করোনার সময় অর্থ ব্যয়ে লাগাম টানতে চাইছে সরকার। এ জন্য বিভিন্ন খাতের কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে খরচ কমানোর পাশাপাশি উন্নয়ন প্রকল্পের একটা অংশও সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে। এতে এডিপি থেকে প্রায় ১৯ হাজার কোটি টাকা অব্যয়িত থাকবে, যা খরচ করা যাবে না।
গত মার্চে অর্থ বিভাগের এক নির্দেশনায় বলা হয়, উন্নয়ন প্রকল্পের সরকারি অংশের ১৫ শতাংশ অব্যয়িত রেখে বাকি ৮৫ শতাংশ খরচ করা যাবে। এতে কোনো অনুমতির প্রয়োজন হবে না। তবে স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতের জন্য তা প্রযোজ্য হবে না। এর আগে উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন খাতে গাড়ি কেনা স্থগিত করা হয় আগামী জুন পর্যন্ত।
ফেব্রুয়ারিতে কাটছাঁটের পর ২ লাখ ৯ হাজার ২৭২ কোটি টাকার সংশোধিত এডিপিতে সরকারি অংশ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা। এখন তাতে স্বাস্থ্য খাতের ৫ হাজার ৫৩১ কোটি টাকা এবং কৃষি খাতের ১ হাজার ৯৬৫ কোটি টাকা বাদ দিলে সরকারের অংশ দাঁড়ায় ১ লাখ ২৭ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা। এ অংশ থেকে ১৫ শতাংশ সংরক্ষণ করা হলে তার পরিমাণ দাঁড়ায় ১৯ হাজার কোটি টাকার বেশি। এতে এডিপিতে কার্যত সরকারি অংশ দাঁড়াচ্ছে ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকার মতো। সংশোধিত এডিপিতে মোট প্রকল্প রয়েছে ১ হাজার ৯৪৩টি।
চলতি অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ১৪ হাজার ৬১১ কোটি টাকার এডিপি প্রণয়ন করা হয়েছিল।
দেখা যায়, সাধারণত এডিপিতে বৈদেশিক সহায়তার অংশ কম খরচ হয়। সরকারি অংশ খরচে মন্ত্রণালয়গুলো বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। এখন সরকারি অংশের অর্থ ব্যয়ে লাগাম পড়লে তা বছর শেষে উন্নয়ন বাজেট বাস্তবায়নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এমনিতেই করোনার কারণে এডিপি বাস্তবায়ন বেশ পিছিয়ে রয়েছে।
এবারের সংশোধিত এডিপিতে সরকারি অংশের বাইরেও প্রকল্প সাহায্য ৬৩ হাজার কোটি টাকা এবং বিভিন্ন সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন রয়েছে ১১ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা। তবে উন্নয়ন বাজেটের সার্বিক গতি সন্তোষজনক নয়। অর্থবছরের ৯ মাসে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ দেশীয় বা সরকারি অর্থ ৫৫ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা, প্রকল্প সাহায্য অংশে ২৯ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা এবং সংস্থাগুলোর নিজস্ব অর্থ থেকে ২ হাজার ৪৬৫ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। অর্থবছরের তিন প্রান্তিক পার হলেও এডিপির বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র ৪২ শতাংশ।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান নিউজবাংলাকে বলেন, অর্থ সংরক্ষণের এ বিষয়টি পুরোপুরি অর্থ মন্ত্রণালয়ের। তবে আমি নীতিগতভাবে মনে করি, কোথায় অর্থ দিতে হবে, কোথায় কাটতে হবে, তা যারা প্রজেক্ট চালায় তাদের বিচারবুদ্ধির ওপর ছেড়ে দেয়া উচিত। কিছু কিছু প্রকল্প আছে, যাদের আউটপুট ভালো, অগ্রগতি ভালো, বেশ গুরুত্বপূর্ণ, তাদের টাকা দেয়া উচিত। যেগুলা ভালো করছে না, খরচ করতে পারছে না বলে মনে হয়, তাদেরটা না হয় কেটে দিলাম। এটাই হওয়া উচিত।
তবে একদিক থেকে দেখলে এডিপির অর্থ ব্যয়ে সরকার আগের চেয়ে কিছুটা ছাড় দিয়েছে। এর আগে গত ডিসেম্বরে করোনাভাইরাস মহামারিতে কৃচ্ছ্রসাধন নীতিতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) সরকারি অংশ থেকে ২৫ শতাংশ অর্থ আটকে রাখার বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছিল অর্থ মন্ত্রণালয়। তখন সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি নীতিমালায় বলা হয়েছিল, দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় মন্ত্রণালয়/বিভাগের মোট এডিপি বরাদ্দের জিওবি অংশের (নতুন প্রকল্পের জন্য সংরক্ষিত থোক ব্যতীত) ৭৫ শতাংশ ব্যয় করা যাবে। বাকি ২৫ শতাংশ সংরক্ষিত রাখতে হবে। ২৫ শতাংশ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রকল্পের বরাদ্দের বিপরীতে ব্যয় কমিয়ে সমন্বয় করতে হবে। তবে বৈদেশিক সাহায্যের সম্পূর্ণ অর্থ ব্যয় করা যাবে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও কৃষি মন্ত্রণালয় এর আওতাভুক্ত হবে না।
সে হিসাবে জিওবির প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা খরচে মানা ছিল। তবে নতুন নির্দেশনায় খরচে বিধিনিষেধ কিছুটা নমনীয় করা হয়েছে। এতে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ ত্বরান্বিত করতে ২৫ শতাংশের স্থলে ১৫ শতাংশ সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে। মূলত মন্ত্রণালয় এবং বিভাগগুলোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অর্থপ্রবাহ কিছুটা বাড়ানো হয়েছে।
তবে, সরকারি অংশ খরচের বিধিনিষেধ আরোপ বছর শেষে এডিপি বাস্তবায়নকে পিছিয়ে দেবে বলেই মনে করেন পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অর্থ মন্ত্রণালয় সংশোধিত এডিপি পাসের আগেই খরচ কমিয়ে আনতে বলেছিল। কিন্তু সংশোধিত এডিপিতে তার প্রভাব দেখা যায়নি। বরং জিওবি অংশ অপরিবর্তিত রেখে বৈদেশিক সহায়তার অংশ কমানো হয়েছে। আগে থেকেই জিওবি অংশে বিধিনিষেধের আলোকে তা সংশোধিত এডিপিতে কমিয়ে আনা হলে মন্ত্রণালয়গুলোর সামনে নিজেদের সামর্থ্য ও হাতে থাকা অর্থ বিচেনায় নিয়ে উন্নয়ন প্রকল্পে খরচের সংস্থান করা সহজ হতো। এতে প্রকল্পের গতিও ভালো থাকত।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে অর্থ বরাদ্দে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় চলমান প্রকল্পগুলোকে বিশেষ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। নতুন প্রকল্প অনুমোদনের ক্ষেত্রেও সরাসরি করোনা মোকাবেলা ও করোনার কাজেও গতি আসত। আঘাত থেকে অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারের উদ্দেশ্যে প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলোকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি কৃষি, কৃষিভিত্তিক শিল্প, আইসিটি শিক্ষার উন্নয়ন, দারিদ্র্য কমানো এবং প্রকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কমানোর লক্ষ্যে নেয়া প্রকল্পগুলো পর্যাপ্ত অর্থ পেয়েছে। এমনকি বাস্তবায়নে ধীরগতি রয়েছে এমন প্রকল্পের বরাদ্দ কেটে নিয়ে দ্রুতগতির প্রকল্পে বাড়তি বরাদ্দও নিশ্চিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, করোনার কারণে এ বছর সরকার কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে খরচ নিরুৎসাহিত করছে। সেটা এক দিক দিয়ে ভালো। কিন্তু এ বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা থাকতে হবে। আগেভাগেই ঠিক করে দিতে হবে মন্ত্রণালয়ের হাতে কতো টাকা আছে আর কত টাকা খরচ করতে পারবে তারা।
যদি তাদের খরচের লাগামই টানতে হয় তাহলে সংশোধিত উন্নয়ন বাজেটে তা কমিয়ে ধরা হয়নি কেন? সংশোধিত এডিপিতে মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ নির্দিষ্ট করে দিয়ে তাদের হাত খুলে দেয়া এবং আবার তাতে লাগাম টানায় খরচের সীমা নিয়ে সংশয় তৈরি হবে। একই সঙ্গে কর্মপরিকল্পনায়ও সমস্যা হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, এখনই এডিপির বাস্তবায়নে যে অবস্থা, তাতে বরাদ্দে লাগাম টেনে ধরলেও কী হবে। অনেক মন্ত্রণালয়ই বছর শেষে পুরো অর্থ খরচ করতে পারবে না। তবে যাদের কাজের গতি ভালো, তাদের জন্য একটু সমস্যা হবে।
এতে অবশ্য মন্ত্রণালয়গুলোর জন্য সুবিধা। বছর শেষে কাজ মোটামুটি শেষ করতে পারলে বলবে, আমাদের যা সাধ্য ছিল তাই খরচ করেছি। যদি বছর শেষে কাঙ্ক্ষিত বাস্তবায়ন হয়, তাহলে মন্ত্রণালয়গুলো বলবে, আমাদের খরচের সীমা কম ছিল তাই কাজ করতে পারিনি। তাদের একটু অজুহাত দেখানোর সুযোগ হল।
অর্থ বিভাগের শীর্ষস্থানীয় এক কর্মকর্তা জানান, করোনার কারণে বছরের মাঝামাঝিতে অর্থ ব্যয়ে কিছুটা লাগাম টানা হয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের চাহিদার কারণে এডিপির অংক কমিয়ে দেয়া হয়নি। মার্চে নতুন নির্দেশনা দিয়ে এডিপির আরো ১০ ভাগ অর্থ ব্যয় করার স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত যে অবস্থা, ৮৫ শতাংশ অর্থই ব্যয় হয় কিনা সেটাও দেখার বিষয়। কারও বিশেষ প্রয়োজন হলে তাদের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ বিবেচনাও থাকবে।
আরও পড়ুন:গ্যাস পাইপলাইনে জরুরি কাজের জন্য শনিবার সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে।
গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে। খবর ইএনবির
তিতাস জানায়, যেসব এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে সেগুলো হলো- শনির আখড়া, বড়ইতলা, ছাপড়া মসজিদ, দনিয়া, জুরাইন, ধোলাইরপাড় ও কদমতলী।
এ সময় আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহে চাপ কম থাকতে পারে বলেও জানিয়েছে তিতাস। গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে কোম্পানি।
দীর্ঘ এক যুগ বন্ধ থাকার পর পুনরায় শ্রীমঙ্গল-পাত্রখোলা সড়কে বাস পরিষেবা চালু করেছে শ্রীমঙ্গল-শমশেরনগর-কুলাউড়া বাস মালিক সমিতি।
বৃহস্পতিবার সকালে কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসিদ আলী ও ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোলেমান মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে বাস সার্ভিস উদ্বোধন করেন শ্রীমঙ্গল বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা।
প্রাথমিক পর্যায়ে এই রুটে ৫০ মিনিট পরপর ২৪টি বাস চলাচল করবে বলে সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত শ্রীমঙ্গল থেকে ভানুগাছ মাধবপুর সড়ক দিয়ে ইসলামপুর ইউনিয়নের কুরমা চা বাগান পর্যন্ত এ বাস চলাচল করবে।
কুরমা থেকে শ্রীমঙ্গল পর্যন্ত বাসভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০ টাকা। এছাড়া পাত্রখোলা থেকে শ্রীমঙ্গল পর্যন্ত ৫০ টাকা, মাধবপুর থেকে শ্রীমঙ্গল পর্যন্ত ৪০ টাকা, কুরমা থেকে ভানুগাছ পর্যন্ত ৪০ টাকা, পাত্রখোলা থেকে ভানুগাছ পর্যন্ত ২৫ টাকা, মাধবপুর থেকে ভানুগাছ পর্যন্ত ১৫ টাকা এবং ভানুগাছ থেকে শ্রীমঙ্গল ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ টাকা।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় কুরমা নতুন বাস স্ট্যান্ডে বাস চলাচলের উদ্বোধন শেষে মতবিনিময় সভায় শ্রীমঙ্গল-শমসেরনগর-কুলাউড়া বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. তসলিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও প্রকৌশলী যোগেশ্বর চন্দ্র সিংহের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন ইউপি চেয়ারম্যান সোলেমান মিয়া, সাংবাদিক আসাদুজ্জামান শাওন, ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ, নুরুল হক, বাস মালিক সমিতির সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দুলাল, সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক, গ্রুপ সভাপতি কাসেম মিয়া ও আব্দুস সালাম প্রমুখ।
এর আগে মাধবপুর বাজারে বাস প্রবেশ করলে এলাকাবাসী বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এ সময় যাত্রীদের মানসম্পন্ন সেবা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা।
এদিকে সিএনজি থেকে ভাড়া কম করে বাস সার্ভিস চালু হওয়ায় যাত্রীসহ স্কুল কলেজ শিক্ষার্থীরা বেজায় খুশি।
পঞ্চগড় সদর উপজেলায় চাওয়াই নদীতে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে আলমি আক্তার ও ইসরাত জাহান সিফাত নামে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে জেলার সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের চাওয়াই নদীর চৈতন্যপাড়া এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
১২ বছরের আলমি ওই এলাকার আব্দুল আজিজের মেয়ে এবং ৯ বছরের সিফাত সাইফুল ইসলামের মেয়ে। তারা দুজনে সম্পর্কে ফুফু-ভাতিজি।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, শুক্রবার দুপুরে আলমি ও সিফাত বাড়ির পাশে চাওয়াই নদীতে গোসল করতে যায়৷ গোসল করতে গিয়ে সিফাত পানিতে ডুবে যেতে থাকলে তাকে বাঁচাতে এগিয়ে যায় আলমি৷ পরে দুজনেই পানিতে ডুবে যায়। এ সময় নদীর পাড়ে থাকা অন্য আরেক শিশু ঘটনাটি দেখে দৌড়ে তাদের পরিবারের লোকজনকে খবর দিলে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে মৃত অবস্থায় নদী থেকে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে।
খবর পেয়ে পুলিশ দুই শিশুর মরদেহের সুরতহাল করে।
পঞ্চগড় সদর থানার উপ-পরিদর্শক পলাশ চন্দ্র রায় বলেন, ‘দুই শিশুর মধ্যে একজন সাঁতার জানত, আরেকজন জানত না। একজন আরেকজনকে বাঁচাতে গিয়ে দুজনেই একসঙ্গে ডুবে মারা গেছে বলে জানিয়েছে স্থনীয়রা।’
মরদেহের সুরতহাল শেষে ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:আনসার সদস্য তরিকুল ইসলাম। বাড়ি তার বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর গ্রামে। বর্তমানে ঢাকার সুত্রাপুর থানায় কর্মরত।
৩৮ বছর বয়সী এ যুবকের নেশা বিয়ে করা। যেখানেই যান সেখানেই তিনি বিয়ে করেন। এ পর্যন্ত ৭টি বিয়ে করেছেন।
সর্বশেষ তিনি বিয়ে করেন ঝিনাইদহ শহরের পবহাটি এলাকার। ঢাকায় থাকাকালে সেঁজুতি নামের পবহাটির একটি মেয়ের সঙ্গে সপ্তমবারের মতো সংসার শুরু করেন তিনি।
তবে এর মানে এই নয় যে, তার আগের সব স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে। বর্তমানে তৃতীয় স্ত্রী পারভীন তার গ্রামের বাড়িতে এবং ষষ্ঠ স্ত্রী রয়েছেন যশোরের বেনাপোলে। ২ স্ত্রীর ঘরে ২টি সন্তানও রয়েছে তরিকুলের।
সম্প্রতি সংসার জীবন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এই যুবক। স্বামীকে ফিরে পেতে আড়াই বছরের মেয়েকে নিয়ে ঝিনাইদহের পবহাটিতে আসেন ষষ্ঠ স্ত্রী হোসনে আরা আক্তার সাথী। তরিকুলকে স্বামী দাবি করলে সেখানে বেঁধে যায় রণক্ষেত্র। স্বামীকে নিয়ে সেঁজুতির সঙ্গে শুরু হয় তার কাড়াকাড়ি। কোনো উপায় না পেয়ে পালিয়ে যান আনসার সদস্য তরিকুল ইসলাম।
নিউজবাংলাকে সাথী জানান, বেনাপোল বন্দরে কর্মরত থাকা অবস্থায় নিজেকে এতিম পরিচয় দিয়ে তাকে বিয়ে করেন তরিকুল। ২০১৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর তাদের বিয়ের পর থেকে একসঙ্গেই ছিলেন দুজন। তবে ২০২২ সালে বদলি হয়ে ঢাকায় চলে যান তরিকুল। তার কিছুদিন পর থেকে সাথীর সঙ্গে তার সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ।
তিনি জানান, ঢাকায় বদলি হওয়ার পর থেকে তার ও তাদের সন্তানের কোনো খরচ পাঠাতেন না তরিকুল। এরই মধ্যে সেঁজুতির সঙ্গে তার ইমোতে পরিচয় হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ডিসেম্বর মাসে সেঁজুতিকে বিয়ে করেন তিনি।
সাথী বলেন, ‘গত ঈদে আমার কাছে গিয়ে ৬ দিন ছিল। সেখানে আমাকে ভুলিয়ে আমার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে চলে আসে। তারপর আবার সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। আমার আড়াই বছরের মেয়েটি বাবার জন্য সব সময় কান্নাকাটি করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্বামী ঝিনাইদহ আছে- এমন খবর পেয়ে আমরা ওই বাড়িতে গিয়েছিলাম। সেখানে আমাদের মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। আর এর মধ্যে আবার পালিয়েছে সে (তরিকুল)। আমি তরিকুল ও সেঁজুতির বিচার চাই।’
এ ব্যাপারে জানতে আনসার সদস্য তরিকুলের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে একটি পরিত্যক্ত গভীর নলকূপের পাইপের মধ্যে পড়ে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ১১টার পর থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের পূর্ব নেমাজপুর গ্রামে মাঠের মধ্যে থাকা ওই পাইপ থেকে উদ্ধারের চেষ্টা করছিলেন।
বিকেল সোয়া ৪টার দিকে মানসিক প্রতিবন্ধী রনি বর্মনকে (২৩) অবশেষে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, বিএমডিএর গভীর নলকূপটির পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায়, নতুন করে আরেকটি গভীর নলকূপ কিছুদিন আগে বসানো হয়, ফলে আগেরটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে ছিল। ওই পরিত্যক্ত নলকূপের পাইপের মধ্যেই পড়ে যান রনি বর্মন।
নাচোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তারেকুর রহমান জানান, প্রায় ৫ ঘণ্টার বেশি সময়ের চেষ্টায় বিকেলে সোয়া ৪টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রনি বর্মনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন। এখন আইনি প্রক্রিয়া শেষে পুলিশ মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবে।
স্থানীয়রা জানান, রনি বর্মন গভীর নলকূপের ওই এলাকায় ঘোরাঘুরি করতেন। সকালে পরিত্যক্ত গভীর নলকূপের পাইপের কাছে গেলে,পড়ে যান। এ সময় মাঠের কয়েকজন কৃষক ওই নলকূপের কাছে পানি খাওয়ার জন্য এসেছিলেন, তারা ছেলেটির কান্নার আওয়াজ শুনে সবাইকে জানান, খবর দেয়া হয় ফায়ার সার্ভিসকে।
মানিকগঞ্জে মাদ্রাসার ছাদে খেলার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাটিতে পড়ে মাহিয়া আক্তার নামের এক ছাত্রী নিহত হয়েছে।
শুক্রবার সকালে সদর উপজেলার বাসস্ট্যান্ডের কাছে অবস্থিত আয়েশা সিদ্দিকা মহিলা মাদ্রাসায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
১৭ বছর বয়সী মাহিয়া আক্তার মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বড় কালিয়াকৈর এলাকার আল মামুনের মেয়ে। সে আয়েশা সিদ্দিকা মহিলা মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্রী ছিল।
মাদ্রাসার শিক্ষিকা শারমিন আক্তার জানান, সকালে ক্লাসের ফাঁকে মাদ্রাসার ছাদে খেলাধুলা করার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাদ্রাসার ভবনের চার তলা থেকে নিচে পড়ে যায়। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হচ্ছিল, কিন্তু ঢাকায় নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ওসি মো. হাবিল হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
শেরপুরে দুর্বৃত্তের হামলায় ভূমি অফিসের দুই কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। ঘটনার পর হামলাকারীরা ‘ভূমিদস্যু’ বলে অভিযোগ করেছেন আহত কর্মকর্তারা।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের নন্দীবাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
হামলায় আহত দুই কর্মকর্তা হলেন- সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মো. শহীদুল ও কামারেরচর ভূমি অফিসের নায়েব শহীদুল ইসলাম।
শেরপুর সদর থানার ওসি এমদাদুল হক এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে সদর উপজেলার কামারেরচর থেকে কাজ শেষে মোটরসাইকেলে শহরে ফেরার পথে শেরপুর-জামালপুর সড়কের নন্দীবাজার এলাকায় কয়েকজন ব্যক্তি ওই দুই কর্মকর্তার গতিরোধ করেন। এ সময় সার্ভেয়ার মোটরসাইকেলটি থামানোর সঙ্গে সঙ্গে অতর্কিত পেছন থেকে তাদের দুজনকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি দিতে থাকে এবং একজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে সার্ভেয়ার শহীদুলের মাথায় আঘাত করে। এ সময় তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
এরপর স্থানীয়রা তাদের শেরপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে আহত সার্ভেয়ার শহীদুল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অপরজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে যান।
আহত সার্ভেয়ার ও নায়েব বলেন, লসমনপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর এলাকার মো. সেলিম মিয়া ও তার ছেলেসহ আরও কয়েকজন এ হামলা চালান। হামলাকারীরা এলাকার চিহ্নিত ভূমিদস্যু। তাদের নামে শেরপুর সি আর আমলী আদালতে জাল দলিল তৈরি করে ভূমি জালিয়াতি করায় সরকার পক্ষের একটি মামলা চলছে। এরই জেরে তারা পরিকল্পিত এ হামলা চালিয়েছেন।
এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তারা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য