× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

অর্থ-বাণিজ্য
বেসিক ব্যাংকে শুধুই দীর্ঘশ্বাস
google_news print-icon

বেসিক ব্যাংকে শুধুই দীর্ঘশ্বাস

বেসিক-ব্যাংকে-শুধুই-দীর্ঘশ্বাস
লোকসানের কারণে ব্যয় কমানোর অংশ হিসেবে ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় বেসিক ব্যাংক। সংকটাপন্ন ব্যাংকটিকে উদ্ধারে কোনো উদ্যোগ কাজে লাগেনি।

‘বেতন কি কখনও কমে?’- রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের বেসিক ব্যাংকের কর্মীদের বেতন কমিয়ে দেয়ার পর আক্ষেপের সুরে এমন মন্তব্য ছুঁড়ে দিয়েছেন এক কর্মকর্তা। বলেছেন, ‘অলাভজনক প্রতিষ্ঠানকে কীভাবে লাভে আনা যায় তার নানাবিধ পন্থা আছে, তাই বলে কি বেতন কমিয়ে তা করতে হবে?’

দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট হয়ে যাওয়া এই ব্যাংকটিকে বাঁচাতে কর্মীদের বেতন কমানোকে শেষ আশ্রয় হিসেবে ব্যবহার করেছে সরকার। নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর করার ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ৩০ থেকে ৭০ শতাংশ কমে গেছে। সংকুচিত হয়েছে বাড়ি ভাড়া ও গ্রাচ্যুইটি সুবিধাও। যাদের গৃহঋণ নেয়া আছে, তারা বেকায়দায় পড়েছেন।

বিশেষায়িত ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠার পর ১৯৮৯ সালের ২১ জানুয়ারি থেকে বেসিক ব্যাংক লিমিটেড স্বতন্ত্র বেতন স্কেল পেয়ে আসা একটি ব্যাংক। এর এতদিনের বেতন কাঠামো রাষ্ট্রায়ত্ত অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় অনেক বেশি।

বেতন কর্তনের সিদ্ধান্তের পর দুই হাজার কর্মীর বুকে এখন দীর্ঘশ্বাস।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা মন্তব্য করেন, ‘ব্যাংকের সবাইতো দুর্নীতিগ্রস্ত না। অথচ সবাকেই শাস্তি পেতে হচ্ছে। বেতন কমিয়ে দেয়ার ফলে ব্যাংকটি উন্নতির চেয়ে কর্মীদের মনোবল ভেঙে গেছে।’

তাদের প্রশ্ন: মুনাফা না হওয়ার কারণে কোনো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান তার কর্মীদের বেতন কমিয়ে দিয়েছে, এমন নজির নেই।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ব্যাংককে এখন দীর্ঘমেয়াদী ঋণ বিতরণ থেকে স্বল্প মেয়াদি ঋণ বেশি বিতরণ করতে হবে। তবে ঋণ দেয়ার আগে কোন প্রকল্পে কাকে দেয়া হচ্ছে, সে বিষয়টি ভালোভাবে খোঁজ করতে হবে।

‘ব্যাংকের জনবল আরও কমিয়ে আনতে হবে। কম জনবল দিয়ে কীভাবে ভালো কাজ করা যায় সে বিষয়ে নজর দিতে হবে। পরিচালনা পর্ষদের কার্যক্রম আরও বাড়াতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘সরকারের কাছ থেকে মূলধন ঘাটতি বাবদ অর্থ বা বাজেটে তাদের জন্য বরাদ্দের আবেদন করতে পারে।

বেসিক ব্যাংকে শুধুই দীর্ঘশ্বাস
বেসিক ব্যাংকের এমডি আনিসুর রহমান



‘একসময় এসএমই (ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্প উদ্যোক্তা) খাতে বেসিক ব্যাংকের অনেক অবদান ছিল। এ জন্য ক্ষুদ্র ঋণের কিছু অর্থ এ ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ করতে হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনঃঅর্থায়ন তহবিল থেকে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্পে বেসিকের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করতে হবে।

‘বাংলাদেশ ব্যাংক অনেক সময় বিভিন্ন ব্যাংককে সিআরআর (নগদ জমার হার) বা এসএলআর (সহজে বিনিময়যোগ্য সম্পদ) সংরক্ষণের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতিসহ বিভিন্ন সুবিধা দেয়। বেসিক ব্যাংককেও এ ধরনের সুবিধা দিতে পারে।’

ব্যাংক খাত কাঁপানো অনিয়ম

২০০৯ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে বেসিক ব্যাংকের গুলশান, দিলকুশা ও শান্তিনগর শাখা থেকে অনিয়মের মাধ্যমে মোট সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ বিতরণের অভিযোগ ওঠার পর অনুসন্ধানে মাঠে নামে দুদক। ঋণপত্র যাচাই না করে জামানত ছাড়া, জাল দলিলে ভুয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ঋণদানসহ নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ অনুমোদনের প্রমাণ মেলে।

বাংলাদেশ ব্যাংক ও বেসিক ব্যাংকের নিয়োগ করা নিরীক্ষকের প্রতিবেদনে অনিয়মিত ঋণ মঞ্জুর, নিয়োগ ও পদোন্নতিতে পরিচালনা পর্ষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চুর সংশ্লিষ্টতা ছিল বলে প্রমাণ মেলে।

এরপর থেকে সবল ব্যাংকটি দুর্বল হতে থাকে। সে দুর্বলতা এখনও ব্যাংকটি কাটিয়ে উঠতে পারেনি। দুর্বলতা কাটাতে বেসিক ব্যাংককে সরকার থেকে ৩ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে। তাতেও দুর্বলতা কাটেনি।

তিন বছর ধরে ব্যাংকটিকে কোনো মূলধনের জোগান দেয়া হচ্ছে না। সরকার এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে আর কোনো মূলধন পাবে না বেসিক ব্যাংক। নিজস্ব উদ্যোগে টিকে থাকতে হবে। কিন্তু টিকে থাকতে নানামুখী পরিকল্পনা করেও উন্নতি নেই।

অবস্থার পরিবর্তন নেই

পরিস্থিতির তেমন পরিবর্তন নেই, একই চক্করে থমকে আছে বেসিক ব্যাংক। অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে খেলাপি আদায় কিছুটা বাড়লেও ব্যতিক্রম শুধু রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের এই ব্যাংক। নানামুখী কৌশল হাতে নিয়েও পাল্টাচ্ছে না পরিস্থিতি।

ব্যাংকটির মোট ঋণের অর্ধেকের বেশি খেলাপি। অনিয়মের মাধ্যমে এ ব্যাংক থেকে বেরিয়ে গেছে হাজার হাজার কোটি টাকা।

খাদের কিনার থেকে টেনে তুলে ব্যাংকটিকে মূলধন যোগান দেয় সরকার। পরিচালনা পর্ষদ পরিবর্তনসহ গ্রহণ করা হয় নানা কৌশল। কিন্তু মাসের পর মাস কেটে গেলেও কমছে না খেলাপির পরিমাণ।

বাড়ছে খেলাপি ঋণ

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সাল শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের ঋণস্থিতি ১৪ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়ে পড়েছে ৭ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৫১ দশমিক ১৩ শতাংশ। শুধু তাই নয়, ব্যাংকটির নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন সংরক্ষণেও ঘাটতি রয়েছে ৩ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা।

ব্যাংকের মূলধন ঘাটতিও ১ হাজার ৪৯২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। ফলে সংকটে নিমজ্জিত হয়ে রয়েছে বেসিক ব্যাংক।

ক্রমান্বয়ে বাড়ছে লোকসান

বেসিক ব্যাংকের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০০৯ সালেও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটি প্রায় ৬৫ কোটি টাকা নিট মুনাফা করে। পরবর্তী সময়ে তা কমে ২০১২ সালে ২ কোটি ৭৮ লাখ টাকায় দাঁড়ায়।

এরপর থেকে ধারাবাহিকভাব লোকসানে পড়তে থাকে ব্যাংকটি। ২০১৩ সালে ৫৩ কোটি টাকা লোকসান করে। ২০১৪ সালে লোকসানের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ১১১ কোটি টাকা। ২০১৫ সালে ব্যাংকটির লোকসান বেড়ে হয় ৩১৮ কোটি টাকা।

অতীতের অনিয়ম জালিয়াতির চূড়ান্ত ধাক্কা লাগে ২০১৬ সালের নিট মুনাফায়। ওই বছর ব্যাংকটির লোকসান দাঁড়ায় ১ হাজার ৪৯৩ কোটি টাকায়।

এরপর ২০১৭ সালে ৬৮৪ কোটি টাকা এবং ২০১৮ সালেও ৩৫৪ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে ব্যাংকটি।

২০১৯ সালে ৩২৭ কোটি টাকা নিট লোকসান গোনার পর ২০২০ সালেও প্রায় ৪০০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে বেসিক ব্যাংকের।

কমেছে বেতন

লোকসানের কারণে ব্যয় কমানোর অংশ হিসেবে ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর ব্যাংকের ৪৮৭তম পর্ষদ সভায় বেসিক ব্যাংকের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন কমানোর সিদ্ধান্ত হয়।

২২ ডিসেম্বর এক প্রজ্ঞাপন জারি করে ওইদিন থেকেই এটা কার্যকর বলে জানায় বেসিক ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়: ‘সাত বছর ধরে ব্যাংকের ক্রমাগত লোকসান হচ্ছে। ফলে অতিরিক্ত বেতন-ভাতা ব্যাংকের পক্ষে বহন করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এ জন্য ব্যাংকের বর্তমান বেতন কাঠামো ও অন্যান্য সুবিধা বাতিল করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের “চাকরি (ব্যাংক, বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান) (বেতন ও ভাতাদি) আদেশ ২০১৫”-এর অনুরূপ বেতন কাঠামো নির্ধারণ করা হলো। তবে ব্যাংকের বেতন কাঠামোর বাইরে অন্যান্য সুবিধা পর্ষদের অনুমোদন সাপেক্ষে দেয়া হবে।’

ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মীরা বেতনের বাইরে লাঞ্চ-ভাতা, গাড়ির ঋণ, অতিরিক্ত বোনাস ইত্যাদি সুবিধা পেয়ে থাকেন।

২০১৪ সালে ব্যাংকটি বিশেষায়িত থেকে পুরোপুরি বাণিজ্যিক ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করে।

বেসিক ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালকের মূল বেতন স্কেল দেড় লাখ টাকা। অন্যদিকে, রাষ্ট্রায়ত্ত অন্য ব্যাংকে একই পদের মূল বেতন স্কেল ৬৬ হাজার টাকা।

বেসিকে জিএম পর্যায়ে মূল বেতন এক লাখ টাকা, ডিজিএমদের ৬৬ হাজার টাকা, এক্সিকিউটিভ অফিসারদের (প্রিন্সিপাল অফিসার সমমান) ৩৭ হাজার টাকা, সিনিয়র অফিসারদের ২৫ হাজার টাকা ও অফিসারদের ২০ হাজার টাকা।

অন্যদিকে, অন্যান্য রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকে যথাক্রমে জিএমদের মূল বেতন ৫৬ হাজার ৫০০ টাকা, ডিজিএমদের ৫০ হাজার টাকা, প্রিন্সিপাল অফিসারদের সাড়ে ৩৫ হাজার টাকা, সিনিয়র অফিসারদের ২০ হাজার টাকা ও অফিসারদের বেতন ১৬ হাজার টাকা।

অর্থাৎ অন্যান্য রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের বেতন কাঠামোর চেয়ে বেসিক ব্যাংকের কর্মীদের বেতন বেশি ছিল।

বেতনে কতো সাশ্রয়

নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের ফলে এই খাতে ব্যয় কমেছে প্রায় ৩ কোটি টাকা। দীর্ঘ দিন ধরে ব্যাংকের কর্মীরা সুবিধাবঞ্চিত।

সারা দেশে ৭২টি শাখা ও ২ হাজার ১০০ জনবল নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে বেসিক ব্যাংক।

২০১৪ সালের পর থেকে ব্যাংকের কর্মীদের কোনো প্রণোদনামূলক বোনাস দেয়া হয়নি। এমনকি চাকরি বিধিমালায় থাকা সত্ত্বেও ২০১৮ ও ২০১৯ সালে ব্যাংকে কোনো পদোন্নতি দেয়া হয়নি।

একজন কর্মকর্তা জানান, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে চাকরি পেয়েও এখন হতাশা আর দীর্ঘশ্বাস ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই।

বেসিক ব্যাংকে যোগদান করা নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিসুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি মাত্র যোগদান করেছি। সবার সঙ্গে কথা হয়েছে। ব্যাংকের উন্নতির জন্য সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।’

আরও পড়ুন:
বেসিক ব্যাংকের নতুন এমডি আনিসুর রহমান

মন্তব্য

আরও পড়ুন

অর্থ-বাণিজ্য
There is no plan to raise fuel prices now Finance Advisor

এখনই জ্বালানির দাম বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই: অর্থ উপদেষ্টা

এখনই জ্বালানির দাম বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই: অর্থ উপদেষ্টা

সরকার ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতের উপর নিবিড়ভাবে নজর রাখছে জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এই মুহূর্তে জ্বালানির দাম বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই।

তিনি বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। যদি সংঘাত দীর্ঘায়িত হয়—তাহলে এটি আমাদের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। তবে আপাতত, আমরা অপেক্ষা করব।’

মঙ্গলবার (১৭ জুন) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নতুন সম্মেলন কক্ষে অর্থনৈতিক বিষয় সম্পর্কিত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এবং পাবলিক ক্রয় সম্পর্কিত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

এই সংঘাত অভ্যন্তরীণ জ্বালানির দামের উপর প্রভাব ফেলতে পারে কিনা এমন প্রশ্নে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘আন্তর্জাতিকভাবে এরই মধ্যে দাম সামান্য বেড়েছে, তবে আমাদের আগের দেওয়া ক্রয়াদেশগুলোকে এটি প্রভাবিত করেনি।’

তিনি আরও বলেন, সরকার গ্যাস ও এলএনজির দামও পর্যবেক্ষণ করছে।

উপদেষ্টা বলেন, ‘যদি এলএনজির দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে, তবে আমরা আমাদের পরিকল্পনায় এটি বিবেচনা করব। সৌভাগ্যবশত, আজ আমরা যে এলএনজি আমদানি প্রস্তাবটি অনুমোদন করেছি তা পুরোনো দামেই। আমরা ভাগ্যবান যে এটি আগের হারে পাচ্ছি।’

বাণিজ্যের উপর বর্তমানে কোনো প্রভাব পড়ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না, বর্তমানে বাণিজ্যের উপর কোনো প্রভাব পড়ছে না।’

ভবিষ্যতে সম্ভাব্য বিঘ্নের আশঙ্কায় সরকার কোনো বিশেষ প্রস্তুতি নিচ্ছে কিনা জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘আজ আমরা যে এলএনজি এবং সার আমদানি প্রস্তাবগুলো অনুমোদন করেছি তা আগের দামেই রয়েছে। ভবিষ্যতে নতুন যেকোনো প্রস্তাব মূল্যে উপর প্রভাব পড়তে পারে।’

যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে তাক্ষণিক পরিকল্পনা সম্পর্কে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, জ্বালানি মন্ত্রণালয় বিকল্পগুলো নিয়ে কাজ করছে। ‘আমরা এলএনজির উপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করি। এই সংঘাত কেবল জ্বালানি নয়, সার আমদানি এবং সামুদ্রিক পরিবহনকেও প্রভাবিত করতে পারে। হরমুজ প্রণালী দিয়ে জাহাজ চলাচল করে যার প্রভাব পড়তে পারে। তবে আমি মনে করি না যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হবে।’

বিশ্বব্যাপী জ্বালানির দাম ইতোমধ্যে বেড়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, অনেক দেশে দাম বেড়েছে, তবে আমরা এখনও কোনো পরিবর্তন করছি না। আমরা অপেক্ষা করব এবং দেখব।’

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
The unemployed people are lost in employment
কর্মসংস্থান হারিয়ে বেকার সংশ্লিষ্টরা

হারিয়ে যাচ্ছে বর-কনের বাহন পালকি

হারিয়ে যাচ্ছে বর-কনের বাহন পালকি গ্রামবাংলার ঐতিহ্য পালকি। ছবি: নিউজবাংলা

পালকি ছিল এক সময় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য, বর-কনের বাহন। এটা ছাড়া বিয়ের কথা ভাবাই যেত না। সারা দেশের মতো রূপগঞ্জেও একই অবস্থা ছিল। কালের বির্বতনে চিরায়ত গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের ধারক পালকি রূপগঞ্জে আজ আর চোখে পড়ে না। পালকি এখন মিউজিয়াম পিস হয়ে কালের সাক্ষী হয়ে আছে জাদুঘরে। বেহারাদের সুর করে সেই গ্রাম ঘুরে মাঠ-ঘাট-প্রান্তর পেরিয়ে গন্তব্যের কাছে দূর থেকে সেই ছয় বেহারাদের আর দেখা যাচ্ছে না। তাদের ছন্দিত লয়ে হাঁটার সঙ্গে সঙ্গে এ গাঁ থেকে ওগাঁয়ে নাইয়র, বিয়ের কনে বর কিংবা মান্যগন্য ব্যক্তিদের নিয়ে যাওয়ার এ চক্রবিহীন যান সম্ভবত তার অন্তিম যাত্রা করেছে। ছন্দের জাদুকর সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ভাষায়, রবীন্দ্রনাথের কবিতায়, হেমন্তের গানে কিংবা ভুপেন হাজারিকার মাদল তালে চলা পালকি এখন ঐতিহ্যের খাতায় নাম লিখিয়েছে।

সেই ন্যাংটা পুঁটো ছেলেটা আর বলে না পালকি চলে পালকি চলে.....আদুল গাঁয়ে যাচ্ছে কারা হনহনিয়ে। রবি ঠাকুরের ‘বীর পুরুষ’ কবিতার খোকা তার মাকে পালকিতে নিয়ে যাওয়ার সময় ডাকাতদের সাথে লড়ে যখন ওরা আসে তেড়ে ‘হারে রে রে’ বলে। সেই ভীষণ যুদ্ধের বর্ণনাও দিতে পারে না মাকে। মাও বলতে পারে না, ভাগ্যেস খোকা ছিল তার সঙ্গে। দাদা তার সদ্য বিয়ে হওয়া দিদিকে আর বলে না, আর কটাঁ দিন থাক না দিদি, কেঁদে কেটে কঁকিয়ে, দুদিন বাদে তো নিয়েই যাবে পালকি করে সাজিয়ে। ‘মৈমনসিং গীতিকার’ দেওয়ানা মদিনা ও ছুটবে না পালকিতে আবের পাংখা নিয়ে আর পালকি বহরের সেই পরিচিত দৃশ্য এখন আর দেখা যায় না।

আধুনিক যোগাযোগের গোগ্রাসে পালকি হারিয়ে যাচ্ছে বিস্মৃতির অতল তলে প্রাচীন বাংলার এ বাহনটি। এক সময় গ্রাম-বাংলার হাটবাজারে পালকি সাজিয়ে রাখা হত। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার আগেই পালকিওয়ালাদের কাছে ছুটে যেতেন বরের লোকজন। পালকি কাঠ দিয়ে তৈরি করা হতো। ছয়জন মিলে পালকি বহন করতো। সামনে পেছনে দুজন ও মাঝখানে দুজন করে পালকি কাঁদে নিত। প্রথমে বরকে পালকিতে করে তার নিজ বাড়ি থেকে কনের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হতো। বিয়ের কার্যক্রম সম্পূর্ণ হওয়ার পর বর-কনেকে এক সঙ্গে আবার বরের বাড়িতে নিয়ে আসতো।

আসলে পালকি নামটির উৎপত্তি ফারসি ও সংস্কৃত উভয় ইন্দো ভারতীয় ভাষা থেকে আর সেই সঙ্গে ফরাসি থেকেও। পল্লীকবি জসিম উদ্দিন তাঁর স্মৃতি কথায় এ গাঁ থেকে ওগাঁয়ে যাওয়া বেহারাদের পালকি নিয়ে চলার যে বিবরণ দিয়েছেন তা আমাদের আবহমান গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের অংশ। বিলুপ্ত এ পালকি এখন বিভিন্ন জাদুঘরে শোভা পাচ্ছে। বিয়ে বাড়িতে নব বর-বধুদের আনা নেয়ায় পালকি ব্যবহার করা হতো। চক্রযানের বিপ্লবে পালকির জায়গা দখল করে নিয়েছে আধুনিকতার এ যুগে প্রাইভেটকার, নোহা, বাস ও মাইক্রোবাস। হালের লাঙ্গল যেমন গ্রামেও অচল তেমনি ধনী গরিব নির্বিশেষে সকলের নানা অনুষ্ঠানে ব্যবহার করছে আধুনিক যান্ত্রিক যানবাহন। এসব যানের রমরমা ব্যবসাও এ কারণেই জমে ওঠেছে।

আধুনিকতার ছোঁয়ায় ইদানিং বর-কনের বাহনে যোগ হয়েছে হেলিকপ্টারও। রূপগঞ্জের মুড়াপাড়া এলাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে বর যাত্রা গিয়েছেন সফিক মিয়া। হেলিকপ্টারে বর-কনে বহনের ঘটনা তখন পুরো এলাকায় বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। ছড়ায় বলা হতো বউ সাজবে কালকি, চড়বে সোনার পালকি! সোনার বরনী কন্যা এখন আর পালকিবদ্ধ পরিবেশে যাবে না, উঠবে আসল বা নকল ফুলের সাজানো এয়ারকন্ডিশন গাড়িতে।

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Bus in Pabna Truck driver killed in a collision with truck

পাবনায় বাস- ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রাকচালক নিহত

পাবনায় বাস- ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রাকচালক নিহত

মঙ্গলবার (১৭ জুন) ভোর সাড়ে চারটার দিকে পাবনা বাইপাস মহাসড়কের ইয়াকুব ফিলিং স্টেশন এর সামনে দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ট্রাকচালক সেলিম হোসেন (৩৮) মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহারবাটি গ্রামের মৃত আব্দুল গনির ছেলে।

আহতরা হলেন- বাসের হেলপার তারেক (৩৫) ট্রাকের হেল্পার আলামিন (৩৫)। তাদের রাজশাহী মেডিকেল। কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ট্রাকচালক সেলিম সুনামগঞ্জ থেকে পাথর ভর্তি করে মাওয়া যাচ্ছিলেন।অপরদিক পাবনা এক্সপ্রেস বাসটি ঢাকা থেকে পাবনা বাস টার্মিনালে যাত্রী নামিয়ে হেলপার আলামিন গাড়ি গ্যারেজ করার জন্য দ্রুতগতিতে গাড়ি চালিয়ে ইয়াকুব ফিলিং স্টেশনের সামনে পৌঁছালে ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

স্থানীয় লোকজন ফায়ার সার্ভিসকে জানালে তাৎক্ষিনক ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম আহত তিনজনকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ট্রাক চালক সেলিম কে মৃত ঘোষণা করেন।

অপরদিকে আহত ট্রাকের হেলপার ও বাসের হেলপারের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্থানান্তর করা হয়।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সদর থানা হেফাজতে আনা হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাক ও বাসটি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Jamaat did not join the consensus commission discussion

ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় যোগ দেয়নি জামায়াত

ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় যোগ দেয়নি জামায়াত

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার দ্বিতীয় পর্বের আলোচনায় যোগ দেয়নি জামায়েতে ইসলামীর কোনো প্রতিনিধি। বিএনপি ও এনসিপির মাঝে জামায়াতের জন্য সংরক্ষিত আসনটি মধ্যাহ্নভোজের আগ পর্যন্ত ছিল ফাঁকা।

জামায়াতের আলোচনায় যোগ না দেয়ায় নানা রাজনৈতিক দল নানা মত দিয়েছেন। অনেকে বলছেন, কমিশনের বেশ কয়েকটি বিষয়ে জামায়াতের বনিবনা না হওয়ায় মঙ্গলবারের আলোচনায় তারা যোগ দেননি।

এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘কেন জামায়াত আলোচনায় যোগ দেয়নি সেই উত্তর কমিশনই ভালো দিতে পারবে।’

জামায়াতের আলোচনায় যোগ না দেয়া প্রসঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘আমরা যতদূর জানি জামায়াত আজকের বৈঠক প্রতীকী বয়কট করেছে। ঐকমত্য কমিশনের আজকের আলোচ্য বেশ কয়েকটি বিষয়ে জামায়াত হয়তো একমত হতে পারেনি। তাই আলোচনায় অংশ নেয়নি।’

জামায়াতের আলোচনায় যোগ না দেয়া প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল হিসেবে আজকের আলোচনায় জামায়াতের থাকা উচিত ছিল। তারা এই আলোচনা বয়কট করেছে কিনা সে বিষয়ে পরিষ্কার কিছু জানায়নি। যদি মধ্যাহ্নভোজের পরেও জামায়াত আলোচনায় না আসে তাহলে পুরো ব্যাপারটি বোঝা যাবে।’

ইসলামী আন্দোলনের এই নেতা বলেন, ‘আদর্শিক জায়গা থেকে আমরা বেশিরভাগ বিষয়েই একমত হয়েছি। কিন্তু নারীদের জন্য আলাদা করে সংরক্ষিত ১০০ আসন রাখার প্রয়োজন দেখি না। নারীর ক্ষমতায়ন আমরাও চাই, কিন্তু কোনো বৈষম্যমূলক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে না।’

বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল মনে করছে, নারী আসনসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে কমিশনের সঙ্গে মতানৈক্য হওয়ায় আলোচনার প্রথম পর্যায়ে জামায়াত যোগ দেয়নি।

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Opposition Party of Chairman of Four Standing Committee in Parliament Salahuddin

সংসদে চারটি স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদ বিরোধী দলের: সালাহউদ্দিন

সংসদে চারটি স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদ বিরোধী দলের: সালাহউদ্দিন

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের দ্বিতীয় পর্যায়ের সভার মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে সাংবাদিকদের বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আগামী জাতীয় সংসদে ৫০টি স্থায়ী কমিটির মধ্যে চারটি বিরোধী দলের জন্য ধার্য হয়েছে এবং সব রাজনৈতিক দল এ বিষয়ে একমত।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মঙ্গলবারের (১৭ জুন) সভায় চারটি গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় স্থায়ী কমিটি পাবলিক অ্যাকাউন্ট, প্রিভিলেজ, ইস্টিমেশন এবং পাবলিক আন্ডারটেকিং কমিটির সভাপতি পদ বিরোধী দল থেকে দেওয়ার সিদ্ধান্তে সবাই একমত বলে জানিয়েছে তিনি।

বাকি স্থায়ী কমিটি প্রসঙ্গে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘শুধু এই চারটি কমিটি না, সংখ্যাধিক্যের ভিত্তিতে বাকি কমিটিতেও আনুপাতিক হারে বিরোধীদলের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা থাকবে।’

‘এছাড়া সংবিধানের ৭০ নং অনুচ্ছেদ যেখানে নিজ দলের বিরুদ্ধে ভোট দিলে সদস্য পদ বাতিলের বিধান আছে, সে বিষয়ে আস্থা ভোট এবং অর্থ বিল বাদে অন্য কোনো বিষয়ে ভোটদানে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে সবাই একমত,’ বলেন তিনি।

তবে বিএনপির পক্ষ থেকে যুদ্ধ পরিস্থিতি এবং জাতীয় নিরাপত্তা এই দুই বিষয়েও দলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া যাবে না এমন মত দেওয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে এই দুই বিষয়ে অটল থাকার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা নির্বাচিত হলে ৭০নং অনুচ্ছেদে এ দুটি বিষয়ও যুক্ত করা হবে।’

নারীদের ১০০ সংরক্ষিত আসন প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলই এ বিষয়ে একমত। তবে নির্বাচন পদ্ধতি কেমন হবে তা নিয়ে মতানৈক্য আছে। আশা করছি, আজকের আলোচনা শেষে এ বিষয়ে সমাধানে আসা যাবে ‘

এছাড়া জুলাই সনদের পাশাপাশি প্রতিটি রাজনৈতিক দলের আলাদা আলাদা ইশতেহার গুরুত্ব পাবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির এ নেতা।

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Two pirates with weapons in the Sundarbans 

সুন্দরবনে অস্ত্রসহ দুই ‘জলদস্যু’ আটক 

সুন্দরবনে অস্ত্রসহ দুই ‘জলদস্যু’ আটক 

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে নজির গাজী (৪৯) ও দিদারুল ইসলাম (৩৮) নামে দুই ’জলদস্যুকে’ আটক করেছে পুলিশ। সোমবার রাত সাড়ে ৯টা ও ১১টার দিকে উপজেলার উপকুলবর্তী যতীন্দ্রনগর ও মীরগাং এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। এসময় আটক দুই জলদস্যুর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাদের ব্যবহৃত নৌকা থেকে একটি একনলা বন্দুক উদ্ধার করে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হুমায়ুন কবির মোল্যা।

এর আগে সোমবার রাত আটটার দিকে সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে উঠে আসার সময় স্থানীয়দের ধাওয়ার মুখে অপর কয়েক সহযোগিসহ এসব জলদস্যুরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। আটকরা হলেন— শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের নওশাদ গাজী এবং আশাশুনি উপজেলার চাকলা গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে দিদারুল ইসলাম।

আবু হামজা, সিদ্দিক হোসেন ও আকবর আলীসহ স্থানীয়রা জানায়, রাত সাড়ে আটটার দিকে অপরিচিত পাঁচ/সাত জন ব্যক্তি সুন্দরবন তীরবর্তী যতীন্দ্রনগর বাজারে যায়। এসময় নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার জন্য তারা মাইক্রো বা ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলের জন্য কথা বলছিলেন। একপর্যায়ে সন্দেহের বশবর্তী হয়ে নাম—পরিচয়সহ সুন্দরবন এলাকায় আসার কারণ জানতে চাইলে তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় যতীন্দ্রনগর বাজারে উপস্থিত লোকজন ধাওয়া করে দিদারুলকে ধরে পুলিশকে খবর দেয়। পরবর্তীতে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবির ঘটনাস্থলে পৌঁছে নজীরকে আটকের পাশাপাশি তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই চক্রের ব্যবহৃত মাছ শিকারের নৌকার মধ্যে থেকে একটি একনলা বন্দুক ও একটি দা উদ্ধার করে।

এদিকে স্থানীয়রা জানিয়েছে, জোনাব বাহিনী এখন সুন্দরবনে খুব বেশি তৎপর না। বরং নজীর, তার ভাই নবাব ও ছেলে আব্দুর রহিম এবং মুন্সিগঞ্জ আটিরউপর এলাকার আছাদুলসহ কয়েকজনকে নিয়ে জোনাবের নামে সুন্দরবনে দস্যুতায় লিপ্ত। সোমবার রাতে নজীর আলীকে আটকের পরপরই তার ছেলে আব্দুর রহিম ও ভাই নবাব ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন।

আটক নজীর আলীর ভাষ্য, তিনি সুন্দরবনের ত্রাস কুখ্যাত জোনাব বাহিনীর সদ্যদের উপরে তুলে দেওয়া এবং সুন্দরবনে নামিয়ে দেয়ার কাজ করেন। সোমবার ১০ হাজার টাকার চুক্তিতে জোনাব বাহিনীর দুই সদস্যকে যতীন্দ্রনগর বাজার পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে ছিলেন। বনবিভাগের অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনে যেয়ে মাছ শিকারের পাশাপাশি তারা পরিচিত জলদস্যুদের উপরে নিচে উঠানামার কাজ করেন বলেও দাবি তার। উপরে উঠে যাওয়া দুই জলদস্যু উদ্ধারকৃত অস্ত্রটি তার নৌকার মধ্যে রেখে যায় বলেও তিনি দাবি করেন।

দিদারুল জানান, তিনি নজীর আলীর শ্রমিক হিসেবে সুন্দরবনে যাওয়া জেলেদের জিম্মি করারসহ মুক্তিপণ আদায়ের কাজ করেন। লোকারয়ে পৌঁছে দেওয়া দুই জলদস্যুকে সুন্দরবনের পুটেরদুনে এলাকা থেকে নিয়ে আসার কথাও নিশ্চিত করেন তিনি। তবে তার কাছে মোবাইলের পাওয়ার ব্যাঙ্কসহ নানান সরঞ্জামাদির বিষয়ে জানতে চাইলে নিরুত্তর থাকেন।

এদিকে অস্ত্র উদ্ধারসহ দু’জনকে আটকের বিষয়ে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হুমায়ুন কবির মোল্যা জানান, নজীরের দেওয়া তথ্যে নৌকায় থাকা ককসিটের নিচে বিশেষ কায়দায় লুকানো অবস্থায় একটি একনলা বন্দুক উদ্ধার হয়েছে। আটকের পর উভয়কে শ্যামনগর থানায় নেওয়া হয়েছে। তারা মাছ শিকারির ছদ্মবেশে সুন্দরবনে প্রবেশ করতেন বলে প্রাথমিক তথ্য মিলেছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাহিনীর নাম—পরিচয়সহ বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।

মন্তব্য

অর্থ-বাণিজ্য
Aurakhali Bazaar artisans are busy busy making boats
বর্ষার আগমনী বার্তা

নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে আওরাখালী বাজারের কারিগররা

নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে আওরাখালী বাজারের কারিগররা

গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের আওরাখালী বাজারে বর্ষার আগমনের আগেই শুরু হয়েছে নৌকা তৈরির ব্যস্ততা। বেলাই বিল ঘিরে গড়ে ওঠা এই ঐতিহ্যবাহী নৌকার বাজারে ইতোমধ্যে কাঠমিস্ত্রিরা দিনরাত পরিশ্রম করে তৈরি করছেন নানা আকার-আকৃতির কাঠের নৌকা। বর্ষার পানিতে ভাসিয়ে মাছ ধরা, কৃষিকাজ কিংবা সাধারণ যাতায়াতের জন্য এসব নৌকা স্থানীয় মানুষের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

স্থানীয়দের মতে, এই বাজারে প্রায় বিশটির বেশি দোকান বা কাঠের কারখানা রয়েছে, যেখানে কাজ করছেন শতাধিক শ্রমিক। নৌকা তৈরির মৌসুম শুরু হতেই এসব দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে। কাঠের উপর নির্ভরশীল এই শিল্পটি শুধু বর্ষাকালেই নয়, বছরের অনেকটা সময় জুড়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছে এলাকার বহু মানুষের জন্য।

একজন অভিজ্ঞ কারিগর জানান, "আমরা ছোট-বড় নানা আকারের নৌকা তৈরি করি। চাহিদা অনুযায়ী ডিজাইন এবং কাঠ ব্যবহার করে নৌকা বানানো হয়। ছোট নৌকার দাম শুরু হয় আট হাজার টাকা থেকে, আর বড় নৌকার দাম গিয়ে ঠেকে প্রায় ৩০ হাজার টাকায়।"

নৌকা কিনতে আসা এক কৃষক বলেন, "প্রতি বছর বর্ষার আগে একটা নৌকা কিনতে হয়। বিলের ভেতর যাতায়াত, ফসল তোলা আর মাছ ধরার কাজে এটি খুবই দরকারি।"

এই বাজারের ব্যবসায়ীরা মনে করেন, সরকারি সহায়তা পেলে এই নৌকা শিল্প আরও প্রসারিত হতে পারে। নৌকা রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি হলে দেশের বাইরেও এই হস্তশিল্পের পরিচিতি ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন অনেকেই।

প্রাকৃতিক জলাভূমিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা আওরাখালীর এই নৌকা বাজার শুধুই ব্যবসার স্থান নয়—এটি গ্রামীণ জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। বর্ষা যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই যেন এখানে নতুন জীবনের স্পন্দন ফিরে আসছে।

মন্তব্য

p
উপরে