করোনাভাইরাস মহামারির প্রথম ধাক্কায় যে সব পোশাকশ্রমিক চাকরি হারিয়েছিলেন তাদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে তিন জন নিজেরাই উদ্যোক্তা হয়ে কিছু করার চেষ্টা করছে বলে সিপিডির এক জরিপে উঠে এসেছে।
এই জরিপে দেখা গেছে, ২০ শতাংশের মতো শ্রমিক দিনমজুরি করে সংসার চালাচ্ছেন। ২০ শতাংশ কাজ করছেন অনানুষ্ঠানিক খাতে। আরও ২০ শতাংশ শ্রমিক পোশাক খাতের বাইরে বিভিন্ন কারখানায় কাজ নিয়েছেন।
নিজেরাই কিছু করার চেষ্টা করেছেন, এমন শ্রমিক প্রায় ২৭ শতাংশ। মাত্র ৬ দশমিক ৭ শতাংশ শ্রমিক তৈরি পোশাক খাতেই কাজ ফিরে পেয়েছেন। বাকি কয়েক শতাংশ অন্যান্য খাতে গেছেন।
শনিবার ‘পোশাক খাতে করপোরেট জবাবদিহিতা- প্রেক্ষিত কোভিড-১৯ মহামারী’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধে সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম জরিপের এই তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘মহামারি করোনাভাইরাসের প্রথম ধাক্কায় গত বছরের এপ্রিল-মে মাসে কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যেসব পোশাকশ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন, তাদের অনেকেই বাধ্য হয়ে পেশা পরিবর্তন করেছেন। কারখানা বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিকদের মাত্র ১৫ শতাংশ কোনো না কোনো কাজ পেয়েছেন।’
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও সজাগ কোয়ালিশন যৌথভাবে এই সংলাপের আয়োজন করে।
একটি সমীক্ষার ভিত্তিতে মূল প্রবন্ধটি তৈরি করা হয়। এতে আরও বলা হয়, নতুন কাজে শ্রমিকদের আয় কমে গেছে। আগে যেখানে শ্রমিকেরা মাসে ৮ থেকে ১২ হাজার টাকা আয় করতেন, সেখানে চাকরি হারানোর পর নতুন কাজে তারা এখন মাসে গড়ে সাত হাজার টাকা আয় করেন। তা ছাড়া চাকরি হারানোর সময়ে অনেকেই তাদের পাওনা পাননি।
১০২ জন গার্মেন্টস মালিক, ৩০১ জন পোশাকশ্রমিক ও ১০০ জন বেকার পোশাকশ্রমিকের ওপর এই সমীক্ষা করা হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, শ্রমিকদের পাওনা দিতে হবে। এ জন্য মালিকপক্ষের দায়বদ্ধতা থাকতে হবে। শ্রমিকশ্রেণির প্রাপ্য পরিশোধে মালিকেরা যেন নজর দেন। শ্রমিকনেতাদেরও শুধু শ্রমিকস্বার্থ নয়, মালিকদের যৌক্তিক পরিস্থিতিও বিবেচনা করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘গত বছর বিদেশি ক্রেতারা যে পোশাক ১৫ ডলারে কিনত, সেই পোশাক এখন ১২ ডলার দিতে চাচ্ছে। তাই ক্রেতাদের কাছ থেকে উপযুক্ত দাম পাওয়ার বিষয়ে আওয়াজ তুলতে হবে।’
বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, করোনার কারণে বিদেশি ক্রেতাদের অনেকে ব্যাংকে ঋণখেলাপি হয়ে গেছেন। তাই দামও পড়ে গেছে। এ ছাড়া ২০১৫ সালের পর পোশাকের বৈশ্বিক বাজার বাড়েনি।
করপোরেট সুশাসন জোরদারের আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, ‘আট বছর পর বিজিএমইএর নির্বাচন হয়েছে। এবার নতুন প্রজন্মের অনেক প্রতিনিধি কমিটিতে এসেছে। তাদের নিয়ে করপোরেট সুশাসন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেব।’
‘তবে আশার কথা হচ্ছে, আমাদের খাতটি ঘুঁরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। এরইমধ্যে আমরা কিছু লক্ষণ দেখছি। আগামী বছর এই খাত ভালো মত ঘুরে দাঁড়াতে পারে’-বলেন তিনি।
নিট পোশাক শিল্পমালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘মুনাফার অর্থ নিয়ে কারখানার সম্প্রসারণ করে থাকি। বরং যা মুনাফা করি তার চেয়েও বেশি পুনঃবিনিয়োগ করি। তাই আমাদের হাতে ৪-৫ মাস বেতন দেয়ার মতো অর্থ থাকে না।’
কর্মীদের বেতন কমানোর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার দাবি কোথাও বেতন কমানো হয়নি।
বাংলাদেশ সেন্টার ফর ওয়ার্কার্স সলিডারিটির নির্বাহী পরিচালক কল্পনা আক্তার বলেন, ‘মজুরি কমে গেলে বিপদে পড়েন শ্রমিকেরা। বাড়িওয়ালারা টাকা কম নেয় না, ওষুদের দামও কম নেয় না। তখন শ্রমিকেরা খাওয়া কমিয়ে দেয়…। এভাবে দুর্বিসহ জীবনযাপন করেন তারা।’
তিনি বলেন, ‘পোশাকশিল্প মালিকদের শুধু ক্রেতামুখী জবাবদিহি নয়; শ্রমিকমুখী জবাবদিহিও নিশ্চিত করতে হবে।’
বিজিএমইএর পরিচালক আবদুল্লাহ হিল রাকিব বলেন, করোনার সময়ে বিদেশি ক্রেতাদের চাহিদার কথাও বিবেচনা করতে হবে। তাদেরও বিক্রি নেই। তারা পোশাক নিয়ে কোথায় রাখবে? তাই উভয় পক্ষের কথা চিন্তা করতে হবে।
আলোচনা সভায় শ্রমিক নেতা মন্টু চন্দ্র ঘোষ, নমিতা নাথ, আহসান হাবিব বুলবুল, বাবুল আক্তারসহ শ্রমিক প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান।
আরও পড়ুন:ভারতের তিনটি কফ সিরাপের বিষয়ে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংস্থাটি জানিয়েছে, এই কফগুলো উল্লেখযোগ্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে এবং জীবনের জন্য হুমকির কারণ হতে পারে। এই কফ সিরাপগুলো তৈরি করা হয়েছে ১ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের জন্য। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
ভারতের ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সরকারি প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনের (সিডিসসিও) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ডব্লিউএইচও’র সতর্কবর্তা সম্পর্কে তারা ওয়াবিহাল এবং এই সতর্কবার্তাকে আমলে নিয়ে ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরো কঠোর ও নিখুঁত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন তারা।
এই তিনটি কফ সিরাপ হলো ভারতীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান শ্রেসান ফার্মাসিউটিক্যালের তৈরি কোল্ডরিফ, রেডনেক্স ফার্মাসিউটিক্যালের তৈরি সিরাপ রেসপিফরেশ টিআর এবং শেপ ফার্মার তৈরি সিরাপ রিলাইফ।
এই সিরাপগুলোতে ডায়াথিলিন গ্লাইকোল নামের একটি রাসায়নিকের অস্বাভাবিক উপস্থিতির কারণেই এই সতর্কবার্তা দিয়েছে ডব্লিউএইচও। শিশুদের কাশির সিরাপ তৈরির জন্য ডায়াথিলিন গ্লাইকোল একটি প্রয়োজনীয় রাসায়নিক, তবে কোনো সিরাপে যদি অনুমোদিত বা নির্দিষ্ট মাত্রার বেশি ডায়াথিলিন গ্লাইকোল ব্যবহার করা হয়, তাহলে তা রীতিমতো বিষে পরিণত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, এই তিন কফ সিরাপে ডায়াথিলিন গ্লাইকোলের উপস্থিতি নির্ধারিত বা অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে ৫০০ গুণ বেশি।
গত আগস্টে ভারতে শ্রেসান ফার্মাসিউটিক্যালসের তৈরি কোল্ডরিফ সিরাপ খেয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জন শিশুর।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় যৌথ অভিযানে প্রায় ১৪ কোটি টাকার অবৈধ চায়না দুয়ারী ও কারেন্ট জাল জব্দ করেছে ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়ন। সোমবার (১৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, গত ১১ ও ১২ অক্টোবর উপজেলার সীমান্তবর্তী আশ্রায়ন বিওপির আওতাধীন এলাকায় এই অভিযান পরিচালিত হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার নেতৃত্বে, সহকারী পরিচালক এবং ভারপ্রাপ্ত কোয়ার্টার মাস্টার মো. জাকিরুল ইসলাম অভিযানে অংশ নেন।
অভিযানকালে উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের চল্লিশপাড়া ও মদনের ঘাট এলাকায় আনুমানিক ৩৫ হাজার কেজি অবৈধ চায়না দুয়ারী ও কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়, যার বাজারমূল্য প্রায় ১৪ কোটি টাকা।
পরে সোমবার দুপুর ২টার দিকে কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ আশ্রায়ন বিওপি এলাকায় জনসম্মুখে এসব অবৈধ জাল ধ্বংস করা হয়। পরিচালক (অপারেশন) যশোর সদর দপ্তর, দক্ষিণ-পশ্চিম রিজিয়ন লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মিজানুর রহমান শিকদার এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব মুর্শেদ রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিদ্দিকী ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হোসেন আহমেদ এর উপস্থিতিতে জালগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়।
৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব মুর্শেদ রহমান বলেন, সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিজিবি সর্বদা তৎপর রয়েছে। মাদক ও সব ধরনের অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। জনসাধারণের সেবায় বিজিবি ভবিষ্যতেও সর্বদা নিয়োজিত থাকবে।
দাবি পূরণ করে প্রজ্ঞাপন জারি না করায় মঙ্গলবার শহীদ মিনার থেকে ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি পালন করবেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। পাশাপাশি তাঁদের অবস্থান ও কর্মবিরতি চলবে।
মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, শিক্ষক ও কর্মচারীদের জন্য চিকিৎসা ভাতা দেড় হাজার টাকা এবং কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশের দাবিতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। গতকালেক তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। পাশাপাশি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি পালিত হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে সচিবালয় অভিমুখে ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা। গতকাল রাতে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন সংগঠনের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী।
তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার মধ্যে প্রজ্ঞাপন বা ঘোষণা না এলে লং মার্চসহ পরবর্তী কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া হবে।
দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, ‘আমাদের ওপর নির্বিচার পুলিশি লাঠিপেটা করা হয়েছে। আমাদের শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করে রক্তাক্ত করা হয়েছে। টিয়ার সেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। এমনকি একজন শিক্ষককে ধরে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা এর নিন্দা জানাই ও বিচার দাবি করছি।’
তিন দফা দাবিতে গত রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেছিলেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। এতে সারা দেশ থেকে আসা বিপুলসংখ্যক শিক্ষক-কর্মচারী এতে অংশ নেন। কিন্তু সেখানে বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি তারা। লাঠিপেটা, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান থেকে পানি ছুড়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে অবস্থান নেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-কর্মচারীরা।
বিশ বছর পর যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) নবম বৈঠকে বসতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। আগামী ২৭ অক্টোবর ঢাকায় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ উদ্দেশ্যে ঢাকা আসছেন পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী আহাদ খান চিমা।
আসন্ন জেইসি বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। আর পাকিস্তান প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন দেশটির অর্থনৈতিক বিষয়কমন্ত্রী আহাদ খান চিমা। বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবে দুই দেশ। আহাদ খান চিমার ঢাকা সফরের সময় জেইসি বৈঠকে অংশ নেওয়া ছাড়াও একাধিক বৈঠকের কথা রয়েছে। সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে পারেন। দুই দেশের যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের সবশেষ বৈঠকটি ২০০৫ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
সূত্রে জানা গেছে, জেইসির বৈঠকে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী যখন ঢাকায় থাকবেন, কাছাকাছি সময়ে ইসলামাবাদ সফরের কথা রয়েছে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের। পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খানের আমন্ত্রণে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনার জন্য শেখ বশিরউদ্দীনের ওই সফরের কথা রয়েছে।
গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সম্পর্ক স্বাভাবিক করার অংশ হিসেবে ব্যবসা-বাণিজ্যের নানা ইস্যু নিয়ে উদ্যোগ আর আলোচনা হচ্ছে। তাই এবারের জেইসি বৈঠকে দুই দেশ সরাসরি অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত সহযোগিতার বিষয় নিয়ে আলোচনা করার বিষয়টি ঠিক করেছে। সে ক্ষেত্রে ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানো, কৃষিতে সহায়তা, আর্থিক সেবা খাত, ব্যাংকিংসহ সংশ্লিষ্ট খাতে কীভাবে সামনের দিনে সহায়তা এগিয়ে নেওয়া যায়, তাতে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
এক কর্মকর্তা জানান, বৈঠকে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি পরিমাণে শুল্ক ও কোটামুক্তভাবে চা, পাটজাত পণ্য, মেডিসিন, তৈরি পোশাক, ইলেকট্রনিকস সামগ্রী আমদানির জন্য পাকিস্তানকে অনুরোধ করা হবে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর আহাদ খান চিমার সফরটি হবে বাংলাদেশে পাকিস্তানি মন্ত্রী পর্যায়ের চতুর্থ সফর। সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার প্রথম ধাপ হিসেবে গত এপ্রিলে পররাষ্ট্র সচিবদের বৈঠকে অংশ নিতে ঢাকায় এসেছিলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ। এরপর ঢাকা আসেন বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান এবং উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার।
কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব আহমেদ জামিল স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, দ্য সিভিল অ্যাভিয়েশন রুল, ১৯৮৪ এর রুল ১৬ এর সাব রুল (১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার কক্সবাজার বিমানবন্দরকে ‘কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।’
এই বিমানবন্দরটিকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে ২০২১ সালে কাজ শুরু করে বেবিচক। এই প্রকল্পের আওতায় বিমানবন্দরটিতে নতুন টার্মিনাল নির্মাণসহ বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে আগামী ডিসেম্বরে।
তবে এরই মধ্যে বেবিচক চেয়ারম্যান ঘোষণা দেন, চলতি বছর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হবে৷ তবে তা সম্ভব হয়নি এয়ারলাইন্সগুলোর মাঝ থেকে কোনো প্রকার সাড়া না পাওয়ায়।
উল্লেখ্য, ২০০৯ থেকে ২০১৩ সালের মেয়াদে কক্সবাজার বিমানবন্দরের উন্নয়ন কাজ শুরু হয়। এরপর ২০১৫ সালে যোগ হয় আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার নতুন ধাপ। ভৌগোলিকভাবে দক্ষিণ এশিয়ায় কক্সবাজার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট।
বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের পক্ষ থেকে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ঘোষণা অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার দুপুরে ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি পালন করবেন তারা।
গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী।
এ সময় অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী জানান, বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে শিক্ষকরা আজ ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি পালন করবেন।
আজিজী আরও বলেন, ‘আজ (সোমবার) রাতের মধ্যে যদি প্রজ্ঞাপন বা কোনো ঘোষণা না দেওয়া হয়, তাহলে লং মার্চ ও চলমান কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।’
এছাড়া আন্দোলনের অংশ হিসেবে সারা দেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গতকাল থেকে যে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করা শুরু হয়েছে, সেটিও অব্যাহত থাকবে। একই সঙ্গে, শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি চলছে।
শিক্ষকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের ন্যায্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি ও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে। আন্দোলনরত শিক্ষকরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞা জানিয়েছেন যে, সরকার যদি দ্রুত তাদের দাবির বিষয়ে পদক্ষেপ না নেয়, তবে আন্দোলন আরও বড় রূপ নেবে।
এর আগে, গত রোববার প্রেস ক্লাবের সামনের অবস্থান কর্মসূচি থেকে শিক্ষকরা সোমবারের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি না হলে কর্মবিরতির আলটিমেটাম দিয়েছিলেন। কিন্তু ওইদিন পুলিশের বলপ্রয়োগের ঘটনায় সেই কর্মসূচি একদিন এগিয়ে এনে তাৎক্ষণিকভাবে নতুন ঘোষণা দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচনের ইস্যুটি আগামী সংসদের ওপর ছেড়ে দিতে হবে।’
গতকাল সোমবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে খ্রিস্টান ফোরামের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘হঠাৎ করে পিআর পদ্ধতির দাবি সামনে এনে আন্দোলন করার বিষয়টি যারা দ্রুত নির্বাচন চান তাদের কাছে পরিষ্কার নয়। বিষয়টি আগামী সংসদের ওপর ছেড়ে দিতে হবে। সেখানে সিদ্ধান্ত হবে পরবর্তী নির্বাচন কোনো পদ্ধতিতে হবে। এখন যদি পিআর দেওয়া হয়, জনগণ বুঝবেই না এটা কী?’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে জনগণ আরেকবার রায় দেবে সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থার চেষ্টা চলছে। যদিও সেটা বিঘ্ন করার বিভিন্ন অপচেষ্টা দেখা যাচ্ছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় এলে সংসদের উচ্চকক্ষে সব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হবে। পাশাপাশি চার কোটি বেকারের সমস্যা সমাধানকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, দেড় বছরের মধ্যে এই সংকটের সমাধান সম্ভব।’
সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ খ্রিষ্টান ল’ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন-এর প্রেসিডেন্ট ফাদার আলবার্ট রোজারিও। সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ খ্রিষ্টান ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অনিল লিও কস্তা।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন কারিতাস এশিয়ার প্রেসিডেন্ট ড. বেনেডিক্ট আলো ডি’ রোজারিও, কোর দ্য জুট ওয়াকস্-এর পরিচালক রীতা রোজলিন কস্তা, দ্য মেট্রোপলিটন খ্রিষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান প্রতাপ অগাস্টিন গোমেজ, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্ট-এর চেয়ারম্যান ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য বিজন কান্তি সরকার, বিএনপি ধর্মবিষয়ক সহসম্পাদক অ্যাডভোকেট জন গোমেজ, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট-এর ট্রাস্টি ও বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুশীল বড়ুয়া, দ্য খ্রিষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেড (ঢাকা)-এর প্রেসিডেন্ট মাইকেল গোমেজ, খ্রিষ্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট-এর ট্রাস্টি মৃগেন হাগিদক, মন্টু পিটার রোজারিও, ফনিন্দ্রনাথ কর্মকার ও জ্যাকশন পিউরিফিকেশন, হিড বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক পাস্টর আনোয়ার হোসেন, ওয়াইএমসিএ-এর প্রেসিডেন্ট বাবলু ডেভিড গোমেজ, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের পরিচালক চন্দন জাকারিয়াস গোমেজ, বাংলাদেশ খ্রিস্টান ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক লুইস গোমেজ ও শীতল রিবেরু, বাংলাদেশ খ্রিস্টান ফোরামের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক মিসেস জজলিন গোমেজ, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট-এর ট্রাস্টি এভারিস রোজারিও, বাংলাদেশ খ্রিস্টান ফোরামের ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন হালদার, দ্য মেট্রোপলিটন খ্রিষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটির লিমিটেড-এর সেক্রেটারি পেপিলন পিউরিফিকেশন, বাংলাদেশ খ্রিষ্টান ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক প্রশান্ত প্রমুখ।
মন্তব্য