রাজধানীর একটি বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করেন আব্দুল আলিম। মাসিক বেতন এবং প্রাইভেট পড়িয়ে মাসে সব মিলিয়ে আয় ছিল ২০ হাজার টাকার মতো।
তবে এক বছরের বেশি সময় স্কুল বন্ধ থাকায় ঠিকমতো বেতন হচ্ছে না। এত দিন প্রাইভেট পড়ানোর ওপর নির্ভর করে কোনো রকমে বাসা ভাড়া দিয়ে টিকে থাকলেও এখন আর সেই সুযোগ নেই। সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় প্রাইভেট পড়ানোও বন্ধ। এখন ছাড়তে হবে প্রিয় এই শহর।
কঠিন এমন বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আলিম বলেন, ‘ভাড়ার ৮ হাজার টাকা পরিশোধ করে বাসা ছেড়ে দিয়েছি। আগামী মে মাসে গ্রামের বাড়িতে চলে যাব। সবকিছু স্বাভাবিক হলে হয়তো আবার ফিরে আসা হবে। তবে সেই আসা কবে তা জানি না।’
করোনার প্রথম ঢেউ শেষে অর্থনীতি যখন স্বাভাবিক হওয়ার অবস্থায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার তারিখও ঘোষণা হয়েছে, সেই সময় করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আঘাত।
লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা, মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে- এই অবস্থায় ৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয় লকডাউন। ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর লকডাউনে বন্ধ হয়ে যায় জরুরি সেবা ছাড়া সব প্রতিষ্ঠান। যদিও বিশেষ বিবেচনায় খুলে দেয়া হয়েছে বিপণিবিতান।
তবে স্কুল-কলেজ খুলছে না সহসা, এটা অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গেছে। ফলে আব্দুল আলিমদের সহজে ঢাকায় ফেরা হচ্ছে না-এটা বলাই যায়।
দীর্ঘদিন দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। ছবি: নিউজবাংলা
তার মতো বহু মানুষের কাজ না থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে আয়ের পথ। কিন্তু মূল্যস্ফীতি বাড়ায় হিমশিম অবস্থা। নিম্ন, নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণির একটি বড় অংশই এখন কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি।
নিম্ন আয়ের মধ্যে যারা গণপরিবহন খাতে কাজ করেন, তাদের আয় বন্ধ পুরোপুরি। পর্যটন খাতও বন্ধ। দেশের বড় দুটি পেশাজীবী গোষ্ঠীর তাদের আয়ের কোনো সুযোগই নেই।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার বা পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শহরে দরিদ্র্যদের সংকট সবচেয়ে বেশি। মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, কিন্তু আয় নেই। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের কর্মসংস্থান সংকুচিত হয়েছে। ফলে বড় সংখ্যাক মানুষের বেঁচে থাকাই এখন কষ্টদায়ক।’
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান মনে করেন, নিম্ন আয়ের মানুষদের সহায়তায় এগিয়ে আসতে হবে। এ ক্ষেত্রে অনিয়ম বন্ধ করে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা যাতে সহায়তা পায় সেই কর্মপন্থা দরকার।
রাজধানী ছেড়েছে মানুষ
মিরপুরের কাজীপাড়ায় বসবাস করতেন রোকন মাহমুদ। একটি কোচিং সেন্টার চাকরি, আর টিউশনি করে ভালোই চলত সংসার। গত বছরে করোনার কারণে সব বন্ধ হয়ে গেলেও বছরের শেষ দিকে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়। তখন আবার টিউশনি শুরু করেন তিনি। কিন্তু এখন তার কাজ পুরোটাই বন্ধ।
প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া দিতে হয়। এই পরিমাণ অর্থ উপার্জন করা প্রায় অসাধ্য হয়ে গেছে। তাই তিনিও পরিবার নিয়ে চলে যাচ্ছেন গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ।
রোকন বলেন, ‘কখনো ভাবিনি এই ঢাকা শহর ছেড়ে গ্রামে ফিরে যেতে হবে। গ্রামে থাকলে প্রতি মাসে বাড়িভাড়ার টাকা নিয়ে অন্তত দুশ্চিন্তা করতে হবে না। করোনা জীবনটারে একেবারে ওলটপালট করে দিয়েছে’।
স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে শেওড়াপাড়ায় বসবাস করা উজ্জ্বল কুমার একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। তিনি বলেন, ‘সরকারি নির্দেশমতো বর্তমানে অফিস বন্ধ। কোম্পানি লোকসানে থাকায় ফেব্রুয়ারি মাসে দেয়া হয় অর্ধেক বেতন। মার্চেও কমিয়ে বেতন দেয়া হয়। কিন্তু এই টাকায় বাড়িভাড়া দেয়ার পর পরিবার নিয়ে চলা অসম্ভব। সামনে অবস্থা কী হবে জানি না। তাই গ্রামের বাড়ি ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জরিপ তথ্য অনুযায়ী, গত বছর রাজধানী ঢাকা ছেড়ে চলে যায় অন্তত ১৬ শতাংশ দরিদ্র মানুষ। বাড়িভাড়া, চিকিৎসা খরচ, যোগাযোগের ব্যয় এবং অন্য নানামুখী ব্যয় মেটাতে না পেরেই এসব মানুষ ঢাকা ছেড়েছে।
এবারও প্রকৃত সংখ্যা নিরূপণ না হলেও শহর ছেড়ে চলে যাওয়া মানুষের সংখ্যা কম না সেটা বলাই যায়।
কাজের খোঁজে ভাসমান মানুষদের কী অবস্থা
কাজ চাই। ভোর থেকেই শহরের বিভিন্ন রাস্তায়, অলিগলিতে দরিদ্র মানুষদের আনাগোনা। তাদের একটাই চাওয়া, কাজ। কিন্তু এই সংক্রমণে চাহিদামতো কাজ নেই।
রাজধানীতে ভাসমান শ্রমিক হাটগুলোতে ক্রমেই বাড়ছে নতুন মুখ। এদের কেউ কাজ করতেন পোশাকশিল্পে, কেউবা পরিবহনে। সবারই পরিচয় এখন দিনমজুর।
আর নতুন ‘প্রতিদ্বন্দ্বীদের’ নিয়ে চিন্তার ভাঁজ, আগে থেকেই এই কাজে যুক্তদের। মহামারি নয়, জীবিকার সংকটেই আতঙ্কিত তারা। বেঁচে থাকার লড়াইয়ে বিধস্ত হয়ে পড়েছেন অনেকে।
৭-৮ বছর মানুষের বাসায় বাসায় পত্রিকা বিলি করে জীবন নির্বাহ করেন আব্দুল্লাহ। করোনার কারণে অনেক বাসায় এখন পত্রিকা নেয়া বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে সামান্য পত্রিকা বিলি করে যা আয় হয়, তা দিয়ে সংসার চলে না। তাই তিনি বিকল্পি আয়ের খোঁজে।
একে তো কাজের অভাব, তারপরে আবার বাজারে নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী। লকডাউনের মধ্যে কাজ জোটেনি, ঈদ পর্যন্ত টিকে থাকা নিয়েই সংশয়ে আছেন তিনি।
কঠোর নিয়ন্ত্রণের পর থেকেই প্রতিটি শ্রমিক হাটের অবস্থা বেশ শোচনীয়। দিনমজুরের উপস্থিতি থাকলেও কাজের দেখা নেই। সরকারি সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে, অনেকেরই নাম ঠিকানা সংগ্রহ করা হয়েছে। কিন্তু মেলেনি কিছুই।
বাড়ছে খাদ্য মূল্যস্ফীতি
পণ্য সরবরাহে বিঘ্নতা এবং বিশ্ববাজার থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে নানান জটিলতায় বাড়তির দিকে মূল্যস্ফীতি। অর্থাৎ কম টাকায় মানুষ যে তার প্রয়োজন মেটাবে সেই সুযোগও নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংক এরই মধ্যে মূল্যস্ফীতির আশঙ্কার আভাস দিয়েছে। বলছে, করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।
বিবিএসর হালনাগাদ তথ্য বলছে, গেল মার্চ মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে (মাসওয়ারি) দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। ফেব্রুয়ারিতে যা ছিল ৫ দশমিক ৩২ শতাংশ।
লকডাউনের আগে রাজধানীর মাছের বাজারে চলছে বেচাকেনা। ছবিটি মোহাম্মদপুরের টাউন হল থেকে তোলা। ছবি: নিউজবাংলা
অর্থাৎ ২০২০ সালের মার্চ মাসে যে পণ্য বা সেবার জন্য ১০০ টাকা খরচ করতে হতো, চলতি বছরের মার্চে সেই পণ্য বা সেবার জন্য ১০৫ টাকা ৪৭ পয়সা খরচ করতে হয়েছে।
খাদ্য মূল্যস্ফীতি গেল কয়েক মাস ধরেই ঊর্ধ্বগতি। জানুয়ারি থেকে মার্চ এই তিন মাসে ক্রমান্বয়ে বাড়ছে এই সূচক। সামনে আরও বাড়ার শঙ্কা স্পষ্ট হচ্ছে।
মার্চে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৫১ শতাংশ। আর খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ। ফেব্রুয়ারিতে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৫ দশমিক ৪২ শতাংশ; জানুয়ারিতে যা ছিল ৫ দশমিক ২৩ শতাংশ।
ভোজ্যতেল, চিনিসহ আরও কয়েকটি পণ্যের চড়া দামের কারণে মার্চ মাসে দেশের মানুষকে এই বাড়তি খরচ করতে হয়েছে।
বাড়িভাড়া, চিকিৎসা, পরিবহনে বাড়তি ব্যয় নতুন চাপ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত আলতাফ হোসেন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিৎসায় খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। এবার স্ত্রীও পজিটিভ। তাকে চিকিৎসা করাতে এ পর্যন্ত ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা চলে গেছে। এই যে অপ্রত্যাশিত ব্যয় সামাল দেয়া সীমিত আয়ের মানুষদের জন্য কঠিন ব্যাপার।
এই সময়ে মেডিকেল পণ্যের দাম বেশ চড়া। অব্যাহতভাবে ওষুধের দাম, চিকিৎসকের ফি, ল্যাবরেটরি টেস্টের খরচ বেড়েছে। ফলে এক বছরে চিকিৎসা ব্যয় বেড়েছে ৮১ শতাংশ।
ঢাকা মেডিক্যালে সিট খালি না থাকায় এক রোগীকে ভ্যানে করে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস
রাজধানীতে বসবাসরতদের বরাবর প্রধান দুশ্চিন্তার নাম বাড়িভাড়া। করোনায় অনেকে ঢাকা থেকে চলে গেলেও বাসাভাড়া কমেনি। উল্টো বেড়ে গেছে।
পিপিআরসির জরিপ বলছে, এক বছরে বাড়িভাড়া বেড়েছে ৪৬ শতাংশ।
ইউটিলিটি বিলেও স্বস্তি নেই। বর্তমান কয়েক দফা বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া গ্যাসের দামও বাড়ানো হয়েছে।
করোনাকালীন যাতায়াত খাতেও বেশি খরচ করতে হয়েছে। এক বছরে মানুষের যাতায়াত বাবদ ব্যয় ১০৪ শতাংশ বেড়েছে।
টিসিবির ট্রাকে মধ্যবিত্তরাও
রাজধানীতে শতাধিক ট্রাকে কম দামে পণ্য বিক্রি করছে টিসিবি। করোনার এই সময়ে সাশ্রয়ী মূল্যের এই সব পণ্য কিনতে নতুন মুখের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যারা কখনও এমন ভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য কেনেননি তারাও এখন দরিদ্র্যদের সঙ্গে এক কাতারে।
টিসিবির ডিলার রফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এক সময় স্বচ্ছল ছিলেন এমন অনেকেই পণ্য কেনার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে তেল, চিনি, ডাল নিচ্ছেন। অনেকে লাইনে না দাঁড়ালেও বাসার কাজের বুয়াকে পাঠিয়ে দিচ্ছেন পণ্যের জন্য।
‘অনেকেই অফিসের পিয়ন এবং কর্মচারীদের পাঠিয়ে লাইনে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছেন। একই ব্যক্তি প্রতিদিনই লাইনে দাঁড়াচ্ছেন। তারা মূলত অফিসের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের জন্য পণ্য নিয়ে দিচ্ছেন। লজ্জায় অনেকেই লাইনে দাঁড়াতে পারছেন না।’
সহায়তা কম
করোনার প্রথম ধাক্কায় যে সহায়তা মিলেছে, দ্বিতীয় ধাক্কায় সরকারের বাইরে তার ছিটেফোঁটাও দেখা যাচ্ছে না। ফলে দরিদ্র মানুষদের বিপদ বেড়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে আড়াই হাজার টাকা করে দরিদ্র্য মানুষদের দেবার কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে সরকার। কিন্তু গেল বছর এই একই কর্মসূচি বাস্তবায়ন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়।
নগরীর কাজেম আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে প্রধানমন্ত্রীর পাঠানো উপহার ৪০০ চর্মকার ও নাপিতের হাতে তুলে দিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। ছবি: নিউজবাংলা
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষদের সহায়তায় কর্মপরিকল্পনা হাতে নেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে কাজ হারানো বড় সংখ্যাক মানুষকে কত দ্রুত কাজে ফিরিয়ে আনা যায়, সেই দিকটি সরকারের কাছে গুরুত্ব পাচ্ছে।
আরও পড়ুন:অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ বিজনেস এক্সপো ২০২৫-এ যোগদানের জন্য ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) ৯ সদস্যের একটি বাণিজ্য প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছে।
এই এক্সপো ১ ও ২ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি মেসোনিক সেন্টারে (এসএমসি) অনুষ্ঠিত হবে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ডিসিসিআই বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সফরকালে অস্ট্রেলিয়ান ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও ব্যবসায়িক সহযোগিতার সুযোগ অনুসন্ধান করবেন। পাশাপাশি অনুষ্ঠানে পণ্য প্রদর্শনী, নেটওয়ার্কিং সেশন, বিটুবি মিটিং এবং বিষয়ভিত্তিক সেমিনারে অংশগ্রহণের সুযোগ থাকবে। যেখানে বাংলাদেশের পণ্য ও সেবার প্রসার, আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব শক্তিশালী করা এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ পাবে।
এক্সপোতে তৈরি পোশাক, জুতা, পাটজাত পণ্য, ফার্মাসিউটিক্যালস, মেডিকেল ডিভাইস, তথ্যপ্রযুক্তি, শিক্ষা, খাদ্য ও ফলমূল, পর্যটন, কৃষি, ফার্নিচার, হস্তশিল্প এবং রিয়েল এস্টেট প্রভৃতি বিষয়র ওপর প্রাধান্য দেওয়া হবে।
ডিসিসিআই থেকে অংশগ্রহণকারী ৯টি প্রতিষ্ঠান হলো: টেক্সট্রেড করপোরেশন, ফিঙ্গারটাচ সার্ভিসেস, ফারইস্ট হোল্ডিংস লিমিটেড, পেন্টাগন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, চৌধুরী শাজ্জাদ মনোয়ার চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস, নায়িশা এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড, টোরি ক্রেডিট রিপোর্টস অ্যান্ড কালেকশনস লিমিটেড, টেকফিনা বিপিও অ্যান্ড করপোরেট অ্যাডভাইজারি লিমিটেড এবং আল-আরাফাহ পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড।
সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের চুক্তির আওতায় প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানি এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক সম্প্রসারণ সংক্রান্ত প্রস্তাবসহ বেশ কয়েকটি প্রস্তাব অনুমোদনের সুপারিশ করেছে।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয় ও সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ কর্তৃক উত্থাপিত প্রস্তাবগুলো পর্যালোচনা করা হয়।
কমিটি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মাধ্যমে দেশের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের লক্ষে ডিএপি ও টিএসপি সার আমদানির পাঁচটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদনের সুপারিশ করে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চীনের ব্যানিয়ান ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেড থেকে ৩৭৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার (৩য় লট) আমদানি করা হবে। যার প্রতি মেট্রিক টনের দাম ধরা হয়েছে ৭৭২ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার।
এছাড়া, মরক্কোর ওসিপি নিউট্রিক্রপস থেকে ২১৫ কোটি ২৮ লাখ টাকায় (প্রতি টন ৫৮৫.৩৩ ডলার) ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার (৬ষ্ঠ লট), ২১৫ কোটি ২৮ লাখ টাকায় (প্রতি টন ৫৮৫.৩৩ ডলার) ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার (৭ম লট), ৩৭২ কোটি ৮৬ লাখ টাকায় (প্রতি টন ৭৬০.৩৩ ডলার) ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার (৫ম লট) এবং ৩৭২ কোটি ২৫ লাখ টাকায় (প্রতি টন ৭৬০.৩৩ ডলার) ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার (৬ষ্ঠ-ঐচ্ছিক ১ম লট) আমদানি করা হবে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কৃষকদের জন্য সারের সরবরাহ নির্বিঘ্ন রাখতে চীন ও মরক্কোর সঙ্গে সরকারের নিয়মিত রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের চুক্তির অংশ হিসেবে এই আমদানি করা হবে।
এছাড়াও আজকের ক্রয় কমিটি সভা সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ‘আশুগঞ্জ নদীবন্দর-সরাইল-ধরখার-আখাউড়া স্থলবন্দর মহাসড়ককে ৪-লেন জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণ (১ম সংশোধিত)’ শীর্ষক প্রকল্পের প্যাকেজ নং ডব্লিউপি-০১ (পার্র্ট-১) এর আওতায় আশুগঞ্জ গোলচত্ত্বর থেকে সরাইল গোলচত্ত্বর পর্যন্ত (১১.৫৬ কিলোমিটার) সড়ক নির্মাণ কাজের ভেরিয়েশন অর্ডার-১ (ভিও-১) এর প্রস্তাব অনুমোদনের সুপারিশ করেছে।
মূল চুক্তিমূল্য ছিল ৫৫৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা যেখানে ভেরিয়েশন অর্ডারে ১৬৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা যোগ করা হয়েছে এবং সংশোধিত মোট চুক্তি মূল্য দাঁড়িয়েছে ৭১৭ কোটি ২৭ লাখ টাকা।
কাজটি ভারতের মুম্বাই-ভিত্তিক আফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড কর্তৃক সম্পন্ন হবে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নকশা ও কাজের পরিধি পরিবর্তনের কারণে অতিরিক্ত ব্যয় যোগ হয়েছে, যা প্রকল্পের মান উন্নয়ন ও স্থায়িত্ব নিশ্চিত করার জন্য জরুরি।
এর পাশাপাশি, আজ অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬ এর ধারা ৬৮ (১) ও পিপিআর, ২০০৮ এর বিধি ৭৬(২) অনুসারে জিটুজি ভিত্তিতে চাল ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়।
বিশ্ব রেটিনা দিবস ২০২৫ উপলক্ষে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল (এনআইওএইচ) এবং রোশ বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে ‘ব্রিজিং পলিসি, টাস্ক শিফটিং অ্যান্ড ইনোভেশন: ট্যাকলিং ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন করেছে। খাত সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের অংশগ্রহণে এ আলোচনা অনুষ্ঠান সম্প্রতি (২৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়।
অংশীজনদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নীতি-নির্ধারক, স্বাস্থ্যসেবা বিশেষজ্ঞ, আন্তর্জাতিক এনজিও ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিগণ। এ সময় তারা বাংলাদেশে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি (ডিআর) মোকাবিলায় কার্যকর উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করেন।
ডায়াবেটিস রোগের সাথে প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি রোগটি বাংলাদেশের মানুষের অন্ধত্বের অন্যতম প্রধান কারণ। রোগটি খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে এটি বর্তমান সময়ে একটি জনস্বাস্থ্য সমস্যায় রূপ নিয়েছে। এ রোগ নিয়ে জনসচেতনতা, রোগ নির্ণয় কর্মসূচি, স্বাস্থ্যখাতের প্রস্তুতি ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে রোগ শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা সেবার পরিসর সীমিত রয়ে গেছে। এ প্রেক্ষাপটে, গোলটেবিল বৈঠকে স্ক্রিনিং, রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিদ্যমান যে দূর্বলতাগুলো রয়েছে, তা চিহ্নিত করা এবং সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে একটি সমন্বিত জাতীয় পদক্ষেপ গ্রহণের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও নীতিনির্ধারকগণ; স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) সদস্যবৃন্দ, এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক, জ্যেষ্ঠ চক্ষু বিশেষজ্ঞবৃন্দ, রেটিনা বিশেষজ্ঞ, অপথালমোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ভিট্রিও-রেটিনা সোসাইটি, বারডেম ও বিএডিএস -এর প্রতিনিধিগণ এ গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. জানে আলম মৃধা তার উপস্থাপনায় বলেন, “ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির সফল ও কার্যকর স্ক্রিনিং প্রোগ্রামের জন্য বিভিন্ন খাতের অংশগ্রহণে একটি কার্যকর ওয়ার্কিং কমিটি গঠন অত্যন্ত জরুরি।”
বেসরকারি খাত, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা এবং এনজিও: অর্বিস ইন্টারন্যাশনাল, হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনাল, দ্য ফ্রেড হলোস ফাউন্ডেশন, সাইটসেভার্স বাংলাদেশ, গুড পিপল ইন্টারন্যাশনাল এবং রোশ বাংলাদেশের নিজস্ব বাণিজ্যিক, মার্কেট অ্যাকসেস ও নীতিনির্ধারণী দলও আলোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
দেশের বাজারে নিজেদের নতুন স্মার্টফোন অনার এক্স৭ডি উন্মোচনের ঘোষণা দিয়েছে গ্লোবাল এআই ডিভাইস ইকোসিস্টেম প্রতিষ্ঠান অনার। জনপ্রিয় এক্স সিরিজের সর্বশেষ সংযোজন এ ফোনটি শক্তিশালী বাজেট স্মার্টফোন হিসেবে স্মার্টফোন বাজারে নতুন মানদণ্ড স্থাপন করবে। আগামী অক্টোবর মাসের শুরুর দিকে বাজারে আসবে নতুন এ স্মার্টফোন।
আগ্রহী ক্রেতারা আগামী ৪ অক্টোবর থেকে অনারের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে স্মার্টফোনটি অগ্রিম বুকিং দিতে পারবেন। অগ্রিম বুকিং দেয়া যাবে আগামী ১১ অক্টোবর পর্যন্ত। যারা শুরুতেই অগ্রিম বুকিং করবেন, তারা উপহার হিসেবে পাবেন অনারের ইয়ারবাডস।
দামের ক্যাটাগরিতে প্রথমবারের মত অনার এক্স৭ডি -তে বিশেষ ‘ইনস্ট্যান্ট এআই বাটন।’ ব্যবহারকারীদের সুবিধার্থে তৈরি এই বাটন দু’টি মোডে কাজ করবে। এ বাটনে একবার ক্লিক করেই নির্দিষ্ট অ্যাপ চালু করা যাবে কিংবা ব্যাকগ্রাউন্ড ক্লিনিং মত কাজও সহজে করা যাবে। আবার একটু বেশিক্ষণ ধরে এ বাটনে ক্লিক করে রিয়েল-টাইম অনুবাদ ও কনটেন্ট তৈরির মত অত্যাধুনিক এআই ফিচার ব্যবহার করা যাবে।
দীর্ঘস্থায়িত্ব বিবেচনায় নিয়ে ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে বিশাল ৬৫০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার আওয়ার ব্যাটারি। টানা পাঁচ বছর পর্যন্ত সুপার-ডিউরেবল পারফরমেন্স নিশ্চিত করবে এ স্মার্টফোন। ডাবল-সেল ব্যাটারি কাঠামো থাকায় ব্যবহারকারীরা স্মার্টফোনটি দ্রুত চার্জ করতে পারবেন; পাশাপাশি, উপভোগ করবেন ফোন ব্যবহারে অধিক সুরক্ষা ও দীর্ঘমেয়াদি স্থায়িত্ব।
এছাড়া, স্মার্টফোনটিতে আইপি৬৫ রেটিং পাওয়া, অর্থাৎ পানি ও ধুলো প্রতিরোধী। পাশাপাশি, এসজিএস প্রিমিয়াম পারফরমেন্সও সার্টিফিকেশনও রয়েছে ফোনটির। ফলে, হাত থেকেও পরে গেলেও স্মার্টফোনটি অনার এক্স৯সি -এর মত সুরক্ষিত থাকবে।
উদ্ভাবনের মাধ্যমে ক্রেতাদের স্মার্টফোনে দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য এআই প্রযুক্তির অভিজ্ঞতা নিশ্চিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ অনার। ক্রেতারা এই ফোনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে আরও বিশেষায়িত ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা উপভোগ করবেন।
নতুন অনার এক্স৭ডি -এর বাজারমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২২,৯৯৯ টাকা। ফোনটিতে রয়েছে ৮+৮ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি রম।
বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা সিয়াম আহমেদ এখন থেকে ইউনাইটেড আইগ্যাস এলপিজি লিমিটেড-এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। তুরস্কের শীর্ষস্থানীয় এলপিজি ব্র্যান্ড আইগ্যাস, যার রয়েছে ৬৫ বছরের বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা, এবং বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী ইউনাইটেড গ্রুপ-এর যৌথ উদ্যোগেই গঠিত ইউনাইটেড আইগ্যাস এলপিজি লিমিটেড।
সম্প্রতি রাজধানীর ইউনাইটেড গ্রুপ হেড অফিসে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইউনাইটেড গ্রুপের পরিচালক জনাব খন্দকার জায়েদ আহসান, ইউনাইটেড আইগ্যাস এলপিজি লিমিটেড-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জনাব হারুন ওর্তাজসহ কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এই চুক্তির অধীনে সিয়াম আহমেদ আইগ্যাস ইউনাইটেড-এর ব্র্যান্ড প্রচারণায় অংশ নেবেন। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সিয়াম আহমেদ বলেন:
“প্রতিটি পরিবারের জন্য নিরাপত্তা ও নির্ভরযোগ্যতা সবসময়ই অগ্রাধিকার পায়, আমার পরিবারও এর ব্যতিক্রম নয়। আইগ্যাস ইউনাইটেড মানে কোয়ালিটিসম্পন্ন একটি এলপিজি কোম্পানি যাদের আছে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা। বাংলাদেশের লাখো পরিবারের জন্য নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য জ্বালানির সমাধান নিশ্চিত করতে কাজ করছে এমন একটি ব্র্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আমি গর্বিত।”
অনুষ্ঠানে ইউনাইটেড আইগ্যাস এলপিজি লিমিটেডের সিইও জনাব হারুন ওর্তাজ বলেন:
“আমরা আনন্দিত যে সিয়াম আহমেদকে আইগ্যাস ইউনাইটেড ব্র্যান্ডের সাথে যুক্ত করতে পেরে। তরুণ প্রজন্ম ও পরিবারগুলোর কাছে তার জনপ্রিয়তা ও ইতিবাচক প্রভাব আমাদের ব্র্যান্ডের সাথে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ। সিয়াম আহমেদ-এর সঙ্গে আমাদের ব্র্যান্ডের এই অংশীদারিত্ব ভোক্তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে।”
সারাদেশের নারী উদ্যোক্তাদের দক্ষতা উন্নয়ন উদ্যোগের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন)-এর সহযোগিতায় নরসিংদীর নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ডিজিটাল সক্ষমতা উন্নয়ন কর্মশালার আয়োজন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
গত ৯ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ নরসিংদীর কো-অপারেটিভ জোনাল ইনস্টিটিউটে তিন দিনব্যাপী আয়োজিত এই কর্মসূচিতে অংশ নেন ৩০ জন সম্ভাবনাময় নারী উদ্যোক্তা। এই আয়োজনে নারী উদ্যোক্তাদের নিবিড় প্রশিক্ষণ, পরামর্শদান ও নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে তাঁদের ব্যবসা সম্প্রসারণ ও বাজারে প্রবেশের সুযোগ দানের পাশাপাশি দেশের অন্যান্য নারীদের ‘উদ্যোক্তা স্বপ্ন’ পূরণেও উদ্বুদ্ধ করা হয়।
গেটস ফাউন্ডেশনের সহায়তায় পরিচালিত ব্র্যাক ব্যাংকের সিগনেচার উদ্যোক্তা উন্নয়ন কর্মসূচি ‘আমরাই তারা’-এর অংশ হিসেবে এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। এই ডিজিটাল সক্ষমতা উন্নয়ন কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হলো নারীদের জন্য অর্থায়ন, পরামর্শ ও দক্ষতা উন্নয়ন সুবিধা সহজলভ্য করার মাধ্যমে তাঁদের ব্যবসায়িক জ্ঞান বৃদ্ধি ও ব্যবস্থাপনা সক্ষমতা শক্তিশালী করা।
আয়োজনে বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক টিমের অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকরা অংশগ্রহণকারী নারী উদ্যোক্তাদের ই-কমার্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ভিত্তিক ব্যবসায়ে সফল হওয়ার অন্যতম কৌশল হিসেবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের কার্যকর ব্যবহারের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিডিওএসএন-এর সভাপতি মুনীর হাসান এবং ব্র্যাক ব্যাংকের এসএমই ব্যাংকিংয়ের হেড অব কটেজ অ্যান্ড মাইক্রো বিজনেস কাজী দিলরুবা আক্তার।
ব্র্যাক ব্যাংকের এমন উদ্যোগ নিয়ে ব্যাংকটির অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড হেড অব এসএমই ব্যাংকিং সৈয়দ আব্দুল মোমেন বলেন, “নারী উদ্যোক্তারা দেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি। ‘আমরাই তারা’ উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা তাঁদের অর্থায়ন সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি ডিজিটাল জ্ঞানও সমৃদ্ধ করছি, যাতে তাঁরা এই দ্রুত পরিবর্তনশীল সেক্টরে সফল হতে পারেন। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, নারী উদ্যোক্তারা সফল হলে সমাজ সমৃদ্ধ হয় এবং জাতীয় অর্থনীতিও শক্তিশালী হয়।”
এ পর্যন্ত ব্র্যাক ব্যাংক দেশের ২০টি জেলায় ৩,০০০-এরও বেশি নারী উদ্যোক্তাদের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে। ভবিষ্যতে এ কর্মসূচি দেশের প্রতিটি জেলায় সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে ব্যাংকটির।
দেশের এসএমই এবং নারী উদ্যোক্তাদের পূর্ণাঙ্গ আর্থিক অংশীদার হিসেবে তাঁদের জন্য সহজ অর্থায়ন, সক্ষমতা উন্নয়ন এবং ডিজিটাল টুলসের ব্যবহার শেখানোর মাধ্যমে তাঁদের সফল ব্যবসায় গড়ে তুলতে সহায়তা করছে ব্র্যাক ব্যাংক। এভাবে ব্র্যাক ব্যাংক জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি.:
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের অর্থায়নে অগ্রাধিকার দেয়ার ভিশন নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি. ২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত দেশের অন্যতম দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী একটি ব্যাংক। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ‘BRACBANK’ প্রতীকে ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেন হয়। ১৯১টি শাখা, ৯৭টি উপশাখা, ৩৩০টি এটিএম, ৪৪৬টি এসএমই ইউনিট অফিস, ১,১২১টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং দশ হাজারেরও বেশি মানুষের বিশাল কর্মীবাহিনী নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক কর্পোরেট ও রিটেইল সেগমেন্টেও সার্ভিস দিয়ে আসছে। ব্যাংকটি দৃঢ় ও শক্তিশালী আর্থিক পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে এখন সকল প্রধান প্রধান মাপকাঠিতেই ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষে অবস্থান করছে। বিশ লাখেরও বেশি গ্রাহক নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বিগত ২৪ বছরেই দেশের সবচেয়ে বৃহৎ জামানতবিহীন এসএমই অর্থায়নকারী ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও নিয়মানুবর্তিতায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি. এর পরিচালনা পর্ষদের নির্বাহী কমিটির ২৫তম সভা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়, গুলশান-১, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি. এর নির্বাহী কমিটির সম্মানিত চেয়ারম্যান জনাব মুঃ ফরীদ উদ্দীন আহমদ। সভায় নির্বাহী কমিটির সদস্য ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান জনাব মোঃ হুমায়ুন কবীর ও ড. শহিদুল ইসলাম জাহীদ এবং ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও জনাব মোঃ হুমায়ুন কবির উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোহাম্মদ ইকবাল এবং জনাব মিজানুর রহমান কার্যপোলক্ষ্যে সভায় যোগদান করেন।
মন্তব্য