× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

অর্থ-বাণিজ্য
জীবনধারণে কঠিন বাস্তবতা
google_news print-icon

জীবনধারণে কঠিন বাস্তবতা

জীবনধারণে-কঠিন-বাস্তবতা
কঠোর লকডাউন শুরুর আগে স্রোতের মতো রাজধানী ছাড়ছে মানুষ। মাওয়া ফেরিঘাটে ট্রলারে চড়ে নদী পার হচ্ছে মানুষ। ছবি: সাইফুল ইসলাম
আয় কমছে, চাকরি নেই, বাড়ছে পণ্যমূল্য। করোনাকালে চিকিৎসা আর বাড়তি যাতায়াত ব্যয় মেটাতে গিয়ে নাভিশ্বাস মানুষের। রাজধানী ছেড়ে বাড়ির পথ ধরেছেন বহুজন। কিন্তু এভাবে কত দিন?

রাজধানীর একটি বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করেন আব্দুল আলিম। মাসিক বেতন এবং প্রাইভেট পড়িয়ে মাসে সব মিলিয়ে আয় ছিল ২০ হাজার টাকার মতো।

তবে এক বছরের বেশি সময় স্কুল বন্ধ থাকায় ঠিকমতো বেতন হচ্ছে না। এত দিন প্রাইভেট পড়ানোর ওপর নির্ভর করে কোনো রকমে বাসা ভাড়া দিয়ে টিকে থাকলেও এখন আর সেই সুযোগ নেই। সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় প্রাইভেট পড়ানোও বন্ধ। এখন ছাড়তে হবে প্রিয় এই শহর।

কঠিন এমন বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আলিম বলেন, ‘ভাড়ার ৮ হাজার টাকা পরিশোধ করে বাসা ছেড়ে দিয়েছি। আগামী মে মাসে গ্রামের বাড়িতে চলে যাব। সবকিছু স্বাভাবিক হলে হয়তো আবার ফিরে আসা হবে। তবে সেই আসা কবে তা জানি না।’

করোনার প্রথম ঢেউ শেষে অর্থনীতি যখন স্বাভাবিক হওয়ার অবস্থায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার তারিখও ঘোষণা হয়েছে, সেই সময় করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আঘাত।

লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা, মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে- এই অবস্থায় ৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয় লকডাউন। ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর লকডাউনে বন্ধ হয়ে যায় জরুরি সেবা ছাড়া সব প্রতিষ্ঠান। যদিও বিশেষ বিবেচনায় খুলে দেয়া হয়েছে বিপণিবিতান।

তবে স্কুল-কলেজ খুলছে না সহসা, এটা অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গেছে। ফলে আব্দুল আলিমদের সহজে ঢাকায় ফেরা হচ্ছে না-এটা বলাই যায়।

জীবনধারণে কঠিন বাস্তবতা

দীর্ঘদিন দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। ছবি: নিউজবাংলা

তার মতো বহু মানুষের কাজ না থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে আয়ের পথ। কিন্তু মূল্যস্ফীতি বাড়ায় হিমশিম অবস্থা। নিম্ন, নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণির একটি বড় অংশই এখন কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি।

নিম্ন আয়ের মধ্যে যারা গণপরিবহন খাতে কাজ করেন, তাদের আয় বন্ধ পুরোপুরি। পর্যটন খাতও বন্ধ। দেশের বড় দুটি পেশাজীবী গোষ্ঠীর তাদের আয়ের কোনো সুযোগই নেই।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার বা পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শহরে দরিদ্র্যদের সংকট সবচেয়ে বেশি। মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, কিন্তু আয় নেই। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের কর্মসংস্থান সংকুচিত হয়েছে। ফলে বড় সংখ্যাক মানুষের বেঁচে থাকাই এখন কষ্টদায়ক।’

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান মনে করেন, নিম্ন আয়ের মানুষদের সহায়তায় এগিয়ে আসতে হবে। এ ক্ষেত্রে অনিয়ম বন্ধ করে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা যাতে সহায়তা পায় সেই কর্মপন্থা দরকার।

রাজধানী ছেড়েছে মানুষ

মিরপুরের কাজীপাড়ায় বসবাস করতেন রোকন মাহমুদ। একটি কোচিং সেন্টার চাকরি, আর টিউশনি করে ভালোই চলত সংসার। গত বছরে করোনার কারণে সব বন্ধ হয়ে গেলেও বছরের শেষ দিকে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়। তখন আবার টিউশনি শুরু করেন তিনি। কিন্তু এখন তার কাজ পুরোটাই বন্ধ।

প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া দিতে হয়। এই পরিমাণ অর্থ উপার্জন করা প্রায় অসাধ্য হয়ে গেছে। তাই তিনিও পরিবার নিয়ে চলে যাচ্ছেন গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ।

রোকন বলেন, ‘কখনো ভাবিনি এই ঢাকা শহর ছেড়ে গ্রামে ফিরে যেতে হবে। গ্রামে থাকলে প্রতি মাসে বাড়িভাড়ার টাকা নিয়ে অন্তত দুশ্চিন্তা করতে হবে না। করোনা জীবনটারে একেবারে ওলটপালট করে দিয়েছে’।

স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে শেওড়াপাড়ায় বসবাস করা উজ্জ্বল কুমার একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। তিনি বলেন, ‘সরকারি নির্দেশমতো বর্তমানে অফিস বন্ধ। কোম্পানি লোকসানে থাকায় ফেব্রুয়ারি মাসে দেয়া হয় অর্ধেক বেতন। মার্চেও কমিয়ে বেতন দেয়া হয়। কিন্তু এই টাকায় বাড়িভাড়া দেয়ার পর পরিবার নিয়ে চলা অসম্ভব। সামনে অবস্থা কী হবে জানি না। তাই গ্রামের বাড়ি ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

এক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জরিপ তথ্য অনুযায়ী, গত বছর রাজধানী ঢাকা ছেড়ে চলে যায় অন্তত ১৬ শতাংশ দরিদ্র মানুষ। বাড়িভাড়া, চিকিৎসা খরচ, যোগাযোগের ব্যয় এবং অন্য নানামুখী ব্যয় মেটাতে না পেরেই এসব মানুষ ঢাকা ছেড়েছে।

এবারও প্রকৃত সংখ্যা নিরূপণ না হলেও শহর ছেড়ে চলে যাওয়া মানুষের সংখ্যা কম না সেটা বলাই যায়।

কাজের খোঁজে ভাসমান মানুষদের কী অবস্থা

কাজ চাই। ভোর থেকেই শহরের বিভিন্ন রাস্তায়, অলিগলিতে দরিদ্র মানুষদের আনাগোনা। তাদের একটাই চাওয়া, কাজ। কিন্তু এই সংক্রমণে চাহিদামতো কাজ নেই।

রাজধানীতে ভাসমান শ্রমিক হাটগুলোতে ক্রমেই বাড়ছে নতুন মুখ। এদের কেউ কাজ করতেন পোশাকশিল্পে, কেউবা পরিবহনে। সবারই পরিচয় এখন দিনমজুর।

আর নতুন ‘প্রতিদ্বন্দ্বীদের’ নিয়ে চিন্তার ভাঁজ, আগে থেকেই এই কাজে যুক্তদের। মহামারি নয়, জীবিকার সংকটেই আতঙ্কিত তারা। বেঁচে থাকার লড়াইয়ে বিধস্ত হয়ে পড়েছেন অনেকে।

৭-৮ বছর মানুষের বাসায় বাসায় পত্রিকা বিলি করে জীবন নির্বাহ করেন আব্দুল্লাহ। করোনার কারণে অনেক বাসায় এখন পত্রিকা নেয়া বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে সামান্য পত্রিকা বিলি করে যা আয় হয়, তা দিয়ে সংসার চলে না। তাই তিনি বিকল্পি আয়ের খোঁজে।

একে তো কাজের অভাব, তারপরে আবার বাজারে নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী। লকডাউনের মধ্যে কাজ জোটেনি, ঈদ পর্যন্ত টিকে থাকা নিয়েই সংশয়ে আছেন তিনি।

কঠোর নিয়ন্ত্রণের পর থেকেই প্রতিটি শ্রমিক হাটের অবস্থা বেশ শোচনীয়। দিনমজুরের উপস্থিতি থাকলেও কাজের দেখা নেই। সরকারি সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে, অনেকেরই নাম ঠিকানা সংগ্রহ করা হয়েছে। কিন্তু মেলেনি কিছুই।

বাড়ছে খাদ্য মূল্যস্ফীতি

পণ্য সরবরাহে বিঘ্নতা এবং বিশ্ববাজার থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে নানান জটিলতায় বাড়তির দিকে মূল্যস্ফীতি। অর্থাৎ কম টাকায় মানুষ যে তার প্রয়োজন মেটাবে সেই সুযোগও নেই।

বাংলাদেশ ব্যাংক এরই মধ্যে মূল্যস্ফীতির আশঙ্কার আভাস দিয়েছে। বলছে, করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।

বিবিএসর হালনাগাদ তথ্য বলছে, গেল মার্চ মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে (মাসওয়ারি) দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। ফেব্রুয়ারিতে যা ছিল ৫ দশমিক ৩২ শতাংশ।

জীবনধারণে কঠিন বাস্তবতা

লকডাউনের আগে রাজধানীর মাছের বাজারে চলছে বেচাকেনা। ছবিটি মোহাম্মদপুরের টাউন হল থেকে তোলা। ছবি: নিউজবাংলা

অর্থাৎ ২০২০ সালের মার্চ মাসে যে পণ্য বা সেবার জন্য ১০০ টাকা খরচ করতে হতো, চলতি বছরের মার্চে সেই পণ্য বা সেবার জন্য ১০৫ টাকা ৪৭ পয়সা খরচ করতে হয়েছে।

খাদ্য মূল্যস্ফীতি গেল কয়েক মাস ধরেই ঊর্ধ্বগতি। জানুয়ারি থেকে মার্চ এই তিন মাসে ক্রমান্বয়ে বাড়ছে এই সূচক। সামনে আরও বাড়ার শঙ্কা স্পষ্ট হচ্ছে।

মার্চে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৫১ শতাংশ। আর খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ। ফেব্রুয়ারিতে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৫ দশমিক ৪২ শতাংশ; জানুয়ারিতে যা ছিল ৫ দশমিক ২৩ শতাংশ।

ভোজ্যতেল, চিনিসহ আরও কয়েকটি পণ্যের চড়া দামের কারণে মার্চ মাসে দেশের মানুষকে এই বাড়তি খরচ করতে হয়েছে।

বাড়িভাড়া, চিকিৎসা, পরিবহনে বাড়তি ব্যয় নতুন চাপ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত আলতাফ হোসেন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিৎসায় খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। এবার স্ত্রীও পজিটিভ। তাকে চিকিৎসা করাতে এ পর্যন্ত ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা চলে গেছে। এই যে অপ্রত্যাশিত ব্যয় সামাল দেয়া সীমিত আয়ের মানুষদের জন্য কঠিন ব্যাপার।

এই সময়ে মেডিকেল পণ্যের দাম বেশ চড়া। অব্যাহতভাবে ওষুধের দাম, চিকিৎসকের ফি, ল্যাবরেটরি টেস্টের খরচ বেড়েছে। ফলে এক বছরে চিকিৎসা ব্যয় বেড়েছে ৮১ শতাংশ।

জীবনধারণে কঠিন বাস্তবতা

ঢাকা মেডিক্যালে সিট খালি না থাকায় এক রোগীকে ভ্যানে করে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস

রাজধানীতে বসবাসরতদের বরাবর প্রধান দুশ্চিন্তার নাম বাড়িভাড়া। করোনায় অনেকে ঢাকা থেকে চলে গেলেও বাসাভাড়া কমেনি। উল্টো বেড়ে গেছে।

পিপিআরসির জরিপ বলছে, এক বছরে বাড়িভাড়া বেড়েছে ৪৬ শতাংশ।

ইউটিলিটি বিলেও স্বস্তি নেই। বর্তমান কয়েক দফা বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া গ্যাসের দামও বাড়ানো হয়েছে।

করোনাকালীন যাতায়াত খাতেও বেশি খরচ করতে হয়েছে। এক বছরে মানুষের যাতায়াত বাবদ ব্যয় ১০৪ শতাংশ বেড়েছে।

টিসিবির ট্রাকে মধ্যবিত্তরাও

রাজধানীতে শতাধিক ট্রাকে কম দামে পণ্য বিক্রি করছে টিসিবি। করোনার এই সময়ে সাশ্রয়ী মূল্যের এই সব পণ্য কিনতে নতুন মুখের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যারা কখনও এমন ভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য কেনেননি তারাও এখন দরিদ্র্যদের সঙ্গে এক কাতারে।

টিসিবির ডিলার রফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এক সময় স্বচ্ছল ছিলেন এমন অনেকেই পণ্য কেনার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে তেল, চিনি, ডাল নিচ্ছেন। অনেকে লাইনে না দাঁড়ালেও বাসার কাজের বুয়াকে পাঠিয়ে দিচ্ছেন পণ্যের জন্য।

‘অনেকেই অফিসের পিয়ন এবং কর্মচারীদের পাঠিয়ে লাইনে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছেন। একই ব্যক্তি প্রতিদিনই লাইনে দাঁড়াচ্ছেন। তারা মূলত অফিসের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের জন্য পণ্য নিয়ে দিচ্ছেন। লজ্জায় অনেকেই লাইনে দাঁড়াতে পারছেন না।’

সহায়তা কম

করোনার প্রথম ধাক্কায় যে সহায়তা মিলেছে, দ্বিতীয় ধাক্কায় সরকারের বাইরে তার ছিটেফোঁটাও দেখা যাচ্ছে না। ফলে দরিদ্র মানুষদের বিপদ বেড়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে আড়াই হাজার টাকা করে দরিদ্র্য মানুষদের দেবার কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে সরকার। কিন্তু গেল বছর এই একই কর্মসূচি বাস্তবায়ন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়।

জীবনধারণে কঠিন বাস্তবতা

নগরীর কাজেম আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে প্রধানমন্ত্রীর পাঠানো উপহার ৪০০ চর্মকার ও নাপিতের হাতে তুলে দিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। ছবি: নিউজবাংলা

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষদের সহায়তায় কর্মপরিকল্পনা হাতে নেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে কাজ হারানো বড় সংখ্যাক মানুষকে কত দ্রুত কাজে ফিরিয়ে আনা যায়, সেই দিকটি সরকারের কাছে গুরুত্ব পাচ্ছে।

আরও পড়ুন:
মার্কেট খুললেও ক্রেতা নেই
স্বাস্থ্যবিধি না মানলে ফের কঠোর লকডাউন: কাদের
ঈদ কেনাকাটায় প্রস্তুত দোকান, শঙ্কা মুভমেন্ট পাস
মামলা দিয়েও ঠেকানো যাচ্ছে না অটোরিকশা
আর বাড়ছে না লকডাউন

মন্তব্য

আরও পড়ুন

অর্থ-বাণিজ্য
On the occasion of the martyrdom anniversary of Shaheed President Ziaur Rahman
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে

জনতা ব্যাংক জাতীয়তাবাদী অফিসার কল্যাণ সমিতির আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত

জনতা ব্যাংক জাতীয়তাবাদী অফিসার কল্যাণ সমিতির আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে গত ০২ জুন, সোমবার আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে জনতা ব্যাংক জাতীয়তাবাদী অফিসার কল্যাণ সমিতি।

জনতা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মুহঃ ফজলুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ গোলাম মরতুজা, মোঃ ফয়েজ আলম ও মোঃ আশরাফুল আলম বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। সংগঠনের সভাপতি সাইফুল আবেদিন তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভা সঞ্চালনায় ছিলেন কার্যকরী সভাপতি শাহ জাহান ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেন। অনুষ্ঠানে সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি এস. এফ. এম. মুনির হোসেন, সহসভাপতি মজিবুর রাহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ছানোয়ার হোসেনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Return is not obligated to get a credit card and trade license purchased by savings

সঞ্চয়পত্র কেনা, ক্রেডিট কার্ড ও ট্রেড লাইসেন্স নিতে রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতা নেই

সঞ্চয়পত্র কেনা, ক্রেডিট কার্ড ও ট্রেড লাইসেন্স নিতে রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতা নেই

১০ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কেনায় আয়কর রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখাতে হবে না। আবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার সময় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগবে না। ট্রেড লাইসেন্স নিতেও রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগবে না। বাজেটে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দাখিলের বাধ্যবাধকতায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্রের বাধ্যবাধকতায় এসব পরিবর্তন আনা হয়েছে। এত দিন ৪৬টি সেবায় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখানোর বাধ্যবাধকতা ছিল।

এখন ১১ ধরনের সেবা নিতে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দেখাতে হবে না। শুধু কর শনাক্তকরণ নম্বরধারীদের (টিআইএন) সিস্টেম জেনারেটেড প্রত্যয়নপত্র দাখিল করলেই হবে। ওই ১১টি সেবা হলো সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা এলাকায় নতুন ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণে; সমবায় সমিতির নিবন্ধন প্রাপ্তিতে; সাধারণ বিমার তালিকাভুক্ত সার্ভেয়ারের নতুন লাইসেন্স গ্রহণে; ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ ও নবায়নে; চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসক, আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট, চার্টার্ড সেক্রেটারি, আইনজীবী ও কর আইনজীবী, অ্যাকচুয়ারি, প্রকৌশলী, স্থপতি, সার্ভেয়ার হিসেবে কোনো স্বীকৃত পেশাজীবী সংস্থার সদস্যপদ গ্রহণে; পাঁচ লাখ টাকার অধিক পোস্ট অফিস সঞ্চয়ী হিসাব খোলায়; এমপিওভুক্তির মাধ্যমে সরকারের কাছ থেকে দশম গ্রেড বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার কর্মচারীর কোনো অর্থ প্রাপ্তিতে; স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতাদের ক্ষেত্রে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস বা মোবাইল ব্যাংকিং বা ইলেকট্রনিক উপায়ে টাকা স্থানান্তরের মাধ্যমে এবং মোবাইল ফোনের হিসাব রিচার্জের মাধ্যমে কমিশন, ফি বা অন্য কোনো অর্থ প্রাপ্তিতে; স্ট্যাম্প, কোর্ট ও কার্টিজ পেপারের ভেন্ডর বা দলিল লেখক হিসেবে লাইসেন্স নিবন্ধন ও তালিকাভুক্তিতে; ত্রি-চক্র মোটরযানের নিবন্ধন, মালিকানা পরিবর্তন বা ফিটনেস নবায়নে; ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ই-কমার্স ব্যবসার ক্ষেত্রে লাইসেন্সিং অথরিটির কাছ থেকে লাইসেন্স গ্রহণে।

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Proposes to increase the special advantage of government employees in the budget

বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব

বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

আজ সোমবার (২ জুন) বাংলাদেশ টেলিভিশনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ এ কথা বলেন। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম ও দেশের ইতিহাসে ৫৪তম বাজেট।

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার সময় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য মোট ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করছি, যা জিডিপির ১২.৭ শতাংশ। এর মধ্যে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে মোট ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।

তিনি বলেন, এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করতে চাই যে, ২০১৫ সালের পর এখন পর্যন্ত বেতন কাঠামো প্রণীত না হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবারের বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করছি।

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Online shopping will be more expensive

অনলাইন কেনাকাটা হবে আরও ব্যয়বহুল

অনলাইন কেনাকাটা হবে আরও ব্যয়বহুল

ঘরে বসে যেসব ক্রেতারা কেনাকাটা করতে চান, তাদের জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে কেনাকাটা আগামী অর্থবছর থেকে খানিকটা ব্যয়বহুল হতে পারে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ই-প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় থেকে কমিশনের ওপর ভ্যাট বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করতে চাইছে। সেক্ষেত্রে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পণ্যের দাম বেশি হতে পারে।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই ভ্যাটের হার ছিল ৫ শতাংশ।

জুলাই অভ্যুত্থানে বদলে যাওয়া বাংলাদেশে ভিন্ন বাস্তবতায় এবার সংসদের বাইরে ভিন্ন আঙ্গিকে পেশ হলো বাজেট। এবার সংসদ না থাকায় সংসদের আলোচনা বা বিতর্কের কোনো সুযোগ থাকছে না। উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বাজেট উপস্থাপন করার পর ৩০ জুন তা রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ আকারে কার্যকর করা হবে।

তবে অতীতের রেওয়াজ মেনে বাজেট ঘোষণার পরদিন সংবাদ সম্মেলনে এসে বাজেট নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। এছাড়া পুরো জুন মাসজুড়ে অংশীজনদের মতামত নেওয়ার কথাও তিনি বলেছেন।

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Inflation will come down to 5 percent this June Finance Advisor 

চলতি জুনেই মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে : অর্থ উপদেষ্টা 

চলতি জুনেই মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে : অর্থ উপদেষ্টা 

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিগত মাসগুলোতে সরকারের ধারাবাহিক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অবলম্বন করায় এবং সরকারি ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পাওয়ায় মূল্যস্ফীতি হ্রাস পেয়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি জুন মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ আজ সোমবার ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় এ কথা বলেন। তার এ বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, গত বছরের আগস্ট মাসে আমাদের সরকার যখন দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করে তখন আমাদের সামনে সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল নিয়ন্ত্রণহীন মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরে মানুষকে স্বস্তি দেয়া।

তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিগত মাসগুলোতে আমরা ধারাবাহিকভাবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অবলম্বন করেছি। এর ফলে নীতি সুদের হার ১৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়ে এখন ১০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। মুদ্রানীতির আওতায় গৃহীত কার্যক্রমকে সহায়তা করতে সংকোচনমূলক রাজস্বনীতি অনুসরণ করা হয়েছে। অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে আনায় সার্বিকভাবে সরকারি ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। এর ইতিবাচক প্রভাব ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হয়ে উঠতে শুরু করেছে। পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসের ১০.৮৯ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশে নেমে এসেছে। আশার কথা হলো এবারের রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্মরণকালের মধ্যে সবচাইতে স্থিতিশীল ছিল। এ ধারা অব্যাহত থাকলে এই জুন মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের কোঠায় নেমে আসবে। মূল্যস্ফীতির সাথে এ লড়াইয়ের ফলে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা কম হতে পারে।’

মূল্যস্ফীতির নিম্নমুখী ধারা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল থাকা জরুরি উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল থাকা অত্যাবশ্যক। প্রবাস আয়ের প্রবৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক হওয়ায় এবং রপ্তানি স্থিতিশীল থাকায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এপ্রিল মাসে বৃদ্ধি পেয়ে ২৭.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সে কারণে আমরা বিগত ১৪ মে তারিখে বাজারভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় হার চালু করেছি।

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
In the twilight of international finance the new challenge of IMF

আন্তর্জাতিক অর্থব্যবস্থার সন্ধিক্ষণে: আইএমএফের নতুন চ্যালেঞ্জ

আন্তর্জাতিক অর্থব্যবস্থার সন্ধিক্ষণে: আইএমএফের নতুন চ্যালেঞ্জ

১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী আর্থিক অস্থিরতা সামাল দিতে গঠিত হয় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ। এর মূল লক্ষ্য ছিল বৈশ্বিক মুদ্রানীতি সমন্বয় সাধন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে উৎসাহ দেওয়া এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করা। বহু দেশ সংকটে পড়ে এই সংস্থার দ্বারস্থ হয়েছে- কেউ সাময়িকভাবে রক্ষা পেয়েছে, কেউ আবার দীর্ঘমেয়াদি ঋণনির্ভরতার ফাঁদে পড়ে গেছে।

আজ, যখন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ভারসাম্য ক্রমশ পশ্চিমকেন্দ্রীকতা থেকে সরে পূর্ব ও দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়ছে, তখন আইএমএফ তার প্রাসঙ্গিকতা ও নৈতিক অবস্থান নিয়ে এক নতুন প্রশ্নের সম্মুখীন।

ঋণ সহায়তা, নাকি ঋণের ফাঁদ?

আইএমএফ সাধারণত এমন শর্তে ঋণ দেয়, যার মধ্যে থাকে কঠোর ব্যয়সংযম, ভর্তুকি হ্রাস, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং বাজারমুখী সংস্কার; কিন্তু এই শর্তগুলো অনেক সময় জনজীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। স্থানীয় শিল্প ধসে পড়ে, বৈষম্য বেড়ে যায় এবং সাধারণ মানুষের জীবন আরও কঠিন হয়ে ওঠে। আর্জেন্টিনার অভিজ্ঞতা এর এক উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। ২০১৮ সালে আইএমএফ ইতিহাসের বৃহত্তম ঋণ প্যাকেজ ৫৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদন করে। ফল ছিল বিপরীত- মুদ্রাস্ফীতি ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়, দারিদ্র্য আরও বেড়ে যায় এবং দেশটি আবার মন্দার মুখে পড়ে।

এই অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে শুধু অর্থনৈতিক সমীকরণ দিয়ে কোনো দেশের সামাজিক বাস্তবতা নির্ধারণ চলে না।

আইএমএফের নীতিনির্ধারণ কাঠামো এখনো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী শক্তির ভারসাম্যের প্রতিচ্ছবি। উন্নত দেশগুলো (বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন) সংগঠনের ভোটের অধিকাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর অংশগ্রহণ প্রায় অনুপস্থিত। এই গণতান্ত্রিক ঘাটতি আজ দক্ষিণের রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে গভীর অসন্তোষ ও অবিশ্বাসের জন্ম দিচ্ছে।

আন্তর্জাতিক অর্থব্যবস্থার সন্ধিক্ষণে: আইএমএফের নতুন চ্যালেঞ্জ

বিকল্প প্রতিষ্ঠানের উত্থান

এই প্রেক্ষাপটে বিকল্প আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন- নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (NDB), এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (AIIB) এবং ল্যাটিন আমেরিকান রিজার্ভ ফান্ড (FLAR) নতুন করে আশার আলো দেখাচ্ছে। (NDB) এর সহায়তা তুলনামূলকভাবে শর্তমুক্ত এবং অংশগ্রহণমূলক। এখানে প্রতিটি দেশের ভোটের ও প্রতিনিধিত্বের সমান সুযোগ আছে, যা উন্নয়নশীল দেশগুলো আরও আগ্রহী করে তুলেছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো এখন শুধু আর্থিক বিকল্প নয়- এরা এক নতুন উন্নয়ন দর্শনের বাহক। সেই দর্শনে উন্নয়ন নির্ধারিত হয় স্থানীয় বাস্তবতা ও প্রয়োজনকে কেন্দ্র করে, বাইরের চাপ বা রূঢ় শর্ত নয়।

বিশ্ব আজ বহুমেরু। অর্থনৈতিক শক্তি ছড়িয়ে পড়ছে নানা অঞ্চলে। এই বাস্তবতায় টিকে থাকতে হলে আইএমএফকে নিজস্ব কাঠামো ও দর্শনে রূপান্তর আনতে হবে। প্রয়োজন গভর্ন্যান্সের সংস্কার, নীতিনির্ধারণে সমান অংশগ্রহণ, এবং সর্বোপরি সহানুভূতিশীল ঋণ নীতিমালা।

আইএমএফ যদি সত্যিই বৈশ্বিক আর্থিক স্থিতিশীলতার অভিভাবক হতে চায়, তাহলে তাকে হতে হবে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়ভিত্তিক, এবং আঞ্চলিক বাস্তবতাসম্মত এটি শুধু আইএমএফের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রশ্ন নয়; এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার ও সার্বিক উন্নয়নের প্রশ্ন।

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
There is no new surprise in the budget Devpriya Bhattacharya

বাজেটে নতুন চমক থাকছে না: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

বাজেটে নতুন চমক থাকছে না: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ছবি: সংগৃহীত

জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি, ব্যাংক জালিয়াতি, করখেলাপি ও পাচার হওয়া অর্থ জব্দ কর তা বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করার পরমর্শ দিয়েছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এ সময়ে এবারের বাজেট গতানুগতিক হতে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শনিবার (৩১ মে) রাজধানীর এফডিসিতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে দুর্নীতি, ব্যাংক জালিয়াতি, করখেলাপি ও পাচারকৃত অর্থ জব্দের মাধ্যমে বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করলে তা হতে পারে এবারের বাজেটের একটি অভিনব উৎস।’

‘গত সরকারের রেখে যাওয়া বিদেশি ঋণের চাপ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। এই সরকারের এই সময়ে অন্যতম সাফল্য ৫০০ কোটি (৫ বিলিয়ন) ডলার পরিশোধ করে বিদেশি ঋণের চাপ কমিয়ে আনা,’ যোগ করেন তিনি।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘এই ঋণ বিলিয়ন ডলার করে বছর বছর বাড়ছিল। সামগ্রিকভাবে এই সরকারের সাফল্যের জায়গাটা হলো বহির্খাত, রেমিট্যান্স, রপ্তানি, দায়-দেনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা, মজুদ বাড়ানো ও টাকার মূল্যমান স্থিতিশীল রাখা।’

তবে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট গতানুগতিক হতে যাচ্ছে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, ‘খেলাপি ঋণ আদায়, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত এবং করের আওতা বাড়ানোর মতো নতুন কোনো কিছু না থাকায় এবারের বাজেটে কোনো চমক থাকছে না।’

‘যে প্রকল্পগুলো সরকারের কাছে আছে, তা অতিমূল্যায়িত ও তার ৪০ শতাংশ ব্যয়ই ভুয়া। আগের যে প্রকল্পগুলো থেকে রক্তক্ষরণ হতো, সেগুলো অব্যাহত আছে,’ বলেন তিনি।

সিপিডির এই সম্মানীয় ফেলো বলেন, ‘রাজস্ব ব্যয় সঠিকভাবে না করলে করদাতাদের উৎসাহ থাকে না। আমাদের কর কাঠামো বৈষম্যনির্ভর। আমাদের বৈদেশিক খাতে কিছুটা স্থিতিশীলতা অর্জিত হলেও ব্যক্তি খাতে স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগ এখনো আশানুরূপ অর্জিত হয়নি।’

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি নামের একটি বিতর্ক সংগঠন এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

‘রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি করা আসন্ন বাজেটের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত’ শীর্ষক ছায়া সংসদে ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজকে পরাজিত করে ঢাকার বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজির বিতার্কিকরা বিজয়ী হন।

মন্তব্য

p
উপরে