করোনাভাইরাস মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে ব্যবসায়ীদের আত্মবিশ্বাস কমেছে বলে একটি গবেষণা সংস্থার জরিপে উঠে এসেছে।
গত মাসে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং বা সানেম পরিচালিত এই জরিপে দেখা গেছে, মহামারির মধ্যে ব্যবসা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ব্যবসায়ীর সংখ্যা ৪১ দশমিক ৩৯ শতাংশে নেমে এসেছে।
বছরের প্রথম প্রান্তিকে এই হার ছিল ৫৮ শতাংশ।
সারাদেশের পাঁচ শতাধিক ব্যবসায়ীদের ওপর এই জরিপ করা হয়।
‘কোভিড-১৯ অ্যান্ড বিজনেস কনফিডেন্স ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই জরিপের তথ্য রোববার এক অনুষ্ঠানে প্রকাশ করেন সানেম এর নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান।
ভাচুর্য়াল মাধ্যমে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ধারাবাহিক এই জরিপের চতুর্থ পর্বের ফলাফল উপস্থাপন করা হয়।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ- ডিসিসিআই এর সভাপতি রিজওয়ান রাহমান।
মূল প্রবন্ধে সেলিম রায়হান জানান, গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে প্রথমবারের মতো দেশের ব্যবসা পরিস্থিতি জানার জন্য এই জরিপ পরিচালনা শুরু করা হয়। সর্বশেষ জরিপটি গত মাসে পরিচালনা করা হয়।
সেলিম রায়হান বলেন, ‘আগের আত্মবিশ্বাসীদের অনেকের মনোবল নড়বড়ে হয়ে গেছে করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে।’
গত বছরের মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণ দেখা দিলে ৬৬ দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। সে সময় দেশের উৎপাদনক ও বাজারজাতকরণ কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়।
তবে আগস্ট থেকে অর্থনীতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে। চলতি বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে পরিস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক হয়ে আসে। কিন্তু মার্চ থেকে সংক্রমণ আবার বাড়তে থাকে।
এই পরিস্থিতিতে ২৯ মার্চ থেকে জনসমাগম ও চলাচলে দেয়া হয় বিধিনিষেধ। এতেও কাজ না হওয়ায় ৫ এপ্রিল শুরু হয় লকডাউন। বন্ধ হয়ে যায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। তবে চালু থাকে অফিস আদালত।
শিথিল লকডাউনের পর ১৪ এপ্রিল থেকে বিধিনিষেধ আরও কঠোর করা হয়। প্রথমে এক সপ্তাহের জন্য এবং পরে আরও এক সপ্তাহ এবং তারপর আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয় লকডাউন। এবার জরুরি সেবা ছাড়া সব অফিস বন্ধ।
বাস চলাচলও বন্ধ আছে। যদিও দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি কৃষি ও পোশাক কারখানা চালু আছে। ঈদ কেনাকাটার জন্য খুলে দেয়া হয়েছে বিপণিবিতানও। তবে গণপরিবহন এখনও বন্ধ আছে।
তবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সীমিত হওয়ার কারণে সরকারের রাজস্ব আদায়ে পড়েছে নেতিবাচক প্রভাব। এই অবস্থায় বাজেট বাস্তবায়ন নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা।
সানেমের জরিপে অংশ নেয়া ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, করোনার এই সময়ে নতুন বিনিয়োগ কিংবা বিনিয়োগ সম্প্রসারণে অর্থলগ্নীতেও বেশিরভাগ আস্থা পাচ্ছেন না।
অথচ আগের প্রান্তিকগুলোর জরিপে মহামারির প্রথম ধাক্কা সামলে তারা এখনকার চেয়ে বেশি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনার কথা জানিয়েছিলেন।
সানেম গত বছর জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিক থেকে পোশাক, বস্ত্র, চামড়া, ওষুধ, খাদ্য এবং হালকা প্রকৌশলসহ আরো বেশ কয়েকটি খাতের ৫০০ এর বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীদের ওপর এই জরিপ পরিচালনা করছে।
সেলিম রায়হান বলেন, প্রথম জরিপে ‘বর্তমানে ব্যবসা পরিস্থিতি কেমন’ এমন প্রশ্নের উত্তরে ৫১ দশমিক ০৬ শতাংশ উত্তরদাতা কোভিড পরিস্থিতিতেও ব্যবসা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী থাকার কথা জানিয়েছিলেন।
এরপর গত বছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে দ্বিতীয় জরিপে ওই আত্মবিশ্বাস বেড়ে ৫৫ দশমিক ২৪ শতাংশে উন্নীত হয়।
এই বছরের জানুয়ারি-মার্চ প্রথম প্রান্তিকের জরিপে অংশগ্রহণকারী প্রায় ৫৮ শতাংশ ব্যবসায়ী আত্মবিশ্বাসের কথা উল্লেখ করেন।
জরিপের তুলনামূলক বিচারে দেখা যায়, আগের প্রান্তিকগুলোর তুলনায় করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে কম সংখ্যক ব্যবসায়ী আত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে পেরেছেন।
জরিপে যেসব প্রশ্ন করা হয় তার মধ্যে রয়েছে, মহামারিকালে কেমন চলছে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানগুলো; সরকার ঘোষিত সোয়া লাখ কোটি টাকার ওপরে প্রণোদনা কী পেলেন বিনিয়োগকারীরা; সেখানে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প কত পেল; ব্যবসা শুরুর ব্যয় কমেছে কি না।
জরিপের তথ্য বিশ্লেষণ করে সানেম বলছে, করোনাভাইরাসের প্রথম ধাক্কা সামলাতে পারলেও দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সক্ষমতা নেই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পগুলোর।
এর কারণ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি বলছে, এখনও গড়ে ৭০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান সরকার ঘোষিত প্রণোদনার বাইরে। এ অবস্থায় অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সরকারকে বেশ কিছু উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শও দেয়া হয়েছে।
সানেম বলেছে, প্রথম ঢেউয়ের ধাক্কা সামলে নিলেও দ্বিতীয় ধাক্কা সামলাতে পিছিয়ে পড়বে দেশের বহু প্রতিষ্ঠান।
জরিপের ফলাফল বলেছে, করোনাভাইরাস সংকট মোকাবিলায় সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের সুফল পেয়েছে বৃহৎ শিল্পের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। কিন্তু ছোট শিল্পের অনেক প্রতিষ্ঠানই সঠিকভাবে অর্থ পায়নি। এর বড় কারণ অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি।
প্রণোদনার অর্থ পাওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের জটিলতার কথা তুলে ধরে ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ‘কোনো ব্যাংকের ১০০ কোটি টাকা ঋণ দেয়ার লক্ষ্য থাকলে, সেই ঋণ যদি একজনকে দিয়ে দেয় তাহলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়; কিন্তু অন্তর্ভূক্তিমূলক হয় না।’
তিনি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উন্নয়নে প্রণোদনার অর্থ যোগান দেয়ার আহ্বান জানান। এ জন্য সরকারি প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন অন্তর্ভুক্তিমূলক ও মহামারি মোকাবিলার উপযোগী করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মহামারি প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মানতে সকলকে বাধ্য করতে সরকারকে কঠোর হওয়ার আহ্বানও জানান এই ব্যবসায়ী নেতা।
বিশ্বব্যাংকের অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, “বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বড় বলে তারা সবার ‘কণ্ঠস্বর’ও হয়ে উঠে। তাই সরকারি প্রণোদনা বণ্টনের সময় কণ্ঠস্বর হিসেবে তারাই বেশি সুবিধা পেয়েছে।”
এখনো ৪১ শতাংশ ব্যবসায়ীর আত্মবিশ্বাস অবশিষ্ট থাকার প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘অতি আত্মবিশ্বাস বিপদ ডেকে আনতে পারে।’
তার মতে, ভারতের এমন বিপর্যন্ত অবস্থা অতি আত্মবিশ্বাসের কারণেই।
আরও পড়ুন:বিশ্ব অর্থনীতির একটি প্রধান চালিকা শক্তি এশিয়া অঞ্চল। ২০২৩ সালে এশিয়ার মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ। আগের বছর ২০২২ সালে যা ছিল ৪ দশমিক ২ শতাংশ। সে সুবাদে এই অঞ্চলে সামগ্রিক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতি ত্বরান্বিত হবে। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার বাস্তবতায় এটি একটি আশার খবর।
বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া থেকে প্রকাশিত ‘এশিয়ান ইকোনমিক আউটলুক অ্যান্ড ইন্টিগ্রেশন প্রগ্রেস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য, ‘একটি অনিশ্চিত বিশ্ব: চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে উন্নয়নের জন্য সংহতি ও সহযোগিতা’।
চীনের হাইনান প্রদেশে মঙ্গলবার শুরু হয়েছে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া-২০২৩ এর বার্ষিক সম্মেলন। ছিয়ংহাই সিটির বোয়াও শহরে ৩১ মার্চ পর্যন্ত তা চলবে। বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান ব্যক্তি, ব্যবসায়ী নেতাসহ প্রায় দুই হাজার ব্যক্তি অংশ নিচ্ছেন এই সম্মেলনে।
ফোরামে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং পারস্পরিক ঐকমত্যকে সুসংহত করার লক্ষ্যে উন্নয়ন ও অন্তর্ভুক্তিকরণ, দক্ষতা ও নিরাপত্তা, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতার পাশাপাশি বর্তমান ও ভবিষ্যতের কর্মপন্থা নিয়ে আলোচনা হয়।
মূল প্রতিবেদনে আশা করা হয়েছে, ‘এ বছর অঞ্চলটি বিশ্বকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের দিকে নিয়ে যাবে। বৈশ্বিক চাহিদা দুর্বল হওয়া এবং অনিশ্চয়তার চাপ সত্ত্বেও এশীয় অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথে রয়েছে। যদিও বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি মন্থর হওয়ায় এশিয়ান রপ্তানিকারকদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে। কিন্তু চীনের উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক পরিবর্তন এশিয়ার বাকি অংশ এবং বিশ্বের জন্য একটি ইতিবাচক সংকেত পাঠাচ্ছে।’
বোয়াও ফোরামের সেক্রেটারি জেনারেল লি বাওডং বলেছেন, ‘বৈশ্বিক অর্থনীতি অনিশ্চয়তা থেকে উত্তরণে এশিয়া মূল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করবে। বিশ্বব্যাপী মন্দার মধ্যে এশিয়া সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতিকে ত্বরান্বিত করবে। এক্ষেত্রে আঞ্চলিক উৎপাদন, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও আর্থিক একীকরণ এবং সংহতির অগ্রগতি অব্যাহত রাখবে।’
প্যানেল আলোচনায় বলা হয়, আগামী দিনের অনিশ্চয়তা ও চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও চীনের দ্রুত অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে এশিয়ার অর্থনীতি এ বছর শক্তিশালী অবস্থানে যাবে।
বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া একটি বেসরকারি অলাভজনক আন্তর্জাতিক সংস্থা। এশিয়ার ২৮টি দেশ নিয়ে ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি এশিয়ায় আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার প্রচার এবং আঞ্চলিক অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নের জন্য কাজ করে আসছে।
চীন তার পুরো হাইনান দ্বীপকে বিশ্বব্যাপী প্রভাবশালী এবং উচ্চ স্তরের ফ্রি ট্রেড পোর্ট বা এফটিপিতে পরিণত করার লক্ষ্যে ২০২০ সালে একটি মাস্টার প্ল্যান প্রকাশ করে। তারপর থেকে হাইনান এফটিপি-র উন্নয়নে সহায়তার জন্য শূন্য শুল্ক এবং সহজ বাজার ও বিদেশি বিনিয়োগ সহজ করাসহ নীতি সহজীকরণ করেছে।
বলা হয়, হাইনানে ২০২৩ সালের মধ্যে স্বতন্ত্র কাস্টমস ব্যবস্থা চালুর জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছে চীন। ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ দ্বীপ জুড়ে নিজস্ব কাস্টমস কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে বোয়াও ফোরাম এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সংলাপ ও ঐকমত্য তৈরি করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চে পরিণত হয়েছে।
বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও বাজার ব্যবস্থাপনা তদারকিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। অভিযানে ১০ মামলায় ৯৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
বুধবার নগরীর কাপ্তান বাজার ও ঠাটারি বাজারে এ অভিযান চালানো হয়। সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুজ্জামান এ অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযানে বাজারের মূল রাস্তা দখল করে অবৈধভাবে দোকান প্রতিষ্ঠা করা ও মূল্য তালিকা না টানানোয় ১০টি মামলায় মোট ৯৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
অভিযান প্রসঙ্গে মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাজার মূল্য পর্যবেক্ষণ, মনিটরিং ও নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. শহিদ উল্লাহ মিনুর নেতৃত্বে বিভিন্ন বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং বাজার ব্যবস্থাপনায় প্রতি সপ্তাহে আমরা নিয়মিতভাবে অভিযান পরিচালনা করে চলেছি। আমাদের এই অভিযান চলমান থাকবে।’
অভিযানে করপোরেশনের বাজার মূল্য পর্যবেক্ষণ, মনিটরিং ও নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শহিদ উল্লাহ মিনু, ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আহমেদ ইমতিয়াজ মন্নাফী, ৬৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মাসুদুর রহমান মোল্লা এবং সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরদের মধ্যে ২ নম্বর আসনের মাকসুদা শমশের, ১৩ নম্বর আসনের শাহিনুর বেগম ও ২১ নম্বর আসনের সেলিনা খান উপস্থিত ছিলেন।
হোমল্যান্ড লাইফ ইন্সুরেন্সের গ্রাহকদের ১০৪ কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বীমা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে ‘পরিচালকদের প্রতারণার খপ্পরে হোমল্যান্ড লাইফ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এ ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির অর্থ আত্মসাত নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এই সব প্রতিবেদন যুক্ত করে প্রতিষ্ঠানটির ১৪ গ্রাহকের পক্ষে রহিমা আক্তার একটি রিট করেন।
রিটে অর্থ সচিব, ইন্সরেন্স ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলিটরি অথোরিটির চেয়ারম্যান, দুর্ণীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, হোমল্যান্ড ইন্সুরেন্সের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানসহ প্রতিষ্ঠানটির ১৪ পরিচালককে বিবাদী (রেসপনডেন্ট) করা হয়।
রিটকারিপদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আক্তার রসুল মুরাদ, আব্দুল্লাহিল মারুফ ফাহিম ও দিদারুল আলম।
পরে ব্যারিস্টার কাজল সাংবাদিকদের বলেন, আদালত শুনানি শেষে হোমল্যান্ড লাইফ ইন্সুরেন্সের ১০৪ কোটি ৬ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৮ টাকা লোপাটের অভিযোগ তদন্ত করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে।
ইন্সুরেন্স ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলিটরি অথোরিটির চেয়ারম্যান ও দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানের প্রতি নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে তদন্তের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না- দুই সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শাতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করা হয়েছে।
দুদক বরাবর হোমল্যান্ড লাইফ ইন্সুরেন্সের ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের একটি আবেদন আগামী দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী ৪ জুন এ ব্যাপারে শুনানির তারিখ ধার্য থাকবে বলেও জানিয়েছে আদালত।
আরও পড়ুন:
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্য সূচকের উত্থান-পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। ডিএসইতে টাকার অঙ্কে লেনদেন নামমাত্র বেড়েছে।
বুধবার ডিএসইতে ৩৮২ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের দিন থেকে ১১০ কোটি ৬২ লাখ টাকা বেশি লেনদেন হয়েছে। মঙ্গলবার ডিএসইতে ২৭২ কোটি ৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৩ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৬ হাজার ১৯৬ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৪৭ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ২ হাজার ২০৬পয়েন্টে।
এদিন ডিএসইতে ৩০৫টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৮০টির, কমেছে ২৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯৮টির।
আরেক বাজার চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। সিএসইতে ৫ কোটি ১৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
স্বাধীনতার চেতনায় স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার যাত্রায় আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড। স্বাধীনতার মাসে পদ্মা ব্যাংকে চালু হলো কিউআর কোড সেবা। মোবাইল ওয়ালেটের মাধ্যমে কিউআর কোড স্ক্যান করে নগদ টাকা উত্তোলন করা যাবে এখন থেকে।
‘পদ্মা ওয়ালেট’ অ্যাপে নতুন সার্ভিসটি অন্তর্ভুক্ত করে ডিজিটাল সেবা আরও ত্বরান্বিত করল পদ্মা ব্যাংক। এই ডিজিটাল ও নিরাপদ সেবার আওতায় গ্রাহকরা পদ্মা ব্যাংকের যেকোনো শাখা ও উপশাখা থেকে কার্ড ও চেক বই ব্যবহার না করে দ্রুততার সঙ্গে নগদ টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। এতে নেই স্বাক্ষর যাচাইয়ের ঝামেলা এবং চেক বহন ও হারানোর ঝুঁকি। ফলে গ্রাহকের সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হবে।
সেবাটি পেতে প্রথমেই পদ্মা ওয়ালেট অ্যাপটি গ্রাহকের স্মার্টফোনে ইনস্টল করতে হবে। তারপর প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে পদ্মা ব্যাংকের হিসাবধারীরা লগইন করতে পারবেন। পরের ধাপে পদ্মা ওয়ালেট অ্যাপে দেখানো কিউআর আইকনটি স্পর্শ করে পদ্মা ব্যাংকের যেকোনো শাখা এবং উপশাখায় প্রদর্শিত কিউআর কোড স্ক্যান করে টাকা উত্তোলন করা যাবে।
কিউআর কোড স্ক্যানের মাধ্যমে টাকা উত্তোলনের এই পরিষেবা চালু করায় শতভাগ ডিজিটালাইজেশন নিশ্চিতের পথে এগিয়ে গেল পদ্মা ব্যাংক।
ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তারেক রিয়াজ খান বলেন, ‘প্রযুক্তিভিত্তিক ব্যাংকিং সেবা প্রদানে সবসময় অগ্রগামী পদ্মা ব্যাংক। এবার পদ্মা ওয়ালেট অ্যাপে সংযুক্ত কিউআর কোড স্ক্যান করে নগদ টাকা উত্তোলনের সুবিধা গ্রাহকদের আরও দ্রুত ও নিরাপদে লেনদেনের নিশ্চয়তা দিল।’
ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চিফ বিজনেস অফিসার মোহাম্মদ ইমতিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘স্বাধীনতার মাসে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আইসিটিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের শপথের সাথে শামিল হয়েছি আমরাও। ভবিষ্যতে আরও উন্নত, আধুনিক ও নিরাপদ প্রযুক্তিভিত্তিক ব্যাংকিং সেবা নিয়ে পদ্মা ব্যাংক দেশের সকল গ্রাহকের পাশে থাকার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ।’
ব্যাংকিং সকল সেবার জন্য আপনার নিকটস্থ পদ্মা ব্যাংকের যেকোনো শাখা ও উপশাখায় যোগাযোগ করতে পারেন অথবা কল করতে পারেন ১৬৬১২ নম্বরে অথবা ভিজিট করুন https://www.padmabankbd.com।
আরও পড়ুন:জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তররের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেছেন, দেশব্যাপী অভিযান এবং তৎপরতার কারণে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০০ টাকা কমেছে। অন্যান্য বছর রমজান মাসে ভোগ্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা দেখা গেলেও এবার বাজার স্থিতিশীল রয়েছে।
এ এইচ এম সফিকুজ্জামান মঙ্গলবার বলেন, ‘মুরগির দাম অযৌক্তিভাবে বেড়ে যাওয়ায় ২৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছিল। আমরা এর প্রেক্ষিতে দেশব্যাপী অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদেরকে সঙ্গে নিয়ে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করি। এর ফলস্বরুপ পোল্ট্রি মুরগি এখন ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেজিতে ১০০ টাকা কমেছে।’
তিনি বলেন, ‘রমজানে ভোগ্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর অভিযান পরিচালনা করছে। বাজার স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে পুরো রমজান মাসজুড়ে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। ’
ক্রেতাদের একবারে বেশি পণ্য ক্রয় ‘প্যানিক বায়িং’ না করার পরামর্শ দিয়ে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘ভোক্তাদের বলবো আপনারা প্যানিক বায়িং করবেন না। বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য আপনাদেরকেও দায়িত্বশীল হতে হবে।’
ভোক্তারা কোথাও প্রতারিত হলে ভোক্তা অধিদপ্তরে অভিযোগ দাখিলের অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, প্রত্যেকটি অভিযোগের শুনানি করা হবে।
তিনি আরও বলেন, অনেক সময় পোশাকের স্টিকার পরিবর্তন করে বেশি দামে বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া যায়। কিন্তু এবারের ঈদে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে-এজন্য আমরা আগামী বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক করব। কোনো বিক্রেতার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের সত্যতা মিললে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ব্রয়লার মুরগির দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে সম্প্রতি জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর চারটি বড় পোল্ট্রি কোম্পানি কাজী ফার্মস লিমিটেড, সিপি বাংলাদেশ, আফতাব বহুমুখী ফার্মস লিমিটেড এবং প্যারাগন পোল্ট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি লিমিটেডের সঙ্গে বৈঠক করে। সেখানে এই চার কোম্পানি মুরগির দাম কমানোর ঘোষণা দেয়। এরপর খুচরা পর্যায়ে পোল্ট্রি মুরগি দাম কমতে শুরু করে।
আরও পড়ুন:পবিত্র মাহে রমজান এবং স্বাধীনতা দিবসকে স্মরণীয় করে রাখতে বেঙ্গল গ্রুপের পক্ষ থেকে কিছু উপহার মাস্তুল ফাউন্ডেশনের এতিমখানার শিশুদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।
২৬ মার্চ এবং পবিত্র রমজানের দিনগুলোকে আরও উৎসবমুখর করতে বেঙ্গল গ্রুপ এগিয়ে এসেছে মাস্তুল ফাউন্ডেশনের এতিমখানার শিশুদের জন্য উপহার নিয়ে। মাস্তুল ফাউন্ডেশনের এতিম শিশুরা, ধন্যবাদ জানাতে একটি ছোট অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানটি শুরু হয় কোরআন তিলাওয়াত এর মধ্য দিয়ে।
অনুষ্ঠানে বেঙ্গল পলিমার ওয়্যারস লিমিটেডের ডিজিএম জোহেব আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আমরা খুবই আনন্দিত হয়েছি এই এতিম শিশুদের পাশে থাকতে পেরে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্র্যান্ড ম্যানেজার সমীর কুমার এবং সিনিয়র এক্সিকিউটিভ মুস্তাফিজুর রহমান।
মাস্তুল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা এবং এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর কাজী রিয়াজ রহমান বলেন, আমরা খুবই আনন্দিত বেঙ্গল গ্রুপকে আমাদের পাশে পেয়ে। আমরা সবসময় তাদের পাশে চাই। মাস্তুল ফাউন্ডেশন বরাবরের ন্যায় এ রমজানেও ১ লক্ষ অসহায় রোজাদারদের ইফতার করানোর লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
বেঙ্গল গ্রুপ বাংলাদেশের একটি শীর্ষস্থানীয় শিল্প গোষ্ঠী। বেঙ্গল গ্রুপ সমাজের সুবিধাবঞ্চিত সম্প্রদায়ের উন্নতির জন্য অনুরূপ সি.এস.আর কার্যক্রম বরাবর করে থাকে।
মন্তব্য