পুঁজিবাজারে খাত ধরে উত্থানের যে প্রবণতা দেখা দিয়েছে, তাতে এবার যোগ হয়েছে বস্ত্র খাত। এক দিনে এই খাতের প্রায় সব শেয়ারের দর বৃদ্ধির ঘটনা ঘটল।
এর আগে টানা এক মাস বিমা খাত, পরে মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে একাধিক দিন এই চিত্র দেখা গেছে। মাঝে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের শেয়ারগুলোর দরও দল বেঁধে বাড়ার প্রবণতা দেখা গেছে।
রোববার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে বস্ত্র খাতে তালিকাভুক্ত ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে পাঁচ দিন দাম কমার বিপরীতে বেড়েছে ৪৩টির দর। বাকি ৮টি কোম্পানির দর ছিল অপরিবর্তিত।
২০২০ সালে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেয়ার পর এক বছরের বেশি সময় ধরেই এই খাতের শেয়ারগুলো নিয়ে তেমন কোনো আগ্রহ দেখা যায়নি। বহু শেয়ার লেনদেন হচ্ছে অভিহিত মূল্যের নিচে বা আশপাশে। এই অবস্থায় এই খাতের শেয়ারগুলোর মধ্যে বেশ কিছু বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয়ও হয়ে গেছে।
আবার করোনা পরিস্থিতিতে ব্যবসায় মন্দা দেখা দেয়ার যে আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল, বেশির ভাগ কোম্পানির ক্ষেত্রেই তা সত্য প্রমাণ হয়নি। পুঁজিবাজারে যেসব কোম্পানি প্রান্তিক প্রকাশ করেছে, তার মধ্যে অনেক কোম্পানির আয়ই কমার বদলে বেড়েছে।
বস্ত্রের মতো অত ভালো না করলেও ব্যাংক ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতের বেশির ভাগ কোম্পানিই দর ধরে রাখতে পেরেছে। বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ারদরও বেড়েছে।
বড় মূলধনি খাতে দর বাড়ার প্রভাবে পুঁজিবাজারে সূচক বেড়েছে ৩৯ পয়েন্ট। শেয়ার কেনায় বিনিয়োগকারীদের যে আগ্রহ বেড়েছে, সেটি লেনদেনের চিত্রই বলে দেয়। টানা ৯ দিন এক হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলো ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে।
চাঙা বাজারে আগের দুই কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় বড় পতন দেখল বিমা খাত।
গত এক মাসে বিমা খাতের প্রায় সবকটি কোম্পানির ন্যূনতম ৫০ থেকে ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত দর বেড়েছে। দর বাড়ছে দেখে যারা বিমা খাতের শেয়ারে বিনিয়োগ করেছেন কিংবা আরও দাম বাড়বে ভেবে ধরে রেখেছেন তারা গত দুই দিনে সর্বোচ্চ ৫ থেকে ৮ টাকা শেয়ারপ্রতি লোকসান করেছেন।
রোববার সবচেয়ে বেশি দরপতন হওয়া শেয়ারগুলোর মধ্যে প্রায় সবগুলোই বিমা খাতের।
সর্বাধিক দর বৃদ্ধি তালিকার প্রায় বস্ত্র খাতের আধিক্য
সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া ১০টি কোম্পানির ৫টি এবং ২০টি কোম্পানির ১১টিই ছিল বস্ত্র খাতের। গত এক বছরে এই চিত্র দেখা যায়নি।
সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে সিমটেক্সের দর। ১০ শতাংশ বেড়ে ১৪ টাকার শেয়ারদর দাঁড়িয়েছে ১৫ টাকা ৩০ পয়সায়।
ভিএফএস থ্রেড ডাইং কোম্পানির, যার শেয়ারপ্রতি দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ। ১ টাকা ৮০ পয়সা বেড়ে এখন লেনদেন হচ্ছে ২০ টাকা ৩০ পয়সা।
লোকসানি কোম্পানি তাল্লু স্পিনিং এর দামও বেড়েছে এক দিনে যত বাড়া সম্ভব ততই। ৪ টাকা ১০ পয়সার শেয়ার আজ লেনদেন শেষ করেছে ৪ টাকা ৫০ পয়সায়।
প্রাইম টেক্স স্পিনিং মিলস লিমিটেডের শেয়ারদরও বেড়েছে ৯ দশমিক ৫৫ শতাংশ। এদিন কোম্পানিটির শেয়ারদর ১৫ টাকা ৮০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৭ টাকা ২০ পয়সা।
মোজাফফর হোসেন স্পিনিং মিলসের শেয়ারদর বেড়েছে ৮ দশমিক ৮১ শতাংশ। শেয়ারদর ১৬ টাকা ২০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৭ টাকা ৪০ পয়সা।
এইচ আর টেক্সটাইলের শেয়ারপ্রতি দর বেড়েছে ১ টাকা ১০ পয়সা। এনভয় টেক্সটাইলের শেয়ারদর বেড়েছে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ বা ১ টাকা ৭০ পয়সা। লেনদেন হয়েছে ২৩ টাকা থেকে ২৪ টাকা ৬০ পয়সায়।
বাড়তি দরে স্থিতিশীল ব্যাংক ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড
গত বুধবার এই দুই খাতের প্রায় সব কোম্পানির দর বেড়েছে। পরের কার্যদিবসে বাড়ে আরও কিছু কোম্পানির শেয়ারদর। তবে কমেও কিছু কোম্পানির।
আজ ব্যাংক খাতের ৩১টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৫টির। কমেছে ৯টির। পাল্টায়নি ৭টির।
সর্বাধিক দর বৃদ্ধির তালিকায় গত তিন কার্যদিবস ধরেই আছে নতুন তালিকাভুক্ত এনআরবিসি। ১৪ টাকা ৯০ পয়সা থেকে এক টাকা ৪০ পয়সা বেড়ে শেয়ারদর এখন দাঁড়িয়েছে ১৬ টাকা ৩০ পয়সা। এক দিনে এর চেয়ে বেশি বাড়া সম্ভব ছিল না।
টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ব্র্যাক ব্যংকের শেয়ারদর। আগের দিনের দরের সঙ্গে যোগ হয়েছে দুই টাকা। এ ছাড়া প্রাইম ব্যাংকের ৬০ পয়সা আর ইউসিবিএলের ৫০ পয়সা বেড়েছে।
সবচেয়ে বেশি কমেছে রূপালী ব্যাংকের দর। আগের দিনের চেয়ে ৫০ পয়সা কমে লেনদেন হয়েছে এই ব্যাংকের শেয়ারদর। এরপর সবচেয়ে বেশি ৩০ পয়সা দর হারিয়েছে ইবিএল। দর হারানো বাকি ব্যাংকগুলোর শেয়ারদর ১০ থেকে ২০ পয়সা কমেছে।
ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক খাতের ২৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দর বেড়েছে ১০টির। কমেছে ৮টির। দর পাল্টায়নি ৫টির।
মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে ৩৭টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির। কমেছে ১৫টির। দর পাল্টায়নি ৬টির।
বিমার দরে ধস
রোববার লেনদেন শেষে যে ১২টি কোম্পানির শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে তার মধ্যে সবকটিই বিমার। এদিন লেনদেনে ৫০টি বিমা কোম্পানির মধ্যে মাত্র তিনটি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। দুটির দর পাল্টায়নি। বাকি ৪৫টি কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে।
অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ। লেনদেনে ৬৫ টাকা ৭০ পয়সা থেকে দর কমেছে হয়েছে ৫৯ টাকা ২০ পয়সা।
ইউনাইটেডে ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ। শেয়ার দর ৫৬ টাকা ৭০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৫১ টাকা ৬০ পয়সা।
তাকাফুল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ৮ দশমিক ৭০ শতাশং। শেয়ার দর ৫৮ টাকা ৬০ পয়সা থেকে হয়েছে ৫৩ টাকা ৫০ পয়সা।
ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ৬০ টাকা ৭০ পয়সা। শেয়ার দর ৬০ টাকা ৭০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৫৫ টাকা ৬০ পয়সা।
পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ। লেনদেনে ২৬ টাকা ৩০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ২৪ টাকা ২০ পয়সা।
সন্ধানী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ৭ দশমিক ১৬ শতাংশ। শেয়ার দর ৩১ টাকা ১০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ২৯ টাকা ৮০ পয়সা।
কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর ৫৩ টাকা ১০ পয়সা থেকে ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ কমে হয়েছে ৪৯ টাকা ৫০ পয়সা।
মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর ৪৪ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ৬ দশমিক ৬৮ শতাংশ কমে হয়েছে ৪১ টাকা ৯০ পয়সা।
নিটল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ। শেয়ার দর ৬০ টাকা ৩০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৫৬ টাকা ৩০ পয়সা।
কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ। শেয়ার দর ৪২ দশমিক ৬০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৩৯ টাকা ৯০ পয়সা।
ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর ৫ দশমিক ৯০ শতাংশ কমে ৫২ টাকা ৫০ পয়সার শেয়ার দিন শেষে হয়েছে ৪৯ টাকা ৪০ পয়সা।
নর্দান জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দরও কমেছে ৫ দশমিক ৭২ শতাংশ।
বিশ্লেষকের বক্তব্য
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক গবেষণা কর্মকর্তা দেবব্রত কুমার সরকার বলেন, ‘বিমা খাতের শেয়ারের যে দর পতন হয়েছে সেটি প্রত্যাশিত ছিল। এরপর দর পতন বা মূল্য সংশোধন না হলে বড় ধনের ঝুকিতে পড়তে হতো বিনিয়োগকারীদের।’
তিনি বলেন, ‘এক খাতের দর পতন হলে অন্য খাতের শেয়ারের দর বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। তবে কোনো খাতেরই অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধি ও পতন পুঁজিবাজারের জন্য ভালো না। খাতওয়ারি মোটামুটি সবগুলোই বাড়ছে, এটা ভালো লক্ষণ।’
তিনি বলেন, ‘ঈদের আর কয়েক দিন বাকি আছে। এখন বিনিয়োগকারীরা লাভে থাকা শেয়ার বিক্রি করে টাকা উঠাবে।’
সূচক ও লেনদেন
এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে ৩৯ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৬৪৫ পয়েন্টে।
শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ৯ দশমিক ৩০ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৬১ পয়েন্টে।
বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ২৮ দশমিক ৭১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৬৫ পয়েন্টে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৭৬টির, কমেছে ১২৮টির। পাল্টায়নি ৬৩টির।
লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাস স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১২২ দশমিক ২৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৩৩১ পয়েন্টে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৪১টির। কমেছে ৯৬টির। দর পাল্টায়নি ৩৭টির। লেনদেন হয়েছে মোট ৬৬ কোটি টাকার।
আরও পড়ুন:রাষ্ট্র সংস্কারের বিভিন্ন বিষয়ে একমত হয়ে জুলাই সনদ তৈরির লক্ষ্যে আজ দ্বিতীয় দফার নবম দিনের মত দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল এগারোটায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে এ আলোচনার আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়।
আলোচনায় সভাপতিত্ব করছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ।
এছাড়া, কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন-বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. মো. আইয়ুব মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আজকের আলোচনায় অংশ গ্রহণ করছে- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আজকের আলোচনায় পূর্বের অমীমাংসিত বিষয়ে অধিকতর আলোচনা হওয়ার পাশাপাশি বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শন ও জরুরি অবস্থা ঘোষণা- এই তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
আজ আলোচনার শুরুতে সূচনা বক্তব্য দেওয়ার সময় কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেন, আমরা কি পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে, অন্যদের কি পরিমাণ আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আজকের এ পর্যায়ে এসেছি সেটা আমাদের প্রত্যেকেরই স্মরণ রাখতে হবে। হাজারো মানুষের আত্মত্যাগই যেন হয় আমাদের দিক নির্দেশক।
তিনি আরো বলেন, ৫৩ বছরে রাষ্ট্র গঠনের এমন সুযোগ আর আসেনি। অনেক অন্যায় অত্যাচার ও নিপীড়নের মধ্য দিয়ে এ সুযোগটা আমরা পেয়েছি, এ সুযোগ হেলায় হারানো যাবে না।
এর আগে, গতকাল (বুধবার) কমিশনের অষ্টম বৈঠক শুরুর প্রথমে প্রারম্ভিক বক্তব্যে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, আলোচনা ইতিবাচকভাবে অগ্রসর হচ্ছে এবং এভাবে আলোচনা অগ্রসর হলে এ মাসের মাঝামাঝি বা ৩য় সপ্তাহের মধ্যেই জুলাই সনদ ঘোষণা করা সম্ভব হবে।
কেশবপুরের ঐতিহ্য কালোমুখো হনুমান খাদ্য সংকট ও বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় খাবার না পেয়ে মারাও যাচ্ছে। কালোমুখো হনুমান রক্ষার দাবি উঠেছে।
জানা গেছে, একসময় কেশবপুরে ছিল কালোমুখো হনুমানের অভয়ারণ্য। বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় এবং খাদ্য সংকটে সময়ের গতির সঙ্গে কমে যাচ্ছে হনুমান। বর্তমানে ১৮০ থেকে ২০০টি হনুমান কেশবপুরে রয়েছে বলে স্থানীয় বন বিভাগ জানায়। এখান থেকে ৪/৫ বছর আগে ছিল ২৫০ থেকে ৩০০ টি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশ বিভক্তির আগে ভারতের মাড়োয়াররা ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য যশোরের কেশবপুরে বসবাসের পাশাপাশি আসা-যাওয়া করত। এ সময় তাদের যানবাহনে করে দুটি কালোমুখো হনুমান ভারত থেকে কেশবপুরে আসে। সেই থেকে হনুমানের এখানে পত্তন শুরু হয়। ওই এক জোড়া হনুমান থেকে এখানে শত শত হনুমানের কালের আবর্তনে ওরা আজ বিলুপ্তির পথে। একসময় কেশবপুর অঞ্চলে ঘন বনজঙ্গল ছিল। এসব বনের ফল ও লতাপাতা খেয়ে ওরা জীবিকা নির্বাহ করত। বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বন উজাড়সহ ঘনবসতি এবং এলাকায় অবৈধ ইটভাটায় গিলে খাচ্ছে এসব বনের কাঠ। এতে উজাড় হচ্ছে বন। এদিকে কেশবপুর উপজেলায় পল্লীবিদ্যুতের তারে কভার সিস্টেম না থাকায় প্রায়ই বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ওরা মারা যাচ্ছে। খাদ্য সংকটের কারণে কেশবপুরের হনুমান দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে।
উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন বলেন, কেশবপুর এলাকায় বনজঙ্গল কমে যাওয়ার কারণে হনুমানের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ওদের রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন বলেন, হনুমান রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন এনজিও ব্যক্তি গত ভাবেও অনেকেই খাদ্য দেয়, যার কারণে ওরা গ্রামাঞ্চল ছেড়ে বর্তমানে শহরে বেশি বিচরণ করছে।
মুসলিম বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ ও মরক্কোর নেতৃত্বমূলক ভূমিকা জোরদারে পারস্পরিক ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে এ কথা বলা হয়েছে।
পোস্টে আরও বলা হয়েছে, 'মরক্কো সফররত বাংলাদেশের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মরক্কোর জাতীয় শিক্ষা, প্রাক-প্রাথমিক ও ক্রীড়া বিষয়ক মন্ত্রী মোহাম্মদ সাদ বেরাদা-র মধ্যে গতকাল মরক্কোর রাজধানী রাবাতে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।'
'বৈঠকের শুরুতে মরক্কোর মন্ত্রী মোহাম্মদ সাদ বেরাদা দেশটির সমন্বিত শিক্ষা ও ক্রীড়া কাঠামো তুলে ধরেন।
তিনি বিশেষভাবে মরক্কোর "স্টাডি অ্যান্ড স্পোর্টস" মডেলের উল্লেখ করেন, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঝরে পড়ার হার কমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। এছাড়া প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার বিস্তারে নেওয়া নীতিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগের বিষয়েও তিনি আলোকপাত করেন।'
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা মরক্কোর বাদশাহ মোহাম্মেদ ষষ্ঠ-এর দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং মরক্কোর শিক্ষা ও ক্রীড়াক্ষেত্রে অর্জিত অগ্রগতির জন্য অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, “মরক্কোর শিক্ষা ও ক্রীড়ার সমন্বিত মডেল একটি রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।”
উপদেষ্টা প্রযুক্তিগত সহায়তা, প্রশিক্ষণ এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ভিত্তিক ক্রীড়া সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রস্তাব দেন এবং মুসলিম বিশ্বের মধ্যে দুই দেশের নেতৃত্বমূলক ভূমিকা জোরদারে পারস্পরিক ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর আহ্বান জানান। তিনি বাংলাদেশ ও মরক্কোর জাতীয় ফুটবল দলের মধ্যে একটি প্রীতি ম্যাচ আয়োজনের প্রস্তাব করেন এবং ২০২৫ সালে অনুষ্ঠেয় "গ্লোবাল ইয়ুথ সামিট"-এ মোহাম্মদ সাদ বেরাদাকে আমন্ত্রণ জানান।
মরক্কোর মন্ত্রী বাংলাদেশের শিক্ষা ও যুব উন্নয়নে সাম্প্রতিক অর্জনের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, মরক্কো প্রি-স্কুল কার্যক্রমে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ক্লাসরুমকে আরও আনন্দদায়ক ও শিক্ষণ উপযোগী করে তুলতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক তথ্য একটি ডেটাবেইজে সংরক্ষিত হচ্ছে, যা দেশটির নীতিনির্ধারণে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।
উভয়পক্ষই আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, এই বৈঠক শিক্ষা ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে বাংলাদেশ-মরক্কো সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালী করবে এবং ভবিষ্যতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর ও ফলপ্রসূ হবে।
বৃষ্টির মৌসুম শুরু হতেই ঢাকার বায়ুমানে উন্নতি লক্ষ করা যাচ্ছে। আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি। গত কয়েকদিনের মতো আজও ঢাকার বাতাস যেকোনো প্রকার অস্বাস্থ্যকর শ্রেণি থেকে বেশ দূরে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকাল দশটার দিকে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ৭৯, একিউআই সূচকে যা ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ।
সাধারণত বায়ুদূষণের সূচক (এইকিআই) শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। তারপর থেকে ১০০ পর্যন্ত একিউআই স্কোর ‘মাঝারি’।
এই সময়ে ভারতের রাজধানী দিল্লির বায়ুমানও ‘মাঝারি’ শ্রেণিতে ছিল, তবে তা ঢাকার চেয়ে কিছুটা খারাপ ছিল। দিল্লির বাতাসের সূচক ছিল তখন ৯০ এবং দূষণে শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় অবস্থান ছিল ১৭তম।
তবে অবশেষে আজ দূষিত বাতাসের শহরগুলোর তালিকার শীর্ষ পাঁচ থেকে বের হতে সক্ষম হয়েছে পাকিস্তানের লাহোর। একই সময়ে ১২৪ স্কোর নিয়ে তালিকার অষ্টম স্থানে অবস্থান করছিল শহরটি। বেশ কিছুদিন পর আজ সকালে লাহোরের বায়ুমানে এত উন্নতি হয়েছে। সাধারণত ১৫০-এর নিচে নামে না লাহোরের একিউআই স্কোর।
আজ সবচেয়ে দূষিত শহর ছিল চিলির সান্তিয়াগো। শহরটির সূচক ছিল ১৬২। ১৬০, ১৫৬ ও ১৫৪ স্কোর নিয়ে তার পরের তিন শহর ছিল উগান্ডার কাম্পালা, বাহরাইনের মানামা ও কঙ্গোর কিনশাসা। শীর্ষ চার শহরের বায়ুমানই ছিল ‘অস্বাস্থ্যকর’। পঞ্চম স্থানে থাকা মিসরের কায়রোর বাতাসের স্কোর ছিল এই সময় ১৩২, অর্থাৎ ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’।
কণা দূষণের এই সূচক ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। আর ১৫১ থেকে ২০০ হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে ৩০০-এর বেশি যেকোনো সূচক।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ঋণের প্রায় ২৭১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও আলোচিত পিকে হালদারসহ ১৫ জনকে আসামি করে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল বুধবার রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে বলে এতে জানানো হয়।
দুদক জানায়, প্রতিটি মামলায় ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। তিনটি মামলায় মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও আলোচিত পিকে হালদারসহ অধিকাংশকে কমন আসামি করা হয়েছে।
প্রথম মামলায় ৯৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও ৩২ কোটি ৫০ লাখ টাকার মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক। মামলার এজাহারে রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেড (বর্তমানে আভিভা ফাইন্যান্স) থেকে জাল কাগজপত্রের ভিত্তিতে একটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান মেসার্স মোস্তফা অ্যান্ড কোম্পানির নামে ৩২.৫০ কোটি টাকার মেয়াদি ঋণ অনুমোদন ও বিতরণ করা হয়। পরে সেই টাকা কয়েক ধাপে স্থানান্তর হয়ে এস আলম গ্রুপের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেডে চলে যায়।
এই মামলার আসামিরা হলেন—এস আলম গ্রুপের সাবেক চেয়ারম্যান ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেড সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, এম আলম গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ, পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ হাসান, পরিচালক শাহানা ফেরদৌস, রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদার, রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের সাবেক ইভিপি ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিভাগ প্রধান রাশেদুল হক, একই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ও করপোরেট ফাইন্যান্স বিভাগ প্রধান নাহিদা রুনাই, এসভিপি ও মেম্বার, ক্রেডিট কমিটি, রিলায়েন্স ফাইন্যান্স কাজী আহমেদ জামাল, সাবেক ডেপুটি ম্যানেজার, জুমারাতুল বান্না এবং মারিন ভেজিটেবল অয়েলস লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির আহমেদ, পরিচালক টিপু সুলতান, মো. ইসহাক ও মেসার্স মোস্তফা অ্যান্ড কোম্পানির মালিক মো. গোলাম মোস্তাফা।
দ্বিতীয় মামলায় নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান মেসার্স এ এম ট্রেডিংয়ের নামে জালিয়াতির মাধ্যমে ১০৪ কোটি ২০ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ ও ৩৪ কোটি টাকা মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অপরাধমূলক অসদাচরণ ও বিশ্বাসভঙ্গ করে নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের নামে জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ঋণপ্রস্তাব প্রস্তুত এবং ঋণ অনুমোদন, ঋণ প্রদান এবং ঋণের নামে ১০৪ কোটি ২০ লাখ ৭৭ হাজার ৭০৮ টাকা আত্মসাৎ ও ৩৪ কোটি টাকা এস আলম সুপার এডিবল অয়েল নামে প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর/রূপান্তর/হস্তান্তর করা হয়েছে।
এই মামলার আসামিরা হলেন—এস আলম গ্রুপের সাবেক চেয়ারম্যান ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেড সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, এম আলম গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ, পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ হাসান, পরিচালক শাহানা ফেরদৌস, রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদার, রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের সাবেক ইভিপি ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিভাগ প্রধান রাশেদুল হক, একই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ও করপোরেট ফাইন্যান্স বিভাগ প্রধান নাহিদা রুনাই, এসভিপি ও মেম্বার, ক্রেডিট কমিটি, রিলায়েন্স ফাইন্যান্স কাজী আহমেদ জামাল, সাবেক ডেপুটি ম্যানেজার, জুমারাতুল বান্না এবং মারিন ভেজিটেবল অয়েলস লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির আহমেদ, পরিচালক টিপু সুলতান, মো. ইসহাক ও মেসার্স মেসার্স এ এম ট্রেডিংয়ের মালিক আলহাজ্ব কবির আহম্মদ।
এদিকে নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাইফুল অ্যান্ড কোম্পানির নামে ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে ৭১ কোটি ৫১ লাখ টাকার ঋণ ও ২৪ কোটি টাকার মানিলন্ডারিংয়ের অপরাধে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
ওই মামলার এজাহার বলা হয়, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের কর্মকর্তা এবং মেসার্স সাইফুল অ্যান্ড কোম্পানির মালিক সাইফুল ইসলামের সঙ্গে যোগসাজশে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে ২০১৩ সালের ৩ অক্টোবর তারিখে মেয়াদি ঋণ মঞ্জুর করা হয়। ঋণের ২৪ কোটি টাকা ২০১৩ সালের ৪ নভেম্বর সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, দিলকুশা শাখা থেকে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, খাতুনগঞ্জ শাখার মেসার্স সাইফুল অ্যান্ড কোম্পানি হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকে একই দিনে মারিন ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেড হয়ে এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেডের হিসাবে স্থানান্তর হয়। প্রতিটি ধাপেই জালিয়াতি ও অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের ঘটনা সংঘটিত হয় বলে দুদক মনে করে।
এই মামলার আসামিরা হলেন—এস আলম গ্রুপের সাবেক চেয়ারম্যান ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেড সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, এম আলম গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান, আব্দুস সামাদ, পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ হাসান, পরিচালক শাহানা ফেরদৌস, রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদার, রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের সাবেক ইভিপি ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিভাগ প্রধান রাশেদুল হক, একই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ও করপোরেট ফাইন্যান্স বিভাগ প্রধান নাহিদা রুনাই, এসভিপি ও মেম্বার, ক্রেডিট কমিটি, রিলায়েন্স ফাইন্যান্স কাজী আহমেদ জামাল, সাবেক ডেপুটি ম্যানেজার, জুমারাতুল বান্না এবং মারিন ভেজিটেবল অয়েলস লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির আহমেদ, পরিচালক টিপু সুলতান, মো. ইসহাক ও মেসার্স সাইফুল অ্যান্ড কোম্পানির মালিক সাইফুল ইসলাম।
ফেসবুকে অন্তর্বর্তী সরকার ও প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে বিতর্কিত স্ট্যাটাস দেওয়ায় লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সাবেক সহকারী কমিশনার (বর্তমানে ওএসডি সহকারী সচিব, সাময়িক বরখাস্ত হওয়া) তাপসী তাবাসসুম ঊর্মিকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
বিভাগীয় মামলায় তাকে ‘চাকরি হতে বরখাস্তকরণ’ গুরুদণ্ড দিয়ে বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এর আগে, গত বছরের ৬ অক্টোবর তাপসী তাবাসসুম ঊর্মিকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়। পরের দিন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
তাপসী তাবাসসুমকে চাকরিচ্যুতির প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, গত বছরের ৬ অক্টোবর তিনি নিজ ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার ও প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় তার বিরুদ্ধে ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮’ এর বিধি ৩(খ) মোতাবেক ‘অসদাচরণ’ এর অভিযোগে বিভাগীয় মামলা হয়। এরপর তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। তিনি নিরাপত্তার কারণে ব্যক্তিগত শুনানিতে অংশ না নিয়ে লিখিতভাবে জবাব দেন। তার জবাব গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।
তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী তাকে গুরুদণ্ড দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়। এরপর তাকে দ্বিতীয়বার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। তদন্ত প্রতিবেদন, দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর জবাব, পারিপার্শ্বিকতা এবং বিভাগীয় মামলার নথি পর্যালোচনায় তার বিরুদ্ধে ‘অসদাচরণ’ এর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে বিধিমালা অনুযায়ী ‘চাকরি হতে বরখাস্তকরণ’ সূচক গুরুদণ্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনও গুরুদণ্ড দিতে কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত পোষণ করে পরামর্শ দেয়। রাষ্ট্রপতিও তাকে চাকরিচ্যুতির গুরুদণ্ড দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন।
বান্দরবানের রুমা উপজেলার দুর্গম পাহাড়ে সেনাবাহিনীর অভিযানে কুকি চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) কমান্ডারসহ দুজন নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) ভোরে এ ঘটনা ঘটেছে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আইএসপিআর আরও জানিয়েছে, অভিযানে তিনটি এসএমজি, একটি রাইফেলসহ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযান এখনও চলছে।
অভিযানের বিষয়ে আজ দুপরে রুমা জোনে প্রেস ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানানো হবে।
মন্তব্য