শেয়ার প্রতি ২০ পয়সা বা ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়ার খবরে দর বাড়ল ৪ টাকা ৪০ পয়সা। রোববার পুঁজিবাজারে এমন ঘটনা ঘটেছে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্সে।
কোম্পানিটি পরিচালনা পর্ষদের সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বরের জন্য তাদের প্রথম প্রান্তিক অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী শেয়ারধারীদের ২ শতাংশ অন্তর্বর্তী নগদ লভ্যাংশ প্রদান করা হবে। যার জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ২৭ মে।
কিন্তু কোম্পানিটি ২০২০ সালের শেয়ারধারীদের জন্য কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি।
রোবাবর প্রকাশ করা কোম্পানিটির প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জানুয়ারি থেকে মার্চ, ২০২১ সময়ে কোম্পানির লাইফ ফান্ডের পরিমাণ ১ কোটি টাকার কিছু বেশি। আর মোট লাইফ ফান্ডের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা। আগের বছরের একই সময়ে যা কমেছিল ৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। আর মোট লাইফ ফান্ডের পরিমাণ ছিল ১২ কোটি ২৮ লাখ টাকা।
কোম্পানিটির ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণার খবরে হুমড়ি খেয়ে পড়ে বিনিয়োগকারীরা। ফলে শেয়ার দর বেড়েছে হু হু করে। লভ্যাংশ ঘোষণার কারণে রোববার কোম্পানিটির শেয়ার দরে কোনো লিমিট বা সীমা ছিল না। ফলে আগের দিনের থেকে কোনো সীমা বা সার্কিট ব্রেকার ছাড়াই শেয়ার দর বাড়ার সুযোগ ছিল কোম্পানিটির।
ফলে এদিন কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ২৩ দশমিক ৯১ শতাংশ। শেয়ার দর ১৮ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ২২ টাকা ৮০ পয়সা।
গত তিন মাসে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার আর সর্বনিম্ম ২ হাজার ৭০০ টাকায়। কিন্তু অন্তবর্তী লভ্যাংশ ঘোষণার খবরে রোববার ৪ লাখ ৭৩ হাজার ২৫১টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
কেন হঠাৎ লভ্যাংশ
কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে ২০১২ সালে। এ সময়ে মাত্র দুবার শেয়ারধারীদের লভ্যাংশ দিতে পেরেছে কোম্পানিটি। ২০১২ সালে ৮ শতাংশ আর ২০১৬ সালে ২০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছিল। এরপর আর এই কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার লেনদেনে মুনাফা ছাড়া আর কোনো বাড়তি লাভ হয়নি।
তবে হঠাৎ করে কেন এমন লভ্যাংশ তা জানতে যোগাযোগ করা হলে পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের কোম্পানি সচিব আবু সাঈদ সরকার নিউজবাংলাকে জানান, তিনি বর্তমানে পদ্মা লাইফে নেই।
তবে কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা লাইফ দীর্ঘ সময় ধরে শেয়ারধারীদের কোনো লভ্যাংশ দিচ্ছে না। এতে কোম্পানিটি বর্তমানে জেড ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে। এ অবস্থা থেকে উঠে আসার জন্যই এমন অন্তবর্তীকালীন লভ্যাংশ দেয়া হয়েছে।
বক্তব্য
এ বিষয়ে ডিএসই উপ মহাব্যবস্থাপক শফিকুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, কোম্পানি চাইলে এমনভাবে লভ্যাংশ দিয়ে ক্যাটাগরি পরিবর্তন করতে পারবে। ‘জেড’ ক্যাটাগরি থেকে উত্তরণে নূন্যতম ৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে হবে। তবেই ‘বি’ ক্যাটাগরিতে উন্নিত হবে। এর জন্য বছর শেষ কোম্পানিটিকে আরও ৩ শতাংশ নগদ বা বোনাস লভ্যাংশ দিতে হবে।
একইভাবে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে উন্নিত হতে হলে এখন ২ শতাংশ এবং বছর শেষে আরও ৮ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে হবে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে আবু আহমেদ বরাবরের মতো আবারও বলেন, বিমা নিয়ে বিনিয়োগকারীদের বেশি আগ্রহ। এখানে কী হচ্ছে কে জানে। ‘জেড’ ক্যাটাগরির একটি কোম্পানি লভ্যাংশ দিয়েছে তাতে যেভাবে শেয়ার দর বেড়েছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত। পুঁজিবাজারে আরও অনেক কোম্পানি আছে যারা এর চেয়ে শতভাগ বেশি লভ্যাংশ দিলেও শেয়ার দর বাড়ে না।
তিনি বলেন, ‘বিমা কোম্পানি নিয়ে বিশেষ কিছু বলার নেই। বিনিয়োগকারীরা এখান থেকে মুনাফা পাচ্ছে তাই সবাই যাচ্ছে। তবে এটাও সত্য এ ধরনের মুনাফা বেশি দিন স্থায়ী হয় না।
কার কাছে কত শেয়ার
কোম্পানির মোট শেয়ারের ৩৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ আছে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে। ১৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ আছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে ৫০ দশমিক ৫২ শতাংশ। কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৩৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। কোম্পানিটির অর্থবছর নির্ধারণ করা আছে ৩১ ডিসেম্বর।
আরও পড়ুন:
চট্টগ্রাম বোয়ালখালী দাবিকৃত চাঁদা না দিয়ে থানায় অভিযোগ করায় হিজড়াদের ওপর সংঘবদ্ধ হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে অন্তত ১২ জন হিজড়া আহত হয়েছেন।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে পৌর সদরের গোমদণ্ডী ফুলতল এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে আছেন—সিমি (২৮), অপর্না (১৭), তিশা (২৭), নদী (২৯), লতা (৩০), নাদিয়া (৩৮), মেঘলা (২৯), দুষ্টু (৩০), শিখা (৩০), বদ্দুনি (৪২) সহ আরও কয়েকজন।
দক্ষিণ জেলা হিজড়া সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুফিয়া হিজড়া বলেন, 'পৌর সদরের মীরপাড়ার বাসিন্দা ফারুক ওরফে অনিক (৩০) আমাদের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা করে মাসোহারা দাবি করে আসছিলো। এজন্য প্রায় সময় ভীতি দেখাতে থাকে। গত ৮ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার দিকে তৃষ্ণা হিজড়াকে ফারুক জানায় বাজার থেকে সংগ্রহ করা টাকা থেকে ভাগ দিতে হবে নয়তো সে দেখে নিবে।'
'এ বিষয়ে বুধবার সন্ধ্যার পর বোয়ালখালী থানায় অভিযোগ দিয়ে বাসায় ফেরার পথে গাড়ির গতিরোধ করে ফারুকের নেতৃত্বে ২০-২৫ লোক লাঠিসোটা দিয়ে সংঘবদ্ধ হামলা চালিয়েছে।'
'এসময় আমরা ২৪ জন হিজড়া ছিলাম। ওদের মারধরে বেশ কয়েকজন হিড়জা আহত হয়েছে বলে দাবি করেন এ হিজড়া নেত্রী।'
বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ লুৎফুর রহমান বলেন, থানায় অভিযোগ করে হিজড়ারা বাসায় ফেরার পথে হামলার শিকার হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি।
খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে যায়। এ ঘটনায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে এবং আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিবন্ধিত প্রবাসী ভোটার ও জাতীয় পরিচয়পত্রধারী (এনআইডি) বাংলাদেশিরা পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
এজন্য ‘পোস্টাল ব্যালট বিডি’ নামে একটি অ্যাপ তৈরির কাজ চলমান রয়েছে বলে তিনি জানান।
আজ ঢাকায় প্রাপ্ত এক তথ্যবিবরণীতে জানানো হয়, সম্প্রতি বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, টরন্টো আয়োজিত ‘স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণের কার্যক্রমের উদ্বোধন এবং প্রবাসীদের ভোট প্রদানে উদ্বুদ্ধকরণ’ বিষয়ক আলোচনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি প্রবাসীদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিদেশে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন এবং বাংলাদেশে অনুষ্ঠেয় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদানের জন্য প্রবাসীদেরকে আহ্বান জানান।
এসময় তিনি বাংলাদেশের নির্বাচনের সামগ্রিক চিত্র ও নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি তুলে ধরার পাশপাশি প্রবাসে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ভোটার নিবন্ধন ও আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা কীভাবে ভোট প্রদান করবেন সে বিষয়ে আলোচনা করেন।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে কানাডা সফরে এসে তাদের সাথে মতবিনিময় করার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন এবং এ ধরনের মতবিনিময় সভা আয়োজন করায় কনস্যুলেটের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
কনসাল জেনারেল মো. ফারুক হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশি অংশগ্রহণ করে এবং প্রবাসীরা নির্বাচন কমিশনারের সাথে বিষয়ভিত্তিক মুক্ত আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন।
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কানাডায় বসবাসরত ব্যবসায়ী, ডাক্তার, প্রকৌশলী, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী প্রবাসী বাংলাদেশী।
নেপালের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন নেতা হওয়ার জন্য ‘জেন জি’ বিক্ষোভকারীদের প্রথম পছন্দ।
বৃহস্পতিবার জেন জি’র একজন প্রতিনিধির বরাত দিয়ে কাঠমাণ্ডু থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
একজন সামরিক মুখপাত্র বলেন, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগডেল বুধবার সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে পরামর্শ করেছেন এবং জেন জি প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছেন।
তবে তিনি আন্দোলনের এই সংগঠনের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
সেনাবাহিনী ৩ কোটি মানুষের হিমালয়ের এই দেশে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে চাইছে।
মঙ্গলবারের সহিংসতায় গত দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতাচ্যুত হন এবং সংসদ ভবনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
বৈঠকে উপস্থিত থাকা রক্ষা বাম বলেন ‘এ মুহূর্তে সুশীলা কার্কির নামই অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে আসার জন্য আলোচনায় আছে। আমরা এখন প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।
তিনি এএফপিকে জানান, আমরা সেনাপ্রধানের সঙ্গে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলেছি। আলোচনাটি ছিল কীভাবে আমরা দেশকে এগিয়ে নিতে পারি, দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে পারি— তা নিয়ে।
৭৩ বছর বয়সী নেপালের প্রথম নারী সুপ্রিম কোর্ট প্রধান বিচারপতি কার্কি এএফপিকে বলেন, সংসদ এখনও বহাল আছে। এগিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজে বের করার জন্য বিশেষজ্ঞদের একত্রিত হওয়া দরকার।
তবে আন্দোলনকারীদের এই পছন্দ যে সর্বসম্মত নয়, সে বিষয়ে সতর্ক করেছেন অন্যরা। পরস্পরবিরোধী যুক্তি ও বেশ কয়েকটি নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।
অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ডিসকোর্ডে অনুষ্ঠিত একটি ভার্চুয়াল সভায় হাজারো তরুণ তাদের ভিন্ন ভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং কে তাদের প্রতিনিধিত্ব করবেন সে বিষয়ে বিতর্ক করেছেন। এসব আলোচনায় বিভিন্ন যুক্তি ও প্রস্তাবিত নাম উঠে এসেছে।
সাংবাদিক প্রণয় রানা বলেন, এখানে বিভাজন আছে। এমন বিকেন্দ্রীভূত আন্দোলনে প্রতিদ্বন্দ্বী স্বার্থ ও ভিন্নমত থাকাই স্বাভাবিক।
বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মতো সেনারা রাজধানীর রাস্তায় টহল দিয়েছে। শহর শান্ত থাকলেও বিভিন্ন স্থানে একাধিক সেনা চৌকি বসানো হয়েছে।
সোমবার কাঠমাণ্ডুতে সরকারের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধকরণ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়।
কিন্তু তা দ্রুত সারাদেশে ক্ষোভের বিস্ফোরণে রূপ নেয় এবং সরকারি ভবনে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
এসময় নিরাপত্তা বাহিনীর প্রাণঘাতী দমন অভিযানে অন্তত ১৯ জন নিহত হয় ।
কক্সবাজারের মহেশখালীতে দুর্বৃত্ত গুলিতে পুলিশের ৩সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প সংলগ্ন কোহেলিয়া সেতুর পাশে এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধরা হলেন, মহেশখালী থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মোহাম্মদ সেলিম (৩৬), কনস্টেবল সোহেল (৪৪) ও কনস্টেবল মো. মাসুদ (৩৬)। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে নিয়মিত চোরাই মালামাল বের হয়। এসব মালামাল বহনকারী গাড়ি আটকিয়ে একদল ডাকাত দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও ডাকাতি করে আসছে। মঙ্গলবার রাতেও ১০-১৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ ডাকাতদল ডাকাতির প্রস্তুতি নেয়।
খবর পেয়ে পুলিশের টহল টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে ডাকাতদের ধাওয়া দিলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে তিন পুলিশ সদস্য গুলিবিদ্ধ হন। আহতদের দ্রুত বদরখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘আহত পুলিশ সদস্যরা চিকিৎসাধীন আছেন, ঘটনায় জড়িতদের আটক করতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পদ্মা নদীতে বেশ কয়েক স্থানে অতি সম্প্রতিকালে তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।গত কয়েক দিনের ভাঙ্গনে উপজেলার জুনিয়াদহ ইউনিয়নের ফয়েজুল্লাপুর, হাটখোলাপাড়া এবং বাহাদুরপুর ইউনিয়নের আড়কান্দি ও মাধবপুর এলাকার বিস্তীর্ণ ফসলি জমিসহ হিন্দুদের ব্যবহৃত শ্মশানঘাটও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।এতে ৭০--৮০ জনের পান চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে এবং তাদের ৩০০০ পান বরজের সারি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
গত ৯ সেপ্টেম্বর সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার জুনিয়াদহ ইউনিয়নের ফয়জুল্লাহপুর, হাটখোলাপাড়া ও বাহাদুরপুর ইউনিয়নের আড়কান্দি ও মাধবপুরে গত কয়েকদিন ধরে পদ্মা নদীর পাদদেশে কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। জুনিয়াদহ ইউপি'র ভাঙ্গন কবলিত এলাকা থেকে পদ্মা নদী রক্ষা বাঁধের রায়টা-মহিষকুন্ডি বেরিবাঁধের দূরত্ব ৫০ মিটারেরও কিছুটা কম।ভাঙ্গনে হুমকিতে রয়েছে উক্ত এলাকার বসতবাড়িসহ সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা। ফলে ভাঙ্গন নিয়ে এলাকাবাসী আতঙ্কে দিন কাটচ্ছে।এলাকাবাসীর দাবি, এমনি অবস্হা চলতে থাকলে আরো মারাত্মক বিপর্যয় ঘটতে পারে। অন্যদিকে বাহাদুরপুরের মাধবপুরের ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় রয়েছে কৃষিজ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ বিস্তীর্ণ প্রান্তিক চাষিদের পান বরজ।গত কয়েক দিনের ভাঙ্গনে ৭০-৮০ জন পান চাষির প্রায় ৩০০০ পিলি পান বরজ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তাছাড়া এ অঞ্চলে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের সৎকারে ব্যবহৃত একমাত্র শ্মশান ঘাটটিও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
আমিরুল নামের এক কৃষক জানান,তার ভাই আরজেত ও তার পুত্রদের ৭/৮ বিঘা জমির প্রায় ৮০০ পিলি পানের বরজ নদীতে বিলীন হয়েছে ।তাদের একমাত্র উৎস পান বরজ হারিয়ে তারা দিশেহারা ও পাগলপ্রায়। উপার্জনের জায়গা হারিয়ে তারা এখন পথের ফকির।
মবির পন্ডিত,রেজাউল, জামশেদ, রাব্বি, রহমান, কাশেম, নুরা,নাসির, আনেজ,আজগর,আবু,শিহাব নামের কৃষক এরা সকলেই ১০০ পিলি করে পানের বরজ হারিয়েছেন।
পানচাষি আবুল আলী জানান, মাধবপুর এলাকায় গত দুই বছর আগে এই সমস্ত বরজ আগুনে পুড়ে গিয়েছিল।এবার তা পদ্মা নদী গ্রাস করলো। আমরা কৃষকরা খুবই অসহায়ভাবে দিন কাটাচ্ছি।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ভাঙ্গনের বিষয়টি আমরা আপনাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি।অতি শীঘ্রই আমরা সেখানে পরিদর্শনে যাবো। এছাড়া বসতবাড়ি থাকার কারণে জুনিয়াদহ ইউনিয়নের ফয়জুল্লাহপুরে নদীর পানি কমে যাবার সঙ্গে সঙ্গেই ভাঙ্গন প্রতিরোধে কাজ শুরু হবে। পরবর্তীতে অন্যান্য অঞ্চলগুলোতেও পর্যায়ক্রমে কাজ শুরু হবে।
ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, পদ্মা নদীতে ভাঙ্গনের বিষয়টি আমরা জেনেছি।ক্ষতিগ্রস্ত পান চাষিদের আবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জামালপুরে ট্রাকচালক রিপন মিয়াকে (৪২) গরুচুরির অপবাদে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। হত্যাকারীদের বিচারের দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মেলান্দহ উপজেলার ঝাউগড়া ইউনিয়নের পলাশী বাজারে পরিবার ও স্থানীয়রা এই মানববন্ধন কর্মসুচির আয়োজন করে।
ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে নিহতের ভাই ফরিদ মিয়া, তপন মিয়া, শাহীন, ফুপু মঞ্জুয়ারা, ভাবী নার্গীসসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন। এ সময় বক্তারা বলেন, উপজেলার রেহাই পলাশতলা এলাকার মৃত কছর আলীর ছেলে প্রবাসী মওলানা (৩৫) সৌদি আরবে থাকাকালীন চার বছর আগে তার স্ত্রীর সাথে ট্রাকচালক রিপন মিয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে রিপন মিয়া ঢাকায় চলে যায় এবং গত ৬ মাস আগে রিপন মিয়া আবার নিজ এলাকায় ফিরে আসে। এরই মধ্যে মওলনা দেশে আসেন। এরপর তাদের প্রেমের বিষয়টি নিয়ে প্রবাসী মওলনার সাথে রিপন মিয়ার একাধিকবার কথা কাটাকাটি হয় এবং তাকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আক্রোশের জেরে ট্রাকচালক রিপন মিয়া গত ৬ সেপ্টেম্বর রাতে বাড়ি ফেরার পথে একই এলাকার মৃত কছর উদ্দিনের চার ছেলে মওলনা, বুরহান, রাজু, দিলুসহ তাদের লোকজন পরিকল্পিতভাবে রিপন মিয়াকে টেনেহিচড়ে বুরহানের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে রশি দিয়ে গাছের সাথে বেধে রাখে। এ সময় প্রতিবেশীরা ছুটে এলে গরুচুরির অপবাদ দিয়ে গাছের সাথে বাধা অবস্থায় তাকে বাঁশ ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। এ সময় রিপন মিয়ার চিৎকারে তার বাবা মোজাম্মেল হক (৬০), ভাই ফরিদ মিয়া, তপন মিয়াসহ পরিবার ও স্বজনরা তাকে উদ্ধারের জন্য গেলে তাদের তাড়িয়ে দেয়া হয়। পরে তারা মেলান্দহ থানায় গিয়ে রিপন মিয়াকে উদ্ধারের জন্য পুলিশের সহায়তা চাইলে পুলিশ গিয়ে রিপন মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনার পরের দিন ময়নাতদন্তের পর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। এ ঘটনায় মেলান্দহ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করতে গেলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামলা না নিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করার কথা বলেন। মানববন্ধন থেকে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেন বক্তারা। পরে বিক্ষোভ করে স্থানীয় এলাকাবাসী।
উল্লেখ্য, এই ঘটনায় নিহতের বাবা মোজাম্মেল হক বাদী হয়ে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৭ থেকে ৮ জনের বিরুদ্ধে গতকাল মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) জামালপুর আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
নেপালে সরকারবিরোধী আন্দোলন ভয়াবহ সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। উত্তেজিত বিক্ষোভকারীদের হামলার মুখে পড়ে দেশটির একাধিক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এমনকি সাবেক প্রধানমন্ত্রীও প্রাণে বাঁচতে বাধ্য হয়েছেন হেলিকপ্টারের দড়ি আঁকড়ে ধরতে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, সামরিক।হেলিকপ্টার থেকে ঝোলানো দড়ি ধরে মন্ত্রী ও তাদের পরিবার মরিয়া হয়ে পালাচ্ছেন।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন স্থানে একযোগে সরকারি কর্মকর্তা, মন্ত্রী এবং এমপিদের বাসভবনে হামলা চালান বিক্ষোভকারীরা। তাদের মধ্যে তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রী পৃথী সুব্বা গুরুঙ্গের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, উপপ্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী বিষ্ণু পাউডেলের বাড়িতে ভাঙচুর এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখকসহ আরও কয়েকজনের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের গভর্নর বিশ্ব পাউডেলের বাসভবনও রক্ষা পায়নি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, উত্তেজিত জনতা রাস্তায় ধাওয়া দিয়ে অর্থমন্ত্রী বিষ্ণু পাউডেলকে মারধর করছে। আরেক ভিডিওতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও নেপালি কংগ্রেস প্রধান শের বাহাদুর দেউবা ও তার স্ত্রী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরজু রানা দেউবাকে বিক্ষোভকারীদের হাতে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা যায়। সেনারা পৌঁছে তাদের উদ্ধার করে।
এ সময় পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে ওঠে যে সামরিক হেলিকপ্টার ব্যবহার করে কয়েকজন মন্ত্রী ও শীর্ষ কর্মকর্তাকে রেসকিউ করা হয়। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, দড়ি বেয়ে বা রেসকিউ বাস্কেটে ঝুলে মন্ত্রীদের এক হোটেলের ছাদে নামিয়ে দিচ্ছে সেনারা। আকাশে তখন ভাসছিল ঘন কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী।
বিক্ষোভের সূত্রপাত হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা ঘিরে। তবে তা দ্রুত দেশজুড়ে সহিংসতায় রূপ নেয়। রাজধানী কাঠমান্ডুতে সরকারি-বেসরকারি অফিস, প্রতিষ্ঠান ও সংসদ ভবনে অগ্নিসংযোগ এবং ভাঙচুর চালায় আন্দোলনকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারফিউ জারি ও সেনা মোতায়েন করা হয়।
শেষ পর্যন্ত বিক্ষোভের তীব্রতায় পদত্যাগ করতে বাধ্য হন দেশটির প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি। বুধবার সেনারা রাজধানীর রাস্তায় টহল শুরু করে এবং জনগণকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেয়।
এদিকে, বিক্ষোভে সহিংসতায় জেন-জেড প্রজন্মের অংশগ্রহণ এবং মন্ত্রীদের হেলিকপ্টারের দড়ি ধরে পালানোর ভিডিও দেশজুড়ে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
মন্তব্য