রমজানে নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির করতে দেয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
নিজের সরকারি বাসভবন থেকে শনিবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তিনি এ ঘোষণা দেন।
রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়িয়ে দেয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘রোজায় এক শ্রেণির ব্যবসায়ীর বাজার অস্থির করার অপপ্রয়াস সরকার মেনে নেবে না। কোনো ধরনের সিন্ডিকেটের কাছে সরকার বাজার ব্যবস্থাকে জিম্মি হতে দেবে না।’
অহেতুক মূল্য বাড়ানো ও মজুতদারিতা নিয়ন্ত্রণে সরকার সতর্ক রয়েছে জানিয়ে কাদের বলেন, ‘সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে।’
এ সময় পরিবহন খাতের অনিয়ম নিয়েও কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। দূরপাল্লার যাত্রীদের থেকে দ্বিগুণ ভাড়া আদায়কারীদের উদ্দেশে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্যোগের মধ্যে জনগণের দুর্ভোগ বাড়াবেন না।’
বিএনপির সমালোচনা করে কাদের বলেন, ‘বিএনপি যে নেতিবাচক ভাইরাসে আক্রান্ত তা করোনার চেয়েও ভয়াবহ। করোনা মহামারিতে বিএনপি জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে ঘরে বসে মিডিয়ায় ঝড় তুলছে। সরকারের অন্ধ সমালোচনা ও মিথ্যাচারই করোনাকালে বিএনপির সফলতা।’
সরকারের কোনো উদ্যোগ বিএনপি চোখে দেখে না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘একবার লকডাউন নিয়ে অপপ্রচার, আবার করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে মিথ্যাচার, কখনো কখনো সরকারের ব্যর্থতা খোঁজা বিএনপির রোজনামচা।’
দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হয়েও দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ন্যূনতম মূল্যবোধও তারা হারিয়ে ফেলেছে বলে মন্তব্য কাদেরের।
তিনি বলেন, ‘জনগণের সম্পদ বিনষ্ট আর নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে বিএনপি ও তার সহযোগীরা যে তাণ্ডবলীলা চালিয়েছে তার জন্য তাদের জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। আন্দোলনের নামে জনগণের ওপর প্রতিশোধ নেয়াই এখন বিএনপির কৌশল।’
ঢাকার পিলখানায় ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে দীর্ঘমেয়াদি ষড়যন্ত্রের ফল হিসেবে উল্লেখ করেছে জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন। এ ঘটনায় তৎকালীন রাজনৈতিক নেতাদের নানা মাত্রায় সংশ্লিষ্টতার যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছে কমিশন।
গতকাল বুধবার সকালে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরির বিআরআইসিএম নতুন ভবনের সপ্তম তলায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত তদন্ত কমিশন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন কমিশনের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বিভিন্ন সাক্ষ্য হতে প্রতীয়মান যে রাজনৈতিকভাবে সমস্যা সমাধানের নামে অযথা কালক্ষেপণ করায় এবং সশস্ত্র বাহিনী ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিষ্ক্রিয় থাকার কারণে বিদ্রোহীরা নির্বিঘ্নে হত্যাকাণ্ডসহ অন্যান্য অপরাধ সংঘটন করতে সমর্থ হয়েছে। ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকেই পিলখানার ভেতর থেকে আটকে পড়া অফিসার ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের বারংবার অনুরোধ-আকুতি সত্ত্বেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
ফজলুর রহমান বলেন, এই পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এটা বলা যায় যে তৎকালীন সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ড ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো সময়মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি। অপরাধ সংঘটনের সময় তারা নিষ্ক্রিয় অবস্থায় ছিল, যার ফলে তারা বিদ্রোহ ও হত্যাকাণ্ড প্রতিহত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
তদন্ত কমিশন জানায়, তৎকালীন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দায়িত্ব পালনে চরম অবহেলা ও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে এই পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যে প্রতীয়মান। গোয়েন্দা ব্যর্থতার স্বরূপ ও কারণ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা এবং আলামত ধ্বংস করার প্রয়াস প্রতীয়মান হয়েছে। এর পেছনে দায়ী ব্যক্তি ও সংস্থাগুলোকে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
কমিশনের সভাপতি বলেন, পিলখানায় হত্যাযজ্ঞ চলাকালে কিছু গণমাধ্যম পক্ষপাতদুষ্ট সংবাদ প্রচার করার মাধ্যমে বিদ্রোহ উসকে দিয়েছে। একই সঙ্গে পরিকল্পিতভাবে সামরিক অফিসারদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার প্রয়াস চালিয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়েছে। বিদেশি সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। যেগুলো যাচাই-বাছাই ও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী কমিশন মনে করে যে সময়মতো সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডসহ অন্যান্য অপরাধ প্রতিরোধ করা যেত।
সংবাদ সম্মেলনে পিলখানার অভ্যন্তরে সংঘটিত অপরাধের ধরন উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, বেঁচে যাওয়া কর্মকর্তা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের জবানবন্দি থেকে পিলখানার অভ্যন্তরে ঘটে যাওয়া এক মর্মন্তুদ চিত্র পাওয়া গেছে। কর্মকর্তাদের খুঁজে খুঁজে হত্যা করা ছাড়াও তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপর চালানো হয়েছে অমানবিক নির্যাতন। নারী ও শিশুদের মারধর, সশস্ত্র অবস্থায় হুমকি প্রদান, বাড়িঘর ভাঙচুর, অমানবিক পরিবেশে খাবার ও পানি ছাড়া কোয়ার্টার গার্ডে দীর্ঘ সময় আটকে রাখা, রাষ্ট্রের ও ব্যক্তিগত সম্পত্তির ধ্বংস সাধন, আলামত ধ্বংস, অগ্নিসংযোগ ছাড়াও নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য আরও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত সর্বমোট ১৫৮ জনের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। আরও আনুমানিক ৫০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ বাকি আছে। ৮ জন সংশ্লিষ্ট রাজনীতিবিদের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে তিনজনের সাক্ষাৎকার জেলে নেওয়া হয়েছে। তিনজন উপস্থিত হয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন। দুজন পলাতক আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম ই–মেইলে জবানবন্দি দিয়েছেন।
তদন্ত কমিশন জানায়, এখন পর্যন্ত শহীদ পরিবারের ছয়জনের বিস্তারিত জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। সব শহীদ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দুটি সম্মেলন করা হয়েছে। সেখানে পরিবারের সদস্যরা তাদের অভিজ্ঞতা ও মতামত ব্যক্ত করেছেন। সম্মেলনে সব ইচ্ছুক সদস্যদের লিখিত বা কমিশনে উপস্থিত হয়ে বিস্তারিত জবানবন্দি দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। অনেক শহীদ পরিবারের সদস্য ইতিমধ্যেই তা করেছে। বেঁচে ফিরে আসা ১৫ জন কর্মকর্তার সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া ৫০ জন বেঁচে যাওয়া অফিসারদের লিখিত জবানবন্দি প্রদান করার জন্য সেনাসদরের মাধ্যমে ব্যক্তিগতভাবে চিঠি দেওয়া হয়েছে। দুটি সম্মেলনে তাদের সঙ্গে সার্বিক বিষয়ে মতবিনিময় হয়েছে।
তদন্ত কমিশন জানায়, ৫৫ জন সামরিক অফিসার, যারা বিভিন্নভাবে পিলখানা ট্র্যাজেডির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন বা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন, তাদের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন একাধিক সাবেক সেনা, নৌ, বিমানবাহিনীর প্রধান; বিভিন্ন গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।
তদন্ত কমিশন জানায়, ২০ জন অসামরিক ব্যক্তির সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক, আমলা, আগের তদন্ত কমিটির সদস্য, তৎকালীন আইজিপি, ডিএমপি কমিশনার ও অন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। ৯ জন বেসরকারি ব্যক্তির সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন ব্যবসায়ী, টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও অন্যান্য পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তি। যাদের কাছে ঘটনাসংশ্লিষ্ট তথ্য-উপাত্ত রয়েছে। কারাগারে দণ্ডপ্রাপ্ত ২৫ জন বিডিআর সদস্যের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। তারা ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত, সে সম্পর্কে নানা ধরনের তথ্য দিয়েছে। যেগুলো এখন বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। আরও সাক্ষাৎকার গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান। এর বাইরে ২৯ জন কারামুক্ত বিডিআর সদস্যের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে।
তদন্ত কমিশন জানায়, প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ ও তদন্ত কার্যক্রমে অধিকতর সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য কমিশন ৩৩ জন ব্যক্তির দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। পলাতক ব্যক্তিদের সাক্ষ্য প্রদানের জন্য কমিশন তিনটি বিশেষ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।
কমিশন জানায়, ৬টি দেশের দূতাবাস ও ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় থেকে তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। পিলখানা ট্র্যাজেডিসংক্রান্ত কোনো তথ্য আছে—এরূপ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যমকে কমিশনের কাছে তথ্য প্রদান করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
কমিশনের জানিয়েছে, প্রাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তদন্ত প্রতিবেদনের প্রাথমিক খসড়া তৈরি করা হয়েছে, যা বর্তমানে কমিশনের সদস্যরা পর্যালোচনা করছেন। কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ চলমান রয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের জন্য আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির পুনঃসাক্ষ্য গ্রহণ প্রয়োজন হবে।
তদন্তে চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীর সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দৈনিক পত্রিকায় একাধিক বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়েছে। কিছু দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে চাহিদাকৃত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-দলিলাদি এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। উল্লিখিত তথ্য অনতিবিলম্বে সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ৫০ জনের অধিক ব্যক্তির সাক্ষ্য গ্রহণ এখনো বাকি আছে। এছাড়া কিছুসংখ্যক ব্যক্তির পুনঃসাক্ষ্য গ্রহণেরও প্রয়োজন হবে। গৃহীত সাক্ষ্যগুলোর পূর্ণাঙ্গ লিখিত রূপ প্রস্তুত, স্বাক্ষর গ্রহণ ও বিশ্লেষণের কাজ চলমান রয়েছে। এটি একটি সময়সাপেক্ষ কাজ। কিছু বিদেশি দূতাবাস ও সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে তথ্য সংগ্রহের প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। যার জন্য কিছু সময় প্রয়োজন। এসব বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের মেয়াদ আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কমিশন।
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে তার বক্তব্যে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে শান্তি বজায় রাখতে আরও কোনো আন্দোলন রোধ করার জন্য যেকোনো প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ এড়াতে সতর্কও করেন তিনি।
ইশরাক বলেন, ‘আশা করি, আসিফ মাহমুদ তার বক্তব্যে সংযত থেকে বর্তমান শান্তির পরিস্থিতি বজায় রাখতে সহায়তা করবেন।’
বুধবার (২৫ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানান তিনি।
ইশরাক স্থানীয় সরকার উপদেষ্টাকে আন্দোলনে অংশ নেওয়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ার কথাও বিবেচনা করার আহ্বান জানান।
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘আমি এটি একটি সতর্কীকরণ বার্তা হিসেবে দিচ্ছি। নগরবাসী এর কোনো বিচ্যুতি মেনে নেবে না। যদি আন্দোলন আবার শুরু হয়, তবে এটি নগর ভবনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না—এটি রাস্তায় ছড়িয়ে পড়বে। এটি অবশ্যই এড়ানো উচিত।’
ইশরাকের সমর্থক এবং বিএনপি কর্মীরা ১৪ মে থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) প্রধান কার্যালয়ের বাইরে ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছে। পরে ডিএসসিসি কর্মচারী ইউনিয়নও এই বিক্ষোভে যোগ দেয়।
২০২০ সালের ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসের কাছে ইশরাক প্রায় ২ লাখ ভোটে হেরে যান।
তবে, চলতি বছরের ২৭ মার্চ একটি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ওই নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে দেয়। এরপর নির্বাচন কমিশন ২৭ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে ইশরাক হোসেনকে নতুন মেয়র ঘোষণা করে।
তবে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় অমীমাংসিত আইনি বিষয়ের কারণ দেখিয়ে ইশরাকের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান আয়োজন করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, দেশের সবচেয়ে বড় দুটো শত্রু হলো মাদক আর দুর্নীতি। এলাকা ভিত্তিক তৎপরতা দেখিয়ে কাজ হবে না, মাদকের গডফাদারদের ধরতে হবে।
তিনি আজ বুধবার ‘মাদকের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস, ২০২৫’ উদ্যাপন উপলক্ষে ৩২টি বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের প্রতিনিধিদের মাঝে আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, মাদক থেকে কীভাবে আমরা মুক্ত হতে পারি এ সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করতে হবে। শুধু মাদক নিরাময় কেন্দ্র করে সমস্যার সমাধান করা যাবে না। মাদক যেন বাইরে থেকে ঢুকতে না পারে সে লক্ষ্যে মাদক ঢোকানোর সাথে যারা জড়িত তাদের সম্পর্কে আমাদের তথ্য দেন।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, চাহিদা অনুযায়ী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের জনবল ও সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। ১৪০০ কোটি টাকার মাদক নিরাময় কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। মাদক বাহকদের ধরে লাভ নেই। গড ফাদারদের ধরতে হবে।
তিনি বলেন, মাদকসেবীদের সংখ্যা যেন ক্রমান্বয়ে কমে আসে। যেভাবেই হোক আমাদের সমাজ থেকে মাদক নির্মূল করতে হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, মাদক ও দুর্নীতি কীভাবে বন্ধ করা যায় চেষ্টা করছি। আমরা পুরোপুরি সফল হয়েছি বিষয়টা তা নয়। তবে আমরা চেষ্টা করছি। আজকাল অনেক বদি তৈরি হয়ে গেছে। তাদেরকে কীভাবে ধরা যায়, সেজন্য সাংবাদিকদের সহযোগিতা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, মাদকাসক্তি নিরাময়ের খরচ অনেক বেশি। তাই নিরাময় কেন্দ্রে যেন না যেতে হয়, সেই চেষ্টা থাকতে হবে।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সমতা প্রতিষ্ঠায় গণমাধ্যমের ভূমিকা বিষয়ে বুধবার জাতীয় পর্যায়ের সেমিনার হয়েছে। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কোর সহযোগিতায় গণমাধ্যম ও যোগাযোগবিষয়ক উন্নয়ন সংগঠন সমষ্টি ঢাকার মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে এ আয়োজন করে।
এতে সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিক, প্রতিবন্ধী অধিকারকর্মী, শিক্ষাবিদ, নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধি, শিক্ষার্থী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিরা অংশ নেন।
গণমাধ্যমে প্রতিবন্ধী সমতা শীর্ষক কার্যক্রমের আওতায় এ আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন ইউনেস্কো ঢাকা অফিস প্রধান ও বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. সুজান ভাইজ। প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব দিলারা জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট-এর মহাপরিচালক অতিরিক্ত সচিব মুহাম্মদ হিরুজ্জামান এনডিসি, দৈনিক কালের কণ্ঠ সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি হাসান হাফিজ। গণমাধ্যমে প্রতিবন্ধিতা অন্তর্ভুক্তি: চর্চা, চ্যালেঞ্জ ও করণীয় বিষয়ে সেমিনারে ঢাকা ট্রিবিউন সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ-এর সঞ্চালনায় বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে ছিলেন: মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এবং আইসিবিসি প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুল কাদির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের চেয়ারম্যান ইমরান হোসেন, ইউএনডিপি'র এসপিএসএস সিনিয়র অ্যাডভাইজার - কমিউনিকেশনস এসএম মনজুর রশীদ এবং এ-টু-আই প্রকল্পের জাতীয় পরামর্শক ভাস্কর ভট্টাচার্য। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন ইউনেস্কো ঢাকা অফিসের মিডিয়া ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন প্রধান নূরে জান্নাত প্রমা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সমষ্টির নির্বাহী পরিচালক মীর মাসরুরুজ্জামান।
প্রধান অতিথি দিলারা জামান এরকম অনুপ্রেরণামূলক আয়োজনের প্রশংসা করে বলেন, আলোচনা ও উপস্থাপনাগুলো আমার দৃষ্টি খুলে দিয়েছে। আমি ভালোবেসে আমার পাশের যে প্রতিবন্ধী মানুষটি আছে তার জন্য হাত বাড়িয়ে দেব। এখন থেকে আমি যে ক’টা দিন বাঁচব, আমি চেষ্টা করব আমার চারপাশে যারা আছে, আমি যাদের সঙ্গে অভিনয় করি, এবং যেসব মায়ের সঙ্গে আমার দেখা হয়, তাদের অনুরোধ করব তোমার পাশে যেসব প্রতিবন্ধী মানুষেরা আছে তাদের জন্য অল্প সময়ের জন্য হলেও তোমাদের হাত দুটি বাড়িয়ে দাও।
ড. সুজান ভাইজ বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে কিছু অগ্রগতি হলেও, পদ্ধতিগত বাধা এবং অবচেতন পক্ষপাত প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সুযোগ সীমিত করে চলেছে, বিশেষ করে মিডিয়া এবং কর্মসংস্থান খাতে। বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতিনিধিত্বের তীব্র অবমূল্যায়নের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি মিডিয়া পেশাদারদের বিদ্যমান স্টেরিওটাইপগুলোকে চ্যালেঞ্জ করার এবং কেবল করুণা বা কষ্টের বর্ণনার মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চিত্রিত করা থেকে দূরে সরে যাওয়ার আহ্বান জানান।
হাসান হাফিজ বলেন, 'প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মর্যাদার সাথে উপস্থাপনে গণমাধ্যমের দায়বদ্ধতা রয়েছে। গণমাধ্যমকে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উপযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতেও কাজ করতে হবে।'
মুহাম্মদ হিরুজ্জামান এনডিসি বলেন, 'সরকার গণমাধ্যমকে প্রতিবন্ধীবান্ধব প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলায় সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এজন্য জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটও কাজ করে চলেছে।'
অনুষ্ঠানে ইউনেস্কো প্রণীত গণমাধ্যমে প্রতিবন্ধী সমতা শীর্ষক ব্যবহারিক নির্দেশিকার মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা। নির্দেশিকার বাংলা রূপান্তরের সঙ্গে যুক্ত জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শাহনাজ মুন্নী এ সময় বক্তৃতা করেন।
এ আয়োজনে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আন্তর্জাতিক দিবস ২০২৪ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ও সমমানের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতার আটজন বিজয়ীকে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। গণমাধ্যমের বার্তাকক্ষ ও অনুষ্ঠানের মূলধারায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি বিষয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বাংলা ও ইংরেজি বিভাগে প্রথম হয়েছেন যথাক্রমে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি বিভাগের মো. জারিফুল ইসলাম জিম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সুমাইয়া খানম।
অনুষ্ঠানে বি-স্ক্যান এর শিল্পীদের পরিবেশনায় ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে নাটিকা, গান, নাচ ও আবৃত্তি পরিবেশন করেন শিল্পীরা।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হলো দ্বিতীয় জাতীয় সামাজিক ব্যবসা কেস প্রতিযোগিতা ২০২৫-এর গ্র্যান্ড ফাইনাল।
১৫তম সামাজিক ব্যবসা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতাটি যৌথভাবে আয়োজন করে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইউনূস সোশ্যাল বিজনেস সেন্টার, সোশ্যাল বিজনেস স্টুডেন্টস ফোরাম এবং ইউনূস সেন্টার।
বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সামাজিক ব্যবসা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি ও উদ্ভাবনী, টেকসই এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবসায়িক ধারণা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আয়োজন করা হয় এ প্রতিযোগিতা। এতে অংশগ্রহণ করে দেশের ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬৬টি দল, যার মধ্যে ছিল মোট ৬৫৪ জন প্রতিযোগী।
এই প্রতিযোগিতায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের "সিলকোনোমিস্টস" দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। প্রথম রানারআপ হয় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের "সুশি" দল এবং দ্বিতীয় রানারআপ হয় ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির "নো সারপ্রাইজেস" দল।
সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম লুৎফর রহমান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনূস সেন্টারের ওয়াইএসবিসির রিলেশন ম্যানেজার জিনাত টি. ইসলাম, তুরস্কের ইস্তানবুল কৈতুর ইউনিভার্সিটির লাইব্রেরি ও ডকুমেন্টেশন বিভাগের উপ-প্রধান সেরেফি সেনেম গুনিসু এবং গারবেজম্যানের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সোশ্যাল বিজনেস স্টুডেন্টস ফোরামের আহ্বায়ক মো. কামরুজ্জামান দিদার, উপদেষ্টা ড. খাদিজা রহমান তানচি এবং সহ-আহ্বায়ক সৈয়দ রায়হান-উল-ইসলাম।
কমনওয়েলথের মূল্যবোধ রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ দেশের ১০০ তরুণ
কমনওয়েলথ চার্টারের মূল্যবোধ সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে ও নিজ নিজ জীবনে বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছেন বাংলাদেশের প্রায় ১০০ তরুণ প্রতিনিধি। ২৩ জুন থেকে ২৪ জুন ঢাকায় অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী এক কর্মশালায় তারা এই অঙ্গীকার করেন।
বাংলাদেশ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় কমনওয়েলথ সচিবালয় এই কর্মশালার আয়োজন করে ।
কমনওয়েলথ চার্টারে অন্তর্ভুক্ত গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার মতো গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবোধ সম্পর্কে তরুণদের মধ্যে গভীর ধারণা তৈরি করা এই ছিল কর্মশালার লক্ষ্য।
মিডিয়া, সিভিল সোসাইটি, সংখ্যালঘু গোষ্ঠী ও শিক্ষাঙ্গনসহ বিভিন্ন পেশা ও পটভূমির তরুণরা এতে অংশ নেন। তারা ইতোমধ্যে নিজ নিজ কমিউনিটিতে ইতিবাচক ভূমিকা রেখে চলেছেন।
কেস স্টাডি ও দলগত আলোচনার মাধ্যমে তরুণরা জানতে পারেন কীভাবে এই মূল্যবোধগুলো বাংলাদেশি বাস্তবতার সঙ্গে সম্পর্কিত। কর্মশালার শেষ দিনে তারা এসব মূল্যবোধ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনাও করেন।
তাদের অঙ্গীকারের ভেতর রয়েছে, প্রথমবার ভোটারদের ভোটার হিসেবে নিবন্ধনে উৎসাহিত করা, পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠী ও নারীদের কণ্ঠস্বর আরও জোরালো করা, স্থানীয় সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখা ও নীতি নির্ধারণে অন্তর্ভুক্তির জন্য কাজ করা।
এই কর্মশালা অনেক অংশগ্রহণকারীর জন্য প্রথমবার কমনওয়েলথ চার্টারের সরাসরি সংস্পর্শে আসার সুযোগ তৈরি করল।
ঢাকার এক সামাজিক উদ্যোক্তা নাফিয়া ইসলাম ফারিয়া বলেন, ‘আমি ভাবিনি, কমনওয়েলথ চার্টার আমার কাজের সঙ্গে এত গভীরভাবে জড়িত হতে পারে। আলোচনা শুনে বুঝলাম, আমার বিশ্বাস আর এই মূল্যবোধ একসূত্রে গাঁথা।” তার মতে, এই সময়ে সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক মূল্যবোধ হলো ‘সহনশীলতা, সম্মান ও বোঝাপড়া’।
নাফিয়া আরও বলেন, ‘আমি যখন বাসায় ফিরব, তখন এই মূল্যবোধ অনুযায়ী নিজের কাজ, অনলাইন আচরণ ও মত প্রকাশের মধ্য দিয়ে তুলে ধরব। সেখান থেকেই পরিবর্তনের শুরু হবে।’
নৈতিক দিকনির্দেশনা
কর্মশালার উদ্বোধনী বক্তব্যে যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘কমনওয়েলথ চার্টার হলো বিশ্বের ৫৬টি দেশের ২.৭ বিলিয়ন মানুষের নৈতিক দিকনির্দেশনা।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই চার্টারের মূল্যবোধগুলো অবমূল্যায়িত হলে একটি দেশের জন্য ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে। তাই এই কর্মশালা শুধু সময়োপযোগী নয়, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের তরুণরা এই চার্টার সম্পর্কে জানলে তারা জাতি গঠনে আরও দক্ষভাবে অবদান রাখতে পারবে।’
কমনওয়েলথের সহকারী সেক্রেটারি-জেনারেল অধ্যাপক লুইস ফ্রান্সেস্কি বলেন, ‘আপনারা ইতোমধ্যে চিন্তায়, উদ্যোগে ও কমিউনিটি কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এখন এই মূল্যবোধগুলোকে নিজের জীবনে ও নেতৃত্বে কাজে লাগান।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের নেওয়া সিদ্ধান্তের উপর বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। সাফল্য হয়তো নিশ্চিত না, কিন্তু হাল ছেড়ে দিলে ব্যর্থতা নিশ্চিত। তাই পিছিয়ে থাকবেন না, উঠে দাঁড়ান, আওয়াজ তুলুন, নেতৃত্ব দিন। এমন কিছু করুন, যাতে আপনারা ও আপনার দেশ গর্ব করতে পারে।’
বাংলাদেশ লিবার্টি অ্যান্ড রাইটস ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা জায়েদ একরাম বলেন, ‘এই কর্মশালায় অংশ নিয়ে আমি এই মূল্যবোধগুলো বাস্তবে প্রয়োগ করতে অনুপ্রাণিত হয়েছি।’ তিনি জানান, তাঁর সংগঠনের তরুণদের সঙ্গে নিয়ে তিনি একটি নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশের সাংবিধানিক স্বীকৃতির জন্য কাজ করবেন।
২০১৩ সালে গৃহীত কমনওয়েলথ চার্টার রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত মূল্যবোধ ও নীতিমালাগুলোর একটি সম্মিলিত ঘোষণা। এতে সব সদস্যদেশ সম্মত হয়েছে।
ঢাকায় অবস্থানকালে অধ্যাপক লুইস ফ্রান্সেস্কি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে শুভেচ্ছা জানান ও প্রধান বিচারপতি, উপদেষ্টা, কূটনৈতিক প্রতিনিধি ও উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা আগামীকাল ২৬ জুন সকাল ১০টা থেকে শুরু হবে। বাংলা প্রথম পত্রের মাধ্যমে শুরু হয়ে লিখিত পরীক্ষা চলবে আগামী ১০ আগস্ট পর্যন্ত। এরপর হবে ব্যবহারিক পরীক্ষা।
এ বছর মোট ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে ৬ লাখ ১৮ হাজার ১৫ জন ছাত্র এবং ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬ জন ছাত্রী।
১১টি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের আওতায় পরীক্ষায় অংশ নেবে ১০ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৮ জন। অন্যদিকে, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের (আলিম) পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৮৬ হাজার ১০২ জন এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে রয়েছে ১ লাখ ৯ হাজার ৬১১ জন।
দেশে মোট পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা ২ হাজার ৭৯৭টি। এছাড়া বিদেশে ৮টি কেন্দ্রে ২৯৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবে। এ বছর মোট ৯ হাজার ৩১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। কেউ এ নির্দেশ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়া পরীক্ষাকেন্দ্রের ২শ গজের মধ্যে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের জন্য মোবাইল ফোনসহ সব ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
মন্তব্য