লকডাউন ঘোষণার পর রাজধানীর কাঁচাবাজারসহ নিত্যপণ্যের বাজার কিছুটা অস্থির হয়ে উঠলেও আবার স্থিতিশীল হতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে পাইকারি বাজারে কমে এসেছে বাড়তি দাম। দাম কমার কথা বলছেন খুচরা বাজারের ব্যবসায়ীরাও।
সোমবার লকডাউনের প্রথম সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পাইকারি সবজি বাজারে অনেকটা স্বাভাবিক সময়ের মতোই চলছে বেচাকেনা। লকডাউনের তেমন কোনো প্রভাব নেই। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সবজি নিয়ে বসেছেন পাইকারেরা। তারা জানান, দুই দিন আগের তুলনায় বাজারে দর বেশ কম। এমনকি কিছু সবজির দাম আগের চেয়েও কমেছে।
এ বাজারের পাইকারি টমোটো বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘শনিবার বাজারে যে দাম ছিল আজ (সোমবার) তার চেয়ে দাম অনেক কমেছে। এমনকি গত রাতেও যে দাম ছিল সকালে নতুন মাল আসায় দাম কমে গেছে। এক ক্যারেট (প্রতি ক্যারেটে ২৫ থেকে ২৭ কেজি) হিসাবে নিলে প্রতি কেজি টমেটার দাম পড়ছে ৯ থেকে ১০ টাকা। আর পাল্লার (৫ কেজি) দাম ৬০ থেকে ৭০ টাকা। দুই দিন আগেও কেজিতে ২ থেকে তিন টাকা বেশি ছিল।’
কারওয়ান বাজারে খুচরায় টমেটোর কেজি বিক্রি হয়েছে ২৮ থেকে ৩০ টাকায়, বেগুন ৩৮ থেকে ৪০ টাকা, উচ্ছে ও করলা ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৩৮ থেকে ৪০ টাকা, বরবটি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, চিচিংগা ৩২ থেকে ৩৫ টাকা, শসা ৩৮ থেকে ৪০ টাকা, পেপে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়।
পাইকারি বিক্রেতা মো. শাহাবুদ্দিন জানান, আগের চেয়ে কমেছে করলা ও উচ্ছের দাম। প্রতি পাল্লা উচ্ছের দাম ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা, করলা ১৩০ টাকা। সে হিসাবে উচ্ছের কেজি ৩০ টাকা, করলা ২৬ টাকা কেজি। পাল্লায় ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। প্রায় সব সবজির পাইকারি মূল্য আগের চেয়ে কমেছে।
খুচরায় দামের পার্থক্য বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পাইকাররা প্রতিদিন মাল কিনে প্রতিদিন বিক্রি করে। খুচরা বিক্রেতারা নিজেদের কাছে থাকা মাল বিক্রি না করে নতুন মাল কেনে না। আগের মাল শেষ হলে তারাও দাম কমাবে।’
কারওয়ান বাজারে রোববার পাইকারিতে, প্রতি পাল্লা বেগুন ১১০ থেকে ১২০ টাকা, চিচিংগা ৮০ থেকে ৯০ টাকা, বরবটি ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, শিম ১০০ থেকে ১১০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা, শসা ১১০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
বাজারে আগের চেয়ে কিছুটা বেশি দাম রয়েছে আলু ও পেঁয়াজের। প্রতি পাল্লা আলু ৯০ থেকে ৯৫ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা, ভারতীয় আমদানির পেঁয়াজ ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা বিক্রি হয়েছে। খুচরায় দেশি পেঁয়াজ ৩৮ থেকে ৪০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৩৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে দুই দিন আগে প্রতি কেজি পেঁয়াজ সর্বোচ্চ ৪৫ টাকায়ও বিক্রি হয়েছে।
আলুর পাইকারি বিক্রেতা মো. হোসেন বলেন, ‘তিন দিন আগেও প্রতি পাল্লার দাম ছিল থেকে ৮২ থেকে ৮৫ টাকা। তবে শনিবার তা বেড়ে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা হয়েছিল। এখন আবার কিছুটা কমেছে।
পেঁয়াজের পাইকারি বিক্রেতা বাবুল মিয়া বলেন, ‘সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম পাল্লায় বেড়েছে ১০ টাকার মতো।’
মরিচ ব্যবসায়ী ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘পাইকারি বাজারে গতকাল (রোববার) প্রতি পাল্লা মরিচ বিক্রি হয়েছে ১৮০-২০০ টাকায়। আজ তা ১১০ টাকায় নেমেছে। প্রতি কেজির দাম ৫০ টাকা থেকে কমে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’
এদিকে নতুন করে দাম না বাড়লেও আগে থেকেই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে লেবু। খুচরায় প্রতি হালি লেবু ৪০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের লেবু ব্যবসায়ী রহমান জানান, বাজারে লেবুর কমতি নেই, তবে আকারে ছোট। বড় লেবুর দামও তুলনামূলক একটু বেশি। পাইকারিতে প্রতি ১০০ ছোট লেবু ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, মাঝারি আকারের লেবু ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা এবং বড় লেবু সর্বোচ্চ ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে কলমিলতা বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মো. সবুজ বলেন, ‘আজ বাজারে পাইকারি দাম অনেক কম। তবে দুই দিন আগের কিছু সবজি রয়ে গেছে। কারওয়ান বাজারে খুচরা মূল্যের চেয়ে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি হতে পার, কারণ পরিবহন ভাড়া দিতে হয়, আবার বিক্রিও কম। নতুন পুরোনো মিলে দাম কমেছে।’
এ বাজারে অন্য সবজির মধ্যে শিম ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, মুলা ৩৮ থেকে ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা, ঝিঙা ও ধুন্দল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, পটোল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, লতি ৬০ টাকা, সজনে ৬০ থেকে ৮০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, আলু ২২ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
সবজি ছাড়া অন্য নিত্যপণ্যের মধ্যে দাম বেড়েছে রসুনের। দুই দিনে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে দেশি রসুনের কেজি ৭৫ থেকে ৮০ টাকা, আমদানি করা রসুন ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
দেশি আদা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, আমদানির আদা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, চিনি ৬৮ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ডালের মধ্যে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে মুগডাল ১৪০ টাকা হয়েছে। আগের মতোই মসুর ডাল ১১৫ থেকে ১২০ টাকাতেই রয়েছে। ভোজ্যতেলের মধ্যে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা, খোলা পাম অয়েল ১১০ থেকে ১১৫ টাকা, সয়াবিনের এক লিটারের বোতল ১৪০ টাকা এবং ৫ লিটারের বোতল ৬৪০ থেকে ৬৫০ টাকা।
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, উচ্চ আদালতে অনেক সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। উচ্চ আদালতে বেঞ্চগুলো গঠনের কাজকে বিকেন্দ্রীকরণ করার প্রয়োজন রয়েছে। মামলার যে সিরিয়াল হয় সেখানে আগের মামলা পেছনে চলে যায় আবার পেছনের মামলা আগে চলে আসে। এটা কীভাবে হয় সেটা নিয়ে মানুষের প্রশ্ন রয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে অনলাইন (ই-বেইলবন্ড) কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা অনেক কাজ করেছি। সময় বাঁচানোর জন্য আমরা ফৌজদারি কার্যবিধিতেও আমরা অনেক পরিবর্তন এনেছি। সরকারি ম্যাজিস্ট্রেটসহ কর্মকর্তাদের সাক্ষী আমরা অনলাইনে নেওয়ার ব্যাবস্থা করে দিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য বিচার নিতে মানুষকে যে ভোগান্তি পোহাতে হয়, সেটা যেন হ্রাস পায় এর ব্যাবস্থা করা।
তিনি আরও বলেন, আমরা প্রায়ই দেখি বাচ্চার কাস্টডি’কে পাবে, দুই লাখ টাকার চেকের মামলা এ রকম ছোট বিষয়গুলোর জন্য যেন কোর্টে যেতে না হয় সে জন্য আমরা সংস্কার করছি। এটা পাইলট প্রজেক্ট আকারে আছে। দুয়েক মাসের মধ্যে আমরা এটা সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে পারব। নিন্ম আদালতে সংস্কার করে ফেললাম কিন্তু উচ্চ আদালতে সংস্কার হরো না, তাহলে কিন্তু কোনো লাভ হয় না। নিন্ম আদালতে যে মামলাগুলো নিষ্পত্তি হয় উচ্চ আদালতে তা বছরের পর বছর ঝুলে থাকে। শিশু আছিয়ার ঘটনায় আমরা আইন বদলে এক মাসে বিচার করলাম। কিন্তু উচ্চ আদালতে এটা কয়েক বছরেও নিষ্পত্তি হবে কি না, আমরা জানি না।
তিনি বলেন, উচ্চ আদালতের বিচারকরা নিন্ম আদালতে ইনস্পকেকশনে যান আদালত ঠিকমতো চলছে কি না, দেখতে। তখন এটা একরকম আনন্দভ্রমণে পরিণত হয়। বগুড়ায় এক জায়গায় ইনস্পেকশনে দুই লাখের অধিক টাকা খাবারের বিল দিতে হয়েছে। এই টাকা দিয়েছে নিন্ম আদালতের গরিব বিচারকরা।
তিনি আরও বলেন, নিন্ম আদালত সংস্কার করব কিন্তু উচ্চ আদালত আগের মতো থাকলে লাভ হবে না। এতে বিচারপ্রত্যাশীরা লাভবান হবে না। আমরা যতদিন আছি সংস্কারের কাজ করব। আমি আপনাদের সহযোগিতা চাই। আপনারা যদি সহযোগিতা করেন আমরা বিচারব্যাবস্থাকে আগের চেয়ে অনেক সুন্দরভাবে সাজাতে পারব।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু শামীম আজাদ, নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবির, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার প্রধান, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানসহ প্রমুখ।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ আজ বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে বান্দরবান ও চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন স্থানে বাহিনীর চলমান কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। সফরকালে তিনি বাহিনীর সদস্যদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি, অপারেশনাল সক্ষমতা উন্নয়ন এবং পরিবেশবান্ধব কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। একই সঙ্গে, পার্বত্য চট্টগ্রামের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সুসংহত রাখতে আনসার ও ভিডিপির সমন্বিত দায়িত্ব ও কার্যকর ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বান্দরবানের সুয়ালক আনসার ব্যাটালিয়ন (১০ বিএন)-এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় মহাপরিচালক স্বাধীনতা-পরবর্তী ও পূর্ববর্তী সময়ে পার্বত্য অঞ্চলে আনসার ব্যাটালিয়নের অবদান স্মরণ করেন। তিনি বলেন, “আনসার বাহিনী ১৯৭৬ সাল পূর্বকাল থেকেই মাতৃভূমির স্বার্থরক্ষায় অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে নিবিড় সমন্বয় ও সামঞ্জস্য বজায় রেখে দায়িত্ব পালন করে আসছে। ফলে বাহিনী অর্জন করেছে দেশবাসীর অবিচল আস্থা।” “পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ, সবুজ বাংলাদেশ” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সুয়ালক আনসার ব্যাটালিয়ন আয়োজিত গাছের চারা বিতরণ অনুষ্ঠানে মহাপরিচালক মহোদয়ের হাত থেকে বান্দরবানের সুয়ালক উচ্চ বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা গাছের চারা গ্রহণ করে। আনসার সদস্য ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের পরিবেশবান্ধব কর্মকাণ্ডে সম্মিলিত অংশগ্রহণ কেবল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাই নয়, বরং টেকসই পরিবেশ ব্যবস্থাপনা গঠনে বাহিনীর দীর্ঘদিনের দায়বদ্ধতাকে পুনর্ব্যক্ত করে।
রুমা আনসার ব্যাটালিয়ন (১৬ এবিএন) পরিদর্শনকালে মহাপরিচালক সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, “দেশের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থার মানদণ্ডে আনসার সদস্যদের দায়িত্ব পালনের সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, “নতুন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে বহিঃশত্রু বা অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা হুমকি, সামাজিক উন্নয়নের প্রতিবন্ধকতা কিংবা নিরাপত্তা পরিধি স্খলনের যেকোনো ঝুঁকি প্রতিহত করতে আনসার বাহিনীর ভূমিকা হবে শক্তিশালী ও অবিচল।” মহাপরিচালক দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেন, “বর্তমানে আনসার বাহিনীর অন্যতম অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র হলো সদস্যদের পেশাগত উৎকর্ষ অর্জন।” তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা, প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকায় নিরাপত্তা প্রদান, যৌথ টহল কার্যক্রম (এসআরপি, এলআরপি) এবং সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে আনসার বাহিনীর সক্রিয়, সহনশীল ও পেশাদার ভূমিকা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। সফরের শেষাংশে মহাপরিচালক চট্টগ্রামের পটিয়া আনসার ব্যাটালিয়ন (৩৭ বিএন)-এর চলমান প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন এবং কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্যদের প্রতি দেশ ও জাতির কল্যাণে একনিষ্ঠভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, আগামীকাল মহাপরিচালক চট্টগ্রামের রাউজান ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় চলমান ভিডিপি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবেন বলে আনসার-ভিডিপি সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে। মহাপরিচালকের এ সফরকালে আরও উপস্থিত ছিলেন উপমহাপরিচালক (অপারেশন্স) মোঃ সাইফুল্লাহ রাসেল, উপমহাপরিচালক (চট্টগ্রাম রেঞ্জ) ড. সাইফুর রহমানসহ বাহিনীর অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এসএম জিলানী বলেছেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের দল, মুক্তিযোদ্ধাদের দল। আমরা এই আদর্শকে ধারণ করি, লালন করি। মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে পাক হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালীদের ওপর ঝাপিয়ে পড়েছিল, গণহত্যা চালিয়েছিল তখন একজন দেশপ্রেমিক সেনা অফিসার শহীদ জিয়াউর রহমান পাকিস্তানীদের এই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি বিদ্রোহ ঘোষণা করলাম পাকিস্তান সরকারের সাথে। আমি বিদ্রোহ ঘোষণা করলাম পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সাথে। বাংলাদেশ যদি স্বাধীন না হতো তাহলে কোর্ট মার্শালে জিয়াউর রহমানের ফাঁসি হতো এই বিদ্রোহ ঘোষণার কারণে। নিশ্চিত ফাঁসি জেনেও তিনি দেশ মাতৃকার জন্য বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার কাজি মন্টু কলেজ মাঠে আয়োজিত ‘সম্প্রীতি সমাবেশ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে এসএম জিলানী বলেন, ইতিহাস থেকে জেনেছি, যখন কোনো দেশে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয় তখন সেই দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক দলের নেতা সে দেশের মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে থাকেন। স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে থাকেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য ছিল বাংলাদেশের মানুষের। কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা সেদিন স্বাধীনতার ঘোষণা দেন নাই। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ সেদিন দিকবেদিক নেতৃত্ব শূণ্যতায় ছিল। জিয়াউর রহমান অপেক্ষায় ছিলেন হয়তো স্বাধীনতার ঘোষণা কেউ দিবে। কিন্তু কোন রাজনৈতিক দলের নেতা যখন স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন না। জিয়াউর রহমান উপলব্ধি করলেন যদি স্বাধীনতার ঘোষণা না দেই তাহলে বাংলাদেশর মানুষ ঐক্যবদ্ধ হবে না। আর যদি বাংলাদেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ না হয় তাহলে স্বাধীনতা যুদ্ধে আমরা বিজয়ী হতে পারব না।
সমাবেশে কোটালীপাড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি এস এম মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব কাজী আবুল খায়ের। অন্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন কোটালীপাড়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল বশার হাওলাদার, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অলিউর রহমান হাওলাদার, মুক্তিযোদ্ধা মোদাচ্ছের ঠাকুরসহ জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নের সিনিয়র নেতারা।
ইতালির রোমে অনুষ্ঠেয় বিশ্ব খাদ্য ফোরাম ২০২৫-এ যোগ দিয়েছেন কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধিদলে আরও রয়েছেন কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান ও অতিরিক্ত সচিব (পিপিসি উইং) ড. মো. মাহমুদুর রহমান।
উপদেষ্টার নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল ফোরামে দেশের কৃষি, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিয়ে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময় ও সদস্য দেশসমূহের সাথে বিভিন্ন সেশনে অংশগ্রহণ করবে। সফরকালে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা ইতালির ইন্টেরিয়র মিনিস্টার এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ইতালির রোমস্থ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিতব্য এ ফোরাম ১০ অক্টোবর শুরু হয়ে চলবে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত। সূত্র: বাসস
কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীকে হত্যার দায়ে একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুহাম্মদ নূরুল আমিন বিপ্লব আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। পাশাপাশি আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ছয় মাসের অতিরিক্ত কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইসলাম উদ্দিন (৫৫) তাড়াইল উপজেলার ধলা ইউনিয়নের তেওরিয়া গ্রামের মৃত আবুল হাসেমের ছেলে। তিনি ধলা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য।
কিশোরগঞ্জের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মো. জালাল উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তর ধলা চকেরবাড়ির ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম ও তেওরিয়া এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য ইসলাম উদ্দিনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ইসলাম উদ্দিন কামরুল ইসলামকে ছুরিকাঘাত করেন।
তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে কামরুলের ভাতিজা আনোয়ার ফকির ওরফে আনার (৩৭) এর বুকেও ছুরিকাঘাত করেন ইসলাম উদ্দিন। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় আনোয়ার ফকিরকে উদ্ধার করে তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পরদিন নিহতের ছোট ভাই আখলাকুল ফকির বাদী হয়ে ১৫ জনকে আসামি করে তাড়াইল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে পিবিআই ২০১৮ সালের ৬ ডিসেম্বর ইসলাম উদ্দিনকে একমাত্র আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ আদালত রায় ঘোষণা করে।
মাগুরায় হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে ‘তওহিদভিত্তিক আধুনিক রাষ্ট্র গঠনে গণমাধ্যম কর্মীদের ভূমিকা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার মাগুরা প্রেসক্লাব হলরুমে এই সভার আয়োজন করা হয়। মাগুরা জেলা হেযবুত তওহীদের সাধারণ সম্পাদক লতিফুল ইসলাম মিলনের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন জেলা সভাপতি আলিম শেখ।
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুজ্জামান মিলন এবং খুলনা বিভাগীয় রাজনৈতিক যোগাযোগ সম্পাদক ফিরোজ মেহেদী প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, বর্তমান বিশ্বে কোন মতবাদ বা ব্যবস্থা মানবজাতির জীবনে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। আজ পৃথিবীতে গভীর সংকট বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ তওহীদ ভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা।
বক্তারা আরো বলেন, কোনো রাষ্ট্র ব্যবস্থা নাগরিকদের নিরাপত্তা, ন্যায় বিচার, মানবাধিকার ও মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করতে না পারলে সেই রাষ্ট্র ব্যবস্থা ব্যর্থ। তাই একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে গণমাধ্যমের শান্তিপূর্ণ ভূমিকা অপরিসীম।
গোলটেবিল বৈঠকে মাগুরার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকসহ সংগঠনের নেতারা ও সুধীরা উপস্থিত ছিলেন।
কিশোরগঞ্জের ভৈরবের শুম্ভপুর রেল গেইট এলাকায় ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা নাসিরাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেন থামিয়ে বিক্ষোভ করেন ছাত্র-জনতা। বুধবার দুপুরে ভৈরব উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের শুম্ভপুর রেল গেইট এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটেছে।
জানা যায়, ভৈরবকে জেলা বাস্তবায়ণের দাবিতে ছাত্রজনতা জড়ো হয়ে ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা নাসিরাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনটি ভৈরব স্টেশনের পূর্বে শুম্ভপুর রেল গেইটে এলাকায় রেল লাইনের ওপর লাল কাপড় টাঙিয়ে ট্রেনটি বেলা ১.২১ মিনিটে থামিয়ে দেয়া হয়। পরবর্তীতে ছাত্র জনতা তাদের দাবি জানিয়ে ৫-৭ মিনিট পর ভৈরব থানার পুলিশের সহযোগিতায় শুম্ভপুর এলাকা থেকে ভৈরব স্টেশনের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এ সময় হঠাৎ চলতি ট্রেন থাকতে দেখে পথচারীদের মধ্য নানা কৌতুহল সৃষ্টি হয়।
এ সময় স্থানীয় ছাত্র-জনতার নেতা রাজীব বলেন, আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ভৈরবকে দেশের ৬৫ তম জেলায় রূপান্তর করা। কিন্তু দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত বিগত সরকার আমাদের দাবি পূরণ করেননি। তাই বর্তমান সরকারের কাছে দাবি থাকবে অতি দ্রুত ভৈরবকে জেলা ঘোষণাসহ বাস্তবায়ন করবে। তা না হলে কঠিন আন্দোলনের মাধ্যমে ভৈরবে সড়ক, রেল ও নৌপথ বন্ধ করে দেয়ার হুশিয়ারি দেন।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার ওসি এসআই তোফায়েল আহমেদ জানান, জেলার দাবিতে ছাত্র-জনতা নাসিরাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেন থামিয়ে বিক্ষোভ করেন। ট্রেনটি শুম্ভপুর এলাকায় ৫-৭ মিনিটের মত থেমে ছিল বলে তিনি জানান।
মন্তব্য