে এসেছে সাড়ে ৪৫ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স
ঈদ সামনে রেখেও রেমিট্যান্স প্রবাহে নিম্নগতি
ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছে ২১৬ কোটি ডলার
চলতি মাসে দিনে গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৬ কোটি ৮৫ লাখ ডলার
ফেব্রুয়ারির ১৬ দিনে এসেছে ১২,৬০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Bangladesh GDP growth likely to be 61 in current fiscal year ADB

চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬.১%: এডিবি

চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬.১%: এডিবি পরপর দুই অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে এডিবি। ফাইল ছবি
এডিওতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার বিষয়ে এডিবি বলেছে, ২০২৪ (২০২৩-২৪) অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ছয় দশমিক এক শতাংশ পর্যন্ত। ২০২৫ (২০২৪-২৫) অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি আগের অর্থবছরের চেয়ে বেড়ে হতে পারে ছয় দশমিক ছয় শতাংশ।

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ছয় দশমিক এক শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)।

আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংকটি তাদের এপ্রিলের এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুকে (এডিও) এমন পূর্বাভাস দিয়েছে।

এডিওতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার বিষয়ে এডিবি বলেছে, ২০২৪ (২০২৩-২৪) অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ছয় দশমিক এক শতাংশ পর্যন্ত। ২০২৫ (২০২৪-২৫) অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি আগের অর্থবছরের চেয়ে বেড়ে হতে পারে ছয় দশমিক ছয় শতাংশ।

বাংলাদেশে কোনো বছরের জুলাই থেকে পরবর্তী বছরের জুন পর্যন্ত ১২ মাসকে এক অর্থবছর ধরা হয়। সে হিসাবে ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষ হচ্ছে চলতি বছরের ৩০ জুন।

এডিওতে বলা হয়, বিশ্বজুড়ে চাহিদা কমে যাওয়ার পরও বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী সস্তা তৈরি পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। ডলার সংকটের কারণে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা দেশে তৈরি সুতা ও বস্ত্র ব্যবহার করছেন।

মূল্যস্ফীতির বিষয়ে বলা হয়, মূল্যস্ফীতি কমার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন পণ্য ও সেবার ভোগ বাড়তে পারে। অন্যদিকে ভর্তুকি কম দেয়া এবং কৃচ্ছ্রতার ব্যবস্থাগুলো অব্যাহত রাখায় সরকারি পর্যায়ে ভোগও সামান্য বাড়তে পারে।

আরও পড়ুন:
৬ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিল আইএমএফ
চট্টগ্রামবাসীর জীবনমান উন্নয়নে এডিবির ঋণ পাচ্ছে বাংলাদেশ
প্রবৃদ্ধি কমে ৫.৬% হতে পারে: বিশ্ব ব্যাংক
আগামী অর্থবছর বাংলাদেশের জন্য ভালো বছর হবে
রামপুরা-আমুলিয়া-ডেমরা এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ২৬.১ কোটি ডলার দিচ্ছে এডিবি

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Inflation increased by 1014 percent in March

মার্চে মূল্যস্ফীতি ৯.৮১ শতাংশ

মার্চে মূল্যস্ফীতি ৯.৮১ শতাংশ
বিবিএসের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মার্চে খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশে। আর খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৬৪ শতাংশে।

চলতি বছরের মার্চে দেশে মূল্যস্ফীতি দশমিক ১৪ শতাংশ বেড়ে ৯ দশমিক ৮১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। এর আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে মূলস্ফীতির এই হার ছিল ৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ।

মঙ্গলবার সবশেষ আর্থিক পরিসংখ্যানে এই তথ্য প্রকাশ করেছে বিবিএস।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মার্চে খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশে। আর খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৬৪ শতাংশে। তুলনামূলকভাবে গত ফেব্রুয়ারিতে খাদ্য পণ্যের ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের ক্ষেত্রে মুদ্রাস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

গ্রামীণ অঞ্চলের তুলনায় শহরে উচ্চতর মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব পড়েছে। শহর এলাকায় মুদ্রাস্ফীতি ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ এবং গ্রামীণ অঞ্চলে ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ। মার্চে শহর এলাকায় খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৭১ শতাংশ এবং গ্রামীণ এলাকায় খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ ও খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৪১ শতাংশ।

‌আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) সাবেক জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘১৮ মাসেরও বেশি সময় ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে লড়াই করছে দেশ। আর এর বড় বিরূপ প্রভাব পড়ছে সীমিত আয়ের মানুষের ওপর।’

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পলিসি সুদের হার বৃদ্ধিসহ বেশ কিছু কৌশল বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে ব্যাংক ঋণের সুদের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৫৫ শতাংশে।

তবে ড. মনসুর উল্লেখ করেছেন, বিলম্ব এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই পদক্ষেপগুলো এখনও উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রভাব দেখাতে পারেনি।

ক্রমাগত উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির হারের পেছনে একটি অনিয়ন্ত্রিত বাজার ব্যবস্থা এবং নিয়মিত পণ্যের দাম বৃদ্ধিকে প্রাথমিকভাবে দায়ী হিসেবে চিহ্নিত করেছেন অর্থনীতিবিদরা।

আরও পড়ুন:
এপ্রিলে মূল্যস্ফীতি ৯.২৪%
‘মূল্যস্ফীতির জন্য যুদ্ধের পাশাপাশি দুর্বল বাজার ব্যবস্থাপনা দায়ী’
চার মাস ধরে কমছে মূল্যস্ফীতি
খাবারের দাম শহরের চেয়ে গ্রামে বেশি
মূল্যস্ফীতির হিসাবে স্বস্তির আভাস

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Buyers are saying that the market price of new money has accumulated

জমেছে নতুন টাকার বাজার, দাম বেশি বলছেন ক্রেতারা

জমেছে নতুন টাকার বাজার, দাম বেশি বলছেন ক্রেতারা ঈদের আগে রাজধানীর গুলিস্তানে জোরেশোরে চলছে নতুন টাকা বেচাকেনা। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস/নিউজবাংলা
ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে প্রতিবারের মতো এবারও রাজধানীতে জমে উঠেছে নতুন টাকার ব্যবসা, তবে অন্যবারের চেয়ে এবার নতুন টাকা কিনতে দাম বেশি দিতে হচ্ছে বলে দাবি করেছেন ক্রেতারা।

ঈদ উৎসবে দীর্ঘ ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে সালামিতে নতুন টাকা দেন অনেকে। এ কারণে বিশেষ দিনটির আগে চাহিদা বাড়ে ঝকঝকে টাকার।

ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে প্রতিবারের মতো এবারও রাজধানীতে জমে উঠেছে নতুন টাকার ব্যবসা, তবে অন্যবারের চেয়ে এবার নতুন টাকা কিনতে দাম বেশি দিতে হচ্ছে বলে দাবি করেছেন ক্রেতারা।

নতুন টাকার হাট যেখানে

রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে, গুলিস্তান শপিং কমপ্লেক্সের সামনে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন শাঁখারীবাজার মোড়, বাংলাবাজার মোড়সহ বেশ কিছু এলাকায় নতুন নোটের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা।

গুলিস্তান স্পোর্টস মার্কেটের সামনে সারি সারি ছোট টেবিল আর টুল নিয়ে মাথার ওপর ছাতা দিয়ে বসেছেন অর্ধশতাধিক বিক্রেতা। এসব দোকানে দুই টাকার নোট থেকে শুরু করে ৫০০ টাকার নতুন নোট বিক্রি হচ্ছে। তাদের ঘিরে রেখেছেন রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ক্রেতারা।

কোন নোটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি

রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে নতুন নোটের হাট বসলেও বিক্রয়মূল্য প্রায় একই। এসব দোকানে বান্ডেল আকারে সাজিয়ে রাখা হয় নতুন নোট।

প্রতিটি বান্ডেল হাজার টাকার সমান। সাধারণ সময়ে হাজার টাকা সমমূল্যের এসব বান্ডেল বিক্রি হয় ২০০ টাকা বেশি দরে, তবে ঈদের সময়ে তা ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বেশি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। নোটের চাহিদা অনুযায়ী দাম কম-বেশি হয়।

এ বছর ঈদে ১০ ও ২০ টাকার নতুন নোটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি বলে জানান বিক্রেতারা। এরপর ৫ ও ২ টাকার নোট বেশি বিক্রি হচ্ছে, তবে সচ্ছল ক্রেতারা বেশি পরিমাণে ৫০ ও ১০০ টাকার নোট কিনছেন।

টাকার বাজারে দুই টাকার নোট ৬০০ টাকার বান্ডেল বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়। পাঁচ টাকার বান্ডেল বিক্রি হচ্ছে হাজারে ৩৫০ টাকা বেশিতে। আবার ১০ টাকার এক বান্ডেল নোট বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৩০০ টাকায়।

২০ টাকার বান্ডেল বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ২৫০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকায়।

জমেছে নতুন টাকার বাজার, দাম বেশি বলছেন ক্রেতারা

বিক্রেতা ও ক্রেতাদের ভাষ্য

৫০ টাকার নোট এক বান্ডেল নিতে হলে বাড়তি দিতে হচ্ছে ২০০ টাকা। এ ক্ষেত্রে ১০০ টাকার বান্ডেলের চাহিদা কম থাকায় সেটা বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ১৫০ কিংবা ২০০ টাকায়। চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকায় ১০ টাকার নোটের দামও বেশি।

গুলিস্তানে নতুন টাকার ব্যবসায়ী জামাল হোসেন জানান, ঈদ উপলক্ষে প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকা বিক্রি করছেন তিনি। নতুন নোটের মধ্যে ১০ টাকার নোটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এর পরপরই বেশি চলে ২০ টাকার নোট, তবে ৫০০ কিংবা এক হাজার টাকার নোট এখানে চলে না।

এ বাজারেই নতুন টাকার ব্যবসা করেন ফারুক মিয়া। তিনি জানান, ঈদ সামনে রেখে প্রতিবারের মতো এবারও ক্রেতাদের সমাগম অনেক বেশি। বরাবরের মতো এবারও ১০ টাকার নোটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি, কিন্তু এবার টাকার দাম একটু বেশি হওয়ায় আগের মতো বেচাবিক্রি নেই।

রাজধানীর সদরঘাট এলাকায় ঝুট কাপড়ের ব্যবসা করেন মুন্সীগঞ্জের বাসিন্দা মনির হোসেন। তিনিও গুলিস্তানে নতুন টাকা কিনতে আসেন। প্রতি বছরই ঈদে বাড়ি ফেরার সময় নতুন নোট কেনেন তিনি।

জানতে চাইলে মনির হোসেন বলেন, ‘বিগত বছরের তুলনায় প্রতি বান্ডেলে ৩০ থেকে ৫০ টাকা বেশি দাম রাখা হচ্ছে।’

নারায়ণগঞ্জের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘ছেলে-মেয়ে ও প্রতিবেশীদের জন্য নতুন টাকা সংগ্রহ করেছি। ১০, ২০ ও ৫০ টাকার বান্ডেল কিনেছি। ঈদ উপলক্ষে নতুন টাকার দাম কিছুটা বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতারা।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইউছুব ওসমানের অভিযোগ, ‘এ বছর প্রতি বান্ডেলের দাম ২০ থেকে ৫০ টাকা বাড়তি নেয়া হচ্ছে। ভাগনে, ভাতিজি ও ছোট ভাইদের ঈদ সালামি দেব। সে কারণে পাঁচ হাজার টাকা কিনতে এসেছিলাম, কিন্তু গতবারের চেয়ে এবার দাম চড়া। কোনো দামাদামিরও সুযোগ নেই।’

জমেছে নতুন টাকার বাজার, দাম বেশি বলছেন ক্রেতারা

নতুন টাকার কদর কেন

ক্রেতারা জানান, ঈদ উপলক্ষে পরিবারের ছোট-বড় সবাই ও আত্মীয়স্বজনকে সালামি দেয়ার জন্য নতুন টাকা নিতে এসেছেন তারা। পুরাতন ১০০ টাকার নোটের পরিবর্তে যদি ১০ টাকার দুটি নতুন নোট দেয়া হয়, ওই ১০০ টাকার চেয়ে নতুন নোট পেয়ে হাজার গুণ বেশি খুশি হয়ে শিশুরা মুখে একটা চওড়া হাসি দেয়। শুধু শিশুরাই নয়, নতুন কড়কড়ে নোট পেতে বড়দেরও ভালো লাগে। এ ছাড়াও অনেকে সহকর্মী, অনেকে আবার রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের ঈদ উপহার হিসেবে দেয়ার জন্য নতুন টাকা সংগ্রহ করেন।

বিক্রেতারা বলছেন, সালামি দেয়ার কারণে ঈদ এলেই কদর বাড়ে টাকার নতুন নোটের। আবার অনেকে জাকাত, ফিতরা দিতেও নতুন টাকার ব্যবহার করে থাকেন। সারা বছর যে পরিমাণ নতুন টাকা বিক্রি হয়, তার অর্ধেকই বিক্রি হয় দুই ঈদে। এ জন্য তারা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।

গুলিস্তানে নতুন টাকা কিনতে আসা আবদুল আলিম জানান, তার বাড়ি রংপুর জেলায়। বাবা-মা ও স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে এরই মধ্যে শেষ করছেন কেনাকাটা। এখন তিনি গুলিস্তান এসেছেন কিছু নতুন নোট সংগ্রহ করার জন্য, যাতে এগুলো তিনি ঈদ বকশিস হিসেবে বাড়ির ছোটদের দিতে পারেন।

ব্যাংক ছেড়ে ফুটপাতে কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ব্যাংকের লাইনে দাঁড়িয়ে সময় নষ্ট হয়। অফিস সময়ের পরে ঝামেলামুক্তভাবে নতুন টাকা নিতেই এখানে এসেছি। যদিও এখানেও ভিড় কম না, তবে ব্যাংকের তুলনায় সময় কম নষ্ট হয়।’ আবদুল আলিমের মতো যারা সময় বাঁচাতে চান, তারাই গুলিস্তানসহ রাজধানীর ফুটপাতের ভ্রাম্যমাণ টাকার দোকানে ভিড় জমান।

শরীয়তপুরের বাসিন্দা মোহাম্মদ আলমগীর ব্যবসার কাজে ঢাকায় এসেছেন। কাজ শেষে নতুন নোট সংগ্রহ করতে এসেছেন গুলিস্তানে।

তিনি বলেন, ‘বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সবাইকে খুশি করতে হবে। বিশেষ করে ছোট ভাই-বোন বা আত্মীয়স্বজনকে ঈদের দিন নতুন টাকা সালামি দিতে হয়। ঈদের দিন তাদের খুশি করার জন্য তেমন বেশি কিছুর প্রয়োজন হয় না।

‘তাদের একটাই চাওয়া। সেটা হলো বোনাস। তাও যেই সেই টাকা দিলে নিবে না, তাদের দিতে হবে নতুন টাকা। নতুন টাকা হাতে পেলেই তারা মহা খুশি। এ জন্য এই নতুন টাকার কেনার জন্য এখানে এসেছি।’

৩০ বছরের বেশি সময় ধরে টাকার ব্যবসা করা ষাটোর্ধ্ব মোহাম্মদ জহিরুল মিয়া দোকান সাজিয়ে বসেছেন শাঁখারীবাজার মোড়ে। তিনি জানান, ঈদে সদরঘাট দিয়ে বাড়ি যাওয়ার সময় অনেকেই নতুন টাকা নিয়ে যাচ্ছেন। আবার পুরান ঢাকার আশপাশের লোকজনও নিচ্ছেন। নতুন টাকায় ঈদ সালামি তো অনেক দিনের রেওয়াজ।

গুলিস্তানের টাকার বাজারে বাবার অনুপস্থিতিতে দোকান সামলাচ্ছেন আরিফ হোসেন নামের এক যুবক। তিনি জানান, ঈদে এ ব্যবসা বেশ ভালো হয়, তবে এ বছর টাকার দাম কিছুটা বেশি। এ জন্য বিক্রি আগের তুলনায় কম।

জমেছে নতুন টাকার বাজার, দাম বেশি বলছেন ক্রেতারা

ব্যাংকের নতুন টাকা খোলা বাজারে কীভাবে

ঈদের খুশিকে কয়েক গুণ বাড়িতে দিতে এবার ১০৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকার নতুন নোট বাজারে ছেড়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাজারে নতুন টাকা ছাড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত ৩১ মার্চ থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকের নির্ধারিত শাখা থেকে নতুন নোট সংগ্রহ করছেন গ্রাহকরা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, সাভার, গাজীপুর, চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জ এলাকায় সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের ৮০টি শাখা থেকে ৫, ১০, ২০, ৫০ ও ১০০ টাকার এক বান্ডেল করে একজন গ্রাহক আঙুলের ছাপ দিয়ে একবারই মোট ১৮ হাজার ৫০০ টাকা বিনিময় করতে পারবেন, তবে গুলিস্তান বা অন্যান্য খোলা বাজারে কোনো কিছুই জমা না দিয়ে বাড়তি টাকা দিয়ে ক্রেতারা যেকোনো পরিমাণ নতুন টাকা কিনতে পারছেন।

সাধারণত বছরে দুই ঈদে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখার মাধ্যমে প্রতিবার ২৫ থেকে ৩৩ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট ছাড়া হয়। এবার প্রতিটি শাখাকে দৈনিক কমপক্ষে ৯০ জনকে নতুন টাকা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ হিসাবে একটি শাখা দৈনিক কমপক্ষে ১৬ লাখ ৬৫ হাজার টাকার নতুন নোট বিতরণ করবে। আর এক দিনে ৮০টি শাখার মাধ্যমে বিতরণ হবে ১৩ কোটি ৩২ লাখ টাকার নতুন নোট।

গ্রাহকদের দাবি, চাহিদার তুলনায় ব্যাংকগুলোতে সরবরাহ করা টাকা ছিল কম। ব্যাংকগুলোতে নতুন টাকা না পাওয়া গেলেও বাড়তি দামে খোলাবাজারে পাওয়া যাচ্ছে।

ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গ্রাহকদের চাহিদার তুলনায় টাকা দেয়া যায়নি। আরও বেশি টাকার চাহিদা ছিল। ব্যাংক থেকে টাকা না পেয়ে এখন গুলিস্তান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে বসা দোকানিদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা দিয়ে নতুন নোট সংগ্রহ করছেন অনেকে।

বিপুল চাহিদার খোলা বাজারে এত টাকা আসে কীভাবে এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ সবাই। পরিচয় দিয়ে কথা বলতে চাইলে বেশির ভাগ বিক্রেতা এড়িয়ে যান।

বেশ কয়েকজন বিক্রেতা জানান, নতুন টাকা সংগ্রহের জন্য ব্যাংকগুলোয় তাঁদের ঢুকতে দেয়া হয় না। ফলে ব্যাংক থেকে সরাসরি নতুন নোট কিনতে পারেন না তারা। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীর মাধ্যমে তারা নতুন নোট সংগ্রহ করেন। কয়েক হাত ঘুরে এ নোটগুলো বিক্রেতাদের হাতে আসে। এ কারণে নতুন নোটের দামও বেড়ে যায়।

কথার ফাঁকে গুলিস্তানের মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর নামের এক টাকা ব্যবসায়ী নিউজবাংলাকে জানান, ব্যাংকের কর্মচারী ও বিভিন্ন ব্যাংকারদের মাধ্যমে ডিল করে টাকা সংগ্রহ করেন তারা। বেশ কয়েকজন এবার গতবারের চেয়ে ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেশি দামে বিক্রি করছেন। এ জন্য খোলা বাজারে ব্যবসায়ীদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

আরেক ব্যবসায়ী আমিরুল ইসলাম বলেন, এ বছর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দেরি করে টাকা এসেছে। সেখান থেকেও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে টাকা আসে। বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারী দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, এবার শুরু থেকে বেচাকেনা তেমন হয়নি। আবার অনেকেই আছেন ব্যাংকারদের আত্মীয়স্বজন। তারা তাদের মাধ্যমে সংগ্রহ করেন।

আরও পড়ুন:
পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত ‘চায়ের রাজধানী’
বঙ্গবন্ধু সেতুতে ২৪ ঘণ্টায় ৪৩ হাজার বাহন পার, টোল উঠেছে সোয়া ৩ কোটি
সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় ঈদের জামাত সকাল সাড়ে ৮টায়
এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ির চাপ, পদ্মা সেতুর টোল প্লাজায় জটলা
চাঁদ দেখা কমিটি বসছে সন্ধ্যায়

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
In the week before Eid remittances of 45 million dollars came

ঈদের আগের সপ্তাহে এসেছে সাড়ে ৪৫ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স

ঈদের আগের সপ্তাহে এসেছে সাড়ে ৪৫ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় দর বাড়ার ঘটনায় মার্চে রেমিট্যান্স দুশ’ কোটি ডলারের নিচে নেমে আসে। এপ্রিলের প্রথম পাঁচ দিনে রেমিট্যান্সে এই বাড়তি গতির মূল কারণ প্রবাসীরা ঈদ উপলক্ষে আত্মীয়-স্বজনদের কাছে বেশি অর্থ পাঠিয়েছেন।

ঈদের আগের সপ্তাহে (১ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত) প্রবাসী বাংলাদেশিরা ৪৫ কোটি ৫৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। রেমিট্যান্সে এই বাড়তি গতির মূল কারণ প্রবাসীরা ঈদ উপলক্ষে আত্মীয়-স্বজনদের কাছে বেশি অর্থ পাঠিয়েছেন।

ব্যাংকাররা বলছেন, গত মার্চ মাসে প্রতি সপ্তাহে ৪০ থেকে ৫০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। সে হিসাবে, এপ্রিলের প্রথম ৫ দিনে রেমিট্যান্স ভালোই এসেছে। মূলত, প্রবাসীরা ঈদ উপলক্ষে আত্মীয়-স্বজনদের কাছে অর্থ পাঠানোর কারণেই বেড়েছে রেমিট্যান্স।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, টানা দু’মাস রেমিট্যান্স আয়ে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় থাকার পর ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় দর বাড়ার ঘটনায় মার্চে রেমিট্যান্স দুশ’ কোটি ডলারের নিচে নেমে আসে।

মার্চে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ১৯৯ কোটি ডলার দেশে পাঠান। ফেব্রুয়ারিতে তা ছিল ২১৬ কোটি ডলার এবং জানুয়ারিতে ২১১ কোটি ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, আগের বছরের একই মাসের ২০২ কোটি ডলারের তুলনায় গত মার্চে ১ দশমিক ২৪ শতাংশ রেমিট্যান্স কম এসেছে।

ব্যাংক-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মার্চ মাসের বেশিরভাগ দিনে ডলারের বিনিময় দর কমে দাঁড়ায় ১১২ টাকা ৫০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ১১৩ টাকায়। সে তুলনায় জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে ডলারের দর ছিল ১২০ থেকে ১২২ টাকা পর্যন্ত।

তারা বলছেন, ডলারের দাম কমার এই ঘটনা প্রবাসীদের বৈধ পথে অর্থ পাঠানোর ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করে। আর তার প্রভাব পড়ে রেমিট্যান্সের সার্বিক চিত্রে।

আরও পড়ুন:
প্রবাসী আয়ে ইসলামী ব্যাংকের নতুন রেকর্ড
রেমিট্যান্সে গতি, ডিসেম্বরে ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়াতে পারে
বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ ২৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে: বিশ্বব্যাংক
নভেম্বরে এলো ২১ হাজার কোটি টাকার বেশি রেমিট্যান্স
বিদেশি মুদ্রায় দেশের ব্যাংকে আমানত রাখার সুযোগ

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
The price of gold increased by Tk 3499 in two days

স্বর্ণের দাম দু’দিনের ব্যবধানে ভরিতে বেড়েছে ৩,৪৯৯ টাকা

স্বর্ণের দাম দু’দিনের ব্যবধানে ভরিতে বেড়েছে ৩,৪৯৯ টাকা
সবশেষ বৃদ্ধির পর ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা, ২১ ক্যারেট ১ লাখ ১২ হাজার ২০৮ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৯৬ হাজার ২২৮ টাকা ও সনাতন ৮০ হাজার ১৯০ টাকা।

দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম তিন হাজার ৪৯৯ টাকা বাড়িয়ে প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ১ লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।

বিশ্বব্যাপী স্বর্ণের বাজারে দাম বৃদ্ধির দ্রুততম গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশের ইতিহাসে স্বর্ণের সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

বৈশ্বিক এই প্রবণতার ধারাবাহিকতায় সোমবার বিকেল ৪টা থেকে দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় বাজুস।

এর আগে শ‌নিবার (৬ এপ্রিল) স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়। সেদিন ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৭৫০ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ১৫ হাজার ৮২৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এর দু’দিনের ব্যবধানে স্বর্ণের দাম ভরিতে ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হলো।

সবশেষ বৃদ্ধির পর ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এখন ১ লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা বা প্রতি গ্রামের দাম ১০ হাজার ৮০ টাকা; ২১ ক্যারেট ১ লাখ ১২ হাজার ২০৮ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৯৬ হাজার ২২৮ টাকা। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৮০ হাজার ১৯০ টাকা।

স্বর্ণের দাম নির্ধারণে উল্লেখযোগ্য সমন্বয় দেখা গেলেও রুপার দাম স্থিতিশীল রয়েছে। এর মধ্যে ২২ ক্যারেট রুপার ভরি ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেট ২ হাজার ৬০০ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা।

বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়েছে। সে অনুযায়ী, প্রতি আউন্স (৩১ দশমিক ১০৩ গ্রাম) স্বর্ণের দাম দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩২৯ ডলার।

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বর্ণের দাম বৃদ্ধির জন্য মূলত যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের নীতিগত সুদের হার কমানোর প্রত্যাশাকে দায়ী করা হয়েছে। আর সে কারণে স্বর্ণে বিনিয়োগের পরিমাণ দ্রুত বেড়েছে।

বৈশ্বিক আর্থিক বাজার এবং পণ্যের মধ্যে অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক বাংলাদেশে স্বর্ণের মূল্য নির্ধারণের কৌশলকেও প্রভাবিত করে।

আরও পড়ুন:
বাড়া-কমার খেলায় স্বর্ণের ভরি রেকর্ড ১,১৪,০৭৪ টাকা
কমলো স্বর্ণের দাম
দেশে স্বর্ণের দামে নতুন রেকর্ড, ভরি ১,১২,৯০৮ টাকা

মন্তব্য

p
উপরে