‘বেতন কি কখনও কমে?’- রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের বেসিক ব্যাংকের কর্মীদের বেতন কমিয়ে দেয়ার পর আক্ষেপের সুরে এমন মন্তব্য ছুঁড়ে দিয়েছেন এক কর্মকর্তা। বলেছেন, ‘অলাভজনক প্রতিষ্ঠানকে কীভাবে লাভে আনা যায় তার নানাবিধ পন্থা আছে, তাই বলে কি বেতন কমিয়ে তা করতে হবে?’
দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট হয়ে যাওয়া এই ব্যাংকটিকে বাঁচাতে কর্মীদের বেতন কমানোকে শেষ আশ্রয় হিসেবে ব্যবহার করেছে সরকার। নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর করার ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ৩০ থেকে ৭০ শতাংশ কমে গেছে। সংকুচিত হয়েছে বাড়ি ভাড়া ও গ্রাচ্যুইটি সুবিধাও। যাদের গৃহঋণ নেয়া আছে, তারা বেকায়দায় পড়েছেন।
বিশেষায়িত ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠার পর ১৯৮৯ সালের ২১ জানুয়ারি থেকে বেসিক ব্যাংক লিমিটেড স্বতন্ত্র বেতন স্কেল পেয়ে আসা একটি ব্যাংক। এর এতদিনের বেতন কাঠামো রাষ্ট্রায়ত্ত অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় অনেক বেশি।
বেতন কর্তনের সিদ্ধান্তের পর দুই হাজার কর্মীর বুকে এখন দীর্ঘশ্বাস।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা মন্তব্য করেন, ‘ব্যাংকের সবাইতো দুর্নীতিগ্রস্ত না। অথচ সবাকেই শাস্তি পেতে হচ্ছে। বেতন কমিয়ে দেয়ার ফলে ব্যাংকটি উন্নতির চেয়ে কর্মীদের মনোবল ভেঙে গেছে।’
তাদের প্রশ্ন: মুনাফা না হওয়ার কারণে কোনো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান তার কর্মীদের বেতন কমিয়ে দিয়েছে, এমন নজির নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ব্যাংককে এখন দীর্ঘমেয়াদী ঋণ বিতরণ থেকে স্বল্প মেয়াদি ঋণ বেশি বিতরণ করতে হবে। তবে ঋণ দেয়ার আগে কোন প্রকল্পে কাকে দেয়া হচ্ছে, সে বিষয়টি ভালোভাবে খোঁজ করতে হবে।
‘ব্যাংকের জনবল আরও কমিয়ে আনতে হবে। কম জনবল দিয়ে কীভাবে ভালো কাজ করা যায় সে বিষয়ে নজর দিতে হবে। পরিচালনা পর্ষদের কার্যক্রম আরও বাড়াতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের কাছ থেকে মূলধন ঘাটতি বাবদ অর্থ বা বাজেটে তাদের জন্য বরাদ্দের আবেদন করতে পারে।
‘একসময় এসএমই (ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্প উদ্যোক্তা) খাতে বেসিক ব্যাংকের অনেক অবদান ছিল। এ জন্য ক্ষুদ্র ঋণের কিছু অর্থ এ ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ করতে হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনঃঅর্থায়ন তহবিল থেকে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্পে বেসিকের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করতে হবে।
‘বাংলাদেশ ব্যাংক অনেক সময় বিভিন্ন ব্যাংককে সিআরআর (নগদ জমার হার) বা এসএলআর (সহজে বিনিময়যোগ্য সম্পদ) সংরক্ষণের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতিসহ বিভিন্ন সুবিধা দেয়। বেসিক ব্যাংককেও এ ধরনের সুবিধা দিতে পারে।’
ব্যাংক খাত কাঁপানো অনিয়ম
২০০৯ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে বেসিক ব্যাংকের গুলশান, দিলকুশা ও শান্তিনগর শাখা থেকে অনিয়মের মাধ্যমে মোট সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ বিতরণের অভিযোগ ওঠার পর অনুসন্ধানে মাঠে নামে দুদক। ঋণপত্র যাচাই না করে জামানত ছাড়া, জাল দলিলে ভুয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ঋণদানসহ নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ অনুমোদনের প্রমাণ মেলে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বেসিক ব্যাংকের নিয়োগ করা নিরীক্ষকের প্রতিবেদনে অনিয়মিত ঋণ মঞ্জুর, নিয়োগ ও পদোন্নতিতে পরিচালনা পর্ষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চুর সংশ্লিষ্টতা ছিল বলে প্রমাণ মেলে।
এরপর থেকে সবল ব্যাংকটি দুর্বল হতে থাকে। সে দুর্বলতা এখনও ব্যাংকটি কাটিয়ে উঠতে পারেনি। দুর্বলতা কাটাতে বেসিক ব্যাংককে সরকার থেকে ৩ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে। তাতেও দুর্বলতা কাটেনি।
তিন বছর ধরে ব্যাংকটিকে কোনো মূলধনের জোগান দেয়া হচ্ছে না। সরকার এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে আর কোনো মূলধন পাবে না বেসিক ব্যাংক। নিজস্ব উদ্যোগে টিকে থাকতে হবে। কিন্তু টিকে থাকতে নানামুখী পরিকল্পনা করেও উন্নতি নেই।
অবস্থার পরিবর্তন নেই
পরিস্থিতির তেমন পরিবর্তন নেই, একই চক্করে থমকে আছে বেসিক ব্যাংক। অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে খেলাপি আদায় কিছুটা বাড়লেও ব্যতিক্রম শুধু রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের এই ব্যাংক। নানামুখী কৌশল হাতে নিয়েও পাল্টাচ্ছে না পরিস্থিতি।
ব্যাংকটির মোট ঋণের অর্ধেকের বেশি খেলাপি। অনিয়মের মাধ্যমে এ ব্যাংক থেকে বেরিয়ে গেছে হাজার হাজার কোটি টাকা।
খাদের কিনার থেকে টেনে তুলে ব্যাংকটিকে মূলধন যোগান দেয় সরকার। পরিচালনা পর্ষদ পরিবর্তনসহ গ্রহণ করা হয় নানা কৌশল। কিন্তু মাসের পর মাস কেটে গেলেও কমছে না খেলাপির পরিমাণ।
বাড়ছে খেলাপি ঋণ
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সাল শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের ঋণস্থিতি ১৪ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়ে পড়েছে ৭ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৫১ দশমিক ১৩ শতাংশ। শুধু তাই নয়, ব্যাংকটির নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন সংরক্ষণেও ঘাটতি রয়েছে ৩ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা।
ব্যাংকের মূলধন ঘাটতিও ১ হাজার ৪৯২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। ফলে সংকটে নিমজ্জিত হয়ে রয়েছে বেসিক ব্যাংক।
ক্রমান্বয়ে বাড়ছে লোকসান
বেসিক ব্যাংকের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০০৯ সালেও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটি প্রায় ৬৫ কোটি টাকা নিট মুনাফা করে। পরবর্তী সময়ে তা কমে ২০১২ সালে ২ কোটি ৭৮ লাখ টাকায় দাঁড়ায়।
এরপর থেকে ধারাবাহিকভাব লোকসানে পড়তে থাকে ব্যাংকটি। ২০১৩ সালে ৫৩ কোটি টাকা লোকসান করে। ২০১৪ সালে লোকসানের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ১১১ কোটি টাকা। ২০১৫ সালে ব্যাংকটির লোকসান বেড়ে হয় ৩১৮ কোটি টাকা।
অতীতের অনিয়ম জালিয়াতির চূড়ান্ত ধাক্কা লাগে ২০১৬ সালের নিট মুনাফায়। ওই বছর ব্যাংকটির লোকসান দাঁড়ায় ১ হাজার ৪৯৩ কোটি টাকায়।
এরপর ২০১৭ সালে ৬৮৪ কোটি টাকা এবং ২০১৮ সালেও ৩৫৪ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে ব্যাংকটি।
২০১৯ সালে ৩২৭ কোটি টাকা নিট লোকসান গোনার পর ২০২০ সালেও প্রায় ৪০০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে বেসিক ব্যাংকের।
কমেছে বেতন
লোকসানের কারণে ব্যয় কমানোর অংশ হিসেবে ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর ব্যাংকের ৪৮৭তম পর্ষদ সভায় বেসিক ব্যাংকের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন কমানোর সিদ্ধান্ত হয়।
২২ ডিসেম্বর এক প্রজ্ঞাপন জারি করে ওইদিন থেকেই এটা কার্যকর বলে জানায় বেসিক ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়: ‘সাত বছর ধরে ব্যাংকের ক্রমাগত লোকসান হচ্ছে। ফলে অতিরিক্ত বেতন-ভাতা ব্যাংকের পক্ষে বহন করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এ জন্য ব্যাংকের বর্তমান বেতন কাঠামো ও অন্যান্য সুবিধা বাতিল করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের “চাকরি (ব্যাংক, বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান) (বেতন ও ভাতাদি) আদেশ ২০১৫”-এর অনুরূপ বেতন কাঠামো নির্ধারণ করা হলো। তবে ব্যাংকের বেতন কাঠামোর বাইরে অন্যান্য সুবিধা পর্ষদের অনুমোদন সাপেক্ষে দেয়া হবে।’
ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মীরা বেতনের বাইরে লাঞ্চ-ভাতা, গাড়ির ঋণ, অতিরিক্ত বোনাস ইত্যাদি সুবিধা পেয়ে থাকেন।
২০১৪ সালে ব্যাংকটি বিশেষায়িত থেকে পুরোপুরি বাণিজ্যিক ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করে।
বেসিক ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালকের মূল বেতন স্কেল দেড় লাখ টাকা। অন্যদিকে, রাষ্ট্রায়ত্ত অন্য ব্যাংকে একই পদের মূল বেতন স্কেল ৬৬ হাজার টাকা।
বেসিকে জিএম পর্যায়ে মূল বেতন এক লাখ টাকা, ডিজিএমদের ৬৬ হাজার টাকা, এক্সিকিউটিভ অফিসারদের (প্রিন্সিপাল অফিসার সমমান) ৩৭ হাজার টাকা, সিনিয়র অফিসারদের ২৫ হাজার টাকা ও অফিসারদের ২০ হাজার টাকা।
অন্যদিকে, অন্যান্য রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকে যথাক্রমে জিএমদের মূল বেতন ৫৬ হাজার ৫০০ টাকা, ডিজিএমদের ৫০ হাজার টাকা, প্রিন্সিপাল অফিসারদের সাড়ে ৩৫ হাজার টাকা, সিনিয়র অফিসারদের ২০ হাজার টাকা ও অফিসারদের বেতন ১৬ হাজার টাকা।
অর্থাৎ অন্যান্য রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের বেতন কাঠামোর চেয়ে বেসিক ব্যাংকের কর্মীদের বেতন বেশি ছিল।
বেতনে কতো সাশ্রয়
নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের ফলে এই খাতে ব্যয় কমেছে প্রায় ৩ কোটি টাকা। দীর্ঘ দিন ধরে ব্যাংকের কর্মীরা সুবিধাবঞ্চিত।
সারা দেশে ৭২টি শাখা ও ২ হাজার ১০০ জনবল নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে বেসিক ব্যাংক।
২০১৪ সালের পর থেকে ব্যাংকের কর্মীদের কোনো প্রণোদনামূলক বোনাস দেয়া হয়নি। এমনকি চাকরি বিধিমালায় থাকা সত্ত্বেও ২০১৮ ও ২০১৯ সালে ব্যাংকে কোনো পদোন্নতি দেয়া হয়নি।
একজন কর্মকর্তা জানান, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে চাকরি পেয়েও এখন হতাশা আর দীর্ঘশ্বাস ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই।
বেসিক ব্যাংকে যোগদান করা নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিসুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি মাত্র যোগদান করেছি। সবার সঙ্গে কথা হয়েছে। ব্যাংকের উন্নতির জন্য সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।’
আরও পড়ুন:
হিন্দুত্ববাদী চক্র কর্তৃক মুসলিম নারীদের সম্ভ্রম নষ্ট, গাজীপুরে আশামনি ধর্ষণ, খতিব মুহিবুল্লাহকে অপহরণ, চট্টগ্রামের আলিফ হত্যা সহ ইসকনের সব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বাদ জুমা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে ‘মুসলিম শিক্ষার্থী’র ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে একই স্থানে সমবেত হন এবং সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।
এসময় বক্তারা বলেন, ' পাঁচ আগস্ট পরবর্তী সময়ে এদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য ইসকন নামক এই বিষফোঁড়া, ভারতের দালাল বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। অতিসত্বর এই বাংলাদেশ থেকে ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আমরা দেখেছি, ফ্যাসিস্ট আমলে ইসকন এদেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গা গুলো নিয়ন্ত্রণ করেছে। বাংলাদেশের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে তারা ইসকনদের জায়গা করে নিয়েছে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় থেকে একদম রুট-লেভেল পর্যন্ত ইসকন পরিকল্পিতভবে তাদের লোকদের ঢুকিয়েছে। অন্তবর্তীকালীন সরকারকে এই বাংলাদেশ থেকে ইসকন'কে নিষিদ্ধ করতে হবে। ইসকনকে যদি নিষিদ্ধ করা না হয়, এদেশের তাওহীদি জনতা এবং ছাত্র সমাজ কখনো মেনে নিবে না। 'জেন-জি' যদি একবার ইসকনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেঁটে-পড়ে তাহলে এই বাংলায় ইসকনের কবর রচিত হতে বাধ্য।'
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব আশরাফ উদ্দিন খান বলেন, ‘ইসকন এই বিশ্বে ধর্ম প্রচার করছে না বরং তারা ধর্মের ছদ্মবেশে উগ্র হিন্দুত্ববাদকে প্রচার এবং প্রসার করার জন্য মাঠে নেমেছে। মুসলিম মা বোনদের নিয়ে তামাশা করছে। ইসকনের মত সন্ত্রাসী সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা এখন সময়ের দাবি। সিঙ্গাপুর আফগানিস্তান সহ বিভিন্ন দেশে ইসকনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ। হিন্দুদের বিভিন্ন সংগঠন থেকে বলা হয়েছে ইসকন তাদের ধর্ম প্রচারের কোন সংগঠন না। তারা উগ্র হিন্দুত্ববাদ প্রচার-প্রসারের জন্য এখানে আদা জল খেয়ে নেমেছে।’
আওয়ামী লীগ আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। এ বিষয়ে সরকারের উপর দেশি-বিদেশি কোন চাপ নেই। তারা গণহত্যার জন্য এখনো ভুল স্বীকার করেনি।
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে ফ্রী ফেয়ার একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সে নির্বাচনে সব দল একসাথে অংশগ্রহণ করবে।
বিগত শেখ হাসিনার সময়ের প্রতিটি নির্বাচনে তাদের পছন্দমত প্রার্থী কেনাবেচা হয়েছে। তাতে জনগণের কোন অংশগ্রহণ ছিল না।
শুক্রবার সকালে মাগুরা শহরের নবগঙ্গা পার্কে জুলাই আন্দোলনে নিহত শহীদদের স্মৃতি স্তম্ভে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ফুলেল শ্রদ্ধা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এ সময় তার সাথে ছিলেন মাগুরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আব্দুল কাদের ও গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ পারভেজ।
তিনি আরও জানান, জুলাই সনদ বিষয়ে প্রায় সব রাজনৈতিক দলই ঐক্যমত পোষণ করেছে। যে কয়েকটি দল এখনো স্বাক্ষর করেনি, তাদেরও সম্মতি রয়েছে।
জাতীয় ঐক্যমতের কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গণভোট জাতীয় নির্বাচনের আগে বা পরে অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে এ বিষয়ে সরকার এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি।
তিনি আরও বলেন, “জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ফেব্রুয়ারিতে। আরপিওতে ‘না ভোট’ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে একক প্রার্থী থাকলেও জনগণ প্রয়োজনে তাকে প্রত্যাখ্যান করার সুযোগ পায়।
এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের ১৫% বাড়ী ভাড়া প্রজ্ঞাপণ জারী হওয়ায় অন্তবর্তীকালীন সরকারকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে আনন্দ র্যালী করেছে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশীজোট পটুয়াখালী জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ ও শিক্ষকগণ।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সকাল ১০টায় শহরের পৌরসভা চত্বর থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট পটুয়াখালী জেলা শাখার সমন্বয়ক আয়োজনে র্যালীটি বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পটুয়াখালী সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে পটুয়াখালী সদর উপজেলা এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট আহবায়ক মো. অহিদুল ইসলাম এবং সদস্য সচিব মো. সাখাওয়াত হোসেন এর সঞ্চালনায় ধন্যবাদ জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশীজোট পটুয়াখালী জেলা শাখার সমন্বয়ক এবং আনুষ্ঠানের সভাপতি সাইফুল মজিদ মোঃ বাহাউদ্দিন।
এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ছোটবিঘাই মোক্তার ডিগ্রি কলেজ এর অধ্যক্ষ মোঃ কামরূল আহসান, ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নাহিয়ান, হাজীখালী আলিম মাদ্রাসা অধ্যক্ষ মোঃ ফারুকুজ্জামান, খাসেরহাট স্কুল এন্ড কলেজ এর অধ্যক্ষ মোঃ রশির উদ্দিন,জেলা শাখার সমন্বয়ক মোঃ সাজেদুল ইসলাম বাহাদুর, আবদুল কাউয়ুম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন,আলহামদুলিল্লাহ মহান রাব্বুল আলামীনের নিকট শতকোটি শুকরিয়া আদায় করছি। সেই সাথে ধন্যবাদ জানাই প্রিয় অধ্যক্ষ আজিজুল হক স্যারকে এবং পটুয়াখালী জেলার শিক্ষক ভাইদের যারা কষ্ট করে আমাদের আন্দোলন কে সফল করেছেন।যাদের নাম না বললেই নয়। সৈয়দ কাইয়ুম ভাই, বশির স্যার,শফিক স্যার,মুস্তাফিজ স্যার,অহিদ সারওয়ার স্যার,মাসুম ছোট ভাই সাখাওয়াত, মাসুদ, জলিল স্যার সহ অনেক অনেক স্যারদের।সবাই দোয়া করবেন যেন ভবিষ্যতে শিক্ষকের যে কোন নায্য দাবি আদায় করতে সবাই একসাথে কাজ করতে পারি।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে পাকিস্তানি হাইকমিশনার ইমরান হায়দার সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। ছবি: পাকিস্তানি হাইকমিশন
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে প্রথমবারের মতো সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, সাক্ষাৎকালে দু’দেশের সাম্প্রতিক যোগাযোগ ও মন্ত্রী পর্যায়ের সফরের প্রশংসা করেন উভয়পক্ষ। এর মধ্যে গত আগস্টে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়।
গত এপ্রিলে রাজধানীতে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের ষষ্ঠ দ্বিপাক্ষিক পরামর্শ সভা সফলভাবে হওয়ার বিষয়টিও আলোচনায় স্থান পায়। এছাড়া দীর্ঘ বিরতির পর আগামী ২৭ অক্টোবর ঢাকায় অনুষ্ঠেয় নবম যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠককেও স্বাগত জানান উভয় পক্ষ।
উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন সন্তোষ প্রকাশ করে জানান, সম্প্রতি ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং বিমান যোগাযোগ পুনরায় চালুসহ বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে উভয় দেশ অগ্রগতি লাভ করেছে।
এ সময় তারা দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন। পাশাপাশি একাধিক খাতে সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনকালে পাকিস্তানি হাইকমিশনারকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।বাসস
চিত্রনায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলায় আসামিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এ বিষয়ে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে রমনা থানা পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মামলাটি আদালতের নির্দেশে পুনরায় তদন্তাধীন থাকায় আসামিরা যেন দেশ ত্যাগ করতে না পারে, সে জন্য রমনা থানা থেকে সংশ্লিষ্ট সব বিমান ও স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করা হয়েছে।
রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ফারুক গণমাধ্যমকে বলেন, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী মামলার তদন্ত এখন গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে।
তাই কোনো আসামি যেন দেশ ছাড়তে না পারেন, সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর রহস্যজনক মৃত্যু হয়। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর এ মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে দাবি করেন অভিনেতার সাবেক স্ত্রী সামিরা হক। তবে এতে দ্বিমত পোষণ করে সালমান শাহর পরিবার।
তাদের দাবি, সালমান শাহকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
দীর্ঘ ২৯ বছর পর অভিনেতা সালমান শাহর অপমৃত্যু মামলা রূপ নিয়েছে হত্যা মামলায়। গত ২০ অক্টোবর সালমান শাহর অপমৃত্যু মামলাকে হত্যা মামলায় রূপান্তরের নির্দেশ দেন আদালত। মহানগর দায়রা জজ আদালতের দেওয়া নির্দেশের ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন সালমান শাহর মামা আলমগীর কুমকুম।
সালমান শাহ হত্যা মামলায় সর্বমোট ১১ জনকে আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। হত্যা মামলায় প্রধান আসামি নায়কের সাবেক স্ত্রী সামিরা হক। অন্য ১০ আসামিরা হলেন প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাই, খলনায়ক ডন, লতিফা হক লুসি, ডেভিড, জাভেদ, ফারুক, মেফিয়ার বিউটি সেন্টারের রুবি, আবদুস সাত্তার, সাজু ও রিজভী আহমেদ ফরহাদ।
মন্তব্য