বাংলাদেশে ঈদ কেনাকাটায় উচ্চবিত্তের আনাগোনা যেখানে বেশি থাকে তার মধ্যে অন্যতম জারা ফ্যাশনস। উৎসব পার্বনে ইদানীং ধনকুবেরদের মধ্যে গাউনের চল বেড়েছে। তবে করোনাকাল বলে এবার অনেক দামি গাউনগুলো আনেনি তারা।
গুলশান-১ এ প্রতিষ্ঠানটির বিক্রয়কেন্দ্রে এবার সবচেয়ে দামি গাউনের মূল্য দেখা গেছে ৫৫ হাজার টাকা।
বিক্রয় কর্মীরা জানান, গত বছর সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছিল গাউন। এবার করোনাকালে ক্রেতা কম হবে ভেবে ওই ধরনের পোশাক আন আনেননি তারা। বরং অরিজিনাল সেই গাউনগুলোর আদলে রেপ্লিকা এনেছেন, যেগুলোর দাম বেশ কম।
মেয়েদের পোশাকের তুলনায় ছেলেদের পোশাক জমকালো কম হয়, দামও তুলনামূলক কম দেখা যায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই। তবে জারা ফ্যাশনে এবার মেয়েদের যে কোনো পোশাকের চেয়ে ছেলেদের একটি শেরওয়ানির দাম বেশি।
সেখানে এবার সবচেয়ে দামি শেরওয়ানির মূল্য ৭০ হাজার টাকা। এর সঙ্গে পাঞ্জাবি পাওয়া যাচ্ছে সাড়ে ছয় হাজার টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে।
তবে বেচাকেনা নিয়ে যারপর নাই হতাশ কর্মীরা। তারা বলছেন, এখনও ক্রেতা নেই সেভাবে।
জারা ফ্যাশন মলের জেনারেল ম্যানেজার মোশহাবিরুল রিজভী ঘুরে ঘুরে পোশাক দেখাচ্ছিলেন আর বলছিলেন, ‘এমন ঈদে দেড় থেকে আড়াইল লাখ টাকার গাউনও বিক্রি হয়েছে। এখন ৫৫ হাজার টাকার গাউন-লেহেঙ্গা নিয়েই বিপাকে আমরা।’
এর কারণ কী?
তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে বন্ধ বিয়ে, সামাজিক অনুষ্ঠান। জারা ফ্যাশনে যে পোশাক আছে তার বেশিরভাগই পার্টি ড্রেস। ঈদে যে বড় বড় আয়োজন হয় সেগুলোতে এসব পোশাকের চাহিদা বেশি ছিল। এখন সবকিছু বন্ধ থাকায় বিক্রি নেই।’
এখন পর্যন্ত একটিও দামি পোশাক বিক্রি হয়নি জানিয়ে মোশহাবিরুল রিজভী বলেন, ‘ধনিক শ্রেণির ক্রেতাদের আনগোনাই এখানে বেশি থাকে। তারা মূলত রাতে বেশি আসেন। কিন্ত শো-রুম খোলা রাখার ক্ষেত্রে সরকার বিধি নিষেধ দেয়া আছে। ফলে এখন রাত আটটাই শো রুম বন্ধ করে দিতে হয়। এ জন্য ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে যেসব ক্রেতারা আসেন তাদের বেশিরভাগই নিয়মিত কাস্টমার। যারা প্রায়শ আমাদের এখান থেকে কেনাকাটা করেন। কিন্ত এই অবস্থায় তারাও কেনাকাটা করছেন না। অনেকের ব্যবসায় মন্দা, আবার অনেকে করোনা আতঙ্কে কেনাকাটা থেকে নিজেকে বিরত রাখছেন।’
করোনা হানা দেয়ার আগে ঈদের আগে এই সময়ে রাতে সেহেরি পর্যন্ত শো রুম খোলা রাখতে হয়েছে। তখনও ক্রেতার আনাগোনা অনেক থাকত।
এত দাম কেন?
জারা ফ্যাশনের জেনারেল ম্যানেজার বলেন, ‘এগুলো মূলত অর্ডার করে আনতে হয়। একটি ডিজাইন একটিই। আপনি যেটা পড়বেন, সেটা আরও কেউ পড়বে না। ফলে প্রতিটি তার জন্যই আলাদা করে প্রস্তুত হয়। কপি প্রোডাক্ট হলেও এর হয়ত দুই থেকে তিন পিস থাকবে বাজারে। তখন জামা তৈরির খরচ কম হয়। আবার একই ডিজাইন অনেক হলে আরও কম হয়। এ কারণেই এই পোশাকগুলো এত দাম।’
৫৫ হাজার টাকার গাউনটি দেখিয়ে জারার ম্যানেজার বলেন, ‘এখানে যে কাজটি দেখছেন, সেটি রেশমি ও জরি সুতার কাজ করা। নিখুত ডিজাইনের কাজ হওয়ায় খুবই দুর্লভ। এটিও হয়ত বাজারে দুই একটিই পাওয়া যাবে।’
তিনি বলেন, ‘অতিরিক্ত পিস নিতে চাইলে দুই থেকে তিন মাস আগে অর্ডার দিতে হবে। এটার আরও যে বিশেষত্ব আাছে সেটি হচ্ছে এটি গ্রাউন স্ট্যাইলের টেল কাটিং। উড়নায় স্টোনের কাজ করা।’
লেহেঙ্গাও দেখা গেল ৫২ হাজার টাকার। আনা হয়েছে ভারতের রাজস্থান থেকে। বিভিন্ন ধরনের এসব লেহেঙ্গা পাওয়া সর্বনিম্ম ৩৫ হাজার টাকায়। এগুলোরও বেশিরভাগই কপি করা। অরিজিনালগুলোর দাম আরও কয়েক গুণ বেশি।
এবার রেপ্লিকা কেন?
জেনারেল ম্যানেজার বললেন, ‘আগে আমাদের এগুলোর অরজিনাল পিস ছিল। তখন এগুলোর অনেক কাস্টমার ছিল। এখন কাস্টমার নেই। তাই অরজিনাল থেকে কপি করে দাম কিছুটা কমে বিক্রি করছি। তবে মানের দিক দিয়ে কোনো হেরফের নেই।’
আছে মাল্টি কাজের লেহেঙ্গা। যেখানে পাঁচ ধরনের সুতা দিয়ে কাজ করা। রেশমি জারি, মোঙ্গ সুতা আর কোটা পাত্তির কাজ আছে। পুরোটাই স্টোর দিয়ে মোড়ানো। এমন একটির দাম রাখা হচ্ছে ৩৮ হাজার টাকা। শারারা লেহেঙ্গার দাম রাখা হচ্ছে ৪৮ হাজার টাকা।
শুধু পোশাক নয়, পোশাকের সঙ্গে মানানসই লেডিস পার্সেরও কালেকশন আছে জারা ফ্যাশনে। বোম্বে থেকে আসা এসব পার্সের দাম সাড়ে ৪ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকার মধ্যে।
পুরুষের জন্য কটনের পাঞ্জাবিও আছে এখানে। দাম সর্বোচ্চ সাড়ে ছয় হাজার টাকা পর্যন্ত। আরও আছে সিল্ক বা রেশমি সুতার কাজ করা পাঞ্জবি। সেগুলোর দাম বেশি।
বিভিন্ন ধরনের কাজ করা শেরওয়ানি আছে জারা ফ্যাশনে। করোনার আগে আরও এক্সক্লুসিভ শেরওয়ানি ছিল ডিসপ্লেতে। সেগুলোর দাম ছিল প্রায় ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত। সেটি কেউ চাইলে এখনও নিতে পারেন। তবে বিক্রি হবে না ভেবে ডিসপ্লেতে রাখা হয়নি।
ডিসপ্লেসে যেগুলো রাখা হয়েছে, সেগুলোর সর্বোচ্চ ৪২ হাজার টাকা।
দামের বিষয়ে জারার জেনারেল ম্যানেজার বলেন, ‘এর পুরোটাই কাজ করা। মূলত এ কারণেই দাম এত। আর এটির প্রোডাকশনও এক পিস। আর কোথাও পাওয়া যাবে না।’
শিশুদের জন্য আছে প্যান্ট শার্ট, রেডিমেন্ট গার্মেন্টস। মেয়ে বাচ্চাদের জন্য আছে শারারা গারারা। এক থেকে দেড় বছরের শিশুদের পোশাকের সর্বনিম্ন দাম দেড় থেকে দুই হাজার টাকা।
আরও পড়ুন:পাসপোর্ট ভিসা ছাড়া অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের সময় যশোরের শার্শা উপজেলার কায়বা সীমান্ত থেকে ৫ নারী-পুরুষকে আটক করেছে বিজিবি সদস্যরা। গত মঙ্গলবার রাতে সীমান্তের ১৭/৭ এস এর ২২ আর পিলারের নিকট থেকে তাদের আটক করা হয়।
বিজিবি জানায়, শার্শা উপজেলার কায়বা সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশি নাগরিকরা বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করতে পারে। ওই সংবাদের ভিত্তিতে বিজিবির একটি টহল দল সীমান্ত পিলার ১৭/৭ এস এর ২২ আর পিলার থেকে আনুমানিক ৫০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশের সময় ২ জন পুরুষ এবং ৩ জন নারীকে আটক করে।
আটককৃত ব্যক্তিদের বাড়ি, যশোর, বাগেরহাট, মুন্সীগঞ্জ, ঢাকা এবং সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন এলাকায়। আটককৃতদের শার্শা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান বিজিবি। খুলনা-২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ খুরশীদ আনোয়ার আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সাম্প্রতিককালে সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধকল্পে বিজিবি সীমান্তে কঠোর নজরদারি ও টহল তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে।
ক্যাডার কর্মকর্তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ ছয় মাস থেকে কমিয়ে চার মাস করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন মাস প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে এবং এক মাস মাঠপর্যায়ে ওরিয়েন্টেশন ও গ্রাম সংযুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় প্রশিক্ষণ কাউন্সিলের নবম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, কর্মকর্তাদের মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে ভর্তির সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৪৭ বছর করা হবে। পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়নকালে প্রতি বছর তত্ত্বাবধায়কের অগ্রগতিমূলক প্রত্যয়ন মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে, অন্যথায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বেতন বন্ধ রাখা হবে।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারি যত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে সেগুলোর ওপর মূল্যায়ন করতে হবে। কী ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, প্রশিক্ষণের ধরন-মান ইত্যাদির মানদণ্ড নির্ধারণ করে ক্যাটাগরিভিত্তিক প্রতিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে র্যাংকিং করতে হবে এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি স্বাধীন ইউনিট গঠন করতে হবে। তারা সমস্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ওপর পদ্ধতিগতভাবে, স্বাধীনভাবে মূল্যায়ন করবে। গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামগ্রিক দর্শন জানতে হবে। সেগুলো সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না দেখতে হবে। সরকারি কর্মকর্তারা যারা বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন তাদের তথ্য সেখানে থাকবে।’
সভায় সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণের নাম পরিবর্তন করে ‘দক্ষতা নবায়ন প্রশিক্ষণ’ করার সিদ্ধান্ত হয়। এ প্রশিক্ষণ হালনাগাদকৃত কারিক্যুলামে মাঠপর্যায়ে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আয়োজন করা হবে। এছাড়া উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা আংশিক বৃত্তিপ্রাপ্ত হলেও প্রেষণ অনুমোদন করা যাবে।
কর্মচারীদের সততা ও নৈতিকতা বিকাশ এবং দুর্নীতি বিরোধী মনোভাব তৈরিতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে সদ্গুণ, নৈতিকতা, আচরণবিজ্ঞান ও আচরণবিধি অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক মূল্যায়ন এবং প্রশিক্ষণ বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে গবেষণা, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে একটি নির্বাহী কমিটি (ইসিএনটিসি) গঠন করা হয়।
জাতীয় লেখক ফোরাম আয়োজিত সাপ্তাহিক সাহিত্য আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর ধানমন্ডিতে হওয়া এ সাহিত্য আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠেনর সভাপতি ড. দেওয়ান আযাদ রহমান, মহাসচিব কবি-কথাসাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন এবং উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য মো. আবদুল মান্নানসহ বাংলাদেশের খ্যাতিমান লেখকরা। অনুষ্ঠানটি একটি সাধারণ প্রাণবন্ত আড্ডার মধ্যেই শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি ৩টি পর্বে সাজানো হয়েছে। প্রতি পর্বে চারজন কবিকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারা তাদের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য এবং কবিতা পাঠ করেছেন। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন কবি-কথা সাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধের জন্য সরকার প্রদত্ত সুদমুক্ত ঋণ যথাসময়ে ফেরত না দিলে সংশ্লিষ্ট শিল্প কারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বুধবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি, বিজিএমইএ-এর সভাপতি এবং সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতা কারখানার মালিকদের নিয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়।
ড. এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরা শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় শ্রম অসন্তোষ নিরসনের লক্ষ্যে সরকার বার্ডস গ্রুপ, টিএনজেড গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, ডার্ড গ্রুপ, নায়াগ্রা টেক্সটাইলস লিমিটেড, রোয়ার ফ্যাশন লিমিটেড, মাহমুদ জিন্স লিমিটেড, স্টাইল ক্রাফট লিমিটেড এবং গোল্ডস্টার গার্মেন্টস লিমিটেডকে অর্থ বিভাগ এবং কেন্দ্রীয় তহবিল, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে সুদমুক্ত ঋণ প্রদান করে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ চুক্তির আওতায় উক্ত অর্থ পরিশোধ করছেন না।
তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে। তাদের পাসপোর্ট জব্দের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ইতোমধ্যে কয়েকজন পলাতক মালিকের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি পলাতক মালিক ও প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট স্থগিত রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা দেন।
উপদেষ্টা বলেন, "এই ঋণের টাকা শ্রমিকের টাকা এবং জনগণের ট্যাক্সের টাকা। এ টাকা আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।"
তিনি বলেন, এই ক্ষেত্রে কোনোরকম ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক ও প্রতিনিধিদের সংশ্লিষ্ট লিয়েন ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিষ্ঠানের জমি, কারখানা, যন্ত্রপাতি বিক্রি করে হলেও ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ঋণের সকল টাকা পরিশোধ করতে বলেন।
এ বিষয়ে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ-কে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বৃষ্টি নুনিয়া (২০) নামে এক তরুণী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বুধবার উপজেলার পৌর এলাকার সিন্দুরখান রোডের নিজ বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ। বৃষ্টি ওই এলাকার হীরালাল নুনিয়ার মেয়ে।
শ্রীমঙ্গল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাইদুর রহমান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায়। গত মঙ্গলবার রাতে পরিবারের সঙ্গে খাবার খেয়ে নিজ কক্ষে ঘুমাতে যান বৃষ্টি। রাতের কোনো একসময় পরিবারের অজান্তে তিনি গলায় ওড়না পেঁচিয়ে বাসার ছাদের মন্দিরের পিলারের সাথে ফাঁস দেন। রাত আড়াইটার দিকে তার মা ডাকতে গেলে কক্ষে তাকে না পেয়ে ছাদে গিয়ে ওই অবস্থায় দেখতে পান এবং পরে পুলিশকে খবর দেন।
শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আমিনুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
সাতক্ষীরায় পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে আব্দুস সামাদ (৫২) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গত মঙ্গলবার রাতে তাকে আটকের পর ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এক মাসের সাজা দেওয়া হয়। তিনি সাতক্ষীরা পৌরসভার রসুলপুর এলাকার বাসিন্দা। পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম জানান, সাতক্ষীরায় পুলিশের ট্রেইনিং রিক্রুট কনস্টেবল পদের জন্য পরীক্ষা নেওয়া হয়। লিখিত পরীক্ষার পর আব্দুস সামাদ বেশ কয়েকজন প্রার্থীর কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আব্দুস সামাদকে শহরের সঙ্গীতা মোড় এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে সাতক্ষীরা কারাগারে পাঠানো হয়।
ফটিকছড়ি উপজেলর কাঞ্চন নগর ইউনিয়নে ধুরুং নদীর ভাঙনের মুখে পড়েছে দুইশত বছরের পুরোনো কবরস্থান ও বসতভিটা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ধুরুং নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে নির্বিচারে বালু উত্তোলনের ফলে নদীপাড় ভাঙনের সৃষ্টি হয়ে বসতভিটাসহ শতবর্ষী কবরস্থান বিলীন হতে চলেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের পশ্চিম কাঞ্চননগর গ্রামের আবদুল হাকিম কেরানীবাড়ী-সংলগ্ন বিশাল কবরস্থানের দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা ভেঙে পার্শ্ববর্তী ধুরুং নদীতে মিশে একাকার হয়ে গেছে। এর মধ্যে স্বনামধন্য ধন্য আলেম ও ইসলামী ব্যক্তিত্ব হজরত অছিউদ্দিন শাহর মাজারও রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান ধুরুং নদীর পাড়ঘেঁষা শতবর্ষী এ কবরস্থানে বছর দুয়েক আগেও শতাধিক কবর ছিল। প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে মুসল্লিরা এখানে জিয়ারত করতে আসত।
কিন্তু নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলনের ফলে ভাঙন বৃদ্ধি পেয়ে কবরস্থানটি দিন দিন ছোট হয়ে আসছে।
এ স্থানটিতে খাল এমনভাবে ভেঙেছে, এখানে যে কিছুদিন আগেও কবরস্থান ছিল, তা বোঝার উপায় নেই। বর্তমানে অনেক কবরের স্মৃতি চিহ্ন পর্যন্ত মুছে গেছে।
এদিকে স্থানীয় একাধিক বাসিন্দার সাথে কথা হলে তারা নাম প্রকাশে না করার শর্তে বলেন প্রভাবশালী একটি মহল নদী থেকে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করার কারনে ভাঙন মাত্রা আগের চাইতে বেড়ে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপপ্রকৌশলী সোহাগ তালুকদার বলেন, নদীর ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে অর্থ বরাদ্দের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে এ নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে বেড়িবাঁধ রক্ষা কঠিন হয়ে পড়বে।
এ নিয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও কাঞ্চন নগর ইউপির প্রশাসক মো. নজরুল ইসলম ড্রেজার মেশিন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানিয়ে বলেন ভাঙনকবলিত কবরস্থানটি শীঘ্রই পরিদর্শন করা হবে।
মন্তব্য