পবিত্র রমজান মাসকে কেন্দ্র করে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ব্যবসায়ীরা চড়ামূল্যে ফল বিক্রি করছেন। এর মধ্যে যুক্ত হয়েছে লকডাউন। এ কারণে ফলের সরবরাহও কম। অনেকটা বাধ্য হয়েই আগুনদামে ফল কিনছেন ক্রেতারা।
রমজান উপলক্ষে যেসব ফল বেশি বিক্রি হয় মূলত সেসব ফলের দামই চড়া। বিদেশি ফল আপেল, আঙুর তো বটেই বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে পেয়ারা, আনারস, তরমুজ, পেপের মতো দেশি ফলও। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর খেজুরের দাম অনেকটা কম।
কৃষি বিপণন আইন অনুযায়ী ফলের ক্ষেত্রে কেজিতে ১০ টাকা লাভ করতে পারবেন এমন বিধান রয়েছে। তবে তরমুজের ক্ষেত্রে বিশেষ নির্দেশনা আছে। কেজিপ্রতি ৩ থেকে ৫ টাকার বেশি লাভ করতে পারবেন না। আর কেজি বা পিস যেভাবেই কিনবে সেভাবে বেচতে হবে। কিন্তু ফলের বাজারে এ আইনের প্রয়োগ নেই বললেই চলে।
মধ্য বাড্ডার ফল বিক্রেতা মো. জাহিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রোজা শুরুর পরই বেড়েছে ফলের দাম। রমজানের আগে ১৪-১৫ কেজির পার কার্টন মাল্টার ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা। সোমবার মাল্টার দাম ছিল ১৯০০ টাকা কার্টন। আজ (মঙ্গলবার) কার্টুন কিনলাম ২১০০ টাকায়।’
সবুজ রঙের আপেলের দাম আরও চড়া। রোজা শুরুর আগে প্রতি ১৮ কেজির কার্টনের দাম ছিল ২৬০০ থেকে ২৭০০ টাকা। এখন দাম ঠেকেছে ৩২০০ টাকায়।
রমজানের আগে সবুজ আঙুরের কেজি ছিল ১৭০ টাকা। বর্তমানে পাইকারি কেনা পড়ে ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা, খুচরা পর্যায়ে দাম দাঁড়ায় ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা।
১২ মাসি ফল কলার দামও বেড়েছে, হালিতে ৫ থেকে ১০ টাকা।
কলা বিক্রেতা সামসুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, রোজার আগে সবরি কলা কেনা পড়ত ২৫ টাকায়, এখন কেনা পড়ে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। সাগর কলার কেনা পড়ত ২৮ থেকে ৩০ টাকা বর্তমান কিনতে হয় ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা। আগে চাপা কলা ৮ থেকে ১০ টাকা হালি কিনতাম রোজায় দাম বেড়ে হয়েছে ১৬ থেকে ১৭ টাকা।
মধ্য বাড্ডা লিংক রোডের একটি দোকানে ফল কিনতে আসা সোহান মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রমজানের কারণে অনেকটা বিপদে পড়েই এই বাড়তি দাম দিয়ে ফল কিনতে হয়। আমরা নিরুপায়। খাওয়া লাগবে। অন্যা দেশে রমজানে সবকিছুর দাম কমে, আর আমাদের দেশে বাড়ে। এসব ছোটখাটো ব্যবসায়ীকে দোষ দিয়ে লাভ নাই। রাঘব বোয়ালদের কাজ হচ্ছে দাম বাড়ানো।
তরমুজের সিজন শেষের দিকে। তীব্র গরম আর রোজা মিলে গ্রীষ্মকালীন এই ফলের দাম আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তরমুজ বিক্রেতা মো. রফিক বলেন, ‘রমজানের পূর্বে তরমুজের কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় কিনতাম, বিক্রি করতাম ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। আজকে ৫০ থেকে ৫২ টাকা করে তরমুজ কিনেছি। বিক্রি করছি ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি। রমজানের আগের দিন পেপের কেজিও ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। বর্তমানে পাইকারি কিনে আনি ১২০ টাকা; বিক্রি করি ১৪০ থেক ১৫০ টাকা কেজি।’
তরমুজের দাম বাড়ার কারণ উল্লেখ করে এই ফল বিক্রেতা জানান, এখন প্রতিদিন দাম বাড়তেই আছে কমছে না। দাম বাড়ার কারণ হচ্ছে কিছু কিছু পণ্যের আমদানি কম। আবার কিছু কিছু পণ্যের বেলায় রাস্তায় অতিরিক্ত টোল দিতে হয়। এ ছাড়া, দুই-তিন দিন হলো তরমুজের পরিমাণ কমে গেছে। বরিশাল ও ভোলার তরমুজ কমে গেছে। আছে খুলনা ও নাটোরের কিছু তরমুজ। সব মিলিয়ে তরমুজের দাম বেশি।
ধানমন্ডিতে মো. আসাদুজ্জামান ভ্যানে করে ফল বিক্রি করেন। তার অভিযোগ ফল বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয় তাই দাম বেশি। তাই আগের মতো ক্রেতাও পাচ্ছেন না।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘বেল ৬০ টাকা কিনে ৭০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি করি। বাঙ্গি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কিনে ৫০ টাকার ওপরে যা বিক্রি করতে পারি। ছোট আনারস ২২ টাকা কিনে ২৫ থেকে ৩০ টাকা বিক্রি করি। রমজানের আগে পেয়ারার পাইকারি মূল্য ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। বিক্রি করতাম ৫০ থেকে ৬০ টাকা। এখন পাইকারি কিনি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা করে। বিক্রি করি ৭০ থেকে ৮০ টাকায়।’
এই ফল বিক্রেতা জানান, লকডাউন আর রোজা মিলিয়ে দাম বাড়ছে। কিন্তু বিক্রি তেমন নাই। লকডাউনে সবার হাতের অবস্থা খারাপ।
সব ফলের দাম বাড়লেও খেজুরের দাম কমেছে এবার। বিক্রেতারা বলছে আমদানি ভালো। তাই হয়তো দাম কম।
মোহাম্মদপুরের ফল বিক্রেতা ইলিয়াস মোল্লা বলেন, অন্য ফলের দাম বাড়লেও গত বছরের তুলনায় এ বছর খেজুরের দাম অনেক কম। রমজানের আগেও যেমন ছিল, এখনও তেমনি আছে।
‘গত বছর মিডিয়াম আজোয়া খেজুর বিক্রি করছি সাড়ে ১১শ টাকা। এ বছর ভালোটাই বিক্রি করি ৬৫০ টাকা। গত বছর মরিয়াম রয়্যাল খেজুর বিক্রি করেছি ৮০০ টাকা এখন বিক্রি করি ৬৫০ টাকা। এ ছাড়া, বাকি সকল খেজুরের দাম অনেক কম। একমাত্র খেজুরের দাম কম বাকি সব ফলের দাম বাড়তি।’
বাজারে কমলা না থাকায় মাল্টার ওপরে চাহিদা বেড়েছে। করোনার কারণে অন্যান্য ফলের তুলনায় ভিটামিন সি জাতীয় ফলের চাহিদা একটু বেশি। তবে দাম সহনীয় আছে বলে দাবি রামপুরার ফল বিক্রেতা মেহেদি হাসানের।
তিনি বলেন, ‘গত রমজানে মাল্টার কেজি ছিল ২০০ থেকে ২২০ টাকা। সে তুলনায় এ বছর মাল্টার দাম কম আছে। আমরা বিক্রি করি ১৬০ টাকা। কমলা না থাকার কারণে মাল্টার দাম বাড়ার কথা থাকলেও এখনও গত বছরের মতো বাড়ে নাই। করোনার কারণে ক্রেতাও কম।’
এই ফল বিক্রেতার দাবি, করোনার কারণে চলমান লকডাউনে শ্রমিক শ্রেণির লোকেরা ফল কেনার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলেছে। চলমান পরিস্থিতিতে অনেক চাকরিজীবীও এখন ফল কিনছে না।
খুচরা ফল বিক্রেতাদের অভিযোগ বেশি দামে বিক্রি করছে পাইকাররা। তাই তাদের থেকে বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করা লাগে।
খুচরা ফল বিক্রেতাদের এমন অভিযোগের উত্তর দিয়েছেন রাজধানীর বাদামতলীর পাইকারি ফোনের দোকান ওবাইদুল এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. আওলাদ হোসেন।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, লকডাউনের কারণে মাল কম আসছে। এই কারণে মালের দাম বাড়তি। এ ছাড়া, রমজানের কারণে ফলের ওপরে প্রভাব পড়ে। ইন্ডিয়ায় মাল্টাসহ তেমন কোনো ফলেরই সিজন না এখন। এখন যে মাল্টা আছে বাজারে এটা মিশরের মাল্টা। আপেল চায়না, সাউথ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া থেকে আসতেছে।’
পাইকাররা সিন্ডিকেট করে ফলের দাম বাড়ান-এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে আওলাদ বলেন, ‘কিছুটা তো আছেই। অনেকে মাল স্টক করে রাখে। মাল স্টক করে রাখলে তো মালের দাম বাড়বেই। তবে সবাই এক না।’
ঈদুল আজহা উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই উৎসব ত্যাগ, উদারতা ও ঐক্যের চেতনায় মানুষকে একত্রিত করে—এমন অভিন্ন বার্তা উঠে এসেছে দুই নেতার শুভেচ্ছাবার্তায়।
গতকাল রোবরার অন্তর্বর্তী সরকারের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে উভয় নেতার শুভেচ্ছাবার্তা প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত শুক্রবার ( ৬ জুন) মোদিকে পাঠানো চিঠিতে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়ার এই চেতনা আমাদের দুই জাতিকে জনগণের কল্যাণে একসঙ্গে কাজ করতে অনুপ্রাণিত করবে বলে আমি আত্মবিশ্বাসী।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঈদুল আজহা হচ্ছে এমন একটি সময়, যা মানুষকে আত্মবিশ্লেষণের সুযোগ দেয় এবং বৃহত্তর মানবিকতার জন্য একসঙ্গে কাজ করতে অনুপ্রাণিত করে।’
প্রধানমন্ত্রী মোদির চিন্তাশীল বার্তা, আন্তরিক শুভেচ্ছা এবং ঈদের অভিনন্দন তাকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছে বলে মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা।
চিঠিতে তিনি আরও লেখেন, ‘আমি আপনাকে ও আপনার মাধ্যমে ভারতের জনগণকে এই পবিত্র উপলক্ষে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাতে চাই।’
এ ছাড়াও, মোদির সুস্বাস্থ্য ও সুখ এবং ভারতের জনগণের জন্য শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন অধ্যাপক ইউনূস।
এর আগে, ৪ জুন বাংলাদেশের জনগণ ও অধ্যাপক ইউনুসকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানান নরেন্দ্র মোদি।
তিনি বলেন, ‘এই পবিত্র উৎসব ভারতের সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। দেশব্যাপী ইসলাম ধর্মাবলম্বী কোটি কোটি মানুষের মধ্যে বিপুল আনন্দ ও উৎসাহের সঙ্গে এই উৎসব উদযাপিত হয়।’
শুভেচ্ছাবার্তায় তিনি আরও বলেন, ‘এটি আমাদের ত্যাগ, সহানুভূতি ও ভ্রাতৃত্বের চিরন্তন মূল্যবোধের কথা মনে করিয়ে দেয়, যেটি একটি শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বিশ্ব গঠনের জন্য অত্যন্ত জরুরি।’
এ ছাড়া, বার্তায় তিনি অধ্যাপক ইউনূসের সুস্বাস্থ্য ও মঙ্গল কামনাও করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পারিবারিক কলহ ও কোরবানির মাংস কাটাকাটি নিয়ে বাগবিতাণ্ডার জেরে বড় ভাই দুলাল মিয়াকে (৫০) হত্যার অভিযোগ উঠেছে দুই ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে।
রবিবার (৮ জুন) জেলার বিজয়নগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত দুলাল মিয়া উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের পুইতারা উত্তরহাটি এলাকার মৃত ওমর আলীর ছেলে।
নিহতের পরিবারের অভিযোগ, কোরবানির মাংস কাটার সময় মাংসের আকার ছোট বড় করা নিয়ে দুলাল মিয়ার সঙ্গে তার ভাইদের তর্ক বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে রুবেল ও আলমগীর দুলাল মিয়াকে মারধর করেন।
মারধরের এক পর্যায় দুলাল মিয়ার মুখে বিষ ঢেলে দেন তার ভাইয়েরা। পরে তাকে মুমূর্ষ অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
এ বিষয়ে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহীদুল ইসলাম বলে, ‘এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা ঘটনাটির তদন্ত চলছে। ঘটনার পর থেকে দুই ভাই রুবেল ও আলমগীর পলাতক রয়েছেন।’
পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
খুলনা নগরীতে ট্রাক ও ইজিবাইকের মুখোমখি সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আর চারজন।
সোমবার (৯ জুন) সকাল ৬টার দিকে নগরীর খানজাহান আলী সেতুর (রূপসা সেতু) পশ্চিম প্রান্তে দারোগার লীজ নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন— ইজিবাইক চালক রফিকুল ইসলাম (৫৬) ও যাত্রী তানজিল (১২)।
লবণচরা থানার লবনচরা ক্যাম্প ইনচার্জ (আইসি) উপপরিদর্শক মো. আব্দুর রহিম জানান, সোমবার ভোরে চাঁদপুর থেকে কয়েকজন খুলনায় আত্মীয়ের বাড়ি গিয়েছিলেন। বাস থেকে নেমে তারা ইজিবাইকে করে রং সাইডে যাচ্ছিলেন। এ সময় বিপরীত দিক থেকে বাগেরহাট থেকে আসা একটি ট্রাক তাদের ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই ইজিবাইক চালক রফিকুল ও যাত্রী তানজিল নিহত হন। আহত হন আরও চার যাত্রী।
আহতদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাছাড়া, নিহতদের লাশ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে বলে জানান আব্দুর রহিম।
চার দিনের সরকারি সফরে আজ সোমবার যুক্তরাজ্য সফরে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সফরকালে বাকিংহাম প্যালেসে ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা রাজা চার্লসের হাত থেকে গ্রহণ করবেন ‘কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’।
এছাড়া বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। তিনি যুক্তরাজ্যের নীতিগবেষণা প্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউস আয়োজিত এক সংলাপে অংশ নেবেন।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে জানিয়েছে, তাঁর এ সফরে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে যুক্তরাজ্যের সমর্থনের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাবে। এর পাশাপাশি পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়টিতে প্রাধান্য দেবে বাংলাদেশ।
আগামী ১৪ জুন প্রধান উপদেষ্টার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
রোববার গভীর রাতে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পুরুলিয়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে সোহান মোল্যা (২৬) নামে এক শিক্ষার্থীরা বাড়ি থেকে উন্নত মানের স্নাইপার নাইট্রো রাইফেল উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। সোহান মোল্যা ওই গ্রামের আবুল কালাম মোল্যার ছেলে। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়,সে খুলনার একটি কলেজে লেখাপড়া করে।
সেনাবাহিনী জানায়,টেলিস্কোপিক সাইট ও সাইলেন্সার যুক্ত ৪.৫ ক্যালিবারের স্নাইপার নাইট্রো রাইফেলটি দিয়ে অবৈধভাবে ব্যবহার করে স্থানীয় বাসিন্দাদের হুমকীর মুখে ফেলছিল অভিযুক্ত সোহান মোল্যা। সূত্র আরো জানায় গোয়েন্দা তৎপরতা এবং পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে নড়াইল ও কালিয়ার সেনাক্যাম্প যৌথভাবে রোবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে ভোররাত ৪টা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে।
জানাযায়,সেনা সদস্যরা প্রথমে আবুল কালাম মোল্যার বাড়িটি ঘিরে ফেলে। চিরুনি তল্লাশি চালিয়ে সোহান মোল্যার বিছানার নিচে গোপনে রাখা রাইফেলটি উদ্ধার করা হয়। অভিযানের খবর পেয়ে আগেই পালিয়ে যান সোহান ও তার বাবা।পরে উদ্ধারকৃত রাইফেলটি কালিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বিণয়টি আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে থানা পুলিশ জানান।
এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এলাকাটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন বলে জানা যায়। সন্তাস দমন এবং অস্ত্রচক্র নির্মূলে এ ধরণের যৌথ অভিযান আগামিতেও চলমান থাকবে বলে সেনাবাহিনী আশাবাদব্যক্ত করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দেশের মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পের বিকাশে খুবই আন্তরিক।
এ খাতের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের পাশাপাশি টেকসই শিল্পায়ন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রসারে বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড (বিএবি) ও সংশ্লিষ্ট সকলকে ইতিবাচক ভূমিকা অব্যাহত রাখার জন্য তিনি আহ্বান জানান।
আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ‘বিশ্ব অ্যাক্রেডিটেশন দিবস’ উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব অ্যাক্রেডিটেশন দিবস-২০২৫’ উদ্যাপন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষ্যে আমি বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড (বিএবি) এর সকল অংশীজন এবং সহযোগী সংস্থাকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘অ্যাক্রেডিটেশন : ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের ক্ষমতায়ন (এসএমই)’, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।’
ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা বিশ্ব অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের মোট দেশজ উৎপাদনের একটি বৃহৎ অংশ এসএমই খাত থেকে আসে। নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও এ খাতের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এসএমই খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিনিয়ত আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা, ক্রেতা ও ভোক্তার পরিবর্তনশীল চাহিদা এবং আর্থিক সীমাবদ্ধতার মতো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। এ সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে প্রয়োজন সম্মিলিত বৈশ্বিক উদ্যোগ।’
তিনি বলেন, ‘অ্যাক্রেডিটেশন ব্যবস্থা জাতীয় গুণগতমান অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে পণ্য ও সেবার সরবরাহ ব্যবস্থার সকল পর্যায়ে গুণগতমান নিশ্চিতকরণ, দক্ষ কারিগরি জনবল সৃষ্টি, বাণিজ্যে কারিগরি বাধা অপসারণ এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি করে এ সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিএবি এ লক্ষ্যে কাজ করে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন ল্যাবরেটরি, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সনদ প্রদানকারী সংস্থা এবং পরিদর্শন সংস্থাসহ মোট ১৫৫টি সরকারি, বেসরকারি এবং বহুজাতিক সংস্থাকে আন্তর্জাতিক মান অনুসারে অ্যাক্রেডিটেশন সনদ প্রদান করেছে।’
মাদক মুক্ত সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ও এক সময়ের জনপ্রিয় খেলা হা-ডু-ডু খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ রোববার (৮ জুন) বিকেলে উপজেলার রাধাকানাই ইউনিয়নের খালইপুড়া দাখিল মাদরাসা মাঠে সূর্য তরুণ যুব সংঘের বর্ণাঢ্য আয়োজনে বিলুপ্তপ্রায় এ খেলাটি অনুষ্ঠিত হয়।
খোরশেদ আলম আকন্দ এর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মোমেনশাহী ল কলেজের সভাপতি ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক এড. রেজাউল করিম চৌধুরী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, গ্রামগঞ্জের একসময়কার জনপ্রিয় পুরনো এ খেলাটি গ্রামের কাঁচা রাস্তায়, মাঠ, বাগানে বা খোলা স্থানে জমজমাট ও উৎসবমুখর পরিবেশে হতো। কালের বিবর্তনে এই খেলা এখন আর আগের মতো দেখা যায় না। তাই জনপ্রিয় এ খেলাটি টিকিয়ে রাখা এবং নতুন প্রজন্মকে খেলাধূলায় উজ্জীবিত করায় তিনি সূর্য তরুণ যুব সংঘকে অভিনন্দন জানান।
এ খেলায় ঢাকা একাদশকে হারিয়ে গ্রাম একাদশ বিজয় লাভ করেন। পরে বিজয়ীদলকে পুরস্কার হিসেবে একটি খাসি উপহার দেওয়া হয়। এসময় অন্যান্যদের মাঝে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষক সমিতি ফুলবাড়িয়া শাখার সদস্য সচিব মোখলেছুর রহমান বিএসসি, এডভোকেট মো. জসিম উদ্দিন, ডা. রফিকুল ইসলাম, মো. আবুল কালাম প্রমুখ।
নাগরিক জীবনের ব্যস্ততায় হারিয়ে যাওয়া এই ঐতিহ্যবাহী খেলাটি উপভোগ করতে খালইপুড়া দাখিল মাদরাসা মাঠে বিপুলসংখ্যক দর্শক ও ক্রীড়া প্রেমী জড়ো হয়।
মন্তব্য