করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ঈদ কেনাকাটায় শপিং মল ও দোকানপাট সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশনা এসেছে সরকার থেকে।
চলমান লকডাউনের সময়সীমা ১৬ মে পর্যন্ত বাড়িয়ে বুধবার জারি করা প্রজ্ঞাপনে এই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, দোকানপাট ও শপিং মলগুলো আগের মতো সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। সব দোকানপাট ও শপিং মলে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালন নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় দোকানপাট ও শপিং মল তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করে দেয়া হবে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল কঠোর বিধিনিষেধসহ লকডাউন আরোপ করা হয়। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে ‘সর্বাত্মক’ লকডাউন দফায় দফায় বাড়িয়ে ১৬ মে পর্যন্ত করা হয়েছে।
তবে ঈদের কেনাকাটা ও মানুষের জীবন-জীবিকার বিষয় বিবেচনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে গত ৯ এপ্রিল থেকে খুলে দেয় শপিং মল ও দোকানপাট। শুরুতে বেলা ১০টা থেকে বিকেল ৫টা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়। ২৬ এপ্রিল থেকে তা বাড়িয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত করা হয়।
এর মধ্যে শপিং মল দোকানপাট রাত ১২টা পর্যন্ত খোলা রাখার দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি। কিন্তু সেটা না মেনে শপিং মল খোলা রাখার সময় আরও এক ঘণ্টা কমানোর সিদ্ধান্ত নিল সরকার।
ঈদ পর্যন্ত লকডাউন বাড়িয়ে বুধবার জারি করা প্রজ্ঞাপনে আরও যেসব নির্দেশনা রয়েছে:
# সকল সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঈদের ছুটিতে আবশ্যিকভাবে স্ব-স্ব কর্মস্থলে (অধিক্ষেত্রে) অবস্থান করবেন।
# আন্তজেলা গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। তবে ৫ মের পর যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন সাপেক্ষে জেলার অভ্যন্তরে গণপরিবহন চলাচল করতে পারবে। উল্লেখ্য, ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল আগের মতোই বন্ধ থাকবে।
# মাস্ক ব্যবহার শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
# জনসমাবেশ হয় এ ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে।
# কোভিড-১৯ প্রতিরোধে সিটি করপোরেশন, জেলা সদর, পৌরসভা এলাকাগুলোতে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধান, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন, পৌরসভা মাইকিংসহ ব্যাপক প্রচার প্রচারণার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
আরও পড়ুন:আগামী ১০ নভেম্বর আওয়ামী লীগ সমাবেশ করতে চাইলে ইসির অনুমতি নিতে হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
আগারগাঁও নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে রোববার সকালে পর্যবেক্ষণে ঢাকায় আসা ইইউ ইলেকশন এক্সপার্ট টিমের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আগামী ১০ তারিখ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ একটি সমাবেশ করার কথা বলছে। ইসির অনুমতি ছাড়া তারা এ সমাবেশ করতে পারবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের আচরণ বিধিতে যা আছে তাতে করে রাজনৈতিক সমাবেশের জন্য অনুমতি নিতে হবে। আমাদের লোকাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন আছে, যেমন রিটার্নিং অফিসার আছে তাদের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। তবে এখনও এ বিষয়ে আমরা কোনো চিঠি পাই নাই। চিঠি পেলে পরে চিন্তা করব।’
অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ‘আজকে আমাদের সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইইউ এক্সপার্ট দল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বসতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে আমিসহ আমাদের যুগ্ম সচিবরা তাদের সঙ্গে বসেছি। তারা আগামী ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত এ দেশে থাকবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এক্সপার্ট দল মূলত আমাদের কাছে কিছু বিষয়ে জানতে চেয়েছে, আমরা সেগুলো তাদেরকে জানিয়েছি। তারা নির্বাচন পরবর্তী ও পূর্ববর্তী সময় সব বিষয় অবজার্ভ করবেন। তারা অবজারভ করবেন কোড অফ কন্ডাক্টের কোনো ভায়লেশন হচ্ছে কি না।’
‘তারা আমাদের নির্বাচন কমিশনের আইনগুলো জানতে চেয়েছেন। মূলত আইনগুলো বাংলায় লেখা হওয়ার কারণে তাদের বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে, তাই ইতোমধ্যে আমরা তাদের কিছু ইংরেজিতে প্রোভাইড করেছি।’
অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘মূলত তারা সারা দেশব্যাপী ঘুরবে। এ কারণে তাদের কিছু ইনকয়ারি ছিল, তারা সেগুলো আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন।’
এক্সপার্ট দল আর কী কী জানতে চেয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তারা আমাদের নির্বাচনে কতজন ক্যান্ডিডেট হয়েছে, কতগুলো দল অংশগ্রহণ করছে, কতগুলো বিদেশি অবজারভার দল আসবে, কতগুলো লোকাল অবজারভার থাকবে এগুলো জানতে চেয়েছে। আলোচনা শেষে আমরা মনে করি, তারা আমাদের কথায় কনভিন্সড হয়েছে।’
বৈঠকে ইইউ ইলেকশন এক্সপার্ট টিমের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা হলেন ডেভিড নোয়েল ওয়ার্ড (ইলেকশন এক্সপার্ট), আলেকজান্ডার ম্যাটাস (ইলেকটোরাল অ্যানালিস্ট), সুইবেস শার্লট (ইলেকটোরাল অ্যানালিস্ট) এবং রেবেকা কক্স (লিগ্যাল এক্সপার্ট)।
আরও পড়ুন:আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ২১ জন প্রার্থীর প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক কার্যালয় মিলনাতনে রোববার দুপুরে প্রার্থী-সমর্থনকারীদের উপস্থিতিতে মনোনয়নপত্র যাচাই শেষে এ ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার রেহেনা আকতার।
এ সময় আওয়ামী লীগের মানিকগঞ্জ-১ আসনে আব্দুস সালাম, মানিকগঞ্জ-২ আসনে মমতাজ বেগম এবং মানিকগঞ্জ-৩ আসনে জাহিদ মালেকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ২১জন প্রার্থীর প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ঋণ খেলাপি ও কাগজপত্রে স্বাক্ষরে গড়মিল থাকায় জাতীয় পার্টিসহ অন্য দলের ১২জন প্রার্থীকে বাতিল ঘোষনা করা হয়।
জেলা প্রশাসক ও রির্টানিং অফিসার রেহেনা আকতার বলেন, ‘কাগজপত্রে ভুল বা ঋণ খেলাপি অথবা অন্য কারণে যাদের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে, তারা আপিল করতে পারবেন। আইনগতভাবে তাদের আপিলের সুযোগ আছে।’
রাজধানীর গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া বাস টার্মিনালে ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহনের একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
রোববার দুপুর ২টা ৫২ মিনিটের দিকে বাসে অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট।
ফায়ার সার্ভিসের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহজাহান শিকদার জানান, সিদ্দিক বাজার ফায়ার স্টেশনের দুইটি ইউনিট পুলিশ প্রটেকশনে ঘটনাস্থলে পৌঁছে অগ্নি নির্বাপণ করে। বিকেল ৩টা ৮ মিনিটে আগুন সম্পূর্ণভাবে নির্বাপন করা হয়।
নোয়াখালী
নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।
রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান এ তথ্য জানান।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী ঋণ খেলাপি হওয়ায় মামুনুর রশিদ কিরনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।
নোয়াখালী-৩ আসনে মোট ১১ জন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেন। এরমধ্যে নৌকার প্রার্থী মামুনুর রশিদ কিরনসহ চারজনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। অন্যরা হলেন জাসদের জয়নাল আবদীন, স্বতন্ত্র আবুল কাশেম ও মনিরুল ইসলাম।
এ আসনে বৈধ প্রার্থী জাকের পার্টির মো. বাহার উদ্দিন, স্বতন্ত্র মিনহাজ আহমেদ, স্বতন্ত্র ডা. এবিএম জাফর উল্যাহ, সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো. সুমন আল হোসাইন ভূঁইয়া।
এ ছাড়া বিভিন্ন কারণে তিনজনের মনোনয়ন স্থগিত করা হয়েছে। তারা হলেন স্বতন্ত্র আক্তার হোসেন ফয়সাল, জাতীয় পার্টির ফজলে এলাহী সোহাগ ও সাম্যবাদী দলের মহিউদ্দিন।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, ৩০ নভেম্বর মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষ দিনও বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো (সিআইবি) রিপোর্ট অনুযায়ী মামুনুর রশিদ কিরন একজন ঋণ খেলাপি ছিলেন। তাই তার মনোনয়নপত্র আইন অনুযায়ী অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
মামুনুর রশিদ কিরন বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ হালনাগাদ করা আছে। সব কাগজপত্র দেয়ার পরও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মনোনয়ন বাতিল করেছেন। আমি নির্বাচন কমিশন বরাবর আপিল করব।
কক্সবাজার
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদসহ পাঁচজনের মনোনয়ন বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন।
রোববার দুপুর ১২টার দিকে যাচাই-বাচাইয়ের প্রথম পর্ব শেষে কক্সবাজারের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, জনতা ব্যাংকের লালদীঘি শাখা থেকে ফিস প্রিজারভারস নামের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে সালাহউদ্দিন আহমদসহ অন্য পরিচালকরা প্রায় অর্ধ শত কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। যা পরবর্তীতে খেলাপি হয়।
এরপর প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদ পরিবর্তন হলেও ব্যাংকের শর্ত অনুযায়ী সালাহউদ্দিন আহমদ এখনো সেই ঋণের একজন জামিনদার।মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্ট অনুযায়ী সালাহ উদ্দিন আহমদ একজন ঋণখেলাপি ছিলেন।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, যে অজুহাতে আমার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে সেটি আদালতের মাধ্যমে স্টে করা ছিল। কেন মনোনয়ন বাতিল করা হলো আমি জানি না। বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনে আপিল করব।
এদিকে কক্সবাজার-১ আসনে ৯ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ বলে ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা প্রার্থীরা হলেন জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রেসিডিয়াম সদস্য এ এইচ সালাহউদ্দিন মাহমুদ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, মহাসচিব আবদুল আউয়াল মামুন, ওয়ার্কার্স পার্টির মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু মোহাম্মদ বশিরুল আলম, জাতীয় পার্টি (জাপা) মনোনীত প্রার্থী হোসনে আরা, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলম ও জাফর আলমের ছেলে তানভীর আহমদ সিদ্দিকী তুহিন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, যাচাই-বাছাইয়ে শেষে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমদ ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম, শাহনেওয়াজ চৌধুরী, কমেডিয়ান কমর উদ্দিন আরমান ও শামসুদ্দিন মুহাম্মদ ইলিয়াছের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী কমেডিয়ান কমর উদ্দিন মুকুলসহ বাকি চারজনের মনোনয়ন কেন বাতিল করা হয়েছে সেটি তাৎক্ষণিক জানা যায়নি।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শিমুল শর্মা বলেন, দ্বিতীয় পর্বে কক্সবাজার ৩ ও ৪ আসনের প্রার্থীদের মনোনয় যাচাই-বাচাই করা হবে। যাদের বিবেচনায় রাখা হয়েছে তাও জানানো হতে পারে।
এ ছাড়া কক্সবাজার- ২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ বাদশা ও কক্সবাজার-২ আসনের কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহীমের মনোনয়ন বিবেচনায় রাখা হয়েছে।
টানা তিন বার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ফেল করা মো. আবদুল আলী বেপারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে লড়তে চাইছেন, তবে যাচাই-বাছাইয়ে তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে গেছে। এতে ভেঙে পড়েছেন তিনি, দিয়েছেন ‘আত্মহত্যার হুমকিও’।
রোববার দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের মনোনয়নপত্র যাচাই শেষে তার প্রার্থিতা বাতিল করেন জেলা প্রশাসক ও রির্টানিং অফিসার রেহেনা আকতার।
প্রার্থিতা বাতিলের কথা শুনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে প্রার্থিতা ফেরত চেয়ে মাটিতে কান্নায় লুটিয়ে পড়েন আবদুল আলী বেপারি। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এসে তাকে শান্ত্বনা দেন এবং প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিলের পরার্মশ দেন।
হলফনামাপত্রে জানা যায়, মানিকগঞ্জ-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ৬০ বছর বয়সী মো. আবদুল আলী বেপারি মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বেড়াডাংগা এলাকার কিয়ামুদ্দিনের ছেলে। পেশায় তিনি একজন কৃষক। কৃষিকাজের মাধ্যমে বার্ষিক আয় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং তার কাছে নগদ ২ লাখ টাকা ও এক ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। আলীর শিক্ষাগত সার্টিফিকেট না থাকলেও তিনি স্বশিক্ষিত।
পরিবারিক সূত্রে জানা যায়, আবদুল আলী বেপারি ২০১১, ২০১৬ ও ২০২১ সালে ঘিওর উপজেলার সিংজুরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন এবং নির্বাচনে পরাজিত হন। এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
কান্নায় ভেঙে পড়া আবদুল আলী বেপারি বলেন, ‘আমি এখন আমার ভোটারদের মুখ দেখাব কেমনে, আমি আর বাঁচুম না। আমি ভোট দিতে না পারলে মরুম, আমার জীবন রাখুম না।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমার আবেদন, আমার ভোট আমাকে দিয়ে যেন মরতে পারি। আমার বিশ্বাস আছে, মানুষ আমাকে ভোট দেবে। আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে সংসদে যাব। যেকোনো চক্রান্তের মাধ্যমে আমার নমিনেশন বাদ দেয়া হয়েছে। আমি এই চক্রান্ত বিশ্বাস করি না। আমাকে আমার ভোট দেয়ার সুযোগ দেয়া হোক।’
আরও পড়ুন:দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে ব্যাখা দিতে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির সামনে হাজির হলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এ কে এম শামীম ওসমান।
রোববার সকাল ১১টার দিকে অনুসন্ধান কমিটিতে নারায়ণগঞ্জ আদালতের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কাজী ইয়াছিন হাবীবের কাছে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দেন তিনি।
সেখান থেকে বের হয়ে সাংবাদকিদদের শামীম ওসমান বলেন, নির্বাচন কমিশন প্রমাণ করেছে তারা সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচন করতে সক্ষম। যারা নির্বাচন বানচাল করতে অগ্নিসংযোগ করছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানাই।
তিনি বলেন, যেহেতু পুলিশ নির্বাচন কমিশনের আন্ডারে, তারা যেন মানুষের শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দেয়া নিশ্চিত করতে পারে। আমরা এমনই নির্বাচন কমিশন চেয়েছিলাম। নির্বাচন কমিশন সক্ষম।
শামীম ওসমান বলেন, বিএনপি জামায়াত জ্বালাও-পোড়াও করছে। মানুষকে হত্যা করছে। ধ্বংসযজ্ঞ করছে। সেটার প্রতিবাদে আমাদের নেতা-কর্মীরা পাড়া মহল্লায় শান্তি মিছিল করেছে। নৌকা হলো শান্তির প্রতীক। আমরা অন্য সময় মিছিলের সময়ও নৌকার স্লোগান দেই। সে কারণেই হয়ত দিয়েছে।
তিনি বলেন, তবে আমি গর্ববোধ করি। অনেকের মুখে চুনকালি দিয়ে নির্বাচন কমিশন প্রমাণ করেছে তারা স্বাধীন। অনেকে দেশে বিদেশে নির্বাচন কমিশন নিয়ে প্রশ্ন করে। আমি এত নির্বাচন করেছি, কখনও দেখিনি পত্রিকার খবরে প্রার্থীকে তলব করা হয়। যে মিছিলে আমি ছিলামও না।
বাংলাদেশের নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে জাতিসংঘের বক্তব্যের জবাবে শামীম ওসমান বলেন, জাতিসংঘ বলেছে সবার অংশগ্রহণ, দেখতে হবে জনগণ অংশগ্রহণ করছে কি না। পত্রিকা ইনিয়ে বিনিয়ে বিএনপি জামায়াতের অংশগ্রহণ করার কথা বলেছে।
তিনি বলেন, আমি এই মুহূর্তে মনোনয়ন ছেড়ে দেব জাতিসংঘ তিনটা কাজ করতে পারলে। ফিলিস্তিনে যে ধ্বংসযজ্ঞ চলছে সেটা যদি জাতিসংঘ বন্ধ করতে পারি, তাদের যদি নিজের ভূমিতে ফিরিয়ে দিতে পারে আর যদি ইউক্রেনের যুদ্ধ বন্ধ করতে পারে।
বাংলাদেশকে শবক দেয়ার আগে আমি জাতিসংঘকে অনুরোধ করব রোহিঙ্গাদের অবিলম্বে তাদের দেশে ফেরানোর ব্যাবস্থা করুন। রাজনৈতিক দল কাকে বলে, যারা পাঁচ শ মানুষ আগুনে পুড়িয়ে মেরেছে। এখনও ওরা আগুন সন্ত্রাস করছে। ওদের কী রাজনৈতিক সংগঠন বলবেন, না সন্ত্রাসী সংগঠন বলবেন।
শামীম ওসমান বলেন, বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমাদের তরুণরা প্রমাণ করবে বাংলাদেশ কারও সামনে মাথানত করার দেশ না।
এর আগে ২ ডিসেম্বর শামীম ওসমানকে চিঠি দেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির সভাপতি যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ কাজী ইয়াসিন হাবীব।
চিঠিতে বলা হয়, গত শুক্রবার শহরের তল্লা এলাকাসহ বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় আপনার পক্ষে নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে মিছিল ও পথসভা করা হয়। এতে ওই এলাকায় যানবাহন ও পথচারীদের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়।
এতে বলা হয়, এ ধরনের কার্যক্রম সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধিমালা ২০০৮-এর ৬(ঘ) এবং ১২ বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ বিষয়ে ৩ ডিসেম্বর নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির কার্যালয়ে লিখিত ব্যাখ্যাসহ কারণ দর্শানোর জন্য আপনাকে নির্দেশ প্রদান করা হলো।
বিএনপির ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের মধ্যে নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীতে একুশে পরিবহন নামে একটি যাত্রীবাহী বাসে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে বাসে থাকা পাঁচ যাত্রী আহত হন।
উপজেলার দত্ত বাড়ির মোড় এলাকার পায়রা ফিলিং স্টেশনের সামনে রোববার বেলা সোয়া ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
সুধারাম থানার ওসির দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান পাঠান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘দুর্বৃত্তরা সড়কের পাশের একটি গলি থেকে চলন্ত বাসে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে বাসের তিন থেকে চারটি গ্লাস ভেঙে যায়।’
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে সোনাপুর বাস টার্মিনাল থেকে ২৮ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে একুশে পরিবহনের একটি বাস রওনা দেয়। যাত্রাপথে বাসটি দত্ত বাড়ির মোড় এলাকার পায়রা ফিলিং স্টেশনের সামনে পৌঁছালে কয়েকজন বাসটিতে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।
একুশে পরিবহনের চেয়ারম্যান অহিদ উদ্দিন মুকুল বলেন, ‘অবরোধ সমর্থকদের হামলায় বাসে থাকা পাঁচ যাত্রী আহত হয়। পরে তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে একই গাড়িতে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে।’
মন্তব্য