ঈদের আর মাত্র দুই-তিন দিন বাকি। রাজধানী ছেড়েছেন অধিকাংশ মানুষ। ক্রেতাও হাতেগোনা। এমন বাজারেও হঠাৎ বেড়েছে সবজির দাম। এর সঙ্গে রসুন-পেঁয়াজ, মুরগি ও তেলের বাজারও চড়া।
সোমবার রাজধানীর তেজকুনি পাড়ার কলমিলতা বাজারে দেখা গেছে, আগের সপ্তাহের চেয়ে টমেটো, শসা, গাজরের দাম বেড়েছে। প্রায় পুরো রোজায় টমেটো ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা ৫০ টাকায় উঠেছে। ২৫ থেকে ৩০ টাকার গাজরের দাম বেড়ে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় দাঁড়িয়েছে। রোজার শুরুতে শসার কেজি ৮০ টাকা উঠলেও তিন চার দিন পর তা আবার ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় নেমে যায়। এখন আবার বেড়েছে শসার দাম। ৬০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে।
বিক্রেতা মো. মাসুদ বলেন, পাইকারিতে দাম বাড়তাছে। তাই আমারও বেশি দাম বেচতেছি। আড়তদাররা কইতাছে মাল শট (কম), দাম বেশি। দুই দিন ধইরাই বাড়তি দাম। আমরাও বেশি দামে কিনছি, বেচমুও বেশি দামে। খামোখা দাম বাড়াই কাস্টমার হারামু ক্যান।’
অন্য সবজির দামও বেড়েছে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা। এর মধ্যে গত সপ্তাহে বেগুন ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় নামলেও এখন তা বেড়ে আবার ৪০ থেকে ৪৫ টাকা হয়েছে। এছাড়া কাঁচা পেঁপে ৩৫ টাকা, বরবটি ৬৫-৭০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ও পটল প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কচুর মুখি (ছড়া) ৯০ থেকে ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ও ধুন্দল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, ঝিঙ্গা ও কাঁকরোল ৫৫, কচুরলতি ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
তবে বাজার স্থির রয়েছে লেবু কাঁচা মরিচের। বরং রোজার শুরুতে বড় আকারের যে লেবুর হালি ছিল ৮০ টাকা এখন তা ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় নেমেছে। আর ৪০ টাকা হলির লেবু এখন ১৫ টাকা হালিতেও পাওয়া যাচ্ছে। মরিচের কেজি বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, এক পোয়া ১৫ টাকা। আগের মতোই আলু বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ২২ টাকায়।
বিক্রেতা মাসুদ জানান, গত কয়েকদিনে পেঁয়াজের দামও বেড়েছে। বেশ কিছুদিন পেঁয়াজ ৪০ টাকয় থাকলেও এখন ৫ টাকা বেড়ে ৪৫ টাকায় বিক্রি করছেন। এমনকি দেশি রসুন কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা এবং বিদেশি রসুন (বড়, আমদানি করা) ১২০ টাকা হয়েছে। আদার কেজি আগের মতোই ১২০ টাকা।
কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা শাহীন বলেন, ‘সবজির দাম কিছুটা বাড়ছে। বাড়া-কমা দিয়ে কী হইবো, বেচা বিক্রি তো বেশি ভাল না, আগের মতো কাস্টমার নাই। বেশি দিয়া কিইন্যাতো কম দামে দেওন যায় না। আবার রাখলেও ঝামেলা, নষ্ট ওই যাইব, তাই কম লাভেও ছাইড়া দিতাছি।’
মুরগির বাজারে কয়েক দিন ধরেই দামের কিছুটা উঠানামা করছিল। রোজার শুরুতে প্রতিকেজি সোনালি জাতের মুরগি (কক) ৩০০ টাকার ওপরে থাকলেও মাঝামাঝিতে তা ২৪০ থেকে ২৫০ টাকায় নেমে আসে। তবে নতুন করে আবার দাম বেড়ে ২৬০ টাকায় উঠেছে। ব্রয়লারের দাম গত সপ্তাহে ১৪০ টাকা থাকলেও তা বেড়ে ১৪৫ টাকা হয়েছে। লেয়ার মুরগির কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা এবং দেশি মুরগির কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা।
তবে মুরগির দাম বাড়তি থাকলেও ডিমের দাম রয়েছে বেশ কম। প্রতি হালি লাল লেয়ার ডিম কারওয়ান বাজারে হালি ২৬ থেকে ২৮ টাকা। ডজন ৮০ টাকা। হাসের ডিমের ডজন ১১৫ থেকে ১২০ টাকা, হালি ৪০ টাকা। সোনালি মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকায়। তবে দেশি মুরগির ডিমের ডজন এখনও ১৬০ টাকার ওপরে।
দুপরে কারওয়ান বাজারে দেখা গেছে, মুরগির বাজার প্রায় ক্রেতাশুন্য। অন্য সময় সাধারণ ক্রেতাদের লাইন পড়ে যায়। কিন্তু এখানকার ২০টির বেশি দেকানের অধিকাংশতেই ক্রেতা ছিল না।
মুরগি বিক্রেতার সাজু বলেন, সামনে ঈদ। চাহিদা বেশি, আগের চেয়ে দাম একটুতো বাড়বো। আগের চেয়ে হঠাৎ মাল সাপ্লাই কমে গেছে, ঠিকমতো মাল পাইতাছি না। এতে, পাইকারিতেও দাম বাড়ছে। তবে কাস্টমার কম। কাস্টমার থাকবো কেমনে, যে যেমনে পারছে বাড়ি চলে গেছে।
আগে থেকেই চড়া তেলের বাজার নতুন করে আরও খানিকটা চড়েছে। লিটারে ২ টাকা বেড়ে খোলা পাম ওয়েল ১১০ থেকে ১১২ টাকা, ৫ টাকা বেড়ে খোলা সয়াবিন তেলের লিটার ১২৫ থেকে ১২৮ টাকা, ১ লিটারের বোতল ১৪০ থেকে ১৪২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাঁচ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল বিক্রি হয়েছে ৬৪০-৬৬০ টাকায়, যা ১০ দিন আগেও ছিল ৬৩০-৬৪০ টাকা।
মুদি পণ্যের মধ্যে সাদা চিনির দাম কেজিতে ২ টাকা বেড়ে ৭০ টাকা এবং লাল আখের চিনি ৫ টাকা বেড়ে ৭৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া প্রতি কেজি ছোলা ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, মুগ ডাল ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা, সরু দানার মসুর ডাল ১০০ থেকে ১১০ টাকা, মোটা দানা ৬৫-৭০ টাকা, চিনি ৬২-৬৫ টাকা, লবণ ৩৫ থকে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
রবিবার সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাসে কারো মৃত্যু হয়নি। এই সময়ের মধ্যে পাঁচ জনের শরীরে প্রাণঘাতী ভাইরাসটি শনাক্ত করা হয়েছে।
সোমবার (৯ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন আরও পাঁচজন।
এ নিয়ে দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৫১ হাজার ৭৪৭ জনে। আর মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৫০০ জনে।
এতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ সময়ে শনাক্তের হার ছিল ১২ দশমিক ২০ শতাংশ। মোট করোনা পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৫ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুহার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
এ নিয়ে করোনায় সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ১৯ হাজার ৩৭৬ জনে।
চার দিনের সরকারি সফরে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আমিরাতের একটি ফ্লাইটে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, এই সফরে বাকিংহাম প্যালেসে ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে দেখা করবেন প্রধান উপদেষ্টা। এ সময় তিনি রাজা চার্লসের হাত থেকে গ্রহণ করবেন ‘কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’।
সফরসঙ্গী হিসেবে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. আবদুল মোমেন।
এ ছাড়া, দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন করে পুনরুজ্জীবিত এবং অর্থনীতি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা গড়ার লক্ষ্যে এই সফর অনুষ্ঠিত হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সফর। প্রধান উপদেষ্টা ৯ জুন ঢাকা থেকে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেবেন এবং ১৪ জুন দেশে ফিরবেন।’
সম্প্রতি ভারতে করোনায় সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ছয় হাজার ছাড়িয়ে গেছে। দেশটিতে নতুন করে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৫৮ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এতে দেশটিতে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ৪৯১ জনে পৌঁছেছে। তাই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের আগাম সতর্কতা হিসেবে ভারত থেকে যেসব রুটের ফ্লাইট ঢাকায় অবতরণ করে, সেসব ফ্লাইটের সব যাত্রী স্ক্রিনিং শুরু করেছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
বর্তমানে ভারতের চেন্নাই, কলকাতা, দিল্লি, হায়দ্রাবাদ, মুম্বাই থেকে ঢাকায় ফ্লাইট আসে। এই ফ্লাইটগুলো পরিচালনা করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স, এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এসএম রাগীব সামাদ গণমাধ্যমকে জানান, পার্শ্ববর্তী দেশে করোনা সংক্রমণ ফের বাড়তে থাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও জোরদার করা হয়েছে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা। গত ২ জুন থেকেই বিমানবন্দরে আগত যাত্রীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নেওয়া হয়েছে একাধিক পদক্ষেপ। ভারত থেকে আগত যাত্রীদের স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। বিমানবন্দরে পর্যাপ্ত সংখ্যত মাস্ক এবং পিপিই রাখা হয়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছে। পাশাপাশি বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক ফ্লাইট থেকে আগত যাত্রীদের ইমিগ্রেশন প্রবেশপথে বসানো হয়েছে থার্মাল স্ক্যানার।
বিমানবন্দরে আগত যাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে করোনা প্রতিরোধ সংক্রান্ত নির্দেশনা ও সতর্কতা প্রচারও চলছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত এ সতর্কতামূলক ব্যবস্থাগুলো কার্যকর থাকবে।
ভারতের স্বাস্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখন সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে কেরালায়। সেখানে বর্তমান সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৯৫৭ জন। অপরদিকে গুজরাটে এই সংখ্যা ৯৮০ জন, পশ্চিমবঙ্গে ৭৪৭ জন, দিল্লিতে ৭২৮ জন কর্ণাটকে ৪২৩ জন এবং মহারাষ্ট্রে ৬০৭ জন।
সতর্কতার অংশ হিসেবে ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো রোগ এবং শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ও সামান্দা ইউনিয়নে বাংলাদেশ কোষ্টগার্ড ভোলা বেইস ও পুলিশের সমন্বয়ে পৃথক দুটি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালে ২৭৪ পিছ ইয়াবা ও ১৫ গ্রাম গাঁজা সহ এক মাদককারবারী কে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সোমবার মধ্যরাত ৩টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভোলা সদর উপজেলার সামান্দা ইউনিয়নে সামান্দা গ্রাম থেকে ১ লক্ষ ৪১ হাজার ৫ শত টাকা মূল্যের ২৭৪ পিস ইয়াবা ও ১৫ গ্রাম গাঁজা এবং নগদ ১২ হাজার ৮ শত ৪৫ টাকা সহ মাদক ব্যাবসায়ী আব্বাস (৩৮) কে গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তী আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য আসামীকে জব্দকৃত সকল আলামত সহ ভোলা সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বাংলাদেশ কোষ্টগার্ড দক্ষিণ জোন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ কোষ্ট গার্ড। উপকূলীয় এবং নদী তীরবর্তী অঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং চোরাচালান রোধে অনেকাংশে উন্নত হয়েছে। সীমান্তে চোরাচালান রোধে কোষ্টগার্ড কতৃক ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার তারাগুনিয়া এলাকার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সিজারিয়ান ডেলিভারির সময় আখি খাতুন (২২) নামের এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ রয়েছে, ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ স্থানীয় এক রাজনৈতিক নেতার মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে এবং দ্রুত লাশ দাফনের পরামর্শ দেন।
নিহত আখি খাতুন উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের পূর্ব কবিরাজ পাড়া গ্রামের ইমনের স্ত্রী।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রোববার (৮ জুন) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আখিকে প্রথমে থানার মোড় এলাকার ‘আলসেফা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল’-এ নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা রোগীর জটিল অবস্থা বুঝে উন্নত পরীক্ষার পরামর্শ দেন। তবে রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, আলসেফা হাসপাতালের পরামর্শ উপেক্ষা করে তারাগুনিয়া ক্লিনিকের দালালদের প্ররোচনায় তাকে সেখানে নেওয়া হয়।
নিহতের মা ও খালা জানান, তারাগুনিয়ার আবুলের ক্লিনিকে (তারাগুনিয়া ক্লিনিক) নেওয়ার পর কয়েকজন চিকিৎসক আখিকে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য নিয়ে যান। সিজার শেষ করে বেডে আনার পর থেকেই রোগীর অবস্থা অস্বাভাবিক ছিল। চিকিৎসকরা একপর্যায়ে তার পেটে চাপাচাপি করে, পরে অবস্থার অবনতি দেখে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার করেন, কিন্তু সেখানকার চিকিৎসকরা আখিকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃতের পরিবার আরও বলেন, ক্লিনিকেই আঁখি মারা গিয়েছে কিন্তু ক্লিনিক মালিক দায়ভার এড়াতে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড এর নাটক করে।
পরে মৃতদেহ আবার ক্লিনিকে ফেরত আনা হয় এবং মৃতের পরিবার ও এলাকাবাসী ক্লিনিকের সামনে হট্টগোল করে ও ক্লিনিক ভাঙচুরের চেষ্টা করলে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতার বাড়িতে ডেকে নিয়ে টাকার বিনিময়ে মীমাংসা করেন এবং রাত ৮ টার সময় দাফন সম্পন্ন করা হয়।
ঘটনার বিষয়ে ওই দিন ব্যবহৃত অ্যাম্বুলেন্স চালক ফারুক হোসেন বলেন, "আমাকে ক্লিনিক থেকে রোগী গাড়িতে তুলে দেওয়া হয়। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা জানান, রোগী মারা গেছে। এরপর তারা জোরাজুরি করে ইসিজি করেন ও সদর হাসপাতাল থেকেই ডেট সার্টিফিকেট নিয়ে আবার ক্লিনিকে ফিরিয়ে আনা হয়।"
সিজারিয়ান অপারেশনে অংশ নেওয়া চিকিৎসকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এদিকে, ক্লিনিক মালিকের ছেলে এবং মাছরাঙা টেলিভিশনের কুষ্টিয়া প্রতিনিধি তাশরিক সঞ্চয় ঘটনার বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করতে সাংবাদিকদের ফোন করে নিরুৎসাহিত করেন। তিনি স্বীকার করেন, “রোগীর মৃত্যুর ঘটনা আমাদের ক্লিনিকে ঘটেছে।”
অন্যদিকে, আলসেফা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল’ থেকে রোগী কেন ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবিষয় ওই প্রতিষ্ঠানের ব্যাবস্থাপক সুজন হোসেন জানান, “রোগীর শারীরিক সমস্যা বুঝতে পেরে আমরা উন্নত পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরামর্শ দিই। তবে রোগীর স্বজনরা আমাদের পরামর্শ না নিয়ে অন্য ক্লিনিকে চলে যান।”
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, নিয়ম অনুযায়ী সিজারের ৬ ঘন্টা পূর্ব পর্যন্ত খাবার খাওয়া নিষেধ থাকলেও রোগী খাবার খেয়ে সেটা ডক্টরের কাছে গোপন রাখে যার ফলে সিজার পরবর্তী সমস্যা হয় ও রোগী মারা যায়।
অনভিজ্ঞতার কারণে অনেকে চামড়ায় দেরিতে লবণ দিয়েছেন। এতে করে চামড়া নষ্ট হওয়ায় এবং মান কমে যাওয়ায় অনেকে কাঙ্ক্ষিত দাম পাননি বলে মন্তব্য করেছেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
আজ সোমবার সাভার চামড়া শিল্পনগরী পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় চামড়ার দর কমে যাওয়া নিয়ে আড়তদার ও মৌসুমি ব্যবসায়ীদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি এসব কথা বলেন।
আদিলুর জানান, এ পর্যন্ত ৩ লাখ ৭৮ হাজার পিস চামড়া এসেছে শিল্পনগরীতে। ঢাকায় আছে সাড়ে ৭ লাখ পিস।
চলতি বছর ৩০ হাজার টন লবণ বিতরণ করা হয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘কোনোভাবেই যাতে চামড়া না পঁচে বা দাম পড়ে না যায় তাই সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত লবণ সরবরাহ করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও অনভিজ্ঞতার কারণে কিছু চামড়া নষ্ট হয়েছে, যদিও এর পরিমাণ কম। যাদের চামড়া নষ্ট হয়েছে এবং মান কমে গেছে তারা দাম কম পেয়েছেন।’
তিনি দাবি করেন, ‘চামড়ায় লবণ দেওয়ার একটি নির্দিষ্ট সময় আছে। অনেকেই দেরিতে লবণ দিয়েছেন, যার প্রভাব চামড়ার মানে পড়েছে। ফলে দামও কমেছে অনেক ক্ষেত্রে। তবে সরকারের তৎপরতার কারণে এ বছর খুব অল্পসংখ্যক চামড়াই নষ্ট হয়েছে।’
এ ছাড়া, গবাদি পশুর ল্যাম্পি স্কিন রোগের কারণে চলতি বছর ৩০ শতাংশ চামড়া নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা আছে বলেও উল্লেখ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
শেরপুরের ঝিনাইগাতীর দুটি গুচ্ছগ্রাম - গোমড়া ও কান্দুলীর বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে কুরবানীর মাংস থেকে বঞ্চিত ছিল। গোমড়া গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা এক যুগ এবং কান্দুলী গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা গত ৬ বছর ধরে কুরবানীর মাংস পায়নি। তবে এবার ‘দৈনিক বাংলাদেশের খবর’ পত্রিকায় বিষয়টি প্রকাশিত হওয়ার পর স্থানীয় সংগঠন ও দাতাদের উদ্যোগে এই দুটি গ্রামের মানুষ কোরবানির মাংস পেয়েছে।
গোমড়া গুচ্ছগ্রামের স্বামী পরিত্যাক্তা আঙ্গুরী বেগম (৭০) বলেন, ‘১২ বছর ধরে আমরা কোরবানির মাংসের স্বাদ পাইনি। এবার রক্তসৈনিক ফাউন্ডেশন আমাদের জন্য গরু দিয়েছে। আল্লাহ তাদের ভালো রাখুন।’
গুচ্ছগ্রামের সাধারণ সম্পাদক আলী বলেন, ‘আমাদের এলাকার অনেক গরিব মানুষ আছে যারা কোরবানি দিতে পারে না। এই উদ্যোগ আমাদের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। আমরা সংগঠনটির কাছে কৃতজ্ঞ।’
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, ‘গুচ্ছগ্রামের দুঃস্থ মানুষেরা দীর্ঘদিন ধরে কোরবানির মাংস থেকে বঞ্চিত ছিল। স্থানীয় সংগঠন ও দাতাদের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। আমরা সামাজিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে কাজ করে সবাইকে কোরবানির মাংসের আওতায় আনার চেষ্টা করব। আমাদের বিভাগীয় কমিশনার স্যারও গোসত পাঠাচ্ছেন। যদি কোনো অসহায় মানুষ কোরবানির মাংস না পেয়ে থাকে, আমরা নিশ্চিত করব যেন তারা গোসত পায়।’
পত্রিকায় খবর প্রকাশের পর রক্তসৈনিক বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন সংগঠনটি বিষয়টি নজরে নিয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়। সংগঠনের সভাপতি রাজিয়া সামাদ ডালিয়া গোমড়া গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দাদের জন্য একটি গরু কোরবানির ব্যবস্থা করেন।
অন্যদিকে কান্দুলী গুচ্ছগ্রামে শাহ অলি উল্লাহ ইসলাম সেন্টার বাংলাদেশের তত্ত্বাবধানে এবং অরফান শেল্টার ফাউন্ডেশন, যুক্তরাজ্যের আর্থিক সহায়তায় একটি গরু কোরবানি দেওয়া হয়। স্থানীয়রা জানান, গত ৬ বছর ধরে এই গ্রামে কুরবানীর মাংস বণ্টন হয়নি। এবার দাতাদের সহযোগিতায় গ্রামবাসী মাংস পেয়ে খুশি।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে ঝিনাইগাতীর দুটি গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা দীর্ঘদিন পর কুরবানীর মাংস পেয়ে আনন্দিত। স্থানীয়রা আশা প্রকাশ করেছেন, ভবিষ্যতে আর কেউ যেন কুরবানীর মাংস থেকে বঞ্চিত না হয়।
মন্তব্য