পুরান ঢাকার নিমতলীতে রাসায়নিক দ্রব্যের গুদামে বিস্ফোরণে ২০১০ সালের ৩ জুন ১২৪ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয় অনেকে। সম্পদেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সাধারণ অগ্নিকাণ্ড বিস্ফোরণে রূপ নেয় রাসায়নিক দ্রব্যের কারণে। কিন্তু এ ঘটনার এক দশকেও পুরান ঢাকা থেকে সরেনি এসব গুদাম।
যদিও দশ বছর আগে দুর্ঘটনা রোধসহ আবাসিক এলাকা থেকে রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবসা ও গুদাম সরিয়ে নেয়ার কথা বলেছিল সরকার। তা না হওয়ায় এরই মধ্যে আরও দুবার প্রাণহাণির ঘটনা ঘটেছে।
২০১৯ সালে ২০ ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৭১ জনের মৃত্যু হয়। আবারও গুদাম সরিয়ে নিতে তোড়জোর শুরু হয়। নেয়া হয় স্থায়ী কেমিক্যাল পল্লি গঠনের উদ্যোগ।
তবে দুই বছরে সেখানে তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। এমনকি কেমিক্যাল পল্লি স্থাপনের আগে রাসায়নিক গুদাম সরিয়ে নিতে অস্থায়ী গুদাম নির্মাণের উদ্যোগেরও পূর্ণতা পায়নি এখনও।
এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৩টার দিকে পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় আবাসিক ভবনের রাসায়নিক গুদামে আগুন লাগে। বিস্ফোরকে ঠাসা গুদামের সে আগুন ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের নেভাতে সময় লাগে ৩ ঘণ্টা। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চারজনে। আহত অন্তত ২১ জন। অগ্নিদগ্ধদের কয়েকজন রয়েছেন আইসিউতে।
আহতদের ভর্তি করা হয় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। এটির সমন্বয়ক ডা. সামন্তলাল সেন নিউজবাংলাকে জানান, দগ্ধদের কেউ আশঙ্কামুক্ত নন।
দিনের পর দিন দুর্ঘটনায় নিহতের তালিকা লম্বা হচ্ছে। প্রশ্ন জাগে, বিস্ফোরকমুক্ত পুরানা ঢাকা পেতে আর কত অপেক্ষা করতে হবে? কবে সরবে ব্যবসায়ীদের রাসায়নিক কারখানা?
প্রকল্পের প্রকৃত অবস্থা
২০১০ সালের জুনে নিমতলীর অগ্নিকাণ্ডের পর রাসায়নিক গুদাম স্থানান্তরে জন্য আলাদা পল্লি নির্মাণের স্থান ঠিক করা হয়েছিল কেরাণীগঞ্জে। এর আট বছর পর ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর ‘বিসিক কেমিক্যাল পল্লি, ঢাকা’ নামে একটি প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) অনুমোদন পায়।
কিন্তু তা আলোর মুখ দেখেনি। পরে ২০১৯ সালে চুড়িহাট্টায় আবারও প্রাণহানি। সবার টনক নড়ে। কেরাণীগঞ্জে রাসায়নিক পল্লি স্থাপনের সিদ্ধান্ত বাতিল হয়ে তখন নতুন স্থান ঠিক হয় মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান।
প্রকল্পটিও সংশোধন হয় চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডির পর। শুরুতে এ প্রকল্প ২০২১ সালের জুনের শেষ হওয়ার কথা ছিল। পরে সময় বাড়িয়ে করা হয় ২০২২ সালের জুন। শুধু সময়ই বাড়েনি, নাম পরিবর্তন হয়ে এটি ‘বিসিক কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক, মুন্সিগঞ্জ’ হয়েছে। প্রকল্পের ব্যয়ও বেড়েছে আট গুণ। প্রথমে প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছিল ২০১ কোটি ৮১ লাখ টাকা। সংশোধনের পর এই প্রকল্পের ব্যয় পাঁচ গুণ বেড়ে নির্ধারিত হয়েছে ১ হাজার ৬১৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।
ঢাকার কেরাণীগঞ্জে ৫০ একর জমিতে হওয়ার কথা থাকলেও মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার তুলশিখালী ব্রিজসংলগ্ন গোয়ালিয়া, চিত্রকোট ও কামারকান্দা নামক তিনটি মৌজার মোট ৩১০ একর জমির ওপর ২ হাজার ১৫৪টি শিল্প প্লট তৈরির কথা রয়েছে।
প্রকল্পের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে শিল্প মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, দুই বছর চলে গেছে শুধু জমি অধিগ্রহণেই। এখনও মাটি ফেলে সেই জায়গা ও অবকাঠামো নির্মাণ উপযোগী করে তুলতে পারেনি প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন, বিসিক।
ডিসেম্বর পর্যন্ত এ প্রকল্পে ব্যয় হয়েছিল ৫৪০ কোটি টাকার মতো। বাস্তবায়ন মাত্র ৩৩ শতাংশ। এমনকি চলতি অর্থবছরে প্রকল্পে বরাদ্দ ছিল মাত্র ৬২ কোটি টাকা। কম গুরুত্বপূর্ণ মনে করে সংশোধিত এডিপিতে তা আরও কমিয়ে করা হয় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে কাজ শেষ করার সময় রয়েছে এক বছর। কিন্তু এ সময়ে ১ হাজার কোটি টাকার বেশি কাজ করতে হবে। মাটি ভরাটসহ অবকাঠামো নির্মাণও শেষ করতে হবে। অথচ প্রথম পরিকল্পনা মতে এটি আগামী জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। প্রকল্পের কাজ শেষ হতে অরও দুই বছর লাগতে পরে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
অস্থায়ী গুদাম
২০১৯ সালের জুনে শিল্প মন্ত্রণালয়ে জরুরি সভায় সিদ্ধান্ত হয় মুন্সিগঞ্জ প্রস্তুত হওয়ার আগে সাময়িকভাবে রাসায়নিক কারখানা ঢাকার শ্যামপুরে উজালা ম্যাচ ফ্যাক্টরিতে নেয়া হবে। ছয় মাসের মধ্যে এগুলো স্থানান্তরের জন্য ব্যবসায়ীদের জায়গা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু দুই বছরে একটি রাসায়নিক কারখানাও সরেনি। কদমতলী থানার শ্যামপুরে বিসিআইসির উজালা ম্যাচ ফ্যাক্টরি ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে টঙ্গীর কাঁঠালদিয়ায় বিএসইসির খালি জায়গায় রাসায়নিক গুদাম সরাতে নেয়া হয় প্রকল্প। এক বছরের মধ্যে যা বাস্তবায়নের কথা ছিল। কিন্তু দুই বছর পরও সেগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। প্রাথমিকভাবে দুটি স্থানে ১২ দশমিক ১৭ একর জমিতে ৪ লাখ বর্গফুট আয়তনের স্টিল শেড নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। সরকারি খরচে নির্মিত অবকাঠামোতে ব্যবসায়ীরা সেখানে ন্যায্য ভাড়ায় রাসায়নিক পদার্থ রাখতে পারবেন।
চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান ও বর্তমানে পরিকল্পনা কমিশনে বাস্তবায়ন, মূল্যায়ন ও পরিবীক্ষণ বিভাগের সচিব (আইএমডি) প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, ‘আমি আইএমইডি সচিব হিসেবে গত ফেব্রুয়ারিতে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করি। সেখান এখন পর্যন্ত শুধু জমি অধিগ্রহণই হয়েছে মাত্র। পরিদর্শন শেষে আইএমইডি করণীয় সম্পর্কে সুপরিশ দিয়ে প্রতিবেদনও করেছে। তা সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানোও হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘চুড়িহাট্টার ঘটনায় আমরা তদন্ত করে পুরান ঢাকার গোডাউন দ্রুত সরিয়ে নেয়াসহ বেশ কিছু সুপারিশ করেছিলাম। পরবর্তী কার্যক্রম দেখা বা সুপারিশগুলো কাজ বাস্তবায়ন করার কথা শিল্প মন্ত্রণালয়ের। তারাই ভালো বলতে পারবে, কতটুকু কী করেছে।’
তবে এ বিষয়ে শিল্প সচিব কে এম আলী আজম ও বিসিক চেয়ারম্যান মো. মোশতাক হাসান, এনডিসির মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি। এমনি ফোনে বার্তা পাঠিয়েও উত্তির মেলেনি।
চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডির পর ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে গঠিত তদন্ত কমিটি বেশ কিছু সুপারিশ করে। এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হয়নি। কমিটির প্রধান ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক (ঢাকা বিভাগ) দেবাশীষ বর্ধন নিউজ বাংলাকে বলেন, ‘পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যালের গোডাউনগুলো যত দ্রুত সম্ভব সরিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।
‘এগুলো সেখান থেকে না গেলে এমন ঘটনা ঘটতেই থাকবে। যেমন আজ আরও প্রাণহাণি ঘটল। তাই আরও প্রাণহানি ঘটার আগে দ্রুত সংস্থার সমন্বয়ে গোডাউনগুলো সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা প্রায় ১৮টি সুপারিশ করেছিলাম। কিন্তু তার কোনোটি বাস্তবায়ন হয়েছে বলে শুনিনি।’
পুরান ঢাকার বাসিন্দারা জানান, সেখানকার প্রায় সব বাসা-বাড়ির নিচতলা বা আন্ডারগ্রাউন্ডে কেমিক্যালের গোডাউন রয়েছে। এসব গুদামে যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে কেমিক্যাল মজুত করা হয় না। ছোট ছোট দুর্ঘটনা প্রায়ই ঘটে। সেগুলো সামনেও আসে না। ফলে সব সময় তারা আতঙ্কে থাকেন। বেশি ভাড়া পেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও বাড়ির মালিকেরা গোডাউন ভাড়া দিচ্ছে। এতে আবাসিক ভবনে কেমিক্যাল গোডাউন ও ঝুঁকিপূর্ণ কারখানার সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু বাসিন্দারা চান আবাসিক এলাকা থেকে কেমিক্যালের গোডাউনগুলো যেন দ্রুত অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়।
দেশের ক্রমবর্ধমান স্টার্ট-আপ খাতকে অর্থায়ন সুবিধা দিতে ব্র্যাক ব্যাংকের সাথে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এই চুক্তির আওতায় স্টার্ট-আপ খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের সৃষ্ট ৫০০ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল ব্যবহারের সুযোগ পাবে ব্র্যাক ব্যাংক, যা ব্যাংকটির এই খাতে অর্থায়ন সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করবে। এ উদ্যোগের লক্ষ্য হলো, অর্থায়ন সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে উদীয়মান উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং তাঁদেরকে জাতীয় অর্থনীতিতে আরও বেশি অবদান রাখতে উৎসাহিত করা।
২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহার ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান এবং ব্র্যাক ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড হেড অব এসএমই ব্যাংকিং সৈয়দ আব্দুল মোমেন চুক্তিপত্র হস্তান্তর করেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অংশগ্রহণকারী ২২টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস ডিপার্টমেন্টের সহায়তায় এই উদ্যোগটি বাস্তবায়ন করা হবে।
এই সম্ভাবনাময় খাতের উদ্যোক্তাদের অর্থায়নের মাধ্যমে ব্র্যাক ব্যাংক বাংলাদেশের স্টার্ট-আপ ইকোসিস্টেমকে শক্তিশালী করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই খাতটি ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে এবং বৈশ্বিক অংশীদারদের সঙ্গে টেকসই সম্পর্কও গড়ে তুলছে। ব্র্যাক ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনঃঅর্থায়ন সুবিধাটি উদ্যোক্তাদের উদ্ভাবনী উদ্যোগ সম্প্রসারণের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধন পেতে সহায়তা করবে, যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
ব্র্যাক ব্যাংকের এমন উদ্যোগ বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় তরুণ উদ্যোগগুলোর বিকাশে ব্যাংকটির ব্যক্ত করা প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। ব্র্যাক ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সরকারের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা দেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়নে অবদান রাখবে।
ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি.:
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের অর্থায়নে অগ্রাধিকার দেয়ার ভিশন নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি. ২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত দেশের অন্যতম দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী একটি ব্যাংক। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ‘BRACBANK’ প্রতীকে ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেন হয়। ২৯১টি শাখা ও উপশাখা, ৩৩০টি এটিএম, ৪৪৬টি এসএমই ইউনিট অফিস, ১,১২১টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং দশ হাজারেরও বেশি মানুষের বিশাল কর্মীবাহিনী নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক কর্পোরেট ও রিটেইল সেগমেন্টেও সার্ভিস দিয়ে আসছে। ব্যাংকটি দৃঢ় ও শক্তিশালী আর্থিক পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে এখন সকল প্রধান প্রধান মাপকাঠিতেই ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষে অবস্থান করছে। বিশ লাখেরও বেশি গ্রাহক নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বিগত ২৪ বছরেই দেশের সবচেয়ে বৃহৎ জামানতবিহীন এসএমই অর্থায়নকারী ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও নিয়মানুবর্তিতায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
দেশে বৈদ্যুতিক থ্রি-হুইলার খাতে স্মার্ট ও জ্বালানি-সাশ্রয়ী ব্যাটারির ব্যবহার বাড়াতে কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি ও সোলশেয়ার লিমিটেড কৌশলগত অংশীদারিত্বে যুক্ত হয়েছে। মঙ্গলবার (০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫) রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক কিমিয়া সাআদত এবং সোলশেয়ার লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী ড. সেবাস্টিয়ান গ্রোহ।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিউনিটি ব্যাংকের, হেড অব করপোরেট ব্যাংকিং ও হেড অব বিজনেস (ব্রাঞ্চ) ড. মো. আরিফুল ইসলাম; হেড অব এডিসি অ্যান্ড হেড অব এমডি’স কোঅর্ডিনেশন টিম মো. মামুন-উর রহমান; সোলশেয়ার-এর ফাইন্যান্স ডিরেক্টর আনিসা আলী, সিএফএ সহ উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এই অংশীদারিত্বের ফলে দেশের শত শত বৈদ্যুতিক পরিবহনের গ্যারেজ সহজেই স্মার্ট ব্যাটারি প্রযুক্তি গ্রহণে সক্ষম হবে। এখন পর্যন্ত উচ্চ ব্যয়ের কারণে অনেক উদ্যোক্তা ব্যাটারি ব্যবহারে আগ্রহী হলেও অর্থায়নের সীমাবদ্ধতায় তা সম্ভব হচ্ছিল না। কমিউনিটি ব্যাংকের গ্রিন এসএমই ঋণ সুবিধা ও সোলশেয়ার -এর উদ্ভাবনী পে-অ্যাজ-ইউ-গো (পিএওয়াইজি) প্রযুক্তি একত্রে উদ্যোক্তাদের জন্য সাশ্রয়ী, নমনীয় ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়নের নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে।
এ উদ্যোগের মাধ্যমে গ্যারেজ মালিকরা টেকসই অর্থায়ন সুবিধা পাবেন, দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে জ্বালানি-সাশ্রয়ী ব্যাটারি ব্যবহার, দেশের বৈদ্যুতিক পরিবহন খাতে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত হবে এবং বাংলাদেশ পরিচ্ছন্ন জ্বালানির দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে।
এই উদ্যোগকে দেশের পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ও টেকসই পরিবহন ব্যবস্থার জন্য এক মাইলফলক হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
যমুনা ব্যাংক পিএলসি. এবং অ্যাপোলো ক্লিনিক লাইসেন্সঃ জেএমআই স্পেশালাইজড হাসপাতাল লিমিটেডের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়েছে। গত ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে রাজধানীর যমুনা ব্যাংক টাওয়ারে এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। যমুনা ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিবিও নূর মোহাম্মদ এবং অ্যাপোলো জেএমআই স্পেশালাইজড হাসপাতাল লিমিটেডের উপদেষ্টা মসিউর রহমান কামাল উক্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। অনুষ্ঠানে যমুনা ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিওও মো. আব্দুস সালামসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এই চুক্তির মাধ্যমে যমুনা ব্যাংক তাদের সম্মানিত গ্রাহক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং তাঁদের পোষ্যদের জন্য বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা আরও সহজলভ্য ও সুফলদায়ক করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করল। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অ্যাপোলো ক্লিনিকের লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে জেএমআই স্পেশালাইজড হাসপাতালের সঙ্গে এই অংশীদারিত্ব গ্রাহকদের জন্য বিশেষ সুবিধাসহ উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করবে।
শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি এর করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত সোমবার কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার হতদরিদ্র কৃষক ও রিকশাচালককে স্ত্রী ও সন্তানের চিকিৎসার জন্য পাঁচ লাখ টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি।
শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির করপোরেট প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ইমতিয়াজ ইউ. আহমেদ হতদরিদ্র কৃষক ও রিকশাচালক মো. মেহেদী হাসানকে ওই অনুদানের চেক প্রদান করেন।
ওই অনুদানের চেক প্রদানকালে শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির এসইভিপি ও কোম্পানি সচিব জনাব মো. আবুল বাশার, ব্যাংকের এসএভিপি মো. জাকির হোসেন, ব্যাংকের জনসংযোগ বিভাগ ও ব্যাংক ফাউন্ডেশনের ইনচার্জ কে. এম. হারুনুর রশীদ এবং ব্যাংক ফাউন্ডেশন এর এক্সিকিউটিভ অফিসার মো. কামাল মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় সীমান্ত ব্যাংকের উদ্যোগে শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) এবং টেকনাফ (কক্সবাজার) উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছের চারা রোপনের মাধ্যমে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হয়। এই কর্মসূচির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সচেতন করা হয় এবং বৃক্ষরোপণে উৎসাহিত করা হয়। শ্যামনগরের ৭টি এবং টেকনাফে ২টি বিদ্যালয়ে গাছের চারা রোপণ করা হয়।
সীমান্ত ব্যাংকের টেকনাফ শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ হোসেন এবং শ্যামনগর উপশাখার ব্যবস্থাপক মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম যথাক্রমে টেকনাফ এবং শ্যামনগরে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচী সমন্বয় করেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ এবং শিক্ষার্থীগন স্বতঃস্ফূর্তভাবে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহন করেন।
বাংলাদেশে প্রতি বছর হাজারো মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে যক্ষ্মা (টিবি)। কেবল ২০২৩ সালেই ৪৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে- ফলে প্রতি ১২ মিনিটে একজন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন যক্ষ্মায়। এই জাতীয় সংকট মোকাবেলায় সাহসী উদ্যোগ নিয়েছে প্রাইম ব্যাংক পিএলসি। জীবনরক্ষাকারী যক্ষ্মা প্রতিরোধ কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করতে প্রাইম ব্যাংক বিশ্বখ্যাত স্বাস্থ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআর,বি-এরর সাথে অংশীদারিত্ব করেছে।
আজ (০৯ সেপ্টেম্বর) গুলশানে প্রাইম ব্যাংকের করপোরেট অফিসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এক সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষর হয়। চুক্তি অনুযায়ী, প্রাইম ব্যাংক এক বছরের জন্য আইসিডিডিআর,বি-এর সিলেট টিবি স্ক্রিনিং অ্যান্ড ট্রিটমেন্ট সেন্টার (TBSTC)-এর যক্ষ্মা পরীক্ষার ও চিকিৎসা সেবার ধারাবাহিকতায় আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে। প্রাইম ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান ও. রশীদ এবং আইসিডিডিআর,বি-এর নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমীদ আহমেদ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
দেশে যক্ষ্মা প্রতিরোধে দীর্ঘদিনের আস্থাভাজন প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআর,বি ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৫ কোটি ২০ লাখেরও বেশি মানুষকে স্ক্রিনিং করেছে। এ সময়ে শনাক্ত হয়েছে ১ লাখ ৪৮ হাজারের বেশি টিবি রোগী, যার মধ্যে ১৮ হাজার শিশু। পাশাপাশি ৫,৫০০-এরও বেশি ওষুধ-প্রতিরোধী টিবি রোগীর চিকিৎসা নিশ্চিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এই সহযোগিতার মাধ্যমে প্রাইম ব্যাংক জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কমিউনিটির কল্যাণে তাদের অঙ্গীকার আরও জোরদার করছে। ব্যাংকটি প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু হ্রাস এবং একটি সুস্থ, সহনশীল বাংলাদেশ গঠনে অবদান রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
উপর্যুক্ত বিষয়ের প্রতি সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলো।
০২। সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কাস্টমস হাউস/স্টেশনে আমদানিকালে দাখিলকৃত পণ্য ঘোষণায় প্রদত্ত পণ্যের বর্ণনা ও HS Code কায়িক পরীক্ষায় পণ্যের নমুনা কিংবা শুল্কায়ন পরবর্তী সময়ে পণ্যের ঘোষিত বর্ণনা পরিবর্তিত হয়, যা ক্ষেত্রবিশেষে প্রতিষ্ঠানের বন্ড লাইসেন্স অথবা প্রাপ্যতা শীট বা সংশ্লিষ্ট Utilization Declaration (UD) তে অন্তর্ভূক্ত থাকে না। ফলে শুল্কায়নকালে উহা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতার সৃষ্টি হয়। ফলশ্রুতিতে যথাসময়ে কাঁচামাল/পণ্য খালাস না হওয়ায় রপ্তানি আদেশ অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্য জাহাজীকরণে বিঘ্ন ঘটছে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড অবগত হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে বর্তমানে বৈশ্বিক বাণিজ্যিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ও রপ্তানি বাণিজ্যের বৃহত্তর স্বার্থে জরুরি বিবেচনায় নিম্নরূপ নির্দেশনা প্রদান করা হলো:
(ক) বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভূক্ত বর্ণনা ও HS Code অনুযায়ী আমদানিকৃত পণ্যের ঘোষণা দাখিল করার পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ভিন্ন HS Code নিরূপণ করলে এবং নিরূপিত HS Code এর প্রথম ৪ ডিজিট বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভূক্ত HS Code এর প্রথম ৪ ডিজিট এর সাথে মিল থাকলে; আমদানিকারক পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে এই নিরূপিত HS Code বন্ড লাইসেন্সে ও ইউডিতে অন্তর্ভূক্ত করবেন মর্মে একটি অঙ্গীকারনামা সংশ্লিষ্ট কাস্টমস হাউস এর কমিশনার এর নিকট দাখিল করবেন যার বিপরীতে কমিশনার পণ্যচালান খালাসের অনুমতি প্রদান করে সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেটকে অবহিত করবেন।
(খ) বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভূক্ত বর্ণনা ও HS Code অনুযায়ী আমদানিকৃত পণ্যের ঘোষণা দাখিল করার পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ভিন্ন বর্ণনা নিরূপণ করলে; আমদানিকারক পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে উক্তরূপ নিরূপিত পণ্যের বর্ণনা বন্ড লাইসেন্সে ও ইউডিতে অন্তর্ভূক্ত করবেন মর্মে একটি অঙ্গীকারনামা সংশ্লিষ্ট কাস্টমস হাউস এর কমিশনার এর নিকট দাখিল করবেন যার বিপরীতে কমিশনার পণ্যচালান খালাসের অনুমতি প্রদান করে সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেটকে অবহিত করবেন।
গ) বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভূক্ত বর্ণনা ও HS Code অনুযায়ী আমদানিকৃত পণ্যের ঘোষণা দাখিল করার পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ভিন্ন HS Code নিরূপণ করা হলে এবং বন্ড লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান কাস্টমস বন্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেটের মাধ্যমে তার প্রাপ্যতায় উক্ত HS Code অন্তর্ভুক্ত করলে কাস্টমস হাউস এর কমিশনার পণ্যচালান খালাসের অনুমতি প্রদান করবেন এবং পণ্য চালান খালাসের তথ্য সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেটকে অবহিত করবেন।
০৩। এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে; এবং বর্তমানে উক্তরূপ কারণে শুল্কায়ন নিষ্পত্তির জন্য অপেক্ষমান পণ্যচালানসমূহের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
মন্তব্য