চলমান লকডাউনের মধ্যে পুঁজিবাজারে বিমা খাতে শেয়ারে যে উত্থান দেখা যাচ্ছে, তাতে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে সাধারণ বিমা খাতের ১৯টির শেয়ারের দর।
৫ এপ্রিল থেকে একটি কোম্পানির সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ দাম বেড়েছে। মাত্র ১৬ কার্যদিবসে এই পরিমাণ দাম বাড়ার কী কারণ, তা নিয়ে নানা কথাবার্তা হচ্ছে।
বিমা খাতে হঠাৎ এই চাঙাভাব নিয়ে শেয়ারধারীরা যেমন উৎফুল্ল, তেমনি পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তি কিছুটা অবাকও। কারসাজি হচ্ছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখার পরামর্শও এসেছে।
১৯টি কোম্পানির মধ্যে আবার ৬টির দাম বেড়েছে ৫০ শতাংশের বেশি।
৫ এপ্রিল থেকে লকডাউনকে কেন্দ্র করে আগের কয়েক দিন পুঁজিবাজারে ছিল অস্থিরতা। পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ হয়ে গেলে কী হবে, এই আশঙ্কায় কম দামে শেয়ার বিক্রি করে দেন অনেকে।
তবে লকডাউনে বাজারে সার্বিকভাবে ইতিবাচক প্রবণতা দেখা গেছে। আর এর জন্য প্রধানভাবে অবদান রেখেছে বিমা খাতের কোম্পানিগুলো।
এই খাতের ৫০টি কোম্পানির মধ্যে সাধারণ বিমার কোম্পানি আছে ৪৮টি, আর জীবন বিমার ১২টি। এর মধ্যে বেড়েছে প্রধানত সাধারণ বিমা কোম্পানির দাম।
নানা সময় পুঁজিবাজারে কোনো একটি খাতের শেয়ার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আগ্রহ জন্মায়। কিন্তু এ রকম উল্লম্ফন ২০১০ সালে মহাধসের আগেও কোনো খাত নিয়ে দেখা যায়নি।
গত বছর বিমা কোম্পানির শেয়ারে দরবৃদ্ধির পেছনে বেশ কিছু গুজব কাজ করছিল। এজেন্টের কমিশন কমিয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ, গাড়ির তৃতীয় পক্ষের বিমা বাতিল করে প্রথম পক্ষের বিমা চালু হলে আয় বাড়বে, লভ্যাংশ বাড়বে, এমন কথা বলাবলি হয়।
এরপর আলোচনায় আসে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলের মতো বড় বড় প্রকল্প বিমার আওতায় আসছে। এগুলোর ঝুঁকি একেবারেই কম; কোম্পানির লাভ হবে ভালো। তবে পরে জানানো হয়, মেট্রোরেল সরকারি সাধারণ বিমা করপোরেশনের আওতায় থাকবে। এটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয়।
আবার ১০ বছর আগে করা একটি বিধান সামনে আনা হয়, যেখানে বলা ছিল, কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ৬০ শতাংশ থাকতে হবে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে। এমনটি হলে বিমা কোম্পানির শেয়ার মালিকদেরই কিনতে হবে।
কিন্তু আয় বা লভ্যাংশ বাড়ার গুজব সত্য প্রমাণ হয়নি। পরিশোধিত মূলধনের ৬০ শতাংশ নিজেদের হাতে রাখার যে আইন করা হয়েছে, সেটিও কার্যকর হয়নি। তবু আবার ঢালাও দর বৃদ্ধিতে কারসাজির অভিযোগ উঠেছে।
আবার দাম বাড়ার ক্ষেত্রে আরও কিছু অদ্ভুত ঘটনা ঘটছে। মৌলভিত্তির শক্তিশালী কোম্পানি হিসেবে পরিচিত, প্রতিবছর ভালো মুনাফা করে আকর্ষণীয় লভ্যাংশ দেয়া কোম্পানির তুলনায় দাম বেশি হচ্ছে দুর্বল কোম্পানির, যেগুলোর মুনাফা দেয়ার হার কখনো ভালো ছিল না।
সব শেষ সোমবার বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) পক্ষ থেকে জারি করা আরেক নির্দেশনা এই খাত দিয়ে আগ্রহ আরও বাড়িয়েছে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, আগামী ১ অক্টোবরের পর থেকে কোনোভাবেই প্রিমিয়াম জমার বিপরীতে হাতে লেখা রসিদ দেয়া যাবে না। আর এই খবরে দরপতনের বাজারেও বেড়েছে বিমা খাতের বেশির ভাগ শেয়ারের দর।
সবচেয়ে বেশি বাড়ল যেগুলোর দাম
৫ এপ্রিল লকডাউন শুরুর দিন প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর ছিল ৯৫.৪ টাকা। সেটি এখন বেড়ে হয়েছে ১৪৩ টাকা ২০ পয়সা। তবে ২০ শতাংশ বোনাস শেয়ার হিসাব করলে প্রকৃত দাম দাঁড়ায় ১৭১ টাকা ৮০ পয়সা।
অর্থাৎ লকডাউনে এই কোম্পানির দাম বেড়েছে ৭৬ টাকা ৪০ পয়সা বা ৮০ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধি হয়েছে অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের। এর বর্তমান শেয়ারদর ৬২ টাকা ৯০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ৩৬ টাকা ২০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ৭৩.৭৫ শতাংশ।
ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৫৩ টাকা ৩০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ৩৩ টাকা ৯০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ৫৭.২২ শতাংশ।
ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৭২ টাকা ৩০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ৪৬ টাকা ১০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ৫৬.৮৩ শতাংশ।
ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৫০ টাকা ৩০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ৩২ টাকা ৮০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ৫৩.৩৫ শতাংশ।
ফেডারেল ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ২৭ টাকা ৭০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ার দর ছিল ১৮ টাকা ১০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ৫৩.০৩ শতাংশ।
সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৩০ টাকা ২০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ২১ টাকা ৩০ পয়সা। কোম্পানিটি শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ৪১.৭৮ শতাংশ।
৩০ শতাংশের বেশি বাড়ল যেগুলো
ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৪৯ টাকা ৯০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ৩৬ টাকা ১০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ৩৮.২২ শতাংশ।
বিজিআইসির বর্তমান শেয়ারদর ৪৯ টাকা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ৩৫.৫০ টাকা। কোম্পানিটি শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ৩৮ শতাংশ।
বিএনআইসিএলের বর্তমান শেয়ারদর ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ৭৯ টাকা ৪০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ৩৭.৯ শতাংশ।
পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৩৪ টাকা ৩০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ২৫ টাকা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ৩৭.২ শতাংশ।
প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৪০ টাকা ৮০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ২৯ টাকা ৮০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ৩৬.৯১ শতাংশ।
পিপলস ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৪৬ টাকা ৬০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ৩৪ টাকা ২০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ৩৬.২৫ শতাংশ।
দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৩৯ টাকা ১০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ২৮ টাকা ৮০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ৩৫.৭৬ শতাংশ।
সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৬১ টাকা ২০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ৪৫ টাকা ১০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ৩৫.৭ শতাংশ।
রূপালী ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৩৮ টাকা ১০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ২৮ টাকা ৩০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ৩৪.৬২ শতাংশ।
নর্দার্ন ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৪২ টাকা ৯০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ৩১ টাকা ৯০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ৩৪.৪৯ শতাংশ।
এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৩২ টাকা ২০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ২৪ টাকা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ৩৪.১৬ শতাংশ।
গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৩৮ টাকা ৭০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ২৯ টাকা ২০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ৩২.৫৩ শতাংশ।
আরও ১২ কোম্পানির দাম বেড়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে
তাকাফুল ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৪৭ টাকা ৪০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ৩৯ টাকা ৮০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ২৯.১০ শতাংশ।
ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৩৩ টাকা ৯০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ২৬ টাকা ৩০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ২৮.৯ শতাংশ।
পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৭৩ টাকা ৯০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ৫৭ টাকা ৫০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ২৮.৫২ শতাংশ।
কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৩৩ টাকা ৪০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ২৫ টাকা ৮০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ২৮.৪৫ শতাংশ।
কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৪৪ টাকা ১০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ৩৫ টাকা ২০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ২৫.২৮ শতাংশ।
ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৫২ টাকা ৫০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ৪২ টাকা ৩০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ২৪.১১ শতাংশ।
রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৫১ টাকা ৭০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ৪২ টাকা ৫০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ২১.৬৪ শতাংশ।
জনতা ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৩৭ টাকা ৯০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ৩১ টাকা ২০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ২১.৪৭ শতাংশ।
প্রগতি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৫৯ টাকা ৫০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ৪৯ টাকা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ২১.৪২ শতাংশ।
মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৩৯ টাকা ৭০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ৩২ টাকা ৭০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ২১.৪০ শতাংশ।
এশিয়া প্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৬৮ টাকা ১০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ৫৭ টাকা ৮০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ১৭.৮ শতাংশ।
ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ১১৩ টাকা ৯০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ৯৮ টাকা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ১৬.২২ শতাংশ।
পাঁচ কোম্পানির দাম বাড়েনি খুব একটা
গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৫৫ টাকা ৯০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ৫০ টাকা ৯০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ৯.৮২ শতাংশ।
স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৪১ টাকা ১০ পয়সা। ১৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ৩৭ টাকা ৭০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ৯ শতাংশ।
এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ১০৪ টাকা ৯০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ৯৬ টাকা ৬০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ৮.৬ শতাংশ।
নিটোল ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৫৩ টাকা ১০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ৪৯ টাকা ৭০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ৬.৮ শতাংশ।
রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৫৫ টাকা ১০ পয়সা। ১৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ৫৩ টাকা ৬০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ২.৭৯ শতাংশ।
কমেছে দুটির দাম
প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৯৪ টাকা ২০ পয়সা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ১০৯ টাকা ৭০ পয়সা। কোম্পানিটি শতকরা হিসাবে দর কমেছে ১৪.১২ শতাংশ।
সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান শেয়ারদর ৫৮ টাকা। ৫ এপ্রিল শেয়ারদর ছিল ৬০ টাকা ৫০ পয়সা। কোম্পানিটির শতকরা হিসাবে দর কমেছে ৪.১ শতাংশ।
আবু আহমেদের ধারণা, কারসাজি
বিমা কোম্পানির শেয়ারের এভাবে দর বৃদ্ধিকে অস্বাভাবিক বলছেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক হিসেবে পরিচিত আবু আহমেদ। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ খাতে কারসাজি হচ্ছে। মার্জিন ঋণ নিয়ে বিনিয়োগকারীরা ঢালাওভাবে বিমায় বিনিয়োগ করছেন। এতে বিমা খাতের যে উত্থান হচ্ছে, তা লকডাউনের এই সময়ে আর কোনো খাতে হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘যারা মার্জিন ঋণ নিয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে, তারা কখনও দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করে না। বরং সর্বোচ্চ পাঁচ থেকে সাত দিনের জন্য তারা কোনো একটি কোম্পানি বা খাতে বিনিয়োগ করে। তারপর কেনা শেয়ার বাধ্য হয়ে বিক্রি করে নতুন করে বিনিয়োগ করে। কিন্তু আমি এখনও শুনতে পারিনি যে মার্জিন ঋণ নিয়ে কেউ বড় অঙ্কের লাভবান হয়েছে।’
বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘বিমার শেয়ারের দর বাড়ছে বলেই শেয়ার কিনতে হবে, এমন ধারণা থেকে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বের হয়ে আসতে হবে। তা না হলে বড় ধরনের লোকসানে পড়তে হতে পারে।’
আরও পড়ুন:বাংলা ট্র্যাক গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ‘আমি প্রবাসী’, প্রবাসী বাংলাদেশিদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
এ চুক্তির মাধ্যমে ‘গার্ডিয়ান প্রবাসী প্রহরী’ নামে একটি বিশেষ বিমা সেবা চালু করেছে, যা বিশেষভাবে প্রবাসী বাংলাদেশি ও তাদের পরিবারকে সুরক্ষা দেবে।
আমি প্রবাসীর পক্ষে বাংলা ট্র্যাক গ্রুপের গ্রুপ হেড অফ ইনোভেশন এম তানভীর সিদ্দিকি ও গার্ডিয়ান লাইফের সিইও শেখ রকিবুল করিম, এফসিএ সম্প্রতি চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
বিশেষ এ বিমা সেবাটি প্রবাসীদের সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সুবিধা দেবে। এসবের মধ্যে রয়েছে বিদেশে হাসপাতাল সেবার খরচ, মৃত্যুজনিত কভারেজ, স্থায়ী বা আংশিক অক্ষমতার কভারেজ, বিনা মূল্যে টেলিমেডিসিন সেবা, ইনকাম লসের কভারেজ, মৃতদেহ দেশে ফেরত আনার ব্যবস্থা ও দাফন সেবা।
এসব সুবিধা প্রবাসী বাংলাদেশিদের আর্থিক সুরক্ষা এবং মানসিক শান্তি নিশ্চিত করে তাদের সার্বিক ভালো থাকা নিশ্চিত করবে।
এ বিষয়ে বাংলা ট্র্যাক গ্রুপের গ্রুপ হেড অফ ইনোভেশন এম তানভীর সিদ্দিকি বলেন, ‘চুক্তিটি আমাদের প্রবাসীদের ক্ষমতায়নের প্রতি প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। আমরা এমন একটি সল্যুশন আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা তাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে সহায়তা করবে, যাতে তারা নির্বিঘ্নে কাজ করে তাদের উপার্জনে মনোনিবেশ করতে পারেন।’
গার্ডিয়ান লাইফের সিইও শেখ রকিবুল করিম বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য সবসময় বিমাকে সহজলভ্য ও অর্থবহ করে তোলা। এ চুক্তির মাধ্যমে আমরা প্রবাসীদের চাহিদা পূরণে কাজ করব যাতে তারা পৃথিবীর যেখানেই থাকুক না কেন, সুরক্ষিত অনুভব করতে পারেন।’
অনুষ্ঠানটিতে আরও উপস্থিত ছিলেন আমি প্রবাসীর পক্ষে মো. সাজেদুল হক (চিফ টেকনোলজি অফিসার), আহসানুল হক (হেড অফ বিজনেস অপারেশনস), সিয়াম আহম্মদ (অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার, বিজনেস ডেভেলপমেন্ট) এবং মো. সাইফ-উল-আলম (কমিউনিকেশন লিড)।
গার্ডিয়ান লাইফের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আবদুল হালিম (এসভিপি এবং হেড অফ মাইক্রো ইন্স্যুরেন্স), মো. জালাল উদ্দিন (ম্যানেজার, মাইক্রো ইন্স্যুরেন্স ডিপার্টমেন্ট), নওশীন নাহার হক (এভিপি, মাইক্রো ইন্স্যুরেন্স ডিপার্টমেন্ট) এবং শারমিন আক্তার শাওন (বিজনেস রিলেশনশিপ ম্যানেজার, মাইক্রো ইন্স্যুরেন্স ডিপার্টমেন্ট)।
আরও পড়ুন:প্রশাসক ও কর্মীদের কলহে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৫০ শতাংশ ব্যবসা কমেছে বলে বুধবার দাবি করেছেন কর্মীরা।
রাজধানীর মালিবাগে সকালে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারী আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, প্রতিষ্ঠার ১০ বছরে এই প্রথম গ্রাহকের বিমা দাবির সাত দিন পেরিয়ে গেলেও তা পূরণ করতে পারেনি সোনালী লাইফ। বিমা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নিয়োগ দেয়া প্রশাসকের কারণে উল্টো পথে হাঁটছে প্রতিষ্ঠানটি।
কর্মীদের অভিযোগ, মালিকানা বদলের পাঁয়তারায় সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ধ্বংসের চেষ্টা চলছে।
দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছিল বিমা উন্নয়ন কতৃপক্ষ, তবে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রশাসকের বিরুদ্ধেই উঠে আসে নানা অনিয়মের অভিযোগ। প্রতিবাদে লাগাতার কর্মবিরতিতে যান কর্মীরা।
প্রশাসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, যৌক্তিক কারণ ছাড়াই শীর্ষ নির্বাহীদের বরখাস্ত করেন তিনি, যা পরে উচ্চ আদালত রহিত করে। এ ছাড়াও প্রশাসকের বিরুদ্ধে নিয়ম-বহির্ভূতভাবে নিজস্ব লোকজন নিয়োগের অভিযোগও আছে।
কর্মীদের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কর্মপরিবেশ নষ্ট করার অভিযোগ করা হয় প্রশাসকের বিরুদ্ধে।
তাদের দাবি, বিমা খাতে অভিজ্ঞতাহীন প্রশাসক সাবেক এ সেনা কর্মকর্তাকে সরিয়ে একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে নিয়োগ দেয়া হোক। সেই সঙ্গে আট লাখ গ্রাহকের অর্থের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নির্মোহ অডিট করা হোক।
ওই সময় দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দেন বিমা প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা।।
যদিও এর আগে তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন প্রশাসক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত এসএম ফেরদৌস।
আরও পড়ুন:আঙুর বিদেশি ফল হলেও জনপ্রিয় এ ফলটির পরীক্ষামূলক চাষে সফল হয়েছেন ফরিদপুর জেলার একজন তরুণ উদ্যোক্তা আহম্মেদ ফজলে রাব্বি।
তিনি শহরতলীর শোভারামপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এক বছর আগে ৭০ শতাংশ জমি লিজ নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে আঙুর চাষ শুরু করেন। প্রথম বছরেই তিনি সফলতার মুখ দেখলেন। আগামী বছর থেকে তিনি বাণিজ্যিকভাবে আঙুর চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন।
আঙুর দেখতে আশপাশ থেকে অনেকেই যান রাব্বির বাগানে। যারা যান তাদের তিনি নিজ বাগানের আঙুর তুলে খাওয়ান।
দর্শনার্থীরা জানায়, আঙুর বেশ মিষ্টি এবং সুস্বাদু। বাজার থেকে কেনা আঙুরের থেকে কোনো অংশে কম নয়, বরঞ্চ কোনো কোনোটা আরও বেশি মিষ্টি এবং সুস্বাদু হয়েছে।
থ্রি স্টার গ্রিন বাগানের মালিক আহম্মেদ ফজলে রাব্বি জানান, ছোট বেলা থেকেই গাছপালা লাগানোর শখ তার।তিনি সখের বশে নিজ বাড়ির ছাদে বিভিন্ন ফলের গাছ লাগিয়েছেন। এখন সে জমি লিজ নিয়ে পরীক্ষামূলক আঙুর চাষ করে সফলতা পাওয়ায় আগামী বছর থেকে তিনি বাণিজ্যিকভাবে আঙুর চাষ করবেন।
ফজলে রাব্বি জানান, এখন তার বাগানে যে আঙুর আছে, এগুলো সবই দর্শনার্থীদের জন্য। এ বছর তিনি আঙুর বিক্রি করবেন না।
এ বছর তিনি তার বাগানে বাইকুনুর, ডিক্সন, ফ্যান্টাসি সিডলেস, নারু সিডলেস, মার্সেল ফোরাস, ভাইটালিয়া আরলি রেডসহ বিভিন্ন প্রজাতির আঙুরের চাষ করেছেন।
আহম্মেদ ফজলে রাব্বি জানান, আঙুরের পাশাপাশি মাল্টা, কমলা, লিচু, আনারসহ বিভিন্ন ফলের বাগান করতে চান তিনি। এক্ষেত্রে তিনি কৃষি বিভাগের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
ফরিদপুর গার্ডেনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাগর নন্দী বলেন, ‘আবহাওয়া, মাটি ও বাণিজ্যিক চাষের জ্ঞানের অভাবসহ নানা কারণে বাংলাদেশে ফলটি চাষের আগ্রহ খুব একটা দেখা যায় না, তবে ফরিদপুরের আহম্মেদ ফজলে রাব্বি তার বাগানে পরীক্ষামূলকভাবে আঙুর চাষ করে যে আঙুর ফলতে সক্ষম হয়েছে তা অতুলনীয়, মিষ্টি এবং সুস্বাদু, সে সরকারি পৃষ্টপোষকতা পেলে আঙুর উৎপাদনে ব্যাপক সফলতা পাবে বলে আমি মনে করি।
আরও পড়ুন:এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের (ইআইএল) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে সম্প্রতি নিয়োগ পেয়েছেন মো. বদিউজ্জামান লস্কর।
তিনি বিমা পেশায় দীর্ঘ ২৮ বছর সুনামের সঙ্গে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বদিউজ্জামান লস্কর ১৯৯৫ সালের ২ মে বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডে ডেপুটি ম্যানেজার পদে যোগদানের মাধ্যমে বিমা পেশায় কর্মজীবন শুরু করেন। সেখানে তিনি ১৯৯৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কাজ করেছেন।
পরবর্তী সময়ে ১৯৯৭ সালের ১ অক্টোবর নর্দান জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডে সহকারী ভাইস প্রেসিডেন্ট ও এলিফ্যান্ট রোড শাখার প্রধান হিসেবে যোগ দেন বদিউজ্জামান। ওই প্রতিষ্ঠানে ১৯৯৯ সালের ৩০ নভেম্বর নাগাদ কাজ করেন তিনি।
বদিউজ্জামান লস্কর ১৯৯৯ সালের ১ ডিসেম্বর ইসলামী ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশ লিমিটেডে ভাইস প্রেসিডেন্ট ও এলিফ্যান্ট রোড শাখার প্রধান হিসেবে যোগ দিয়ে ২০০১ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন।
পরে তিনি সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার ও লোকাল অফিস শাখার প্রধান হিসেবে ২০০১ সালের ১ আগস্ট তাকাফুল ইসলামী ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডে যোগ দিয়ে হেড অফ মার্কেটিং হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি এ কোম্পানিতে ২০১২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ করেছেন।
বদিউজ্জামান লস্কর ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডে সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও দিলকুশা শাখার প্রধান হিসেবে যোগ দেন। পরবর্তী সময়ে তাকে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে পদোন্নতি ও কোম্পানির কাকরাইল শাখার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে তিনি হেড অফ মার্কেটিং হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদ ২০২৩ সালের ৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত ৩০৫তম সভায় তাকে সিইও ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিমা কোম্পানীর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি তার নিয়োগ অনুমোদন দেয়।
বদিউজ্জামান লস্কর গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা কমার্স কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরে শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অফ ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি থেকে সমাজ বিজ্ঞান ও নৃবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি অর্জন করেন। এ ছাড়া তিনি বিমাবিষয়ক বিভিন্ন সভা-সেমিনারে যোগ দেন।
আরও পড়ুন:সফলতার সঙ্গে ১০ বছর শেষ করে একাদশ বছরে পা দিয়েছে দেশের বেসরকারি খাতের জীবনবিমা প্রতিষ্ঠান জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড।
সবার জন্য সুরক্ষিত, নিরাপদ ও সুনিশ্চিত ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার লক্ষ্যকে সামনে রেখে ২০১৩ সালের ১১ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে চতুর্থ প্রজন্মের শরিয়াহভিত্তিক এ বিমা কোম্পানি।
এ উপলক্ষে জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজন করা হয় গৌরবগাঁথার এক দশক পূর্তি অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে কোম্পানিটির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম নুরুজ্জামান তার বক্তব্যে আগামী দিনের জন্য অনুপ্রেরণা ও সব ইতিবাচক পরিবর্তনে মূল্যবান দিকনির্দেশনা দেন।
তিনি কোম্পানির সাফল্য ও সার্বিক অগ্রযাত্রা তুলে ধরেন। শোকের মাস চলার কারণে জন্মবার্ষিকীর কেট কাটা হয়নি।
অনুষ্ঠানে এ বিমা কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়, বর্তমানে প্রায় ১ লাখ ৩৭ হাজারেরও বেশি গ্রাহককে স্বাস্থ্য ও জীবনবিমার আওতায় সেবা দিচ্ছে জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স। এর মধ্যে আংশিক মেয়াদপূর্তি ও মেয়াদপূর্তি বাবদ প্রায় ১৪ কোটি ২৬ লাখ টাকারও বেশি বিমা দাবি পরিশোধ করা হয়েছে। মৃত্যুদাবি বাবদ প্রায় ১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা এবং স্বাস্থ্যবিমা দাবি বাবদ প্রায় ৮২ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রতিষ্ঠার ১০ বছরে ১৮ কোটি টাকারও বেশি বিভিন্ন বিমা দাবি পরিশোধ করেছে বলে জানায় চতুর্থ প্রজন্মের জীবনবিমা কোম্পানি জেনিথ লাইফ ইন্স্যুরেন্স। দেশব্যাপী ৫৫টি শাখা অফিস ও প্রায় ১৩ হাজার কর্মকর্তা ও কর্মী নিয়ে চলছে এ কোম্পানি।
শরিয়াহভিত্তিক এ জীবনবিমা কোম্পানিটি ৭ কর্মদিবসের মধ্যে বিমা দাবি পরিশোধ করে থাকে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়। পাশাপাশি, ঢাকা ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, নগদ অ্যাপের মাধ্যমে সরাসরি প্রিমিয়াম জমা দেয়ার ব্যবস্থা আছে জেনিথের।
ইআরপি সফটওয়্যারের মাধ্যমে পরিচালিত হয় বিমা কোম্পানিটির কার্যক্রম। রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ ১০০ গোষ্ঠী বিমা করা হয়েছে বলে অনুষ্ঠানে জানান বিমা প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানে জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সংশ্লিষ্টরা জানান, ১০ বছরে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে সফল হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। গ্রাহক সন্তুষ্টির পাশাপাশি কোম্পানির শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তি গড়ে উঠেছে। এর স্বীকৃতি হিসেবে এসেছে নানা পুরস্কার ও সম্মাননা।
জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের গ্রাহক, পৃষ্ঠপোষক ও শুভানুধ্যায়ীদের সর্বাত্মক সহযোগিতা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এ অনুষ্ঠান।
আগামীতেও স্বপ্ন ও সম্ভাবনার মেলবন্ধনের মধ্য দিয়ে কার্যকরী বিমা সেবা সবার কাছে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের কর্মকর্তারা।
টাঙ্গাইল জেলায় সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডে ১০ বছর মেয়াদি জীবনবিমা করেছিলেন সেলেনা আক্তার। ২০২০ সালের দিকে বিমার একটি কিস্তি দেয়া বাকি ছিল তার, তবে ২০২০ সালে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান।
সাড়ে তিন বছর পার হয়ে গেলেও সেলেনা আক্তারের স্বামী হাসমত খান ও তার ভাই মোহাম্মদ আসলাম হোসেন বিমা দাবির টাকা পাননি বলে অভিযোগ করেছেন।
শুধু সেলেনা আক্তারই নন, এমন অনেক গ্রাহকের অর্থ পরিশোধ করতে পারছে না বেসরকারি বিমা প্রতিষ্ঠানটি। জীবনবিমা পলিসির মেয়াদ শেষ হলেও গ্রাহকের টাকা দিতে পারছে না কোম্পানিটি।
একাধিক গ্রাহকের ভাষ্য, সানলাইফ কোম্পানি থেকে গ্রাহকদের ব্যাংক চেক ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। গ্রাহক সেই নির্ধারিত ব্যাংকে চেক জমা দিলে তাকে জানানো হচ্ছে অ্যাকাউন্টে টাকা নেই।
সেলেনার ভাই মোহাম্মদ আসলাম হোসেন জানান, একাধিকবার সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে যোগাযোগ করলে বারবার টাকা ফেরতের আশ্বাস দেয়া হয়।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সানলাইফ থেকে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের একটি চেক দিয়েছে, তবে ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে এখনও টাকা আসেনি। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে টাকা দেয়ার নামে আমাকে ঘোরাচ্ছে।’
আসলাম আরও বলেন, ‘আমার বোন নিয়মিত কোম্পানিতে পলিসির টাকা পরিশোধ করেছেন, তবে কোম্পানিটি আমার বোনের বিমা করার অর্থ পরিশোধ করছেন না।’
আইডিআরএর ২০২০ সালের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, করোনাভাইরাসের প্রভাবে সৃষ্ট অর্থসংকটে থাকা বিমা গ্রাহকদের সহযোগিতা করার স্বার্থে মেয়াদোত্তীর্ণ পলিসিগুলোর বিপরীতে প্রাপ্য দাবি ৯০ দিনের পরিবর্তে ৩০ দিনের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে গ্রাহকের আবেদনের জন্য অপেক্ষা করা যাবে না। তথ্যভান্ডার থেকে মেয়াদোত্তীর্ণের তালিকা নিয়ে বিমা গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে কোম্পানিগুলোকেই। এরপর কোম্পানিগুলোকে অনলাইনে গ্রাহকের ব্যাংকে বিমা দাবির টাকা পরিশোধের ব্যবস্থা করতে হবে।
আইডিআরএর জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কোনো গ্রাহকের মৃত্যু হলে ৯০ দিনের মধ্যে বিমা কোম্পানিকে টাকা পরিশোধ করতে হবে, তবে সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স এ নিয়ম অনুসরণ করছে না।
‘কোম্পানিটির অবস্থাও ভালো নয়। সানলাইফের গ্রাহকরা হন্যে হয়ে টাকার জন্য ঘুরছেন।’
বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষে (আইডিআরএ) প্রায় ৬ হাজার গ্রাহকের অভিযোগ জমা পড়েছে সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির নামে।
আইডিআরএর কর্মকর্তারা জানান, ছয় হাজার অভিযোগের সংখ্যা প্রকৃত চিত্র নয়। এর চেয়ে অনেক বেশি অভিযোগ রয়েছে, যা আইডিআরএ পর্যন্ত আসে না। কারণ অনেক গ্রাহক আইডিআরএ সম্পর্কে অবহিত নন। ফলে এ সংখ্যা আরও অনেক বেশি।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও ইন্স্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল মাহমুদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সবার আগে গ্রাহকের স্বার্থের দিকে নজর দিতে হবে। গ্রাহক যাতে বিমার টাকা নিয়ে কোনো রকমের সমস্যার মধ্যে না পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। ফলে আইন মোতাবেক আইডিআরএর উচিত এ কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা।’
এ বিষয়ে সানলাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ নুরুল ইসলামকে মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেয়া হয়। এরপর মোবাইল নম্বর ও হোয়াটসঅ্যাপে খুদেবার্তা দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
অতিরিক্ত ব্যয়
গ্রাহক হয়রানির অনুসন্ধান করা আইডিআরএর তদন্ত দল মনে করে, কোম্পানিটি নির্ধারিত সীমার চেয়ে বেশি ব্যয় করায় গ্রাহকদের পাওনা টাকা পরিশোধ করতে পারেনি। তদন্ত প্রতিবেদনে দেয়া পর্যালোচনায় তারা দেখিয়েছে, ২০১০ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রায় ১৮৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকা অতিরিক্ত ব্যয় করেছে সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি। অর্থাৎ আইন অনুসারে কোম্পানিটি ব্যবসা পরিচালনায় যে ব্যয় করতে পারে, তার চেয়ে বেশি ব্যয় করেছে। অতিরিক্ত ব্যয় করা এসব টাকার ৯০ শতাংশই বিমা গ্রাহকের জমাকৃত টাকা।
লাইফ ফান্ড বিনিয়োগে বিধি লঙ্ঘন
সানলাইফ ইন্স্যুরেন্সের লাইফ ফান্ড পর্যালোচনা করে তদন্ত দল জানিয়েছে, ২০১৯ সাল পর্যন্ত নিরীক্ষিত হিসাব অনুসারে কোম্পানিটির লাইফ ফান্ড ১৯২ কোটি ১৫ লাখ টাকা। প্রবিধানমালা অনুসারে ১৫ শতাংশ সরকারি বন্ডে বিনিয়োগের পরিমাণ হবে প্রায় ২৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা, কিন্তু কোম্পানিটি সরকারি বন্ডে বিনিয়োগ করেছে ৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ লাইফ ফান্ডের ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ বিনিয়োগ করা হয়েছে সরকারি বন্ডে।
বিমা আইন লঙ্ঘন করে ব্যবসা
সানলাইফ ইন্স্যুরেন্সের তদন্ত প্রতিবেদনে কর্তৃপক্ষের তদন্ত দল জানিয়েছে, সার্বিক বিষয়ে বিচার বিশ্লেষণ, তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই করে এবং যথাসম্ভব কিছু কিছু জায়গা পরিদর্শন, প্রাপ্ত তথ্য ও প্রমাণ ইত্যাদি থেকে স্পষ্টত বোঝা যায়, কোম্পানির সাংগঠনিক দুর্বলতা এবং বিমা আইন ২০১০ সালের বিধান মতে কার্যক্রম পরিচালনা না করার ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন:বিমা খাতের উন্নয়ন ও প্রসারে আইডিআরএ ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) সদস্য (লাইফ) কামরুল হাসান।
শনিবার রাজধানীর কাকরাইলে আইডিইবি ভবনে আয়োজিত জেনিথ ইসলাম লাইফ ইন্স্যুরেন্সের অর্ধ-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিমা কোম্পানিটির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরিদুন্নাহার লাইলী।
বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সদস্য (লাইফ) কামরুল হাসান বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে দেশের বিমা খাতকে কার্যকর ও দক্ষ পরিচালনার মাধ্যমে বিমা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সহায়ক ও সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, বিমার আওতা বৃদ্ধি, সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং বিমা গ্রাহকদের স্বার্থ সংরক্ষণ করার মাধ্যমে সার্বিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক কল্যাণ নিশ্চিত করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিমা খাতের উন্নয়ন ও প্রসারের লক্ষ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিমা কোম্পানিতে যোগদানের তারিখকে স্মরণীয় করে রাখতে ১ মার্চকে জাতীয় বিমা দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে বিমা মেলার আয়োজন করা হচ্ছে।
‘বিভিন্ন আইন, বিধি-বিধান ও নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে কোম্পানিগুলোকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। কর্তৃপক্ষের কঠোর মনিটরিংয়ের ফলে পূর্বের যেকোনো সময়ের চেয়ে বিমা দাবি পরিশোধের পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। দ্রুত ও নির্ভুল সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ইউনিফায়েড মেসেজিং প্লাটফরম-ইউএমপি চালু করা হয়েছে।’
সম্মেলনে উপস্থিত বিমা কর্মীদের উদ্দেশে কামরুল হাসান বলেন, ‘আপনারা সকলেই জানেন জীবনবিমা একটি গুরুত্বপূর্ণ সেবা; যা সমাজের অর্থনৈতিক সুরক্ষা প্রদান করে থাকে। এটি মানুষের জীবনের জন্য একটি বিশ্বাসযোগ্য সম্পদ। আপনারা জনমানুষের পাশে থেকে তাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য শ্রম দিয়ে থাকেন।
‘আপনাদের কাজের মাধ্যমে পরিকল্পনা করা হয় যেন মানুষের পরিবার সুরক্ষিত থাকে এবং তাদের অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়। জীবনবিমা কর্মীরা পেশাদারিত্ব ও দায়িত্বপূর্ণ কাজের কারণে তাদের যোগ্যতা দিয়ে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ কোম্পানিগুলোতে কাজ করছে। আপনাদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ অত্যন্ত সৌভাগ্যের।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা এ অর্ধ-বার্ষিক সম্মেলনে এসেছেন, আপনাদের মনে রাখতে হবে আপনাদের প্রতিষ্ঠান তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণে আপনাদের ওপর ভরসা করেছেন এবং আপনাদের দ্বারা প্রদানকৃত সেবার মাধ্যমে লাখ লাখ মানুষের জীবন এবং পরিবারের সুরক্ষা নিশ্চিত করেছেন। তাই আপনাদের সর্বদা উন্নত ও দ্রুত গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করতে হবে। সর্বদা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গের কাজ করে গ্রাহকের আস্থা অর্জন করতে হবে।’
আইডিআরএ সদস্য কামরুল হাসান বলেন, ‘চতুর্থ প্রজন্মের জীবনবিমা কোম্পানি হিসেবে জেনিথ ইসলামী লাইফ নিয়মিত দাবি পরিশোধ করে আসছে। আমি জেনেছি আপনারা বিভিন্ন প্রকার বিমা দাবি বাবদ প্রায় ১৮ কোটি টাকা পরিশোধ করেছেন; যা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক ও আনন্দদায়ক। আপনাদের লাইফ ফান্ডও ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। তবে লাইফ ফান্ড আরও বৃদ্ধি করতে হবে। যাতে মেয়াদান্তে আকর্ষণীয় মুনাফাসহ গ্রাহকের টাকা ফেরত প্রদান করা যায়। এ লক্ষ্যে আপনাদের নবায়ন আদায় হার ৭০ শতাংশে উন্নীত করতে হবে।’
জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান, সাবেক সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরিদুন্নাহার লাইলী বলেন, ‘জনসাধারণের জন্য বিমার কোনো বিকল্প নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে তার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে উন্নয়নের মহীসোপানে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে সকলের জন্য তখন বিমা প্রয়োজনীয়তা অনুভব হচ্ছে।’
জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান ফরিদুন্নাহার লাইলী বলেন, ‘বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কঠোর মনিটরিংয়ের ফলে গ্রাহক ভোগান্তি আগের চেয়ে বহুলাংশে হ্রাস পেয়েছে। কোম্পানিগুলো এখন নিয়মিত দাবি পরিশোধ করছে। ফলে বিমার প্রতি গ্রাহক আস্থা আগের চেয়ে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দেশে ৩৫টি জীবনবিমা কোম্পানি কাজ করছে। এর মধ্যে যারা সর্বোত্তম সেবা দিতে পারবে তারাই এগিয়ে যাবে। সর্বদা গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করতে হবে। ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করে আমরা দ্রুত গ্রাহক সেবা নিশ্চিত এবং দ্রুত বিমা দাবি পরিশোধ করে ইতোমধ্যেই গ্রাহকের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছি।’
বেকারত্ব বিমোচনে বিমার গুরুত্ব অপরিসীম উল্লেখ করে জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম নুরুজ্জামান বলেন, ‘মানুষের কল্যাণের জন্য আমরা কাজ করছি। এতিম ও বিধবাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমরা কাজ করছি।’
বিমা কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মিথ্যা কথা বলে বা প্রতারণা করে কোনো বিমা পলিসি বিক্রি করবেন না। বিমা পলিসি চালাতে পারবে না বা নবায়ন আসবে না, এমন কাউকে বিমা পলিসি করাবেন না। মনে রাখবেন-একটি ভালো পলিসি আপনাকে নতুন আরেকটি পলিসি সংগ্রহে সহায়তা করবে।’
জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম নুরুজ্জামান বলেন, ‘আপনারা জেনে খুশি হবেন যে, আমরা জেনিথ ইসলামী লাইফ এ পর্যন্ত ১৮ কোটি ২০ লাখ ১৯ হাজার ৩৩১ টাকা বিমা দাবি পরিশোধ করেছি। বর্তমানে আমাদের হাতে কোনো বিমা দাবি পেন্ডিং নেই। আমাদের কোম্পানির প্রায় ৩০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। বর্তমানে আমাদের লাইফ ফান্ড দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি ২৪ লাখ টাকা।
‘আমরা এখন পর্যন্ত ১৮০টি মৃত্যুদাবি বাবদ ৩ কোটি ৬ লাখ টাকা, ৩ হাজার ৫৪৫টি এসবি বাবদ ১৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা, ৭৭৮টি স্বাস্থ্য বীমা বাবদ ৭১ লাখ ১২ হাজার টাকা, ম্যাচিউরিটির ২৭টি বীমা দাবি বাবদ ৫৮ লাখ টাকা এবং ১৪৪টি সারেন্ডারে ৩৭ লাখ টাকা পরিশোধ করেছি। এ ছাড়াও ৪১টি পলিসি লোন দেয়া হয়েছে, যার পরিমাণ ২১ লাখ টাকা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কোম্পানির ৯০ শতাংশ কার্যক্রম ইআরপি সল্যুশনের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। আমাদের কার্যক্রমের ৯৯ শতাংশই পেপারলেস করার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে। বিমা আইনে ৯০ দিন থাকলেও আমরা সাত কর্মদিবসের মধ্যে বিমা দাবি পরিশোধ করতে সক্ষম হয়েছি।’
জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম নুরুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের সক্ষমতা আছে বলেই বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫ হাজার শিক্ষার্থীর গ্রুপ জীবন ও স্বাস্থ্য বীমা সেবা দিয়ে আসছি। ইতোমধ্যে ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকার প্লেসমেন্ট শেয়ার বিক্রি হয়েছে, যার মধ্যে মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি অন্যতম।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য