সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে তালিকাভুক্ত প্রায় সব মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দর বৃদ্ধির পর রোববার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেও বেশ কিছু ফান্ডের দাম বাড়ল।
এটা স্পষ্ট যে অভিহিত মূল্যের অনেক নিচে থাকা ও বাজারমূল্যের দ্বিগুণেরও বেশি সম্পদমূল্য থাকা এই খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীরা আকৃষ্ট হচ্ছেন।
তালিকাভুক্ত ৩৭টি ফান্ডের মধ্যে রোববার বেড়েছে ১৩টির দাম। কমেছে ১২টির। এবং পাল্টায়নি ১২টির।
বৃহস্পতিবার এসব ফান্ডের মধ্যে বেড়েছিল ৩৬টির দাম। একদিনে যতটা বাড়া সম্ভব ততটা বাড়ার পর ৭টি ফান্ডের ইউনিটধারীরা এই দরে বিক্রি করতে রাজি হননি।
গত নভেম্বর-ডিসেম্বরে ফান্ডের দাম উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়ার পর আবার কমে যাওয়ার পর বিনিয়োগকারীরা হতাশ হয়ে পড়েন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে হারানো দামের কিছুটা ফিরে পাওয়া যাচ্ছে।
৮৩ শতাংশ অভিহিত মূল্যের নিচে
পুঁজিবাজারে যেসব মিউচ্যুয়াল ফান্ড তালিকাভুক্ত আছে, তার ৮৩ শতাংশই অভিহিত মূল্য ১০ টাকার নিচে লেনদেন হচ্ছে। কোনো কোনো ফান্ডের বাজারমূল্য সম্পদমূল্যের অর্ধেকেরও কম।
গত এক দশক ধরে পুঁজিবাজারে মন্দাভাবের প্রভাবে মূলত এই অবস্থা তৈরি হয়েছে। বাজার ক্ষণিক সময়ের জন্য উত্থানে থাকলেও আবার বড় সময়ের জন্য পতনমুখী হয়েছে এই ১০ বছরে।
এ কারণে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো কোনো কোনো প্রান্তিকে মুনাফা করলেও পরের প্রান্তিকেই আবার লোকসানে গেছে। ফলে বছর শেষে ভালো মুনাফা দিতে পারেনি। সম্পদমূল্যও সেভাবে বাড়েনি।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ফান্ডগুলো ব্যাপক মুনাফা করেছে। যদিও গত তিন মাসে মূল্য সূচক প্রায় ২০ শতাংশ পতন হওয়ার কারণে তৃতীয় প্রান্তিকে ফান্ডের আয় কেমন হবে, তা নিয়ে আছে প্রশ্ন।
তার পরেও প্রথম ছয় মাসে যে আয় করেছে, সেটি বছর শেষে ধরে রাখতে পারলেও আকর্ষণীয় লভ্যাংশ পাওয়ার আশা করছেন বিনিয়োগকারীরা।
তালিকাভুক্ত অন্যান্য কোম্পানির তুলনায় মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লভ্যাংশ প্রদানের ক্ষেত্রেও আছে ভিন্নতা।
তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো বছর শেষে যতই আয় করুক, তার কত অংশ বিনিয়োগকারীদের মুনাফা হিসেবে দিতে হবে, তার কোনো আইন নেই। কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদই এই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। তবে বার্ষিক সাধারণ সভায় বিনিয়োগকারীদের মতামত দেয়ার সুযোগ থাকে। যদিও তাদের মতামতে লভ্যাংশ পাল্টেছে, এমন ঘটনা বিরল।
মিউচ্যুয়াল ফান্ডের নীতিমালা অনুযায়ী যত আয় হবে তার ৭০ শতাংশ লভ্যাংশ হিসেবে দিতে হবে। মাঝে লভ্যাংশ হিসেবে নগদ অর্থের পাশাপাশি রিইনভেস্টমেন্ট হিসেবে ইউনিট দেয়ার সুযোগ থাকলেও পরে তা বাতিল করা হয়েছে। ফলে এখন থেকে আয়ের কমপক্ষে ৭০ শতাংশ নগদে বিনিয়োগকারীদের দিতে হবে।
লতি বছর এখন পর্যন্ত যেসব মিউচ্যুয়াল ফান্ড লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, সেগুলোর মুনাফাও গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। তবে একটি ফান্ড মুনাফার মাত্র ১৬ শতাংশ লভ্যাংশ হিসেবে দেয়ার ঘোষণা করায় নীতিমালা ভঙ্গ হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভ্যানগার্ড রূপালী ব্যাংক ব্যালান্সড ফান্ডকে এত কম পরিমাণ লভ্যাংশ দেয়ার সুযোগ করে দিয়েছে খোদ বিএসইসি। গত বছর ইউনিট প্রতি এক টাকার বেশি যে লোকসান হয়েছিল, এবার মুনাফা থেকে সেই অর্থের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে।
বিশ্লেষকের বক্তব্য
সম্প্রতি নিউজবাংলার সঙ্গে আলোচনায় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল-ইসলাম বলেছিলেন, মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো হচ্ছে পুঁজিবাজারের প্রাণ। বিনিয়োগকারীরা এখানে তাদের পেনশনের টাকা বিনিয়োগ করে। তাদের সারা জীবনের সঞ্চয় বিনিয়োগ করে। কিন্ত বছর শেষে যদি ভালো রিটার্ন না পান তাহলে কেন তারা এখানে বিনিয়োগ করবে।
মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো যদি ভালো লভ্যাংশ দেয় তাহলে এক বিনিয়োগকারী আরেকজন বিনিয়োগকারীকে নিয়ে আসবে। এতে ফান্ডগুলো বড় হবে। তাই মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোকে অবশ্যই ভালো লভ্যাংশ দিতে হবে। তাহলেই বাজারে ফান্ডগুলোর গুনগতমান ভালো হবে। বিনিয়োগকারীদেরও আগ্রহ বাড়বে।
ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক প্রধান গবেষণা কমকর্তা দেবব্রত কুমার সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে, ফান্ডগুলো পূর্বে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা অনুযায়ী রিটার্ন দেয়নি। এতে যারা বিনিয়োগ করতো তারা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। ফলে এখন যে ফান্ডগুলো ভালো করছে সেগুলোতেও বিনিয়োগাকরীদের আগ্রহ কম।
‘তবে ফান্ডগুলো যেহেতু ছয় মাসে ভালো মুনাফা দেখিয়েছে, ফলে ফান্ড ম্যানেজারদের উচিত হবে সেখান থেকে বিনিয়োগকারীদের বছর শেষে ভালো লভ্যাংশ দেয়ার। তাহলে হয়তো ভবিষ্যতে মিউচ্যুয়াল ফান্ড আর আন্ডার প্রাইসে থাকবে না।’
ফান্ডগুলোর ইউনিট প্রতি দর ক্রয় সীমার মধ্যে আছে বলেও মনে করেন দেবব্রত।
অভিহিত মূল্যের নীচে ৩১
জনতা ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট প্রতি দর জানুয়ারী থেকে কমছে। ৬ টাকা ৪০ পয়সা থেকে এপ্রিলে এসে দর দাঁড়িয়েছিল ৪ টাকায়। সেখান থেকে দর বেড়ে এখন লেনদেন হচ্ছে ৫ টাকা ৪০ পয়সা। গত দুই বছরে ফান্ডটির সর্বোচ্চ দর উঠেছিল ৭ টাকা ৩০ পয়সা।
এবি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড গত ছয় মাস ইউনিটপ্রতি আয় করেছে ১ টাকা ৯৫ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে লোকসান ছিল ৯২ পয়সা।
তারপরও ফান্ড লেনদেন হচ্ছে অভিহিত মূল্যের নীচে। রোববার ফান্ডটি লেনদেন হয়েছে ৫ টাকা ৬০ পয়সায়। আগের দিনের তুলনায় দর বেড়েছে ১০ পয়সা।
এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামী মিউচ্যুয়াল ফান্ডের অভিহিত মূল্য ১০ টাকা। কিন্ত বর্তমানে এটি লেনদেন হচ্ছে ৮ টাকা ২০ পয়সায়।
রোববার ফান্ডটির শেয়ার প্রতি দর কমেছে ১০ পয়সা।
এশিয়ান টাইগার মিউচ্যুয়াল ফান্ড গত ছয় মাসে ইউনিটপ্রতি আয় করেছে ৭৮ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে লোকসান ছিল ৬৪ পয়সা।
ফান্ড রোববার লেনদেন হয়েছে ৮ টাকা ৯০ পয়সা। এ সময়ে ফান্ডটির দর সর্বনিম্ম ৮ টাকা ৭০ পয়সা পর্যন্ত নামলেও দিন শেষে আগের দিনের মতো দর অপরিবর্তীত ছিল।
গত বছরের নভেম্বরে ফান্ডটির সর্বোচ্চ দর ছিল ১২ টাকা ৭০ পয়সা।
সিএপিএল বিডিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ান গত ছয় মাসে ইউনিট প্রতি আয় বেড়েছে ১ টাকা ২০ পয়সা। তারপরও ফান্ডটি তার অভিহিত মূল্যে বেশি উঠতে পারেনি।
বর্তমানে ফান্ডটির প্রতিটি ইউনিট লেনদেন হচ্ছে ৯ টাকা ২০ পয়সায়।
ডিবিএসই ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড রোববার লেনদেন হয়েছে ৬ টাকা ৫০ পয়সা। এদিন ফান্ডটির ইউনিট প্রতি দর কমেছে ১০ পয়সা।
ইবিএল ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দর বেড়েছে ১০ পয়সা। আর লেনদেন হয়েছে ৬ টাকা ৩০ পয়সায়।
ফান্ডটি তাদের প্রথম ছয় মাসের যে হিসাব দেখিয়েছে তাতে ইউনিট প্রতি আয় বেড়েছে ১ টাকা ৩১ পয়সা। ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের এই ফান্ডটি এখন লেনদেন হচ্ছে ৬ টাকা ২০ পয়সায়।
ইবিএল এনআরবি মিউচ্যুয়াল ফান্ডও লেনদেন হচ্ছে ৫ টাকা ৪০ পয়সায়।
এক্সিম ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড লেনদেন হচ্ছে ৫ টাকা ৮০ পয়সা। রোববার ফান্ডটির দর বেড়েছে ১০ পয়সা।
ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড লেনদেন হয়েছে ৫ টাকায়।
গ্রিনডেল্টা মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট প্রতি দর ৭ টাকা ৩০ পয়সা। রোববার ফান্ডটির দর কমেছে ২০ পয়সা।
এছাড়া আইসিবির পাঁচটি মিউচ্যুয়াল ফান্ড লেনদেন হচ্ছে সর্বোচ্চ ৮ টাকা ৩০ পয়সা থেকে সর্বনিম্ম ৬ টাকায়।
আইএফআইসি ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট প্রতি দর ৫ টাকা ৬০ পয়সা। রোববার ফান্ডটির দর পাল্টায়নি।
আইএফআইসি ইসলামী মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ান এর ইউনিট প্রতি দর ৬ টাকা। এমবিএল ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড লেনদেন হয়েছে ৭ টাকা ৬০ পয়সা।
এনসিসি ব্যাংক মিউচ্যয়াল ফান্ড ওয়ান লেনদেন হয়েছে ৭ টাকা ২০ পয়সা।
পিএইচপি ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট প্রতি দর ৫ টাকা ২০ পয়সা। ফিনিক্স ফিন্যান্স ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট প্রতি দর ৭ টাকা।
পপুলার লাইফ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড বছরের প্রথম ছয় মাসে ইউনিটপ্রতি আয় করেছে ১ টাকা ৫২ পয়সা। গত বছর একই সময়ে লোকসান ছিল ৪৭ পয়সা।
১০ টাকা অভিহিত মূল্যের এই ফান্ডটির ইউনিট এখন লেনদেন হচ্ছে ৪ টাকা ৯০ পয়সায়।
প্রাইম ব্যাংক ফার্স্ট আইসিবি এএমসিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ডটি লেনদেন হয়েছে ৬ টাকা ৩০ পয়সা। রোববার ফান্ডটি ইউনিট দর ১০ পয়সা বেড়েছে।
এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ডের ইউনিট প্রতি দর বর্তমানে ৮ টাকা।
এসইএমএল আইবিবিএল শরিয়াহ ফান্ডের ইউনিটপ্রতি দর ৯ টাকা ৯০ পয়সায়।
এসইএমএল এফবিএলএসএল গ্রোফ ফান্ডের দর ইউনিটপ্রতি ৮ টাকা।
এসইএমএল আইবিবিএল শরিয়াহ ফান্ডে দর ইউনিটপ্রতি ৯ টাকা ৯০ পয়সায়।
এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ডের দর ইউনিটপ্রতি ৮ টাকা।
ট্রাস্ট ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দর ইউনিটপ্রতি ৫ টাকা ৭০ পয়সা।
ভ্যানগার্ড এএমএল বিডি ফিন্যান্স মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ান এর ইউনিটপ্রতি দর ৭ টাকা ৫০ পয়সা।
ভ্যানগার্ড এএমএল রূপালী ব্যাংক ব্যালেন্স ফান্ডের ইউনিটপ্রতি দর ৭ টাকা ৫০ পয়সা।
অভিহিত মূল্যের উপরে ছয়টি
সিএপিএম আইবিবিএল ইসলামিক মিউচ্যুয়াল ফান্ড বছরের প্রথম ছয় মাসে ইউনিটপ্রতি আয় বেড়েছে ৮০ পয়সা। ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের ফান্ডটি ইউনিটপ্রতি লেনদেন হচ্ছে ২১ টাকা ৯০ পয়সায়।
রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স মিউচ্যুয়াল ফান্ড বছরের প্রথম ছয় মাসে ইউনিটপ্রতি আয় করেছে ২ টাকা ৩৪ পয়সা। গত বছর একই সময়ে আয় ছিল ১৮ পয়সা।
১০ টাকা অভিহিত মূল্যের এই ফান্ডটি ইউনিটপ্রতি লেনদেন হচ্ছে ১১ টাকা ৬০ টাকায়।
সাউথইস্ট ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডটি রোববার লেনদেন হয়েছে ১২ টাকা ৬০ পয়সায়।
এনএলআই ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড লেনদেন হয়েছে ১৩ টাকা ৩০ পয়সা।
গ্রামীণ ওয়ান স্কিম-২ মিউচ্যুয়াল ফান্ড লেনদেন হচ্ছে ১৬ টাকা ৫০ পয়সা। প্রথম ছয় মাসে ইউনিটপ্রতি আয় করেছে ৪ টাকা ২ পয়সা। গত বছর একই সময়ে আয় ছিল ৩৮ পয়সা।
আরও পড়ুন:
আসছে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে ‘বেসরকারি’ খাতের জন্য সংকোচন নীতি নেওয়া হলেও সরকারের জন্য তা দেখছেন না বলে মন্তব্য করেছেন ব্যবসায়ী নেতা ও বিএনপির সহসভাপতি আব্দুল আউয়াল মিন্টু।
গতকাল শনিবার ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির ‘বাজেট বিতর্ক: প্রসঙ্গ-অনুষঙ্গ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা মূল্যস্ফীতিকে দমন করার জন্য সুদের হার বাড়ায়া দিছি। ভালো কথা। আমরা সংকুচিত রাজস্ব নীতি করতে গিয়ে বাজেটের আকার ৭ থেকে ৮ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে দিছি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে কী, যে এটা বেসরকারি খাতের জন্য, বেসরকারি খাতের জন্যই শুধু সংকুচিত মুদ্রানীতি এবং সংকুচিত রাজস্ব নীতি।
‘যেই মাত্র এটা সরকারের জন্য, সরকারের জন্য আসে তখন আর এটা ওদের (সরকারের) জন্য সংকুচিত না।’
উদাহারণ দিয়ে মিন্টু বলেন, ‘গত দেড় বছরে বাংলাদেশে মোট ৩ লাখ কোটি টাকা ব্যাংকে আমানত পাইছে। এর ভিতরে ২ লাখ ৭০ কোটি টাকা নিয়ে গেছে সরকার। তো তাদের জন্য সংকুচিত রাজস্বনীতি তো আমি দেখতেছি না।’
এজন্য সরকারকে সকল দিক বিবেচনায় এনে ‘বিচার-বিশ্লেষণ’ করে নীতি গ্রহণের পরামর্শ দেন এ ব্যবসায়ী।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তরফে বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কারের কথা বলা হলেও বিএনপি নেতা মিন্টু মতে, তা দেখা যাচ্ছে না।
প্রস্তাবিত বাজেটেও অর্থনীতির চিহ্নিত সমস্যার সংস্কার দেখা না যাওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘একদিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কম, আরেক দিক থেকে মূল্যস্ফীতি বেশি। এই দুইটার সমন্বয়ের যে পরিস্থিতি আমরা দেখছি আমাদের দেশে, সেটা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য কিছু সংস্কার করা যেত এই বাজেটে। কিন্তু সেটা আসলে আমি দেখি নাই।’
গত ২ জুন নতুন অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বাজেটের আকার ছোট করলেও তা হয়েছে উন্নয়ন বাজেটে, যার দ্বারা সরাসরি উপকৃত হয় দেশের নাগরিক।
অপরদিকে অনুন্নয়ন বা পরিচালন ব্যয় আগামী অর্থবছরের বাজেটে ২৮ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা।
বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে পরিচালন ব্যয় ছিল ৫ লাখ ৬ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা। আর সংশোধিত পরিচালন ব্যয়ের আকার দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা।
আসছে অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে নেওয়া হবে ১ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ২ শতাংশ।
অভ্যন্তরীণ অন্য উৎসের মধ্যে সরকার ব্যাংক খাত থেকে নিতে চায় ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ১ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এছাড়াও সঞ্চয়পত্রপত্র থেকে ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ও নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সরকার ২১ হাজার কোটি টাকা নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।
‘দুর্নীতির বিষয়ে জাতীয় ঐক্যমত্য’ দেখছেন উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের পরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন আলোচনা সভার প্রধান অতিথি মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
‘অন্দরমহলের খবর দিতে চাই’- এ কথা বলে তিনি তার নয় মাসের উপদেষ্টা জীবনের তদবিরের গল্প তুলে ধরেন।
বলেন, ‘একটা জিনিসের ব্যাপারে আমি জাতীয় ঐক্যমত্য দেখতে পেয়েছি। সেটা হচ্ছে, দুর্নীতির বিষয়ে জাতীয় ঐক্যমত্য। সবাই দুর্নীতি করতে চান। কেউ কিন্তু বাদ নাই। রাজনীতিবিদ, আমলা, অধ্যাপক, কেউ বাদ নেই।’
উদাহরণ দিয়ে বলেন, আপনারা দেখবেন যে প্রথম আলোতে একটা সংবাদ এসেছে যে আমি যেগুলো দেখি (যে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত) তার মধ্যে একটা হচ্ছে সেতু বিভাগ। সেতু বিভাগের তারা করেছেন কী, যারা ক্ষতিগ্রস্ত তাদের পুনর্বাসনের জন্য কতগুলো ভবন করেছেন। তো ভবন করতে গিয়ে ওনারা আবিষ্কার করলেন যে কিছু জায়গা বেঁচে গেছে।
‘তো এখন কী করতে হবে? তো এটা সব সরকারি কর্মকর্তাদের দিতে হবে। অথচ সেতু বিভাগের ভবন বানানো কিংবা আবাসনের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয়ই আছে। যেটাকে আমরা পূর্ত মন্ত্রণালয় বলে থাকি। …এখানে অকল্পনীয় ছিল যে ক্যাবিনেট সচিবরা পর্যন্ত অন্যায়-উপঢৌকন গ্রহণ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এ অন্যায়-উপঢৌকন গ্রহণ করেছেন।’
তদবির প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘এই যে আমরা যে অফিসে আসি। আমার সঙ্গে এখন তো রাজনীতিবিদরাও দেখা করেন। কিন্তু কেউই কিন্তু চান না যে দুর্নীতির অবসান হোক। সবাই চান যে দুর্নীতি চলুক, তবে দুর্নীতিটা এবার আমাকে করার সুযোগ দিতে হবে।
‘সবাই বলেন, দেখেন ফ্যাসিস্ট আমলে জানেনই তো ব্যবসা করতে পারি নাই, এখন একটু খেয়াল রাখবেন। তো আমরা সে পথে যাচ্ছি না।’
এর বিপরীতে সরকারের চেষ্টা বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি যে অর্থনীতিতে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করা। যেই ব্যবসা পাবেন, প্রতিযোগিতা হবে সেখানে। আমরা সবকিছু উন্মুক্ত করে দিয়েছি।’
আসছে জুলাই-আগস্টে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে বলেও উপদেষ্টা আশার কথা শোনান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমিতির আহ্বায়ক মাহবুব উল্লাহ।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশের নামে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ বেড়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক (এসএনবি) বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে ২০২৪ সালে তাদের দেশের ব্যাংকগুলোর দায় ও সম্পদের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে।
প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সাল শেষে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে বাংলাদেশের নামে পাওনা রয়েছে ৫৯ কোটি ৮২ লাখ সুইস ফ্রাঁ। বাংলাদেশি মুদ্রায় ( প্রতি ফ্রাঁ ১৫০ টাকা ধরে ) যার পরিমাণ ৮ হাজার ৯৭২ কোটি টাকা। ২০২৩ সাল শেষে যার পরিমাণ ছিল ২ কোটি ৬৪ লাখ ফ্রাঁ। এখনকার বিনিময় হার ধরলে যার পরিমাণ ৩৯৬ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশের নামে থাকা অর্থের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ২৩ গুণ। ২০২২ সাল শেষে বাংলাদেশের কাছে সুইজারল্যান্ডের দায় ছিল ৫ কোটি ৮৪ লাখ সুইস ফ্রাঁ বা প্রায় ৮৭৬ কোটি টাকা।
সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে দায়ের মধ্যে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর পাওনা, আমনাতকারীদের পাওনা এবং পুঁজিবাজারে বাংলাদেশের নামে বিনিয়োগের অর্থ রয়েছে। এর মধ্যে ৯৫ শতাংশের বেশি বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর পাওনা, যা বাণিজ্য কেন্দ্রিক অর্থ বলে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে থাকা অর্থের একটি অংশ পাচার করা সম্পদ হতে পারে বলে ধারণা রয়েছে। তবে এ বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। কয়েক বছর ধরে সুইজারল্যান্ড বার্ষিক ব্যাংকিং পরিসংখ্যান প্রকাশ করছে। বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বা বিএফআইইউ সুইজারল্যান্ডের এফআইইউর সঙ্গে কয়েক দফা যোগাযোগও করেছিল। কিন্তু ব্যক্তির তালিকা সম্বলিত কোনো তথ্য তারা দেয়নি।
সুইজারল্যান্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, অবৈধভাবে কেউ অর্থ নিয়ে গেছে এমন প্রমাণ সরবরাহ করলে তারা তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে পারে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের কোনো নাগরিক বা প্রতিষ্ঠান যদি নিজের বদলে অন্য দেশের নামে অর্থ গচ্ছিত রাখে তাহলে তা সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশের নামে থাকা পরিসংখ্যানের মধ্যে আসেনি। একইভাবে সুইস ব্যাংকে গচ্ছিত রাখা মূল্যবান শিল্পকর্ম, স্বর্ণ বা দুর্লভ সামগ্রীর আর্থিক মূল্যমান হিসাব করে এখানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। অনেক দেশের নাগরিকই মূল্যবান সামগ্রী সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকের ভল্টে রেখে থাকেন।
বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের শ্রীলঙ্কায় তথ্য-প্রযুক্তি ও ওষুধ খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার উপপররাষ্ট্র ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী আরুন হেমাচন্দ্র এবং উপ-অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী ড. হর্ষনা সুরিয়াপেরুমা।
গতকাল বৃহস্পতিবার কলম্বোয় শ্রীলঙ্কা সফররত ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এই আহ্বান জানান তারা। ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি দেশটির পররাষ্ট্র ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পৃথক দুটি বৈঠকে অংশ নেয়।
বাংলাদেশি ব্যবসায়ী নেতারা শ্রীলঙ্কার উপপররাষ্ট্র ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী আরুন হেমাচন্দ্র এবং উপঅর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী ড. হর্ষনা সুরিয়াপেরুমার সঙ্গে কলম্বোতে তাদের নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের দপ্তরে সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাৎকালে আরুন হেমাচন্দ্র বলেন, দুই দেশের বেসরকারি খাতের মধ্যে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হলে আগামীতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে। শ্রীলঙ্কা ইতোমধ্যে থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করেছে এবং বাংলাদেশ সঙ্গে সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে বিশ্লেষণ চলছে।
বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কার সম্ভাবনাময় খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে এলে সরকার পূর্ণ সহায়তা দেবে।
তিনি বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের তার দেশের সম্ভাবনাময় খাতসমূহে বিনিয়োগের আহ্বান জানান এবং এলক্ষ্যে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন।
সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানসমূহে ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ জানান, ভূ-রাজনৈতিক কারণে বর্তমানে বৈশ্বিক বাণিজ্যের ধারা পরিবর্তন হচ্ছে এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, যদিও বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক, তবে প্রযুক্তি, পণ্যের মূল্য সংযোজন এবং উদ্ভাবনের দিক থেকে শ্রীলংকা বেশ এগিয়ে রয়েছে।
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যেও প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। যেখানে দুদেশের বেসরকারিখাতের যৌথ উদ্যোগে ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে পারে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
তিনি আরো বলেন, বন্ধুত্বপূর্ণ উভয় দেশের মধ্যে একটি এফটিএ স্বাক্ষর হলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এবং জনগণের মধ্যকার সংযোগ আরও সুদৃঢ় হবে। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি জানান, বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো শ্রীলংকার ব্যবসায়িক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে অত্যন্ত আগ্রহী এবং শ্রীলংকার উদ্যোক্তারাও বাংলাদেশে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, বাংলাদেশ ও শ্রীলংঙ্কার অর্থনীতি প্রায় একই ধাঁচের যেখানে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) বাস্তবিক অর্থে ততটা কার্যকর হবে না। এক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষর হলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আরও ত্বরান্বিত হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
ডিসিসিআই’র ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে পৃথক এক বৈঠকে শ্রীলংকার উপ-অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী ড. হর্ষনা সুরিয়াপেরুমা বলেন, আমাদের একসাথে কাজ করার অবারিত সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে তথ্য-প্রযুক্তি ও ডিজিটাল সেবা, ঔষধ, চা, জ্বালানি, আর্থিক সেবা ও পর্যটন খাত যৌথ বিনিয়োগের জন্য প্রচুর সম্ভাবনাময়।
তিনি জানান, শ্রীলংকা ইতোমধ্যেই একটি উচ্চাভিলাষী ডিজিটাল রোডম্যাপ প্রণয়ন করেছে এবং এই পরিকল্পনার অধীনে আগামী দুই বছরের মধ্যে দেশকে একটি পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল রাষ্ট্রে রূপান্তর এবং প্রতিটি সেবা স্বয়ংক্রিয় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
তিনি বলেন, শ্রীলংকায় অত্যাধুনিক ডেটা সেন্টার স্থাপনের ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। যেখানে বাংলাদেশের উদ্যোক্তাবৃন্দ এগিয়ে আসতে পারেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের শ্রীলংকার ঔষধ শিল্পে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। যাতে দেশটির স্থানীয় চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।
ডিসিসিআই’র ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী ও সহ-সভাপতি মো. সালিম সোলায়মান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘর্ষ নিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার বক্তব্য আরও কঠোর করার পর মঙ্গলবার ওয়াল স্ট্রিটের শেয়ারবাজারে পতন ঘটে, যা যুদ্ধকে আরও সম্প্রসারণ করার আশঙ্কা তৈরি করেছে।
নিউইয়র্ক থেকে এএফপি এ সংবাদ জানিয়েছে, ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধের পঞ্চম দিনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প ইরানের নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ দাবি করেন এবং মার্কিন হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত দেন।
ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ সূচক ০.৭ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৪২,২১৫.৮০ পয়েন্টে। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ০.৮ শতাংশ কমে ৫,৯৮২.৭২ পয়েন্টে এবং প্রযুক্তি খাতভিত্তিক ন্যাশডাক কম্পোজিট ০.৯ শতাংশ কমে ১৯,৫২১.০৯ পয়েন্টে নেমে আসে।
ইরান-ইসরায়েল সংঘর্ষ এখন বিনিয়োগকারীদের প্রধান উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। একই সময়ে তারা ফেডারেল রিজার্ভের দিকে নজর রাখছে। যা বর্তমানে দুই দিনের আর্থিক নীতিমালা বৈঠকে রয়েছে।
ফেডারেল রিজার্ভ আপাতত সুদের হার অপরিবর্তিত রাখবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে, কারণ, তারা ট্রাম্পের শুল্কের প্রভাবে মুদ্রাস্ফীতির গতিপ্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করছে।
গতকাল বুধবার ফেড তাদের সর্বশেষ অর্থনৈতিক পূর্বাভাস প্রকাশ করবে, যাতে থাকবে প্রবৃদ্ধি, বেকারত্ব এবং মুদ্রাস্ফীতির হালনাগাদ তথ্য।
এদিকে, বিনিয়োগকারীরা দুর্বল অর্থনৈতিক তথ্যের প্রভাবও মূল্যায়ন করছেন। মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের মোট খুচরা বিক্রি এপ্রিলের তুলনায় ০.৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৭১৫.৪ বিলিয়ন ডলারে। এই তথ্য ইঙ্গিত দেয় যে, এপ্রিলে শুল্ক বৃদ্ধির আশঙ্কায় যে ভোক্তারা আগেভাগে পণ্য কিনে নিয়েছিলেন, মে মাসে সেই কেনাকাটার গতি কমে গেছে।
এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচকের ১১টি খাতের মধ্যে ১০টিতেই দরপতন হয়েছে। একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল জ্বালানি খাত, যা তেলের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে ঊর্ধ্বমুখী ছিল।
প্রতিরক্ষা খাতভুক্ত কোম্পানিগুলোও লাভ করেছে। লকহিড মার্টিন ২.৬ শতাংশ এবং নর্থরপ গ্রুমান ১.২ শতাংশ বেড়েছে।
তরুণদের কাছে জনপ্রিয় টেক ব্র্যান্ড রিয়েলমি কোম্পানির স্মার্টফোনের খুচরা যন্ত্রাংশ ক্রয়ে সম্প্রতি ১০ শতাংশ ডিসকাউন্ট ঘোষণা করেছে। রিয়েলমি সার্ভিস ডে উপলক্ষ্যে এই ক্যাম্পেইনের অফার চলবে ১৮ জুন পর্যন্ত।
এ ক্যাম্পেইন চলাকালে ইউজাররা সকল অ্যাকসেসরিজ ও সেফগার্ড সার্ভিসে ১০ শতাংশ ডিসকাউন্ট লুফে নিতে পারবেন। শুধুমাত্র দেশজুড়ে অবস্থিত রিয়েলমি’র অথরাইজড সার্ভিস সেন্টারগুলো থেকে এই অফার পেতে পারবেন গ্রাহকরা।
এছাড়াও- স্মার্টফোনের ওয়ারেন্টি বিষয়ক সার্ভিস, ক্লিনিং ও মেইনটেন্যান্স, সফটওয়্যার আপগ্রেডেশন, প্রটেক্টিভ পেপার ফিল্মস ও প্রটেক্টিভ ফোন কেসে থাকবে বিভিন্ন ছাড়।
এখানে উল্লেখ্য যে- ঘোষিত অফারটি শুধুমাত্র রিয়েলমি’র অফিসিয়াল স্মার্টফোনগুলোর জন্যই প্রযোজ্য।
এসব অফার ছাড়াও- রিয়েলমি অথরাইজড সার্ভিস সেন্টারে ডিভাইস পাঠানোর ক্ষেত্রে গ্রাহকরা তাদের রিয়েলমি অথরাইজড কালেকশন পয়েন্টস ব্যবহার করতে পারবেন।
অফার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ইউজাররা ফেসবুকে রিয়েলমি’র অফিসিয়াল আফটার-সেল সার্ভিস পেজ "realme Service BD" ভিজিট করতে পারেন।
তাই ভিজিট করুন আপনার কাছেরই কোনো আউটলেট এবং ক্যাম্পেইন শেষের আগেই ডিসকাউন্ট উপভোগ করুন
১৬ জুন, ২০২৫ তারিখে ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি. এর নবগঠিত পরিচালনা পর্ষদের ৪০তম সভা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়, গুলশান-১, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান জনাব মুঃ ফরীদ উদ্দীন আহমদ। সভায় পর্ষদের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান জনাব মোঃ হুমায়ুন কবীর, স্বতন্ত্র পরিচালক ড. শহিদুল ইসলাম জাহীদ, জনাব মোহাম্মদ সাইফুল আলম এবং ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও জনাব মোঃ হুমায়ুন কবির উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক সর্বজনাব শফিউদ্দিন আহমেদ এবং মোহাম্মদ ইকবাল কার্যপোলক্ষ্যে সভায় যোগদান করেন। সভায় ব্যাংকের ব্যবসা বাণিজ্য, আমানত ও রেমিট্যান্স সংগ্রহ বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগ আদায়ে বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়।
মন্তব্য